কিন্তু সমস্ত সমস্যা দেখতাম ওই সোজা পথ ও আত্মসমর্পণ নিয়ে – দেখতাম মানে আজো দেখছি এবং এই সমস্যা পিছু ছাড়ছে না – এই দিকনির্দেশনার মধ্যেই আছে রাজনৈতিক ইসলাম অথবা ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার। [...]

সোজা পথ। আত্নসমর্পণ। মানুষের জীবনের লক্ষ্য নিয়ে ইসলামের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনার পাশাপাশি আছে সাক্ষ্য, প্রার্থনা, দান, সংযম, বিসর্জন ও তীর্থ সম্মেলন। ছোটোবেলা থেকেই দেখছি – সাক্ষ্য, প্রার্থনা, দান, সংযম, বিসর্জন ও তীর্থ সম্মেলন নিয়ে তেমন সমস্যার কোনো কিছু নেই। এসব পালনীয় ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট করণকৌশল ও আচরণবিধি আছে এবং হুজুরদের সাথে সাধারণ মুসলমানের এসব নিয়ে তেমন কোনো তুলকালাম ব্যাপারস্যাপার নেই বললেই চলে – বরং এগুলোই সমাজে হুজুর ও সাধারণ মুসলমানদের ধর্মীয় সম্পর্কের মূলভিত্তি। কিন্তু সমস্ত সমস্যা দেখতাম ওই সোজা পথ ও আত্মসমর্পণ নিয়ে – দেখতাম মানে আজো দেখছি এবং এই সমস্যা পিছু ছাড়ছে না – এই দিকনির্দেশনার মধ্যেই আছে রাজনৈতিক ইসলাম অথবা ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার। কোনটা সোজা পথ? কিভাবে চলতে হয় এই সোজা পথ ধরে? কার জন্য কোনটা সোজা পথ? আত্মসমর্পণ কার কাছে? কার আত্মসমর্পণ? কতভাবে আত্মসমর্পণ? কত মাত্রার আত্মসমর্পণ? রাজনৈতিক ইসলাম চায় নিজের রাজনৈতিক জয় এবং তার জয়লাভের মাধ্যমই হবে এটি প্রচার করা যে একটি ইসলামি রাষ্ট্র পেলেই সোজা পথ হাসিল হবে এবং একটি ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম হলে সেই রাষ্ট্রের কাছে সবার আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সবার জীবনের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে। অর্থাৎ একটা সর্বব্যাপী অনুশাসন কায়েম হবে – সেই অনুশাসনের রক্ষণাবেক্ষণে প্রজন্মের পর প্রজন্ম রাজনৈতিক মুক্তি পাবে। কিন্তু সাধারণ মুসলমানরা কি রাজনৈতিক ইসলামের এই সোজা পথ ও আত্মসমর্পণের সূত্র মানে? রাজনৈতিক ইসলাম বাংলাদেশে এখনো শতকরা ৪ – ৭ ভাগের বেশি ভোট পায় না। কাজেই আমরা তো সহজেই বলতে পারি বাংলাদেশের মুসলামনেরা সাক্ষ্য, প্রার্থনা, দান, সংযম, বিসর্জন ও তীর্থ সম্মেলনে পরিবেষ্টিত (যদিও সেখানে উল্লেখযোগ্য হারে অনাচরণীয় মুসলমান বিদ্যমান) এবং তারা সোজা পথ ও আত্মসমর্পণের রাজনৈতিক ইসলামের সূত্র মানে না। কিন্তু না, ২৬শে মে ২০১৩ আইসিএসএফ আয়োজিত ‘ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে রাজনৈতিক ইসলাম’ শীর্ষক সেমিনারের প্রথম পর্বের আলোচক হাসান মাহমুদের একটা বাস্তব আর্তি আমরা যারা কোটি কোটি লোক ধর্মে বিশ্বাস করি। আমরা মানুষ হিসাবে দুর্বল। ষড়রিপুর তাড়নায় আমরা তাড়িত, আমরা ভুল করতে পারি শুনে আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমার মনে হল এই কোটি কোটি মানুষ সোজা পথ ও আত্মসমর্পণ নিয়ে তাহলে এভাবেই বিজড়িত। তাহলে এই কোটি কোটি মানুষের শতকরা ৬৫ ভাগ মনে করে…

কিন্তু সাজেদা চৌধুরী হয়তো জানেন না, দেশের মানুষ মুসলমান হোক হিন্দু হোক, রাষ্ট্রের তাতে কিছুই যায় আসে না, কারণ দেশ ও রাষ্ট্র দুটি আলাদা সত্তা : একটি ভূগোল আরেকটি ব্যবস্থা। তাই একই ভূগোলে থেকেও আমরা ছিলাম কখনো ব্রাহ্মণ্যব্যবস্থায়, কখনো মোগলব্যবস্থায়, কখনো ইংরেজব্যবস্থায়, কখনো পাকিস্তানব্যবস্থায়, আর এখন বাংলাদেশব্যবস্থায় [...]

সাজেদা চৌধুরী ভাল মুসলমান। তিনি বিসমিল্লাহ বলে কোরান পড়েন, তিনি বিসমিল্লাহ বলে সংবিধান পড়েন; তিনি খেতে শুরু করার আগে বিসমিল্লাহ পড়েন, গাড়িতে উঠে স্টার্ট নেয়ার আগে বিসমিল্লাহ পড়েন। এখন তিনি যদি খাওয়ার প্লেটে আর গাড়িতে বিসমিল্লাহ লিখে রাখেন – তাহলে আমরা নাক সিঁটকাবো, অনেকে এও বলতে পারেন, নওমুসলিম, রাতারাতি বড় মুসলমান হতে চাইছেন। আর তিনি যদি বই মাত্রের শুরুতেই বিসমিল্লাহ লিখতে চান, সংবিধানের বিসমিল্লাহ রেখে দিতে চান – তাহলে আমরা বলব, না, আপনি এটা করতে পারেন না, কারণ, একটা বই একটা খাওয়ার প্লেট নয়, এটা অনেক পাঠকের, সংবিধান আপনার নিজের গাড়ি নয়, এটা একটি রাষ্ট্রের, আর রাষ্ট্র আপনার মতো মুসলিম নয়, কারণ মানুষ ছাড়া আর কোনো প্রাণী বস্তু ও ধারণা ধর্ম পালন করে না। সাজেদা চৌধুরী বলতে পারেন এদেশের বেশির ভাগ মানুষ মুসলমান এবং সংবিধান মানুষের জন্য, তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আবেগের শ্রদ্ধার প্রতিফলন সংবিধানে বিসমিল্লাহ। কিন্তু সাজেদা চৌধুরী হয়তো জানেন না, দেশের মানুষ মুসলমান হোক হিন্দু হোক, রাষ্ট্রের তাতে কিছুই যায় আসে না, কারণ দেশ ও রাষ্ট্র দুটি আলাদা সত্তা : একটি ভূগোল আরেকটি ব্যবস্থা। তাই একই ভূগোলে থেকেও আমরা ছিলাম কখনো ব্রাহ্মণ্যব্যবস্থায়, কখনো মোগলব্যবস্থায়, কখনো ইংরেজব্যবস্থায়, কখনো পাকিস্তানব্যবস্থায়, আর এখন বাংলাদেশব্যবস্থায়। দেশ ধর্মনিরপেক্ষ (নিরপেক্ষ শব্দের অর্থ অপেক্ষা-রহিত, মানে উদাসীন) হয় না, কারণ দেশের মানুষ ধর্মে উদাসীন থাকে না, তারা নিজ নিজ ধর্ম আবহমানকাল থেকে পালন করে আসছে, পালন করবে। কিন্তু রাষ্ট্রকে তার প্রশাসন ব্যবস্থার সুবিধার জন্যই হতে হয় ধর্মনিরপেক্ষ, ধর্মে আগ্রহ থাকলে তার কাজ চলে না, তার প্রশাসন শক্তিশালী হয় না, কারণ কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতি আগ্রহ তাকে আদর্শহীন করে, চরিত্রহীন করে। তাই প্রতিটি রাষ্ট্রব্যবস্থা, যদি সে ধর্মরাষ্ট্র না হয়ে থাকে, নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ করতে চেয়েছে, কেউ তা পেরেছে, কেউ তা পারেনি। আমরা পারতে চাই, কারণ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের রাষ্ট্রের সংবিধান তা পেরেছিল। আমরা বিসমিল্লাহ ছাড়াই সেখানে যেতে চাই। আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদগণকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল — জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হবে। আমরা চাই সংসদে এমন আইন পাস…

১৯৭২ : আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদগণকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল — জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হবে। ১৯৭৮ : আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদগণকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল — সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র অর্থাৎ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচারের সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হবে। আমাদের মুক্তিসংগ্রামকে ১৯৭৮-এর সামরিক প্রজ্ঞাপন নতুন আলোতে দেখতে চেয়েছেন, এবং আমাদের জন্য প্রযোজ্য করেছেন। সামরিক শক্তি বলছেন জাতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। হ্যাঁ, আর কিছু নয় স্রেফ একটি যুদ্ধ। আপনি যেই হোন সামরিক শক্তি চায় আপনি সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখবেন। আল্লাহর আবির্ভাব হওয়াতে ধর্মনিরপেক্ষতার মৃত্যু হয়েছে। তাতে একথা প্রমানিত হয়েছে আপনি যে ধর্মেরই হোন সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস থাকলে সামরিক শক্তি আপনাকে সাদরে গ্রহণ করবেন এবং প্রকারান্তরে আল্লাহর পথে আপনার ধর্মনিরপেক্ষতা কবুল হয়ে যাবে। আপনার সাথে সামরিক শক্তি দুটি বিষয়ে একমত পোষণ করছেন, কারণ আপনার জাতীয়তাবাদ আর গণতন্ত্রের সমস্ত দায়িত্ব সর্বশক্তিমান আল্লাহর ইচ্ছায় তাদের ওপর ন্যাস্ত হয়েছে। পৃথিবীর একমাত্র সামরিক শক্তি যেখানে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব হয়েছে, তার কাছ থেকে সমাজতন্ত্রের অর্থাৎ না জেনে কেন আপনারা সর্বশক্তিমান আল্লাহর সরল পথ থেকে বিচ্যুত হবেন।

গত বছর পশ্চিম বঙ্গের তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েকজন মুসলিম মহিলার সাথে একসাথে নামাজ পড়লেন; আমার পরিচিত এক দক্ষিণ ভারতীয় ভদ্রলোক মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, দরগাহ সবখানেই উপাসনা করেন; আওয়ামী লীগের গত কনভেনশনে দেখলাম কোরান, গীতা, বাইবেল ত্রিপিটক পড়ে সভার কাজ শুরু হচ্ছে; আমার বাবা হজ পালন করে এসে বললেন, এবার কাশী-গয়ায়ও তীর্থ করে আসব। এই সবগুলোই ভুল ধর্মনিরপেক্ষতা। আর ধর্মনিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে গান্ধীর বিখ্যাত “beauty of compromise”-ও ভুল ধর্মনিরপেক্ষতা। আমি আমার ধর্ম পবিত্রতার সাথে পালন করলাম, অন্য ধর্মালম্বীও তার ধর্ম পবিত্রতার সাথে পালন করলেন — এতেই আসবে সমাজে শান্তির ধর্মনিরপেক্ষতা, beauty of compromise, সমঝোতার সৌন্দর্য : গান্ধীর সত্য পথের এই সন্ততাও, ভুল ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্মহীন না হতে পারলে ঠিক ধর্মনিরপেক্ষতা সম্ভব নয়। নিজের ধর্মের পবিত্রতার আবরণে ঢাকা মহান অহিংস প্রেমময় মানুষের অভাব নেই আমাদের সমাজে। তারা আমাদের সবার শ্রদ্ধার পাত্র — কিন্তু কেউই তারা ধর্মনিরপেক্ষ নন। তাহলে ধর্মনিরপেক্ষতার কী দরকার? এমন পৃথিবী, যেখানে সবার থাকবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, তার জন্য কেন আমরা কাজ করি না? আমরা কেন ধর্মনিরপেক্ষতার বিপথে চলতে চাই। কেন আমাদের অর্ন্তগত রক্তের ভেতর ধর্মনিরপেক্ষতার স্পন্দন অনুভব করতে চাই? না, প্রগতির প্রশ্নে এর কোনো বিকল্প নেই। ধর্মনিরপেক্ষতায় পৌঁছতে না পারলে, আমার শিক্ষা আমার স্বাধীনতার সর্বোচ্চ স্ফূরণ সম্ভব নয়। বিসমিল্লায় গলদ না ঘটিয়ে সত্য ও বিজ্ঞানের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ধর্মের সত্য যার যার পকেটে থাকে, ধর্মনিরপেক্ষতা নিরন্তর সত্যের দিকে এগিয়ে যায়। ভুল ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে সরে আসাটাই হবে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রত্যন্ত পথে আমাদের নিরন্তর ছুটে চলার প্রথম পদক্ষেপ।

পরাধীন দেশের গণমাধ্যম নিয়া সে দেশের মানুষের কোনো স্বপ্ন থাকে না । থাকিতে পারে না। আমাদের ও ছিলো না [...]

যাহারা সংবাদপত্রকে রাষ্ট্রযন্ত্রের চতুর্থখাম্বা বলিয়া প্রচার করিয়া থাকেন, তাঁহারা নিশ্চিতভাবেই ধর্মকে বিশেষ করিয়া ইসলাম ধর্মকে রাষ্ট্রের আসমান বলিয়া মানেন । পাশাপাশি নির্মাণ করিয়া চলেন ধর্মভিত্তিক নানা মধ্যযুগীয় মতাদর্শের আধুনিক সংস্করণ। লুঙ্গির কাপড় হাঁটু পর্যন্ত উঠাইয়া নামেন ধর্মের বহুবিধ ফজিলত, আমল-আখলাকের গল্প প্রচারে। তাঁহাদের এই যুদ্ধে, ধর্মকে রাষ্ট্রের আসমান হিসাবে নির্মাণ ও নিশ্চিতকরণের রেসে সহযোদ্ধা হিসেবে চতুর্থখাম্বাটি প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসাবে প্রাধান্যশীল হইয়া উঠিয়াছে; উঠিতেছে প্রতিনিয়ত। পরাধীন দেশের গণমাধ্যম নিয়া সে দেশের মানুষের কোনো স্বপ্ন থাকে না। থাকিতে পারে না। আমাদেরও ছিলো না। ধলা ভদ্দরলোক এবং তাহাদের দেশি দোস্তরা আমাদের দেশ নিয়া, দেশের ধর্ম নিয়া, নারী নিয়া, নোংরা রাজনীতি নিয়া যে নোংরা সাংবাদিকতার জন্ম দিয়াছিলেন, তাহা নিয়া আমার-আমাদের কোনো বিলাপ নাই। বিলাপ থাকিবার মতো কোনো কারণও হয়তো নাই। কিন্তু একটা স্বাধীন দেশের গণমাধ্যম নিয়া সেই দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখিতেই পারে। বাংলাদেশও স্বপ্ন দেখিয়া ছিলো। কিন্তু যে প্রজাতিটি আদতেই ধর্ষণপ্রবণ, তাহাদের দ্বারা কোনো স্বপ্নেরই যে বাস্তবতা নির্মাণ সহজতর হয় না। বাঙালী বড়ই ধর্ষণপটু প্রজাতি। তাহারা একটি দেশকে স্বাধীন করিবার পর যেভাবে তাহাকে পরাধীন করিয়া তুলিয়া ছিল, ঠিক সেভাবেই একটি জ্যোর্তিময় সংবিধানের জন্ম দিয়া তাহাকে বলাৎকারে বলাৎকারে রক্তাক্ত করাতেও বাধে নাই বাঙালীর। ধর্মের সহিত রাষ্ট্রের কোনো যোগ থাকিবে না, একটা স্বাধীন দেশে সে রকমটাই আশা করা গিয়াছিল। কিন্তু হায়, গরিবের আবার লাল পিরান! আমাদের স্বর্গীয় ব্যবসায়ী-রাজনীতিকেরা সবচেয়ে যে ভালো ব্যবসাটি শিখিয়াছিলেন; তাহা ধর্মের ব্যবসা। স্বর্গীয় মহাপিতারা, যাহারা এখন বেহেশতে বসিয়া হুর সঙ্গম করিতেছেন, আমরা তাঁহাদের - সেসব ধর্ম ব্যবসায়ীদের উত্তরপুরুষ । আমাদের সবচেয়ে মেধাবী এবং সৎ ধার্মিকটি এখন পত্রিকার ধর্ম পাতার কলাম লেখক। প্রথম প্রথম বিভিন্ন ইসলামী দিবস উপলক্ষে দুই-একটা কলাম ছাপা হইত পত্রিকার পাতায়। সেখানে জায়গা করিয়া নিত অন্য ধর্মাবলম্বীরাও। তাদের বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রযন্ত্রের চতুর্থখাম্বাটি সাজিতো নানা উৎসবে। পূর্বে পরোক্ষভাবে হইলেও পত্রিকাগুলো ছিলো ধর্মনিরপেক্ষ। ছিলো সব ধর্মের মানুষের। ২. যাহা কিছু ভালো তাহার সঙ্গে আমাদের প্রথম আলো। প্রচারসংখ্যায় সর্বাধিক। প্রচারপটুতায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম। ইহার সম্পাদক জনাব মতিউর রহমান সম্ভবত বাংলাদেশের ধার্মিক সম্পাদকসমূহের মধ্যে প্রধানতম। তিনি এই দুনিয়ায় বসিয়া পরজনমের সুখ-সম্ভোগ নিশ্চিত করিবার জন্যে উঠিয়া পড়িয়া লাগিয়াছেন। চোখ বুজিলেই দেখিতে পান…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.