বইটির সম্পদ হল ত্রয়োদশ অধ্যায় Engagement with the National Struggle থেকে সপ্তদশ অধ্যায় Fulfilment: The Liberation of Bangladesh যেখানে আইয়ুব যুগের অবসান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম ইংরেজি নববর্ষ যাপন পর্যন্ত এক বুদ্ধিজীবী মুক্তিযোদ্ধা রেহমান সোবহানের কথা সবিস্তারে বলা হয়েছে [...]

পুরনো বইপ্রস্থ বইপ্রস্থ ২৫ আগস্ট ২০০৯ বইপ্রস্থ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বইপ্রস্থ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০ বইপ্রস্থ ২৬ জুন ২০১২ বইপ্রস্থ ২৩ এপ্রিল ২০১৩ বইপ্রস্থ ১৮ নভেম্বর ২০১৩ বইপ্রস্থ ১১ মে ২০১৪ বইপ্রস্থ ৫ নভেম্বর ২০১৫ বইপ্রস্থ ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ বইপ্রস্থ ১২ মার্চ ২০১৬ বইপ্রস্থ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ স্বাধীনতা অর্জনের স্মৃতি UNTRANQUIL RECOLLECTIONS, The Years of Fulfilment ।। Rehman Sobhan ।। প্রকাশক : SAGE India ।। মূল্য : ভারতীয় টাকা ৮৯৫ (হার্ডকভার) ও ৪৫০ (পেপারব্যাক) চৈতন্য ও বঙ্গভঙ্গ বিষয়ে পড়তে থাকা বেশ কয়েকটি বই ফেলে রেখেই গত বছরের একটা তাজা ইংরেজি বই নিয়ে পড়তে বসে গেলাম, বইটি পড়া শেষ করতে পারব কিনা জানা ছিল না, কারণ আজকাল অনেক বই পড়তে শুরু করে আর শেষ করা হয় না, এবং তুলনামূলকভাবে এটা ইংরেজি বইয়ের সাথেই বেশি হয়, ফলে বইটি শেষ করার আগ পর্যন্ত একটা অস্বস্তি ছিল কারণ বইটি পড়তে শুরু করার পরপরই মনে হয়েছিল বইটি নিয়ে একটা 'বইপ্রস্থ' লিখব এবং যদিও এটা সম্ভব বইটি পুরো না পড়েও কিছু একটা লেখা তারপরও যেহেতু এখনো পর্যন্ত কোনো বই পুরো না পড়ে একটাও 'বইপ্রস্থ' লিখিনি তাই বইটি পড়ে শেষ করতে পেরে আমি 'বইপ্রস্থ' লিখতে বসে গেছি, যদিও আমার ডান হাতটি সাম্প্রতিক এক দুর্বৃত্তায়নের শিকার হয়ে এখনো লেখার উপযুক্ত হয়ে ওঠেনি। রেহমান সোবহান সবদিক থেকেই একজন অভিজাত ব্যক্তি, তার শিক্ষার পরিসরটা ভারত পাকিস্তান ইংল্যান্ড জুড়ে যেখাতে বয়েছে সেটাও তার পরবর্তী জীবনের একটা ছক তার আয়ত্তাধীন করেছে, এবং বইটি পড়তে পড়তে জীবনের লক্ষ্য ঠিক করা নেই এরকম একজন মানুষের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক গুরুত্বে অভিষিক্ত হওয়াকে আমার খুব চমকপ্রদ কাহিনি মনে হয়েছে, সেসাথে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের প্রেক্ষাপট মিলে এই চমকপ্রদ কাহিনিকে অসাধারণের পর্যায়ে নিয়ে গেছে, এবং তার জীবনের তাৎপর্য ওই অর্থে আরো বেড়ে গেছে যখন পাঠক শুরুতেই জেনেছেন তিনি একজন উর্দুভাষী আর বাংলাদেশের সন্তান নন তিনি ১৯৫৭ সালে ঢাকায় অধিবাস শুরু করেছিলেন। যেকারণে রেহমান সোবহান সবচেয়ে পরিচিত 'দুই অর্থনীতি' ও '৬ দফা' এদুটি প্রসঙ্গে সাধারণ জ্ঞান অর্জনের জন্যও এই বইটিই আমি পড়তে বলব, অনেকে অবশ্যই এদুটি বিষয়ে তার প্রবন্ধ ও সাংবাদিক রচনা পড়বেন কিন্তু আমি নিজে সেসবের চেয়ে তার এই আত্মস্মৃতি…

বাংলাদেশে বইয়ের দোকান ও বইয়ের প্রকাশক আছে। সংখ্যায় কম বা মানে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে কিন্তু বইয়ের দোকান ও বইয়ের প্রকাশনা এখানে মোটেই অপরিচিত বা বিলুপ্ত কোনো উদ্যোগ নয়। বাংলাদেশে বইয়ের পরিবেশনা একটা ভাল ব্যবসাই ছিল কিন্তু এব্যবসাটা কেন বিলুপ্ত উদ্যোগের তালিকায় চলে গেল আমার জানা নেই [...]

বাংলাদেশে বইয়ের দোকান ও বইয়ের প্রকাশক আছে। সংখ্যায় কম বা মানে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে কিন্তু বইয়ের দোকান ও বইয়ের প্রকাশনা এখানে মোটেই অপরিচিত বা বিলুপ্ত কোনো উদ্যোগ নয়। বাংলাদেশে বইয়ের পরিবেশনা একটা ভাল ব্যবসাই ছিল কিন্তু এব্যবসাটা কেন বিলুপ্ত উদ্যোগের তালিকায় চলে গেল আমার জানা নেই – যদিও আমার মতে বইয়ের পরিবেশনা ব্যবসা ছাড়া বইয়ের প্রকাশনা ব্যবসা ও বইয়ের দোকানের ব্যবসা ঠিকমতো চলার কথা নয়, এবং বইয়ের বাজারের দিকে ভাল করে তাকালে আমরা দেখতে পাব তা ঠিকঠাক চলছেও না। বই প্রকাশনার ব্যবসায়ী যদি হয় পণ্যের উৎপাদক এবং বইয়ের দোকানের ব্যবসায়ী যদি হয় উৎপাদিত পণ্যের বিক্রেতা তাহলে উৎপাদিত পণ্য উৎপাদকের কাছ থেকে বিত্রেতার কাছে পৌঁছে দেয়ার সরবরাহকারী হল বইয়ের পরিবেশনার ব্যবসায়ী। এখন এই সরবরাহকারী যখন বিলুপ্তের পথে চলে গেছে ফলে বইয়ের সরবরাহের ব্যবসার যে সক্ষমতার জায়গা ছিল তাও অবলুপ্ত হয়েছে, অর্থাৎ উৎপাদিত বই বিক্রেতার কাছে সরবরাহ করার দক্ষতার শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম, ধরুন, খুব চলে এরকম ভোগ্যপণ্যের সরবরাহকারীরা বিলুপ্ত হয়ে গেলে কিন্তু খুব চলে এরকম ভোগ্যপণ্যের উৎপাদক ও বিক্রেতা রয়ে গেল, আমি নিশ্চিত, আপনি সাবান টুথপেস্ট আর নিয়মিত ব্যবহার না করে কিভাবে চলা যায় সেই উপায়ই খুঁজবেন কারণ উৎপাদক ও বিক্রেতার মধ্যে সংযোগ সৃষ্টি করার কাজে নিয়োজিত পরিবেশকের অনুপস্থিতিতে পণ্য সরবরাহের সক্ষমতার যে ঘাটতি তৈরি হবে তাতে আপনি হাতের কাছে সাবান টুথপেস্টের যে বহর দেখতে পেতেন তা আর দেখতে পাবেন না। এখন এই বই পরিবেশকের বিলুপ্তিতে তাই ঘটেছে আর এখন এই বই পরিবেশক গোষ্ঠীকে পুনরায় জাগিয়ে তুলতে না পারলে বইয়ের বাজারে ওই সামান্য সংখ্যক বই ছাপিয়ে তা বিক্রির ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার এই চক্র থেকে বের হওয়া সম্ভব হবে না। এবং এর ফলে বই লিখে জীবিকা উপার্জনের সম্ভাবনা কোনোদিনই বাস্তবতার মুখ দেখবে না। কাজেই বইয়ের বাজারকে যদি সত্যিই জাতীয় উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে হয় তাহলে বই পরিবেশনার বিলুপ্ত ব্যবসাকে আবার চালু করার পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু আমি এখন বই সম্পাদকের কথা যদি বলতে চাই, আমি বলব বাংলাদেশে এটা সম্পূর্ণভাবে অপরিচিত একটা পেশা। বই সম্পাদক কী করে? এটা বলার চেয়ে যদি আপনি এটা ভাবেন, একজন পত্রিকা সম্পাদক কী করে? তাহলে সম্ভবত পুরো…

এক দুরারোগ্য অভ্যাসবশত কোনো কিছু না বুঝেও ধুপধাপ কোনো কোনো বই পড়ে ফেলতে পারি, তেমনি হাতে পাওয়ার ৬/৭ দিনের মধ্যেই পড়ে ফেললাম কৌশিক বসুর সাম্প্রতিক বই অ্যান ইকোনোমিস্ট ইন দ্য রিয়েল ওয়ার্ল্ড : দ্য আর্ট অফ পলিসিম্যাকিং ইন ইন্ডিয়া।[..]

পুরনো বইপ্রস্থ বইপ্রস্থ ২৫ আগস্ট ২০০৯ বইপ্রস্থ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বইপ্রস্থ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০ বইপ্রস্থ ২৬ জুন ২০১২ বইপ্রস্থ ২৩ এপ্রিল ২০১৩ বইপ্রস্থ ১৮ নভেম্বর ২০১৩ বইপ্রস্থ ১১ মে ২০১৪ বইপ্রস্থ ৫ নভেম্বর ২০১৫ বইপ্রস্থ ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ অর্থনীতিরব্যর্থনীতিঅব্যর্থনীতিসমাজনীতিরাজনীতিসংস্কৃতি An Economist in the Real World : The Art of Policymaking in India ।। Kaushik Basu ।। প্রকাশক : Penguin Viking ।। মূল্য : 599 ভারতীয় টাকা এক দুরারোগ্য অভ্যাসবশত কোনো কিছু না বুঝেও ধুপধাপ কোনো কোনো বই পড়ে ফেলতে পারি, তেমনি হাতে পাওয়ার ৬/৭ দিনের মধ্যেই পড়ে ফেললাম কৌশিক বসুর সাম্প্রতিক বই অ্যান ইকোনোমিস্ট ইন দ্য রিয়েল ওয়ার্ল্ড : দ্য আর্ট অফ পলিসিম্যাকিং ইন ইন্ডিয়া। কৌশিক বসু মনমোহন সিংয়ের দ্বিতীয় টার্মে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন প্রায় তিন বছরের মতো সময়কাল জুড়ে, আমার সাথেও সেসময়েই পরিচয় কৌশিক বসুর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত তার এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের সুবাদে, সে সাক্ষাৎকারের মূল বিষয় ছিল ভারতের ক্রমবর্ধমান ভ্রষ্টাচার যাকে আমরা অতিপ্রচলিত ‘ভুল’ দুর্নীতি শব্দ দিয়ে corruption এর বাংলা প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করছি, সেসাক্ষাৎকারেই তার এই প্রস্তাব আমার ভাল লেগেছিল যে ‘অপমানমূলক ঘুষ (harassment bribery)’ দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে ঘুষ দাতাকে আইন করে নির্দোষ ঘোষণা করে ভারতের বিকট দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটা জরুরি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে যেখানে ভারতীয় প্রচলিত আইনে দাতা ও গ্রহীতা দুজনেই অপরাধী, এই বইয়েও অষ্টম পরিচ্ছেদে এনিয়ে বিশদ আলোচনা আছে, আমার মতে আমাদের সবারই এপরিচ্ছেদটি পড়ে দেখা উচিত, বাংলাদেশেও আমার মতে ক্রমবর্ধমান দুর্নীতির বিরুদ্ধে কৌশিক বসুর এই প্রস্তাবটি ভেবে দেখা উচিত। Let me present the gist of this idea. In India ordinary citizens and, at times, even large corporations are asked to pay a bribe for something to which they have legal entitlement. I had called these ''harassment bribes.'' Say a woman has filed her tax return properly and it turns out that the Income Tax Department owes her some money. It is not uncommon for a critical employee of the department to ask for some money before he releases the reimbursement. To give another example: a person has imported…

আমি সাধারণত ভ্রমণকাহিনি পড়ি না। কিন্তু কখনো কখনো এমন ভ্রমণকাহিনি হাতে পড়ে তা শুধু না পড়ে থাকা যায় না তা নয় একেবারে শেষ না করে ওঠা যায় না। [...]

পুরনো বইপ্রস্থ বইপ্রস্থ ২৫ আগস্ট ২০০৯ বইপ্রস্থ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বইপ্রস্থ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০ বইপ্রস্থ ২৬ জুন ২০১২ বইপ্রস্থ ২৩ এপ্রিল ২০১৩ বইপ্রস্থ ১৮ নভেম্বর ২০১৩ বইপ্রস্থ ১১ মে ২০১৪ বার্মাবস্তু Where China Meets India, Burma And The New Crossroad Of Asia ।। Thant Myint-U ।। প্রকাশক : faber and faber ।। মূল্য : UK ₤ 9.99 RRP আমি সাধারণত ভ্রমণকাহিনি পড়ি না। কিন্তু কখনো কখনো এমন ভ্রমণকাহিনি হাতে পড়ে তা শুধু না পড়ে থাকা যায় না তা নয় একেবারে শেষ না করে ওঠা যায় না। আমার হাতে এরকম যেকয়েকটা হাতে গোনা ভ্রমণকাহিনি পড়েছে এবং আমাকে তা দ্রুত পড়ে শেষ করতে হয়েছে, সেবইগুলোর মধ্যে একটা মিল আছে - আমি দেখেছি ইতিহাস রাজনীতি অর্থনীতি যখন হয় কোনো ভ্রমণকাহিনির অন্তর্লীন প্রবাহ তখনই আমার কাছে সেভ্রমণকাহিনির টান হয়ে ওঠে অপ্রতিরোধ্য। গত সপ্তাহটা তাই আমি থান্ট মাইইনট-ইউ এর এই ৩৩৩ পৃষ্টার বইটাতেই প্রোথিত ছিলাম। বলা চলে বার্মার ইতিহাস রাজনীতি অর্থনীতির ২১০০/২২০০ বছরে প্রচলের মধ্যে জড়িত হয়ে পড়েছিলাম যার মূল কথা হয়ে উঠেছে এটাই, হাজার হাজার বছর ধরে কীকরে একটা অঞ্চল এরকম বিচ্ছিন্ন বস্তু হয়ে বিন্যস্ত হয়ে থাকতে পারে। বার্মা কেন খিড়কি হয়েছিল, তিব্বত সিচুয়ান ইউনানের খিড়কি হয়ে থাকার নিয়তি তাকে কেন বরণ করতে হয়েছিল - এ কেমন বস্তু যার অস্তিত্ব সর্বক্ষণ পর্যালোচিত কিন্তু যাকে উন্মুক্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই বলে সে চিরদিনের জন্যই আবদ্ধ। বার্মা আসাম পর্যন্ত তার দখলে নিয়েছিল আবার যখন আসাম হারাতে হল তখন হারাল - ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির আয়ত্তে স্কটিশরা আমাদের বাঙালিরা বড়ব্যবসা ছোটব্যবসা শিক্ষকতা ওকালতি ডাক্তারি সবই করল আবার একসময় তাদের যখন তাড়িয়ে দেয়া হল তারা চলে এল বার্মাতেই বার্মা শক্তিশালী হল - জাপানিরা চীনের বিরুদ্ধে বার্মা পর্যন্ত নিজেদের বিস্তারিত করেছিল কিন্তু যখন জাপানিদের হটে যেতে হল তখন বার্মা তো বার্মাতেই পড়ে রইল - বার্মা স্বাধীন হল, বার্মা কমিউনিস্ট হবে ভাবল, বার্মা সামরিক বাহিনির হয়ে গেল, বার্মায় গৃহযুদ্ধ চলল, বার্মায় বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা চলতে লাগল, বার্মায় গণতন্ত্রের আহবান এলো গণতন্ত্র গৃহবন্দী এলো, গৃহবন্দীত্ব কাটতেও চলল - কিন্তু বার্মার খিড়কি দশা কি কাটবে? বার্মার সাধারণ মানুষের জীবন কী শেষ পর্যন্ত পাবে জীবনমানের প্রসারের…

আলেক্সিস সিপ্রাসকে গ্রিসের মানুষ বেছে নিয়েছিলেন বোধ হয় এ কারণে যে, তিনি একজন বামপন্থী। তাঁরা হয়তো ভেবেছিলেন, ২০০৮ সাল থেকে ইউরোপ ও আমেরিকার অর্থনৈতিক সংকটের কারণে গ্রিসে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, একজন বামপন্থীর নেতৃত্বে গঠিত সরকারই পারবে তা সামাল দিতে [....]

আলেক্সিস সিপ্রাসকে গ্রিসের মানুষ বেছে নিয়েছিলেন বোধ হয় এ কারণে যে, তিনি একজন বামপন্থী। তাঁরা হয়তো ভেবেছিলেন, ২০০৮ সাল থেকে ইউরোপ ও আমেরিকার অর্থনৈতিক সংকটের কারণে গ্রিসে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, একজন বামপন্থীর নেতৃত্বে গঠিত সরকারই পারবে তা সামাল দিতে। এরই ধারাবাহিকতায় জুনের শেষ সপ্তাহে সিপ্রাস যে গণভোটের ডাক দিয়েছিলেন, তাতেও গ্রিসের জনগণ ভোট দিয়েছিলেন ত্রৈকা তথা ইউরোপীয় কমিশন, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর না করার পক্ষে। জোসেফ স্টিগলিজ ও পল ক্রুগম্যানের মতো অর্থনীতিবিদরাও গ্রিসের নীতিনির্ধারকদের পরামর্শ দিয়েছিলেন, তাঁদের নিজস্ব মুদ্রা দ্রাখমা আবারো চালু করে সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়িয়ে গ্রিসের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে তুলতে। কিন্তু সেসব করতে গেলে ইউরোর পিছুটান ঝেড়ে ফেলতে হতো গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপ্রাসকে, যা করার সাহস ছিল না তাঁর। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে তাই তৃতীয়বারের মতো গ্রিসকে তার ঋণসংকট থেকে উদ্ধার করার নামে আরো ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের দিকে ঠেলে দিতে সক্ষম হয়েছে ইউরোজোন। ইউরো ব্যবহারকারী ১৯টি রাষ্ট্রের জয় হয়েছে, জয় হয়েছে গ্রিসের অস্বাভাবিক ধনীদের। ব্রাসেলসে এমন একটি চুক্তি হয়েছে, যা সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছে ১৯১৯ সালের কথা—ভার্সাইয়ের কথা। প্রথম মহাযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের পর পুরো ইউরোপ তাদের বাধ্য করেছিল ভার্সাই চুক্তি করতে। যার ফলে পরবর্তী সময়ে অনিবার্য হয়ে উঠেছিল দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ। ব্রাসেলস চুক্তি যদি সত্যিই বাস্তবায়ন হয়, তা হলে অবশ্যম্ভাবীভাবেই গভীর এক সংকটের দিকে ইউরোপ এগিয়ে যাবে। দ্য গার্ডিয়ানে একজন মন্তব্য করেছেন, ভার্সাইয়ের ওই চুক্তির চেয়েও অবমাননাকর নতুন এই চুক্তি। প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান এ চুক্তিকে অভিহিত করেছেন ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ’ হিসেবে। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও এই চুক্তি হওয়ার মাস দেড়েক আগে নিউ স্টেটসম্যানে গ্রিসের অর্থনৈতিক কৃচ্ছ্রসাধনায় কোনো লাভ হবে কি না, তা নিয়ে নিবন্ধ লিখেছিলেন। তাতে তিনি বিরোধিতা করেছেন চাপিয়ে দেওয়া এই কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচির। প্রসঙ্গত, তিনি আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন ১৯১৯ সালের ৫ জুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড লয়েড জর্জকে উদ্দেশ করে লর্ড ম্যানিয়ার্ড কেইন্সের একটি উদ্ধৃতি, যার মাধ্যমে অর্থনীতিবিদ কেইন্স নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন প্রথম মহাযুদ্ধের পরে সম্পাদিত ভার্সাই শান্তিচুক্তির দৃশ্যপট থেকে। কেননা কেইন্সের মতে, কৃচ্ছ্রসাধনার মধ্য দিয়ে এ ধরনের সংকটের সমাধান করা যায় না; বরং তা আরো ঘনীভূত হয়। পরে তিনি এ প্রসঙ্গে একটি…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.