রমাদান করিম মুবারাক। হিলারির মুখে এই রমজানের শুভেচ্ছা, যা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম অধিবাসীরা রোজার সময় একজন আরেক জনকে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য বলেন, শুধু এটুকু শুনতে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আটলান্টিক উপকূলে পাড়ি জমালেন? মুসলিম এলিটরা এবং তাদের দেখাদেখি মুসলিম এলিটদের হাতে রাখতে চায় এমন সব রাজনৈতিক ব্যবসায়িক শক্তির কাছে ‘ইফতার পার্টি’ এক ভয়ংকর মার্কেটিং টুল-এ পরিণত হয়েছে। সেই ইফতার পার্টির দাওয়াতে স্বাভাবিকভাবেই গদগদ হয়ে আমেরিকা উপস্থিত হয়ে ছিলেন দীপু মনি, আশা ছিল এমন কোনো আশার আলো নিয়ে ফিরবেন, আর তা তুলে দেবেন তার নেত্রীর হাতে, যিনি ইদের পরে যাচ্ছেন আমেরিকায়, তিনি কি যাচ্ছেন ওবামার ইদ পুনর্মিলনী উৎসবে যোগ দিতে? জানি না, আমেরিকা এখন যে রকম মুসলিম বান্ধব হয়ে উঠছে, তাতে এরকম অনুষ্ঠান আয়োজনের গুজব হয়তো মোটেই ভিত্তিহীন নয়।
দীপু মনিকে হিলারি কী দিলেন? ‘টিফা’, হ্যাঁ বাংলাদেশ নিয়ে আমেরিকা এর চেয়ে বেশি, আগেও ভাবেনি, এখনো ভাবে না। হ্যাঁ, ইফতার পার্টিতে যা কিছু মনে হয়েছিল গভীর, হিলারিকে মনে হয়েছিল, যেন তিনি মুসলিম, ফিৎরায় (সাহায্য) ভরে দেবেন উপস্থিত সব মুসলিম এলিটকে, যে এসেছে তার কাছে যা চাইতে, কিন্তু সেই অতলান্তিক ইফতার থেকে বেরিয়ে চারিদিক শূন্য দেখলেন দীপু মনি, মনে হল আর জীবনেও এমন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না, এই অনুষ্ঠানগুলো মন দুর্বল করে দেয়, মনে হয় সব দেবে এরা—আমরা যা চাই, মনে হয় নিঃশর্তেই দেবে, যেমন নামাজের মোনাজাতে অনেকের মনে হয়, কিন্তু রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে, পরীক্ষার আগের রাতের মতোই সবকিছু কঠিন মনে হয়। কী যে বলব দেশে গিয়ে, হিলারির সাথে সংবাদ সম্মেলনের পর, মনে হল ইফতার পার্টি থেকে কত ভিন্ন এই মানুষটি, আর আমি তখনও অতলান্তিক ইফতার পার্টিতে, তাকিয়ে আছি, কখন আসবে ফিৎরার ঘোষণা, শুধু ‘টিফা’ আমার আর ভালো লাগে না।
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৪ comments
মনজুরাউল - ১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১১:৪২ অপরাহ্ণ)
জাতে ওঠার জন্য হালের এলিট বাঙাল সভ্যদের কি আকুল আকুতি! খাজাকে বাবা ডাকলে বাবা নাকি ফেরায় না! আর এত বড় আমেরিকাকে “বাবা” ডাকলে তারা কেন ফেরাবে? কি অলুক্ষুণে কথা!! নিশ্চই কিছু না কিছু তো জুটেছেই! কি সেটা? কেন, অতলান্তিক আশ্বাস!
রায়হান রশিদ - ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১:৫৬ পূর্বাহ্ণ)
কেউ এই বিষয়টা নিয়ে লিখলে আরেকটু গভীর অনুসন্ধানের সুযোগ তৈরী হোতো:
AFRICOM (United States Africa Command)
মার্কিন কর্তৃপক্ষের ভাষায়:
এ বিষয়ে আরও লেখা:
–এলিজাবেথ ডিকিনসন এর – Can Mosquito Nets Stop Terrorists?
এদিকে আমাদের টিফা’র সর্বশেষ অবস্থা কি? কেউ লিখবেন?
মাসুদ করিম - ৯ আগস্ট ২০১০ (৭:০২ অপরাহ্ণ)
‘ইফতারিতা’, হ্যাঁ, এ শব্দটাই ব্যবহার করব, খালেদাকে পেয়েছে : তিনি হাসিনাকে ইফতারের দাওয়াত দিয়েছেন। কয়দিন পর হাসিনাও তাকে দেবেন। এই ‘ইফতারিতা’র রাজনৈতিক ব্যবহার যারা করবেন, সম্ভবত অনেক বামদলও তা করবেন, সেখানে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ হবে কী করে? বাংলাদেশের অনেক পথ চলা বাকী, রাতারাতি ধর্মনিরপেক্ষ ও রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ হবে না। আর ওই যে বিদেশীরাও তো ‘ইফতারিতা’ বজায় রাখছে মুসলমানদের জন্য। ঢাকার বিদেশী মিশনগুলো আরব-অনারব, মুসলিম-অমুসলিম সবাই কয়েকদিনের মধ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন ন্যাক্কারজনক ‘ইফতারিতা’য়। সৌহার্দের যত ধরণ দেখেছি, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়ে সৌহার্দের চর্চা সবচেয়ে নোংরা।
Pingback: হিলারিয়াম | প্রাত্যহিক পাঠ