শহীদ মিনার কি ধর্মীয় উৎসব উদ্‌যাপনের স্থান?

আমরা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ; গত দু'দিন ধরেই একটি প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে : শহীদ মিনার কি ঈদের নামাজ পড়ার স্থান? [...]

আমরা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ; গত দু’দিন ধরেই একটি প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে : শহীদ মিনার কি ঈদের নামাজ পড়ার স্থান?

ছবি : জুবায়ের রাকেশ

বেহাল মহাসড়কের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের অপসারণ দাবি করে ‘ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবী জনতা’ গত বুধবারে (২৪ আগস্ট) যে-কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তার সারমর্মের সঙ্গে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কোনো দূরত্ব নেই। যদিও এই দাবিসমূহ আরো সুনির্দিষ্ট হতে পারত; যেমন, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগের দাবিও এখানে যুক্ত হতে পারত।

কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, এই কর্মসূচির মাধ্যমে পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসক থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সামরিক জান্তা হোসেইন মুহম্মদ এরশাদ সহিংস উপায়ে যে-কাজটি করতে পারেননি, সৈয়দ আবুল মকসুদের নেতৃত্বে ‘ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবী জনতা’ অহিংস উপায়ে ঠিক সেই কাজটিই করতে চলেছেন — তাঁরা শহীদ মিনারের মতো সেক্যুলার জনদাবি আদায় ও শ্রদ্ধানিবেদনের সম্মিলনস্থানটিকে ধর্মীয় উৎসব উদ্‌যাপনের স্থানে পরিণত করতে চলেছেন। এর ভবিষ্যৎ কী তা কি আমরা একবারও ভেবে দেখেছি?

আমরা আশা করব, এই কর্মসূচি পালনের স্থান পরিবর্তন করা হবে। শহীদ মিনারকে ধর্মপরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে সম্মিলনের স্থান হিসেবেই দেখতে চাই, ধর্মীয় উদ্‌যাপনের স্থান হিসেবে নয়।

অবিশ্রুত

সেইসব দিন স্মরণে,- যখন কলামিস্টরা ছদ্মনামে লিখতেন; এমন নয় যে তাদের সাহসের অভাব ছিল, তারপরও তারা নামটিকে অনুক্ত রাখতেন। হতে পারে তাৎক্ষণিক ঝড়-ঝাপটার হাত থেকে বাঁচতেই তারা এরকম করতেন। আবার এ-ও হতে পারে, সাহসকেও বিনয়-ভুষণে সজ্জিত করেছিলেন তারা। আমারও খুব ইচ্ছে দেখার, নামহীন গোত্রহীন হলে মানুষ তাকে কী চোখে দেখে... কাঙালের কথা বাসী হলে কাঙালকে কি মানুষ আদৌ মনে করে!

২০ comments

  1. মাসুদ করিম - ২৬ আগস্ট ২০১১ (১:১৬ অপরাহ্ণ)

    এইসব বিষয়ে আর কথা বলতে ইচ্ছে হয় না। বাংলাদেশের ‘মিডিয়াজীবী’রা এখন নিজেদের ‘হিট’এ পরিণত করতেই ব্যস্ত। আর সৈয়দ আবুল মকসুদ কি বাংলাদেশের গান্ধীবাদী শোয়ের অগ্রনায়ক হিসাবে অভিষিক্ত হতে চান অদূর ভবিষ্যতে?

    • মাসুদ করিম - ২৮ আগস্ট ২০১১ (১:০৯ অপরাহ্ণ)

      এই তো ‘মিডিয়াজীবি’দের গান্ধীবাদী সৈয়দ আবুল মকসুদকে ‘আন্না হাজারে’ বানানোর তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে।

      প্রধানমন্ত্রীর ইংগিতপূর্ণ কথার পরিপ্রেক্ষিতে বুদ্ধিজীবীরা যখন শহীদ মিনারে ‘প্রতীকি’ ঈদ উদযাপানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন বটতলার ব্যর্থ কালো কোট কামরুল, অশ্লীল ইংগিতে গালি দিলেন বরেণ্য সৈয়দ আবুল মকসুদকে। মকসুদ ভাইয়ের পোষাক নিয়েও কটূক্তিতে দ্বিধা করেননি এই উকিল। কামরুল সাহেব জানেন, কালো কোট গায়ে চাপালেই আইনজ্ঞ হওয়া যায়না, খালি জামিনের দালালিতে, ভূয়া স্বাক্ষী যোগাড়ে যত টাকা রোজগার হয়, ততো টাকা আইন জানতে হয়না। কামরুল জানেন, আইন সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞানহীনেরাই আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান! নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বিচার করেছেন সৈয়দ আবুল মকসুদকে। সম্ভবতঃ জাতীয় প্রক্ষাপটে সৈয়দ আবুল মকসুদের গুরুত্ব তার বটতলার মগজে ঢুকেনি। কামরুল সাহেবদের মতো বটতলাবাসীরা জানেন না, ‘আন্না হাজারে’ আজ আর একটি নাম নয়। আন্না হাজারে আজ একটি প্রতিবাদের প্রতীক। সৎ ও সাহসী মানুষের উপমা। সৎ ও সাহসী আবুল মকসুদের পক্ষেই একমাত্র বাংলাদেশের ‘আন্না হাজারে’ হওয়া মানায়।

      সৈয়দ আবুল মকসুদের আহ্বানে ঈদ শহীদ মিনারেই হছে। এই প্রতীকি ঐক্য থেকেই সূচিত হবে আগামীর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ধারা। যেখানে অযোগ্য, দূর্নীতিবাজ ও ব্যর্থদের কোনো স্হান হবেনা। এই ঐক্য আওয়ামী বিরোধী বা বিএনপি’র পক্ষাবলম্বীদের নয়, এই ঐক্য সাধারণের মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের। এই সূচনা। আগামীর বাঙালী `আন্না হাজারে` মকসুদের সাথে আপোষ আলোচনার জন্যে হয়তো বৈঠকেই বসবেন কামরুলরা। এটাই রাজনীতির ট্রাজেডি।

      সৈয়দ আবুল মকসুদ ‘আন্না হাজারে’ কেন, আন্না হাজারের বাবা হোন না, কিন্তু শহীদ মিনারে ‘ইদ’ উদযাপন করে কেন?

      • মাসুদ করিম - ২৮ আগস্ট ২০১১ (১:২৭ অপরাহ্ণ)

        সাধারণত অনশন দিয়ে শুরু হয় সিভিল অনাস্থা, তারপর দাবি পূরণে সফল হলে অনশন ভেঙ্গে হয় জয় ঘোষণা। সৈয়দ আবুল মকসুদের ক্ষেত্রে কি উল্টোটা হবে — খাওয়া-দাওয়ার মহোৎসবে শুরু হবে সিভিল অনাস্থা তারপর দাবি পূরণে সফল হলে রাখতে শুরু করবেন নফল রোজা? কী বলব ‘বাংলাদেশের গান্ধীবাদী’ নাকি এযুগের ‘মুসলিম গান্ধীবাদী’?

        • শামীম - ৩১ আগস্ট ২০১১ (২:৩৩ অপরাহ্ণ)

          দেখা যাচ্ছে, সৈয়দ আবুল মকসুদের সঙ্গে আন্না হাজারের প্রতিতুলনা উঠে আসছে নানা মহল থেকেই, এমনকী ক্ষেত্রবিশেষে একে খারিজ করে দেয়ার জন্য হলেও।

          বিডিনিউজ২৪-এ আসিফ সালেহ-র প্রতিক্রিয়া : Anna bhai, Gandhigiri and us

          অরুন্ধতী রায় আন্না হাজারের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনকে হাজারে মহোদয়ের ‘মস্তিষ্ক-প্রসূত নয়’ মন্তব্য করেছেন [লিংক] :

          অরুন্ধতী রায় বলেন, আন্না হাজারেকে বেছে নেওয়া হয়েছে এবং আমজনতার সামনে সন্ত হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই আন্দোলন আন্নার মস্তিষ্ক-প্রসূত নয়। এ জন্য বিষয়টি উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো।

          অরুন্ধতী বলেন, সাধারণ জনতার আন্দোলন আর আন্না হাজারের নেতৃত্বাধীন এই আন্দোলন এক নয়। এর পেছনে গণমাধ্যমের কারসাজি রয়েছে অভিযোগ এনে তিনি বলেন, জনতা হাজারের আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে, অংশ নিয়েছে এটা সত্যি, তবে তারা সবাই মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নয়। অনেকে এসেছেন যেন তারা গণমাধ্যমের সাজানো রিয়েলিটি শোতে অংশ নিতে এসেছেন।

          সাক্ষাত্কারে অরুন্ধতী রায় আরও বলেন, ১০০ কোটি মানুষের দেশ এই ভারতে গণমাধ্যম যেন প্রতিবেদন করার আর কিছু পাচ্ছে না। কয়েকটি টিভি চ্যানেলও এই আন্দোলনের পক্ষে প্রচার চালিয়েছে। প্রথমত এটাও আমার কাছে মনে হয়েছে এক ধরনের দুর্নীতি। কারণ গণমাধ্যমের কাজ কোন কিছুর পক্ষে প্রচার চালানো নয়, তাদের কাজ প্রতিবেদন করা।

  2. রায়হান রশিদ - ২৬ আগস্ট ২০১১ (৪:৫৩ অপরাহ্ণ)

    নিজের ঢোল বাজলে দেশের নাম!

  3. রেজাউল করিম সুমন - ২৬ আগস্ট ২০১১ (৮:৫০ অপরাহ্ণ)

    আপনি লিখেছেন,

    আমরা আশা করব, এই কর্মসূচি পালনের স্থান পরিবর্তন করা হবে। শহীদ মিনারকে ধর্মপরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে সম্মিলনের স্থান হিসেবেই দেখতে চাই, ধর্মীয় উদ্‌যাপনের স্থান হিসেবে নয়।

    একই মত আমাদেরও।

    এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের মেরামতকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে যোগাযোগমন্ত্রী বলেছেন (খবরের লিংক):

    ঈদের আগে যদি রাস্তা যানবাহন চলাচলের জন্য সাময়িকভাবে উপযোগী না হয় এবং মানুষ বাড়ি যেতে না পারে, তবে আমিও শহীদ মিনারে গিয়ে ঈদ করব।

    ধাষ্টামোরও তো একটা সীমা থাকা উচিত!

  4. আবু নাসের রবি - ২৯ আগস্ট ২০১১ (৭:২৪ অপরাহ্ণ)

    অবাক হই না এখন আর, আমাদের সামনে শুধুই অন্ধকার দেখি, দেশে সড়ক যোগাযোগের যে বেহাল দশা সেটি এত দিনে আমাদের বুঝতে হল এক অপূরণীয় ক্ষতি মেনে নিয়ে। সামনে ঈদ — সারা দেশ ব্যস্ত, সবাই যে করে হোক নিজের অঞ্চলে ফিরতে মরিয়া। এই সব বাস্তবতা জেনেও, অনেক অনিশ্চয়তা ও অনিরাপত্তার ভিতর থেকেও আজ মনে প্রশ্ন জাগে, মান বড় না প্রাণ বড়?

    শহীদ মিনার আর ধর্মীয় উৎসব কী উপায়ে মানবিক নিরাপত্তার দাবি আদায়ের প্রশ্নে তালগোল পাকিয়ে ফেলছে ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। এর ভিতরে আবার কী পলিটিক্স আছে না আছে তাও বোঝা মুশকিল। আসলে শহীদ মিনারে দাবি আদায়ের জন্য আমরা সময়ে-অসময়ে সমবেত হয়েছি, এটি হয়ে আসছে এর ঐতিহাসিক পটভূমি ধরে। আর এও সত্যি এই স্থানটি দেশের অন্য যে-কোন স্থানের মত সাধারণ একটি স্থান নয়, কেননা বাংলার মানুষের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের বোধকে উজ্জীবিত করা ও বয়ে নেবার জন্য এটি একটি অপরিহার্য স্থাপনা। এর সেকুলার থাকা খুবই জরুরী। আমারা আশা করবো যাঁরা মানুষের অত্যন্ত মানবিক নিরাপত্তার কথা ভেবে সরকার ও তাঁর চালিকাশক্তির উপর একটি সত্যিকারের চাপ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা অনেক দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন মানুষ, আমাদের জাতীয় সম্মান ও আত্মপরিচয়ের বোধ সম্পর্কে তাঁদের যথেষ্ট সজাগ দৃষ্টি আছে। সময়ের তাগিদ বা মানবিক কারণে যে-কর্মসূচী এসেছে তাতে পুরো জাতি একমত হবেন, কিন্তু স্থানের সাথে ভবিষ্যতের রাজনীতির খারাপ যোগ যদি একবার মিলেমিশে যায় এ বিভ্রান্ত জাতি আরও বিভ্রন্তির ভিতর গিয়ে পড়তে পারে… তাই সবার সাবধানতা কামনা করি। আমরা একটি সুন্দর সেকুলার ও স্বতঃস্ফূর্ত সাংস্কৃতিক প্রোফাইলের আগামী বাংলাদেশ দেখতে চাই, আমাদের নেতারা নিশ্চয়ই এটুকু সচেতনতার পরিচয় দেবেন…

  5. শামীম - ৩০ আগস্ট ২০১১ (১০:০৯ পূর্বাহ্ণ)

    ভালো লাগল।

    একই বিষয় নিয়ে নিজস্ব বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন আরিফ জেবতিক, আমার ব্লগ-এ। লিংক এখানে। নীচে কোট করছি।

    শহীদ মিনারে ঈদ পালন আর এসলামীবঙ্গের বু্দ্ধিজীবিদের সংকট

    স্বীকার করে নিতে হয় যে, আইডিয়ার অভিনবত্বের কারণেশহীদ মিনারে ঈদ পালনের আইডিয়াটা আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। মানুষ নতুনত্ব পছন্দ করে, সেই নতুনত্বে সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসবের সঙ্গে রাজনীতির এই মিশেল একটা নতুন আইডিয়া। আমরা বছরের ৩৬৫ দিনই রাজনীতি করা জাতি, ঈদের দিন যদি লাইন ধরে বিএনপি আওয়ামীলীগ কর্মীরা নিজ নিজ নেত্রীর সঙ্গে দেখা করে রাজনীতি করতে পারে, সেক্ষেত্রে নেত্রীবিহীনদের জন্য শহীদ মিনারে ঈদ পালন একটা ভালো কর্মসূচি হতে পারে।

    শহীদ মিনারে ঈদের দিন জমায়েত রাজনৈতিক ভাবে একটি ভালো কর্মসূচি, যার সাফল্যের হার তুলনামূলকভাবে বেশি।

    কারণ বহুবিধ:

    ক. ঈদের দিন ঢাকায় সকালে নামাজ পড়ার পরে আসলে কোনো কাজকর্ম থাকে না। চিড়িয়াখানা আর ফ্যান্টাসি কিংডমে প্রচণ্ড ভিড় হয়। এর বাইরে যাওয়ার কোনো জায়গাও নেই। সেক্ষেত্রে মধ্যবিত্তের জন্য শহীদ মিনার একটা ভালো বিকল্প হতে পারে।

    খ. ঢাকার বিভিন্ন দল-মত-পথের এক্টিভিস্টদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত হবে। একটা সামাজিকতা হবে।

    গ. যেহেতু যানজট নেই, সুতরাং মিরপুর টু মতিঝিল, বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন সহজেই আসতে পারবে।

    ঘ. ঈদের দিন পুলিশ দিয়ে পেটালে সরকারের ভাবমূর্তি খারাপ হবে, তাই পুলিশ এখানে মৃদু লাঠিচার্জ করবে না। এদিক দিয়ে নিরাপদ কর্মসূচি।

    ঙ. ঈদের দিন মিডিয়া খবর সংকটে পড়ে। হাসিনা-খালেদার বাইরে নিউজ আইটেম নেই। সুতরাং শহীদ মিনারের কর্মসূচি এদিন ভালো কাভারেজ পাবে।

    এই কর্মসূচি দিয়ে দেশ আবুলমুক্ত করা যাবে কি না সেটা পরের ব্যাপার। তবে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক ভাবে কাবু করার জন্য এই কর্মসূচি যথেষ্ঠ। কুড়ি বছর পরেও রেফারেন্স টানা হবে, ‌’শেখ হাসিনার সরকারের সময় দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা এমনই ভেঙ্গে পড়েছিল, মানুষ ঈদ করতে বাড়ি যেতে পারেনি। সেই সময় প্রতিবাদী মানুষ ঈদের দিন পর্যন্ত শহীদ মিনারে বিক্ষোভ দেখাতে বাধ্য হয়েছিল।’

    কাহিনীর এই রাজনীতি থেকে বিভিন্ন পক্ষ যার যার মতো ফায়দা তুলতে চেষ্টা করবে সেটাই স্বাভাবিক। সুতরাং ওসব নিয়ে আলাপ আপাতত স্থগিত।

    ২.
    ঈদের দিনের কর্মসূচি নিয়ে আমি কিছু লোককে বেচাইন দেখছি। এদের চেষ্টা হচ্ছে এই কর্মসূচিকে ব্যাঙ্গবিদ্রুপ করা। সরাসরি করতে কিছুটা লজ্জা লাগছে বলেই হয়তো আকারে ইঙিতে এরা ‘সেকুলার কেন ঈদ পালন করবে’ জাতীয় অতি নিম্নশ্রেনীর যুক্তি কাইজ্যা বিভিন্ন জায়গায় ছড়াচ্ছেন।

    এদের রাজনীতিটা কী?

    এইখানেই আমি একটা মজা দেখছি। এরা মূলত এসলামী বাংলাদেশের নতুন মধ্যবিত্ত চিন্তক শ্রেনী। এরা সরাসরি জামাতি আর আমিনীর সঙ্গে জড়িত কি না তা প্রকাশ্যে সহজে বুঝতে পারা যায় না, কিন্তু এসলামী বাংলার প্রতি তাদের মহব্বত, ইশক এসব বিভিন্ন লেখালেখি ও বক্তব্যে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে টের পাওয়া যায়।

    এদের জন্য রাজনৈতিক ভাবে বাম ও দলবিহীন মধ্যবিত্ত এক্টিভিস্টদেরকে কোনঠাসা করে রাখার সহজ উপায় হচ্ছে এদেরকে ধর্মহীন হিসেবে প্রমান করা। কাউকে যদি প্রথমেই ধর্ম থেকে ছেটে ফেলা যায়, তাকে রাজনৈতিক ভাবে দুর্বল করে ফেলা যায়। এই দুর্গতি কমিউনিস্টদের হয়েছে এই দেশে। এরা ভোটের রাজনীতিতে সফল হতে পারে নি যেসব কারণে এর অন্যতম হচ্ছে নাস্তিকতা নিয়ে এদের বিষয়ে বড় প্রপাগান্ডাটা হয়।

    যাক, আমার মনে হচ্ছে সুশীল এসলামী বুদ্ধিজীবি এবং সুশীল সেকুলার বুদ্ধিজীবি এবং তাদের রাজনৈতিক গাটছড়াগুলো দেশের বুদ্ধিজীবি সেক্টরে পরষ্পরের প্রতিদ্বন্ধি, প্রতিযোগী। এই সেক্টরে তাই একজন আরেকজনকে দুর্বল করে ফেলতে পারলে রাজনৈতিক ভাবে ভালো সুবিধা নিতে পারবে এটাই স্বাভাবিক।

    কিন্তু এবার সেকুলাররা এসলামী বুদ্ধিজীবিদের সেক্টরে হাত দিয়ে দিয়েছেন। ইনারা ঈদকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের ফন্দি এটেছেন। আমি উপরেই বলেছি যে এই কর্মসূচি সফল হওয়ার ভালো সম্ভাবনা আছে। আর যদি একবার তারা এই মজা পেয়ে যান, সেক্ষেত্রে পাবলিকের কাছে পৌছার জন্য ভবিষ্যতে তারা আরো এই ধরণের কর্মসূচি নিতে পারেন।

    আর এখানেই সংকট। এখানেই এসলামী বঙ্গের বুদ্ধিজীবিরা হয়তো নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তারা এই কর্মসূচিকে দুর্বল করার জন্য প্রপাগান্ডা চালাচ্ছেন।

    এর বাইরে শহীদ মিনারে ঈদ পালনের কর্মসূচির বিরোধিতা করার আর কোনো কারণ আমার চোখে পড়ছে না আপাততত।

  6. রায়হান রশিদ - ৩০ আগস্ট ২০১১ (৫:৩১ অপরাহ্ণ)

    কিছু কিছু বিষয় role reverse করলে বুঝতে সুবিধা হয়। যেমন ধরা যাক, আজকে থেকে যদি বায়তুল মোকাররমের জুম্মা বার কোন সেক্যুলার দাবী দাওয়া আলোচনার কেন্দ্র হয়ে ওঠে তখন যেমন সেটা অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে, বিষয়টি আমার কাছে তেমনই। সেক্যুলার রাজনীতি, সেক্যুলার প্রতিষ্ঠান, সেক্যুলার সংবিধান সর্বত্রই তো ধর্মীয় অনুষঙ্গের অনুপ্রবেশ ঘটছে নানান ছদ্মবেশের আড়ালে। কখনো ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে, কখনো আমাদের অজ্ঞাতে, কখনো আমাদেরই সমর্থন নিয়ে আমাদেরই নামে। অবশিষ্ট গুটিকয় সেক্যুলার ফ্রন্টে এভাবে ধর্মীয় উৎসব পালনের পরোক্ষ আবহ তৈরী না হলেই মঙ্গল। নাহলে এর পর কি? ঈদে মিলাদুন্নবী বা আখেরী চাহার উপলক্ষে যদি জামাতিরা রায়ের বাজার বা সাভার সৌধে দু’আ অনুষ্ঠান পালনে ব্রতী হয় আমাদের তখন কেমন লাগবে?

    সেক্যুলার দাবী আদায়ের জন্য যে কোন দিন যে কোন ভেন্যু নির্বাচন যেমন গণতান্ত্রিক সেক্যুলার আন্দোলনের কর্মীদের অধিকার, তেমনি যুদ্ধাপরাধী চক্রের রাজনৈতিক দলগুলো যদি ছদ্মবেশী রাজনৈতিক কর্মসূচী হিসেবে, বা স্রেফ ইয়ার্কি করার জন্য, শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনায় এই সব ঐতিহাসিক স্থান নির্বাচন করে বসে তখন তাদের কি বলে নিরস্ত করবো আমরা? কোন্ যুক্তি বা অধিকারে নিরস্ত করবো? এ কারণেই রাষ্ট্রীয় দিবসগুলোতে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এই সব ভেন্যুগুলোতে নেতৃবৃন্দের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের নামে আত্মার মাগফেরাত কামনা করাকে কোনদিন সমর্থন করতে পারিনি। এই সৌধগুলো বিজয়ের, স্মৃতির, শ্রদ্ধার, ইতিহাসের; এই সৌধগুলো জাত শ্রেনী বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে সমানভাবে সকলের; এই সৌধগুলো লাল সালু ঢাকা কোন মাজার বা মসজিদ নয়।

    জানি না বোঝাতে পারলাম কি না, তবে জানি অনেকেই একমত নাও হতে পারেন এই দৃষ্টিভঙ্গীর সাথে। আশা করি আমিই ভুলভাবে দেখছি বিষয়টিকে, আশা করি আমার (এবং লেখক অবিশ্রুত’র) এই আশংকা সম্পূর্ণ অমূলক।

  7. মোহাম্মদ মুনিম - ৩১ আগস্ট ২০১১ (৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ)

    ‘ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবী জনতা’ শহীদ মিনারে ঈদ পালন করবেন নাকি ঈদের নামাজ পড়বেন সেটা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না (একটু পরেই বোঝা যাবে)। যে যার মত নিজের পাড়ায় ঈদের নামাজ পড়ে (বা না পড়ে) শহীদ মিনারে এক হয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করতেই পারেন, তাতে শহীদ মিনারের সেক্যুলার ইমেজের ক্ষতি হবে বলে মনে হয় না। ঈদ ধর্মীয় উৎসব হলেও এটার একটা সামাজিক চেহারা আছে, এই দিনে বাংলাদেশের অমুসলিমরাও উৎসবের আমেজেই থাকেন, পশ্চিম বঙ্গে দুর্গাপূজার সময় যেমন থাকেন সেখানকার মুসলিমরা (একেবারে গোঁড়া নাহলে)। ঈদের দিনে ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবী জনতা উৎসব না করে প্রতিবাদ সমাবেশ করে দিনটি কাটাবেন, এটাই বোধহয় তাদের মূল বক্তব্য।

  8. মাসুদ করিম - ১ সেপ্টেম্বর ২০১১ (১:৪৯ পূর্বাহ্ণ)

    সবচেয়ে বড় কথা হল ‘জাতীয় কমিটি’ ‘ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবি জনতা’ এসব করে কিছুই হবে না। রাজনীতির মোকাবেলায় রাজনীতি দরকার হয়। কমিটি, জনতা এসব বাদ দিয়ে রাজনৈতিক প্লাটফর্ম তৈরি করুন। না হয় যিনি প্রফেসর তিনি প্রফেসরগিরি করুন আর যিনি সাংবাদিক গবেষক তিনি সাংবাদিকতা ও গবেষণা করুন। অযথা রাজনৈতিক বিষয়ে অরাজনৈতিক ‘সিভিলতা’ হয়ে গাছ বেয়ে ওঠার চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই — লতা শেষ পর্যন্ত লতাই থেকে যায়।

    কাজের কাজ করতে হলে রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে কাজ করুন। বিএনপি সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে সেই সংসদ উপনির্বাচনে নির্বাচন করে কিছু আসন জিতে আসার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করুন — অথবা বিএনপির সাথে এক হয়ে কার্যকর কোনো জোট সৃষ্টির প্রক্রিয়ায় কাজ করুন। যাই করুন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে করুন। শুধু অনাস্থা জানিয়ে আন্দোলন ‘শো’ করে ‘অনাস্থার পারফরমার’ হয়ে কী লাভ? গড্ডালিকায় ‘লাইক দিছি’ বলে জড় হয়ে কী লাভ? রাজপথে থাকতে ঠিক কাজটি করুন, রাজনীতি করুন। আর না হয় অন্য কাজ করুন, পৃথিবীতে করবার মতো কাজের কোনো অভাব নেই।

    • রায়হান রশিদ - ১ সেপ্টেম্বর ২০১১ (৩:৩৪ অপরাহ্ণ)

      মাসুদ ভাই, রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ইস্যুতে কথা বলতে হলে বা কাজ করতে হলে রাজনৈতিক দল হিসেবেই সেটা করতে হবে আপনার এই বক্তব্যের সাথে একমত হতে পারছি না। এই কর্মসূচীগুলোর অন্য অনেক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, অরুন্ধতীদের মতো অনেকের লেখায় সে সব উঠেও আসছে, কিন্তু সম্ভাবনার দিকও কি একেবারেই নেই? আর এই কর্মসূচীগুলোকে কি গড্ডালিকা প্রবাহের সাথে আসলেই তুলনা করা যায়? সত্যিই কি দেশের সর্বত্র এসব কর্মসূচীর ছড়াছড়ি লেগে আছে?
      হয়তো আপনার বক্তব্য বুঝতে ভুল করছি, ব্যাখ্যা করলে কৃতজ্ঞ হবো।

      • মাসুদ করিম - ২ সেপ্টেম্বর ২০১১ (১:৩২ অপরাহ্ণ)

        রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ইস্যুতে কথা ও কাজ রাজনৈতিক দলের কেউ না হয়েও করা যাবে না কেন? অবশ্যই যাবে। কিন্তু একটি রাজনৈতিক কেন্দ্র আপনার লাগবেই — তা না হলে ক্ষমতায়ন তো হবে না। ভারতের দুর্নীতি বিরোধী সমাবেশে বারবার বলা হয়েছে ক্ষমতা লাভের জন্য বা সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের জন্য তারা এই সমাবেশ করছেন না। বাংলাদেশের ‘জাতীয় কমিটি’ ও ‘ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবি জনতা’ ও এধরনের কথাবার্তা বলেন। কথাটা শুনতে ভাল। কিন্তু আখেরে আমাদের কী লাভ? দুর্নীতিতে ডুবে থাকা সরকারকে পার্লামেন্টে বিল আনতে বাধ্য করে বা কোনো মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি আদায় করে বা তেল-গ্যাস-খনি নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্থবির করে রেখে কী সরকারের গতিপথের অভিমুখে আমরা কোনো পরিবর্তন আনতে পারব? আমাদের অনেক বেশি ভাবা উচিত একটি রাজনৈতিক কেন্দ্রের সৃষ্টি নিয়ে — হোক না তা এই ‘সিভিল সোসাইটি’ থেকে উত্থিত, হোক না তা প্রচলিত রাজনীতিতে আস্থা হারানো বর্তমান বিভিন্ন রাজনৈতিক সদস্যদের মধ্য থেকে উত্থিত, একটা প্লাটফর্ম সৃষ্টি হোক যেখান থেকে রাজনৈতিক উদ্দ্যেশে রাজনীতির শক্ত ভিত প্রতিষ্ঠা করা যাবে।

      • মাসুদ করিম - ২ সেপ্টেম্বর ২০১১ (৭:৪৫ অপরাহ্ণ)

        আর যদি এমন হয় এরা শুধু ‘প্রেসার গ্রুপ’ হিসাবে কাজ করবে। রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ইস্যুগুলোতে সমাবেশ সভা অনাস্থা ধর্মঘট হরতালের আয়োজন করবে কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে কোনো সম্পর্ক রাখবে না, কখনো নির্বাচনী রাজনীতিতে অংশগ্রহণের প্রশ্ন তো আসেই না, কাউকে আনুষ্ঠানিক সমর্থনও করবে না — সেটাও চলতে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে তাদের অনেক বেশি শুনতে হবে, অনেক গভীরে হেঁটে যেতে হবে — কারণ দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী থেকে কৃষক এরা সভাই ‘সিভিল সোসাইটি’র অংশ, কাজেই এদের সবার কথা শুনতে হবে। তুমি আমার সাথে নেই তাই তুমি আমার শত্রু, এই মনোভাব নিয়ে চললে কোনোভাবেই চলবে না। আবার এই ধরনের কর্মসূচিতে টাকা-পয়সা খরচ হবে — সেই টাকা পয়সা কে দিল, কোথায় খরচ হল তার সুস্পষ্ট হিসাব নিয়মিত জনসমক্ষে জানাতে হবে — আমাদের কর্মসূচিতে খুব কম টাকা লাগে তা আমরা নিজেরা জোগাড় করে ফেলি, এধরনের কথাবার্তার কোনো সুযোগ যেন সৃষ্টি না হয় — আজ দশ টাকা লাগুক বিশ টাকা লাগুক চিরদিন তো এই টাকায় চলবে না, তাই শুরু থেকে স্বচ্ছতা নিয়ে চলাটা জরুরি — কাল হঠাৎ হিসাবের কথা উঠলে যদি হিসাব দেয়া না যায়, তাহলে ব্যাপারটা তো ন্যাক্কারজনক হবে। তারপর এও খেয়াল রাখতে হবে যার তার টাকা যেন সেখানে ঢুকে না যায়। এই সব কিছু নিয়ে যদি সত্যিই কয়েকটি ‘প্রেসার গ্রুপ’ হয় সেটাও কিছু একটা করবে। সেটা অদূর ভবিষ্যতে আমরা আরো বুঝতে পারব। আমার কথা হচ্ছে কাজ হলে সেটা যেন কাজের মতো হয়। রাজনৈতিক দল হলে যেমন তা কাজের রাজনৈতিক দল হতে হবে — ‘প্রেসার গ্রুপ’ হলেও সেটা কাজের প্রেসার গ্রুপ হতে হবে।

  9. সৈকত আচার্য - ২ সেপ্টেম্বর ২০১১ (৭:২৯ অপরাহ্ণ)

    একটা বিষয় নিশ্চিত নই। শহীদ মিনারের কর্মসূচীটা কি ছিলো, এটা কি কেবল প্রতিবাদী সমাবেশ নাকি প্রতিবাদী সমাবেশ ও ঈদ পালন দু’টোই তাদের ঘোষনার মধ্যে ছিলো? কেউ কি বিষয়টা পরিস্কার করে বলবেন, দয়া করে।

    রায়হান লিখেছেঃ

    সেক্যুলার দাবী আদায়ের জন্য যে কোন দিন যে কোন ভেন্যু নির্বাচন যেমন গণতান্ত্রিক সেক্যুলার আন্দোলনের কর্মীদের অধিকার, তেমনি যুদ্ধাপরাধী চক্রের রাজনৈতিক দলগুলো যদি ছদ্মবেশী রাজনৈতিক কর্মসূচী হিসেবে, বা স্রেফ ইয়ার্কি করার জন্য, শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনায় এই সব ঐতিহাসিক স্থান নির্বাচন করে বসে তখন তাদের কি বলে নিরস্ত করবো আমরা? কোন্ যুক্তি বা অধিকারে নিরস্ত করবো? এ কারণেই রাষ্ট্রীয় দিবসগুলোতে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এই সব ভেন্যুগুলোতে নেতৃবৃন্দের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের নামে আত্মার মাগফেরাত কামনা করাকে কোনদিন সমর্থন করতে পারিনি। এই সৌধগুলো বিজয়ের, স্মৃতির, শ্রদ্ধার, ইতিহাসের; এই সৌধগুলো জাত শ্রেনী বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে সমানভাবে সকলের; এই সৌধগুলো লাল সালু ঢাকা কোন মাজার বা মসজিদ নয়।

    এই বিষয়টা কিন্ত ভাবাচ্ছে আমাকে।। সত্যিই এরকমটা যেন না হয়। …প্রতিবাদ তো ঠিকই আছে, কিন্ত শহীদ মিনারে ঈদ উদযাপনের ঘোষনা দেয়াটা এখানে সম্পুর্ন ভিন্ন একটা মাত্রা যোগ করে। এবং এটা নিয়ে যে সংকটের ইংগিত দিয়েছেন রায়হান এবং অবিশ্রুত সে বিষয়ে আমি একমত। একটা প্রতিবাদী অবস্থান ঈদের দিন নেয়া যায়, কিন্ত ঈদ উৎসবকে বিযুক্ত করেই তা নেয়া উচিত। শুধু তা নয়, এ ধরনের র্কমসূচীতে জনসচেনতা এবং সম্পৃক্তি বাড়ানোর জন্য এই প্রোগ্রামের পর আরো নতুন, অর্থবহ এবং দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচীর ঘোষনা আসা দরকার। এই কর্মসুচির পর সেখান থেকে কি ঘোষনা এসেছে তা কিন্ত খুব গুরুত্বপূর্ন। এটা দিয়ে বোঝা যাবে,তারা কতটুকু যেতে চান!

    কিন্ত প্রতিবাদের বাইরে গিয়ে এই ধর্মীয় কর্মসুচী শহীদ মিনারে পালন বিষয়ে (যদি এটা তাদের ঘোষনার অংশ হয়ে থাকে) রায়হান এবং অবিশ্রুত যে ভবিষ্যত আশংকার/সংকটের ইংগিত দিয়েছেন তা কিন্ত জোরালো আলোচনার দাবি রাখে।

  10. সায়মা সুলতানা - ৩ সেপ্টেম্বর ২০১১ (৬:২৪ পূর্বাহ্ণ)

    সৈকত দা’র ফেসবুক ওয়ালে দেখলাম একজন আফজাল জামী সাহেব অবিশ্রুতের এই লেখা নিয়ে মন্তব্য প্রদান করেছেন এভাবেঃ

    ” written in very poor taste….they did not pray at the Shohid Minar…only celebrated the civic part (gathering) of it in protest of something they believed in…this writer smacks of islamophobia and missed the point that occasions like Eid, Pujas also have civic/secular elements to it…”

    জানি না তিনি ঠিক কি বুঝেছেন, অবিশ্রুতের লেখা পড়ে। তবে এটা বুঝলাম যে, অবিশ্রুতের আগের কোন লেখা তিনি এখানে পড়েননি। তার লেখনি সম্পর্কে জনাব জামীর কোন ধারনাই নাই, যে কারনে এই লেখাটাও তিনি বুঝতে পারেননি। অবিশ্রুত কি বার্তা দিতে চেয়েছেন, তার কাছে ধারেও ঘেঁষতে পারেননি, জনাব জামী। তাছাড়া এই পোষ্টের অন্য মন্তব্যকারীদের বক্তব্যও উনি পড়েন নি। কিংবা পড়লেও বুঝেননি। আমি ফেসবুকে এধরনের কিছু বিরক্তিকর ফ্লাইং মন্তব্যকারীদের চিনি যারা নিজেকে অকারনে, অজায়গায় এবং অস্থানে জাহির করতে চায় সবসময়।

  11. সৈকত আচার্য - ৪ সেপ্টেম্বর ২০১১ (৬:৪৮ পূর্বাহ্ণ)

    @সায়মাঃ তোমার মন্তব্যটি কিছুটা আক্রমনাত্মক মনে হতে পারে অনেকের কাছে, যদিও আফজাল জামীর বক্তব্যের সাথে আমি মোটেও একমত নই। আমার ধারনা অবিশ্রুতের অন্যান্য লেখার সাথে সে পরিচিত নয়।

  12. আমিন আহম্মদ - ৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ (৮:২৯ পূর্বাহ্ণ)

    ওটা একটি ভন্ডামী ছাড়া আর কিছুই ছিলনা। একটা মিমাংশিত বিষয়কে পুঁজি করে ধান্দা করতে চাইছে। ধন্যবাদ লেককখে।

  13. মাসুদ করিম - ১০ সেপ্টেম্বর ২০১১ (৬:২৭ অপরাহ্ণ)

    আন্না হাজারে আজকে বলেছেন

    Note down names of people who opposed J.L.P Bill. Do gherao in front of their houses. Don’t allow them to come out of their homes

    লিন্ক এখানে।

    আমাদের আন্না হাজারেরাও যেন এরকম বলে না বসেন!

  14. মাসুদ করিম - ২১ সেপ্টেম্বর ২০১১ (৭:২৮ অপরাহ্ণ)

    গান্ধীবাদী সৈয়দ আবুল মকসুদ দেখছি খুব ঘটা করে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জেকে ‘মহাত্মা’ বলছেন, খুব ভাল লাগছে গান্ধীর পর আরেকজন ‘মহাত্মা’কে তিনি খুঁজে পেয়েছেন বলে। কিন্তু অ্যাসাঞ্জের ব্যাপারে একটা মজার কাণ্ড হল আজ যে তার মুখে ফুলচন্দন দিচ্ছে কালই সে তাকে জুতাপেটা করতে দৌড়াচ্ছে। ২০০৭-২০০৮এ বাংলাদেশে শীর্ষ মিডিয়াজীবীদের যেভূমিকা ছিল, খুব আশ্চর্য হব না কাল যদি ওই ফাঁস হয়ে যাওয়া ‘ইউএস ক্যাবল’এ ওই শীর্ষ মিডিয়াজীবীদেরকে নিয়েও কোনো ক্যাবল উদঘাটিত হয়। তখনও কি গান্ধীবাদী সৈয়দ আবুল মকসুদ অ্যাসাঞ্জেকে ‘মহাত্মা’সম প্রণাম জানাতে পারবেন?

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.