বর্তমান বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ন্যাটোর প্রাসঙ্গিকতা এবং এর অবলুপ্তি বিষয়ে মূল নিবন্ধটি লিখেছেন শহিদুল ইসলাম। মুক্তাঙ্গনের পক্ষ থেকে নিবন্ধটি এখানে এমবেড করে তুলে দেয়া হল পাঠকের জন্য। পড়তে সমস্যা হলে অনুগ্রহ করে সংযুক্ত পিডিএফ-লিন্ক থেকে পুরো লেখাটি ডাউনলোড করে নিন [...]

[মুক্তাঙ্গনের পক্ষ থেকে শহিদুল ইসলামের নিবন্ধটি এখানে এমবেড করে দেয়া হল। পড়তে অসুবিধে হলে অনুগ্রহ করে নিবন্ধটির পিডিএফ কপি এই লিন্ক থেকে ডাউনলোড করে নিন]

৩ comments

  1. অবিশ্রুত - ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৬:১৭ পূর্বাহ্ণ)

    শহিদুল ইসলামকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ এমন একটি বিষয়ের প্রতি সকলের দৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়ে দেয়ায়। ন্যাটো সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপাঙ্গ হিসেবে বিশ্বশান্তির মূর্তিমান হুমকি। তাই এই আঞ্চলিক জোটটি অবলুপ্তির দাবি একটি জরুরি প্রসঙ্গই বটে।
    তবে, ঠাণ্ডাযুদ্ধ যুগের অবসান ঘটেছে বলেই ন্যাটোর বিলুপ্তি চাওয়াটাকে যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই নাকচ করে দিয়েছে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রসঙ্গ সামনে নিয়ে এসে। এবং শহিদুল ইসলামের লেখাতেও আমরা প্রসঙ্গক্রমে এর উল্লেখ পাচ্ছি। মূলত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রসঙ্গ উত্থাপনের মধ্যে দিয়েই যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোকে জাতিসংঘের সমান মাপের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা করে চলেছে। এবং এক অর্থে তারা প্রতিষ্ঠা করেও ছেড়েছে। বারাক ওবামারা হয়তো অচিরেই চাইবেন, দুনিয়ার সব দেশই ন্যাটোর সদস্য হোক!
    যেমন, সার্বিয়ার উপর এই মুহূর্তে প্রচণ্ড চাপ রয়েছে, ন্যাটোর সদস্য হওয়ার ব্যাপারে। যদিও মুখে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ন্যাটোর সদস্য হওয়াটা লাভজনক হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত সার্বিয়ার জনগণই নেবে, এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র কোনও চাপ দেবে না। (শোনা যাচ্ছে, অচিরেই সার্বিয়ায় একটি লোকদেখানো রেফারেন্ডাম হবে।)
    আসলে এসবই কথার কথা – এই উক্তিই একটি ভয়াবহ চাপ।
    ২.
    লেখক তাঁর লেখায় প্রসঙ্গক্রমে লিখেছেন :

    ন্যাটো গঠনের প্রাক্কালে ব্রিটেনের শ্রমিক দলীয় সরকার বিশ্বকে এই বলে আশ্বস্ত করেছিল যে, ‘ন্যাটো প্রতিরক্ষা জোট’, বিশ্বশান্তি, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র স্থাপনের উদ্দেশ্যে নিবেদিত থাকবে। কিন্তু পর্তুগালের অন্তর্ভুক্তি এই উদ্দেশ্যকে অনেকটা হুমকির মধ্যে ফেলে দেয়।

    পর্তুগালের অন্তর্ভুক্তি কেন হুমকি তৈরি করল, বোঝা গেল না। যতদূর জানা যায়, পর্তুগাল দ্বিতীয় মহাযুদ্ধেও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে। হুমকিটা কোন দিক দিয়ে তৈরি হলো, তার উল্লেখ বা টিকা এ ক্ষেত্রে জরুরি বলে মনে হয়।
    ৩.
    ন্যাটোর প্রতি চীন ও ভারতের দৃষ্টিভঙ্গী কি? এই রাষ্ট্র দুটির সঙ্গে ন্যাটোর আন্তঃসহযোগিতার মাত্রা কোন ধরণের? বাংলাদেশের মতো একটি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে এ বিষয়টির বিশ্লেষণ আমাদের সামনে থাকা দরকার। থাকলে ন্যাটোর অবলুপ্তির ন্যায্যতার আরও একটি দিক হয়তো বেরিয়ে আসবে। লেখাটিতে বিষয়টির উল্লেখ থাকলে আমাদের চিন্তার ব্যাপ্তি আরও বাড়তো।

    আবারও লেখককে ধন্যবাদ, তার সুলিখিত লেখাটির জন্য।

  2. ইমতিয়ার - ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৬:০১ পূর্বাহ্ণ)

    তথ্যবহুল ও প্রাণবন্ত এ লেখার উদ্দেশ্য শিরোনামেই সুস্পষ্ট এবং শহিদুল ইসলাম লেখাটিতে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেছেন পাঠককেও শিরোনামের ওই সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে সাহায্য করতে।
    যতদিন ওয়ারশ ছিল, ততদিন ন্যাটো সংযম দেখাতে বাধ্য হয়েছে, কিন্তু এখন আর সেই সংযমের বালাই নেই। তবে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটলেও, শীতল যুদ্ধের অবসান ঘটলেও, ন্যাটোর প্রতি শীতল যুদ্ধের এক পরাশক্তি রাশিয়ার বর্তমান সম্পর্ক ন্যাটোকে ভবিষ্যতে ঝুঁকিতে ফেলবে কি না, তা এখনও চিন্তা করা যেতে পারে।
    গত বছর, আমাদের অনেকেরই মনে আছে, ন্যাটো থেকে দু’ জন রাশিয়ান কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছিল তথ্য পাচারের অভিযোগে। তখন ন্যাটোতে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, আমরা ঠাণ্ডা মাথায় এর জবাব দেব।
    কয়েকদিন আগে রাশিয়া তাদের নতুন সামরিক নীতি প্রকাশ করেছে, যার মূল বক্তব্য হলো ন্যাটোকে তারা তাদের জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে মনে করে এবং নিজেদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করবে। রাশিয়ার এই নতুন সামরিক নীতি ন্যাটোর পালে নতুন বাতাস দেবে, সন্দেহ নেই। কিন্তু যত বাতাসই লাগুক, রাশিয়া তো আর আফগানিস্তান কিংবা ইরাক নয়। ন্যাটোকে এ ক্ষেত্রে নিজে থেকেই সমঝে চলতে হবে।
    আরও এক দিক থেকে রাশিয়ার এ সামরিক নীতি তাৎপর্যপূর্ণ। শীতল যুদ্ধের সময় সোভিয়েত রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পাদিত একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির মেয়াদ এ বছরেই শেষ হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, এটি পুনরায় স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা থাকলেও রাশিয়া সেদিকে পা না বাড়িয়ে নতুন এই নীতি ঘোষণা করেছে। পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার কমিয়ে আনার জন্যে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে-নতুন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও এর ফলে নতুন এক প্রতিবন্ধকতার মুখে এসে দাঁড়ালো বলেই মনে হচ্ছে।
    শীতল যুদ্ধের সময় সোভিয়েত রাশিয়া যে-আদর্শিক বলয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, অনেক আগেই সে বলয়ের পতন ঘটেছে। তাই রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এ দ্বন্দ্বটি আসলে কী রূপ পেতে চলেছে, তা বোধহয় আর দু’চার লাইনে বলার অবস্থায় নেই।
    ন্যাটোর উত্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভূমিকা আরও নানা মাত্রায় আলোচনার দাবি রাখে। এ সব দিক যত উন্মোচিত হবে, ন্যাটোর মুখোশও খুলে যাবে।
    শহিদুল ইসলাম স্যারকে ধন্যবাদ, প্রায় অনালোচিত একটি বিষয়কে সামনে নিয়ে আসার জন্যে।

  3. মোহাম্মদ মুনিম - ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৩:৩৮ পূর্বাহ্ণ)

    ন্যাটোর প্রয়োজন আছে কিনা, এই নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেও বিতর্ক চলছে। তবে বিতর্কটি বিশ্বশান্তি বিষয়ে নয়, ন্যাটো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উপকারী না বোঝা, সেই নিয়ে বিতর্ক। আফগানিস্তানে যখন ২০০১ সালে যুদ্ধ শুরু হলো, তাতে ন্যাটো সদস্যদের মাঝে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধ করেছে, বাকি সদস্যরা নামকা ওয়াস্তে ছিল এবং আছে। ন্যাটোর বিপক্ষে যারা আছেন তারা বলছেন, ন্যাটোর সদস্য হয়ে ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের প্রতিরক্ষার ভার যুক্তরাষ্ট্রের উপর ছেড়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যেখানে জিডিপির ৫ ভাগ খরচ করছে প্রতিরক্ষা বাজেটে, ইউরোপীয় দেশগুলো করছে মোটে দুভাগ। আলবেনিয়ার মত দেশ আঞ্চলিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে ন্যাটো চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র আলবেনিয়াকে রক্ষা করতে বাধ্য। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র এমন সব সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে যাতে তার কোন স্বার্থ নেই।
    ন্যাটোর সমর্থকরা বলছেন ন্যাটো থাকার ফলে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে রাশিয়ার সাথে বোঝাপড়া করতে পারছে। আর ইসলামী সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে ইউরোপীয় দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য আদান প্রদান করতে পারছে। ন্যাটোর পক্ষে এবং বিপক্ষের লিঙ্ক এখানে এবং এখানে

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.