আবারও টঙ্গীতে নিহত হয়েছেন গার্মেন্টস-শ্রমিকরা। কেন এই হত্যাকাণ্ড? কেন এই রক্ত নিয়ে খেলা? কিছুদিন আগে দেয়া একটি ঘোষণা আমাকে বেশ ভাবিয়েছে। গার্মেন্টস-শিল্প রক্ষায় ব্যবসায়ীরা তাদের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। [...]

আবারও টঙ্গীতে নিহত হয়েছেন গার্মেন্টস-শ্রমিকরা। কেন এই হত্যাকাণ্ড? কেন এই রক্ত নিয়ে খেলা? কিছুদিন আগে দেয়া একটি ঘোষণা আমাকে বেশ ভাবিয়েছে। গার্মেন্টস-শিল্প রক্ষায় ব্যবসায়ীরা তাঁদের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা বলেছেন, তাঁদের এই গোয়েন্দারা সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্পূরক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। উদ্যোগটি খুবই ভালো, তাতে সন্দেহ নেই। বাংলাদেশে গার্মেন্টস-শিল্পে অস্থিরতা তৈরির একটি প্রবণতা প্রায়ই লক্ষ করা যায়। এটা কারা করছে, কেন করছে, তা ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ হয়তো জানেন। হয়তো জানে রাষ্ট্রের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। তা জানারই কথা। কারণ রাষ্ট্রে এমন কোনো অশুভ তৎপরতা চলতে পারে না, যা রাষ্ট্রের ব্যবসা-বাণিজ্য ও রফতানিকে ব্যাহত করে। অধুনা বিশ্বে গার্মেন্টস-শিল্প একটি লাভজনক ব্যবসা। বিশেষ করে শ্রমের মূল্য যেসব দেশে তুলনামূলকভাবে কম, সেসব দেশে পাশ্চাত্যের দেশগুলো তাদের প্রস্তুতকারক এজেন্ট নিয়োগ দিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুরোবাজার দখল করে নিয়েছে চীন। ‘মেড ইন চায়না’ এখন একটি কমন দ্রষ্টব্য বিষয়। তা ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও মেক্সিকো প্রভৃতি দেশেও ম্যানুফ্যাক্সারিং ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক বিক্রেতারা। এর প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে মূল্যের সাশ্রয়। বিশেষ করে কম শ্রমমূল্যে ভালো কোয়ালিটির তৈরি পোশাক বাজারজাত করা। যুক্তরাষ্ট্রে সিয়ার্স, জেসি পেনি কিংবা মেসিজের মতো বৃহৎ স্টোরগুলোতে বাংলাদেশী তৈরি পোশাক যে পাওয়া যায় না তা নয়। পাওয়া যায়। তবে তা তুলনামূলক হারে কম। চীনই এখন দখল রেখেছে প্রথম স্থান। এই প্রথম স্থানটির রেকর্ড ভাঙার একটি প্রচেষ্টা চলছে বেশ জোরালোভাবে। সে-চেষ্টা করছেন খোদ তৈরি পোশাক বিক্রেতারাই। এই দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবলে বাংলাদেশ একটি ভালো ম্যানুফ্যাক্সারিং জোন হতে পারে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তা গড়ে তুলতে স্বাগতিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সঠিক ভূমিকা রাখতে পারছে তো? এই প্রশ্নটি আসছে বিভিন্ন কারণে। এ-কথাটি আমরা সবাই জানি, বাংলাদেশে শ্রমের মূল্য বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের তুলনায় অত্যন্ত কম। যারা গার্মেন্টসে কাজ করে তারা গেল দেড় দশক আগে অন্য পেশায় ছিল। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোর বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই এই পেশায় যোগ দেন। কিন্তু কথা হচ্ছে, এই শিল্পের বিকাশের তুলনায় গার্মেন্টস-কর্মীদের ভাগ্য ফিরেছে কি? না, ফেরেনি। বরং তুলনামূলক চাকরির বাজারে বিভিন্নভাবে নিগৃহীত হচ্ছেন গার্মেন্টস-শ্রমিকরা। তাদের জীবন ধারণের চাহিদার তুলনায় প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিতান্তই অপ্রতুল। এটা খুবই দুঃখের কথা, বাংলাদেশে শ্রমক্ষেত্রে ‘ওভারটাইম’…

গার্মেন্টস-মালিকদের বিরুদ্ধে আবারও ষড়যন্ত্র হচ্ছে! গত শনিবার টঙ্গী শিল্প এলাকায় ২ জন (মতান্তরে ৪ জন) শ্রমিকের নিহত হওয়ার ঘটনা সেই ষড়যন্ত্রেরই বহিঃপ্রকাশ! বিজিএমইএ-র কর্তারা বলেছেন নাশকতা, যার অর্থ করলে দাঁড়ায় শ্রমিকেরাই এই নাশকতার জন্ম দিয়েছে [...]

তিন রাউণ্ড গুলি খেলে তেইশজন মরে যায় লোকে এত বজ্জাত হয়েছে! স্কুলের যে ছেলেগুলি চৌকাঠেই ধ্বসে গেল অবশ্যই তারা ছিল সমাজবিরোধী। ওদিকে তাকিয়ে দেখো ধোয়া তুলসীপাতা উলটেও পারে না খেতে ভাজা মাছটি আহা অসহায় আত্মরক্ষা ছাড়া আর কিছুই জানে না বুলেটেরা দার্শনিক চোখ শুধু আকাশের তারা বটে দেখে মাঝে মাঝে। পুলিশ কখনো কোনো অন্যায় করে না তারা যতক্ষণ আমার পুলিশ। শঙ্খ ঘোষ, 'ন্যায়-অন্যায় জানিনে' গার্মেন্টস-মালিকদের বিরুদ্ধে আবারও ষড়যন্ত্র হচ্ছে! গত শনিবার টঙ্গী শিল্প এলাকায় ২ জন (মতান্তরে ৪ জন) শ্রমিকের নিহত হওয়ার ঘটনা সেই ষড়যন্ত্রেরই বহিঃপ্রকাশ! বিজিএমইএ-র কর্তারা বলেছেন নাশকতা, যার অর্থ করলে দাঁড়ায় শ্রমিকেরাই এই নাশকতার জন্ম দিয়েছে। তারা ভয়াবহ পরিকল্পনা আর ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজে পেয়েছেন। কোনো-কোনো পত্রিকার মতে দুই মাস, শ্রমিকদের দাবি ছয় মাস বেতন পাননি তারা। গত শুক্রবারও গার্মেন্টসটিতে রাত অবধি তারা কাজ করেছেন। শ্রমিকদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, ১০ নভেম্বরের মধ্যে সব বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। তাই বেতন না পেয়েও তারা রাস্তায় নামেননি। বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেননি। কিন্তু গত শনিবার কারখানার গেটে এসে শ্রমিকেরা যখন জানতে পারলেন গার্মেন্টস বন্ধ, তখন বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন তারা। মালিকেরা আগেই পুলিশকে জানিয়ে রেখেছিল। কেবল শ্রমিকেরা জানতেন না কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বেশ দায়িত্বের সাথেই গার্মেন্টসটি পাহারা দিয়েছে। শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে -- এ-কথা তো জানাই ছিল। কিন্তু তা-ই বলে গুলি খেয়ে মরবে! বিজিএমইএ-র নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে নাশকতার অভিযোগ তুলেছেন। তারা বলেছেন, আইন মেনেই কারখানা লে-অফ করা হয়েছে। তাদের আইন অনুযায়ী লে-অফের আগে শ্রমিকদের জানানোর প্রয়োজন পড়ে না। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে, এদেশের আইন গার্মেন্টস-মালিকদের যা খুশি তা-ই করার অধিকার দিয়েছে। আর সেটা যাতে তারা নির্বিঘ্নে করতে পারেন, সেজন্য রাষ্ট্রের পুলিশ, বিচার বিভাগ, সান্ত্রী-সেপাই, আমলা-কামলা সব, সবাই তাদের সেবায় নিয়োজিত। তাই হুট করে এভাবে শ্রমিকদের মরে যাওয়ার ঘটনায় সকল পক্ষই যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজে পাবে, তা আর বিচিত্র কী! দৈনিক পত্রিকাগুলোতে চোখ বোলালে মনে হয়, এসব ঘটনায় শ্রমিকেরা কোনো এক অদৃশ্য শক্তির ইশারায় রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙে, কারখানায় আগুন দেয়। যে-কোনো শ্রমিক-সংঘর্ষের সংবাদ পাঠ করলে শ্রমিকদের একটা নৈরাজ্যকর চেহারা পাঠকের মনে স্পষ্ট হয়। গত শনিবারের ঘটনাও…

সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। [...]

১. সাংসদ হুইপদের খাদ্যবিলাস এবং জয়নুলের দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা অথবা ভ্যান গগের ‘দ্য পটেটো ইটার্স’। সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। সাম্প্রতিক বিশ্ব খাদ্য সংস্থার জরিপে দেখা গেছে : পৃথিবীতে একশো কোটি লোক অভুক্ত থাকে। কী পরিমাণ লোক ভালো-মন্দ খাবার খেয়ে থাকে তার একটা তালিকা তৈরি করা গেলে তাতে আমাদের মতো গরিব দেশের বড়লোকরাই চ্যাম্পিয়ন হবে। এত পোলাও-মাংস হজম করার পরিণতি কী, তা আপনারা সবাই জানেন – শেষ গন্তব্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল। যেটা হুইপ সাহেবের ক্ষেত্রে ঘটেছে। সরকারি টাকায় প্রচুর ঘি-পোলাও খেয়ে হার্টের ব্লক, আবার তা সারানোর জন্য সরকারি অর্থেই মাউন্ট এলিজাবেথে ভর্তি। সত্যিকার প্রহসনই বটে। আমাদের দেশের গরীব মানুষের খাদ্যতালিকা কী? তাদের কপালে কি জোটে পোলাও-মাংস? গ্রামে বসবাসরত বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর তো নুন আনতে পান্তা ফুরায়। শুধুমাত্র কাঁচামরিচ আর লবণ দিয়ে থালার পর থালা ভাত হজম করতে হয় তাদের। মাছ-মাংসের কোনো বালাই নেই, তাই প্রোটিনের ঘাটতি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। তবে গরীবের পোলাও-মাংস খাওয়ার বিষয়টি একবার নিজের চোখে দেখে অশ্রু সংবরণ করতে পারিনি। কাওরান বাজারের পেছন দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বস্তির সামনে দেখেছিলাম, বিভিন্ন বিয়েবাড়ি থেকে কুড়িয়ে পাওয়া উচ্ছিষ্ট পোলাও-মাংস রাস্তার পাশে ভাগ দিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। আর কেউ কেউ কিনে নিয়ে দিব্যি পরমানন্দে খাচ্ছে সেই খরখরে পচা খাবার! এত বৈষম্যপীড়িত দেশ পৃথিবীর কোথাও আছে কিনা কে জানে। মাঝে-মাঝে বিদেশীরা আমাদের দেশের দারিদ্র্য নিয়ে আমাকে নানা প্রশ্ন করে; আমি তাদের বলি, আমাদের বড়লোকদের তো দেখোনি, দেখলে নিশ্চয় অবাক হবে। গুলশান, বনানী, বারিধারাতে এক চক্কর ঘুরিয়ে আনলে তোমাদের বিশ্বাসই হতে চাইবে না বাংলাদেশের গরিবিয়ানা হাল। আমাদের মন্ত্রী মিনিস্টার সাংসদ আর আমলাদের যে ঠাট-বাট তা দেখে হয়তো মূর্ছা যাওয়ার দশা হবে তোমাদের। যে-ধরনের গাড়িতে তারা চড়ে, তা হয়তো জন্ম দেবে আরেকটি রেকর্ডের – পৃথিবীর…

আমার ছেলে এটা মোটেই ঠিক কাজ করেনি, তারেক জিয়ার সাথে তার পার্থক্যের উত্তরে শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা তুলে সে ঠিক কাজ করেনি, আমাকে খালেদা জিয়ার সাথে তুলনা করতে সারা পৃথিবী যেভাবে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল এবং এখনো যে ব্যস্ততার কোনো শেষ নেই — কই, আমি তো কোনোদিন সে তুলনার উত্তরে শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা তুলিনি। তুলিনি কারণ এ তো সবাই দেখতে পায়, একথা বলে যার শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই তার কোনো ক্ষতি হয় না, ক্ষতিটা হয় যার সেটা আছে। ওবামা জ্ঞানী মানুষ, বুশ, সারাপৃথিবী জানে ছিলেন আমেরিকার সবচেয়ে স্টুপিড প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সেই জ্ঞানী মানুষ দিয়ে এখনো তো তেমন কিছু হল না, আগের বুশের বাহিনী ও তার ঘটানো সব কার্যকলাপের রিপেয়ারিং করেই যদি তার জীবন কাটে, তার এই জ্ঞান শুধু সুন্দর করে কথা বলার কাজেই যদি ব্যয় হয়, তাহলে পৃথিবীর কোন কাজটাই বা এগোবে। এবারের জলবায়ু সম্মেলনেও তাই হল, সেই পুরনো সব কথা, উষ্ণায়ন কমানো হবে, কমাতেই হবে। কিন্তু আমার দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে যেখানে ১০৫২ জন লোকের বসবাস, সেখানে উষ্ণায়নের থাবায় শুধু একশ বর্গকিলোমিটার সাগরের পেটে গেলেই আমার দেশের এক লাখ লোক হবে শরণার্থী, আমি একটি তলানির দেশের প্রধানমন্ত্রী, আমি তো এখনো আমার নিজের দেশের ওপর সমুদ্রের এই আগ্রাসন নিয়ে গবেষণার করবার জন্য একটা মাল্টিডিসিপ্লিনারি পরিষদই গঠন করতে পারলাম না, আর এটা করা ছাড়া আমি বা আমার দেশের সরকার তার যাবতীয় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় ও প্রতিকারের কী ব্যবস্থা করবে? কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, তেমন দেশের গবেষণার জন্যই তো আমরা আছি, আমরা চলে আসব, ফান্ড আসবে, আর ফান্ডের খরচ করাটাই হবে আমাদের কাজ, আপনি শুধু ভাউচারে স্বাক্ষর করার লোক তৈরি রাখুন, তাদের কে কত পাবে, আপনার কত লাগবে এসব ঠিক করে রাখুন। আপনাদের ইচ্ছাপত্রের সাথে আমাদের ইচ্ছাপত্র মিলিয়ে আমরা কাজ শুরু করে দেব। হ্যাঁ, সবকিছু সেভাবেই হবে — কিন্তু দুর্নীতির দায়ে আমাদের ইচ্ছাপত্রগুলোই শুধু প্রকাশিত হবে, তাদেরগুলো নয়। আমার বাবার একটা কথা সবসময় শোনা যায়, চাটার দল, কিন্তু এরা এখন আর শুধু চাটে না, এরা এখন খায়, আমার চারপাশে এখন জমিখোর, নদীখোর, শেয়ারখোর, খাদ্যখোরের আড্ডা। বাংলাদেশে এখন একটা কথা উঠেছে উন্নয়নভাবনার সাথে জলবায়ুর ভাবনাও ভাবতে হবে। আমার…

ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই দেশটিতে যেদিকে তাকাই শুধু মানুষ আর মানুষ। আজ থেকে চার দশক আগের চোখ দিয়ে দেখি কেবলই গ্রেভইয়ার্ড । একটা নিরীহ গোবেচারা ধরনের সমাজ এখন ক্ষুব্ধ ক্রূর! গাছগাছালিময় আনআরবান প্রায় গ্রাম্য ঢাকা এখন কসমোপলিটান। আরবানাইজড। সাঁই সাঁই করে হাইরাইজ দাঁড়িয়ে গেছে। ঝাঁচকচকে জেল্লা আর বিত্ত-বৈভবের প্লাবনে জঞ্জালময় ঢাকার রাজপথ প্লাবিত। চারিদিকে সুখের পায়রা পতপত করে উড়ছে। সুখ,স্বস্তি আর শান্তির দেবদূতেরা ডলার-পাউন্ডের ভেলায় চরে এই দেশে নেমেছে। তাদের শুভাগমনে সারা দেশে দুধের নহর আর ক্ষীরের পাহাড় গড়ে উঠেছে! সেই নহর আর পাহাড়ের কোণায় শেয়াল-কুকুরের মত একজিস্ট করে চলেছে কিছু পোকামাকড়! খুব কাছে গিয়েই শুধু ঠাওর করা যায়-তারা মানুষ! হোমো স্যাপিয়েন্স! এদেরকে ডাম্প করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগুনোর খতিয়ান রাখায় ব্যস্তসমস্ত হচ্ছেন পরিসংখ্যানবিদগণ। ডাটাবেজে ডিজিট উঠছে.....জিডিপি-সাড়ে পাঁচ! কিছু দিন পরেই ছয়...সাত! দেশকে সাঁই সাঁই করে টার্বো গতিতে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান কারিগর ধরা হয় তৈরি পোশাক শিল্পকে। আসলেই, কি দেয়নি এই গার্মেন্ট? একটা রাইজিং ক্লাস দিয়েছে, যারা কর্পোরেট কালচারকে ”সর্বজনগ্রাহ্য” করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। একটা বিশাল সংখ্যক হা-ভাতে আনস্কিল্ড শ্রমিককে খাওয়া-পরা দিয়েছে।

পথের ধারের টাউট-বাটপাড়দের প্রায় বিনে পয়সায় নারী সম্ভোগের সুযোগ দিয়েছে! তালাসংস্কৃতি চালু করে ইঁদুরের মত পুড়িয়ে মানুষ কমানোর ত্বরিকা দিয়েছে। আর সরকারকে বুকে আঙ্গুল ঠুকে এত কোটি ডলার রেমিট্যান্স মওজুদ দেখানোর ক্ষমতা দিয়েছে। এত দেওয়ার পরও এই হতভাগা হা-ভাতে জাতির শনৈ শনৈ উন্নতির চাকায় আরো খানিকটা মবিল দিয়ে আরো সচল করার জন্য এবার চালু হয়েছে জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প। এবার এই নতুন শিল্পের ল্যাজ ধরে পাপী-তাপী সব স্বর্গে পৌঁছে যাবার নিষ্কন্টক পথও পেয়ে যাব আমরা! “বছরে হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অপার সম্ভাবনা আছে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে। বিশ্ববাজারে বর্তমানে ৪০ হাজার কোটি ডলারের বাজার উন্মুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৪০০ কোটি ডলারের বাজারও যদি বাংলাদেশ ধরতে পারে, তাহলে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার বাড়বে ২ থেকে ৩ শতাংশ। কর্মসংস্থান হবে লক্ষাধিক দক্ষ ও অদক্ষ বেকার যুবকের। একটি সুষ্ঠু নীতিমালা করেই সরকার বদলে দিতে পারে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের চিত্র। আর এটি সম্ভব হলে এ শিল্পের উদ্যোক্তারা উন্নয়নের পরশ দিয়ে পাল্টে দিতে পারবেন দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির চেহারা। এই শিল্পের বিকাশে সব ধরনের…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.