এইখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন সাদত হাসান মান্টো। তাঁর সঙ্গে মাটি-চাপা পড়ে আছে ছোটগল্প রচনার যাবতীয় কারুকৃতি আর প্রহেলিকা [...]

লাহোরে তাঁর সমাধিতে এই এপিটাফের দেখা মিলবে না। কট্টরপন্থী আর মৌলবিদের ভয়ে তাঁর আত্মীয়রা এই স্মৃতিলিপি উৎকীর্ণ করাননি। তবু আজ জন্মশতবর্ষে তাঁর গল্প-রেখাচিত্র-স্মৃতিকথার নিবিড় পাঠের মধ্য দিয়ে না-দেখা সেই কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা নির্ভুল পড়ে নিতে পারি লেখকের স্বরচিত এই এপিটাফ : এইখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন সাদত হাসান মান্টো। তাঁর সঙ্গে মাটি-চাপা পড়ে আছে ছোটগল্প রচনার যাবতীয় কারুকৃতি আর প্রহেলিকা... তাল তাল মাটির নীচে শুয়ে তিনি আপনমনে ভাবছেন, তাঁদের দু’জনের মধ্যে মহত্তর ছোটগল্পলেখক কে : ঈশ্বর না কি তিনি। মৃত্যু : ১৮ জানুয়ারি ১৯৫৫। জন্ম : ১১ মে ১৯১২।

সুফিয়া কামালের জন্ম হয়েছিল আলোর জন্যে প্রতীক্ষারত অন্ধকারাচ্ছন্ন উপনিবেশে। ঔপনিবেশিকতার ওই অন্ধকার ঘিরে রেখেছিল কেবল নারীকে নয়, পুরুষকেও। অন্ধকার ঘিরতে চেয়েছিল সুফিয়াকেও। [...]

সুফিয়া কামালের জন্ম হয়েছিল আলোর জন্যে প্রতীক্ষারত অন্ধকারাচ্ছন্ন উপনিবেশে। ঔপনিবেশিকতার ওই অন্ধকার ঘিরে রেখেছিল কেবল নারীকে নয়, পুরুষকেও। অন্ধকার ঘিরতে চেয়েছিল সুফিয়াকেও। যদিও অভিজাত পরিবারের কন্যা ছিলেন, আর সাত বছর বয়সে উকিল বাবাকে হারানোর পর বারো বছর বয়সে যাঁর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সেই সৈয়দ নেহাল হোসেন ছিলেন উদার মানুষ। সাহিত্যচর্চা আর সমাজসেবায় সুফিয়াকে তিনি প্রেরণা যুগিয়েছিলেন। সুফিয়া বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন আভিজাত্যের অন্ধকার থেকে, তিনি তাঁর সেই আকাঙ্ক্ষার সহযোগী হয়েছিলেন। কিন্তু পারিপার্শ্বিকতা তাঁকে যত অনুপ্রাণিতই করুক না কেন, সমাজ ও রাজনীতিতে রাজত্ব করছিল অন্ধকারই -- সে রাজত্বে গড়পড়তা সব মেয়েরই বিয়ে হত বাল্যকালেই, ব্যতিক্রম ছিলেন না সুফিয়াও। তবে তিনি সৌভাগ্যবতী, বাল্যবিয়ে হলেও শিক্ষার সংস্পর্শে থাকতে পেরেছিলেন, বাড়িতে উর্দুর চল থাকলেও বাংলা শিখেছিলেন, স্বামী তাঁকে বাংলা ভাষা আর সাহিত্যের প্রতি উৎসাহী করে তুলেছিলেন, সাহিত্য ও সাময়িক পত্রপত্রিকার সঙ্গে তাঁকে পরিচিত করে তুলেছিলেন, তিনি এই সহমর্মিতার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছিলেন এবং নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন এমন এক রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগ্রামের জন্যে, যে-সংগ্রাম নারীকে শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দেবে। সুফিয়া কামাল যে অন্যরকম একজন মানুষ হয়ে উঠলেন, তার একটি অন্যতর কারণ এই -- পারিপার্শ্বিক সহমর্মিতাকে তিনি তাঁর মহৎ কর্মযোগে কাজে লাগিয়েছিলেন। তিনি জানতেন সবার জীবন তাঁর মতো নয়, এরকম সহমর্মিতা কোনও নারীর জীবনে বিরল, তাদের জীবন ও ভাগ্য বাঁধা গড়পড়তা অন্ধকারে, সেই অন্ধকারে দু’-একজনের চারপাশ থেকে যত দ্যুতিই বিচ্ছুরিত হোক না কেন, তাতে কিছু আসে যায় না, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাই সবাই মিলে আলোর দিকে যাত্রা করা, আলোর অভিযাত্রী হওয়া। তিনি যত বড় হয়েছেন, নিজেকে ততই নিয়োজিত করেছেন আলোর অভিযাত্রায়, অন্যান্যদেরও আহ্বান করেছেন আলোর অভিযাত্রী হতে। নিজের জীবনে পাওয়া সহমর্মিতার ওই মাধুর্যকে তিনি সর্বজনীন করে তোলার অভিপ্রায়ে কাজ করে গেছেন। প্রায় উপনিবেশিক পাকিস্তানি শাসনামল থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযুদ্ধউত্তর কি সামরিক কি বেসামরিক অগণতান্ত্রিকতার যে-নগ্ন শাসনে সবখানেই তিনি উচ্চকিত হয়েছেন আর তাঁকে কেন্দ্রভূমিতে রেখে উচ্চকিত হয়েছে বাংলার নারীরাও। এইভাবে সুফিয়া কামাল পথিকৃৎ হয়েছেন, হয়েছেন প্রেরণাদায়ী, এমনকি তিনি যখন আর সক্রিয়ভাবে রাজপথে নামতে পারেন না, তখনও আন্দোলনকারীরা জানতেন, ধানমন্ডির একটি বাড়িতে একজন মানুষ আছেন, তিনিও তাঁদের সঙ্গে আছেন, তাঁর সেই বাড়ি ছিল আন্দোলনকারীদের খোলা প্রান্তর। বাঙালি…

তখনকার পঞ্জিকায় দুটিতে বেশ ভাবসাব করে একত্রেই থাকত। কিন্তু তার পরে আজকাল দেখি সেই ইংরেজি তারিখে বাংলা তারিখে ঝগড়া বেধে গেছে, তাদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ। এটা কি ভাল হচ্চে?[...]

এটা তো একটা বড় আক্ষেপ যে আমরা এপার বাংলা ওপার বাংলা আসাম ও ত্রিপুরার বাঙালিরা বাংলা বছরের প্রথম দিন একই দিনে পালন করতে পারি না। বাংলাদেশে আজকে হলে তার পরদিন সাধারণত পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরায় বাংলা নববর্ষ পালিত হয়। শহীদুল্লাহর পঞ্জিকা সংস্কার বাংলাদেশে চালু করা হলেও মেঘনাদ সাহার পঞ্জিকা সংস্কার এখনো পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরায় চালু করা হয়নি। ১৯১৯ সালের মে মাসে রাণু অধিকারী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে একটা রুমাল বানিয়ে উপহার হিসেবে পাঠান এবং তার সাথে এই চিঠিটি পাওয়া যায়। আমার ভানুদাদা, আমি আপনার জন্মদিনের জন্য একটা রুমাল বানিয়েছি। সেই রুমালটার সারাটাই আমি নিজেই বানিয়েছি। তাতে আপনার নামও লিখেছি। আশাদের ইস্কুলে একটা পার্শী মেয়ে পড়ে। তার নাম হোমাই। আমি তার কাছে বানাতে শিখে এই রুমালটা বানিয়েছি। এইটে যদি আপনার জন্মদিনের দিন পৌঁছোয় তো কি মজা হয়। আর শুনুন। এই রুমালটা নিশ্চয় আপনার জন্মদিনের সারাদিইন পকেটে কোরে রাখবেন। যদি না রাখেন তো আপনার সঙ্গে জন্মের মতন আড়ি। বুঝলেন। আপনার নিশ্চয় খুব আনন্দ হচ্ছে। জন্মদিন কিনা। আমি তো জন্মদিনে সারা দিনই লাফিয়ে বেড়াই। আপনি তা বলে লাফাবেন না যেন। বুকে বড় স্ট্রেন লাগবে। আমি যদি আপনার কাছে থাকতাম তো আপনাকে এমন সুন্দর তো আপনাকে এমন চমৎকার করে সাজিয়ে দিতাম। আপনি নিজের রূপ দেখে মুগ্ধ হোয়ে যেতেন। আপনাকে সাজিয়ে গুজিয়ে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিতাম। আমি যখন আপনার প্রাইভেট সেক্রেটারী হব তখন আপনাকে জন্মদিনের দিন পৃথিবীর মধ্যে সুন্দর কোরে সাজিয়ে দেব। আর সেদিন মীরাকে বলে দেবেন পরমোন্ন করতে। জন্মদিনের দিন পরমোন্ন না খেলে পাপ হয়। আমরা শিগ্গিরিই ‘সোলানে’ যাব। সেখানে গিয়ে আপনাকে আমি ঠিকানা দেব। আমি বৈতালিক পেয়েছি আর খুব খুসী হয়েছি। রাণু।। আপনার জন্মদিনে আপনাকে প্রণাম কচ্ছি।। রাণু। রবীন্দ্রনাথ রাণুকে এই চিঠির উত্তরে ৭ মে ১৯১৯ সালে শান্তিনিকেতন থেকে লিখেছেন। কল্যাণীয়াসু রাণু ইংরেজি মতে আজ আমার জন্মদিনের পরের দিন, বাংলা মতে আগের দিন। আমার আসল জন্মদিনে ইংরেজি তারিখ ছিল ৬ মে, বাংলা তারিখ ছিল ২৫শে বৈশাখ। তখনকার পঞ্জিকায় দুটিতে বেশ ভাবসাব করে একত্রেই থাকত। কিন্তু তার পরে আজকাল দেখি সেই ইংরেজি তারিখে বাংলা তারিখে ঝগড়া বেধে গেছে, তাদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ। এটা কি…

ইএমএস-এর কথা আমি প্রথম শুনি তার মৃত্যুর এক বছর পর বোম্বেতে আমার কেরালার বন্ধু সুনীল শ্রীধর-এর কাছে। কিন্তু ইএমএস নাম্বুদিরিপাদের লেখা আমি প্রথম পড়তে শুরু করি ২০০৬ সালে। ২০০৭-এ এসে “ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস” পড়া শেষ হয়। এই একটি বই পড়েই ইএমএস আমার কাছে অসাধারণ এক ইতিহাসবিদ, এক তুলনাহীন রাজনৈতিক লেখকের মর্যাদায় ভাস্বর হয়ে গেলেন। এখন আমার হাতে আছে ইএমএস-এর আত্মজীবনী “ভারতের এক কমিউনিস্টের স্মৃতিমন্থন”, যা পড়তে শুরু করেছি মাত্র এখনো শেষ করতে পারিনি। ইএমএস নাম্বুদিরিপাদের জীবনপঞ্জি (সূত্র : গণশক্তি) • ১৯০৯-এ জন্ম। ১৯২৫ সালে স্কুল ভর্তি হন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই “বেশ উজ্জ্বল ছাত্র” বলে পরিগণিত হন। প্রকৃতপক্ষে তালুকের সদর শহরের জেরা বোর্ডের স্কুলে যে তিন বছর তিনি লেখাপড়া করলেন তাতে জাতপাতের অন্য আর সব বাধা ডিঙ্গিয়ে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে সহযোগিতার সমাজ গড়ার তাঁর হাতেখড়ি হয়। যুবক বয়সে জাত বিভাজনের বিরুদ্ধে সামাজিক সংস্কার আন্দোলনে তিনি সক্রিয় হন। • ১৯২৯ সালে স্কুল ফাইনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, এরপর ত্রিচূড়ে কলেজে পড়াশুনা শুরু করেন। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা শুরু হবার আগে প্রায় প্রতিদিন তাঁর সন্ধেবেলা কেটেছে বিক্ষোভ আন্দোলনে ( ভগৎ সিং ও তাঁর সাথীর ফাঁসির প্রতিবাদেই ওই বিক্ষোভ আন্দোলন)। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরীক্ষায় তিনি ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে পাস করেন। • ১৯৩১ সালে কলেজের পড়াশুনা ছেড়ে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেন। সত্যাগ্রহ আন্দোলন করতে গিয়ে জেলে যান। তখন থেকে কংগ্রেসের আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কেরালার কংগ্রেস সোসালিস্ট পার্টির তিনি ছিলেন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৩২ সালে স্বাধীনতা আন্দোলন করার জন্য জেলে যান। • ১৯৩৪ সালে নিখিল ভারত কংগ্রেস সোসালিস্ট পার্টির প্রথম প্রাথমিক পরামর্শ সভায় এবং ওই বছরেই অক্টোবরে বোম্বাই-এ প্রথম সর্বভারতীয় সম্মেলনে যোগদান করেন। ওই সম্মেলনেই সর্বভারতীয় স্তরে যুগ্ম সম্পাদক হন এবং যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় পর্যন্ত ওই পদে কাজ করেন। কেরালা প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে এই সময়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবার সময়েই কমরেড ইএমএস মার্কসবাদের সঙ্গে পরিচিত হন। • ১৯৩৬ সালে কেরালায় যে পাঁচজন মিলে কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম প্রুপ গড়ে তোলেন কমরেড ইএমএস ছিলেন তাঁদেরই একজন। সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্তবাদ-বিরোধী দুই সংগ্রামের স্রোতধারার মিলনের প্রতিনিধি ছিলেন ইএমএস। কেরালার শক্তিশালী কমিউনিস্ট আন্দোলন গড়ে তোলার ভিত্তি ছিল এই…

১৮ জুলাই বা দোসরা শ্রাবণ থেকে বিষ্ণু দে তাঁর আয়ুর দ্বিতীয় শতকে পা দিলেন। এখন থেকে তাঁর বয়সের হিসেব হবে শতক দিয়ে। এখন থেকে তাঁর জন্মদিনের উৎসব কর্তব্যকর্মের কর্মসূচির বাইরে চলে যাবে। হয়ত আরও ছড়িয়ে যাবে সেই জন্মদিন পালন। আমরা যেমন অপক্ষোয় থাকি তিন-চার শতক বা সহস্রক পূর্তিতে কোনও মহাশিল্পীর সঙ্গে আমাদের আত্মীয়তা গড়তে। ততদিনে তাঁরা নিজের ভাষার ও দেশের সীমা ও সময়ের সীমা পেরিয়ে মানব সভ্যতার মাইলফলক হয়ে যান। সেই ফলকগুলি দিয়ে আমরা মানব সভ্যতার বাঁকগুলি চিনে নিতে চাই। বাঁক ও পথ [...]

ওরকম আমারও ঘটেছে, যখন গায়ক নিজে অথবা গায়িকা হ’য়ে ওঠে গান কথা সুর, আর শ্রোতা হয়ে যায় অধরা সে গানের বিষয়, আধেয় আধার একাকার শরীর ও অশরীরী প্রাণ; তখন মুহূর্তে ধুয়ে যায় অসমাপ্ত বর্তমান সমস্ত জঞ্জাল। একবার মনে আছে একটি টপ্পার মধ্যে উদভাসিত হয়েছিল আসমুদ্রহিমালয় প্রাচীন বিশাল ভারতবর্ষের অন্তরের ঘনিষ্ঠ আকাশ মালতী ঘোষাল তাঁর স্পষ্ট স্বরে গাইলেন যখন এই পরবাসে রবে কে এ পরবাসে আজীবন দীর্ঘ পরবাস— ... গানের বাস্তবে মাঝে-মাঝে এরকম ঘটে, মনে পড়ে একবার কয়েকটি পড়া শোনা কথা দেবব্রত বিশ্বাসের উদাত্ত গলার একাত্তীকরণে কী দরদী ঢেউ তুলেছিল এক সভাঘরে, সভ্যভব্য মনে, গায়কের দুই চোখ অন্তরঙ্গ, সমগ্র চেতনা শুধু গানে, কথার গলার বৃষ্টিতে বিদ্যুতে সুরে একাকার, বাইশে বা অন্য কোনো দিন হয়তো-বা দোসরা শ্রাবণে ... ‘আজকাল’ ১৮ জুলাই ২০০৯-এর উত্তর সম্পাদকীয়তে বিষ্ণু দে-র জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে লিখেছেন দেবেশ রায়। তাঁর কাছে “ বিষ্ণু দে আমাদের সবচেয়ে মৌলিক আধুনিক কবি। সে আধুনিকতার কোনও ‘আমি’ নেই। তাই তাঁর দায়—বাছাই ঝাড়াই উপকরণগুলো খুলে দেওয়া, সাজিয়ে দেওয়া।” বিস্তারিত পড়ুন... দোসরা শ্রাবণে দেবেশ রায় বিষ্ণু দে জন্মেছিলেন ১৮ জুলাই, সেদিন ছিল দোসরা শ্রাবণ। এবার ১৮ জুলাই পড়েছে বাংলার পয়লা শ্রাবণে। এ বছরের ১৭ জুলাই বিষ্ণু দে তাঁর জীবনের আয়ুক্ষেত্রের একশো বছর পূর্ণ করলেন। ১৮ জুলাই বা দোসরা শ্রাবণ থেকে বিষ্ণু দে তাঁর আয়ুর দ্বিতীয় শতকে পা দিলেন। এখন থেকে তাঁর বয়সের হিসেব হবে শতক দিয়ে। এখন থেকে তাঁর জন্মদিনের উৎসব কর্তব্যকর্মের কর্মসূচির বাইরে চলে যাবে। হয়ত আরও ছড়িয়ে যাবে সেই জন্মদিন পালন। আমরা যেমন অপক্ষোয় থাকি তিন-চার শতক বা সহস্রক পূর্তিতে কোনও মহাশিল্পীর সঙ্গে আমাদের আত্মীয়তা গড়তে। ততদিনে তাঁরা নিজের ভাষার ও দেশের সীমা ও সময়ের সীমা পেরিয়ে মানব সভ্যতার মাইলফলক হয়ে যান। সেই ফলকগুলি দিয়ে আমরা মানব সভ্যতার বাঁকগুলি চিনে নিতে চাই। বাঁক ও পথ। এই প্রথম একশো বছরে আমরা যারা আছি—তাঁর প্রায় সমান বয়েসি, বা অসমান বয়োবৃদ্ধরাও, বা পুত্র-কন্যা তুল্য বয়েসিরা, বা তাদের সন্তান-সন্ততি, এমনকি, যারা তাঁর বয়স থেকে এতটাই দূরে যে, তাঁর বয়সের কোনও অনুগামিতা বোধ করেন না—তাদের সকলেরই একটা দায় থাকে জানানোর যে, আমরা কিন্তু খেয়াল রেখেছি সেই দায়। কাকে জানানো?…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.