তখন সব প্রতিরোধ, তখন সব প্রত্যয়, তখন সব আত্মগোপনের উদ্ভাস, তখন সব প্রেরণার তন্ত্র ভাষা পেতে থাকে। আর ওই ভাষা তখন প্রতিরোধকে, প্রত্যয়কে, উদ্ভাসকে, তন্ত্রকে মুক্তির পথে সংহত করতে থাকে।

যখন কোথাও স্থান হয় না, যখন ধরে ধরে অপদস্থ করা হয়, যখন জানতে হয় দঙ্গল আক্রান্ত হতে হবে যেকোনো সময়, আবার যখন আত্মহত্যার প্রচারে দেখা যায় পরিকল্পিত মৃত্যুর ছক, যখন সবাই জানে পরাজয়টা এমনই পরাজয় যেখান থেকে আর প্রত্যাবর্তন সম্ভব নয়, যখন অন্যায্য উপহাসের উত্তর দেয়ার জন্য সদাপ্রস্তুত জিভেও চড়া পড়ে যায়, যখন সবচেয়ে ভালবাসার সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞানকে হাত থেকে খুলে ফেলতে হয়, যখন ঐতিহাসিক জাতীয়তাবাদ চরম সংকটে পড়ে যায়, যখন প্রতিটি ভালবাসার জায়গা বিভাজনের বিষে বিষাক্ত, যখন প্রতি মুহূর্তে দমবন্ধ তিক্ত থুথু গিলতে হয়, যখন মৃত্যুর অপেক্ষা ছাড়া আর সব অপেক্ষার মৃত্যু সম্পন্ন, যখন তারপরও জীবন তার দাবি জানিয়ে যায়। তখন সব বঞ্চনার, তখন সব দারিদ্রের, তখন সব নির্যাতনের ইতিহাস ফিরে আসে। আর ওই ইতিহাস তখন আবার বঞ্চনার বিরুদ্ধে, দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিজয়ের অনাগত ডাক দিতে থাকে। কখন স্থান ঘোষিত হতে শুরু হয় কেউ বলতে পারে না, কখন কার্যক্রমের পদসমূহের উদ্ভব হয় কেউ ঠিক ধরতে পারে না, কখন দঙ্গল ক্ষয়িষ্ণু হতে শুরু করে এটা ধরা পড়তে থাকে, কখন সব

মৃত্যুপরিকল্পনা জীবনের গান গাইতে শুরু করে তা ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়, কখন পরাজয় শব্দটা ছোট্ট ছোট্ট পায়ে পরাভূত হতে থাকে, কখন ন্যায়ের অঙ্কুরোদগমে সব উপহাসের গলাবাজি মলিন হতে থাকে, কখন ভালবাসার উদারতা সাংস্কৃতিক জীবনগুলোকে অমোঘ অভিজ্ঞানের মতো কীর্তনময় করে তোলে, কখন ঐতিহাসিক জাতীয়তাবাদ গণচেতনায় পরম প্রত্যয় ঘোষণা করে, কখন ভালবাসার সামনে বিভাজনের সব বিষাক্ত বিষ অকার্যকর হয়ে পড়ে, কখন বৃষ্টির জলে বুকের দমবন্ধ তিক্ততা অবসিত হতে থাকে, কখন মহৎ মৃত্যুর ভাষ্য জীবনের সব অপেক্ষার অবসান ঘটায়, কখন অতঃপর জীবনের দাবি জনপদে জনপদে গভীর আগমনের মতো স্বতঃসঞ্চারিত হতে থাকে। তখন সব প্রতিরোধ, তখন সব প্রত্যয়, তখন সব আত্মগোপনের উদ্ভাস, তখন সব প্রেরণার তন্ত্র ভাষা পেতে থাকে। আর ওই ভাষা তখন প্রতিরোধকে, প্রত্যয়কে, উদ্ভাসকে, তন্ত্রকে মুক্তির পথে সংহত করতে থাকে। তাই ধ্বংসস্তূপ শুধু ধ্বংস নয়, ধ্বংসস্তূপ স্তূপও। আর স্তূপ থেকে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ একত্র হয়। আমাদের বাস্তবতার নবজন্ম হয়। নির্বাচন, নির্বাচন, নির্বাচন করে আমাদের অনির্বাচনের বোধকেই কেন আমরা ভুলে যাচ্ছি। স্তূপ দাঁড়িয়ে আছে। স্তূপ জানিয়ে দিচ্ছে আমাদের হারানোর কিছু নেই। স্তূপ…

এই সর্বকালের সর্বনিকৃষ্ট শান্তিতে নোবেলধারী বাংলাদেশের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দেশ পরিচালনার নামে কী করছে তা এখন তার দেশের মানুষ বুঝতে পারছে ঠিকই কিন্তু সেই দেশের মানুষ তার বিরুদ্ধে এখন আর কিছুই করতে পারছে না।

বাংলাদেশে সুদখোর অর্থপিশাচ অনেক আছে কিন্তু সুদখোর অর্থপিশাচ অথচ নোবেলধারী একজনই আছে এবং তার চেয়েও বড় কথা এবং যে কথার চেয়ে বড় কথা আর নেই তা এই যে বাংলাদেশে নোবেলধারী সবেধন এই একজনই আছে। এখন এই নোবেলধারী সারা পৃথিবীতে এত নোবেলধারীর মধ্যেও একজনই একজনই একজনই যে তার দেশের ক্ষমতাসীন সরকারকে রাস্তায় গৃহযুদ্ধ ঘটিয়ে উচ্ছেদ করে ক্ষমতা দখল করেছে। তো এই সর্বকালের সর্বনিকৃষ্ট শান্তিতে নোবেলধারী বাংলাদেশের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দেশ পরিচালনার নামে কী করছে তা এখন তার দেশের মানুষ বুঝতে পারছে ঠিকই কিন্তু সেই দেশের মানুষ তার বিরুদ্ধে এখন আর কিছুই করতে পারছে না। এখানেই শূন্যের যাদু। এই সেই শূন্য যাকে আমরা বাংলায় গোল্লাও বলি এবং এই সেই গোল্লা যাকে ইংরেজিতে ZEROও বলে আর এই নোবেলধারীই আবার তিন গোল্লার ফেরিওয়ালা হিসেবে আমেরিকা ও ইউরোপে উদারঅনুদার প্রভুদের পোঁদে পোঁদে সারা পৃথিবী চষে বেড়িয়েছে কারণ তাদের ভয়ংকর পরিকল্পনার অংশ হয়েই একদিন যেন এই বাংলাদেশকে সে পদানত করতে পারে। আমরা যারা বাংলাদেশকে ভালবেসেছি। আমরা যারা বাংলাদেশকে প্রাণের চেয়েও প্রিয় বলেছি। আমাদের বিরুদ্ধে এই একটি

লোককে দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়েছে। এই লোকটি আমাদের জীবনের আমাদের প্রাণের সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধের সমস্ত বর্হিশক্তি এক হয়ে তাদের দানব হিসেবে এই লোকটাকে আমাদের সব উন্নয়নের পথ অবরুদ্ধ করার কর্মকাণ্ডে জগদ্দল পাথর করে বসিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশের ভেতরের সমস্ত প্রতিক্রিয়াশীলতাকে এই লোক এক করেছে। বাংলাদেশের ভেতরের সর্বমুখী উগ্রবাদকে এই লোক সতত দঙ্গলের বেশে হানাদার করে রেখেছে। আর এই ভাবে এই লোক আমাদের প্রতিটি দিন আমাদের প্রতিটি রাতকে প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে পিষে মারছে। আর এই ভাবে এই তিন গোল্লার ফেরিওয়ালার টুকরিতে তার ইউরোপ আমেরিকার উদারঅনুদার প্রভুরা সেই গোল্লাটি তুলে দিয়েছে যে গোল্লাটি তুলে দেয়ার জন্যই প্রায় দুই দশক আগে তাকে শান্তিতে নোবেলধারী বানানো হয়েছিল। এই সেই চতুর্থ চতুর গোল্লা। এই সেই ইউরোপ আমেরিকার উদারঅনুদার প্রভুদের বৈশ্বিক দক্ষিণের জন্য বানানো শূন্য রাজনীতির বড়ি। বাংলাদেশকে দিয়ে এই বড়ির প্রয়োগ শুরু হল। বাংলাদেশ বুঝতে পারছে। কিন্তু কিছু করতে পারছে না। কারণ এই চতুর্থ চতুর গোল্লা সমান শূন্য রাজনীতির বাংলাদেশ।

ঐতিহাসিক মে দিবসের আলোচনায় অবৈধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস শ্রমিকদের নিয়ে নানা গালভরা গল্প শুনিয়েছে। কিন্তু গত আট মাসে তার অসাংবিধানিক শাসনামলেই কল-কারখানা বন্ধ হওয়ায় লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার হয়েছেন, বেতন-ভাতার দাবিতে রাস্তায় আন্দোলন করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় গুলিতে নিহত হয়েছেন। শ্রমিক আন্দোলন দমনের জন্য শ্রমিক নেতাদের আইন-বহির্ভূতভাবে আটক করা হয়েছে। বোনাস তো দূরের কথা, ঈদের আগে ন্যায্য বেতনটুকুও পাননি হাজার হাজার শ্রমিক। আর ইউনূস মে দিবসের গান শুনিয়ে তার তল্পিবাহক বুদ্ধিজীবীদের শেখাচ্ছে, কীভাবে প্রভুর দালালি করে যেতে হয়।

লেখাটি যখন লিখছি, তখনও ক্যালেন্ডারের পাতায় এপ্রিল মাসের শেষ দিনের শেষপ্রহর—পহেলা মে এখনও আসেনি। কিন্তু ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ দেশের কর্পোরেট গণমাধ্যমগুলোতে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের নানা বক্তব্য-বিজ্ঞাপন-কর্মসূচীর হৈ-হুল্লুড় চলছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ঝুলানো হয়েছে মহান মে দিবসের গরম গরম ব্যানার। ওয়েবসাইটে ঢুকলেই অবৈধ ইউনূস সরকারের আমলে শ্রমিকের ঝুলন্ত লাশের মতো ব্যানারটি ঝুলে থাকে। তার পাশেই কানছোঁয়া হাসির ঠ্যালায় চোখ বুজে যাওয়া প্রধান উপদেষ্টা—ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবি; তার নিচেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেনের বেশ একটা সিনেম্যাটিক ক্লোজ পোর্ট্রেট। নিচে স্ক্রল যাচ্ছে—“শ্রমিক মালিক এক হয়ে, গড়বো এদেশ নতুন করে।”1 এরই মধ্যে টানা তিনদিনের ছুটির আমেজে মো মো করছে আমাদের নাগরিক সমাজের ভদ্রলোকের ড্রয়িংরুম—কেউ কেউ হয়তো বেশ জমানো একটি ট্যুর প্ল্যানও সেরে নিয়েছেন ক্যালেন্ডার দেখে। ফেসবুকে কয়েকটি ট্র্যাভেল গ্রুপের পেইজ ঘুরে দেখলাম—তিনদিনের ছুটিতে “মে দিবসের আকর্ষণীয় অফারে” কক্সবাজার, সিলেট কিংবা হাওড়ে বেড়ানোর বেশ তুলতুলে প্যাকেজ আইটেনারি ঘুরছে। আর এই ছুটির ছন্দে রাজনৈতিক ঘষাঘষিতে উৎসাহী হয়ে উঠেছে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো—খবরে প্রকাশ, রাজধানীতে পর পর তিনদিনে ৪ দলের সমাবেশ2। ভাগ্যিস

১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটে নির্বিচারে শ্রমিক হত্যা হয়েছিল, নাহলে ২০২৫ সালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এমন Heyday কোথায় পেত? বোঝাই যাচ্ছে, বেশ একটা উদযাপন ভাব নিয়ে ইউনূস সরকার এবারের মে দিবস পালনে বদ্ধপরিকর হয়েছে। বিয়ের পর প্রথমবার বেড়াতে যাওয়ার মতো ইউনূস সরকারের প্রথমবার মে দিবস উদযাপন। নিশ্চয়ই আগামীকাল সংবাদপত্রে প্রধান উপদেষ্টার বেশ কিছু সরকারি বাণী প্রচারিত হবে। সরকারি আয়োজনে শ্রমিকের অধিকার রক্ষা বিষয়ক বেশ কিছু দরকারি কথা বলবে আমাদের নোবেলবাবু। আমাদের নাতিশীতোষ্ণ মিডিয়া সেগুলো প্রচার করবে অক্ষরে অক্ষরে—একেবারে মেপে: একটু বেশিও নয়, একটু কমও নয়—কম-বেশি হলেই কিন্তু সাংবাদিকের চাকরি যাবে3। এসব ঝা চকচকে ঘটনাবলীর মধ্যে অবশ্য জানা যাবে না, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান থাকাকালীন ড. ইউনূস যে শ্রম আইন লঙ্ঘন করে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ দেয়নি—তার কী হলো; জানা যাবে না, ১০১ জন শ্রমিকের যে চাকুরি স্থায়ী করা হয়নি4—তাঁরা এখন কেমন আছেন? অবশ্য সেই মামলা এখন আর নেই—ক্ষমতা গ্রহণের আগের দিন (৭ আগস্ট ২০২৪) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দণ্ড বাতিল করে5 সাফসুতরো সাজার মেকাপ নিয়েই মসনদে বসেছে…

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বরাবর দাবি করে আসছে যে ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পর থেকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমন করা হচ্ছে। আর বর্তমান সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে বলছে যে, সংগঠনটি যাদের কথা বলছে তারা ধর্মীয় বা জাতিগত পরিচয়ের কারণে নয়, তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে অপরাধের শিকার হচ্ছেন। এই প্রবন্ধে রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে টার্গেট করা ব্যক্তির সঙ্গে যখন ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে টার্গেট করা ব্যক্তির তুলনা করা হয়েছে এবং সরকারের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে কোথায় ঘাটতি রয়েছে, সেটি খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।

বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গত ৩০ জানুয়ারি তারিখে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছে, ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সারাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ১৭৪টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২৩টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এর পরপরই, বর্তমান ইউনূস সরকার তাদের প্রতিক্রিয়ায়, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গুজব ও ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করে। তাদের দাবি, হত্যার শিকার ব্যক্তিদের কাউকেই তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে হত্যা করা হয়নি, বরং এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে- রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, জমি বিরোধ বা সাধারণ অপরাধ রয়েছে। দুঃখজনক বিষয় হলো, অভিযোগগুলোকে গুরুত্বের সাথে না নিয়ে, এমনকি কোনরকম তদন্ত ছাড়াই সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনটি নাকচ করে দেওয়া হয়। যদিও বর্তমান ইউনূস সরকারের এই প্রতিক্রিয়ায় বিষ্মিত হওয়ার কোনও সুযোগ নেই, কেননা ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর থেকে এখনও পর্যন্ত সরকারের এ ধরনের দ্বায়িত্বহীন আচরণে দেশবাসী অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। আর তাদের এ ধরনের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা এটিই প্রমাণ করে যে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে কোনও

অভিযোগের ক্ষেত্রেই তারা ‘প্রথমেই অস্বীকার ও খারিজ’ করার নীতি গ্রহণ করেছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ।      গত ডিসেম্বরে বর্তমান প্রেস সচিব বা আরও স্পষ্ট করে বললে,সরকারের ‘মুখপাত্র’, একইভাবে অভিযোগগুলোকে অস্বীকার করেছিলেন। উদ্বেগজনক হলেও সত্য, সরকারের এ ধরনের দায়িত্বহীন প্রতিক্রিয়ার কারণে বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীকে ভারতের দালাল কিংবা দেশটির সহানুভূতি বা মনোযোগ আকর্ষণকারী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াতে কয়েকজন ইউটিউবারকে (যেমন টু সেন্ট পডকাস্ট), মদদ জুগিয়েছে। এই বাস্তবতায় বৃহৎ পরিসরে যে প্রশ্ন মনে উঁকি দেয় তা হলো, একটি অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর সেটি রাজনৈতিক নাকি ধর্ম-ভিত্তিক অপরাধ সেটি আসলে কীসের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়? গত ৮ আগস্টের পর থেকেই বর্তমান ইউনূস সরকার ক্রমাগত যুক্তি দিয়ে যাচ্ছে, দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের বেশিরভাগই ঘটছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য। আর তাদের এই ঠুনকো যুক্তিতে মনে হয় যেন, রাজনৈতিক কারণে কাউকে হত্যা করা কোনও অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না!   রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে কারও বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের পেছনের অনুপ্রেরণা ও উদ্দেশ্য প্রকৃতপক্ষে আলাদা, যদিও সেগুলো কখনো কখনো একটি অপরটিকে প্রভাবিত…

এখনও তাড়াহুড়ার কিছু নেই। প্রস্তুতি নিতে হবে গভীরে গোপনে। প্রস্তুতির প্রথম পর্যায় হলো আদর্শিক অবস্থান শক্তিশালী করা। দ্বিতীয় পর্যায়টি হলো অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া, কেন এদের পুনরুত্থান হলো তা খতিয়ে দেখা। আর তৃতীয় পর্যায় হলো প্রতিরোধের। আসুন, শুরু করা যাক।

আজ ২০২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। ছয় মাস আগে সেনাসমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠির সংগঠিত সশস্ত্র হামলা থেকে নিজের জীবন বাঁচাতে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেছেন। আজ সন্ধ্যার পর তিনি দেশের ছাত্র সমাজের প্রতি অনলাইনে বক্তব্য রাখছেন। আর একই সময়ে সেনাসমর্থিত ওই জঙ্গি গোষ্ঠি ড. ইউনুসের অসাংবিধানিক সরকারের মদদে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে আবারও ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগারে আটকে রেখেছিল। সারা বাংলাদেশে তারা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করছিল বিরতিহীনভাবে; কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বাড়িটিতে তারা হামলা করেনি বা কোনো ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করেনি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ও ২০২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সুপরিকল্পিতভাবে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা করা হলো। ২০২৪ ও ২০২৫ সালের এই হামলাকারিরা ১৯৭১ সালের গণহত্যাকারি ও গণহত্যাকারিদের দোসরদের চেয়েও হিংস্র না হলেও অন্তত সমকক্ষ। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এই জঙ্গি গোষ্ঠি ১৯৭১ সালের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে কোটা আন্দোলনের ছদ্মবেশে ছাত্রজনতাকে মিথ্যা বলে প্রতারিত করে ক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতা দখলের আগে পরে তারা ব্যাপক অন্তর্ঘাত, নাশকতা

ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। এই অব্যাহত অন্তর্ঘাত-নাশকতা-হত্যাযজ্ঞের ধারাবাহিতার অংশ হিসেবে পরিচালিত হলো বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে ৫ ফেব্রুয়ারির হামলা। মনে রাখা প্রয়োজন যে এই জঙ্গি গোষ্ঠি ১৯৭১ সালের সকল অর্জন ধ্বংস করে দেয়ার লক্ষ্যে ক্ষমতা দখল করেছে। তারা প্রকাশ্যে বলে রেখেছে প্রয়োজনে তাদের তথাকথিত বিপ্লবের দ্বিতীয় পর্যায় সংঘটিত করবে। তার অংশ হিসেবে তারা ছাত্র-যুব-রাজনীতিকদের পাশাপাশি ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ হত্যা করেছে আর প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সব পদ দখল করছে। এদের বিরুদ্ধে সাধারণ প্রচলিত রাজনৈতিক নীতি ও কৌশল কাজ করবে না। এরা খুনি। এদের হাতে খুন হওয়া যাবে না। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ছয় মাসের মধ্যে বাঙালি জাতি রুখে দাঁড়ালেও ষড়যন্ত্রমূলক পাকিস্তান রাষ্ট্র ধ্বংস করতে তাদের সময় লেগেছিল আরো ২৩ বছর। সেজন্য এখনও তাড়াহুড়ার কিছু নেই। প্রস্তুতি নিতে হবে গভীরে গোপনে। প্রস্তুতির প্রথম পর্যায় হলো আদর্শিক অবস্থান শক্তিশালী করা। দ্বিতীয় পর্যায়টি হলো অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া, কেন এদের পুনরুত্থান হলো তা খতিয়ে দেখা। আর তৃতীয় পর্যায় হলো প্রতিরোধের। আসুন, শুরু করা যাক।

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.