সমকামিতা কি প্রকৃতিবিরুদ্ধ? অনেকেই সমকামিতা নিয়ে বেজায় বিব্রত থাকেন। নাম শুনলেই আঁতকে উঠেন। কাঠমোল্লারা তো গালি দিয়ে খালাস- সমকামীরা হচ্ছে খচ্চর স্বভাবের, কুৎসিৎ রুচিপূর্ন, মানসিক বিকারগ্রস্ত। এমনকি প্রগতিশীলদের মধ্যেও রয়েছে নানা রকম ওজর আপত্তি। যারা শিক্ষিত, ‘আধুনিক’ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন, গে লেজবিয়ন ইত্যকার তথাকথিত ‘পশ্চিমা’ শব্দের সাথে কমবেশি পরিচিত হয়েছেন, তারাও খুব কমই ব্যাপারটিকে মন থেকে ‘স্বাভাবিক’ বলে মেনে নিতে পারেন। তাদের অনেকেই এখনো ব্যাপারটিকে ‘প্রকৃতি বিরুদ্ধ’ মনে করেন, আর নয়ত ভাবেন – পুরো ব্যাপারটি উৎকট ধরনের ব্যাতিক্রমধর্মী কিছু, এ নিয়ে ‘ভদ্র সমাজে’ যত কম আলোচনা করা যায় ততই মঙ্গল। উপরে উপরে না বললেও ভিতরে ভিতরে ঠিকই মনে করেন সমকামীরা তো হচ্ছে গা ঘিন ঘিনে বিষ্ঠাকৃমি জাতীয় এঁদো জীব। মরে যাওয়াই মনে হয় এদের জন্য ভাল। সমাজ সভ্যতা রক্ষা পায় তাহলে। আমি এই বছর বৈজ্ঞানিক দিক (মুলত জীববিজ্ঞান ও জেনেটিক্সের দৃষ্টিভঙ্গি) থেকে নির্মোহভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে একটি বই লিখেছি; নাম - 'সমকামিতা : একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান' (২০০৯)। বইটি প্রকাশ করেছে 'শুদ্ধস্বর'। বইটির বেশ কিছু অংশ ইন্টারনেটের ব্লগসাইটগুলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের সময় প্রকাশের সময় সুধীজনের আগ্রহ তৈরি করে। মুক্তাঙ্গন ব্লগের জন্য এই প্রবন্ধটি লেখা হয়েছে আমার এবারকার বইয়ের উপর ভিত্তি করেই। আমি নিজে সমকামী নই, কিন্তু সমকামী বন্ধু-বান্ধবদের জীবন প্রত্যক্ষ করার এবং এ নিয়ে কিছু পড়াশুনা করার ও লেখালেখি করার সুবাদে কিছুটা ধারনা অর্জন করেছি। আমার এ প্রবন্ধটি সে চিন্তাভাবনারই ফসল বলা যেতে পারে। মুক্তাঙ্গন ব্লগের পাঠক-পাঠিকাদের কাছে এ প্রবন্ধ ভিন্নমাত্রার আবেদন তৈরি করবে বলে মনে করি। তবে, এ নিয়ে পাঠকদের ভিন্নমত থাকলে আমি তা সদরে পর্যালোচনা করতে, এবং যুক্তিনিষ্ঠ হলে তা গ্রহণ করতেও আমি রাজী। আমি প্রবন্ধটি শুরু করছি ভুল ভাবে ব্যবহৃত কিছু মন্তব্য দিয়ে, যা সমকামিতার বিরুদ্ধে প্রায়শই ব্যবহার করা হয় : “সমকামিতা প্রাকৃতিক কোনোভাবেই হতে পারে না মূলত (নারী-পুরুষে) কামটাই প্রাকৃতিক” কিংবা অনেকে এভাবেও বলেন - “নারী আর পুরুষের কামই একমাত্র প্রাকৃতিক যা পৃথিবীর সকল পশু করে। যার মূল লক্ষ্য হলো বংশ বৃদ্ধি” উক্তিগুলো স্রেফ উদাহরণ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। অনেকেই সমকামিতাকে ‘প্রকৃতিবিরুদ্ধ’ বা ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে প্রতিপন্ন করার জন্য উপরোক্ত ধরণের যুক্তির আশ্রয় নেন। আমি এই…
অনেকেই সমকামিতা নিয়ে বেজায় বিব্রত থাকেন। নাম শুনলেই আঁতকে উঠেন। কাঠমোল্লারা তো গালি দিয়ে খালাস- সমকামীরা হচ্ছে খচ্চর স্বভাবের, কুৎসিৎ রুচিপূর্ন, মানসিক বিকারগ্রস্ত। এমনকি প্রগতিশীলদের মধ্যেও রয়েছে নানা রকম ওজর আপত্তি [...]