এবং এখন এই যে রোহিঙ্গারা তাদের গন্তব্য চট্টগ্রামে পৌঁছে যাচ্ছে এই কঠিন বাস্তবতা চট্টগ্রাম অঞ্চল যেন মোকাবেলা করতে পারে তার জন্য শুধু বাংলাদেশ রাষ্ট্র কাজ করলেই চলবে না জাতিসংঘকে এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকেও বড় ভূমিকা রাখতে হবে [...]

শুনতে করুণ লাগতে পারে আত্মঘাতী মনে হতে পারে কিন্তু এটা মেনে নিতেই হবে দুসপ্তাহের মধ্যে যদি বার্মার রাখাইন প্রদেশের তিন ভাগের এক ভাগ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসতে পারে তাহলে দেড় মাসের মধ্যেই সব রোহিঙ্গা বাংলাদেশেই বসবাস শুরু করে দিতে পারে এবং এই পুরো চাপটি চট্টগ্রাম অঞ্চলকেই বহন করতে হবে এবং এটাও স্বীকার করে নিতে হবে রাখাইনবাসী রোহিঙ্গাদের গন্তব্য এখন চট্টগ্রাম। ২০১২ সালে এবং ২০১৬ সালে বাংলাদেশ চেষ্টা করেছে রোহিঙ্গারা যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেইসাথে রাখাইনে রোহিঙ্গাদেরও আশা ছিল বার্মার ওই প্রদেশে তাদের সাময়িক নিবন্ধন সনদ নাগরিক সনদে রূপ না নিলেও অন্তত স্থায়ী নিবন্ধন সনদে উন্নীত হবে এবং তারা রাষ্ট্রহীন জনগোষ্ঠী থেকে রাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত জনগোষ্ঠীতে রূপান্তরের প্রাথমিক ধাপ অতিক্রম করবে। রোহিঙ্গাদের এটাও আশা ছিল ২০১২ ও ২০১৬ সালের এআরএসএ-এর বিচ্ছিন্নতাবাদী আগ্রাসন ও তা দমনে বার্মার সিভিল ও সামরিক প্রশাসনের ঢালাও গ্রামের পর গ্রামে অবরোধ অগ্নিসংযোগ ধর্ষণ নির্যাতন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক উজ্জীবনের মধ্য দিয়ে কমে আসবে। কিন্তু বার্মার রাখাইন প্রদেশে এবং বার্মার কেন্দ্রীয় সরকারে কোনো কিছুই সাধারণ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাশার অনুকূলে চলেনি। প্রাদেশিক সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গাদের বিষয়ে উদাসীনতার মাত্রা বাড়িয়ে সামরিক নজদারির মাত্রা চড়িয়ে রাষ্ট্রহীন জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রচ্যূত জনগোষ্ঠীর দিকে ঠেলে দিতে কঠোর থেকে কঠোরতর হতে লাগল এবং রাখাইন প্রদেশের সংখ্যাগুরু বৌদ্ধদের সাথে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ধর্মগত ও জনজাতিগত ব্যবধানের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাখাইন প্রদেশকে মা বা থা চরমপন্থা ও এআরএসএ-এর সশস্ত্র চরমপন্থার নৈরাজ্যের মধ্যে ঠেঁসে ধরল। গত কয়েক বছরের আন্তর্জাতিক ইসলামি সন্ত্রাসবাদের বিকট বিস্তারের প্রেক্ষাপটে এআরএসএ হয়ে উঠল এমন সংগঠন যারা রোহিঙ্গা মুসলমানদের উদ্ধারের কথা বলে বেড়ে উঠলেও সন্ত্রাসবাদের সাধারণ নিয়মে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে থাকা মুসলিমদেরও শেষ করে দিতে বদ্ধপরিকর এবং তাদের কার্যকলাপ এমন হয়ে উঠল যাতে অং সান সু কি সহজেই বলতে পারছেন যেখানে মুসলমানরাও মুসলমানকে মারছে সেখানে আরাকানের সমস্যা সমাধান করা অনেক অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে যার ফলে এটা বলা অনেক সহজ আজকে এআরএসএ বার্মার গণতান্ত্রিক নেতার ও সামরিক প্রশাসনের রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের অনিচ্ছার পক্ষেই কাজ করছে এবং সাধারণ রোহিঙ্গাদের রাষ্ট্রচ্যূত করার নিয়ামক হিসেবেই তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিস্তার ঘটাচ্ছে। এবং এখন এই যে রোহিঙ্গারা তাদের গন্তব্য চট্টগ্রামে পৌঁছে যাচ্ছে…

এই সংবিধান হল সেই দলিল যেখানে স্পষ্টভাবে বলা আছে জনগণের সার্বভৌমত্বের কথা। কথাটা আমরা ভুলে যাই, বা ভুলে যেতে বসেছি। আর আমাদের এই ভুলে যাওয়ার সুযোগ নেয় যারা নেবার। এজন্যই সর্বস্তরে সংবিধান দিবস উদযাপন জরুরী। ক্ষমতাসীনরা না করলেও আমাদের অন্তত করা উচিত। কারণ এই দিনটি আমাদেরই দিন। আমরা মানে জনগণ।

গতকাল ছিল ৪ নভেম্বর। আমাদের সংবিধান দিবস। প্রতি বছরের মতো এবারও এলো, প্রায় নিরবেই চলেও গেল দিনটি। ব্যাপকভাবে বিস্মৃত, রাষ্ট্রীয়ভাবে অবহেলিত এই একটি দিন। ১৯৭২ সালের এই দিনে জাতীয় সংসদে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়েছিল। এর পর দিনটির কথা আমরা প্রায় সবাই একরকম ভুলেই গিয়েছি, রাষ্ট্রীয়ভাবে এই দিনটিকে উদযাপনের কথা আমাদের কারোই মনে থাকে না! স্বাধীনতা সংগ্রাম, এতো আত্মত্যাগ, এতো রক্তপাত - সে তো 'সংবিধান' নামের এই দলিলটি হাতে পাওয়ার জন্যই। যে দলিলটির মাধ্যমে স্বাধীন জনগোষ্ঠী হিসেবে নিজস্ব সীমানায় নিজেদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছি। আমাদের আত্ম-নিয়ন্ত্রণের অধিকার (right to self-determination) এর মূর্ত প্রতিফলন এই দলিল। এই দিনটির তাৎপর্য্য অন্য যে কোনো দিন উদযাপনের চেয়ে কোনো অংশে কম না। বরং আমার বিবেচনায় এই দিনটির তাৎপর্য্য আমাদের অন্য আর সব রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপিত দিনের চেয়ে হয়তো বেশীই। কারণ, এই দিনটির সঠিক উদযাপন - প্রতি বছর আমাদের মনে করিয়ে দিতে পারে এই সংবিধানের শরীরে ধারণ করা সবচেয়ে জরুরী কথাগুলো। যেখানে আরও অনেক বিষয়ের পাশাপাশি বলা রয়েছে: - স্বাধীনতার সংগ্রাম, আর তা অর্জনের পথে আমাদের জনগণের ঐতিহাসিক ত্যাগ স্বীকারের কথা। - এই ভূখন্ডের মানুষদের মৌলিক অধিকারগুলোর কথা। - আমাদের রাষ্ট্রটি কি কি মৌল নীতি দ্বারা পরিচালিত হবে বা হওয়া উচিত, সেই স্বপ্ন আর উপলদ্ধিগুলোর কথা। - যারা এই দেশটির বিভিন্ন পর্যায়ে ক্ষমতায় থেকে শাসন করবেন, তাদের দায়বদ্ধতা আর জবাবদিহিতার কথা। - সারা বিশ্বের দরবারে আমরা কি কি নীতির ভিত্তিতে নিজেদের তুলে ধরবো সেকথা। - আমাদের অতীত, ঐতিহ্যের প্রতি এই রাষ্ট্রের এবং সম্মিলিতভাবে আমাদের সবার দৃষ্টিভঙ্গি কি হবে সেকথা। সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হল - এই সংবিধান হল সেই দলিল যেখানে স্পষ্টভাবে বলা আছে জনগণের সার্বভৌমত্বের কথা। যেখানে ঘোষণা করা হয়েছে - এই সংবিধান হল 'জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি' [অনুচ্ছেদ ৭(২)]। বলা আছে - 'এই প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ'। বলা আছে - শুধু এই জনগণের হয়েই এই সংবিধানের সব ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের প্রয়োগ কার্যকর হবে [অনুচ্ছেদ ৭(১)]। এই কথাগুলোই আমরা ভুলে যাই, বা ভুলে যেতে বসেছি। আর আমাদের এই ভুলে যাওয়ার সুযোগ নেয় যারা নেবার। এজন্যই সর্বস্তরে দিনটির উদযাপন…

কিন্তু সমস্ত সমস্যা দেখতাম ওই সোজা পথ ও আত্মসমর্পণ নিয়ে – দেখতাম মানে আজো দেখছি এবং এই সমস্যা পিছু ছাড়ছে না – এই দিকনির্দেশনার মধ্যেই আছে রাজনৈতিক ইসলাম অথবা ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার। [...]

সোজা পথ। আত্নসমর্পণ। মানুষের জীবনের লক্ষ্য নিয়ে ইসলামের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনার পাশাপাশি আছে সাক্ষ্য, প্রার্থনা, দান, সংযম, বিসর্জন ও তীর্থ সম্মেলন। ছোটোবেলা থেকেই দেখছি – সাক্ষ্য, প্রার্থনা, দান, সংযম, বিসর্জন ও তীর্থ সম্মেলন নিয়ে তেমন সমস্যার কোনো কিছু নেই। এসব পালনীয় ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট করণকৌশল ও আচরণবিধি আছে এবং হুজুরদের সাথে সাধারণ মুসলমানের এসব নিয়ে তেমন কোনো তুলকালাম ব্যাপারস্যাপার নেই বললেই চলে – বরং এগুলোই সমাজে হুজুর ও সাধারণ মুসলমানদের ধর্মীয় সম্পর্কের মূলভিত্তি। কিন্তু সমস্ত সমস্যা দেখতাম ওই সোজা পথ ও আত্মসমর্পণ নিয়ে – দেখতাম মানে আজো দেখছি এবং এই সমস্যা পিছু ছাড়ছে না – এই দিকনির্দেশনার মধ্যেই আছে রাজনৈতিক ইসলাম অথবা ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার। কোনটা সোজা পথ? কিভাবে চলতে হয় এই সোজা পথ ধরে? কার জন্য কোনটা সোজা পথ? আত্মসমর্পণ কার কাছে? কার আত্মসমর্পণ? কতভাবে আত্মসমর্পণ? কত মাত্রার আত্মসমর্পণ? রাজনৈতিক ইসলাম চায় নিজের রাজনৈতিক জয় এবং তার জয়লাভের মাধ্যমই হবে এটি প্রচার করা যে একটি ইসলামি রাষ্ট্র পেলেই সোজা পথ হাসিল হবে এবং একটি ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম হলে সেই রাষ্ট্রের কাছে সবার আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সবার জীবনের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে। অর্থাৎ একটা সর্বব্যাপী অনুশাসন কায়েম হবে – সেই অনুশাসনের রক্ষণাবেক্ষণে প্রজন্মের পর প্রজন্ম রাজনৈতিক মুক্তি পাবে। কিন্তু সাধারণ মুসলমানরা কি রাজনৈতিক ইসলামের এই সোজা পথ ও আত্মসমর্পণের সূত্র মানে? রাজনৈতিক ইসলাম বাংলাদেশে এখনো শতকরা ৪ – ৭ ভাগের বেশি ভোট পায় না। কাজেই আমরা তো সহজেই বলতে পারি বাংলাদেশের মুসলামনেরা সাক্ষ্য, প্রার্থনা, দান, সংযম, বিসর্জন ও তীর্থ সম্মেলনে পরিবেষ্টিত (যদিও সেখানে উল্লেখযোগ্য হারে অনাচরণীয় মুসলমান বিদ্যমান) এবং তারা সোজা পথ ও আত্মসমর্পণের রাজনৈতিক ইসলামের সূত্র মানে না। কিন্তু না, ২৬শে মে ২০১৩ আইসিএসএফ আয়োজিত ‘ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে রাজনৈতিক ইসলাম’ শীর্ষক সেমিনারের প্রথম পর্বের আলোচক হাসান মাহমুদের একটা বাস্তব আর্তি আমরা যারা কোটি কোটি লোক ধর্মে বিশ্বাস করি। আমরা মানুষ হিসাবে দুর্বল। ষড়রিপুর তাড়নায় আমরা তাড়িত, আমরা ভুল করতে পারি শুনে আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমার মনে হল এই কোটি কোটি মানুষ সোজা পথ ও আত্মসমর্পণ নিয়ে তাহলে এভাবেই বিজড়িত। তাহলে এই কোটি কোটি মানুষের শতকরা ৬৫ ভাগ মনে করে…

সামাজিক বিষয়ে কখনো লিখতে হবে ভাবিনি। তবে বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আমরা একটা দারুণ সংকট কালে এসে পৌঁছেছি। পৃথিবীর অনেক দেশই এরকম একটা সময় পাড়ি দেয়। তারপর আবার নতুন করে সব শুরু করে।[...]

সামাজিক বিষয়ে কখনো লিখতে হবে ভাবিনি। তবে বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আমরা একটা দারুণ সংকট কালে এসে পৌঁছেছি। পৃথিবীর অনেক দেশই এরকম একটা সময় পাড়ি দেয়। তারপর আবার নতুন করে সব শুরু করে। আমরা একে ‘বৈপ্লবিক পরিবর্তন’ বলি বা ‘সামাজিক উত্তরন’ যাই বলি না কেন, সময় পার হলে দেখা যাবে আমরা একটা নতুন পরিবেশে চলে এসেছি। সেটা খারাপও হতে পারে, আবার ভালোও হতে পারে। কিন্তু সেটা নির্ভর করছে, আমাদের চলমান প্রস্তুতির উপর। গত সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে ঘটে যাওয়া ‘আরব বসন্ত’ আমরা বিশ্লেষণ করলে দেখি, পরিবর্তনের পর সেখানে দেখা গেলো, প্রগতিশীলদের হটিয়ে ইসলামীপন্থীরা নির্বাচনে জয়লাভ করে। ফলে লাভ কি হল তা আরব বসন্তের পতাকাবাহীরা বলতে পারবেন। আমাদের দেশের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ তেমনি একটি সময়কাল। আমরা একটি পরিবর্তন চাইছিলাম ; ধর্ম-বর্ণ– জাতি নির্বিশেষে সাম্য, সামাজিক মর্যাদা এবং স্বাধীন সার্বভৌম ভাবে বেচে থাকার নিশ্চয়তয়ার জন্য লড়াই। আমরা ছোটবেলার পাঠ্যবইয়ে পড়লাম ‘ স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন’ । একদল মানুষ নয়মাস সংগ্রাম করেছিল ‘স্বাধীনতা’ অর্জনের, স্বাধীনতা এলো। এরপর আমাদের ৪২ বছর কাটল। কিন্তু আমরা কি স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামে নিয়োজিত ছিলাম বা আছি ? ঠিক মনে হয় না । কারণ তাহলে সাধারণ, একেবারে নিত্য নৈমত্তিক কিছু সভ্য, সুস্থ ও নিরাপদ মানসকিতা আমদের মধ্যে তৈরি হতো। যা একজন আধুনিক মানুষের সমাজে বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। আমরা সেই সংগ্রাম করেছি বলে মনে হয় না। আমি বলছিনা এর জন্য প্রতিদিন রাজনীতি করতে হয়। রাজনীতি করাটা যে বিশাল বিপদজনক কাজ, আমার মনে হয় ১৯৭২ থেকে এখন পর্যন্ত যত রাজনীতিবিদ আছেন, ভালো বলতে পারবেন। রাজনীতি আমরা অনেকেই করিনা, কিন্তু ‘রাজনৈতিক সচেতনতা’ হারিয়ে যাওয়াটা শুভ কিছু নয়। আমরা ভাবছি - আমি সবকিছু উপেক্ষা করে, অর্থ, সম্পদ আর ক্ষমতা’র চর্চা করলাম, সন্তান-পরিবারের দিকে তাকিয়ে, কিন্তু সেই সন্তান উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে, উগ্র কোন আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত। আমি নিজে আদর্শগত ভাবে দারুণ অসাম্প্রদায়িক, কিন্তু আমার সামাজিক, অর্থনৈতিক চর্চার দুর্বল ফাঁক-ফোকর গলে আমার সন্তানদের মধ্যে হয়তো সাম্প্রদায়িক বীজ বুনে যাচ্ছে। আবার দেখা গেলো, আমি খুবই ধার্মিক, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। এদিকে ঘুষের টাকায় বিশাল সম্পদ গড়ে তোলার পর,…

৩ জুন ২০১২তে বাস থামিয়ে যে দশ জন মুসলিমকে ছুরির আঘাতে হত্যা করা হয়েছিল তার মধ্যে আট জনই ছিলেন রেঙ্গুনের মুসলমান যারা রাখাইন প্রদেশে তবলিগি চিল্লা শেষে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন। [...]

আগামী ১৬ জুন নোবেল ফাউন্ডেশন এক বিলম্বিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৯৯১ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার তুলে দেবেন সু কি'র হাতে। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ও তার পূর্বাপর ইউরোপ সফরের উদ্দেশ্যে আজ রেঙ্গুন ছাড়বেন সু কি। বর্তমানে বার্মার রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিম-রাখাইন বৌদ্ধ যেদাঙ্গা হচ্ছে তা পেছনে ফেলে ইউরোপ সফর এবং সফর শেষে দেশে ফিরে আসাই এখন তার মূল লক্ষ্য, তাই দায়সারা মন্তব্যের চেয়ে বেশি কিছু বলছেন না তিনি। অথচ ৩ জুন ২০১২তে বাস থামিয়ে যে দশ জন মুসলিমকে ছুরির আঘাতে হত্যা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে আট জনই ছিলেন রেঙ্গুনের মুসলমান যারা রাখাইন প্রদেশে তবলিগি চিল্লা শেষে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন। রাখাইন বৌদ্ধরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে ২৮ মে ২০১২তে রাখাইন এক মেয়েকে কয়েকজন রোহিঙ্গা মুসলিমের ধর্ষণ ও পরবর্তীতে খুনের রেশ ধরে। বার্মার রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলমানেরা ২০১০ সালে ভোটার লিস্টে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন এবং কথা ছিল সেনাবাহিনী সমর্থিত দলের প্রার্থীকে ভোট দিলে তাদেরকে বার্মার জাতীয়তাও দেয়া হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো তৎপরতা থাইন সাইন সরকারের মধ্যে দেখা যায়নি। রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে সন্ত্রাসবাদী আছে এটা ঠিক, কিন্তু সাধারণ রোহিঙ্গা মুসলমানরা তো সন্ত্রাসবাদী নয়। সন্ত্রাসবাদীদের চিহ্নিত করে সাধারণ রোহিঙ্গা মুসলমানদের জাতীয়তা দেয়ার প্রশ্নে সু কি'র কোনো স্পষ্ট অবস্থান এখনো আমাদের চোখে পড়েনি। জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইট ওয়াচ বাংলাদেশকে বলছে বাংলাদেশের সীমান্ত রোহিঙ্গা সাধারণ শরণার্থী মুসলমানদের জন্য শিথিল করে দিতে। কিন্তু জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইট ওয়াচ নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্ত সু কি'কে কেন বলছে না, রাখাইন প্রদেশেই এই শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ ক্যাম্প সৃষ্টিতে সহায়তা করতে? জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা যদি এরকম ক্যাম্প সৃষ্টি করতে পারে তাহলে সেই ক্যাম্পে যাবতীয় সাহায্য সহযোগিতা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত থাকবে। এবং বাংলাদেশে শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও পর্যায়ক্রমে সেই ক্যাম্পে স্থানান্তরিত করতে নীতিগত সহায়তা চাইবে। আর যদি এর জন্য জাতিসংঘের শান্তি মিশন প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রেও বাংলাদেশ সাড়া দেবে। আর এই সবকিছু সম্ভব সু কি যদি এবিষয়ে নিজেকে জড়াতে চান। কিন্তু সু কি'র যা অবস্থা তাতে তো শুধু এটাই মনে হচ্ছে তিনি নোবেলে ও সংসদে আটকা পড়ে গেছেন।

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.