আমরা অবিলম্বে ব্লগারদের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি, সেই সঙ্গে ‘ধর্মীয় অনুভূতি’র নামে যে-কোনো ধরণের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা আমাদের মুক্তচিন্তার চর্চা থেকে একটুও পিছু হটব না, মুক্তচিন্তার চর্চা অব্যাহত থাকবে, নিরন্তর চলবে।

গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে আমাদের এখন মনে হচ্ছে, দেশের ব্লগার-লেখকরা শুধু জঙ্গি-উগ্রপন্থীদের দিক থেকে হত্যার শিকার নয়, সরকারি দলের একাংশ ও সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকেও প্রত্যাখানের শিকার হতে চলেছেন। গত সাড়ে পাঁচ মাসে চারজন ব্লগারকে একের পর এক খুন করা হয়েছে, যে তালিকার সর্বশেষ সংযোজন নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয়। এর কোনোটির তদন্তের ক্ষেত্রেই অগ্রগতি হয়নি, বরং নিলয় হত্যাকাণ্ডের পর সংবাদ সম্মেলনে উল্টো ব্লগারদের উদ্দেশ্যে পুলিশের আইজিপি বলেছেন, ‘যাঁরা মুক্তমনা লেখক, তাঁদের কাছে অনুরোধ, আমরা যেন সীমা লঙ্ঘন না করি। এমন কিছু লেখা উচিত নয়, যেখানে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে, বিশ্বাসে আঘাত হানে।’ পাশাপাশি আওয়ামী ওলামা লীগ নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়েছে, ‘ধর্ম অবমাননাকারীদের’ মৃত্যুদণ্ড প্রদানের বিধান রেখে আইন প্রণয়ন করতে হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, সরকারের কর্তাব্যক্তিরা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন এবং বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে তালগোল পাকানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। প্রথম কথা, ব্লগার নিলয়কে হত্যা করা হয়েছে দিনে দুপুরে বাসায় ঢুকে। অন্যান্য ব্লগারদের বাসায় ঢুকে না হলেও হত্যা করা হয়েছে উন্মুক্ত স্থানে, জনসমক্ষে; এমনকি লেখক-ব্লগার ড. অভিজিৎ রায়ের ক্ষেত্রে পুলিশ ঘটনাস্থলেই ছিল। নিলয় গত মে মাসে থানায় গিয়ে নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করার চেষ্টা চালিয়েছেন। ব্যর্থ হয়ে তা নিয়ে ফেসবুকে বিস্তর মন্তব্য লিখেছেন। বেশ কয়েকটি ঘটনার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সরকার অনলাইনের সোশ্যাল মিডিয়াগুলোকে মনিটরিং করে থাকে এবং সরকার কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্পর্কে কোনো বিরূপ মন্তব্য করা হলে সঙ্গে সঙ্গে তা তাদের নজরদারির আওতায় নেয়। এটি অবিশ্বাস্য যে, নিলয়ের মন্তব্য তাদের চোখ এড়িয়ে গেছে। অথচ কোনো ধরণের আভ্যন্তরীন বিভাগীয় তদন্ত না করেই আইজিপি বলছেন, 'জিডি না নেয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি'। বোঝাই যাচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা নিজেদের ব্যর্থতা ও কর্তব্যে-অবহেলা ঢাকার চেষ্টা চালাচ্ছেন। দ্বিতীয় কথা, দেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের বিরুদ্ধে যে আইন রয়েছে, সে সম্পর্কে শুধু ব্লগাররাই নন, অনেকেই সচেতন। কেননা ব্লগারদের পূর্বে থেকেই বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার অজুহাতে হেনস্তা করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ, যার শিকার হতে হয়েছে একসময় এমনকি আমাদের বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে। যদিও মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি এত ঠুনকো নয় যে, তা…

২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারীতে প্রতিষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ) মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ১২টি সংগঠন, এবং সংগঠন বহির্ভুত একক ব্যক্তিদের নিয়ে একটি জোট। জোটভুক্ত সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে - ইংরেজী এবং বাংলা মিলিয়ে বাংলাদেশের ৮ (আট)টি কমিউনিটি ব্লগ, গণহত্যার ওপর একটি প্রধান আর্কাইভ, গণহত্যার ওপর বিশেষায়িত একটি গবেষণানির্ভর সংগঠন, এবং একটি বিশেষায়িত উদ্যোগভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। আইসিএসএফ কিছু মৌল নীতি এবং মূল্যবোধ এর ওপর প্রতিষ্ঠিত, যার সরাসরি প্রতিফলন হল আমাদের অনুসৃত স্তরবিহীন সামষ্টিকতার ধারণা এবং অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়া/সংস্কৃতি। প্রায় বছর দেড়েক আগে আইসিএসএফ থেকে বহিষ্কৃত এক সদস্যের অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাওয়া নানাবিধ বিতর্কিত ও সন্দেহজনক তৎপরতা এবং কর্মকান্ডের দায়ভার কিছু কিছু মহল ক্ষেত্রবিশেষে বর্তমানে আইসিএসএফ-এর ওপর চাপিয়ে দেয়ার প্রয়াস চালিয়েছেন, যা ইতোমধ্যে আমাদের নজরে এসেছে। আমরা তারপরও মনে করতে চাই যে, অনেকে হয়তো ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে এবং সঠিক তথ্য না জেনেই মূলতঃ এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন কিংবা প্রচারণার শিকার হয়েছেন। তাই আমরা এ সংক্রান্ত সকল বিভ্রান্তির নিরসনকল্পে এবং উক্ত বহিস্কৃত সদস্যের যাবতীয় বিতর্কিত কর্মকান্ড এবং অপতৎপরতা থেকে সর্বতোভাবে আইসিএসএফ এর বিযুক্তি জনমনে স্পষ্ট করতে এই আনুষ্ঠানিক সাংগঠনিক বিবৃতি দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ)-এর পক্ষ থেকে সকলকে অবগত করা যাচ্ছে যে জনাব গোলাম মারুফ ওরফে নিঝুম মজুমদার ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী থেকে এই সংগঠনের সদস্য নন। উক্ত নিঝুম মজুমদারকে সন্দেহজনক কর্মকান্ডের কারণে আইসিএসএফ এর কোর গ্রুপের সকল সদস্যের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সর্বসম্মতিক্রমে আইসিএসএফ থেকে আজ থেকে দেড় বছর আগেই বহিষ্কার করা হয়েছিল। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে নিঝুম মজুমদার আইসিএসএফ এর সাথে যোগাযোগ শুরু করেন ২০১১ সালের শেষ দিক থেকে। আইসিএসএফ এর সাথে যুক্ত থাকাকালীন এই ক’মাসে সংগঠনের মূল অবকাঠামোর কোন নির্দিষ্ট টিম বা প্রকল্পের সাথে সেভাবে সরাসরি যুক্ত থেকে ভূমিকা না রাখলেও নিজের লেখালিখির আগ্রহ থেকে তিনি আইসিএসএফ এর নিয়মিত ওয়ার্কশপ এবং সাধারণ সদস্যদের মধ্যে উম্মুক্ত আলোচনাগুলোতে অংশগ্রহণ করতেন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনালস) আইন ১৯৭৩ এবং বিচারের পক্ষের-বিপক্ষের বিভিন্ন তাত্ত্বিক এবং কৌশলগত বিষয়গুলো জানবার আগ্রহ থেকে। আইসিএসএফ সবসময়ই একটিভিস্টদের এই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে খুঁটিনাটি জানাবার এবং বিষয়গুলো নিয়ে লিখবার আগ্রহকে উৎসাহিত করেছে। তবে এটা স্পষ্ট করা প্রয়োজন যে -…

আমরা চট্টগ্রাম শহরে এমন একটি স্থাপনা নির্মাণ করতে চাই যেখানে সংবৎসর সুচিন্তিত পরিকল্পনা মাফিক, পেশাদারিত্ব ও উচ্চমান বজায় রেখে নিয়মিত ভিত্তিতে নানাবিধ শৈল্পিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হবে। সেখানে বছরের প্রতিটি দিন কোনো-না-কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে। শহরের শিল্পানুরাগী নাগরিকবৃন্দ এবং বেড়াতে বা কাজ করতে আসা পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়, দেশি, বিদেশি শিল্পীদের আনাগোনায় আর তাঁদের শৈল্পিক তৎপরতায় সেখানে বছরজুড়ে বিরাজ করবে এক আনন্দঘন শিল্পমুখর পরিবেশ।

চট্টগ্রাম শহরের সংস্কৃতিচর্চার ঐতিহ্য খুব প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। তবে একটা কথা স্বীকার করতেই হবে যে এর মধ্যে যথাযথ পরিকল্পনা, পেশাদারিত্ব, ধারাবাহিকতা, সর্বোপরি মান-নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি কখনো। পাশাপাশি এটাও প্রবলভাবে সত্য যে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার চর্চার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের একত্রে মিলবার, ভাব বিনিময় করবার, সাদা বাংলায় স্রেফ ‌‘আড্ডা’ দেবার অনুকূল কোনো স্বাস্থ্যকর, রুচিশীল পরিসরও এই শহরে গড়ে ওঠেনি তেমন। বিচ্ছিন্নভাবে কেউ শিল্পকলা একাডেমির মাঠে, কেউ চেরাগির মোড়ে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে, কেউ বিশদ বাঙলা-য় কেউ-বা বাতিঘরে  যার যার মত গল্পগাছা করে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটান। কিন্তু এভাবে তো আর সৃজনশীল মানুষদের পরস্পরের কাছাকাছি আসা, চেনা-জানা, অভিজ্ঞতা বিনিময় ও গঠনমূলক আলাপ-সংলাপের খুব দরকারি সংস্কৃতিটি গড়ে উঠতে পারে না। ফলে বিভিন্ন শিল্পমাধ্যমের চর্চাকারী ও তার ভোক্তাদের মধ্যে দূরত্ব ও বিচ্ছিন্নতা ক্রমে আরো পরিব্যাপ্ত হয়, আর তার ফাঁক গলে অনুপ্রবেশ করে অহংকার ও অজ্ঞানতা, নিরাশা ও নির্বেদ, হতাশা ও হীনমন্যতার মত নেতিবাচক  বিষয়গুলো যাতে প্রকারান্তরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিল্প ও শিল্পী। তার প্রভাব পড়ে আমাদের বৃহত্তর সমাজে ও সংস্কৃতিতে। আমরা এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এই শহরে এমন একটি স্থাপনা নির্মাণ করতে চাই যেখানে সংবৎসর সুচিন্তিত পরিকল্পনা মাফিক, পেশাদারিত্ব ও উচ্চমান বজায় রেখে নিয়মিত ভিত্তিতে নানাবিধ শৈল্পিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হবে। সেখানে বছরের প্রতিটি দিন কোনো-না-কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের — হোক সেটা কোনো চিত্র, আলোকচিত্র কিংবা চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, নয়তো কোনো গানের আসর কী নৃত্যানুষ্ঠান, শ্রুতিনাটক কী মূকাভিনয়, সাহিত্যপাঠ কী শিল্প-বক্তৃতা — আয়োজন থাকবে। শহরের শিল্পানুরাগী নাগরিকবৃন্দ এবং বেড়াতে বা কাজ করতে আসা পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়, দেশি, বিদেশি শিল্পীদের আনাগোনায় আর তাঁদের শৈল্পিক তৎপরতায় সেখানে বছরজুড়ে বিরাজ করবে এক আনন্দঘন শিল্পমুখর পরিবেশ। পাশাপাশি দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে সন্ধ্যায় সেখানে শিল্পী ও শিল্পরসিকেরা আসবেন শিল্পের সান্নিধ্যে দু’দণ্ড জিরিয়ে নিতে, অন্তরঙ্গ চা-খানায় বসে বন্ধুসান্নিধ্যে গলা ভিজিয়ে নিতে হরেক রকম দেশীয় শরবতে। তাঁরা প্রাণভরা আড্ডায় মেতে উঠবেন শিল্প, সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, রাজনীতি, প্রেম, পরিণয় ইত্যাকার জগতের তাবৎ বিষয়ে। এরই মাঝে এক ফাঁকে  লাগোয়া বইঘর থেকে তারা সংগ্রহ করে নিতে পারবেন সম্প্রতি প্রকাশিত কোনো আলোচিত গ্রন্থ, দুষ্প্রাপ্য সংগীত কিংবা ভুবনবিখ্যাত কোনো চলচ্চিত্র। শৌখিন কলারসিকেরাও পারবেন কেন্দ্রের নিজস্ব উপহার-বিপণি থেকে খুব সহজেই…

আমরা, বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্স (BCBA) দেশব্যাপী চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এবং সুষ্ঠু তদন্ত ও উপযুক্ত বিচার দাবী করছি। একই সঙ্গে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি। [...]

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু জনগোষ্ঠীর শত শত ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, নির্যাতন এবং লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশে বসবাসকারী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা চূড়ান্ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অনেকেই ঘরবাড়ি হারিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন, অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় প্রাণভয়ে ঘরবাড়ি ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। আমরা, বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্স (BCBA) দেশব্যাপী চলমান এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এবং সুষ্ঠু তদন্ত ও উপযুক্ত বিচার দাবী করছি। একই সঙ্গে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এবং অপরাধীদের শাস্তি রোধ করতে জামায়াতে ইসলামী এবং বিএনপি যে এই ঘৃণ্য তৎপরতা চালাচ্ছে সেটা একটি প্রকাশ্য সত্য। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকেই ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে জামায়াত-বিএনপি একজোট হয়ে সারাদেশে একের পর এক সহিংস কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে। অসংখ্য প্রাণহানি, সম্পদ ধ্বংশ এবং লাখ লাখ বৃক্ষ কর্তনের পাশাপাশি তারা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর আঘাত হানছে। আমরা, বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্স (BCBA) এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা, বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্স (BCBA) অত্যন্ত হতাশা এবং উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোর একটি প্রধান অংশ এই সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্রের ভোটারবিহীন ছবি ছাপলেও, যে কেন্দ্রে লাইন ধরে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভোট দিয়েছে সেসব কেন্দ্রের ছবি প্রথম আলো এবং কালের কণ্ঠসহ কিছু পত্রিকা ফলাও করে ছেপেছে। এমনকি প্রথম আলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ছবি সম্পাদনা করে ভোটারদের কপালে সিঁদুর এবং টিপ বসিয়ে দেওয়ার বা সেগুলোকে হাইলাইট করে ‘প্রধানত হিন্দুরাই এই নির্বাচনে ভোট দিয়েছে’ এই বার্তাটি ধর্মীয় মৌলবাদী তথা জামাত-শিবির-বিএনপি চক্রর কাছে পৌঁছে দেওয়ার। দেখা গেছে এরকম ছবি প্রকাশের পরপরই দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর উপর হামলা, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া, নির্যাতন শুরু হয়। ফলে সাম্প্রতিক এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারে না প্রথম আলো, কালের কণ্ঠসহ দেশের প্রধান পত্রিকাগুলো। যেমনটি এড়াতে পারেনি রুয়ান্ডা আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে গণহত্যার উস্কানীদাতা ‘কাংগুরা’ পত্রিকা। আমরা আগেও দেখেছি, এই পত্রিকাগুলো, বিশেষ করে প্রথম আলো জামাত শিবির বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডগুলোকে ‘দুর্বৃত্ত’দের কাজ বলে চালিয়ে দিয়েছে বেশিরভাগ সময়। আমরা, বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্স…

এ-কথা বলতে দ্বিধা নেই যে, পহেলা বৈশাখ আজ আমাদের ঐক্যের প্রতীক হিসাবে দাঁড়িয়েছে। পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতির জীবনে এমন এক উৎসব যাতে কোনো ধর্মীয় প্রভাব নেই, একেবারে নিরেট খাঁটি সেকুলার উৎসব। এবং বাঙালি জাতিসত্তার একেবারে অন্তঃমূল থেকে উৎসারিত একটি প্রাণের উৎসব। [...]

এ-কথা বলতে দ্বিধা নেই যে, পহেলা বৈশাখ আজ আমাদের ঐক্যের প্রতীক হিসাবে দাঁড়িয়েছে। পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতির জীবনে এমন এক উৎসব যাতে কোনো ধর্মীয় প্রভাব নেই, একেবারে নিরেট খাঁটি সেকুলার উৎসব। এবং বাঙালি জাতিসত্তার একেবারে অন্তঃমূল থেকে উৎসারিত একটি প্রাণের উৎসব। বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খ্রিষ্টান, বাংলার মুসলমান, এই দিনেই যেন সবাই একযোগে গেয়ে ওঠে, আমরা সবাই বাঙালি। এবং বাঙালি জাতির উপর যখন কোনো আঘাত আসে তখন এই পহেলা বৈশাখই আমাদের প্রেরণা যোগায় সেই অপশক্তিকে প্রতিহত করার জন্য। পৃথিবীর সমস্ত বাংলাভাষীদের কাছে এই উৎসব এখন একটি প্রাণের উৎসব। চীনাদের বসন্ত উৎসব তথা চীনা নববর্ষ যেমন চীনা জাতির সমস্ত মানুষকে একই আনন্দের জোয়ারে ভাসিয়ে দেয়, তেমনি ইরানিদের নওরোজে একইভাবে সমস্ত দেশে উৎসবের ফল্গুধারা বয়ে চলে। আবার বিভিন্ন জাতির নববর্ষ উদ্‌যাপনের মধ্যে নানা মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন চীনারা নববর্ষে ড্রাগন-নৃত্য সহযোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে এবং পটকা ও বাজি পোড়ায়; এক্ষেত্রে তাদের ধারণা পটকার আওয়াজে অশুভ শক্তি দূরীভূত হবে। আরেকটি বিষয় খূব গুরুত্বপূ্র্ণ, তা হচ্ছে আমাদের চৈত্র সংক্রান্তির মেলা কিংবা বৈশাখী মেলার আদলে চীনেও টেম্পল ফেয়ার বা মন্দির-মেলা অনুষ্ঠিত হয়। আমাদের গ্রামে-গঞ্জে-শহরেও চৈত্র সংক্রান্তির যে-মেলা অনুষ্ঠিত হতো কিংবা এখনও হয়ে থাকে তাও মন্দির প্রাঙ্গণে বা বিভিন্ন কালীবাড়িতে হয়ে থাকে। যদিও আমাদের অনেক মেলা হারিয়ে গিয়েছে তবে বর্তমানে তার আবার একটি পুনর্জাগরণ ঘটেছে। জাতীয়ভাবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এবং সাংগঠনিক উদ্যোগে নানা জায়গায় বৈশাখী মেলা আয়োজিত হচ্ছে। চীনের মতো বাংলাদেশেও নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রচলন আছে এবং ঐতিহাসিকভাবেই তা ছিল; তবে নানান ঘাত-প্রতিঘাতে এবং বাঙালি সংস্কৃতির উপর আঘাতের কারণে আমাদের অনেক আচার অনুষ্ঠানই হারিয়ে যেতে বসেছিল। গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে দেশব্যাপী চারুশিল্পীদের উদ্যোগে নতুন করে পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় এবং তারপর থেকেই সারা দেশ জুড়ে আবার তা রেওয়াজে পরিণত হয়। আমাদের বাঙালি জাতির হাজার বছরের ঐতিহ্যে মিশে আসে এই পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ। তবে এই পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপনে অনেক ছন্দপতন ঘটেছে। পাকিস্তান আমলে ধর্মান্ধ গোষ্ঠী বাববার আঘাত হেনেছে বাঙালি সংস্কৃতির উপর এবং পৃথিবীর বুক থেকে ধর্মের নামে বাঙালি সংস্কৃতিকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তবে বাঙালি জাতি সবসময়…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.