বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বরাবর দাবি করে আসছে যে ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পর থেকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমন করা হচ্ছে। আর বর্তমান সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে বলছে যে, সংগঠনটি যাদের কথা বলছে তারা ধর্মীয় বা জাতিগত পরিচয়ের কারণে নয়, তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে অপরাধের শিকার হচ্ছেন। এই প্রবন্ধে রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে টার্গেট করা ব্যক্তির সঙ্গে যখন ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে টার্গেট করা ব্যক্তির তুলনা করা হয়েছে এবং সরকারের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে কোথায় ঘাটতি রয়েছে, সেটি খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।

বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গত ৩০ জানুয়ারি তারিখে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছে, ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সারাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ১৭৪টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২৩টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এর পরপরই, বর্তমান ইউনূস সরকার তাদের প্রতিক্রিয়ায়, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গুজব ও ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করে। তাদের দাবি, হত্যার শিকার ব্যক্তিদের কাউকেই তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে হত্যা করা হয়নি, বরং এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে- রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, জমি বিরোধ বা সাধারণ অপরাধ রয়েছে। দুঃখজনক বিষয় হলো, অভিযোগগুলোকে গুরুত্বের সাথে না নিয়ে, এমনকি কোনরকম তদন্ত ছাড়াই সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনটি নাকচ করে দেওয়া হয়। যদিও বর্তমান ইউনূস সরকারের এই প্রতিক্রিয়ায় বিষ্মিত হওয়ার কোনও সুযোগ নেই, কেননা ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর থেকে এখনও পর্যন্ত সরকারের এ ধরনের দ্বায়িত্বহীন আচরণে দেশবাসী অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। আর তাদের এ ধরনের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা এটিই প্রমাণ করে যে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে কোনও

অভিযোগের ক্ষেত্রেই তারা ‘প্রথমেই অস্বীকার ও খারিজ’ করার নীতি গ্রহণ করেছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ।      গত ডিসেম্বরে বর্তমান প্রেস সচিব বা আরও স্পষ্ট করে বললে,সরকারের ‘মুখপাত্র’, একইভাবে অভিযোগগুলোকে অস্বীকার করেছিলেন। উদ্বেগজনক হলেও সত্য, সরকারের এ ধরনের দায়িত্বহীন প্রতিক্রিয়ার কারণে বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীকে ভারতের দালাল কিংবা দেশটির সহানুভূতি বা মনোযোগ আকর্ষণকারী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াতে কয়েকজন ইউটিউবারকে (যেমন টু সেন্ট পডকাস্ট), মদদ জুগিয়েছে। এই বাস্তবতায় বৃহৎ পরিসরে যে প্রশ্ন মনে উঁকি দেয় তা হলো, একটি অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর সেটি রাজনৈতিক নাকি ধর্ম-ভিত্তিক অপরাধ সেটি আসলে কীসের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়? গত ৮ আগস্টের পর থেকেই বর্তমান ইউনূস সরকার ক্রমাগত যুক্তি দিয়ে যাচ্ছে, দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের বেশিরভাগই ঘটছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য। আর তাদের এই ঠুনকো যুক্তিতে মনে হয় যেন, রাজনৈতিক কারণে কাউকে হত্যা করা কোনও অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না!   রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে কারও বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের পেছনের অনুপ্রেরণা ও উদ্দেশ্য প্রকৃতপক্ষে আলাদা, যদিও সেগুলো কখনো কখনো একটি অপরটিকে প্রভাবিত…

এখনও তাড়াহুড়ার কিছু নেই। প্রস্তুতি নিতে হবে গভীরে গোপনে। প্রস্তুতির প্রথম পর্যায় হলো আদর্শিক অবস্থান শক্তিশালী করা। দ্বিতীয় পর্যায়টি হলো অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া, কেন এদের পুনরুত্থান হলো তা খতিয়ে দেখা। আর তৃতীয় পর্যায় হলো প্রতিরোধের। আসুন, শুরু করা যাক।

আজ ২০২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। ছয় মাস আগে সেনাসমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠির সংগঠিত সশস্ত্র হামলা থেকে নিজের জীবন বাঁচাতে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেছেন। আজ সন্ধ্যার পর তিনি দেশের ছাত্র সমাজের প্রতি অনলাইনে বক্তব্য রাখছেন। আর একই সময়ে সেনাসমর্থিত ওই জঙ্গি গোষ্ঠি ড. ইউনুসের অসাংবিধানিক সরকারের মদদে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে আবারও ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগারে আটকে রেখেছিল। সারা বাংলাদেশে তারা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করছিল বিরতিহীনভাবে; কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বাড়িটিতে তারা হামলা করেনি বা কোনো ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করেনি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ও ২০২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সুপরিকল্পিতভাবে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা করা হলো। ২০২৪ ও ২০২৫ সালের এই হামলাকারিরা ১৯৭১ সালের গণহত্যাকারি ও গণহত্যাকারিদের দোসরদের চেয়েও হিংস্র না হলেও অন্তত সমকক্ষ। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এই জঙ্গি গোষ্ঠি ১৯৭১ সালের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে কোটা আন্দোলনের ছদ্মবেশে ছাত্রজনতাকে মিথ্যা বলে প্রতারিত করে ক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতা দখলের আগে পরে তারা ব্যাপক অন্তর্ঘাত, নাশকতা

ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। এই অব্যাহত অন্তর্ঘাত-নাশকতা-হত্যাযজ্ঞের ধারাবাহিতার অংশ হিসেবে পরিচালিত হলো বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে ৫ ফেব্রুয়ারির হামলা। মনে রাখা প্রয়োজন যে এই জঙ্গি গোষ্ঠি ১৯৭১ সালের সকল অর্জন ধ্বংস করে দেয়ার লক্ষ্যে ক্ষমতা দখল করেছে। তারা প্রকাশ্যে বলে রেখেছে প্রয়োজনে তাদের তথাকথিত বিপ্লবের দ্বিতীয় পর্যায় সংঘটিত করবে। তার অংশ হিসেবে তারা ছাত্র-যুব-রাজনীতিকদের পাশাপাশি ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ হত্যা করেছে আর প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সব পদ দখল করছে। এদের বিরুদ্ধে সাধারণ প্রচলিত রাজনৈতিক নীতি ও কৌশল কাজ করবে না। এরা খুনি। এদের হাতে খুন হওয়া যাবে না। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ছয় মাসের মধ্যে বাঙালি জাতি রুখে দাঁড়ালেও ষড়যন্ত্রমূলক পাকিস্তান রাষ্ট্র ধ্বংস করতে তাদের সময় লেগেছিল আরো ২৩ বছর। সেজন্য এখনও তাড়াহুড়ার কিছু নেই। প্রস্তুতি নিতে হবে গভীরে গোপনে। প্রস্তুতির প্রথম পর্যায় হলো আদর্শিক অবস্থান শক্তিশালী করা। দ্বিতীয় পর্যায়টি হলো অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া, কেন এদের পুনরুত্থান হলো তা খতিয়ে দেখা। আর তৃতীয় পর্যায় হলো প্রতিরোধের। আসুন, শুরু করা যাক।

মতিয়া চৌধুরীর আখ্যানের পথে হাঁটতে হাঁটতে আপনি অনুভব করবেন বাংলার উত্থানের গল্পগুলির শেকড় মাটির অনেক গভীরে প্রোথিত। সবই প্রতিরোধ ও স্থিতিস্থাপকতার আখ্যান। তার সবই গণমানুষের মনের কথা - যা নীরব ছিল, অথচ ক্রমেই তার মৃত্যুতে আরও সোচ্চার হয়ে উঠছে।

ব-দ্বীপের রাজধানী তিলোত্তমা ঢাকার বুকের ওপর তিলের মতো এই যে স্থানটুকু - এই ভূঁইখানি শহরের ওয়ার্মহোলগুলোর একটি। এটি আক্রান্ত অসুখী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ডাকবাকসো। দুই ভুবনের মেলবন্ধন ঘটাবার দীগন্ত, কিম্বা মহাকালের এ ভাঁজে টুপ করে ঢুকে পড়ে জীবন অন্য টাইমলাইনে চলে যায়। রাজনীতির ভডেভিল ট্রুপগুলোর পান্ডুলিপিবিহীন নাট্য সংলাপ ও রাজপথের স্ট্রিপটিজ এবং ইসলামিক দলের শিল্পবুদ্ধির পরিচয় অঙ্কিত দেয়ালসজ্জা পেরিয়ে এখানে সতেরই অক্টোবর কিছু মানুষ মাতা প্রকৃতির কাছে তাদের কন্যা মতিয়াকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।বাংলার এ দুহিতাটি বড়ো প্রজ্জ্বলন্ত ছিল! বহু আগে, সে হবে বোধহয় ১৯৬৪ সাল - যখন মেয়েরা তেল চুপচুপ চুল বেঁধে পেতলের কাজললতায় প্রদীপের শিখা থেকে গড়া কাজল চোখে লেপ্টে কণে দেখায় আগত সম্ভাব্য পাত্রপক্ষের সামনে হাঁটু-কম্পিত চরণে ভীরু নতমুখে হেঁটে, বসে বিয়ের ভাইবা দিতো; দুরু দুরু বক্ষে বোনদের সাথে এজমালি কক্ষের কোণটিতে বসে অপেক্ষা করতো “আলহামদুলিল্লাহ”, ঘরভরা হাসি, কিম্বা মায়ের মৃদু কান্না শোনার, সেই কালে- একুশ কি বাইশ বছুরে মতিয়া কিনা তরুণ বজলুর রহমানকে বলেছিলেন, “চলো বিয়ে করে ফেলি।” যেই কথা সেই কাজ। ষোল তারিখ থেকেই তার সহোদর দৌড়োচ্ছিলেন মিউনিসিপ্যালিটির

মহামহা কর্তাদের সামনে কাঁচুমাচু হয়ে বোনের জন্য কিনতে - শহীদ বুদ্ধিজীবি গোরস্থানের এক টুকরো মাটি। শহীদদের পাশে নয় তো আর কোথায় মুক্তিযোদ্ধা মতিয়া চৌধুরীর শেষ শয়ান হতে পারে? মাটি কেনারই অনুমতি দেয় কে আজ? তার জন্য আকাশের দিকে মাথা উঁচু করে রাইফেল গর্জে ওঠে নি, হাঁকে নি জলপাই সৈনিকেরা বুটে বুট ঠুকে খটাখট্ স্যালুট। মাথা আমাদের তার কাছে নতই হয়ে রইল, এই ভেবে যে, বাংলার স্বাধীন পলিমাটিটুকুর উত্তরাধিকারী আমাদের রেখে গেলেন মতিয়াদের মতো স্বদেশ মুক্তির ব্রতে প্রাণ বাজি ধরে লড়ে যাওয়া একগুঁয়ে বহু যোদ্ধা। কিন্তু আমাদেরই সন্তানেরা তাদের বিভৎস অসম্মান দিয়ে আঘাত করলো। বহু বছর আগে যার হাত ধরেছিলেন, সেই সঙ্গীর দুধসাদা অস্থি নুহের মহামৎস্যের মতো তাকে নিজ বক্ষে আহ্বান করলে দুধেল জ্যোৎস্নার চাদরে মুখ ঢেকে দর্শনের আলোর বাইরের কোনও ঘেরাটোপে ঢুকে পড়লেন মতিয়া চৌধুরী।তিনি অন্তর্হিত হতেই যেন চাদ্দিক ঘিরে শ্লথপায়ে মুড়ে এলো সুদীর্ঘ রাজনৈতিক উপন্যাসের প্রচ্ছদ, ঘিরে ধরলো তার জীবনের কাব্যিক আখ্যান। দীর্ঘদিনের দলীয় সঙ্গী ও অনুসারীদের চারপাশে ঘনঘোর হয়ে উঠলো মীথিকাল অতীতে ঘটে যাওয়া কোনও দুঃসময়ের চেহারা ধরে…

আজকের বিজয় দিবসের প্রেক্ষাপট এর পূর্ববর্তী ৫২টি বিজয় দিবস থেকে ভিন্ন। আজ থেকে প্রায় সাড়ে চার মাস আগে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়, রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে শুরু হয় একটা রিসেট বাটন প্রেস করার নিরলস প্রচেষ্টা। ধ্বংসপ্রায় মুক্তিযুদ্ধের বহু ভাস্কর্য এবং স্মৃতিচিহ্ন, যার বিবরণ ৯ ডিসেম্বরের সমকাল পত্রিকায় প্রতিবেদন থেকে খুবই পরিষ্কার। মুজিবনগরের স্মৃতিস্তম্ভ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর, অসংখ্য উদাহরণের মাত্র দুটি।

প্রথমেই বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই ৩০ লাখ শহীদ ও ৪ লাখ মা-বোনকে, যাদের অপরিসীম আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ। শ্রদ্ধা জানাই অসংখ্য বীর মুক্তিযোদ্ধাকে, যারা সমাজের বিভিন্ন স্তরে, নিজ-নিজ অবস্থান থেকে, যার যা আছে, তাই নিয়ে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখেছিলেন। সব সেক্টর কমান্ডারকে জানাই আমার শ্রদ্ধা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সুদীর্ঘ ২৩/২৪ বছরের নিরবিচ্ছিন্ন সংগ্রামের ফসল। ১৯৪৮ ও ১৯৫২ ভাষা আন্দোলন, ৫৪ সালের নির্বাচন, ৬২ শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থান, ১৯৭০-এর নির্বাচন এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৯৭১ সালের মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধ (Epic Liberation War) ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর, ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১, বাংলাদেশ সময় বিকেল পাঁচটা এক মিনিটে দেশ হানাদার মুক্ত হয়, ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ কমান্ডের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মাধ্যমে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার দীর্ঘ পটভুমিতে রয়েছে ধারাবাহিক গণসম্পৃক্ত আন্দোলন। বিভিন্ন পর্যায়ে অগ্রপথিকের ভূমিকায় ছিলেন শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। একজন তরুন নেতা হিসেবে সব আন্দোলনেই সরব

উপস্থিতি ছিলো শেখ মুজিবুর রহমানের। বিশেষত ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে তাঁর ভূমিকা ছিলো সর্বাধিক সুস্পষ্ট এবং তিনি হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার অসন্দিগ্ধু প্রতিভূ। তাঁর অবর্তমানে স্বাধীনতা যুদ্ধের নয় মাস অত্যন্ত প্রতিকুল সময়ে সফল নেতৃত্ব দিয়েছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামান। তাঁদের সবার প্রতি আমার প্রগাঢ় শ্রদ্ধা। আজকের বিজয় দিবসের প্রেক্ষাপট এর পূর্ববর্তী ৫২টি বিজয় দিবস থেকে ভিন্ন। আজ থেকে প্রায় সাড়ে চার মাস আগে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়, রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে শুরু হয় একটা রিসেট বাটন প্রেস করার নিরলস প্রচেষ্টা। ধ্বংসপ্রায় মুক্তিযুদ্ধের বহু ভাস্কর্য এবং স্মৃতিচিহ্ন, যার বিবরণ ৯ ডিসেম্বরের সমকাল পত্রিকায় প্রতিবেদন থেকে খুবই পরিষ্কার। মুজিবনগরের স্মৃতিস্তম্ভ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর, অসংখ্য উদাহরণের মাত্র দুটি। বিজয় দিবসের সরকারী ব্যানারে ২০২৪ জুলাই গণঅভুত্থানে নিহত আবু সাঈদের ছবি সাঁটানো কতটা শোভন, কতটা প্রাসঙ্গিক? আবু সাঈদ কতটা শ্রদ্ধা পেলেন। বিজয় মহিমা ও গৌরবকে ছোট করতে কেন এই ব্যর্থ প্রয়াস? এসব করে কি একাত্তরকে মুছে ফেলা যাবে? আর একটি কথা উল্লেখ…

তাদের মধ্যে আজ এক জনের কথা খুব মনে পড়ছে, পণ্য বর্জনের কথায় তার কথা মনে পড়ে গেল, জীবনে তার সাথেই প্রথম আমার পণ্য বর্জন নিয়ে কথা হয়, তার কাছেই প্রথম শুনি আমরা পণ্য বর্জন করতে পারি, তার একটা মুদ্রা দোষ ছিল কথায় কথায় একটা গল্প বলি বলা, ব্লগপোস্টটার শিরোনামটা তার মুদ্রাদোষ দিয়েই। [...]

স্কুলে থাকতে বছরে ২/৩ বার তো বাড়ি যেতামই কখনো কখনো বছরে ৪/৫ বারও গেছি, ক্লাস সিক্স সেভেন থেকে ক্লাস নাইন টেন পর্যন্ত যখনি গ্রামের বাড়ি যেতাম এদিক ওদিক আপন মনে ঘুরতাম, তার আগে বাড়িতে দাপাদাপি কারো সাথে আত্মীয় বাড়ি এই করেই সময় কাটত। তো এই ৩/৪ বছর আপন মনে ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে গ্রামের প্রকৃতিটাকে যেমন আপন করে পেয়েছি তেমনি কিছু ব্যতিক্রমী লোকের সাথেও পরিচয় কথাবার্তা হয়েছে যা আমার মনের উপর বড় প্রভাব ফেলেছে। দুঃখজনক হল গ্রামের বাড়িতে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আত্মীয় নয় এমন যেসব মানুষের সাথে আমার সখ্যতা গড়ে উঠেছিল এদের কারো সাথেই আর আমার যোগাযোগ থাকেনি এবং পরবর্তীতে কে কোথায় আছে গেছে তারও কোনো খবর রাখা সম্ভব হয়নি। তাদের মধ্যে আজ এক জনের কথা খুব মনে পড়ছে, পণ্য বর্জনের কথায় তার কথা মনে পড়ে গেল, জীবনে তার সাথেই প্রথম আমার পণ্য বর্জন নিয়ে কথা হয়, তার কাছেই প্রথম শুনি আমরা পণ্য বর্জন করতে পারি, তার একটা মুদ্রা দোষ ছিল কথায় কথায় একটা গল্প বলি বলা, ব্লগপোস্টটার শিরোনামটা তার মুদ্রাদোষ দিয়েই। তিনি বলছিলেন পড়াশোনার অনেক গল্প তিনি শুনেছেন কিন্তু নিজে তেমন একটা পড়াশোনা করতে পারেননি, তবে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের দেখা পেলেই তিনি তাদের সাথে কথা বলেন, প্রথমত একটা উপদেশ দেয়ার জন্য - কোনো কিছু মুখস্থ করবেন না, মুখস্থ করলে পড়ার স্বাদ চলে যায়, ওই যে সাত আট ক্লাস পাস দিয়েও আজো যে তিনি যেকোনো কিছু নিয়ে বসে পড়তে শুরু করতে পারেন তার পেছনের শক্তিটা হল তিনি ক্লাসের পড়া কখনো মুখস্থ করতেন না ভাবতেন বুঝতেন তাই তার পড়ার রুচি কোনো দিন মরে যায়নি, দ্বিতীয়ত দুইটা কথা মনে রাখার অনুরোধ জানানোর জন্য - বাঙালির শত্রুকে ঘৃণা করতে হবে আর জবরদখলকারি আর উচ্ছেদকারীকে সারাজীবন ঘৃণা করতে হবে, তৃতীয়ত একজন মানুষের ঋণ শোধ কোনো দিন করা যাবে না এটা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য - শেখ মুজিবুর রহমান। আমাকে তিনি বলেছিলেন এপর্যন্ত একথাগুলো তিনি যত লোককে বলেছিলেন আমাকেই তার মনে হয়েছে আমি তার কথা শুধু মনোযোগ দিয়ে শুনিনিই মনেও রাখব। কিন্তু আজ তাকে মনে পড়েছে আমার অন্য কারণে, প্রথমবারের ওই সেশনের পর…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.