"আপনাদের বাচ্চারা থাকবে মাটির কাছাকাছি, তারা মাটির গন্ধ নিয়ে বড় হবে।" বেশ কয়েক বছর আগে, একটি আধুনিক ইংরেজি কেজি স্কুলের উদ্বোধনীতে আমাদের বিখ্যাত এক কবি ও সাংবাদিক বলেছিলেন কথাগুলো, শিশুদের দেশের মাটি ও সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়া প্রসঙ্গে। আমি ঠাট্টাচ্ছলে প্রতিবাদ করলাম, "এটা কি বললেন, স্যার! আমাদের বাচ্চারা কি চাষা হবে নাকি, তারা কেন মাটি কাদা নিয়ে পড়ে থাকবে? দোয়া করেন, তারা যেন আপনার সন্তানদের মতো নু'ইয়র্ক, টরোনটো-তে থাকতে পারে।" আমার লুম্পেন মধ্যবিত্ত টাইপ কথা শুনে তিনি কিছু না বলে হতাশ হয়ে তাকিয়ে থাকলেন। http://www.flickr.com/photos/27671489@N04/12463928315/ দেশ জাতি মাতা ভাষা নিয়ে যারা বেশী সোচ্চার, যারা এই ভাষা সংস্কৃতির ধারক বাহক, তারা এবং তাদের ছেলেমেয়েরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আধুনিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত এবং সমস্ত সুবিধা নিয়ে তারা দেশ বা দেশের বাইরে থাকেন। আর আমরা তাদের মন ভুলানো কথায় দেশ-মাটি-ভাষা নিয়ে পড়ে থাকি। আবার দিন শেষে দেখা যায়, আমরা যখন কষ্ট করে মাঠে হাল চাষ করে ফসল তুলে ঘরে তুলবো, তখন তারা জমিদারের মতো বিদেশ থেকে এসে আমাদের অবস্থান বা অবদানগুলো কেড়ে নিয়ে দেশ ও দশের নেতৃত্ব দেয় । কারন, তারা বিদেশী শিক্ষায় শিক্ষিত, তারা দশের মাথা ও অতুলনীয়! তাদের সাথে থাকে বিদেশী যোগাযোগ, যা তাদের আমাদের উপর রাজত্ব বিস্তারে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে। আমরা সারা বছর এই দেশের হাটে মাঠে ধুলোয় কাদায় চড়ে ক্লান্ত এবং দিন শেষে তাদের দার্শনিক শেকলে অতঃপর বন্দি হই। আমাদের সন্তানেরা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম সেই মাঠে পড়ে থাকে, রাস্তায় গুলি-বোমা খায় - খেয়ে চলে। রাষ্ট্র আমদের সন্তানদের নিশ্চয়তা বিষয়ে উদাসীন। খুব বেশি শোনা যায় না, রাস্তায় বুদ্ধিজীবীদের, রাজনীতিবিদদের, কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ছেলেমেয়েরা গুলি খেল, ককটেল খেল। তারা এসব থেকে অনেক দূরে, শুধু ফসল তোলার সময় হাজির হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক - বুদ্ধিজীবীরা ঠিকই জানেন উচ্চশিক্ষার জন্য ইংরেজি জানা কেমন দরকারি । তারা নিজ সন্তানদের ঠিকই তা বুঝিয়ে দেন, কিন্তু চাষা,মজুর, খেটে খাওয়া লোকদের সন্তানদের তারা উপেক্ষা করেন। অনেকক্ষেত্রে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সুযোগ গুলো নিতে দেন না। পরামর্শ তো দেন না, বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভুল পথে পরিচালনা করেন। এদের ছেলেমেয়েরাও বিদেশের মাটিতে নিজেদের বাচ্চাদের টুংটাং বাংলা ছড়া আর দেশাত্মবোধক…
"আপনাদের বাচ্চারা থাকবে মাটির কাছাকাছি, তারা মাটির গন্ধ নিয়ে বড় হবে।" বেশ কয়েক বছর আগে, একটি আধুনিক ইংরেজি কেজি স্কুলের উদ্বোধনীতে আমাদের বিখ্যাত এক কবি ও সাংবাদিক বলেছিলেন কথাগুলো, শিশুদের দেশের মাটি ও সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়া প্রসঙ্গে। আমি ঠাট্টাচ্ছলে প্রতিবাদ করলাম, "এটা কি বললেন, স্যার! আমাদের বাচ্চারা কি চাষা হবে নাকি, তারা কেন মাটি কাদা নিয়ে পড়ে থাকবে? দোয়া করেন, তারা যেন আপনার সন্তানদের মতো নু'ইয়র্ক, টরোনটো-তে থাকতে পারে।" আমার লুম্পেন মধ্যবিত্ত টাইপ কথা শুনে তিনি কিছু না বলে হতাশ হয়ে তাকিয়ে থাকলেন। [...]