লাহোরে তাঁর সমাধিতে এই এপিটাফের দেখা মিলবে না। কট্টরপন্থী আর মৌলবিদের ভয়ে তাঁর আত্মীয়রা এই স্মৃতিলিপি উৎকীর্ণ করাননি। তবু আজ জন্মশতবর্ষে তাঁর গল্প-রেখাচিত্র-স্মৃতিকথার নিবিড় পাঠের মধ্য দিয়ে না-দেখা সেই কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা নির্ভুল পড়ে নিতে পারি লেখকের স্বরচিত এই এপিটাফ :
এইখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন সাদত হাসান মান্টো। তাঁর সঙ্গে মাটি-চাপা পড়ে আছে ছোটগল্প রচনার যাবতীয় কারুকৃতি আর প্রহেলিকা… তাল তাল মাটির নীচে শুয়ে তিনি আপনমনে ভাবছেন, তাঁদের দু’জনের মধ্যে মহত্তর ছোটগল্পলেখক কে : ঈশ্বর না কি তিনি।
মৃত্যু : ১৮ জানুয়ারি ১৯৫৫। জন্ম : ১১ মে ১৯১২।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১৩ comments
মাসুদ করিম - ১১ মে ২০১২ (২:৫১ পূর্বাহ্ণ)
সাদাত হাসান মান্টো উর্দুতে কোন শব্দ ব্যবহার করেছিলেন ‘আল্লাহ’ না ‘খোদা’ নাকি ‘ঈশ্বর’ই ব্যবহার করেছিলেন, জানা আছে আপনার? নাকি এ তিনের বাইরে ভিন্ন কোনো প্রতিশব্দ, জানা যায় কোনো ভাবে?
রেজাউল করিম সুমন - ১১ মে ২০১২ (৩:১০ পূর্বাহ্ণ)
আমি তো পড়েছি মান্টোর মূল উর্দু থেকে খালিদ হাসানের ইংরেজি অনুবাদ। সেখানে আছে God; মূলে কী ছিল আমার জানা নেই।
মাসুদ করিম - ১২ মে ২০১২ (১:২৯ অপরাহ্ণ)
খালিদ হাসানের ইংরেজি অনুবাদটা এখানে একটু তুলে দেবেন? কারণ, খুঁজতে গিয়ে এত রকমের ইংরেজি অনুবাদ পাচ্ছি খুব বিভ্রান্ত বোধ করছি।
নায়েম লিটু - ১১ মে ২০১২ (৯:০৮ পূর্বাহ্ণ)
অসাধারণ এপিটাফ। তিনি ঈশ্বর বলেছেন না আল্লা এ-জিজ্ঞাসা এখন অর্থহীন। তাঁর মূলভাবটা অনুভব করতে পারলাম কিনা সেটাই আজ বিবেচ্চ…
মাসুদ করিম - ১১ মে ২০১২ (১১:২৫ পূর্বাহ্ণ)
অনুবাদের দিক থেকে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে মূল লেখক কোন শব্দটি ব্যবহার করেছেন। আর মান্টোর ভাষা যেহেতু উর্দু, সেখানে উর্দু ভার্সনটা পেলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা, কারণ উর্দুর অনেক শব্দ আমাদের কাছে ইংরেজির চেয়েও বেশি পরিচিত। আর ‘আল্লাহ’, ‘খোদা’, ‘ঈশ্বর’,’God’ এদের আপাত প্রতিশব্দ ধরা হলেও এগুলো একই অর্থের প্রতিনিধিত্ব করে না।
অদিতি কবির - ১১ মে ২০১২ (২:০২ অপরাহ্ণ)
যে কয়েকজন পাকিস্তানির সাথে আলাপ হয়েছে, তাঁদের আল্লাহ বা খুদা বলতেই শুনেছি।
মাসুদ করিম - ১১ মে ২০১২ (১:০০ অপরাহ্ণ)
এছবিটা কেমন জানি মানিককে মনে করিয়ে দেয়।
মাসুদ করিম - ১২ মে ২০১২ (১০:৪২ পূর্বাহ্ণ)
মান্টোর লেখা এপিটাফ বদলে এখন যেএপিটাফটি আছে মান্টোর সমাধিতে তাতে লেখা আছে
বিস্তারিত পড়ুন এখানে আর এপিটাফটি দেখুন এখানে।
মাসুদ করিম - ১২ মে ২০১২ (১:২৪ অপরাহ্ণ)
পাকিস্তানের ডন পত্রিকা মান্টোর এপিটাফের সূত্র ধরে একটা ফটোগ্যালারি বানিয়ে ফেলল, কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর অধরাই থেকে গেল। আশ্চর্য লাগছে মান্টোর পরিবর্তিত এপিটাফের উর্দুটা সবাই দেয়, কিন্তু মান্টোর নিজের লেখা এপিটাফটার উর্দুটা কেউ দেয় না। অনন্যসাধারণ উপমহাদেশ! কারণ ভারতীয় কিছু ব্যক্তিগত সূত্রও সন্ধান করেছি সবারই একই অবস্থা। ডনের এই ফটোগ্যালারির টেক্সট বলছে পরিবর্তিত এপিটাফে লেখা আছে
আর মান্টোর নিজের লেখা এপিটাফ? ডনের এই ফটোগ্যালারির টেক্সট বলছে
ফটোগ্যালারির ছবি ও টেক্সট পড়ুন এখানে। নিজের ওপর একটাই খেদ হচ্ছে কেন উর্দু পড়তে পারি না!
রায়হান রশিদ - ১৩ মে ২০১২ (৭:৫৯ পূর্বাহ্ণ)
সুমন,
এপিটাফ বদলে “নির্দোষ” টেক্সট দিয়ে সেটা প্রতিস্থাপিত হওয়ার বিষয়টি পোস্টে উল্লেখ থাকতে পারতো হয়তো। সেটার একটা প্রাসঙ্গিক ডাইমেনশন ছিল এবং আছে।
ধন্যবাদ।
রেজাউল করিম সুমন - ১৫ মে ২০১২ (২:৩৯ পূর্বাহ্ণ)
মান্টোর কবরের কোনো ছবি কি নেটে খুঁজে পাব? — মনে মনে ভাবছিলাম। মাসুদ করিম নিজে থেকেই তার খোঁজ দিলেন। ধন্যবাদ, মাসুদ ভাই।
খালিদ হাসান সম্পাদিত ও অনূদিত ‘Bitter Fruit: The Very Best of Saadat Hasan Manto’ বইয়ে (পৃষ্ঠা ৬৭৫) আমার প্রিয় লেখকের এপিটাফ পড়ে তাৎক্ষণিকভাবে অনুবাদ করেছিলাম। ‘In the name of God, the compassionate, the Merciful’ — এই সূচনাংশটুকু কোনো রহস্যময় কারণে সেখানে ছিল না; কিন্তু পরে লক্ষ করেছি, অনুবাদকের লেখা দীর্ঘ ভূমিকায় (পৃষ্ঠা xxv) পুরো এপিটাফটিই উদ্ধৃত হয়েছে। সেই ভূমিকা থেকে এপিটাফ সংক্রান্ত অংশটুকু তুলে দিচ্ছি :
মাসুদ ভাইয়ের দেয়া ‘ডন’-এর লিংক অনুসরণ করে মান্টোর সমাধির ছবির সঙ্গে পাওয়া গেল গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্য :
২
রায়হান,
ধন্যবাদ। যৎসামান্য তথ্যের ভিত্তিতে ধরে নিয়েছিলাম, মান্টোর স্বরচিত এপিটাফটি কার্যত ব্যবহৃতই হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে খালিদ হাসান অনূদিত সংকলনের কেবল পৃষ্ঠা ৬৭৫-এর উপর নির্ভর করেই এই পোস্টটা তৈরি করা হয়েছিল, যেখানে পাদটীকায় উল্লেখ ছিল :
‘এপিটাফ বদলে “নির্দোষ” টেক্সট দিয়ে সেটা প্রতিস্থাপিত হওয়ার বিষয়টি’র উল্লেখ অবশ্যই বাঞ্ছনীয় ছিল। পোস্ট লেখার সময়ে তথ্যের অপ্রতুলতার জন্যই এখানে সে-বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছিল। মাসুদ ভাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ সংযোজনের মধ্য দিয়ে সে-অভাব দূর হলো।
রফিকুল আনোয়ার রাসেল - ১৯ মে ২০১২ (১২:৪৪ পূর্বাহ্ণ)
ধন্যবাদ সুমন ভাই এই পোস্ট’টির জন্য। গত বছর থেকে ভাবছিলাম, এই বছরে বেশ ঘটা করে সা’দাত হুসেন মানটো’র জন্ম শতবার্ষিকী পালন করা হবে। কিন্তু ১১ মে, একটু অবাক হলাম। খুব বেশি কোথাও মানটো-কে নিয়ে লেখালিখি, কথাবার্তা শোনা গেল না। একবার মনে হল, হয়তো উর্দুভাষী লেখক বলে আমাদের দেশে তার জনপ্রিয়তা কম। কিন্তু বিশ্ব সাহিত্যের মানুষ জন নিয়েও তো আমাদের অনেক উৎসাহ থাকে, সে দিক থেকে মানটো কি তাহলে বিশ্ব মানের সাহিত্যিক নয় ? আসলে, আমি নিজেও মানটো কে জানছি গত বছর থেকে, হটাৎ একদিন একটি অনুবাদ গ্রন্থে ‘টোবাটক সিং’ পড়ে থমকে গিয়েছিলাম। এর পর তার সম্পর্কে জানলাম, তার গল্প পড়লাম এবং তার একজন ভক্ত হলাম। আমি সাহিত্য জগতের সাংগঠনিক নই, তবু মনে হল এই লেখককে আমাদের গভীর ভাবে পাঠ করা প্রয়োজন। আপনার জন্য মানটো-কে নিয়ে একটা লেখা এবং তার মেয়ের ইন্টারভিও – এর লিঙ্ক দিলাম। হয়তো কাজে লাগতে পারে।
http://kafila.org/2012/03/12/a-hundred-years-of-manto/
http://www.viewpointonline.net/we-dont-want-to-cash-in-on-manto-nighat-manto.html
মাসুদ করিম - ৯ সেপ্টেম্বর ২০১২ (১:২১ অপরাহ্ণ)
মন্টোর তিন মেয়ে নিগাত প্যাটেল মন্টো, নুসরাত জালাল মন্টো ও নুঝাত আরশাদ মন্টো তাদের বাবার দেশে সম্বর্ধিত হল।