'অনন্যা' থেকে এ বছরের [২০০৮] ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত শিল্পের নন্দনতত্ত্ব নানা কারণেই একটি উল্লেখযোগ্য বই। নন্দনতত্ত্ব বিষয়ে বাংলা ভাষায় খুব বেশি বই নেই; আর বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত এ-বিষয়ক বইয়ের সংখ্যা তো অঙ্গুলিমেয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, শিল্পের নন্দনতত্ত্ব নিয়ে কোনো লিখিত আলোচনা এখনো পর্যন্ত বেরোয়নি, কিংবা বেরিয়ে থাকলেও আমাদের চোখে পড়েনি। এই বইয়ের লেখক জুলফিকার নিউটনের অন্য কোনো বই আমি আগে পড়িনি। যদিও তাঁর নামের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই আমরা পরিচিত। ঢাকা ও চট্টগ্রামের দু-একটি দৈনিকের সাময়িকীতে তাঁর লেখা গুরুত্বের সঙ্গে ছাপা হতে দেখা যায়। শিল্পের নন্দনতত্ত্ব বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকে জানা গেল: বাংলা ভাষায় মুষ্টিমেয় যে কজন প্রত্যয়ী লেখক ও গবেষক আছেন, তাদের মধ্যে জুলফিকার নিউটন অন্যতম। তাঁর লেখার সঙ্গে যারা পরিচিত তারা জানেন আমাদের জীবনযাত্রার, সমাজ ব্যবস্থার, ধ্যান ধারণার, ভাষা এবং সাহিত্যের উৎকর্ষ সাধন জুলফিকার নিউটনের সাহিত্য চর্চার মূল উদ্দেশ্য। এই বইয়ে সংকলিত ‘লেখকের শিল্প সম্পর্কিত এক ডজন প্রবন্ধ’ প্রসঙ্গে ফ্ল্যাপে বলা হয়েছে : তাঁর নিজস্ব চিন্তা, যুক্তি ও সাহিত্য পাঠের অভিজ্ঞতা, রুচি, বিবেক ও বুদ্ধি নির্ভর এই রচনাগুলির অন্তর্লীন গভীরতা যেমন পাঠককে নিয়ত প্রাণিত করে, তেমনই বিস্ময়ের উদ্রেক করে এই বিষয় বৈচিত্র্য। ‘শিল্পের নন্দনতত্ত্ব’ গ্রন্থে নিজস্ব চিন্তা ও মত প্রকাশে জুলফিকার নিউটন কোথাও আপস করেননি। কিন্তু শিল্পের নন্দনতত্ত্ব পড়তে গিয়ে প্রবন্ধগুলোর অন্তর্লীন গভীরতা, বিষয়বৈচিত্র্য কিংবা এসব লেখায় লেখকের নিজস্ব চিন্তা ও মতের দ্বিধাহীন প্রকাশের কারণে নয়, আমার বিস্ময় উদ্রিক্ত হয়েছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি কারণে। জুলফিকার নিউটনের এই প্রবন্ধগুলো কি ইতিপূর্বে কোনো পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল? অন্তত আমি তো এর আগে সেগুলো পড়িনি। তাহলে কেনই-বা বইয়ের পাতা ওলটাতে গিয়ে জেগে উঠতে শুরু করেছে আমার পূর্বপাঠের স্মৃতি? নিউটনের বইটির পৃষ্ঠাসংখ্যা প্রায় শ-তিনেক। ৫৫ থেকে ২৭১ পৃষ্ঠা জুড়ে যে-আটটি প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে সেগুলি দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের রূপ, রস ও সুন্দর : নন্দনতত্ত্বের ভূমিকা বইটির আটটি অধ্যায়ের অনুক্রমে বিন্যস্ত। প্রথমে নিউটনের বই ও বন্ধনীতে দেবীপ্রসাদের বইয়ের প্রবন্ধ/অধ্যায়গুলির শিরোনামের দিকে দৃষ্টি দেওয়া যাক। শিল্পীসত্তা ও শিল্পবস্তু (শিল্পীসত্তা, শিল্পবস্তু ও সমাজ), শিল্পের স্বাতন্ত্র্য (শিল্প কি অনুকৃতি, না কি বিকৃতি?), শিল্পের রসবিচার (রস), শিল্পের রূপজিজ্ঞাসা (রূপ), শিল্প প্রকাশ ও শিল্পকর্ম (প্রকাশ অপ্রকাশ ও শিল্পকর্ম), সুন্দর ও অসুন্দর (সুন্দর ও…
'অনন্যা' থেকে এ বছরের [২০০৮] ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত শিল্পের নন্দনতত্ত্ব নানা কারণেই একটি উল্লেখযোগ্য বই। নন্দনতত্ত্ব বিষয়ে বাংলা ভাষায় খুব বেশি বই নেই; আর বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত এ-বিষয়ক বইয়ের সংখ্যা তো অঙ্গুলিমেয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, শিল্পের নন্দনতত্ত্ব নিয়ে কোনো লিখিত আলোচনা এখনো পর্যন্ত বেরোয়নি, কিংবা বেরিয়ে থাকলেও আমাদের চোখে পড়েনি। এই বইয়ের লেখক জুলফিকার নিউটনের অন্য কোনো বই আমি আগে পড়িনি। [...]