বেইজিং থেকে হংকং : পর্ব ৩

অক্টোবরের ৩০ তারিখে (২০০৯) আমার প্রদর্শনীর উদ্বোধন। মক ভাইয়ের অনুরোধে কয়েকদিন আগেই চলে আসা। ডিসপ্লে এবং ফ্রেমিং-এর ব্যাপারে যেন আমার মতামত পাওয়া যায়। [...]

প্রদর্শনী হংকং-এ

অক্টোবরের ৩০ তারিখে (২০০৯) আমার প্রদর্শনীর উদ্বোধন। মক ভাইয়ের অনুরোধে কয়েকদিন আগেই চলে আসা। ডিসপ্লে এবং ফ্রেমিং-এর ব্যাপারে যেন আমার মতামত পাওয়া যায়। সিসিসিডি-র কর্মী উইলসন প্রদর্শনীর সমন্বয়ক। সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় পেরোনো টগবগে তরুণ। প্রতিদিন সকালে সেই আপলেইছাও থেকে শাকিপমেই চলে আসি প্রদর্শনীর জায়গায়। আর উইলসনের সাথে হাতে হাত রেখে প্রাক-প্রদর্শনী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হই। যেমন ফ্রেমিং, ছবি ঝোলানো, ট্যাগ তৈরি ইত্যাদি। নিউবার্গ গ্যালারির কর্ণধার মিশালের সাথে এরমধ্যে একদিন দেখা হয়েছে, খুবই ব্যস্ত। তবে মিশালের স্বামী মাইকল আমাকে বেশ সময় দিলেন। মাইকল দিলখোলা সজ্জন মানুষ। গ্যালারির সেক্রেটারি লিজা-ও আমাদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিল।

ডিসপ্লের ব্যাপারে লিজা বেশ অভিজ্ঞ; অনেকগুলো ছবি নিজেই ঝুলিয়ে ফেলল। মক ভাইয়ের অফিস একই ক্যাম্পাসের চার তলায় হওয়ায় সকালে এসে ওখানেই জড়ো হই, পরে নীচে চলে আসি গ্যালারিতে টুকিটাকি কাজ সারতে। এই চত্বরেরই আট তলায় হংকং ওপেন প্রিন্ট শপের অফিস কাম স্টুডিও। এখানেও আমার কিছু কাজ প্রদর্শিত হবে; আয়োজন করা হয়েছে বাংলাদেশের ছাপচিত্রের উপর একটি বক্তৃতার, সেই সাথে আমার ছাপচিত্র নিয়ে একটি ডেমনস্ট্রেশনও হবে। প্রিন্ট শপের অফিসে গিয়ে পরিচিত হয়ে এলাম। মিস ইউং নামের একজন এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে আছেন, তিনি আমাকে সবকিছু ঘুরিয়ে দেখালেন। আমার বক্তৃতা এবং ডেমনস্ট্রেশনের জন্য কী কী জিনিস লাগবে তার একটা লিস্ট দিয়ে এলাম। এর মধ্যে একদিন গিয়ে হংকং-এর বাংলাদেশ কনস্যুলেটের প্রধান আসুদ ভাইয়ের সাথে দেখা করে আসলাম। বাংলাদেশ কনস্যুলেট আমার প্রদর্শনীর সহ-আয়োজক। আসুদ ভাই বেশ মাইডিয়ার টাইপের মানুষ। উনার দিক থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস পেলাম। আমার প্রদর্শনীর বিষয়টি হংকং-এর বাঙালিদের মধ্যে ভালো প্রচার পেয়েছে বলেও জানালেন।

গ্যালারির সামনে প্রদর্শনীর ব্যানার

দেখতে দেখতে তিরিশ তারিখ চলে এল — সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। প্রদর্শনীর উদ্বোধন সন্ধ্যা সাতটায়, আমরা বেশ আগেভাগেই গ্যালারিতে চলে গেলাম। গ্যালারির কর্ণধার মিশালে আজ বেশ আগেই হাজির, সাথে মাইকল এবং লিজা। গ্যালারিতে চলছে শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা। সিসিসিডি-র কর্মীরা সবাই উপস্থিত। আপ্যায়নের আয়োজনে ব্যস্ত। থরে থরে সাজানো আছে নানা ধরনের স্ন্যাকস, এর মধ্যে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হচ্ছে নিউরোকান (সেদ্ধ গরুর মাংসের শুঁটকি), যা চীনাদের খুব প্রিয়। সিসিসিডি-র কর্মী এলিজা ম্যাকাও গিয়ে কিনে এনেছে। ম্যাকাও-এর নিউরোকান নাকি খুবই উপাদেয়। গ্যালারির বাইরে একটি খোলা চত্বরের মতো আছে, সেখনে টেবিলে সাজানো আছে নানা ধরনের পানীয়, বেশ কয়েক বোতল রেড ওয়াইনও রাখা আছে। এখানে যে-কোনো প্রদর্শনীর উদ্বোধনে রেড ওয়াইন থাকবেই। এটি যেন একটি রিচুয়ালে পরিণত হয়েছে।

অতিথিরা সব এসে পৌঁছলেন। বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রধান আসুদ ভাই এসেছেন সপরিবার, বাঙালি কম্যুনিটির অনেকেই এসেছেন। সবার সাথে একে একে পরিচয় হল। এখানে সবাই স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। ব্যবসায়ী চাকুরীজীবী সব পেশার মানুষজনই আছেন। ইকরাম সাহেব নামের এক বড় শিল্পপতির সাথেও পরিচয় হল। শশ্রুমণ্ডিত এক ভদ্রলো্কের সাথে আলাপ হল যিনি এখানে একটি টেইলারিং দোকানের মালিক, নিজেই মাস্টার, আমাকে আমন্ত্রণ জানালন তাঁর দোকানে যেতে, সস্তায় স্যুট বানানোর অফার দিলেন।

মক ভাই আজ বেশি ব্যস্ত, পোশাকআশাকেও বেশ ধোপদুরস্ত। চওড়া একটি টাই পরেছেন, আবার নেপাল থেকে আনা একটি উত্তরীয় গলায় জড়িয়েছেন — রীতিমতো প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন! বেশ কিছু হংকঙ্গিজ অতিথিও এসেছে, মক ভাই তাঁদের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। গ্যালারির মাঝখানেই রাখা আছে মাইক্রোফোনের স্ট্যান্ড, সেখানে এসে দাঁড়ালেন মক ভাই এবং অনুষ্ঠান শুরু করার ঘোষণা দিলেন। এবং যে যেখানে ছিলেন সেইভাবেই দাঁড়িয়ে পড়লেন। শুরু হল বক্তৃতা পর্ব। আসুদ ভাই প্রধান অতিথি, তিনি কিছু বললেন। জকি ক্লাব ক্রিয়েটিভ আর্ট সেন্টারের পরিচালক এডি লুই-ও বক্তব্য রাখলেন। ভদ্রলো্ক বেশ রসিক, লোকজন মনে করে যে তিনি জকি ক্লাবের পরিচালক, তাই প্রায়শ বাজির ঘোড়া নিয়ে প্রশ্ন করে। আসলে তিনি একজন শিল্পী। (পরবর্তীকালে এডি লুইয়ের স্টুডিওতেও গিয়েছি।) শিল্পী হিসাবে আমাকেও কিছু বলতে হল। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার সাথে সাথে লোকজন হুমড়ি খেয়ে পড়ল ছবি দেখতে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন এডি লুই, জকি ক্লাব ক্রিয়েটিভ সেন্টারের পরিচালক

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সমবেত সুধীবৃন্দের উদ্দেশে আমার বক্তব্য

এডি লুই, আমি, মিশালে এবং মক ভাই

প্রদর্শিত ছবির সবই ছাপচিত্র। মোট তেইশটি ছবি ছিল — তিনটি ড্রাইপয়েন্ট, বাকি সব এচিং টেকনিকে করা। লোকজনের নানাবিধ প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে হিমশিম খেয়ে গেলাম, আবার নানা ভাষায় — বাংলা, ইংরেজ়ি এবং ম্যান্ডারিন চাইনিজ-এ। ছাপচিত্র মাধ্যমটিও অনেকে বোঝে না, সেটাও আলাদা করে বুঝিয়ে দিতে হয়। এর মধ্যে "ভাই, কী বুজাইছেন?" জাতীয় প্রশ্নেরও উত্তর দিতে হল। এই ভিড়ের মধ্যেই লিজা আমাকে জানাল যে, আট তলায় হংকং ওপেন প্রিন্ট শপে যেখানে আমার কিছু কাজ ঝুলিয়েছে, সেখানেও কিছু দর্শক অপেক্ষা করছেন। আমি সেখানে গিয়ে তাঁদের সাথেও কিছুক্ষণ ছবি নিয়ে আলোচনা করলাম। লিফ্‌টে করে আট তলা থেকে আবার নীচে নেমে এলাম মূল গ্যালারিতে। বাইরে দরোজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মিশালে, দৌড়ে এসে অভিনন্দন জানালেন আমাকে। দুটি ছবি বিক্রি হয়ে গেছে অর্থাৎ বিক্রয় পর্বের শুভ উদ্বোধন হয়ে গেছে; আর এ ক্ষেত্রে গ্যালারির মালিক যে সবচেয়ে খুশি হন তা বলাই বাহুল্য। মিশালের চোখমুখে যেন আনন্দ ঠিকরে বেরোচ্ছে। একটু দূরেই ইকরাম ভাই মুচকি মুচকি হাসছেন, কাছে যেতেই বলে ফেললেন, "নিয়ে নিলাম আপনার দুটো ছবি, দেখি অকশনে তোলা যায় কিনা। যদি মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করা যায় তবে অর্ধেক আপনার!" যাক, ইনিই তাহলে ক্রেতা, ভালোই হল। বাঙালি কমিউনিটির মুখটা উজ্জ্বল হল। গল্পে-আড্ডায়-পানাহারে মোটামুটি সময় শেষ হয়ে এল। ধীরে ধীরে অতিথিরা বিদায় নিলেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিল সিসিসিডি-র পক্ষ থেকে একটি ডিনার, যাতে সিসিসিডি-র এবং নিউবার্গ গ্যালারির কর্মীরা নিমন্ত্রিত ছিলেন। ডিনার সেরে আমি আবার ফিরে গেলাম আপলেইছাও-এ আমার ডেরায়।

পরের দিন হংকং ওপেন প্রিন্ট শপে আমার বক্তৃতা, বক্তৃতার বিষয় : "উপনিবেশোত্তর বাংলাদেশের ছাপচিত্র"। বেইজিং থেকেই পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনটি গুছিয়েই এনেছি। দেশ থেকে নিয়ে আসা বইপুস্তক ঘেঁটে এবং ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে প্রেজেন্টেশনটা তৈরি করা। হংকং ওপেন প্রিন্ট শপের স্টুডিওর স্বল্পপরিসরেই আয়োজন করা হয়েছে বক্তৃতা অনুষ্ঠানের। একদিকে কয়েকটি এচিং মেশিন, অন্যদিকে একটু ফাঁকা জায়গা, সেখানেই প্রজেকশনের জন্য স্ক্রিন টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। দর্শক সমাগম মন্দ হয়নি। হংকং-এর বেশ কিছু ছাপচিত্রী এসেছেন, সিসিসিডি-র কর্মীরাও সবাই হাজির। মিশালে, মাইকল ও লিজা-ও উপস্থিত। এক ভদ্রমহিলার সাথে পরিচয় হল, তিনি ম্যাকাও থেকে এসেছেন। ম্যাকাও পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপচিত্রের অধ্যাপক। এতদুর থেকে চলে এসেছে শুধু বাংলাদেশের ছাপচিত্র সম্পর্কে জানতে, বিষয়টা আমার কাছে বেশ উত্সাহব্যঞ্জক মনে হল। যথাসময়ে আমার প্রেজেন্টেশন শুরু করলাম। প্রথমত আমি বাংলাদেশের সামগ্রিক চিত্রকলার ইতিহাসটি তুলে ধরার চেষ্টা করলাম, অতঃপর বাংলাদেশের ছাপচিত্রের সামগ্রিক অবস্থান উপস্থাপন করলাম পর্যায়ক্রমিক ভাবে। প্রসঙ্গক্রমে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায় চলে এল, সেই বটতলার ছাপা-ছবি থেকে শুরু করে চার্লস ডয়লির ঢাকা চিত্রমালা, সফিউদ্দিন-কিবরিয়া থেকে মনির-রফিকুন্নবী সহ বাংলাদেশের ছাপচিত্রের উল্লেখযোগ্য সব শিল্পীর কাজেরই স্লাইড দেখালাম, পাশাপাশি আলোচনাও চলল। শুরুতেই অবশ্য জয়নুল-কামরুল-সুলতানের ছবি দেখিয়ে আমাদের পথিকৃ্ৎ শিল্পীদের বিষয়ে আলোচনা করে নিয়েছি। বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশীদের ধারণা সবক্ষেত্রেই নেতিবাচক — বন্যা, খরা, দারিদ্র্যের দেশ হিসেবেই পরিচিত। সেখানে জয়নুল, কামরুল, সুলতান, সফিউদ্দিন, কিবরিয়ার মতো গুরুশিল্পীদের আবির্ভাব হয়েছে দেখে দর্শকরা একটু অবাকই হলেন, এবং কিছুটা সমীহের সাথেই স্বীকার করলেন যে বাংলাদেশের শিল্পের মান যথেষ্ট উন্নত। বক্তৃতা শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে বাংলাদেশের চারুকলা সম্পর্কে দর্শকরা অনেকেই জানতে চাইলেন এবং আমি আমার সাধ্যমতো উত্তর দেয়ার চেষ্টা করলাম। হংকং প্রিন্ট শপের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের ছাপচিত্রের মান নিয়ে যথেষ্ট সন্তোষ প্রকাশ করলেন, এবং পরের বছর অনুষ্ঠিতব্য হংকং আন্তর্জাতিক প্রিন্ট উৎসবে বাংলাদেশকে আগাম আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলেন।

প্রশ্নোত্তর পর্বে হংকং-এর প্রবাসী বাঙালিদের সাথে

এরপর যে ঘটনাটি আমার জন্য অপেক্ষা করছিল, তার জন্য কিছুটা তৈরিই ছিলাম। মক ভাই আমাকে আগেই জানান দিয়েছিলেন যে, আমার বেইজিং-এর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকের একজন সহপাঠিনী লিয়াও জিন মেই-এর সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। লিয়াও জিন মেই আজকে হাজির। দর্শকদের মধ্য থকে আমাকে জড়িয়ে ধরল। প্রায় বিশ বছর পরে দেখা হল। জিন মেই যেন আমাকে সেই সময়ে আবার ফিরিয়ে নিয়ে গেল।

আমি যখন ১৯৮৮ সালে বেইজিং সেন্ট্রাল একাডেমি ফাইন আর্টস-এ বিএফএ প্রথম বর্ষের ছাত্র, তখন জিন মেই ছিল আমাদের সহপাঠী। ক্লাসের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্ল ছাত্রী, সুন্দরী এবং গুণী। সবার সাথে স্মিতহাস্যে এমন আচরণ করত যেন সে সবার প্রেমিকা, আমরা সবাই জিন মেই-তে মুগ্ধ হয়ে থাকতাম। সেই জিন মেই এক বছর পরেই ক্লাসের সব ছেলের হৃদয় ভেঙে দিয়ে স্কলারশিপ পেয়ে রাশিয়া চলে গেল। আমাদের সহপাঠী লিফানের হৃদয় একটু বেশি ভেঙে গেল, কারণ জিন মেই ছিল লিফানের বান্ধবী।

সেই জিন মেই যে হংকং-এ থিতু হয়েছে তা আমার জানা ছিল না। এখন দুই কন্যার জননী, স্বামী দর্শনের অধ্যাপক। জ়িন মেই নিজে ছাপচিত্রী এবং হংকং ওপেন প্রিন্ট শপের একজন সম্মানীয় সদস্য। হংকং ওপেন প্রিন্ট শপের সব কর্মকর্তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা নীচের একটি কফিশপে গিয়ে বসলাম। জিন মেই-এর সাথে স্বামী, দুই মেয়ে এবং ওর মা-ও এসেছেন। ওর স্বামী সাংহাই-এর ছেলে। বেশ সজ্জন সদালাপী। জিন মেইদের পরিবারটি বেশ আন্তঃচৈনিক — মা বেইজিং-এর, বাবা হংকং-এর এবং স্বামী সাংহাই-এর মানুষ। আমরা একটি চমত্কার আড্ডায় মিলিত হলাম, যেন কিছুক্ষনের জন্য সেই আশির দশকের শেষ দিককার সময়ের বেইজিং-এ ফিরে গেলাম।

সহপাঠিনী লিয়াও জিন মেই-এর সাথে

আড্ডায় আলাপে বেশ কিছু সময় পার হয়ে গেল। জিন মেই-র মা এবং জিন মেই দু'জনেই বেইজিংকে খুব মিস্ করে। জিন মেই-এর বাবা হংকং-এর ছেলে হলেও পড়তে গিয়েছিলরন বেইজিং ন্যাশনাল ফিল্ম ইনস্টিটিউটে। সিনেমাটোগ্রাফির উপর ডিগ্রি নিয়ে বেইজিং-এ বিয়ে করে সেখানেই থিতু হয়েছিলেন। তারপর কাটিয়ে দিয়েছেন এক লম্বা সময়। শারীরিক প্রতিবন্ধী ছোট মেয়েটির জন্য তাঁকে হংকং-এ চলে আসতে হয়। এখানে প্রতিবন্ধীদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে। সেজন্য জিন মেই-ও বেইজিং-এর মায়া ত্যাগ করে বাবা-মার সাথে এখানে চলে আসে। জানতে পারলাম, রাশিয়া থেকে ফিরে জিন মেই বেইজিং একাডেমিতে শিক্ষকতার সুযোগ পেয়েছিল। ধূমায়িত কফির সাথে আড্ডা বেশ জমে উঠেছিল। জিন মেই-র দুই কন্যাকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে; বেশ দূরের পথ, তাই ওদের উঠতে হল। যাওয়ার সময় ওর আঁকা একটি ছবি উপহার দিয়ে গেল। ওর সাথে দেখা হওয়াটাই ছিল বড় সৌভাগ্য, তারপর ছবি পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে গেলাম। জিন মেইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃ্তজ্ঞতা জানিয়ে সেদিনের মতো বিদায় নিলাম।

(পাঁচ পর্বে সমাপ্য)

[প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব]

  • রশীদ আমিন

    জ়ীবনের এই রহস্য কে করিতে পারে ভেদ, ভুবনডাঙ্গায় ঘোরা-ফিরা ক্ষণিকের বিচ্ছেদ

    View all posts
সাবস্ক্রাইব করুন
অবগত করুন
guest

6 মন্তব্যসমূহ
সবচেয়ে পুরোনো
সাম্প্রতিকতম সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত
Inline Feedbacks
View all comments
6
0
আপনার ভাবনাগুলোও শেয়ার করুনx
  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.