ভালোবাসাতে ব্যর্থ ভালোবাসা ফলাফল নয় অবস্থান, কূটনীতিতে ব্যর্থ কূটনীতি ফলাফলও অবস্থানও। আমি প্রতিবেশী হিসেবে ভারতকে ভালোবাসি, এবার আমার সে ভালোবাসা যদি ব্যর্থ হয়, সেই ব্যর্থ ভালোবাসা মোটেই আমার ভালোবাসার ফলাফল নয়। আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে আমার প্রধান কাজ কূটনীতি, সেই কূটনীতি যাতে দেশের ভালো হয় এবং প্রতিবেশীরও ভালো হয়, তাতে যদি আমি ব্যর্থ হই, তাহলে সেই ব্যর্থ কূটনীতি শুধু আমার কূটনৈতিক ব্যর্থতা নয়, সে ব্যর্থতা আমার অবস্থানও, কারণ আমি দুপক্ষেরই ভালো চেয়েছিলাম। আমি মনমোহন সিং-এর সাথে দেখা করেছি, এমন সজ্জন সতত হাসিখুশী লোক আমি সরকারপ্রধানদের মধ্যে কম দেখেছি, আমার নেতা ও আমাদের সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকেও আমি এই দুই গুণের জন্য এতো ভালোবাসি। আমি প্রণব মুখার্জির সাথে কথা বলার সময় সত্যিই বুঝতে পারিনি আমি ঢাকায় নেই দিল্লিতে আছি। একমাত্র চোখ ধাঁধিয়ে গেছে আমার ভারতীয় প্রতিপক্ষ কৃষ্ণাকে দেখে। আরে বাপ, অভিজাত কাকে বলে! যদি আমার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বছরের শুরুতে প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা না হয়ে, কৃষ্ণার সাথে দেখা হতো আমি মনে হয়, এতো সাহসের সাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আঁকড়ে থাকার চেষ্টা করতাম না। আর কৃষ্ণার সহকারী শশী থারুর সে তো পুরোদস্তুর এক পাশ্চাত্যবাসী, আমিতো মোটেই তাকে ভারতীয় ভাবতে পারছিলাম না। আমি এদের নিয়ে খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম। কিন্তু আমার সবকিছু সহজ করে দিলেন প্রণব মুখার্জি, আমি দিল্লি থাকতেই ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের দুই মাথাকে এমন এক আদেশ দিয়ে ব্যতিব্যস্ত করলেন, যে আমি তাদের সাথে মতবিনিময় করতে একদম ভয় পাইনি। কৃষ্ণা ও থারুর তাদেরকে দেয়া দিল্লির বাংলো পছন্দ হয়নি বলে দিনে লাখ রুপী ভাড়ার হোটেলে থাকছিলেন, অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি সরকারের ব্যয় কমানোর নির্দেশ দিয়ে এমন অবিমৃষ্যকারী মন্ত্রীদের হোটেল ছাড়ার নির্দেশ দিলেন। গত ১৯৯৬-২০০১ আওয়ামী সরকারের আমলে জ্যোতি বসু আমাদের জন্য যেমন ছিলেন, তেমনি এবার আছেন প্রণব মুখার্জি, কেন্দ্রে অসাধারণ ক্ষমতাশালী, কিন্তু বাঙালি, এবং বাংলাদেশের জন্য আছে গভীর মমত্ববোধ। আমি যে এসবের বাইরেও ভারতের পানিসম্পদমন্ত্রী পবন কুমার বনশাল ও বিদ্যুৎমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্ধের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছি, তার নেপথ্যের মানুষ প্রণব মুখার্জি।

টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে আন্দোলন নিয়ে আমাদের দেশে ও ভারতে যা হচ্ছে, তা হল এই বাঁধের নির্মাণ কাজ অন্তত পাঁচ বছর ঠেকিয়ে রাখা, এতে আন্দোলনকারীদের দুটি লাভ: ১. প্রকল্প খরচ বেড়ে গিয়ে কাজ এগোনো আর সম্ভব হবে না ২. কংগ্রেস ও আওয়ামী লীগ যে কোনো একদল বা দুদলই আগামী নির্বাচনে হেরে গেলে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন/বাতিল নিয়ে নতুন সরকারকে এসে নতুন করে ভাবতে হবে। তাই ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রী ও বিদ্যুৎমন্ত্রীর সাথে আমার মূল আলাপের সবকিছু জুড়েই ছিল টিপাইমুখ বাঁধ হলে যেন সব প্রাকৃতিক রাজনৈতিক ক্ষতির পরও আমরাও যেন লাভবান হতে পারি সে চেষ্টা করা। আর আমি এটা জানি মন্ত্রীত্ব টেকাতে হলে আমাকে টিপাইমুখ বাঁধ দিয়েই টেকাতে হবে, আমি এমন কিছু এ চারদিনের ভারত সফরে করেছি যেন, আমার নেতা ও আমাদের সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও তার ভারতীয় প্রতিপক্ষ মনমোহন সিং নিজেদের মধ্যে আলোচনায় অন্তত আমার ভূমিকাটিকে যেন খাটো করে না দেখেন। আর আমি ভারতের মতো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের দেশের বিশাল বিশাল রাজনৈতিক নেতা তথা দক্ষ মন্ত্রীদের কাছ থেকে এই শিক্ষা অন্তত পেয়েছি, বহুধাবিভক্ত আন্দোলনের কথা শুনে মন্ত্রণালয় চালানো যায় না, আমি একজন আত্মবিশ্বাসী দীপু মনি হতে চাই, টিপাইমুখ বাঁধ, আর যার কাছে যাই হোক, আমার কাছে আমার মন্ত্রীত্বের এসিড টেস্ট। আর এতে যদি আমি সফল না হই, তাহলে ডায়রির প্রথম দিকের কথাগুলো তো রইলই। আমি এটা খুব ভালো করে জানি, জীবনবাজি রেখে জীবনে কিছুই হয় না।

মাসুদ করিম

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।

১০ comments

  1. মাহতাব - ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৪:৪১ পূর্বাহ্ণ)

    সংবাদে দেখলাম দিপুমনি সংবাদ সম্মেলন করে বলছে ভারত ত্রিপুরা রাজ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্হাপনের যন্ত্রপাতি নেয়ার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর ও আশুগঞ্জ স্হল বন্দর ব্যবহার করবে। বুঝতে পারছি না কি ঘটতে যাচ্ছে।

  2. বিনয়ভূষণ ধর - ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৭:৫২ অপরাহ্ণ)

    @মাসুদ করিম!
    আমি পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীদ্বয় সম্পূর্ণ নিজেদের খরচায় বিলাসবহুল হোটেলগুলোতে ছিলেন। তাহলে সমস্যাটা কোথায় বলুনতো!

    • মাসুদ করিম - ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১১:১৩ অপরাহ্ণ)

      আমি কার খাই না পরি? তাইতো? আরেকটু ভাবুন, বুঝতে পারবেন সমস্যাটা কোথায়, আর বুঝতে না পারলে, তখন না হয় দীপু মনির ডায়রিতে আবার হানা দিতে হবে।

  3. nizam udin - ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১১:৫৮ অপরাহ্ণ)

    thik bujhlam na,masud vai ki boltey chailow.
    14 september sokal 11’tay shahid minar theke DC office gheerao’r dak diyeche teel,gas,bondor biddyut o jatiyo sampod rokkha committee.apnake ongshowgrohom korar nimomtron roilo.

  4. রায়হান রশিদ - ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (২:২৫ পূর্বাহ্ণ)

    টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে আন্দোলন নিয়ে আমাদের দেশে ও ভারতে যা হচ্ছে, তা হল এই বাঁধের নির্মাণ কাজ অন্তত পাঁচ বছর ঠেকিয়ে রাখা, এতে আন্দোলনকারীদের দুটি লাভ: ১. প্রকল্প খরচ বেড়ে গিয়ে কাজ এগোনো আর সম্ভব হবে না ২. কংগ্রেস ও আওয়ামী লীগ যে কোনো একদল বা দুদলই আগামী নির্বাচনে হেরে গেলে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন/বাতিল নিয়ে নতুন সরকারকে এসে নতুন করে ভাবতে হবে।

    বাংলাদেশের ভেতরের আন্দোলনের দিকটা না হয় বুঝলাম কিন্তু ভারতের ভেতর এই ইস্যু নিয়ে আন্দোলন ঠিক কারা করছে তা কিন্তু ঠিক স্পষ্ট হল না। এই বিষয়ে কেউ কি কোন লিন্ক দিয়ে সাহায্য করতে পারেন? আর বাংলাদেশের ভেতরের আন্দোলন সম্বন্ধে এটুকু মোটামুটি পরিষ্কার (যদি ভুল না বুঝে থাকি) – সে আন্দোলনের আদি এবং অন্তঃ দু’টোই “দেশের ভেতর”, তাহলে ১ নম্বর ব্যাপারটা বাংলাদেশের আন্দোলনের ব্যাপারে প্রযোজ্য হয় কি করে? “দেশের ভেতর” কথাটা একারণে বলছি – প্রকল্পের ধরণ বিচারে পরিবেশগত ফলাফলের দৃষ্টিকোণ থেকে টিপাইমুখ একটি হাই-ইমপ্যাক্ট প্রকল্প। এ ধরণের তথাকথিত “বিদ্যুত উৎপাদন” প্রকল্প ভারতের অন্যান্য রাজ্যে আগেও হওয়ার চেষ্টা হয়েছে এবং যতদূর জানি একটি রাজ্যের বিদ্যুত উৎপাদন দফতরকে ইআইএ (এনভায়ারনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট) সমীক্ষায় ব্যর্থতার কারণে অতীতে এ ধরণের প্রকল্প বাতিলও করতে হয়েছে। ভারতে এনভায়ারনমেন্টাল প্রটেকশন এ্যাক্ট (১৯৮৬) বলে একটি আইন রয়েছে। সেই আইন এবং পরবর্তীতে সেখানকার বন ও পরিবেশ দফতরের ১৯৯৪ এবং ২০০৪ সালের বিভিন্ন আদেশসমূহের বলে‍ যে ২৯ ধরণের প্রকল্পকে পরিবেশ আঙ্গিকে সম্ভাব্য-ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে টিপাইমুখ সে জাতীয় প্রকল্প। ভারতীয় আইনেই “ইআইএ” বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, অন্তত টিপাইমুখের মত প্রকল্পের জন্য। আমার জানার আগ্রহ – সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ভারতের পরিবেশবাদী গ্রুপগুলো কি ভাবছেন বা ইতোমধ্যে কি করেছেন? আর পরিবেশবাদী গ্রুপগুলোর পাশাপাশি পশ্চিম বঙ্গ এবং পূবের রাজ্যে এ নিয়ে ঠিক কি ধরণের রাজনৈতিক তৎপরতা বিদ্যমান?

    কারণ, টিপাইমুখ নিয়ে প্রতিরোধে রাজপথের আন্দোলনের সমান্তরালে আইনগত চ্যালেঞ্জেরও সুযোগ রয়েছে ভারতের ভেতরেই, যদি কেউ “সত্যি সত্যিই” চ্যালেঞ্জ করার ব্যাপারে “সংকল্পবদ্ধ” হয়ে থাকেন। এই বিষয়গুলো নিয়ে ভারত এবং বাংলাদেশের গ্রুপগুলোর ভাবনা কি? আর চ্যালেঞ্জের প্রশ্ন তো আসবে “চোর পালানোর পর”, ঘটনা (যথা: প্রকল্পের অনুমোদন) ঘটে যাবার পর। কিন্তু আমার কৌতুহল – আগে কি কিছু করার চেষ্টা হয়েছিল একে প্রতিরোধ করতে? ইআইএ-র কাজ যখন চলছিল, সেই সমীক্ষায় একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে গোড়ার দিকেই মতামত তৈরী এবং সে মতামত (dissent) নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় প্রতিবেদনে লিপিবদ্ধ করারও সুযোগ ছিল। আমার প্রশ্ন প্রকল্প উদ্যোক্তারা গালভরা “Comprehensive Environemntal Studies on Tipaimukh Hydro-Electric (Multi-Purpose) Project” শিরোনামের রিপোর্টটি ভারতের শিলং-মেঘালয়ের “North Eastern Electric Power Corporation Limited” এর হাতে যখন পেশ করলো কিংবা তারও আগে তৃণমূল থেকে তথ্য সংগ্রহ করলো এই প্রতিবেদনের জন্য – তখন (বা তার আগে) ভারতের গ্রুপগুলো ঠিক কি করছিল? এটি তো কোন গোপন-প্রকল্প না! মতামত, অসম্মতি, প্রতিবাদ রেকর্ডভুক্ত করার সুযোগ তো বরাবরই ছিল। তাই জানা থাকা দরকার তখন ঠিক কি করা হয়েছিল আসলে। কারণ, যদি সে সব মতামত তখন “অন-রেকর্ড” পেশ করার পরও আমলে না আনা হয়ে থাকে, তা প্রমাণিত হলে কিন্তু ভারতের প্রকল্প উদ্যোক্তারা আরও বড় ধরণের আইনগত ঝামেলার সম্মূখীন হওয়ার কথা বর্তমানে। এজন্যই এই তথ্যগুলো এখুনি খুঁজে বের করে আন্দোলনকারীদের নিজেদের সংগ্রহে রাখা দরকার।

    টিপাইমুখ প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যদি সত্যিকার অর্থে কোন ফলাফল অর্জন করতেই হয়, তাহলে একে ঠিক কিভাবে দেখবো আমরা তাও আগে ঠিক করা দরকার। প্রথমত, একে ভারতের ‘রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন’ এবং প্রচলিত পরিবেশ আইনের আওতায় একটি ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করলে আন্দোলন এবং কর্মকান্ডের ধরণ হবে এক রকম, ভারতের ভেতরেই। সেভাবে বিবেচনা করলে একই জলাধারের অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের দিক থেকেও বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ রয়েছে (যদি সরকারের আদৌ সে সদিচ্ছা এবং মেরুদন্ড থেকে থাকে!)। দ্বিতীয়ত, একে যদি এশিয়া মহাদেশের বর্তমানের পানি-কূটনীতির কিংবা ভবিষ্যতের পানি-সম্পদ অধিগ্রহণের মতো একটা আন্তর্জাতিক ইস্যু হিসেবে দেখা হয় তাহলে আন্দোলন কর্মকান্ড এবং কূটনৈতিক তৎপরতার ধরণ হবে আরেকরকম। সবশেষে, কেবল সরকারকে নাজেহাল করাই যদি এর লক্ষ্য হয় (যা আমি মনি করিনা, অন্তত আন্দোলনরত সব গ্রুপের বেলায় প্রযোজ্য তো নয়ই), তাহলে কর্মকান্ডের ধরণ এবং “গভীরতা”(কিংবা এর অভাব) হবে অন্য রকম। জানার আগ্রহ হচ্ছে বাংলাদেশে আন্দোলনের কূশীলবরা ঠিক কোন পথটি বেছে নিয়েছেন এবং কেন নিয়েছেন। এই বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বেগ-আলোচনার কোন কমতি নেই, কিন্তু তার পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট কৌশলগত দিক নির্দেশনা এখনো তেমন চোখে পড়েনি। তাই সে সব কারো জানা থাকলে এখানে লিখে আমাদের অবগত করার অনুরোধ করছি। কারণ,‍ যত যাই বলি, টিপাইমুখ নিয়ে যত খুশী আমরা মিছিল মিটিং করতে পারি, তাতে পত্র পত্রিকার কলাম হয়তো ভরবে, আর কিছু দিন আমরাও নিজেদেরকে “একটা কিছু করছি” বলে প্রবোধ দিয়ে যেতে পারবো – কিন্তু সে সবে ভারতীয় রাষ্ট্রনীতির চিড়ে কতদূর কি ভিজবে বলা মুশকিল। শক্ত গ্রানাইট পাথরকেও যদি ঠিক বিন্দুতে আঘাত করা যায় তাহলে তা এক আঘাতেই চুরমার হয়ে যায়। আমাদের জন্য টিপাইমুখ তেমনই এক গ্রানাইট পাথর; আমাদেরকে এর সেই দুর্বলতম জায়গাটিকে চিহ্নিত করতে হবে (আঘাত করার আগেই), যদি সত্যিই সেরকম ইচ্ছে আমাদের থাকে, যদি সত্যিই চূড়ান্ত ফলাফল বদলানোর আশা করি আমরা। আর সেটুকু না করতে চাইলে যেমন চলছে তেমনই চলুক না সবই!! বেশ তো আন্দোলন ইত্যদি হচ্ছে, বেশ ব্যস্তও থাকা যাচ্ছে!!

    তাই ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রী ও বিদ্যুৎমন্ত্রীর সাথে আমার মূল আলাপের সবকিছু জুড়েই ছিল টিপাইমুখ বাঁধ হলে যেন সব প্রাকৃতিক রাজনৈতিক ক্ষতির পরও আমরাও যেন লাভবান হতে পারি সে চেষ্টা করা।

    এটা কেমন কথা? প্রাকৃতিক-রাজনৈতিক ক্ষতি নিয়ে এ ধরণের ট্রেড-অফের অধিকার ভারত সরকারকেই বা কে দিয়েছে, দিপু মনিকেই বা কে দিয়েছে? মোদ্দা কথা হল – প্রাকৃতিক-সম্পদ, এর সংকট এবং এর সম্ভাবনা বিচার করার একক এখতিয়ার তো এই দুই দেশের কোনটির সরকারেরই হাতে নেই। সরকারের কথা বাদ, এমনকি আমাদের এই পুরো প্রজন্মেরও একক এখতিয়ার নেই এই সিদ্ধান্তে, পরিবেশগত ইস্যুতে inter-generational trust এর দৃষ্টিকোণ থেকে। আর কোনটা শেষ বিচারে আমাদের জন্য “লাভজনক” হবে (যেমন: জুতোর পর গরু!) সে বিষয়ে দিপু মনির পররাষ্ট্র দফতর কি এখনো কোন বিস্তারিত কনসালটেশন রিপোর্ট তৈরী করেছে? নীতিগত এই “অসাধারণ” অবস্থান গৃহীত হল কোন্ বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে? কারো জানা আছে?

  5. মনজুরাউল - ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৩:০৭ পূর্বাহ্ণ)

    রায়হান রশীদ খুব ভাল পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। আজ অনেক দেরিতে দেখায় এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারছিনা। কাল ভারতে টিপাইমুখ বাঁধ বিরোধী যে আন্দোলন হচ্ছে সে বিষয়ে আলোকপাতের চেষ্টা করব।

    মাসুদ করিম, দীপু মনির ‘গোপন ডায়রি’ ব্যাপারটা গোলমেলে লাগল। এটাতো হাঁটে হাঁড়ি ভাঙার মত! কোট-আনকোট না থাকায় বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। আরো ভাল হতো সোর্স উল্লেখ থাকলে।

    যাহোক লেখাটা নিয়ে বিস্তর আলোচনার দরকার আছে। রায়হান রশীদের মন্তব্যের সূত্র ধরেই আলোচনা এগুতে পারে।

    • রায়হান রশিদ - ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৩:১৯ পূর্বাহ্ণ)

      কাল ভারতে টিপাইমুখ বাঁধ বিরোধী যে আন্দোলন হচ্ছে সে বিষয়ে আলোকপাতের চেষ্টা করব।

      অনেক ধন্যবাদ এই বিষয়ে লিখতে আগ্রহী হওয়ায়। এটা জানাও বেশী না হলেও ‘সমান’ জরুরী। আর সেইসাথে সীমান্তের দু’দিকেই আন্দোলনরত শক্তিগুলোর কর্মকান্ডের মধ্যে কোন সমন্বয় ভাবনা রয়েছে কি না সেই দিকটাও সম্ভব হলে আলোকপাত দরকার।

  6. মাসুদ করিম - ২৯ জুলাই ২০১৩ (১০:১৭ পূর্বাহ্ণ)

  7. Pingback: রাজাকার : মতিউর রহমানের গোপন ডায়েরি | মাসুদ করিম

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.