মুক্তাঙ্গনের অভ্যুদয় ঘটেছে মুক্তচিন্তা চর্চার লক্ষ্য নিয়ে – কেননা একমাত্র মুক্তচিন্তাকে পরিচর্যা করেই সম্ভব জীবনকে ক্রমাগত অতিক্রম করার মধ্যে দিয়ে জীবনের প্রান্তরে দাঁড়ানো। তবে মুক্তাঙ্গন তত বেশি উন্মুক্ত অঙ্গনও নয় যে, মুক্তচিন্তার নামে এ সাইটে মৌলবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী বৈকল্যময় দর্শনের চর্চা করা যাবে। কেননা মৌলবাদ চিন্তাকে মুক্ত নয়, বরং অবরুদ্ধ করে বেঁচে থাকে; আমাদের এই ভূ-ভাগে সেই অবরুদ্ধ সময় অনেকবারই এসেছে, তবে তার সর্বোচ্চ প্রকাশ আমরা দেখেছি ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের কালে। সে কারণেই মুক্তাঙ্গন মনে করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার বিরোধী ও মৌলবাদী চিন্তার ক্ষেত্রে পরমত সহিষ্ণুতার ভাবনা চিন্তাশক্তি ও সময়ের অপচয়মাত্র।
২১ জৈষ্ঠ ১৪১৫ (বঙ্গাব্দ) / ৪ জুন ২০০৮ (আন্তর্জাতিক) সালে মুক্তাঙ্গন ব্লগ তার যাত্রা শুরু করে নির্মাণ আন্তর্জালজগতের অংশীদার হিসেবে। পরিকল্পনা রয়েছে, নির্মাণের এই কর্মযজ্ঞে পর্যায়ক্রমে ওয়েবজিন, বৈঠক, আলোকচিত্র ইত্যাদি বিষয়গুলিকে সম্পৃক্ত করার। মানুষের মধ্যে যে অফুরন্ত সৃজনশীলতা রয়েছে, যে সৃজনশীলতা মানুষকে আরও জীবন্ত করে তোলে, নির্মাণের এই কর্মযজ্ঞ চায় সেই সৃজনশীলতার প্রকাশকেই সৃজনশীল করে তুলতে।
আমরা চাই, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তরে ছড়িয়ে থাকা বাংলাভাষীরা এই মুক্তাঙ্গনে সমবেত হবেন এবং তাদের চিন্তার জগতে প্রতিনিয়ত উদ্ভূত ভাবনা, প্রশ্ন ও উপসংহারগুলি পরস্পরের সঙ্গে বিনিময় করবেন। আমরা চাই, ভাষাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রচর্চার বাইরে এসে দাঁড়াতে এবং জীবন-মানুষ-প্রকৃতির সত্যকে উপলব্ধি করতে। রাজনীতি, দর্শন, অর্থনীতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানচর্চার যে বিশাল জগত আমাদের জীবন-জীবিকাচর্চার সঙ্গে জড়িয়ে আছে, সেগুলির ক্রমউত্তরণের স্বার্থেই আমরা চাই মুক্তচিন্তাচর্চা হয়ে উঠুক শিল্পচর্চার সমান্তরাল; জীবন যেমন শিল্পিত হওয়া চাই, তেমনি হওয়া চাই মুক্তচিন্তাময়। মুক্তাঙ্গন তার এ লক্ষ্যে অবিচল রয়েছে, এবং থাকবে ভবিষ্যতেও।