রায়গোপালদা তবলা বাজাতেন। বাজিয়ে হিসেবে তেমন পরিচিত কেউ ছিলেন না। তবে নাম পরিচয়হীন একজন গুণী বাজিয়ে ছিলেন—তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সংসার চালাতেন তবলার শিক্ষকতা করে। প্রায় দেড় যুগ ধরে তবলার শিক্ষকতা করছেন। ২৭ জুলাই-ও চকরিয়া যাচ্ছিলেন তবলার শিক্ষকতার কাজে, সাতকানিয়ার রানীরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় আরো চার জনের সঙ্গে প্রাণ হারালেন। আমাদের রাস্তাগুলোতে, দিনের পর দিন, প্রাণ হারানো যেন খুবই নিয়মিত ঘটনা হয়ে পড়েছে। আমি বিষন্ন হয়েছি রায়গোপালদার জন্য, তো তার পরমুহূর্তেই আপনি হাহাকার করে উঠেছেন আর কারো জন্য। যে পরিমাণ যোগাযোগ অব্যবস্থাপনা, গাড়ির তুলনায় সড়কের যা অভাব, বেপরোয়া গাড়িচালকদের দৌরাত্ম্য—সব মিলিয়ে একে যোগাযোগ ব্যবস্থা বলবার কোনো কারণ কি আর আছে? জানি না আর কতকাল অকালে এভাবে প্রিয়জন হারানোর বেদনা সইতে হবে। আমরা হয়তো যতো জন্মাই ততো মরি। কী যে জন্ম আমাদের! এদেশে কী বিকট জীবন যাপন আমাদের, অপঘাত দুর্ঘটনায় এ এক মহাদুর্যোগ। কোথায় জন্মালাম, হতাশা ছাড়া এ জীবন আমাদের কিছুই দিতে পারে না...
অধিকাংশ ভারতীয়ই মনে করে, ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীরা তাদের জন্য তিনটি জিনিস রেখে গেছে। আর তা হল- ইংরেজী ভাষা, সংসদ ও রেল-পথ। এর মধ্যে, রেল-পথ নির্মাণ হচ্ছে ভারতের জাতীয় অর্থনীতি এবং জনগণের জীবিকার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক যুক্ত।এটিই ভারতের সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সবচে্য়ে বড় মাধ্যম। ১৮৫৩ সালে এশিয়ার প্রথম ট্রেন মুম্বাই স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে [...]
অধিকাংশ ভারতীয়ই মনে করে, ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীরা তাদের জন্য তিনটি জিনিস রেখে গেছে। আর তা হল- ইংরেজী ভাষা, সংসদ ও রেল-পথ। এর মধ্যে, রেল-পথ নির্মাণ হচ্ছে ভারতের জাতীয় অর্থনীতি এবং জনগণের জীবিকার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক যুক্ত।এটিই ভারতের সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সবচে্য়ে বড় মাধ্যম। ১৮৫৩ সালে এশিয়ার প্রথম ট্রেন মুম্বাই স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে। পরের ১৪০ বছরে ভারত 'এশিয়ার রেল-পথ নেটওয়ার্কে প্রথম সারির দেশ' ও 'বিশ্বের রেল-পথের মধ্যে সবচে' বেশী দৈর্ঘ্যের দেশে পরিনত হয়েছে। চার দিকে ছড়িয়ে থাকা রেল নেটওয়ার্ক ভারতের শহর ও গ্রামকে যুক্ত করার পাশাপাশি, বিভিন্ন ভাষা, রীতিনীতি ও ধর্মের মানষের মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ সেতুবন্ধন তৈরী করেছে। ভারতের রেল-পথের উন্নয়নের ইতিহাস উপলব্ধি করতে চাইলে, সবচেয়ে ভালো জায়গা হচ্ছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কেন্দ্রে অবস্থিত রেল যাদুঘর। ভারত সরকার ১৯৭৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারী আনুষ্ঠানিকভাবে এ যাদুঘরটি চালু করে। এ পর্যন্ত এশিয়ার রেল-পথের এটাই একমাত্র যাদুঘর। এতে একটি বৃহদাকার আভ্যন্তরীণ প্রদর্শনী ঘর, প্রাচীন ও পুরানো বগি আর রেল লাইনের বেলের পাতি এবং রেল লাইনের ওপর দক্ষিণ এশিয় উপমহাদেশের ট্রেন রয়েছে। এ সব কিছুই আগের ইতিহাসের কথা বলছে। নয়াদিল্লির রেল যাদুঘরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনটি হচ্ছে এখনও যাত্রীসেবা দিয়ে চলা বাষ্পচালিত 'কাসিওপেয়া' রেল ইনজিন। এটা হচ্ছে যাদুঘরের একমাত্র ট্রেন যেটি এখনও কাজে লাগছে। ১৮৫৫ সালে, কাসিওপেয়া বাষ্পচালিত রেল ইনজিন ব্রিটেন থেকে ভারতে আসে এবং পূর্ব ভারতের কোম্পানির রেল লাইনে প্রথম যাত্রা শুরু করে। ১৯০৮ সালে, কাসিওপেয়া বাষ্পচালিত রেল ইনজিনকে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিলো, পরে ১৯৯৭ সালে, এই ট্রেন আবারও যাত্রীসেবা শুরু করে যাদুঘরের ২০তম বার্ষিকীতে। সে দিন থেকেই প্রতি শনিবার ও রবিবার কাসিওপেয়া বাষ্পচালিত রেল ইনজিন দশ বারোটি বগিতে পর্যটকদের নিয়ে নয়াদিল্লী থেকে রাজস্থানে যায়। ফলে কাসিওপেয়া বাষ্পচালিত রেল ইনজিন বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম ট্রেন হিসেবে খুব সহজেই গিনেস বুকে নিজের জায়গা করে নিয়েছে। এই যাদুঘরে বিভিন্ন ধরনের রেল লাইন ও বাষ্পচালিত রেল ইনজিন রয়েছে এবং এ সবই হচ্ছে বর্তমানে ভারতের রেল পথ চালু হওয়ার সত্যিকারের ঐতিহাসিক প্রতিফলন। তবে এটাও ঠিক যে, প্রশাসন ও সরঞ্জামাদির অভাবের কারণে ভারতে রেল দুর্ঘটনা কোন ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না।কিন্ত ভারতের রেল পথের দেড়শ' বছরের ইতিহাস এখনও সেদেশের মানুষের…
স্বাগতম।