বাংলাদেশে এনজিও-কাযর্ক্রম নিয়ে কিছু আশঙ্কা ও প্রশ্ন [...]

এনজিও যে আমাদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবনের প্রতি রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছায়ার মতো তাদের থাবা বিস্তার করছে তা বোধহয় আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা যদি এনজিও-কার্যক্রমের দিকে নজর দিই তাহলে দেখব, স্বাধীনতার পর-পর মাত্র গুটিকয় এনজিও তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। আর এখন তো বাংলাদেশের প্রতি ধূলিকণায় তাদের রক্তাক্ত ছোঁয়া রেখে যাচ্ছে। রুরাল ইকোনোমির প্রায় সবটুকুই তারা তাদের করায়ত্ত করে ফেলছে। তাদের কাজের বিস্তৃতির কিছু নমুনা দেয়া যাক। রেলের টেলিকম সিস্টেমের সাথে গ্রামীণ ফোনের সম্পর্ক বরাবরই বেশ নিবিড়। এখন এরা সুবর্ণ এক্সপ্রেসের একটা বগি সেলফোনের জন্য নানান সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তাদের বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যবহার করছে। আরও এক মজাদার বিষয় কেউ কেউ লক্ষ্য করে থাকবেন : চট্টগ্রাম শহরের অলঙ্কার মোড়ে একটি পুলিশ বক্স। তা এমনই দৃষ্টিনান্দনিকতায় পরিপূর্ণ যে, মনে হবে বেহেশতের স্নিগ্ধস্রোত চুঁইয়ে চুঁইয়ে নামছে। যে-কোনো পুলিশ বক্সকে বরাবরই ষড়যন্ত্রমুখর, পলায়নপর, যন্ত্রণাময় এক জায়গা মনে হয়। কিন্তু এমন স্মার্ট আর রোমান্টিক পুলিশ বক্স এই দেশে কমই আছে। এটি নির্মিত হয়েছে সানমারের সৌজন্যে। এ-ধরনের বহু কাজ সরকার-নিয়ন্ত্রিত অঙ্গনে হরহামেশাই চোখে পড়ে। সবচেয়ে বড়ো বিষয় হচ্ছে, এই যে, এনজিও-গ্রাস শুরু হয়েছে তা কোথায় গিয়ে ঠেকবে? বাংলাদেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিকাশ কি এতে রুদ্ধ হবে না?

যখন কালের বর্জ্যস্রোতে ভেসে যায় মানুষ, পুরোদেশ যখন ডুবে যেতে থাকে ডুবন্ত কোনো জাহাজের মত তখন স্রোতের ভেতর ডুবে যাওয়াই যেন এদেশের সাহিত্যিকদেরও নিয়তি। তেমনি নিয়তিকেই বরণ করে নিয়েছে এ দেশীয় সাহিত্যিক সম্প্রদায়। এদেশের প্রত্যেক সাহিত্য সেবিরাই এখন সাহিত্যের শত্রু [..]

সাহিত্য এমন এক কাণ্ড যার কোনো সীমানা নাই। বলা ভাল সীমানা মানে না। কারণ সাহিত্য হচ্ছে সবচে মৌলিক প্রার্থনা। কোথাকার এক হোমার তাঁর প্রভাব আজও বিদ্যমান। ওমর খৈয়ম, হফিজ, কিটস, ইএটস, এলিয়ট, কভাফির কবিতার প্রভাব আজও দেখা যায় রবীন্দ্রনাথে, জীবনানন্দে। কারণ সাহিত্যের ব্যাপ্তি জগতের সকল বস্তুর ভেতর বিদ্যমান। ভাবের হাত ধরে ভাব ছড়িয়ে পড়ে নিরন্তর অভাবের সীমানাহীনতায়। কিন্তু যখন কালের বর্জ্যস্রোতে ভেসে যায় মানুষ, পুরোদেশ যখন ডুবে যেতে থাকে ডুবন্ত কোনো জাহাজের মত তখন স্রোতের ভেতর ডুবে যাওয়াই যেন এদেশের সাহিত্যিকদেরও নিয়তি। তেমনি নিয়তিকেই বরণ করে নিয়েছে এ দেশীয় সাহিত্যিক সম্প্রদায়। এদেশের প্রত্যেক সাহিত্য সেবিরাই এখন সাহিত্যের শত্রু। তারা সকলে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে কীভাবে বাংলাদেশী সাহিত্যকে সংকীর্ণ থেকে আরো সংকীর্ণ, স্থূল থেকে আরো স্থূলত্বের দিকে নিয়ে যাওয়া যায়। এ অবস্থার জন্য শুধু লেখককুলের ওপর দোষারোপ করলে একচোখে দেখা হবে। আরো দায়ী ভাগ পরবর্তী যোগ-বিয়োগ। এ ব্যাপার নিয়ে কোনো তর্কই হতে পারে না যে বাংলাদেশীরা পঁয়ত্রিশ বছরের এক মেরুদন্ডহীন জাতি। ব্রিটিশরা চলে যাবার পর এই জাতির ভেতর এমন একজন মানুষও জন্মাননি যাকে ঐতিহাসিক অনুকরণীয় চরিত্র বলা যেতে পারে। তাদের বড়জোর গ্যাংস্টার ও বিদেশীদের এজেন্ট বলা যায়। এরা সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম সবকিছুকেই বিকৃত করেছে। এদের কোনো সংস্কৃতি ছিল না। এখনো নাই। তলাকার কালো রাজনীতির প্রভাব পড়েছে সবখানে দুরারোগ্য রোগের উপসর্গ হয়ে। সবখানে একটা অদৃশ্য ক্ষুদ্র স্বার্থপরতার জাল টানা আছে। এদেশের সাহিত্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মত কোনো ছোট কাগজের আন্দোলন গড়ে ওঠেনি। যে কারণে তারা প্রতিষ্ঠিত ধনী প্রকাশনাগুলোকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের মত স্বাধীন কাজ করে যেতে পারছে। ষাটের দশকের সাহিত্য পত্রিকা কন্ঠস্বর সম্পর্কে পত্রিকাটির সম্পাদক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ গর্ব করে বলেন তিনি এদেশের সাহিত্যে নতুন একটি যুগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ষাটের এই পত্রিকাটিতে যারা লিখত তারা সবাই আজ তারকা। এ কথাটি সত্য কন্ঠস্বরে যারাই লিখত সবাই আজ তারকা, কেউ লেখক হননি। সকলেই প্রায় মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রেম নিবেদন করার বাণী লেখা অনেক সহজ করে দিয়েছেন। এদের উপর মূলত প্রভাব পড়েছিল কলকাতার পঞ্চাশের লেখক গোষ্ঠীর। তাদের ওপর ছিল আমেরিকান বিট জেনারেশনের। পঞ্চাশের দশকে কলকাতায় বিট গোষ্ঠীর হোতা গীন্সবার্গ এলে তাদের অপ্রাতিষ্ঠানিক ধারাটার প্রভাব পড়ে…

তোর গলায় রসের কাঠি, গধাদরের পারে পারে রে, কী মায়া না গাইলেন মাহুত রে প্রায় পিঠাপিঠি চারটি সিনেমা হল। চারটিতেই একযোগে নাইট শো ভাঙলে সাতমাথার মোড়টা অনেকক্ষণ গমগম করতে থাকে মানুষের ভিড়ে। যে যেদিকেই যাক, সাতমাথায় আসতেই হয়। তারা আসে খেলাশেষে স্টেডিয়াম থেকে বেরুনো মানুষের মতো। একটু আগে দেখা সিনেমাটি গরম চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে না খেলে তাদের আশ মেটে না। সেটা মেটাতে আর দিনের শেষ আড্ডাবাজি সারতে বড়জোর আরও পনেরো মিনিট। রাত তখন বারোটা পেরোয়। সাতটি রাস্তা যেখানে মিলেছে সেখানটায় চা-লাড্ডু-বনরুটি-পান-সিগারেটের দোকানগুলো ঘিরে কিছু লোক তার পরও খামোখা থেকে যায়। ঢাকা থেকে আসা যাত্রীদের ধরবে বলে পনেরো-বিশটা রিকশাও মোটামুটি জটলা পাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তাদের চালকেরা সাধারণত বগুড়ার পুবের যমুনার নদীভাঙা এলাকার কৃষক। লোকে বলে ‘পুবা’। বাদবাকিদের বেশির ভাগই রংপুর-কুড়িগ্রামের আধিয়ার। তখনো ঢাকার লোকেরা ‘মফিজ’ বলে এদের নাম ফাটায়নি। তবে তারা পরস্পরের ‘বাহে’, মানে ‘বাবা হে’। তাদের দেশ-গ্রামের পরিচয়ও নাকি ‘বাহের দেশ’। যাত্রী না আসা পর্যন্ত এই বাহেরা রিকশার হ্যান্ডেলে পা, পিঁড়ির মতো সিট আর যাত্রীর আসনে শরীরটা এলিয়ে সটান শুয়ে জিরোয়। থানার দিকে যে রাস্তাটা গেছে তার গোড়ার ফ্রেন্ডস অডিওতে তখনই ফুল ভলিউমে বাজতে শুরু করবে বাবুল কিশোরের বিচ্ছেদী গান, ‘আমি কেমন করে পত্র লিখি গো’, কিংবা ফেরদৌসী রহমান কি আর কারও কণ্ঠে ভাওয়াইয়া, ‘ওকি ও বন্ধু কাজল ভোমরা রে’। এই মধ্যরাতে বিক্রিবাট্টার আশা না থাকলেও কী আশায় দোকান খুলে রেখে গানে গানে পত্র লেখা বা কাজল ভোমরার কথা বলে বোঝা ভার। হয়তো আমারই মনের খেয়াল, কিন্তু মনে হয় বিদেশ-বিভুঁইয়ে আছে বলেই ওরা এমন উতলা। ওদিকে ফেরদৌসী তাঁর পরমা গলায় গাইতে শুরু করেন— ও কি গাড়িয়াল ভাই কত রব আমি পন্থের দিকে চায়া রে\ যেদিন গাড়িয়াল উজান যায় নারীর মন মোর বুরিয়া রয় রে\ ও কি গাড়িয়াল ভাই কত কাঁদিম মুই নিধুয়া-পাথারে। ও কি গাড়িয়াল ভাই হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দরে। তারা কি তবে নিধুয়া-পাথারে হাহাকার করে বেড়ানো কোনো নারীর জন্য পথে পথে বাওকুংটা বাতাসের মতো ‘ঘুরিয়া ঘুরিয়া মরে’? যখন আর সে মৈষাল নয়, নয় গাড়িয়াল বন্ধু; সে যখন ওই গরু বা মহিষের ঢংয়েই দুই উরু আর পাছা নাচিয়ে রিকশা…

বেসরকারী টিভি চ্যানেল এনটিভির "আপনার জিজ্ঞাসা" অনুষ্ঠানের আলোচক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মানুষের ইসলাম সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দিয়ে ধার্মিক মহলে বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। ১৯৭১ এর সময় "বাচ্চু রাজাকার" নামে পরিচিত এই যুদ্ধাপরাধীর ইতিবৃত্ত [...]

শুরুর কথা বেসরকারী টিভি চ্যানেল এনটিভির "আপনার জিজ্ঞাসা" অনুষ্ঠানের আলোচক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মানুষের ইসলাম সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দিয়ে ধার্মিক মহলে বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। মাওলানাকে আমিও চিনেছি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই। গত কয়েকদিন আগে বিভিন্ন মানুষের কাছে এই মাওলানা সম্পর্কিত স্তুতি বাক্য শুনে আমার ইচ্ছে হলো, তার সম্পর্কে একটু খোঁজ খবর নেবার। যেহেতু তার দাঁড়ি আছে এবং বয়স দেখলে বোঝা যায় মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যুবক ছিলেন তাই খোঁজখবর নেওয়া মানে হলো, তিনি রাজাকার বা এই জাতীয় কোন কিছুর সাথে জড়িত ছিলেন কিনা, স্বাধীনতা যুদ্ধের তার ভূমিকা কী ছিল সে সম্পর্কে জানা। জানার উদ্দেশ্যে আমি বিভিন্ন মানুষকে মেইল দেওয়া শুরু করি। মেইলা মেইলি শেষ হঠাৎ মনে হয়, কী নির্বোধ আমি গুগলকেই জিজ্ঞেস করা হয়নি। তারপর গুগলে মাওনালা আবুল কালাম আজাদ রাজাকার লিখে সার্চ দিতেই বের হয়ে এলো অসংখ্য তথ্য। লেখা শুরুর আগে একটা ঘটনা বলি। এবারের রোজায় আইইউটির ইসলামী স্ট্যাডিজ সোসাইটির উদ্যোগে এক ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। ইফতার পার্টির আগের দিন দুপুরে স্পন্সর হিসেবে ওয়ামি (WAMY) এর নাম জানতে পেরে আমি, আমার কয়েকজন সহপাঠী ও জুনিয়র মিলে নেট থেকে এবং পরিচিত কয়েকজনকে ফোন দিয়ে এদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করি। সব তথ্যগুলো এক করে রাতে এই মর্মে পোস্টার লেখা লেখা হয়, ওয়ামি একটি মুসলিম টেররিস্ট ফান্ডিং গ্রুপ। মধ্যপ্রাচ্যের এই ইয়ুথ অর্গানাইজেশন বিশ্বের বিভিন্ন টেররিস্ট ফ্যানাটিক গ্রুপকে সরাসরি অর্থ সাহায্য প্রদান করে থাকে। এছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামী শিবিরের সাথে তাদের চমৎকার সুসম্পর্ক বিদ্যমান [[সূত্রঃ শেষ প্যারা]]। ওয়ামির উত্তরার অফিসে শিবিরের বিভিন্ন মিটিং হয়ে থাকে, এছাড়াও যেসব জায়গায় শিবির নিজ নামে প্রবেশ করতে পারেনা সেসব জায়গায় মূলত তারা ওয়ামির ব্যানার ব্যবহার করে থাকে। আমাদের এই পোস্টারিং এ বিব্রত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা (পড়ুন শিবিরপ্রাণ) প্রচার চালায়, আমরা মূলত ইসলাম ধ্বংসের জন্য এই পোস্টারিং করেছি। আমাদের সকল তথ্যই ভুয়া। তথ্যগুলো ইন্টারনেটে ইহুদি- খ্রিস্টানদের সাইট থেকে কপি করা, যাদের একমাত্র কাজ হলো এইসব ভুয়া তথ্য প্রচার করে শান্তির ধর্ম ইসলামের সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের মুখে কালিমা লেপন করা। এই ঘটনা এখানে বলার মূল উদ্দেশ্য হলো, মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে নিয়ে লেখা এই প্রবন্ধ অনেকেরই ভালো…

আজকের বিশ্বে ধর্মবিশ্বাস আর আইডেন্টিটি আবার একাকার হওয়া শুরু করেছে মনে হয়। সনাতন সব নীতি ও মূল্যবোধ যখন বিশ্বায়িত পুঁজি, প্রযুক্তি আর জীবিকার সংগ্রামের কাছে পরাজিত হয়ে ভেসে যাচ্ছে, তখন ধর্মকেও এর আদলে বদলে যেতে হয়। পশ্চিমা দুনিয়ায় খ্রীস্টধর্ম অনেক আগেই এই চাপে বদলে গেছে। রিফর্মেশন-এনলাইটেনমেন্ট-এর যুগে। ট্রিনিটি-তে ঈমান থাক বা না থাক, শ্বেতবরণ নীলচক্ষু যীশু এবং তার পিতা ঈশ্বরকে তারা ছাড়ে নাই আত্মপরিচয়ের ঠেকা আছে বলে। ধর্মবোধ এখানে আত্মপরিচয়ের মধ্যে দ্বান্দিকভাবে মিলে গেছে। [...]

১. আজকের বিশ্বে ধর্মবিশ্বাস আর আইডেন্টিটি আবার একাকার হওয়া শুরু করেছে মনে হয়। সনাতন সব নীতি ও মূল্যবোধ যখন বিশ্বায়িত পুঁজি, প্রযুক্তি আর জীবিকার সংগ্রামের কাছে পরাজিত হয়ে ভেসে যাচ্ছে, তখন ধর্মকেও এর আদলে বদলে যেতে হয়। পশ্চিমা দুনিয়ায় খ্রীস্টধর্ম অনেক আগেই এই চাপে বদলে গেছে। রিফর্মেশন-এনলাইটেনমেন্ট-এর যুগে। ট্রিনিটি-তে ঈমান থাক বা না থাক, শ্বেতবরণ নীলচক্ষু যীশু এবং তার পিতা ঈশ্বরকে তারা ছাড়ে নাই আত্মপরিচয়ের ঠেকা আছে বলে। ধর্মবোধ এখানে আত্মপরিচয়ের মধ্যে দ্বান্দিকভাবে মিলে গেছে। ঊনিশ শতকের শেষ দিকে বিকশিত হওয়া ভারতীয় জাতীয়তাবাদগুলোর সমস্যাও ছিল এটা। এখনো কম্যুনিটি বা জাত আর জাতীয়তা আমাদর চোখে একাকার। ২. ভারতে বিজেপি বা জার্মান নাৎসিরাও কিন্তু ক্যাথলিসিজম ও আর্যবাদের মিশ্রণে ফ্যাসিবাদের আদর্শিক ভিত্তি নির্মাণ করছিল। শিল্পায়ন ও তার ভিতের ওপর দাঁড়ানো সামরিক সক্ষমতা তাদের অভিলাষী করেছিল। আমেরিকায় বা ইউরোপের বাকি অংশে এটা এখনো কঠিন। তিনশ বছরের মানবতাবাদী সংগ্রাম, শ্রেণী সংগ্রাম ও পুরুষতন্ত্র ও বর্ণবাদবিরোধী ঐতিহ্য। ভারতেও একইসঙ্গে উপমহাদেশের সবচে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক চেতনা আছে, আবার এই ভারতই এখন ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক ঘৃণার শক্ত আশ্রয়। ইসলাম বাংলাদেশে মেইনস্ট্রিমে নাই, ভারত-পাকিস্তানে আছে। ৩. পশ্চিমা এলিট এমনকি গরিবদেরও আত্মপরিচয় নিয়ে সংকট এখনো জাগে নাই। সেখানকার গরিব ও কালো মানুষটিও সভ্য দুনিয়ার অহংকার আর ক্রাইস্টের ছত্রছায়া অনুভব করে জাতগর্ব উপভোগ করে। এই মনের জোর বাদবাকি বিশ্বে নাই তাদের মাজার জোর কম থাকার জন্য। । ফলে তাদের হয় জাতি বা ধর্মের কাছে ফিরতে হয় অথবা এসব ছেড়ে কাল্পনিক বিশ্বজনীনতার নামে সাদা-জুডিও-খ্রিস্টান-সাম্রাজ্যের মাস্তুলে লটকে থাকার নিয়তি নিতে হয়। তারা ইতিহাস-ভূগোল ও সংস্কৃতি থেকে বিতারিত বা পরিত্যক্ত হয়। আমাদের সুশীল সেকুলারদের বড় অংশই এই পথ ধরেছেন। মধ্যবিত্তের 'আধুনিক' অংশ কর্পোরেট পুঁজি ও তার বাজারের মধ্যে এতই আত্তীকৃত হয়ে গেছে যে, এদের কোনো প্রতিবাদ করার মতাই নাই। এরা বরং দেশ ছেড়ে যাবে অথবা দেশে মার্কিন বাহিনীকে স্বাগত জানাবে। এ অংশটির সুবিধাবাদীতাই তাদের ধর্মীয় বা সেকুলার পথে সংগ্রামী হতে বাধা দেবে। ৪. অন্যদিকে জামাতি ইসলাম বা ব্রাদারহুডের মতো যারা তারাও এক প্রতিক্রিয়াশীল বুর্জোয়া ইসলামকে বিকশিত করছে। এদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক ভিশন এটা প্রমাণ করে। এরা মোটাদাগে পরাশক্তি ও দেশীয় শাসকদের সঙ্গে কোলাবরেশন করে…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.