যুক্তিবাদী বিশ্বদৃষ্টির সাথে অন্ধ বিশ্বাসপ্রবণদের দ্বন্দ্বের সর্বশেষ শহিদ অভিজিৎ রায়। অভিজিৎদের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর হয়ে চলেছে কয়েক দশক ধরে। অথচ বাংলাদেশের কথা ছিল তার সবটুকু শক্তি দিয়ে সেক্যুলার মুক্তচিন্তার পরিবেশ গড়ে তোলার [. . .]

এক. আমেরিকা-প্রবাসী ড. অভিজিৎ রায় (জন্ম ১৯৭১) এবার বাংলাদেশে এসেছিলেন অমর একুশের বইমেলায় যোগ দিতে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ইসলামপন্থী আততায়ীরা তাঁকে বইমেলা সংলগ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। আততায়ীদের আক্রমণে অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন, যিনি নিজেও একজন ব্লগার এবং লেখিকা; ‘বিবর্তনের পথ ধরে’ (২০০৭) গ্রন্থটি তাঁরই। কাছাকাছি স্থানেই এই ফেব্রুয়ারি মাসেই এক দশক আগে (২০০৪) মুক্তচিন্তার আরেক পথিকৃৎ অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের উপরও ঠিক এভাবেই আক্রমণ করেছিল ইসলামপন্থী জঙ্গিরা। ছোটবেলা থেকে অভিজিতের বেড়ে ওঠা এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই। বিদেশে ডক্টরেট করতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এ তাঁর পড়াশোনা। সে বুয়েট ক্যাম্পাসও অদূরেই। আমেরিকায় একটি কোম্পানিতে কর্মরত প্রকৌশলী অভিজিৎ। পেশাগত জীবনের পাশাপাশি অভিজিৎ শুধু লিখেছেন। প্রচুর লিখেছেন। ব্লগ থেকে শুরু করে গবেষণা নিবন্ধ, মতামত কলাম থেকে শুরু করে বই। একক এবং দ্বৈত প্রকাশনা মিলিয়ে ড. অভিজিৎ রায়ের প্রকাশিত বইগুলো হলো: ‘আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’ (২০০৫), ‘মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে’ (২০০৭), ‘স্বতন্ত্র ভাবনা: মুক্তচিন্তা ও বুদ্ধির মুক্তি’ (২০০৮), ‘সমকামিতা: বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান’ (২০১০), ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ (২০১১), ‘ভালোবাসা কারে কয়’ (২০১২), ‘বিশ্বাস ও দর্শন’ (২০১২), ‘শূন্য থেকে মহাবিশ্ব’ (২০১৪) এবং ‘ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো: এক রবি-বিদেশিনীর খোঁজে’(২০১৫)। অভিজিৎ রায়ের পিতা পদার্থবিজ্ঞানের পণ্ডিত অধ্যাপক অজয় রায়, বর্তমানে অবসরে। তরুণ বয়সে অজয় রায় নিজে সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। এর পর সারা জীবন জ্ঞান সাধনা, এবং শিক্ষকতার মহান ব্রত নিয়ে মানুষ গড়ার পাশাপাশি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিবেদিত করেছেন প্রগতিশীল-সেক্যুলার-বৈষম্যহীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গড়ার কাজে। তাই, সন্তানহারা পিতার কাছেও এই দেশটির জবাবদিহিতার মুহূর্ত এটা। দুই. অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ডে পুরো দেশ এখনও স্তম্ভিত। সামাজিক মিডিয়াসহ পুরো বাংলা ব্লগমণ্ডল প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে, অভিজিৎ রায়ের লেখাগুলো সর্বশক্তিতে পুনঃপ্রচারে নেমেছে অনেকগুলো প্ল্যাটফর্ম। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহরে, আর দেশের বাইরে লন্ডন, টরন্টো, নিউইয়র্ক, বার্লিন, সিডনি-তে মানব-বন্ধন থেকে শুরু করে অসংখ্য প্রতিবাদ সমাবেশ হয়ে গেছে গত কয়েক দিনে। অনলাইন আর অফলাইন এর প্রতিবাদে বারবার হ্যাশট্যাগে উঠে এসেছে: 'JeSuisAvijit', 'আমিই অভিজিৎ', 'আমরা অভিজিৎ'। সুষ্ঠু তদন্ত আর বিচারের পাশাপশি মুক্তচিন্তার অনুসারীদের নিরাপত্তার দাবিই এ মুহূর্তে মুখ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই অভিজিৎ রায়ের স্মৃতিস্তম্ভ দাবি নিয়েও এগিয়ে এসেছে সেক্টর কমান্ডার'স ফোরাম। ইতিমধ্যে হত্যার উস্কানিদাতা এক জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। তদন্ত চলছে। আমেরিকা থেকে এফবিআই-এর একটি তদন্ত…

মানুষটা তাঁর যুগ ও বাস্তবতার অনেক আগেই জন্মেছেন। জার্মানির একটি গণিত-প্রেমিক, ইহুদি পরিবারে। আইনস্টাইনের প্রায় সমসাময়িক, এবং জীবন-বাস্তবতা প্রায় বিপরীত। আইনস্টাইন খ্যাতি ও সামাজিক পরিচিতির কড়া আলোয় এসেছেন। আর এই মানুষটি দশজনের চোখের আড়ালে, আঘাত ও অসম্মানের সঙ্গে পেছন থেকেই, তাঁর মত এক শান্ত, নির্লিপ্ত সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। [. . .]

মানুষটা তাঁর যুগ ও বাস্তবতার অনেক আগেই জন্মেছেন। জার্মানির একটি গণিত-প্রেমিক, ইহুদি পরিবারে। আইনস্টাইনের প্রায় সমসাময়িক, এবং জীবন-বাস্তবতা প্রায় বিপরীত। আইনস্টাইন খ্যাতি ও সামাজিক পরিচিতির কড়া আলোয় এসেছেন। আর এই মানুষটি দশজনের চোখের আড়ালে, আঘাত ও অসম্মানের সঙ্গে পেছন থেকেই, তাঁর মত এক শান্ত, নির্লিপ্ত সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। দুজনই জার্মান, ইহুদি, ও বিজ্ঞান-সাধক। আরো মিল তাঁদের গভীরে সমাজ ও মানুষের প্রতি অকুণ্ঠ আগ্রহে ও সহানুভবে, তাঁদের নিঃসীম উদারতায় ও সাদামাঠা জীবনযাপনে, এবং তাঁদের যৌথ বিজ্ঞান-সাধনায়। জার্মানিকে গণিত-সাধনার পাদ-পীঠ বলা হয়। জার্মানির গণিত-ইতিহাস প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী, এবং সেখানে বহু ইহুদির বলার মত অবদান আছে। জার্মান গণিতের কথা বললে গাউস, রীমান, ডেডিকেন্ট, ওয়ার্সত্রাস, মোবিয়াস, বেসেল, কুরান্ট, ক্রনেকার, হিলবার্ট, এমন অনেক নাম গণিত-ছাত্রের মনে হয়ত ধাক্কা দেবে। আর এই মানুষ তো গণিত নিয়েই তার পুরো জীবন কাটিয়ে গেছেন। তাঁর অভিনব আবিষ্কারে একের পর এক খুলে গেছে বিজ্ঞানের নানা দিকের দরজা। আশ্চর্য জটিল বিষয়ের নির্যাস ছেঁকে, তাদের মৌলিক, সরল ধর্মগুলি তুলে ধরেছেন অদ্ভুত সাবলীলতায়। জন্ম দিয়েছেন গণিতের আধুনিক রূপ, নতুন অবয়ব। স্থানকালের দিক থেকে নোয়েথার মোটামুটি একটি প্রতিকুল পরিবেশ বেছেই জন্মেছেন। জার্মানির তীব্র পুরুষতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক পরিবেশে, তিনি ম্যাক্স নোয়েথারের কন্যা, এক জন উদার, প্রগতিশীল, সমাজবাদের আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাভাবাপন্ন মানুষ হিসেবে বিবর্তিত হয়েছেন। যেমন অনুমান করা যায়, এ সব কটি কারণেই তাঁর জীবনে বিপর্যয় এসেছে; অবমাননা, অসম্মান, জীবন-জোড়া আর্থিক সংকট, সংঘাত, সংগ্রাম। কিন্তু যাঁরা নোয়েথারকে চেনেন, তাঁরা তাঁর অস্তিত্বের প্রবল উজ্জ্বল দিকটিও জানেন। সব সংকুলতাকে প্রায় ধুলোর মত কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলে তিনি ঝাঁপ দিয়েছেন জীবনের সব অবশ্য-কর্তব্য ইতিবাচক কাজের সমুদ্রে। সংসার ও সমাজের জটিল, নিষ্ঠুর কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে শান্তির নীড়ের মত সরল বনস্পতি হয়ে উঠেছেন তাঁর আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু ও ছাত্রদের কাছে। আঠের বছর বয়স্ক এমি তাঁর জীবনের মোড় পাল্টেছেন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে: গতানুগতিক গৃহিণী বা ইস্কুলের শিক্ষক হতে নয়, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো উচ্চশিক্ষা পেতে চান। ১৯০৮ পর্যন্ত চালচিত্রটা এরকম: জার্মানিতে মহিলারা রাজনৈতিক জীবনে বা সভা-সমিতিতে যোগ দিতে পারেন না। চোদ্দ বা পনের বছর পর্যন্ত কথা বলার মত কিছু ইংরিজি বা ফরাসী, ধর্মশিক্ষা, গার্হস্থ্য-বিজ্ঞান ও শিশু-শিক্ষা, বড় জোর ইস্কুল শিক্ষক হবার তালিম ছাড়া কিছু পান না…

মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন যাঁরা, তাদের কত অংশ রাজনীতি অর্থনীতির জটিল তত্ত্বপাঠ নিয়ে তারপর অংশ নিয়েছিলেন আর কত অংশ গিয়েছিলেন স্রেফ ভালোবাসার তাগিদে? মানুষের প্রতি নেতৃত্বের, আর নেতৃত্বের প্রতি মানুষের সেই ভালোবাসা [..]

১. আর্নেস্তো চে গুয়েভারার ওপর নির্মিত স্টিভেন সডেরবার্গ এর ছবি 'দি আর্জেন্টাইন' দেখছিলাম। ছবিটি শুরু হয়েছে ১৯৬৪ সালে হাভানায় সাংবাদিক লিসা হাওয়ার্ডের নেয়া চে গুয়েভারার একটি সাক্ষাৎকারকে পটভূমিতে রেখে। সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে লিসা জিজ্ঞেস করলেন: - What is the most important quality for a revolutionary to possess? - l`amour. ('ভালোবাসা', চে'র উত্তর। 'মানুষের প্রতি, ন্যায় এর প্রতি, আর সত্যের প্রতি ভালোবাসা')। তরুণ বয়সে চে তখনো চে হয়ে ওঠেননি, স্রেফ আর্নেস্তো। বেরিয়ে পড়েছিলেন লাতিন আমেরিকা ঘুরে দেখতে। সম্বল একটি মটরসাইকেল আর মানুষের প্রতি গভীর মমতা আর ভালোবাসা। মানুষকে ভালোবেসেই ক্রমে আর্নেস্তো হয়ে উঠেছিলেন চে। সেই ভালোবাসা মানুষও তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে দু'হাতে। চের মৃত্যুর পর ৪৩ বছরেও সেই ভালোবাসা এতটুকু ম্লান হয়নি, বরং দেশ কাল সীমানা সময় ডিঙিয়ে - লাতিন আমেরিকা ইউরোপ থেকে শুরু করে বাংলার একটি তরুন কিংবা কিশোরের চোখেও সেই ভালোবাসা সমান দীপ্তি নিয়ে জ্বলে। ২. আরেকটি সাক্ষাৎকারের কথা বলি এবার। স্বাধীনতার ঠিক পর পরই সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে দেয়া বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাৎকার। ফ্রস্ট প্রশ্ন করলেন - 'আপনার সবচেয়ে বড় শক্তি কি'? বঙ্গবন্ধু বললেন - 'আমি আমার মানুষকে ভালোবাসি' ফ্রস্ট এবার জিজ্ঞেস করলেন - 'আপনার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা কি'? একটু থেমে বঙ্গবন্ধু বললেন - 'আমি তাদের বড় বেশী ভালোবাসি' বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন - 'আমি আমার দেশের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, সেই ভালোবাসা নিয়ে মরতে চাই, আর কিছু চাই না'। ৩. মানুষ রাজনীতি করে মানুষেরই জন্য। আর সেই মানুষও ভালোবেসেই কাউকে তাদের নেতা বানায়। নেতার এক ডাকে মুক্তির বাণী বুকে নিয়ে রাজপথে জীবন দেয়, স্টেনগান হাতে তুলে নেয়। বিশ্বের সবচেয়ে পরাক্রমশালী রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে যায়। কখনো কখনো এই ভালোবাসাই কয়েক দশকের মিথ্যা ক্লেদ গ্লানি স্তাবকতাকে দু'হাতে সরিয়ে সত্যের সন্ধান করে। মিথ্যাচার দেখলে প্রতিবাদ করে, মিথ্যাবাদীদেরকে এবং তাদের দোসরদের চিহ্নিত করে। ৪. মনে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এক বন্ধুর সাথে তার নেতার বক্তৃতা শুনতে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে বন্ধুটিকে বলেছিলাম - 'যে নেতৃত্বের প্রত্যাশা আমি করি, তার নেতার মধ্যে আমি সেটি খুঁজে পাইনি'। বন্ধুটি দুঃখিত হয়ে আমাকে একটি লম্বা লেকচার দিয়েছিল - ব্যক্তিগত ক্যারিশমা বা মমতা দিয়ে কেন একজন নেতাকে বিচার করা সঠিক নয় (বৈজ্ঞানিক তো…

বর্তমান বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ন্যাটোর প্রাসঙ্গিকতা এবং এর অবলুপ্তি বিষয়ে মূল নিবন্ধটি লিখেছেন শহিদুল ইসলাম। মুক্তাঙ্গনের পক্ষ থেকে নিবন্ধটি এখানে এমবেড করে তুলে দেয়া হল পাঠকের জন্য। পড়তে সমস্যা হলে অনুগ্রহ করে সংযুক্ত পিডিএফ-লিন্ক থেকে পুরো লেখাটি ডাউনলোড করে নিন [...]

[মুক্তাঙ্গনের পক্ষ থেকে শহিদুল ইসলামের নিবন্ধটি এখানে এমবেড করে দেয়া হল। পড়তে অসুবিধে হলে অনুগ্রহ করে নিবন্ধটির পিডিএফ কপি এই লিন্ক থেকে ডাউনলোড করে নিন]

আগের লেখার বিপরীতে বেশ কিছু মন্তব্য এসেছে। গত কয়েকদিনে গুগল-চীন দ্বন্দ্বেও আরো কিছু নতুন অগ্রগতি, কথা চালাচালি হয়েছে। সে সবে যাওয়ার আগে গুগল ঠিক কি কারনে চীন বর্জনের সিদ্ধান্তে উপনীত হলো (অন্তত তাদের হিসাবে) - সেটা একটু দেখা যাক। ভদ্রলোকের নাম আই ওয়েইওয়েই। তিনি অধুনা চীনের সবচেয়ে নামকরা শিল্পীদের একজন, এবং এর পাশাপাশি প্রথম কাতারের রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী (dissident)। মাস দুয়েক আগে তার জিমেইল একাউন্ট হ্যাক করা হয়। তিনি ছাড়াও হ্যাকার-রা আরো কয়েকজনকে টার্গেট করেছিল। গুগল যখন ঘটনাটি টের পায়, সাথে সাথে তারা অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধানে জানা যায় যে আই ওয়েইওয়েই-এর একাউন্টের সমস্ত ইমেইল তাঁর অজান্তে ঘাঁটাঘাঁটি হয়েছে, এবং কপিও করা হয়েছে। এর পাশাপাশি তাঁর ব্যাংকেও কিছু লোক পাঠানো হয়। তারা বলেন যে আই-এর বিরুদ্ধে সরকারী তদন্ত চলছে, এবং তাই তাঁর ব্যাংক একাউন্ট বিষয়ক সমস্ত তথ্য হস্তান্তর করতে হবে। এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে চীন সরকার আই-কে বলে দিয়েছে যে, হয় সে তার মানবাধিকার নিয়ে চিল্লাপাল্লা বন্ধ করবে, নয়তো তাঁকে দেশত্যাগ করতে হবে। বলা বাহুল্য যে আই ওয়েইওয়েই এই দুটোর একটাও করতে চান না। কঠিন থেকে কঠিনতর আই-এর কেসই শেষ নয়। পুরো একটা পরিপ্র্রেক্ষিত আছে এখানে। চীনের গত তিন দশকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পিঠে বেশ কিছু মহলের আশা ছিল যে তাড়াতাড়ি না হোক, ধীরে ধীরে হলেও চীন সরকার কোন না কোন সময় রাজনৈতিক ভাবে আরেকটু উদারপন্থী হবে। ভিন্নমত বা ভিন্নপথের লোকদের আরেকটু কথা বলার জায়গা করে দেবে। ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিক-কে ঘিরে অনেকের এই আশা আরো বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইদানীংকালে দেখা যাচ্ছে যে উদার তো নয়ই, বরং চীনা সরকার দিনকে দিন আরো কঠোর হচ্ছে, আরো শক্ত হাতে সকল রকম প্রতিবাদের গলা টিপে ধরছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা - - ডিসেম্বর মাসে লেখক এবং রাজনৈতিক কর্মী লিউ শিয়াওবো-কে ১১ বছরের জেলদন্ড দেয়া হয়। তার দোষ কি ছিল? তিনি চার্টার ৮ নামে একটি মানবাধিকার ম্যানিফেস্টোর জন্য স্বাক্ষর সংগ্রহ করছিলেন। চার্টার ৮-এর সার কথা খুব যুগান্তকারী কিছু ছিল না। বাকস্বাধীনতা দিতে হবে। ভোটাধিকার দিতে হবে। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার দিতে হবে। ধর্মীয় স্বাধীনতা দিতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষার গ্যারান্টি দিতে হবে। সাংবিধানিক…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.