আমি সাধারণত ভ্রমণকাহিনি পড়ি না। কিন্তু কখনো কখনো এমন ভ্রমণকাহিনি হাতে পড়ে তা শুধু না পড়ে থাকা যায় না তা নয় একেবারে শেষ না করে ওঠা যায় না। [...]

পুরনো বইপ্রস্থ বইপ্রস্থ ২৫ আগস্ট ২০০৯ বইপ্রস্থ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বইপ্রস্থ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০ বইপ্রস্থ ২৬ জুন ২০১২ বইপ্রস্থ ২৩ এপ্রিল ২০১৩ বইপ্রস্থ ১৮ নভেম্বর ২০১৩ বইপ্রস্থ ১১ মে ২০১৪ বার্মাবস্তু Where China Meets India, Burma And The New Crossroad Of Asia ।। Thant Myint-U ।। প্রকাশক : faber and faber ।। মূল্য : UK ₤ 9.99 RRP আমি সাধারণত ভ্রমণকাহিনি পড়ি না। কিন্তু কখনো কখনো এমন ভ্রমণকাহিনি হাতে পড়ে তা শুধু না পড়ে থাকা যায় না তা নয় একেবারে শেষ না করে ওঠা যায় না। আমার হাতে এরকম যেকয়েকটা হাতে গোনা ভ্রমণকাহিনি পড়েছে এবং আমাকে তা দ্রুত পড়ে শেষ করতে হয়েছে, সেবইগুলোর মধ্যে একটা মিল আছে - আমি দেখেছি ইতিহাস রাজনীতি অর্থনীতি যখন হয় কোনো ভ্রমণকাহিনির অন্তর্লীন প্রবাহ তখনই আমার কাছে সেভ্রমণকাহিনির টান হয়ে ওঠে অপ্রতিরোধ্য। গত সপ্তাহটা তাই আমি থান্ট মাইইনট-ইউ এর এই ৩৩৩ পৃষ্টার বইটাতেই প্রোথিত ছিলাম। বলা চলে বার্মার ইতিহাস রাজনীতি অর্থনীতির ২১০০/২২০০ বছরে প্রচলের মধ্যে জড়িত হয়ে পড়েছিলাম যার মূল কথা হয়ে উঠেছে এটাই, হাজার হাজার বছর ধরে কীকরে একটা অঞ্চল এরকম বিচ্ছিন্ন বস্তু হয়ে বিন্যস্ত হয়ে থাকতে পারে। বার্মা কেন খিড়কি হয়েছিল, তিব্বত সিচুয়ান ইউনানের খিড়কি হয়ে থাকার নিয়তি তাকে কেন বরণ করতে হয়েছিল - এ কেমন বস্তু যার অস্তিত্ব সর্বক্ষণ পর্যালোচিত কিন্তু যাকে উন্মুক্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই বলে সে চিরদিনের জন্যই আবদ্ধ। বার্মা আসাম পর্যন্ত তার দখলে নিয়েছিল আবার যখন আসাম হারাতে হল তখন হারাল - ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির আয়ত্তে স্কটিশরা আমাদের বাঙালিরা বড়ব্যবসা ছোটব্যবসা শিক্ষকতা ওকালতি ডাক্তারি সবই করল আবার একসময় তাদের যখন তাড়িয়ে দেয়া হল তারা চলে এল বার্মাতেই বার্মা শক্তিশালী হল - জাপানিরা চীনের বিরুদ্ধে বার্মা পর্যন্ত নিজেদের বিস্তারিত করেছিল কিন্তু যখন জাপানিদের হটে যেতে হল তখন বার্মা তো বার্মাতেই পড়ে রইল - বার্মা স্বাধীন হল, বার্মা কমিউনিস্ট হবে ভাবল, বার্মা সামরিক বাহিনির হয়ে গেল, বার্মায় গৃহযুদ্ধ চলল, বার্মায় বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা চলতে লাগল, বার্মায় গণতন্ত্রের আহবান এলো গণতন্ত্র গৃহবন্দী এলো, গৃহবন্দীত্ব কাটতেও চলল - কিন্তু বার্মার খিড়কি দশা কি কাটবে? বার্মার সাধারণ মানুষের জীবন কী শেষ পর্যন্ত পাবে জীবনমানের প্রসারের…

সাম্প্রতিক সিলেট ভ্রমণের কিছু ছবি ফ্লিকারের মাধ্যমে স্লাইড করে দিয়েছি [...]

ছবি থাকলে আর একটা শব্দও লিখতে ইচ্ছে করে না। সাম্প্রতিক সিলেট ভ্রমণের কিছু ছবি ফ্লিকারের মাধ্যমে স্লাইড করে দিয়েছি, দেখুন। ফ্লিকারের ছবিগুলো তাহমিনা আখতারের তোলা, ক্যামেরা নাইকন কুলপিক্স পি ৬০০০, আমার হাতে উঠেছে টুইটারে শেয়ার করা (আরআইএম ব্ল্যাকবেরি ৯৮১০) তাৎক্ষণিক ছবিগুলো । সিলেটের যেতিনটি জায়গায় ভ্রমণের ছবি এখানে দেয়া হয়েছে তাতে রাতারগুল জলাবন ও সারি নদী যাওয়া খুবই সহজ। কিন্তু বিছনাকান্দি যাওয়া কষ্টসাধ্য, অর্ধেকের বেশি রাস্তা এমনই ভাঙ্গা আপনার মনে হতে পারে সমুদ্রের ঢেউ ডিঙ্গিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। তারপর গোয়াইনঘাট হরদারপাড় বাজারের ঘাটে এসে নৌকা না পেলে হাঁটতে হবে গ্রামের পথে ও পাড়ি দিতে হবে জল পাথরের বাধা তাতে অনায়াসে লেগে যেতে পারে ঘণ্টা দুয়েক, আর নৌকা পেলে লাগতে পারে দেড়ঘণ্টা, বর্ষাকালে হয়ত আরো বিশ-পঁচিশ মনিটি কম। এ পর্যন্তই – একটিও শব্দ না লেখার ইচ্ছে থাকলেও বেশ কিছু শব্দ লিখে ফেলতে হল – কারণটা সহজ, এই মানবজন্মের সবচেয়ে শক্তিশালী উপাদান ‘শব্দ’কে উপেক্ষা করা খুবই খুবই কঠিন। ফ্লিকার স্লাইডশো রাতারগুল জলাবন ১২টি ছবি সারি নদীর সবুজ জলে ১৫টি ছবি বিছনাকান্দির পাথরের খনিতে অভিযান (হদরারপাড় বাজার) গোয়াইনঘাট ২০টি ছবি রাতারগুল সিলেট বাংলাদেশ | @UNESCO #ratargul the swamp forest in sylhet is worth to be natural world heritage pic.twitter.com/236eaGQYJI— masud karim (@urumurum) October 15, 2013 সারি নদী সিলেট pic.twitter.com/fMYFzpWovF— masud karim (@urumurum) October 16, 2013 সিলেট - বিছানাকান্দি( কোয়ারি)- সিলেট নয় দশ ঘন্টার কঠিন পথ pic.twitter.com/RBP14jEyhy— masud karim (@urumurum) October 17, 2013 বিছনাকান্দি কোয়ারি সিলেট pic.twitter.com/EorWDK0Ic0— masud karim (@urumurum) October 17, 2013

যারা বস্তুগত শক্তির সাহায্যে ক্ষমতাশালী জাতি গড়তে চায় তারা ইতিহাস জানে না ও সভ্যতাকেও বুঝতে পারেনি। নিছক শক্তির উপর নির্ভরতা বর্বরতার লক্ষণ, যারা তার উপর নির্ভর করেছিল তারা হয় ধ্বংস হয়েছে অথবা বর্বরই থেকে গিয়েছে।[...]

সোনা, অহিফেন আর যৌনসঙ্গী এই তিনের প্রতি ছিল চীনাদের আকর্ষণ – প্রবীণ চীনের সেই আকর্ষণের বস্তুতান্ত্রিকতা ও গণমানুষের উপর অনিঃশেষ শোষণের বিরুদ্ধে নবীন চীন রুখে দাঁড়িয়েছিল – তাদের সাম্যবাদী বস্তুতান্ত্রিকতার পরিকল্পনায় প্রধান বাহন ছিল শিল্পমুখী যন্ত্রশক্তি – এদুয়ের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের আদর্শবাদ বা আধ্যাত্মবাদ মোটেই সুবিধা করতে পারেনি – তাই ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথের চীন ভ্রমণ ব্যর্থ না হলেও নবীন চীনের কাছে অপমানিত হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পিকিং-এ যেখানেই বক্তৃতা দিতে গেছেন তিনি, তার বিরুদ্ধে চীনের নতুন যুগের ছোকরারা চীনা ভাষায় মুদ্রিত প্রচারপত্র বিলি করেছিল। রবীন্দ্রনাথ যাদেরকে চীনের ছোকরা বলেছিলেন তারা কারা – অবশ্যই ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থকেরা – যাদের মধ্যে তখন চল্লিশোর্ধ বিখ্যাত চীনা সাহিত্যিক লু স্যুনও ছিলেন। এই বস্তুবাদীদের কার্যকলাপে রবীন্দ্রনাথ এতই বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন যে শেষ পর্যন্ত সফর অসমাপ্ত রেখেই তিনি পিকিং ত্যাগ করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ ছিল তাদের – রবীন্দ্রনাথ প্রাচীন চীনের সভ্যতার গুণকীর্তন করেছিলেন, আধ্যাত্মবাদী ব্রহ্মধর্ম ও উপনিষদের বাণী প্রচার করেছিলেন, বৌদ্ধধর্মের সূত্রে ভারত-চীন সেতুবন্ধের কথা বলেছিলেন, চীনের প্রগতিশীল সহিংসতাকে গান্ধীর অহিংস নীতি অনুসরণের

পরামর্শ দিয়েছিলেন আর বস্তুবাদী বিপ্লবের যন্ত্রনির্ভর শিল্পের দৈত্যের বিপরীতে মানুষের মধ্যে দেবতার আকাঙ্ক্ষায় উচ্চতর স্বর্গ লাভের চূড়ান্ত মানবিক উৎকর্ষের কথা বলেছিলেন। তিনি চীনের তরুণদের উদ্দেশ্যে সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছিলেন যারা বস্তুগত শক্তির সাহায্যে ক্ষমতাশালী জাতি গড়তে চায় তারা ইতিহাস জানে না ও সভ্যতাকেও বুঝতে পারেনি। নিছক শক্তির উপর নির্ভরতা বর্বরতার লক্ষণ, যারা তার উপর নির্ভর করেছিল তারা হয় ধ্বংস হয়েছে অথবা বর্বরই থেকে গিয়েছে। এরকমের উচ্চারণের বিরুদ্ধে চীনের যুবকেরা চীনা ভাষায় চিৎকার করে বলেছিল, পরাধীন দেশের দাস ফিরে যাও – আমরা দর্শন চাই না, বস্তুবাদ চাই। কেন তার বিরুদ্ধে এইসব বিরোধিতামূলক প্রচারপত্র, প্ল্যাকার্ড, চিৎকার? রবীন্দ্রনাথ জানার চেষ্টা করেছিলেন এবং জেনেও ছিলেন। কিন্তু তিনি তার উপলব্ধিতে স্থিতধী ছিলেন – আত্মিক শক্তির উচ্চতায় তিনি বিশ্বাসী ছিলেন – তিনি বারবার আধ্যাত্মিক সভ্যতা ও বিজ্ঞানের পথে পার্থিব উন্নতির সমন্বয় ঘটানোর পথেই মানুষের মুক্তির আদর্শবাদে নিমগ্ন ছিলেন। এই সীমাহীন দূরত্ব চীনের বিপ্লবী যুবশক্তির কাছে রবীন্দ্রনাথকে ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ পরিচয়ে পর্যবসিত করেছিল। এ তো গেল আধ্যাত্মবাদ ও বস্তবাদে অটল বিশ্বাসের কারণে দুপক্ষের সংঘাতের জ্বলন্ত দিক। কিন্তু এটাও তো জানতে…

অক্টোবরের ৩০ তারিখে (২০০৯) আমার প্রদর্শনীর উদ্বোধন। মক ভাইয়ের অনুরোধে কয়েকদিন আগেই চলে আসা। ডিসপ্লে এবং ফ্রেমিং-এর ব্যাপারে যেন আমার মতামত পাওয়া যায়। [...]

প্রদর্শনী হংকং-এ অক্টোবরের ৩০ তারিখে (২০০৯) আমার প্রদর্শনীর উদ্বোধন। মক ভাইয়ের অনুরোধে কয়েকদিন আগেই চলে আসা। ডিসপ্লে এবং ফ্রেমিং-এর ব্যাপারে যেন আমার মতামত পাওয়া যায়। সিসিসিডি-র কর্মী উইলসন প্রদর্শনীর সমন্বয়ক। সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় পেরোনো টগবগে তরুণ। প্রতিদিন সকালে সেই আপলেইছাও থেকে শাকিপমেই চলে আসি প্রদর্শনীর জায়গায়। আর উইলসনের সাথে হাতে হাত রেখে প্রাক-প্রদর্শনী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হই। যেমন ফ্রেমিং, ছবি ঝোলানো, ট্যাগ তৈরি ইত্যাদি। নিউবার্গ গ্যালারির কর্ণধার মিশালের সাথে এরমধ্যে একদিন দেখা হয়েছে, খুবই ব্যস্ত। তবে মিশালের স্বামী মাইকল আমাকে বেশ সময় দিলেন। মাইকল দিলখোলা সজ্জন মানুষ। গ্যালারির সেক্রেটারি লিজা-ও আমাদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিল। ডিসপ্লের ব্যাপারে লিজা বেশ অভিজ্ঞ; অনেকগুলো ছবি নিজেই ঝুলিয়ে ফেলল। মক ভাইয়ের অফিস একই ক্যাম্পাসের চার তলায় হওয়ায় সকালে এসে ওখানেই জড়ো হই, পরে নীচে চলে আসি গ্যালারিতে টুকিটাকি কাজ সারতে। এই চত্বরেরই আট তলায় হংকং ওপেন প্রিন্ট শপের অফিস কাম স্টুডিও। এখানেও আমার কিছু কাজ প্রদর্শিত হবে; আয়োজন করা হয়েছে বাংলাদেশের ছাপচিত্রের উপর একটি বক্তৃতার, সেই সাথে আমার ছাপচিত্র নিয়ে একটি ডেমনস্ট্রেশনও হবে। প্রিন্ট শপের অফিসে গিয়ে পরিচিত হয়ে এলাম। মিস ইউং নামের একজন এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে আছেন, তিনি আমাকে সবকিছু ঘুরিয়ে দেখালেন। আমার বক্তৃতা এবং ডেমনস্ট্রেশনের জন্য কী কী জিনিস লাগবে তার একটা লিস্ট দিয়ে এলাম। এর মধ্যে একদিন গিয়ে হংকং-এর বাংলাদেশ কনস্যুলেটের প্রধান আসুদ ভাইয়ের সাথে দেখা করে আসলাম। বাংলাদেশ কনস্যুলেট আমার প্রদর্শনীর সহ-আয়োজক। আসুদ ভাই বেশ মাইডিয়ার টাইপের মানুষ। উনার দিক থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস পেলাম। আমার প্রদর্শনীর বিষয়টি হংকং-এর বাঙালিদের মধ্যে ভালো প্রচার পেয়েছে বলেও জানালেন। দেখতে দেখতে তিরিশ তারিখ চলে এল -- সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। প্রদর্শনীর উদ্বোধন সন্ধ্যা সাতটায়, আমরা বেশ আগেভাগেই গ্যালারিতে চলে গেলাম। গ্যালারির কর্ণধার মিশালে আজ বেশ আগেই হাজির, সাথে মাইকল এবং লিজা। গ্যালারিতে চলছে শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা। সিসিসিডি-র কর্মীরা সবাই উপস্থিত। আপ্যায়নের আয়োজনে ব্যস্ত। থরে থরে সাজানো আছে নানা ধরনের স্ন্যাকস, এর মধ্যে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হচ্ছে নিউরোকান (সেদ্ধ গরুর মাংসের শুঁটকি), যা চীনাদের খুব প্রিয়। সিসিসিডি-র কর্মী এলিজা ম্যাকাও গিয়ে কিনে এনেছে। ম্যাকাও-এর নিউরোকান নাকি খুবই উপাদেয়। গ্যালারির বাইরে একটি খোলা চত্বরের মতো আছে, সেখনে টেবিলে সাজানো আছে নানা…

ট্রেন এসে থামল কাউলুনের হোংহাম স্টেশনে। প্রাচ্যের এক আধুনিক শহরের প্রাণকেন্দ্রে। ইমিগ্রেশনের ঝামেলা মিটিয়ে বাইরে এসে দেখা পেলাম শ্বেতশুভ্র কেশের মক ভাইয়ের। [...]

প্রিয় শহরে সতেরো বছর পরে ট্রেন এসে থামল কাউলুনের হোংহাম স্টেশনে। প্রাচ্যের এক আধুনিক শহরের প্রাণকেন্দ্রে। ইমিগ্রেশনের ঝামেলা মিটিয়ে বাইরে এসে দেখা পেলাম শ্বেতশুভ্র কেশের মক ভাইয়ের। আমাকে রিসিভ করার জন্য অপেক্ষা করছেন। এই সুযোগে মক ভাইয়ের পরিচয়টা দেয়া যাক। পুরো নাম মক চিউ ইউ, আমার অগ্রজ নাট্যজন মামুনুর রশীদের বিশেষ বন্ধু, বঙ্গপ্রেমিক। সেই ১৯৯১ সাল থেকে বাংলাদেশে আসা যাওয়া, বাংলাদেশের সাথে নাটক বিষয়ক বিস্তর আদান-প্রদান করেছেন। নিজের নাটকের দল আছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে ঘুরে এসেছেন। আমাকে ছোট ভাইয়ের মতো দেখেন, আর ম্যান্ডারিন চাইনিজ বলতে পারি বলে তাঁর কাছ থেকে পাই আলাদা একটা কদর। এই মক ভাইয়ের উদ্যোগেই এবার প্রদর্শনীর আয়োজন এবং সুদূর বেইজিং থেকে হংকং অভিমুখে চলে আসা। মক ভাইয়ের সাথে শেষ দেখা হয়েছিল কয়েক বছর আগে যখন তিনি বাংলাদেশে গিয়েছিলেন মামুন ভাইয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে একটি ছবির চিত্রায়ণ উপলক্ষে। তখন পুরো টিমকে আমার বাসায় দাওয়াত করে খাইয়েছিলাম। মক ভাই এতদিন পরে আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরলেন। শুভ্র কেশের মক ভাই সেই আগের মতোই আছেন। সমস্ত চুল সাদা হয়ে গেছে অনেক আগে থেকেই। বয়স ষাটের কোঠায়, তবে চুল সব সাদা হয়ে গেছে। রেশম-সাদা ধবধবে চুল মক ভাইকে আলাদা এক ব্যক্তিত্ব এনে দিয়েছে। মালপত্র নিয়ে তাঁর সাথে ট্যাক্সিতে উঠে যাত্রা করলাম তাঁদের সিসিসিডি অফিস অভিমুখে। সিসিসিডি অফিসটি মূলত একটি জনকল্যাণমূলক সংগঠন, কমিউনিটি সাংস্কৃতিক উন্নয়নে কাজ করেন। মক ভাইদের এই সংগঠনটিই আমার ছাপচিত্র প্রদর্শনীর স্পন্সর। ট্যাক্সিতে যেতে যেতে দেখছিলাম হংকং শহরটিকে নতুন করে। সেই আগের মতোই আছে, শুধু সময়ের ছায়া পড়েছে। আমার মধ্যে একটি অনুভূতি কাজ করে — যদি আমার পরিচিত কোনো জায়গায় অনেকদিন পরে আবার যাওয়া হয় তবে ছায়াগুলি অনেক বেশি গাঢ় মনে হয়, মনে হয় এখানে সময় জমা হয়ে আছে। রাস্তায় যেতে যেতে দেখছিলাম আর ভাবছিলাম, কী অদ্ভুত সুন্দরভাবে এই শহরটিকে এরা গড়ে তুলেছে! অল্প জায়গা, অথচ কী চমৎকার ভাবে ম্যানেজ করেছে! হংকং শহরটি বোধহয় স্পেস ম্যানেজমেন্টে পৃথিবীতে অদ্বিতীয়। আমার কাছে মাঝে মাঝে একে ম্যাচবক্স সিটি মনে হয়। শহরের ভিতর অজগরের মতো এঁকেবেঁকে কত রাস্তা যে চলে গেছে তার ইয়ত্তা নেই, কত যে উড়াল সেতু আর একতলা দোতলা…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.