১৯৭২ : আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদগণকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল — জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হবে। ১৯৭৮ : আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদগণকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল — সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র অর্থাৎ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচারের সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হবে। আমাদের মুক্তিসংগ্রামকে ১৯৭৮-এর সামরিক প্রজ্ঞাপন নতুন আলোতে দেখতে চেয়েছেন, এবং আমাদের জন্য প্রযোজ্য করেছেন। সামরিক শক্তি বলছেন জাতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। হ্যাঁ, আর কিছু নয় স্রেফ একটি যুদ্ধ। আপনি যেই হোন সামরিক শক্তি চায় আপনি সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখবেন। আল্লাহর আবির্ভাব হওয়াতে ধর্মনিরপেক্ষতার মৃত্যু হয়েছে। তাতে একথা প্রমানিত হয়েছে আপনি যে ধর্মেরই হোন সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস থাকলে সামরিক শক্তি আপনাকে সাদরে গ্রহণ করবেন এবং প্রকারান্তরে আল্লাহর পথে আপনার ধর্মনিরপেক্ষতা কবুল হয়ে যাবে। আপনার সাথে সামরিক শক্তি দুটি বিষয়ে একমত পোষণ করছেন, কারণ আপনার জাতীয়তাবাদ আর গণতন্ত্রের সমস্ত দায়িত্ব সর্বশক্তিমান আল্লাহর ইচ্ছায় তাদের ওপর ন্যাস্ত হয়েছে। পৃথিবীর একমাত্র সামরিক শক্তি যেখানে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব হয়েছে, তার কাছ থেকে সমাজতন্ত্রের অর্থাৎ না জেনে কেন আপনারা সর্বশক্তিমান আল্লাহর সরল পথ থেকে বিচ্যুত হবেন।
বেসরকারী টিভি চ্যানেল এনটিভির "আপনার জিজ্ঞাসা" অনুষ্ঠানের আলোচক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মানুষের ইসলাম সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দিয়ে ধার্মিক মহলে বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। ১৯৭১ এর সময় "বাচ্চু রাজাকার" নামে পরিচিত এই যুদ্ধাপরাধীর ইতিবৃত্ত [...]
শুরুর কথা বেসরকারী টিভি চ্যানেল এনটিভির "আপনার জিজ্ঞাসা" অনুষ্ঠানের আলোচক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মানুষের ইসলাম সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দিয়ে ধার্মিক মহলে বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। মাওলানাকে আমিও চিনেছি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই। গত কয়েকদিন আগে বিভিন্ন মানুষের কাছে এই মাওলানা সম্পর্কিত স্তুতি বাক্য শুনে আমার ইচ্ছে হলো, তার সম্পর্কে একটু খোঁজ খবর নেবার। যেহেতু তার দাঁড়ি আছে এবং বয়স দেখলে বোঝা যায় মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যুবক ছিলেন তাই খোঁজখবর নেওয়া মানে হলো, তিনি রাজাকার বা এই জাতীয় কোন কিছুর সাথে জড়িত ছিলেন কিনা, স্বাধীনতা যুদ্ধের তার ভূমিকা কী ছিল সে সম্পর্কে জানা। জানার উদ্দেশ্যে আমি বিভিন্ন মানুষকে মেইল দেওয়া শুরু করি। মেইলা মেইলি শেষ হঠাৎ মনে হয়, কী নির্বোধ আমি গুগলকেই জিজ্ঞেস করা হয়নি। তারপর গুগলে মাওনালা আবুল কালাম আজাদ রাজাকার লিখে সার্চ দিতেই বের হয়ে এলো অসংখ্য তথ্য। লেখা শুরুর আগে একটা ঘটনা বলি। এবারের রোজায় আইইউটির ইসলামী স্ট্যাডিজ সোসাইটির উদ্যোগে এক ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। ইফতার পার্টির আগের দিন দুপুরে স্পন্সর হিসেবে ওয়ামি (WAMY) এর নাম জানতে পেরে আমি, আমার কয়েকজন সহপাঠী ও জুনিয়র মিলে নেট থেকে এবং পরিচিত কয়েকজনকে ফোন দিয়ে এদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করি। সব তথ্যগুলো এক করে রাতে এই মর্মে পোস্টার লেখা লেখা হয়, ওয়ামি একটি মুসলিম টেররিস্ট ফান্ডিং গ্রুপ। মধ্যপ্রাচ্যের এই ইয়ুথ অর্গানাইজেশন বিশ্বের বিভিন্ন টেররিস্ট ফ্যানাটিক গ্রুপকে সরাসরি অর্থ সাহায্য প্রদান করে থাকে। এছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামী শিবিরের সাথে তাদের চমৎকার সুসম্পর্ক বিদ্যমান [[সূত্রঃ শেষ প্যারা]]। ওয়ামির উত্তরার অফিসে শিবিরের বিভিন্ন মিটিং হয়ে থাকে, এছাড়াও যেসব জায়গায় শিবির নিজ নামে প্রবেশ করতে পারেনা সেসব জায়গায় মূলত তারা ওয়ামির ব্যানার ব্যবহার করে থাকে। আমাদের এই পোস্টারিং এ বিব্রত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা (পড়ুন শিবিরপ্রাণ) প্রচার চালায়, আমরা মূলত ইসলাম ধ্বংসের জন্য এই পোস্টারিং করেছি। আমাদের সকল তথ্যই ভুয়া। তথ্যগুলো ইন্টারনেটে ইহুদি- খ্রিস্টানদের সাইট থেকে কপি করা, যাদের একমাত্র কাজ হলো এইসব ভুয়া তথ্য প্রচার করে শান্তির ধর্ম ইসলামের সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের মুখে কালিমা লেপন করা। এই ঘটনা এখানে বলার মূল উদ্দেশ্য হলো, মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে নিয়ে লেখা এই প্রবন্ধ অনেকেরই ভালো…
সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। [...]
১. সাংসদ হুইপদের খাদ্যবিলাস এবং জয়নুলের দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা অথবা ভ্যান গগের ‘দ্য পটেটো ইটার্স’। সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। সাম্প্রতিক বিশ্ব খাদ্য সংস্থার জরিপে দেখা গেছে : পৃথিবীতে একশো কোটি লোক অভুক্ত থাকে। কী পরিমাণ লোক ভালো-মন্দ খাবার খেয়ে থাকে তার একটা তালিকা তৈরি করা গেলে তাতে আমাদের মতো গরিব দেশের বড়লোকরাই চ্যাম্পিয়ন হবে। এত পোলাও-মাংস হজম করার পরিণতি কী, তা আপনারা সবাই জানেন – শেষ গন্তব্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল। যেটা হুইপ সাহেবের ক্ষেত্রে ঘটেছে। সরকারি টাকায় প্রচুর ঘি-পোলাও খেয়ে হার্টের ব্লক, আবার তা সারানোর জন্য সরকারি অর্থেই মাউন্ট এলিজাবেথে ভর্তি। সত্যিকার প্রহসনই বটে। আমাদের দেশের গরীব মানুষের খাদ্যতালিকা কী? তাদের কপালে কি জোটে পোলাও-মাংস? গ্রামে বসবাসরত বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর তো নুন আনতে পান্তা ফুরায়। শুধুমাত্র কাঁচামরিচ আর লবণ দিয়ে থালার পর থালা ভাত হজম করতে হয় তাদের। মাছ-মাংসের কোনো বালাই নেই, তাই প্রোটিনের ঘাটতি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। তবে গরীবের পোলাও-মাংস খাওয়ার বিষয়টি একবার নিজের চোখে দেখে অশ্রু সংবরণ করতে পারিনি। কাওরান বাজারের পেছন দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বস্তির সামনে দেখেছিলাম, বিভিন্ন বিয়েবাড়ি থেকে কুড়িয়ে পাওয়া উচ্ছিষ্ট পোলাও-মাংস রাস্তার পাশে ভাগ দিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। আর কেউ কেউ কিনে নিয়ে দিব্যি পরমানন্দে খাচ্ছে সেই খরখরে পচা খাবার! এত বৈষম্যপীড়িত দেশ পৃথিবীর কোথাও আছে কিনা কে জানে। মাঝে-মাঝে বিদেশীরা আমাদের দেশের দারিদ্র্য নিয়ে আমাকে নানা প্রশ্ন করে; আমি তাদের বলি, আমাদের বড়লোকদের তো দেখোনি, দেখলে নিশ্চয় অবাক হবে। গুলশান, বনানী, বারিধারাতে এক চক্কর ঘুরিয়ে আনলে তোমাদের বিশ্বাসই হতে চাইবে না বাংলাদেশের গরিবিয়ানা হাল। আমাদের মন্ত্রী মিনিস্টার সাংসদ আর আমলাদের যে ঠাট-বাট তা দেখে হয়তো মূর্ছা যাওয়ার দশা হবে তোমাদের। যে-ধরনের গাড়িতে তারা চড়ে, তা হয়তো জন্ম দেবে আরেকটি রেকর্ডের – পৃথিবীর…
মুক্তাঙ্গন এর সাম্প্রতিক স্বেচ্ছাসেবক সংগ্রহ-আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন বহু মানুষ। 'যুদ্ধাপরাধ ওয়ার্কগ্রুপ' এবং 'যুদ্ধাপরাধ স্ট্র্যাটেজি ফোরাম'-এ সংশ্লিষ্ট হবার আগ্রহও ব্যক্ত করেছেন অনেকে। তাঁদের এ আগ্রহ এবং প্রতিজ্ঞা এক দিকে যেমন এ বিষয়ে যাঁরা কাজ করছেন তাদের সবার জন্য উৎসাহব্যঞ্জক, তেমনি (আমাদের বিশ্বাস) তা সবাইকে মনে করিয়ে দেবে যে এখনো হতাশ হবার মতো কিছু ঘটেনি। আশার বাতিটুকু হাতে নিয়ে এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দেয়া বাকি, পাড়ি দেয়া দরকার। ওয়ার্কগ্রুপ এবং ফোরামের কাজের ধরণ বিবেচনায় ইচ্ছে থাকলেও সবাইকে এ মুহুর্তে অন্তর্ভুক্ত করে নিতে পারছি না আমরা, সঙ্গত কারণেই। কাজের ধরণ, কাজের পরিমান এবং বিভিন্ন নিরাপত্তাজনিত বিষয় বিবেচনায় এই দু'টো গ্রুপকেই আপাতত কঠোরভাবে 'সংরক্ষিত' রাখতে হচ্ছে কেবল তাঁদেরই মধ্যে, যাঁরা: (ক) পূর্ণ কমিটমেন্ট সহকারে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ বিষয়ে কাজ করতে প্রস্তুত; (খ) দায়িত্বপালনে এখানকার কাজকে (অগ্রাধিকার ভিত্তিতে) যথেষ্ট সময় দিতে প্রস্তুত; (গ) গবেষণা দক্ষতা, বিশেষজ্ঞ জ্ঞান, যোগাযোগ এবং সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা দিয়ে এখানকার করণীয় কাজগুলোতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে একে এগিয়ে নিতে পারবেন বা গতি আরও ত্বরাণ্বিত করতে পারবেন। তবে, অংশগ্রহণে আগ্রহীদের জন্য এখনো রয়েছে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজের সময় এবং সুবিধেমতো বিশেষ অবদান রাখার সুযোগ। যেমন: যুদ্ধাপরাধ স্ট্র্যাটেজি ফোরামের এই অংশটাতে প্রাসঙ্গিক সমস্ত খবর, নিবন্ধ, ব্লগ, বিবৃতি, বক্তব্য, রিপোর্টগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর একটি পূর্ণ আর্কাইভ গড়ে তোলার লক্ষ্যে। এই লিন্কে দেয়া পাতাটির বিন্যাস দেখলেই স্পষ্ট হবে ঠিক কি ধরণের তথ্য খোঁজা হচ্ছে। যে কেউ নিবন্ধন ছাড়াই যে কোন লিন্ক (পারলে এর কনটেন্টটুকুও কপিপেস্ট করে) সেখানে “NEW TOPIC” বোতামটি ক্লিক করে তথ্য হিসেবে সংযোজন/পেশ করতে পারবেন। কোন তথ্যের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কি না সে বিষয়ে তথ্যদাতার চিন্তিত হবার কিছু নেই। ফোরাম মডারেটরগণ সে সব সাজিয়ে নিতে পারবেন প্রয়োজনমতো। তবে উল্লেখ্য, প্রতিটি সাবমিশনই চূড়ান্তভাবে ফোরাম ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবার আগে অবশ্যই মডারেশন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে, বোধগম্য কারণেই। এই কাজটি সবাই মিলে করতে পারলে ধীরে ধীরে একটা বিশাল তথ্যভান্ডার গড়ে উঠতে পারে, যেটা সবারই কাজে লাগবে। কারণ, এভাবে যে আর্কাইভ গড়ে উঠবে, তা থেকে যুদ্ধাপরাধের-বিচার বিষয়ে ঘটনার গতি-প্রকৃতি-অগ্রগতি খুব সহজেই একটি পোর্টালের ভেতরেই মনিটর করা সম্ভব হবে, এবং সে অনুযায়ী কর্মপন্থা নির্ধারণ করা যাবে। এছাড়াও, আর…
মুসলিম বাম এখানকার মুসলিম মধ্যবিত্তের একটা ছোট্ট অংশ। একই রকমভাবে শিল্প ও জীবন থেকে অনেক দূরে। ফজলুল হকের প্রচেষ্টায় যে মুসলিম মধ্যবিত্তের জন্ম, মাঝখানে এক তীব্র আন্দোলনমুখর সময় কাটিয়ে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে সে একটি দেশের অধিকারী হয়ে গেল, তারপর জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে বের হল নবযুগের মুসলিম বাম। এদের সকলেরই দীক্ষাগুরু হয়ে রইলেন বদরুদ্দীন উমর। চিরনেতির নেতা উমরের না হয় দিনশেষ কিন্তু যারা মধ্য বয়েসী বা উদ্যমী তিরিশের অধিবাসী তারাও দেখি উমরতন্ত্রেই স্থিতধী। মুসলিম ধর্মে ঠিক বিশ্বাস না থাকলেও মুসলিম উম্মায় দেখি এদের টনটনে বিশ্বাস। মাঝে মাঝে আমি ভাবি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের কালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষপদটি মণি সিংহের হাতে ন্যাস্ত না থেকে একজন মুসলিম বামের হতে থাকলে হয়তো কোনো অপকাণ্ড ঘটে যেতে পারত। অনেকে তারকা কমিউনিস্ট হিসেবে মোহাম্মদ ফরহাদের নাম করেন, কিন্তু তিনি সিপিবির গণগৃহত্যাগের আগেই মাত্র ৪৯ বছর বয়সে যেহেতু মারা গেছেন তাই তাকে নিয়ে কোনো আলোচনা করে কোনো লাভ নেই। কারণ এরশাদের পতনের পর কমিউনিস্টদের কর্মকাণ্ড দিয়েই নবযুগের বামপন্থীদের বিচার করা উচিত। সেদিক থেকে অকাল মৃত্যুর শিকার হয়ে তিনি একরকম চিরদিনের জন্য বেঁচে গেলেন। তারপর হাটে মাঠে ঘাটে অনেক মুসলিম বাম নেতাকেই আমরা দেখলাম, আজো পর্যন্ত সেখান থেকে কোনো প্রথিতযশা বা প্রতিশ্রুতিশীল নেতাকে আমাদের খোলা বাজারে আর দেখা গেল না। এবছর নভেম্বরে বার্লিন দেয়াল ভেঙ্গে দুই বার্লিন এক হওয়ার দুদশক পূর্ণ হবে। আর এ বিশ বছরে আমাদের বামপন্থীদলগুলো ভেঙ্গে কত অংশে কত অভীধায় ভূষিত হল তার একটা তালিকা যদি করা যেত তাহলে মুসলিম বামদের এমন এক দশার সাথে আমাদের পরিচয় ঘটত, যা থেকে আমাদের দেশের পরবর্তী বামেরা সাবধান হতে পারত: মুসলিম বামগিরি আর নয়, বামের দিশা খুঁজতে একটু অপেক্ষা করি, একটু সময় নিয়ে আগাতে চাই।