বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী বিচারের উদ্যোগ ও প্রক্রিয়াকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যে যুক্তরাজ্যে গৃহীত একটি উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। জাস্টিস কনসার্ন নামে একটি ভূঁইফোড় সংগঠন যুক্তরাজ্যের অল পার্টি পার্লামেন্টারি হিউম্যান রাইটস গ্রুপ এপিপিজিএইচআর -এর মাধ্যমে এ প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। এ ঘটনায় এপিপিজিএইচআর-এর ভাইস চেয়ারম্যান লর্ড অ্যাভবেরির ভূমিকা নিয়েও বিভিন্ন মহলে নানা সংশয় দেখা দিয়েছে। এ সেমিনারে ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন, অতএব এটিতে উপস্থিত না হলে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নের মুখে পড়বে ইত্যাদি যুক্তি দেখানো হয় জামাতমনস্ক লবিস্টদের পক্ষ থেকে। কিন্তু 'ওয়ার ক্রাইম স্ট্র্যাটেজি ফোরাম'-এর তথ্যপত্র থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে এ সেমিনারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ফলে সরকারের পক্ষ থেকেও এতে কেউ যোগ দিচ্ছেন না।

লন্ডন, ২২ জুন : বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী বিচারের উদ্যোগ ও প্রক্রিয়াকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যে যুক্তরাজ্যে গৃহীত একটি উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। জাস্টিস কনসার্ন নামে একটি ভূঁইফোড় সংগঠন যুক্তরাজ্যের অল-পার্টি পার্লামেন্টারি হিউম্যান রাইটস গ্রুপ (এপিপিজিএইচআর) -এর মাধ্যমে এ প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। এ ঘটনায় এপিপিজিএইচআর-এর ভাইস চেয়ারম্যান লর্ড অ্যাভবেরির ভূমিকা নিয়েও বিভিন্ন মহলে নানা সংশয় দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযুক্তদের প্রধান আশ্রয়দানকারী রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামী বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিশেষত যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধাপরাধ বিচারের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে। জাস্টিস কনসার্ন সেরকমই একটি সংগঠন, যার কোনও তৎপরতাই এর আগে যুক্তরাজ্যে দেখা যায়নি। জাস্টিস কনসার্ন নামের এ সংগঠনটি বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ বিচারের প্রয়াসকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ইউ কে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি হিউম্যান রাইটস গ্রুপের ওপর ভর করার অপচেষ্টা চালায়। প্রাথমিক পর্যায়ে এ প্রচেষ্টায় তারা সফলতাও অর্জন করে এবং ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে হাউস অব লর্ডসে এপিপিজিএইচআর-এর পৃষ্ঠপোষকতায় ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩ : আন্তর্জাতিক মান বিচার' শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে। জাস্টিস কনর্সানের তৎপরতা থেকে বোঝা গেছে যে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল এ সেমিনারকে খুবই গুরুত্ববহ করে তোলা এবং এতে বাংলাদেশের সরকার পর্যায়ের প্রতিনিধির উপস্থিতি নিশ্চিত করা। কিন্তু এ উদ্যোগে জাস্টিস কনসার্ন কেবল ব্যর্থই হয়নি, বরং তারা যে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত তা ফাঁস হয়ে যায়। ফলে এপিপিজিএইচআর-এর এ সেমিনারটি সম্পর্কে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, এপিপিজিএইচআর আয়োজিত সেমিনারটিতে উপস্থিতির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় যোগাযোগের জন্যে যে টেলিফোন নাম্বারটি দেয়া হয়েছিল, সেটিতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা চালিয়ে গত ২১ জুন কথা বলা সম্ভব হয়েছে। এ সময় টেলিফোনটি ধরেন জাস্টিস কনসার্নের আহ্বায়ক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। সেমিনারটির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‌জাস্টিস কনসার্ন আর এ আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত নেই। এটি আয়োজন করছে এপিপিজিএইচআর।' এরপর এপিপিজিএইচআর অফিসে যোগাযোগ করা হলে সেখানকার একজন কর্মকর্তা জানান, ‌এরকম কোনও ইভেন্ট-এ এপিপিজিএইচআর-এর সম্পৃক্তির কথা তাদের জানা নেই। এপিপিজিএইচআর-এর অফিস থেকে এরকম জানানো হলেও যুক্তরাজ্যে ওয়ার ক্রাইম স্ট্র্যাটেজি ফোরামের (WCSF) একজন সংগঠক জানিয়েছেন, ‌লর্ড অ্যাভবেরি তাদের সেমিনারে উপস্থিত থাকার জন্যে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তবে তারা সুনির্দিষ্ট তথ্যপত্র উপস্থাপন করে জানিয়েছেন, এর সঙ্গে জামায়াতচক্র সংশ্লিষ্ট থাকায় উদ্যোগটির উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের সন্দেহ…

...[একুশের সেই ভোরের কথা চিন্তা করুন। শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে চলে আসছে সেই মেয়েটি, যার অন্তর্গত কণ্ঠে তখন ধ্বনিত হচ্ছে ভাইকে ভুলে না যাওয়ার নিভৃত প্রতিজ্ঞা। সঙ্গে তার ভাই ছিল অথবা ছিল বাবাও। কিংবা তারা কেউ না থাকলেই বা কি? একুশ তো নির্ভয়ে পথচলারই দিন।]...

একুশের সেই ভোরের কথা চিন্তা করুন। শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে চলে আসছে সেই মেয়েটি, যার অন্তর্গত কণ্ঠে তখন ধ্বনিত হচ্ছে ভাইকে ভুলে না যাওয়ার নিভৃত প্রতিজ্ঞা। সঙ্গে তার ভাই ছিল অথবা ছিল বাবাও। কিংবা তারা কেউ না থাকলেই বা কি? একুশ তো নির্ভয়ে পথচলারই দিন। আর চিরদিন যেন এভাবে পথচলা যায়, সে আকাঙ্ক্ষাই তো খেলা করে এদিনের আগেপরে। বাবা নয়, ভাই নয়, কেউই নয় মেয়েটি তো ফিরছিলো সেই আকাঙ্ক্ষাকে সঙ্গী করে। কিন্তু তাকে উত্যক্ত করতে শুরু করল কয়েক ছেলে। প্রতিবাদ করায় ক্ষতবিক্ষত হতে হলো ভাইকে। একুশ মানে তো মাথা নত না করা- যে একুশের প্রতি পরম মমত্বে সে একটু আগে মিনারের পাদদেশে শুইয়ে রেখে এসেছে কয়েকটি ফুল- মেয়েটিও তাই প্রতিবাদে জ্বলে উঠল। এবার তাকেও পিটাতে পিটাতে ফুটপাতে ফেলে দিলো বখাটেরা। শহীদ মিনার থেকে অনেকেই ফিরছিল, শহীদ মিনারে অনেকেই যাচ্ছিল। তাদের সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে এই দৃশ্য। কেউই এগিয়ে যায়নি এই বখাটেদের পাল্টা উত্তর দিতে। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো যত সহজ, চেতনা নিয়ে রুখে দাঁড়ানো তত সহজ নয়। মেয়েটিকে তাই একুশের দিন এইভাবে রক্তাক্ত হতে হয়েছে, যে-রক্তের দাগ হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই মুছে যাবে- কিন্তু কিছুতেই সে ভুলতে পারবে না এদিনটিকে। আরও ভুলতে পারবে না একটি সংগঠনকে। সে সংগঠনটির নাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ - যে সংগঠনটি দাবি করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ লালন করার। জগন্নাথগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করেছে এক ছাত্র। ছাত্রীটির অপরাধ, ওই ছাত্রের অনৈতিক প্রস্তাবে সে রাজি হয়নি। প্রতিদিনই ছাত্রীটিকে ওই ছাত্র উত্যক্ত করত। কিন্তু একদিন সে মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, বাসার দিকে রওনা হওয়া ছাত্রীটির পিছু নেয় সে। ছাত্রীটি তার স্বামীর কাছে টেলিফোন করে। তার স্বামী এসে ছাত্রটিকে অনুরোধ করে তাকে উত্যক্ত না করতে। পরদিন ওই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে মেয়েটিকে তার বিভাগের সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। মেয়েটি টিকতে না পেরে বাসার দিকে রওনা হলে বিশ্ববিদ্যালয় গেটে শ শ মানুষের সামনে তার ওড়না কেড়ে নেয় ছেলেটি, চুলের মুঠি ধরে চড়থাপ্পর মারে। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। গত বছরের শেষ দিকে বাংলা বিভাগের এক ছাত্রীকে কলাভবনে সবার সামনে মারধর করে এক ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে হুশিয়ার করলেও গ্রাহ্য করেনি সে।…

উত্তরপশ্চিমে বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে ভারতীয় মাওবাদীরা পৌঁছে গেছে। তারা এখন মুর্শিদাবাদ নদীয়া ও মালদায় ঘাঁটি গড়েছে।[...]

উত্তরপশ্চিমে বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে ভারতীয় মাওবাদীরা পৌঁছে গেছে। তারা এখন মুর্শিদাবাদ নদীয়া ও মালদায় ঘাঁটি গড়েছে। এটা মাওবাদীদের কৌশলগত সম্প্রসারণ। সম্প্রতি মাওবাদীদের অপারেশনগুলো ভারত সরকার ও মিডিয়াকে ভাবাচ্ছে। এতদিন বলা হত তাদের অস্ত্রের উৎস ভারতের অস্ত্র বাজারেই সীমাবদ্ধ। এখন কিন্তু সরকার ও মিডিয়া উভয়েরই আঙ্গুল উঠেছে বাংলাদেশের অস্ত্রের কারবারিদের দিকে। ভারতীয় মিডিয়া এখন বলছে বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিম সীমান্তে মাওবাদীরা এসে কিছু অস্ত্র এর মধ্যে কিনে নিয়ে গেছে এবং আরো অস্ত্রের বায়নানামা সম্পাদনের প্রয়োজনীয় বোঝাপড়া সেরে গেছেন এবং এখানকার অস্ত্রের কারবারিদের সাথে তাদের একটি গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আর এই অঞ্চলের চরমপন্থিদের সাথেও মাওবাদীদের দুয়েকটি বৈঠকের কথাও মিডিয়া বলছে এবং কিছু সংবাদমাধ্যম এতটুকু পর্যন্ত বলছে যে ভারতীয় মাওবাদীরা বাংলাদেশে মাওবাদের সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখতে চায়। ভারত সরকার শুধু বলেছে, মুর্শিদাবাদ নদীয়া ও মালদা তিন জেলায় যে বিস্তীর্ণ এলাকা আছে সীমান্তে, সেই সীমান্ত পথকেই অস্ত্রের চালানের কাজে ব্যবহার করতে চায় মাওবাদীরা। মাওবাদীদের কয়েকজন নেতা নাম বদল করে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো ঘুরে গেছেন।আমরা তো বাংলাদেশে আমাদের অস্ত্র কারবারিদের সম্বন্ধে কিছুই জানি না। কিন্তু সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অস্ত্র কারবারিদের নাম আছে। আগে বাংলাদেশের ইসলামি জঙ্গি, উলফা এবং ভারতের ইসলামি জঙ্গিদের সাথে এখানকার অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ভয়ঙ্কর সম্পর্কের কথা আমরা অনেক শুনেছি। কিন্তু ঠিক কারা কারা এই অস্ত্র ব্যবসায়ের গডফাদার, তাদের সংখ্যাই বা কত, তার কোনো ধারণা আমরা আজো আমাদের সরকার বা মিডিয়ার কাছ থেকে পাইনি। এই ধরনের নাশকতার শক্তিধর চক্রের সমীক্ষা জানতে সরকার ও মিডিয়া ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের সব সরকার ও সব মিডিয়া এই বিষয়টিতে সবসময়ে অত্যন্ত রক্ষণশীল ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু সময় হয়ে গেছে, এখনই সরকার ও মিডিয়াকে রক্ষণশীল ভূমিকা পরিত্যাগ করতে হবে না হয় বাংলাদেশের অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সব গোপন আঁতাতগুলো ভয়ঙ্কর সব পদক্ষেপের দিকে এগিয়ে যাবে। যেদিকটি সরকার ও মিডিয়ার সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখা উচিত, তা হল, সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা যেন মাওবাদী ও বাংলাদেশের অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোনোভাবেই গোপন আঁতাতটি শক্তিশালী না হয়ে ওঠে। কারণ এই আঁতাত যদি একবার দৃঢ় হয় তবে বাংলাদেশে মাওবাদী উগ্রপন্থা বিস্তারের হাজারটা সম্ভাবনাহীনতার কারণ থাকলেও এই উগ্রপন্থার সম্প্রসারণ ঘটবেই – এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। কারণ…

অনেকেরই মনে আছে হয়তো- 'বাংলাদেশ, ১৯৭১, রক্তে জন্ম, পানিতে মরণ' শিরোনামের এক প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল ২০০৮ সালের মাঝামাঝি বাংলাদেশের প্রচারবহুল এক দৈনিক পত্রিকাতে। লিখেছিলেন ব্রিটেনের দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার প্রতিবেদক জোহান হ্যারি।...

অনেকেরই মনে আছে হয়তো- 'বাংলাদেশ, ১৯৭১, রক্তে জন্ম, পানিতে মরণ' শিরোনামের এক প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল ২০০৮ সালের মাঝামাঝি বাংলাদেশের প্রচারবহুল এক দৈনিক পত্রিকাতে। লিখেছিলেন ব্রিটেনের দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার প্রতিবেদক জোহান হ্যারি। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক এক প্রতিবেদনের সূত্র ধরে বাংলাদেশের কয়েকটি অঞ্চল ঘুরে আসন্ন পরিবেশগত বিপর্যয়ের দিকে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলেন তিনি। অবশ্য ওই প্রতিবেদনের পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এইচ খানের একটি ভিন্নমতও তুলে ধরা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, জোহান হ্যারির প্রতিবেদনে ছিল আইপিসিসির সঙ্গেই যুক্ত বাংলাদেশের ডাকসাইটে পরিবেশবিদ ড. আতিক রহমানের ভাষ্য, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় যিনি পুরস্কৃত হয়েছেন জাতিসংঘ থেকে। জোহান হ্যারির কাছে তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, 'বাংলাদেশে বসে আরো তথ্য নিয়ে আমার এখন মনে হচ্ছে, আইপিসিসির প্রতিবেদন বিপদের মাত্রাকে কমিয়েই দেখিয়েছে।' বাংলাদেশকে তিনি চিহ্নিত করেছিলেন বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান আঘাতস্থল বা জিরো গ্রাউন্ড হিসেবে। জোহান হ্যারির প্রতিবেদনটিতে আমরা আরো পেয়েছিলাম বাংলাদেশি এক তরুণীর ভাষ্য- ইংরেজিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি উপন্যাস লিখে যিনি আলোচিত হয়েছিলেন এবং পরে গার্ডিয়ানের এক কলামে ডিম্বাণু বরফায়িত করে রাখার সংবাদ জানিয়ে অনেককে বিষয়টি সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলেছিলেন। বলেছিলেন তিনি জোহান হ্যারিকে, 'যা ঘটার তা শুরু হয়ে গেছে। দেশটা যে ডুবে যাবে, তা এখন সবাই বুঝতে শুরু করেছে।' এই প্রতিবেদন প্রকাশের মাত্র দুই মাসের মধ্যে সেপ্টেম্বর, ২০০৮-এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তত্ত্বাবধানে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ কনফারেন্স। যুক্তরাজ্য রাজি হয় পরের পাঁচ বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামাল দেওয়ার জন্য ২৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড দিতে। ২০০৯-এর শেষ দিকে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলন। আইপিসিসির প্রতিবেদনের জোরে ওই সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সম্ভব হয় সগৌরবে চড়া গলায় প্রচুর অনুদান দাবি করা। ২০১০ সালে আমাদের জন্য মেক্সিকোতে অপেক্ষা করছে আরো একটি জলবায়ু সম্মেলন, যেখানে কথা রয়েছে পৃথিবীর ১৯৩টি দেশের প্রতিনিধির একত্র হওয়ার। আবারও বলি, যেসব সম্মেলন হয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতে হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে, সবখানেই বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশকে চিহ্নিত করা হয়েছে বা হবে করুণার পাত্র হিসেবে। অথচ কোপেনহেগেনের সম্মেলনের আগেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে আইপিসিসির বহুল আলোচিত প্রতিবেদন, প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে তাপমাত্রা বৃদ্ধিসংক্রান্ত পরিসংখ্যান এবং ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির ছাঁচে এই কেলেঙ্কারিকে অনেকেই…

দেখতে খুব সাদাসিদে মেয়েটি। মাত্র ক্লাস এইটে পড়তো। বাবামার কনিষ্ঠা কন্যা। রাস্তার প্রেমিকদের যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে বিষপান করলো গতকাল। ইলোরা তার নাম। ...

দেখতে খুব সাদাসিধে মেয়েটি। মাত্র ক্লাস এইটে পড়তো। বাবামার কনিষ্ঠা কন্যা। রাস্তার প্রেমিকদের যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে বিষপান করলো গতকাল। ইলোরা তার নাম। এরকম আরো অনেক ইলোরা প্রাণ দিয়েছে বিগত বছরগুলোতে, আরো দেবে। কেবল পত্রিকায় প্রকাশিত হিসেব ধরলে গত কয়েক বছরে হিসেব করলে শ' খানেক আত্মহনন পাওয়া যাবে। নাম তার ইভ টিজিং। আমরা যখন স্কুলে পড়তাম তখনো ছিল। ক্লাসফাইভের মেয়েকেও স্কুলছাড়া হতে দেখেছি ইভ টিজিং-এর যন্ত্রণায়। আমার নিজের ছোট বোনও পড়েছিল ইভ টিজিং-এর হুমকিতে। আমি ঠেঙ্গানি দিয়ে নিরস্ত করেছিলাম। ঠেকাতে না পারলে কি হতো বলা মুশকিল। ইভ টিজিং-এ সবাই আত্মহত্যা করে না। যদি করতো তা কয়েক লক্ষ ছাড়িয়ে যেতো। যারা ইভ টিজিং করে, তারা সমাজের নীচুস্তরের ছেলে না। বেশিরভাগই স্বচ্ছল প্রভাবশালী ঘরের সন্তান। ফলে তারা অপরাধ করেও বিচারের উর্ধ্বে থেকে যায়, সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। বলি, আইন শক্ত করতে হবে। কিন্তু ভাবি আইন শক্ত করে কী হয়। এত আইন করেও এসিড নিক্ষেপ বন্ধ করা যায়নি, ইভ টিজিং বন্ধ হয়নি, আরো অনেক অপরাধকর্ম বন্ধ হয়নি। এদেশে আইন করে কোন অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, এটা প্রতিষ্ঠিত সত্যে পরিণত হয়ে গেছে। অপ্রিয় সত্য হলো, আমাদের দুর্বলতা আইন প্রয়োগে। আইনকে প্রয়োগের আওতায় আনতে পারছি না কেন? রাস্তাঘাটে টহল পুলিশকে পান বিড়ি খেয়ে বৈকালিক ভ্রমণে রত অবস্থায় দেখি সবসময়। ওদের কাজটা কি আসলে? আমি কখনো কোন পুলিশ বা অন্য বাহিনীকে সমাজে অপরাধ দমনে এগিয়ে আসতে দেখি না। কাঁধে অচল রাইফেল ঝুলিয়ে পর্যটকের মতো ঘুরে বেড়ানো পুলিশকে অপরাধী দুরে থাক, রাস্তার টোকাইও ভয় পায় না। এই পুলিশ বা অন্য যে সকল বাহিনী আছে, তাদেরকে টহলের নামে অলস পর্যটনে না পাঠিয়ে একটু হাত পা নেড়ে কাজে লাগানো যায় না? এদেশে এখন আইনের লোক দেখি দুরকম। হয় একদম অলস অকর্মণ্য পুলিশ, নয় একেবার কালো চশমার ডাইরেক্ট ক্রসফায়ার। এর মাঝামাঝি কোন রাস্তা নাই? উন্নত দেশের এত টেকনোলোজি ফ্যাশান আমদানি করি আমরা, সভ্যতা আমদানি করতে পারি না? আসলেই কি আমরা এতটাই অকার্যকর জাতে পরিণত হয়ে গেছি? সংবাদ সুত্রঃ http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=132905

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.