এটা তো লেখকদেরই কাজ, ওই রেখাটা পার হওয়া, এখন এটা আরো প্রয়োজন, ভাষার জন্য নদীর জন্য, কারণ আমাদের দেশে আজ সবচেয়ে বিপন্ন এরাই। কেন বিপন্ন? স্কুলের পর স্কুল, বাংলা ইংরেজি আরবি, এ এক দখল বাণিজ্য, সেখানে ছাত্রদের প্রাণপ্রবাহটা নেই, সেটা মজে গেছে, তাই তো ভাষা বিপন্ন। আর নদী সে তো আজ সবাই দেখতে পাচ্ছেন, তাকে দখল করলে কী করে সে প্রাণ হারায়, সে মজে যায়। নিজের চারপাশে একটা নতুন প্রজন্মকে বেড়ে উঠতে দেখছি – কিন্তু ওদের জীবনটাকে বিষিয়ে দিচ্ছে আমাদের নিজের ভাষার প্রতি চূড়ান্ত অবহেলা – কোনো ভাষাতেই ওরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে না – না ঘরোয়া আঞ্চলিক ভাষায়, না আদর্শ বাংলায়, না বিদেশি ইংরেজি আরবি উর্দুতে। কোনো স্মৃতি বা শ্রুতি কাজ করবে ওদের পরবর্তী জীবনে, যখন ওদের মধ্যেই কেউ কেউ বই পড়তে আগ্রহী হবে। কেউ কি ভাববে এভাবে – হে বঙ্গ ভান্ডারে তব বিবিধ রতন; – তা সবে, (অবোধ আমি!) অবহেলা করি, পর-ধন-লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি। কাটাইনু বহুদিন সুখ পরিহরি! অনিদ্রায়, নিরাহারে সঁপি কায়, মনঃ মজিনু বিফল তপে অবরেণ্যে বরি; – কেলিনু শৈবালে, ভুলি কমল-কানন! স্বপ্নে তব কুললক্ষ্মী কয়ে দিলা পরে – “ ওরে বাছা মাতৃ-কোষে রতনের রাজি, এ ভিখারী-দশা তবে কেন তোর আজি? যা ফিরি, অজ্ঞান তুই, যা রে ফিরি ঘরে!” পালিলাম আজ্ঞা সুখে; পাইলাম কালে মাতৃ-ভাষা-রূপে খনি, পূর্ণ মনিজালে।। তার জন্য এখন থেকেই শুধু বাংলা ভাষা শেখানোর একটি প্রতিষ্ঠানের পত্তন করা খুবই প্রয়োজন। স্কুলে কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবহেলার শিকার হয়ে যে বাংলা ভাষাকে ঠিক আয়ত্ত করতে পারেনি, প্রবাস জীবনে বাংলা ঠিকমতো শেখার যে সুযোগ পায়নি, আর বিভাষার মানুষ যে বাংলা শিখতে চায় – এদের কথা মাথায় রেখে এখনই যত দ্রুত সম্ভব এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা উচিত। তাই বাংলা ভাষাকে অবহেলার সামাজিক এই রেখাটা প্রথমে লেখকদেরই পার হওয়া উচিত – তার জীবনের জন্য ভবিষ্যতে তার জীবিকার জন্য – না হয় কে একজন লেখককে পড়বে, – তারপর যারা ভাষাটাকে ভালবাসেন তারাও, তারপর বাংলা ভাষার প্রকাশক ও তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকবল, তারপর বাংলা ভাষা ও এর প্রকাশনাকে ঘিরে নানা উদ্যোক্তা, এবং বাংলা ভাষার শিক্ষক – সব বাঙালি…
ভাষার জন্য নদীর জন্য, কারণ আমাদের দেশে আজ সবচেয়ে বিপন্ন এরাই।[...]

ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায়, মানব সভ্যতার বড় বড় চ্যালেঞ্জের সঙ্গে জড়িত ছিল পানি৷ প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে এটি অনন্য৷ পরিবেশ সংরক্ষণ, জীবিকার উন্নয়ন, সর্বোপরি জীবনের প্রয়োজনে পানির প্রয়োজনীয়তা বলে শেষ করা সম্ভব নয়৷ এতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ পানিই মানুষের বিপদ ও নিরাপত্তাহীনতার কারণ হতে পারে৷ বিশেষ করে একুশ শতকের প্রথম পর্যায়ে এসে বিশ্বব্যাপী পানি সমস্যার কারণে হুমকিতে রয়েছে মানব উন্নয়নের ভবিষ্যৎ৷ দারিদ্র্য, অশিক্ষা এবং শক্তি ও সম্পদ বণ্টনে অসাম্যই এ সমস্যার মূল কারণ৷ পানিকে সব ধরনের রাহুমুক্ত করার জন্য বিশ্বব্যাপী এখনই চাই সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস [...]