৫ আগস্ট ২০২৪-এ বাংলাদেশের তথাকথিত "গণ-অভ্যুত্থানে" ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্রটি রাজনৈতিক ভাষায় যতটা নাটকীয়, বিশ্লেষণে ততটাই বিভ্রান্তিকর ও বাস্তবতা-বিচ্যূত। এটি ইতিহাস ও সংবিধানকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করেছে, যা পক্ষপাতদুষ্ট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক পক্ষের স্বার্থে রচিত। কেন? বলছেন জাহানারা নূরী।

অবৈধ জুলাই সনদ

অধ্যায় এক.  রাষ্ট্র ও জনজীবন-যাপনের ধারা উন্নয়নের নানা দিক বিবেচনা করলে দেখা যায় রাষ্ট্রকে টিকে থাকতে হলে ব্যক্তি অধিকার ও বৈপ্লবিক ধ্বংসযজ্ঞের চেয়ে  রাষ্ট্র, আইন ও শৃঙ্ক্ষলা প্রাধান্য পায় । একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্র কাঠামোই প্রকৃত মানবাধিকার রক্ষার শর্ত। যে কোনো বিপ্লবই যদি রাষ্ট্রের ভিত নাড়িয়ে দেয়, তা সভ্যতা, জনপদের জীবন ও নিরাপত্তার পরিপন্থী।   যে কারণে ৫ আগস্ট ২০২৪-এ বাংলাদেশের তথাকথিত "গণ-অভ্যুত্থানে" ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্রটি রাজনৈতিক ভাষায় যতটা নাটকীয়, বিশ্লেষণে ততটাই বিভ্রান্তিকর ও বাস্তবতা-বিচ্যূত। এটি ইতিহাস ও সংবিধানকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করেছে, যা পক্ষপাতদুষ্ট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক পক্ষের স্বার্থে রচিত। রাষ্ট্রীয় ও আইনগত যুক্তির আলোকে এই ঘোষণাপত্রের মূল দাবিগুলো বিশ্লেষণ করা যাক।   ধারা ১-২:   ঘোষণাপত্রটি স্বাধীনতার ইতিহাস পুনর্লিখনের উদ্দেশ্যে শুরু থেকেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করেছে, যাতে মনে হয় ১৯৭১ সালের যুদ্ধের নেতৃত্ব ও সংগঠকদের ভূমিকা ম্লান করে জনতার স্পন্টেনিয়াস লড়াইকে কেন্দ্র করে একটি রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার বয়ান বলা যায়। এটি প্রকৃত ইতিহাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মুক্তিযুদ্ধ ছিল গণমানুষের দীর্ঘ আন্দোলন, রক্তপাত, লড়াই এবং স্বাধীনতার পথে সচেতন উত্থান,  রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও

সামরিক প্রতিরোধের সমন্বয়ের ফসল—এটি কোনো নেতা-শূন্য লুকোনো- ছাপানো গণপ্রতিরোধ নয়।  ধারা ৩-৪:   ১৯৭২ সংবিধান ও বাকশাল নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করে এতে নিন্দনীয় একটা ভূমিকা পালন করা হয়েছে। ১৯৭২ সালের সংবিধান ছিল দক্ষিণ এশিয়ায় এমন কি বিশ্বে ও গৃহীত প্রশংসিত অন্যতম প্রগতিশীল একটি দলিল, যেখানে মৌলিক অধিকার, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রের কাঠামো নির্ধারণ করা হয়। একে "কাঠামোগতভাবে দুর্বল" বলা রাজনৈতিক অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয়। বাকশাল ব্যবস্থা নিয়ে একপাক্ষিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তকে কেবলমাত্র ক্ষমতা লোভের ফলাফল হিসেবে তুলে ধরা হয়। এই বয়ান শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার আগে থেকেই, যার পেছনে ছিল তৎকালীন দেশে নৈরাজ্য, দুর্নীতি ও বারবার সামরিক ষড়যন্ত্র।  ধারা ৫-৭:   গণতন্ত্রের ইতিহাসকে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ঘোষণাপত্রে ১৯৯০-এর গণ-অভ্যুত্থান ও ১/১১-কে যথেচ্ছভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, এবং বর্তমান গণতান্ত্রিক সংবিধানিক ধারাবাহিকতাকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এই সনদ দিয়ে বাংলাদেশের জনগনের স্বাধীনতা ও জাতির গণতান্ত্রিক চেতনাকে চূড়ান্ত অপমান করা হয়েছে। সংবিধানের পরিবর্তন জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমেই সম্ভব, কোনো মুখোশধারী গোষ্ঠীর বা নির্বকারত্বের চেহানার ধারী…

সময় শুরু এখন [...]

টুইট করতে করতে অনেক সময় এমন কিছু গুচ্ছ টুইট হয়ে যায় যেগুলোকে পোস্টের রূপ সহজে দেয়া যায়। সেকাজটাই এখানে করা হল। আগে এরকম প্রচুর টুইট কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। এখন থেকে ভাবছি, এরকম টুইটগুলোকে ‘টুইট থেকে পোস্টে’ সিরিজে সংগ্রহ করে রাখব। এখন আমেরিকা যেসব #ব্লগার #হামব্লগার*-দের আশ্রয় দেবে যেসব #এক্টিভিস্ট #হামএক্টিভিস্ট-দের আশ্রয় দেবে ১/... * https://t.co/fiYupDwZeo— MasudKarimমাক (@urumurum) May 4, 2016 তাদেরকে ইউএস @StateDept অলিখিত আবশ্যিকতায় #বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণায় মদত দেবে তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। আমেরিকা এধরনের সুযোগ ২/...— MasudKarimমাক (@urumurum) May 4, 2016 কখনোই কোনো দেশের খাতিরেই ছাড়ে না, আর #বাংলাদেশ-এর ক্ষেত্রে তো তারা মুখিয়েই থাকে, কারণ তারা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় #FDI পার্টনার অথচ ৩/...— MasudKarimমাক (@urumurum) May 4, 2016 #বাংলাদেশ-এর জনগনের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ এখনো #১৯৭১মুক্তিযুদ্ধ-এ আমেরিকার সরকারের #বাংলাদেশ বিরোধী ভূমিকার জন্য এখনো #আমেরিকা-কে ৪/...— MasudKarimমাক (@urumurum) May 4, 2016 প্রধান #আন্তর্জাতিক শত্রু হিসেবেই দেখে, যদিও বাংলাদেশের সেইসব মানুষদের মধ্যে আমেরিকার সাধারণ মানুষদের প্রতি ও আমেরিকায় বসবাসের প্রতি ৫/...— MasudKarimমাক (@urumurum) May 4, 2016 একধরনের #আকর্ষণ সবসময়ের জন্যই পরিলক্ষিত হয়, এবং এটা #কেরিয়ার জীবনদর্শনের খুব সহজ নিয়মের অন্তর্গত তাই স্বাভাবিকভাবেই এতে দোষের কিছু ৬/...— MasudKarimমাক (@urumurum) May 4, 2016 নেই। কিন্তু সমস্যাটা হয় #বাংলাদেশ #ভারত কিংবা #চীন নয়, ভারত কিংবা চীনের আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে #ইউএস @StateDeptএর ঘোঁট পাকানোর ৭/...— MasudKarimমাক (@urumurum) May 4, 2016 চেষ্টা বিরতিহীনভাবে অব্যাহত থাকলেও চীন ও ভারতের #সামরিক ও #রাজনৈতিক শক্তির বিবেচনায় আমেরিকাকে সবসময় #তৈলাক্তবাঁশ মডেলের বিদেশনীতির ৮/...— MasudKarimমাক (@urumurum) May 4, 2016 অনুসরনেই #সর্বক্ষণ লেগে থাকতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশের এখনো পর্যন্ত না আছে সেই অর্থে #জনগণবাদী আঞ্চলিক সামরিকশক্তি না আছে শক্তমাটির উপর ৯/...— MasudKarimমাক (@urumurum) May 4, 2016 দাঁড়ানো ক্ষমতাধর আধিপত্যের #রাজনীতি, কাজেই #বাংলাদেশ-এর উপর আমেরিকার ক্ষমতার আধিপত্যের বাণিজ্যিক কূটকচাল #কৌটিল্যকথিত পথেই চলবে, এবং ১০/...— MasudKarimমাক (@urumurum) May 4, 2016 এভাবেই আমেরিকার এখনকার #সরকার তার আসন্ন সরকারের হাতে সব কলকাঠি তুলে দিতে যথারীতি #বদ্ধপরিকর, এবং তার পাশাপাশি আমাদের সরকার ও ১১/...— MasudKarimমাক (@urumurum) May 4, 2016 #রাষ্ট্রযন্ত্র-এর যেখানে যেখানে এখনই ঘুণের উপদ্রব বাড়াতে হবে তার কাজ পূর্ণোদ্যমে শুরু করে দিয়েছে ইউএস @StateDept। মূলত…

মহিউদ্দিন আহমদকে জানি তাঁর একটি লেখার মাধ্যমে, তাও খুব সীমিত পর্যায়ে। গত বছর জুন ২, ২০১৩ তারিখে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় তাঁর “তাহের-জিয়া ও ৭ নভেম্বরের সাতকাহন” [১] রচনাটি চোখে পড়ে। লেখাতে ব্যাপক তথ্যগত ভুল লক্ষ্য করি এবং তার কিছুদিন পর “‘তাহের-জিয়া ও ৭ নভেম্বরের সাতকাহন’ - একটি সতর্ক পর্যালোচনা” [২] রচনায় ভুলগুলো বিডিনিউজ২৪-এর পাঠকদের সামনে তুলে ধরি। মহিউদ্দিন আহমদ তাঁর রচনার শেষে নিজেকে পরিচয় দিয়েছিলেন ‘লেখক ও গবেষক’ হিসেবে। মনে মৃদু আশা ছিল জনাব আহমদ আমার লেখার জবাব দেবেন। একজন প্রকৃত গবেষক তাঁর লেখার সমালোচনার জবাব সাধারণত দিয়ে থাকেন কারণ তা সত্য অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার একটি অংশ বলেই বিবেচিত। তিনি জবাব দেননি। পরবর্তী মাসগুলোতে মহিউদ্দিন আহমদের লেখা আর তেমন পড়া হয়নি। এ বছর জুলাই মাসে প্রথম আলোর ঈদ সংখ্যায় জনাব আহমদের রচনা “৭ নভেম্বরের সাত-সতেরো”[৩] প্রকাশিত হয়। এর পরপরই চলতি বছরের জুলাই ১৫, আগস্ট ১২, ১৩, ১৪ ও ২৫ তারিখে প্রথম আলো পত্রিকায় জনাব আহমদের জাসদ-তাহের সংক্রান্ত আরো পাঁচটি লেখা প্রকাশিত হয়। [৪] মনোযোগ দিয়ে সেগুলো পড়েছি। গত বছরের লেখার মত এবারো তিনি বহু ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছেন। সেগুলোকে চিহ্নিত করাই আজকের লেখার মূল লক্ষ্য। একই সাথে জনাব আহমদ যে একটি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ‘রাজনৈতিক ন্যারেটিভ’ চালু করার উদ্দেশ্যে তাহের ও জাসদ সম্পর্কে উপরে বর্ণিত লেখাগুলো লিখেছেন, সেই বিষয়েও আলোচনা করবো। মূল আলোচনায় যাওয়ার পূর্বে ‘লেখক ও গবেষক’ মহিউদ্দিন আহমদ সম্পর্কে অনলাইনে অনুসন্ধান চালিয়ে যা জানতে পেরেছি তা পাঠকদের সামনে তুলে ধরছি। ফেইসবুকের একটি থ্রেডে ডাকসু’র প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ড. মুশতাক হোসেন জানাচ্ছেন যে মহিউদ্দিন আহমদ এক সময় জাসদ করতেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি গণকন্ঠ পত্রিকা ও বিপ্লবী গণবাহিনীর সদস্য ছিলেন। ৮০’র দশকে জাসদের ভাঙ্গনের পর তিনি সরাসরি রাজনীতি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেন। আরও জেনেছি তিনি এনজিও-র সাথে দীর্ঘ সময় ধরে যুক্ত। ‘লেখক ও গবেষক’ জনাব আহমদের ‘গবেষণা’ সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। গত বছর “তাহের-জিয়া ও ৭ নভেম্বরের সাতকাহন” রচনায় তিনি রায় দিয়েছেন, “৭ নভেম্বর ও তার আগে ও পরের তাহেরকে আমরা প্রথম পাই লরেন্স লিফশুলজের লেখা বাংলাদেশ অ্যান আনফিনিশড রেভল্যুশন গ্রন্থে। এটাও ইতিহাস নয়। ইতিহাস লেখা খুব সহজ কাজ নয়।”…

অন্য কোনো বেড়ালের সঙ্গে লড়াই করে সে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল না জন্ম থেকেই অন্ধ ছিল তা আর জানার উপায় নেই। [...]

সম্ভবত আমি ছোটগল্প খুবই কম পড়েছি, এমনও হতে পারে আমার পড়া উপন্যাসের চেয়েও পড়া ছোটগল্পের সংখ্যা কম, অথবা এমনও হতে পারে – এটা মিথ, ব্যক্তিগত – যাতে পড়েও অস্বীকারের প্রবণতা বিশেষ প্রকট বিশেষ বস্তুরাশির উপর মানসিক অবজ্ঞাতির সাধারণ কারণে। এনিয়ে যখন তৃতীয় কি চতুর্থবার গল্পটি পড়লাম, বিশেষত লেখক মরে যাবার পরে, কোন লেখাটি পড়ব ভেবে যখন ‘অন্ধ বেড়াল’ পড়তে শুরু করেছি, তৃতীয় কি চতুর্থবার, তখন থেকেই ভাবছি ঠিক কেন এছোটগল্পটি পড়তে আমার ভাল লাগে – সেই প্রথম যখন পড়েছি আজ থেকে কয়েক বছর আগে আর এবার যখন পড়লাম ঠিক একই রকম লাগল, একই রকম দ্রুততায় পুরো গল্পটা ভুলে গেলাম, একই রকম আচ্ছন্নতায় উদ্বেগ জেগে রইল, একই রকম নিঃসঙ্গতার হানা হানা আক্রমণ থেকে থেকে অন্ধকারকে ঠেলে আরো অন্ধকারে নিয়ে গেল, আমি দূরেই থাকলাম, শুধু হোটেলটাকে মনে হল খুব চেনা, আমিও থাকতাম হয়তো – থেকেছি অনেক দিন, এপ্রসঙ্গ কোনোদিন আসতই না – তবে এটা কি ঠিক ছোটগল্প, বিশেষত ‘অন্ধ বেড়াল’-এর মতো ছোটগল্প সেরকম কিছুই প্রথম থেকেই করতে পারে, যা আমাকে পথের ধারে নিয়ে যায়, যেপথের ধারে উদ্বেগ দাঁড়িয়ে আছে শুঁয়োপোকা প্রজাপতি হওয়ার দিকে প্রাণিত হচ্ছে, জলরাশি শুয়ে আছে এবং সবচেয়ে বড় কথা আমি নিজেই পথের ধার হয়ে পড়ে আছি। সব ছোটগল্পের শুরুর মতোই এছোটগল্পেও আমার এপরিণতির দায় কার দিয়েই শুরু হয়েছে, পরিবেশটা ফুটে উঠেছে কিছুমাত্র দেরি না করেই, যা বোধের অতীত বা যা বোধেরই অধিগম্য সেসব একে একে আসতে শুরু করেছে , শুরু থেকেই শুরুটাকে জানিয়ে দেয়ার ক্লাসিক অবস্হানটাকে কোনো ছোটোগল্পই কোনো কালেই অস্বীকার করেনি, কোনো কালেই বলতে কোনো আধুনিক কালেই , যেহেতু ছোটগল্প ফিল্মের মতোই একটি আধুনিক প্রকাশ মাধ্যম, তাই খুব একুরেট, হতে চেয়েছে – হতে হয়েছে, এটা নিতান্তই এক ধরনের অনিশ্চিত নির্দিষ্টতা, বলতে গেলে – এজন্যই শিল্পের সৃষ্টি তার অস্তিত্ব, তাই শুরুতেই সেআবেশ কাজ করে রূপান্তরের মতো। অন্য কোনো বেড়ালের সঙ্গে লড়াই করে সে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল না জন্ম থেকেই অন্ধ ছিল তা আর জানার উপায় নেই। সে শহরের বেড়াল নয়। নদীর ধারে মাছের আঁশটে গন্ধমাখা একটা ছোটো গঞ্জের বেড়াল। এরকম বেড়ালদের গল্পও অন্যরকম হয়। সে যে-হোটেলটায় থাকত তার মেঝেটা…

প্রাণবিজ্ঞানকে বর্তমান শতাব্দীর বিজ্ঞান বলে অভিহিত করা হয়েছে। তা বিনা কারণে নয়। প্রাণজগত বিস্ময়কর, গভীর রহস্যপূর্ণ ও জটিল। ডি এন এ-র পেঁচানো সিঁড়িতে থরে থরে সাজানো আছে জীবনের মৌলরহস্য। একথা জানবার পর থেকে গত অর্ধ শতাব্দী ধরে বিজ্ঞানের যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি তা মূলত প্রাণবিজ্ঞানের পরিমণ্ডলে ঘটেছে। প্রাণবিজ্ঞানের জটিল বিষয়াদি নিয়ে বাংলায় লেখা সহজ কাজ নয়। কিন্তু সে কঠিন কাজটি সরস বাংলায় উপস্থিত করবার দক্ষতা দেখিয়েছেন আশরাফ আহমেদ তাঁর ‘জলপরি ও প্রাণপ্রভা’ গ্রন্থে। রম্য রচনায় লেখক যে হাত পাঁকিয়েছেন তার পরিচয় মেলে ‘কলাচ্ছলে বলা’ নামের তাঁর প্রথম পুস্তকটিতে। গল্পের মত করে পুরনো স্মৃতি বর্ণনা – যাতে জড়িয়ে থাকে হাস্য-কৌতুকের অনুষঙ্গ, তেমন হাল্কা মেজাজের রসোত্তীর্ণ রচনা সৃষ্টিতে পারঙ্গমতা দেখিয়েছেন আশরাফ আহমেদ। ‘জলপরি ও প্রাণপ্রভা’ গ্রন্থের ১৩টি কাহিনী বর্ণনায় সে ছাপের পরিচয় মেলে। একটি বড় সুবিধে তাঁর আছে। নিজেই তিনি প্রাণবিজ্ঞানী। চার দশকের বেশী সময় ধরে প্রাণবিজ্ঞান গবেষণায় শুধু নিমগ্ন থাকা নয়, খ্যাতিও অর্জন করেছেন আশরাফ আহমেদ। শিক্ষকেরা কথা বলেন। সেসব কথা শুনে ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীরা মুগ্ধ হলে শিক্ষকেরা নিজেদের ধন্য জ্ঞান করেন। শিক্ষকতার সে সৌভাগ্যও হয়েছে আশরাফ আহমেদের। পল্পেও কথা বলে যেতে হয়। এছাড়া সৃষ্টিশীল লেখার জন্য পরিমণ্ডলের সাহায্য লাগে। স্ত্রী-পরিবার-পরিজন-বন্ধু-স্বজন সে পরিমণ্ডল গড়ে তোলে। তা যদি হয় সহায়ক তবে তা অণুঘটকের কাজ করে। আশরাফ আহমেদ সে সাহায্যও পেয়েছেন। এবারে ‘জলপরি ও প্রাণপ্রভা’ পুস্তকের লেখাগুলো নিয়ে কথা বলব। জলপরি ও প্রানপ্রভার ইংরেজি প্রতিশব্দ Mermaid and Bioluminisense । ১৩টি গল্পের বেশ কয়েকটিতে পুস্তকের নামকরণের কার্যকারণ বোঝা যায়। জলপরি ও প্রাণপ্রভার নানা বৃত্তান্ত পাব আমরা ক্রমশ। জ্ঞান অর্জনে গুরুর প্রয়োজন হয়। বইয়ের প্রথম রচনা ‘গুরু বিন কেয়সে গানা গা-আ-ও’ তে তার পরিচয় পাই। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা কিভাবে আশরাফ আহমেদের মধ্যে বিজ্ঞান মনস্কতার আধুনিক ভুবনটি খুলে দিলেন তার নিবিড় বর্ণনা পাই এ রচনায়। লেখাটি শেষ করেছেন তিনি এমন একটি সহায়কপঞ্জি যুক্ত করে যাতে পরবর্তী লেখাগুলো পাঠে সুবিধে হয়। শিক্ষাগুরুদের কাছ থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে কি শিক্ষা পেলেন তিনি তারও সারাংশ টেনেছেন ঐ পঞ্জিতে। অনুঘটকের কথা শুরুতে বলেছি। তার কথা আছে সেখানে। এ গল্প পড়ে ভিন্ন একটি কথা ভাবছিলাম। ইদানিং আমাদের স্কুল-কলেজে বিজ্ঞান বিষয়ে ভর্তি কমে যাচ্ছে আশংকাজনক হারে।…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.