বিশ্বকাপ ‘উপলক্ষে’ বুয়েট বন্ধ ঘোষিত হয়েছে। উপলক্ষ মানে ঠিক বিশ্বকাপ উদযাপনের জন্য নয় [..]

বিশ্বকাপ ‘উপলক্ষে’ বুয়েট বন্ধ ঘোষিত হয়েছে। উপলক্ষ মানে ঠিক বিশ্বকাপ উদযাপনের জন্য নয়। বিশ্বকাপের খেলা দেখার সুবিধার্থে একদল ছাত্র ক্লাস বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছিল, কতৃপক্ষ সে দাবি মেনেও নিয়েছিলেন। কিন্তু মাঝখান থেকে একদল ছাত্র আবার ক্লাস করার দাবি জানায়। এই ক্লাস করা না করা নিয়ে দু দল ছাত্রের মাঝে মৃদু সংঘর্ষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরো সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেন। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হলেও বিশ্বকাপের এই এক মাস বুয়েটের শিক্ষক এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের বেতন বন্ধ থাকবে না। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার আনুষঙ্গিক খরচ থেকেই যাবে। সে হিসাবে এই এক মাসে সরকারের আর্থিক ক্ষতি প্রায় ৫ কোটি টাকা। দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বুয়েটকে অনুসরণ করলে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এই পরিমাণ টাকা ঢাললে বাংলাদেশের ফুটবলের করুন দশার বেশ খানিকটা উন্নতি সম্ভব। বিশ্বকাপ উপলক্ষে বুয়েট বন্ধের এই প্রক্রিয়াটি এবারই প্রথম নয়। বুয়েটে আমাদের ক্লাস শুরু হয়েছিল ১৯৯৪ সালের জুনে, সে মাসেই বিশ্বকাপ শুরু। অটোভ্যাকেশন নামে একটা ব্যাপার শুরু হয়ে গেল, সেটার মানে হচ্ছে আগে থেকে ঠিক করা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্রছাত্রী বিশ্বকাপ চলার সময়ে একসাথে ক্লাসে অনুপস্থিত থাকবে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্র ছাত্রীর বিরুদ্ধে একসাথে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া যায় না, তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটা মেনে নিতেন। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের সময়ে শিক্ষকরাই ক্লাস বন্ধ রাখেন। বিশ্বকাপের সময়ে এই ছুটি নেবার ব্যাপারটা দেখে বুয়েটের ছাত্রছাত্রীদের বিরাট ক্রীড়ামোদি বলে মনে হতে পারে। কিন্তু ব্যাপারটা মোটেই সেরকম নয়। বড় দলের অল্প কিছু খেলা ছাড়া হলের টিভি রুমগুলোতে কোন ভিড়ই থাকে না। পুরো ব্যাপারটাই হচ্ছে বিশ্বকাপ বা এই জাতীয় অজুহাতে ছাত্রজীবন দীর্ঘায়িত করা। বুয়েটের ছাত্র মানেই দেশের সেরা মেধাবী ছাত্রদের একজন এই জাতীয় একটা টাইটেল, এই টাইটেল খাটিয়ে মাগনা হলে থাকা আর টিউশনী করা, এবং সেই করে মাসে হাজার হাজার টাকা রোজগার করা। বুয়েটের শিক্ষা জীবন শেষ মানে মাগনা হলে থাকার দিন শেষ, আর একজন বেকারের পক্ষে মেধাবী ছাত্রের টাইটেলও দাবি করা সম্ভব নয়। সুতরাং টিউশনির বাজারে দাম পরে যায়। তাই যতদিন পারা যায় টিউশনির বাজার ধরে রাখার জন্য ফুটবল বা ক্রিকেট বিশ্বকাপ, বন্যা, ডেঙ্গু জ্বর, ইতাদি ছুতো ধরে ক্লাস বা পরীক্ষা পিছিয়ে…

শাসন করা তারই সাজে[...]

শাসন করা তারই সাজে শোষণ করে যে।

মানবপাচার, মাদকপাচার, অস্ত্রপাচার ও অর্থপাচার : কালোবাজারের এই চার ভিত্তি এখনো বহাল তবিয়তে থাকলেও, পণ্যপাচারের এক বিশাল অংশ এখন হলুদবাজারের আওতায় চলে এসেছে।[...]

মানবপাচার, মাদকপাচার, অস্ত্রপাচার ও অর্থপাচার : কালোবাজারের এই চার ভিত্তি এখনো বহাল তবিয়তে থাকলেও, পণ্যপাচারের এক বিশাল অংশ এখন হলুদবাজারের আওতায় চলে এসেছে। রাষ্ট্রীয় বাজার ব্যবস্থার বিধি নিষেধ ও উচ্চ করের কারণে যেসব পণ্য বাজারজাত করা অসম্ভব ছিল সেসব পণ্যই কালোবাজারে পাওয়া যেত। এর সাথে সংশ্লিষ্ট চক্রকে আমরা চোরাকারবারি বলতাম। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত বিশ বছরে আমাদের চোখের সামনেই আমাদের মতো গরীব বা ভারতের মতো আধাউন্নত দেশগুলোতে কালোবাজারে পণ্যের সমাহার কমতে কমতে হাতে গোনা সুনির্দিষ্ট কিছু পণ্যে স্থিত হয়ে গেছে। ফলে পণ্যপাচারের সাথে জড়িত চক্রগুলোর মধ্যে যারা কালোবাজারের চার ভিত্তিমূলে নিজেদের স্থান করে নিতে পারেনি তারাই আবার আমাদের চোখের সামনেই আস্তে আস্তে তাদের সঞ্চিত পুঁজি নিয়ে ঢুকে পড়েছে আমাদেরই বৈধবাজারগুলোতে। এই বিশাল পুঁজির খুঁটির জোরে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে আমাদের অঞ্চলের অপ্রতিহত হলুদবাজার। এই হলুদবাজার সরকারকে শুল্ককর, ভ্যাট, সম্পূরক কর, আয়কর সবই দিচ্ছে –কিন্তু একজন ক্রেতাকে পণ্যের রাংতায় ভুলিয়ে মানে ও মাপে সম্পূর্ণ ঠকিয়ে আদায় করছে তার কাঙিক্ষত লাভ। আর বৈধবাজারে এতদিন যারা ছিল, অসম প্রতিযোগিতার কবলে পড়ে তাদরেকেও এই হলুদবাজারের ডাকে সামিল হতে হল। এবং নতুন নতুন যারা বাজারে এসেছে তারাও শুরু থেকেই বাজারের নিয়মেই এই হলুদবাজারের অংশ হয়ে গেছে। ফলে চাকচিক্য বেড়েছে, কারণ হলুদবাজার সম্পূর্ণই আকর্ষণনির্ভর, কিন্তু ভেজালে ছেয়ে গেছে সবকিছু, ওদিকে সরকারের রাজস্বও বেড়েছে, কিন্তু এদিকে ক্রেতা কম দামের জিনিস বেশি কিনতে কিনতে কী পরিমাণ অর্থ বাজারে ঢেলে দিচ্ছে সেঅর্থনীতি সম্পূর্ণই তার আয়ত্বের বাইরে। এই হলুদবাজার চারিদিক থেকে ছেয়ে ফেলেছে আমাদের। কোনো পণ্য আজ আর মনকে টানে না, ভেজাল আজ আমাদের নিয়তি। মার্কেটে মার্কেটে সয়লাব আজ আমাদের নাগরিক জীবন। আরো একজায়গায় কালো আছে কালোর জায়গায়, কিন্তু সেখানেও হলুদবাজার ঢুকে পড়েছে এবং সেবাজার এখন পূর্ণপ্রতিষ্ঠা পেয়েছে। চাকুরির বাজারের কথা বলছি। নিয়োগ, পোস্টিং ও প্রমোশন –এখাতগুলোতে যেপরিমাণ টাকার আদানপ্রদান আজ হচ্ছে তার হিসেব পেলে আমাদের সমাজের নীতিশূণ্যতার যেপরিচয় বেরিয়ে আসবে তাতে আমাদের সবারই, আজ আর প্রশাসন থেকে যে আমরা ভাল কিছু পাচ্ছি না, সেবিষয়ে বিস্ময়বোধ সারাজীবনের জন্য মুছে যাবে। কালোবাজার চিহ্নিত থাকে, সেবাজার চোর, তাকে আমরা চিনি। প্রতিরোধের মাত্রার উপর কালোবাজার ও ঘুষের ব্যাপ্তি সংকুচিত বা প্রসারিত হতে…

বাংলাদেশের সমুদ্রবক্ষের খনিজ সম্পদ বিদেশি কোম্পানীর হাতে তুলে দেয়ার প্রতিবাদ স্বরূপ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানের পাশাপাশি ইন্টারনেটেও স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ-বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির উদ্যোগে পিটিশনঅনলাইন.কম ওয়েবসাইটে ৭ দফা দাবী সম্বলিত একটি পিটিশন সেটআপ করা হয়েছে। স্বাক্ষর করতে এখানে ক্লিক করুন এই লিঙ্কটি ফেইসবুক, অন্যান্য ব্লগ ও ফোরামগুলোসহ ইন্টারনেটে যত বেশি সম্ভব ছড়িয়ে দিন।

আমরা কি জানি, ঠিক এই মুহূর্তে যে-শিশুটি জন্ম নিল বাংলাদেশ নামক মানচিত্রের মাটিতে, সে ১০,৬৩০ টাকা বৈদেশিক ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে মায়ের জরায়ু ছিঁড়ে পৃথিবী নামক গ্রহে আগমন করল! [..]

আমরা কি জানি, ঠিক এই মুহূর্তে যে-শিশুটি জন্ম নিল বাংলাদেশ নামক মানচিত্রের মাটিতে, সে ১০,৬৩০ টাকা বৈদেশিক ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে মায়ের জরায়ু ছিঁড়ে পৃথিবী নামক গ্রহে আগমন করল! পৃথিবীর সকল দেশে যে-কোনো শিশু জন্মের পর সুতীব্র কান্নায় জানান দেয় তার আগমনী বার্তা। এটাই একটি সুস্থ শিশুর জন্মের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। নবজাতকের এই জন্মক্রন্দনে চিকিৎসকসহ আমরা সকলে আনন্দিত হই, একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সুস্থ ও সবল শিশুর জন্মানন্দে। কিন্তু বাংলাদেশ নামক দুর্নীতিপরায়ন ও ঋণগ্রস্ত এই দেশে একটি শিশুর জন্মের সময়ে কান্নার সুতীর্ব চিৎকার আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হয় না। এদেশে একজন নবজাতকের জন্মের সময়ে কান্নার সুতীর্ব চিৎকারে শুনতে পাই প্রতিবাদ। সে যেন কান্নার মাধ্যমে বলতে চায়, ‌'আমাদের পূর্বসূরিদের ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে কেন বাংলাদেশ নামক ঋণগ্রস্ত দেশে জন্ম নিলাম? কেন একটি ঋণগ্রস্ত দেশের মায়ের জঠরে আমি লালিত হয়ে ১০,৬৩০ টাকার বৈদেশিক ঋণের গ্লানি নিয়ে আমার জীবনের শুরু? হে ইশ্বর, কেন তুমি আমাকে জীবনের প্রারম্ভে পূর্বসূরিদের ঋণের তাজ আমার মাথায় পরিয়ে ন্যুব্জ হয়ে বেঁচে থাকার জন্য এই পৃথিবীতে আগমন ঘটালে?' উপরের উক্তিগুলো হাস্যকর মনে হচ্ছে কি? প্রিয় পাঠক, এটি কোনো রম্যরচনা নয়। বিদেশি দাতা ও অর্থযোগানদারী সংস্থাগুলোর কাছে বাংলাদেশ তথা বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক ঋণখেলাপি। এই মহূর্তে বাংলাদেশের ঘাড়ে ২ লাখ ৬৭ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণের বোঝা। মাথাপিছু হিসাবে যা দাঁড়ায় ১০,৬৩০ টাকা। অর্থনৈতিক হিসাবে যা দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি-র ৫০ শতাংশ (৪৯.৯) । স্থানীয় ও বৈদেশিক উৎস মিলিয়ে প্রতি বছরই বাড়ছে সরকারের ঋণ গ্রহণের হার এবং এর বিপরীতে ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধেই ব্যয় হচ্ছে জাতীয় বাজেটের বিরাট এক অংশ। শুধু চলতি অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপি-র ২০ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণের স্থিতি ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপি-র ২৯ দশমিক ১ শতাংশ। আর এই সব ঋণ ও সুদ পরিশোধ করতে গিয়েই প্রতি বছর বাজেটের উপর চাপ বাড়ছে। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০১২ সালের মধ্যে শুধু বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ-এর কাছে দেনাবাবদ সরকারকে ১৪ হাজার ৮৫৬ কোটি ৬৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হবে। আমাদের রপ্তানি আয় ও বিদেশে কর্মরত…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.