আমার ছেলে এটা মোটেই ঠিক কাজ করেনি, তারেক জিয়ার সাথে তার পার্থক্যের উত্তরে শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা তুলে সে ঠিক কাজ করেনি, আমাকে খালেদা জিয়ার সাথে তুলনা করতে সারা পৃথিবী যেভাবে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল এবং এখনো যে ব্যস্ততার কোনো শেষ নেই — কই, আমি তো কোনোদিন সে তুলনার উত্তরে শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা তুলিনি। তুলিনি কারণ এ তো সবাই দেখতে পায়, একথা বলে যার শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই তার কোনো ক্ষতি হয় না, ক্ষতিটা হয় যার সেটা আছে। ওবামা জ্ঞানী মানুষ, বুশ, সারাপৃথিবী জানে ছিলেন আমেরিকার সবচেয়ে স্টুপিড প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সেই জ্ঞানী মানুষ দিয়ে এখনো তো তেমন কিছু হল না, আগের বুশের বাহিনী ও তার ঘটানো সব কার্যকলাপের রিপেয়ারিং করেই যদি তার জীবন কাটে, তার এই জ্ঞান শুধু সুন্দর করে কথা বলার কাজেই যদি ব্যয় হয়, তাহলে পৃথিবীর কোন কাজটাই বা এগোবে। এবারের জলবায়ু সম্মেলনেও তাই হল, সেই পুরনো সব কথা, উষ্ণায়ন কমানো হবে, কমাতেই হবে। কিন্তু আমার দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে যেখানে ১০৫২ জন লোকের বসবাস, সেখানে উষ্ণায়নের থাবায় শুধু একশ বর্গকিলোমিটার সাগরের পেটে গেলেই আমার দেশের এক লাখ লোক হবে শরণার্থী, আমি একটি তলানির দেশের প্রধানমন্ত্রী, আমি তো এখনো আমার নিজের দেশের ওপর সমুদ্রের এই আগ্রাসন নিয়ে গবেষণার করবার জন্য একটা মাল্টিডিসিপ্লিনারি পরিষদই গঠন করতে পারলাম না, আর এটা করা ছাড়া আমি বা আমার দেশের সরকার তার যাবতীয় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় ও প্রতিকারের কী ব্যবস্থা করবে? কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, তেমন দেশের গবেষণার জন্যই তো আমরা আছি, আমরা চলে আসব, ফান্ড আসবে, আর ফান্ডের খরচ করাটাই হবে আমাদের কাজ, আপনি শুধু ভাউচারে স্বাক্ষর করার লোক তৈরি রাখুন, তাদের কে কত পাবে, আপনার কত লাগবে এসব ঠিক করে রাখুন। আপনাদের ইচ্ছাপত্রের সাথে আমাদের ইচ্ছাপত্র মিলিয়ে আমরা কাজ শুরু করে দেব। হ্যাঁ, সবকিছু সেভাবেই হবে — কিন্তু দুর্নীতির দায়ে আমাদের ইচ্ছাপত্রগুলোই শুধু প্রকাশিত হবে, তাদেরগুলো নয়। আমার বাবার একটা কথা সবসময় শোনা যায়, চাটার দল, কিন্তু এরা এখন আর শুধু চাটে না, এরা এখন খায়, আমার চারপাশে এখন জমিখোর, নদীখোর, শেয়ারখোর, খাদ্যখোরের আড্ডা। বাংলাদেশে এখন একটা কথা উঠেছে উন্নয়নভাবনার সাথে জলবায়ুর ভাবনাও ভাবতে হবে। আমার…

রমাদান করিম মুবারাক। হিলারির মুখে এই রমজানের শুভেচ্ছা, যা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম অধিবাসীরা রোজার সময় একজন আরেক জনকে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য বলেন, শুধু এটুকু শুনতে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আটলান্টিক উপকূলে পাড়ি জমালেন? মুসলিম এলিটরা এবং তাদের দেখাদেখি মুসলিম এলিটদের হাতে রাখতে চায় এমন সব রাজনৈতিক ব্যবসায়িক শক্তির কাছে ‘ইফতার পার্টি’ এক ভয়ংকর মার্কেটিং টুল-এ পরিণত হয়েছে। সেই ইফতার পার্টির দাওয়াতে স্বাভাবিকভাবেই গদগদ হয়ে আমেরিকা উপস্থিত হয়ে ছিলেন দীপু মনি, আশা ছিল এমন কোনো আশার আলো নিয়ে ফিরবেন, আর তা তুলে দেবেন তার নেত্রীর হাতে, যিনি ইদের পরে যাচ্ছেন আমেরিকায়, তিনি কি যাচ্ছেন ওবামার ইদ পুনর্মিলনী উৎসবে যোগ দিতে? জানি না, আমেরিকা এখন যে রকম মুসলিম বান্ধব হয়ে উঠছে, তাতে এরকম অনুষ্ঠান আয়োজনের গুজব হয়তো মোটেই ভিত্তিহীন নয়। দীপু মনিকে হিলারি কী দিলেন? ‘টিফা’, হ্যাঁ বাংলাদেশ নিয়ে আমেরিকা এর চেয়ে বেশি, আগেও ভাবেনি, এখনো ভাবে না। হ্যাঁ, ইফতার পার্টিতে যা কিছু মনে হয়েছিল গভীর, হিলারিকে মনে হয়েছিল, যেন তিনি মুসলিম, ফিৎরায় (সাহায্য) ভরে দেবেন উপস্থিত সব মুসলিম এলিটকে, যে এসেছে তার কাছে যা চাইতে, কিন্তু সেই অতলান্তিক ইফতার থেকে বেরিয়ে চারিদিক শূন্য দেখলেন দীপু মনি, মনে হল আর জীবনেও এমন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না, এই অনুষ্ঠানগুলো মন দুর্বল করে দেয়, মনে হয় সব দেবে এরা—আমরা যা চাই, মনে হয় নিঃশর্তেই দেবে, যেমন নামাজের মোনাজাতে অনেকের মনে হয়, কিন্তু রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে, পরীক্ষার আগের রাতের মতোই সবকিছু কঠিন মনে হয়। কী যে বলব দেশে গিয়ে, হিলারির সাথে সংবাদ সম্মেলনের পর, মনে হল ইফতার পার্টি থেকে কত ভিন্ন এই মানুষটি, আর আমি তখনও অতলান্তিক ইফতার পার্টিতে, তাকিয়ে আছি, কখন আসবে ফিৎরার ঘোষণা, শুধু ‘টিফা’ আমার আর ভালো লাগে না।

প্রাচীন গ্রীক দার্শনিক দিয়গনেস তাঁর দর্শন ও দর্শন-সম্বলিত জীবন যাপন নিয়ে সৎ ছিলেন। তিনি  সিনিকদের পতি মহাত্মা এন্থিস্থিনিসকেও অতিক্রম করেছিলেন বলে জানা যায়। দিয়গনেস নির্লোভ নির্মোহ জীবন যাপন করতেন। তিনি থাকতেন একটা জালার ভেতর মতান্তরে পিপার ভেতর যেখানে অনেক কুকুরও থাকত তাঁর প্রতিবেশী হিসাবে। কুকুরদের সাথে রুটি ভাগাভাগি করে খেতেন তিনি। একটা রুটি রাখার থলে থাকত আর পানি রাখার জন্য একটা বোতল। এই হচ্ছে তাঁর জীবন যাপন। তিনি সমস্ত প্রাতিষ্ঠানিকতাকে ত্যাগ করেছিলেন। মানুষের বানানো সব কিছুকে তছনছ করতে বলতেন। তাঁর জ্ঞানের পরিধি এবং সুনাম এত দূর গিয়েছিল যে স্বয়ং সম্রাট আলেকজান্দার একদিন খায়েস করলেন তাঁকে দেখতে যাবেন। যেই কথা সেই কাজ। ভোরে দিয়গনেস পিপার মুখে বসে রোদ পোহাচ্ছিলেন। সম্রাট এসে দাড়ালেন পিপার মুখে । সম্রাট নিজের পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলেন তিনি তাঁর জন্য কিছু করতে পারেন কিনা। আর দিয়গনেস তারদিকে তাকিয়ে সুর্যের দিকে ইশারা করে বললেন - রোদ পোহাতে দাও (সরে দাড়াও, তোমাকে আমার দরকার নাই)। পরবর্তীতে সিনিকাল দর্শনটা খুব জনপ্রিয় হয়ে যায়। নতুন নতুন ধরনের সিনিক্যাল মতবাদের উদ্ভব হয়। শেষে এটা বুর্জোয়া অসুখে পরিণত হয়। অর্থাৎ পারিপার্শ্বিক কোন ব্যাপার সম্পর্কে মাথা না ঘামানো। তবে দিয়গনেসের মতটা ছিল অনেকটা বৌদ্ধিক। নিজেকে সবকিছু থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া। পরে অসত্দিত্ববাদিদের দর্শনেও সিনিক প্রভাব দেখা যায়। আলবেয়ার কামুর আউড সাইডার উপন্যাসের নায়ক যে তার মায়ের মৃত্যুতে নির্বিকার থাকে। ধর্ম আইন সবকিছু সম্পর্কে যে প্রশ্ন তোলে। এখনো আধুনিক মানুষদের একটা বড় অংশ সিনিক্যাল জীবন যাপন করে। তবে আমার মনে হয় এখানেও একটা যৌক্তিকতা আছে। দেশের সবচাইতে মেধাহীন গবেটরাই রাষ্টের নায়ক হয়, যেখানে আইন নাই, জ্ঞানীদের শাসন কার্যে অংশগ্রহণ নাই। সক্রাতেসের বিক্রিত মতেই যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্র চলে সেখানে সিনিক্যাল কমপ্লেক্স থাকবেই। সিনিক্যাল কমপ্লেক্স একধরণের হতাশা। একজন চৈতন্য সমৃদ্ধ মানুষই কেবল সিনিক হতে পারে। তবে একটা সিনিকাল জীবন গবেট রাষ্ট্রও চাপিয়ে দিতে পারে মানুষের ওপর। প্রথম বিশ্বে মানুষ পুজিবাদের পূর্ণ বিকাশ এবং ভোগবাদী জীবনের কারণেই সিনিক হতে পারে। যেটাকে আমি ইতিমধ্যে বুর্জোয়াদের অসুখ বলে আখ্যায়িত করেছি। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বে এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ থাকেনা। যদিও রাষ্ট্রীয় ভাবেই অধিকসংখ্যক মানুষকে কর্মহীন করে রাখা হয় এখানে।…

পরীক্ষামূলক পোস্ট১

স্বাগতম।

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.