যখন কোথাও স্থান হয় না, যখন ধরে ধরে অপদস্থ করা হয়, যখন জানতে হয় দঙ্গল আক্রান্ত হতে হবে যেকোনো সময়, আবার যখন আত্মহত্যার প্রচারে দেখা যায় পরিকল্পিত মৃত্যুর ছক, যখন সবাই জানে পরাজয়টা এমনই পরাজয় যেখান থেকে আর প্রত্যাবর্তন সম্ভব নয়, যখন অন্যায্য উপহাসের উত্তর দেয়ার জন্য সদাপ্রস্তুত জিভেও চড়া পড়ে যায়, যখন সবচেয়ে ভালবাসার সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞানকে হাত থেকে খুলে ফেলতে হয়, যখন ঐতিহাসিক জাতীয়তাবাদ চরম সংকটে পড়ে যায়, যখন প্রতিটি ভালবাসার জায়গা বিভাজনের বিষে বিষাক্ত, যখন প্রতি মুহূর্তে দমবন্ধ তিক্ত থুথু গিলতে হয়, যখন মৃত্যুর অপেক্ষা ছাড়া আর সব অপেক্ষার মৃত্যু সম্পন্ন, যখন তারপরও জীবন তার দাবি জানিয়ে যায়। তখন সব বঞ্চনার, তখন সব দারিদ্রের, তখন সব নির্যাতনের ইতিহাস ফিরে আসে। আর ওই ইতিহাস তখন আবার বঞ্চনার বিরুদ্ধে, দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিজয়ের অনাগত ডাক দিতে থাকে। কখন স্থান ঘোষিত হতে শুরু হয় কেউ বলতে পারে না, কখন কার্যক্রমের পদসমূহের উদ্ভব হয় কেউ ঠিক ধরতে পারে না, কখন দঙ্গল ক্ষয়িষ্ণু হতে শুরু করে এটা ধরা পড়তে থাকে, কখন সব
মৃত্যুপরিকল্পনা জীবনের গান গাইতে শুরু করে তা ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়, কখন পরাজয় শব্দটা ছোট্ট ছোট্ট পায়ে পরাভূত হতে থাকে, কখন ন্যায়ের অঙ্কুরোদগমে সব উপহাসের গলাবাজি মলিন হতে থাকে, কখন ভালবাসার উদারতা সাংস্কৃতিক জীবনগুলোকে অমোঘ অভিজ্ঞানের মতো কীর্তনময় করে তোলে, কখন ঐতিহাসিক জাতীয়তাবাদ গণচেতনায় পরম প্রত্যয় ঘোষণা করে, কখন ভালবাসার সামনে বিভাজনের সব বিষাক্ত বিষ অকার্যকর হয়ে পড়ে, কখন বৃষ্টির জলে বুকের দমবন্ধ তিক্ততা অবসিত হতে থাকে, কখন মহৎ মৃত্যুর ভাষ্য জীবনের সব অপেক্ষার অবসান ঘটায়, কখন অতঃপর জীবনের দাবি জনপদে জনপদে গভীর আগমনের মতো স্বতঃসঞ্চারিত হতে থাকে। তখন সব প্রতিরোধ, তখন সব প্রত্যয়, তখন সব আত্মগোপনের উদ্ভাস, তখন সব প্রেরণার তন্ত্র ভাষা পেতে থাকে। আর ওই ভাষা তখন প্রতিরোধকে, প্রত্যয়কে, উদ্ভাসকে, তন্ত্রকে মুক্তির পথে সংহত করতে থাকে। তাই ধ্বংসস্তূপ শুধু ধ্বংস নয়, ধ্বংসস্তূপ স্তূপও। আর স্তূপ থেকে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ একত্র হয়। আমাদের বাস্তবতার নবজন্ম হয়। নির্বাচন, নির্বাচন, নির্বাচন করে আমাদের অনির্বাচনের বোধকেই কেন আমরা ভুলে যাচ্ছি। স্তূপ দাঁড়িয়ে আছে। স্তূপ জানিয়ে দিচ্ছে আমাদের হারানোর কিছু নেই। স্তূপ…