মুসলিম বাম এখানকার মুসলিম মধ্যবিত্তের একটা ছোট্ট অংশ। একই রকমভাবে শিল্প ও জীবন থেকে অনেক দূরে। ফজলুল হকের প্রচেষ্টায় যে মুসলিম মধ্যবিত্তের জন্ম, মাঝখানে এক তীব্র আন্দোলনমুখর সময় কাটিয়ে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে সে একটি দেশের অধিকারী হয়ে গেল, তারপর জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে বের হল নবযুগের মুসলিম বাম। এদের সকলেরই দীক্ষাগুরু হয়ে রইলেন বদরুদ্দীন উমর। চিরনেতির নেতা উমরের না হয় দিনশেষ কিন্তু যারা মধ্য বয়েসী বা উদ্যমী তিরিশের অধিবাসী তারাও দেখি উমরতন্ত্রেই স্থিতধী। মুসলিম ধর্মে ঠিক বিশ্বাস না থাকলেও মুসলিম উম্মায় দেখি এদের টনটনে বিশ্বাস। মাঝে মাঝে আমি ভাবি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের কালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষপদটি মণি সিংহের হাতে ন্যাস্ত না থেকে একজন মুসলিম বামের হতে থাকলে হয়তো কোনো অপকাণ্ড ঘটে যেতে পারত। অনেকে তারকা কমিউনিস্ট হিসেবে মোহাম্মদ ফরহাদের নাম করেন, কিন্তু তিনি সিপিবির গণগৃহত্যাগের আগেই মাত্র ৪৯ বছর বয়সে যেহেতু মারা গেছেন তাই তাকে নিয়ে কোনো আলোচনা করে কোনো লাভ নেই। কারণ এরশাদের পতনের পর কমিউনিস্টদের কর্মকাণ্ড দিয়েই নবযুগের বামপন্থীদের বিচার করা উচিত। সেদিক থেকে অকাল মৃত্যুর শিকার হয়ে তিনি একরকম চিরদিনের জন্য বেঁচে গেলেন। তারপর হাটে মাঠে ঘাটে অনেক মুসলিম বাম নেতাকেই আমরা দেখলাম, আজো পর্যন্ত সেখান থেকে কোনো প্রথিতযশা বা প্রতিশ্রুতিশীল নেতাকে আমাদের খোলা বাজারে আর দেখা গেল না। এবছর নভেম্বরে বার্লিন দেয়াল ভেঙ্গে দুই বার্লিন এক হওয়ার দুদশক পূর্ণ হবে। আর এ বিশ বছরে আমাদের বামপন্থীদলগুলো ভেঙ্গে কত অংশে কত অভীধায় ভূষিত হল তার একটা তালিকা যদি করা যেত তাহলে মুসলিম বামদের এমন এক দশার সাথে আমাদের পরিচয় ঘটত, যা থেকে আমাদের দেশের পরবর্তী বামেরা সাবধান হতে পারত: মুসলিম বামগিরি আর নয়, বামের দিশা খুঁজতে একটু অপেক্ষা করি, একটু সময় নিয়ে আগাতে চাই।

মাসুদ করিম

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।

৩০ comments

  1. nizam udin - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ)

    ekti lekharr somorrthon’e arekti lekha,odhbhut taina masud bhai!!
    shibram beche thakle bolten,

    bhar-bhar buli jar
    tar naam galiver…

    • সৈকত আচার্য - ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (২:৪০ পূর্বাহ্ণ)

      @ নিজাম উদ্দিন :
      আপনার এই মন্তব্যটি এখানে কিভাবে এবং কি কারণে প্রাসঙ্গিক?

  2. মনজুরাউল - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (২:৩৪ পূর্বাহ্ণ)

    মুসলমান যেমন খালেদার নেক নজরে পড়ে মডারেট মোসল্মান হয়ে যায় তেমনি মুজফ্ফর আহমেদের “ধর্ম কর্ম সমাজতন্ত্র” বটিকা গিলে “মোসল্মান বাম” হয়েছে! আমিন, ছুম্মা আমিন!

  3. রায়হান রশিদ - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৩:৩০ পূর্বাহ্ণ)

    (দ্রষ্টব্য: যদি ভুল না বুঝে থাকি, রাজনৈতিক “বাম” বলতে লেখক সম্ভবত এর সংকীর্ণ সংজ্ঞাটি মাথায় রেখেই পোস্টটি লিখেছেন, অর্থাৎ সমাজতন্ত্রীদেরকেই কেবলমাত্র বোঝাতে চেয়েছেন)।

    নিচের তিনটা লাইন কি কেউ একটু ব্যাখ্যা করবেন? জানার ইচ্ছে থেকে জিজ্ঞস করছি, মাসুদ ভাইকে, সেইসাথে বাকী সবাইকে।

    “তারপর জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে বের হল নবযুগের মুসলিম বাম।”

    –আসলেই কি তাই? ঠিক কিভাবে?

    “চিরনেতির নেতা উমর”

    –বদরুদ্দিন উমরকে “চিরনেতি” বলছেন কেন?
    –সমাজতান্ত্রিক তত্ত্ব নির্দেশনা, বাংলাদেশের অভ্যুদয় ইত্যাদি বিষয়ে উমরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক কাজগুলো কি?
    –যাঁরা উমরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন, তাদেরও নিশ্চয়ই কোন যুক্তি রয়েছে। সেই যুক্তিগুলো কি?
    –আস্ত পাঠ তালিকা ধরিয়ে না দিয়ে কেউ যদি সহজবোধ্যভাবে ব্যাপারগুলো এখানে ব্যাখ্যা করতে পারেন তাহলে উপকৃত হবো।

    “যারা মধ্য বয়েসী বা উদ্যমী তিরিশের অধিবাসী তারাও দেখি উমরতন্ত্রেই স্থিতধী।”

    –বর্তমানের বিভিন্ন বাম ধারাগুলোর সাথে পরিচয় নেই। তাই ঠিক জানা নেই আসলেই কি বদরুদ্দীন উমর এতটাই প্রভাবশালী কিনা তরুন সমাজতন্ত্রীদের মধ্যে যতটা লেখক বলছেন।
    –উমরও নিশ্চয়ই বাংলাদেশে তাঁর তাত্ত্বিক ঘরানার (যদি ঘরানা বলে আসলেই কিছু থেকে থাকে) একক প্রবক্তা নন। এই ধারায় তাঁর পূর্বসূরী বা সমসাময়িক কারা?

    “মুসলিম ধর্মে ঠিক বিশ্বাস না থাকলেও মুসলিম উম্মায় দেখি এদের টনটনে বিশ্বাস।”

    –কিসের ভিত্তিতে এই মন্তব্য? আমার সহজ বুঝে এটা তো কখনোই সম্ভব না। সাম্রাজ্যবাদবিরোধীর শেষ আশ্রয় কিভাবে উসামার কোল হয় তা আমার বোধের অগম্য। তাই ধরে নিচ্ছি লেখকের নিশ্চয়ই কোথাও ভুল হচ্ছে।

    • মাসুদ করিম - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১১:৪২ অপরাহ্ণ)

      প্রায় ১২ বছর আগে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সংবিধান থেকে দুটো জিনিস বাদ দিয়েছিলেন; প্রথমত ধর্মনিরপেক্ষতার স্থানে এনেছিলেন আল্লাহর ওপর বিশ্বাস, দ্বিতীয়ত সমাজতন্ত্রের স্থানে এনেছিলেন সামাজিক ন্যায়বিচার অর্থে সমাজতন্ত্র। জিয়াউর রহমান এই ভূমিকার জন্য যথাযথভাবেই তিরষ্কৃত হয়েছেন; কিন্তু খেয়াল করে দেখুন–জিয়াউর রহমান যে কাজ করেছেন ১২ বছর আগে, সিপিবি তা করেছে তারও ১০ বছর পরে। সিপিবি নেতৃত্ব এখন তার রাজনৈতিক কজে ধর্মনিরপেক্ষতার স্থানে জিয়ার চাইতেও বেশিহারে ধর্মের ব্যবহার করে এবং সমাজতন্ত্র বলতে জিয়ার চাইতেও বেশি অনীহাবোধ করে–এবং জিয়ার মতোই বলে সামাজিক ন্যায়বিচার জাতীয় ভুয়া কথা।

      আপনার উপরের মন্তব্যের সবগুলো উদ্ধৃতির উত্তর এমন একটি ছোট্ট অনুচ্ছেদে ধরে যাবে আশা করিনি। আর এমন মোক্ষম একটি অনুচ্ছেদ গ্যাস-রক্ষা আন্দোলনে দুঃখজনকভাবে আহত আনু মুহাম্মদ ১৯৯১-এর নভেম্বরে এভাবে আমার জন্য লিখে রেখেছেন তা জানতে পারতাম না, যদি না হঠাৎ বেখেয়ালে বইয়ের তাক থেকে বুকমার্ক দেয়া একটা বই নামিয়ে উল্টেপাল্টে এই প্রবন্ধটি ‘ অনেক কিছুই আছে, কিন্তু আসলটা নেই’ আবার না পড়তাম। আপনি অভিবাসী মানুষ আপনি হয়তো বইটি পাবেন না, কিন্তু যারা বাংলাদেশে বসবাস করছেন তারা খুব সহজেই ‘রাষ্ট্র ও রাজনীতি: বাংলাদেশের দুই দশক’ বইটির ১৭৮ থেকে ১৮৪ পর্যন্ত পড়ে নিতে পারবেন, বা অনেকে হয়তো ইতিমধ্যে পড়েও থাকবেন।

      আপনারা সবাই লক্ষ্য করবেন আমি বাম রাজনীতির ওপর বিরক্ত নই, বাম রাজনীতির আমাদের বর্তমানের নেতাদের ওপর বিরক্ত। আর ভুল নেতার পেছনে সঠিক রাজনীতি কখনো হতে পারে না। আজকে যারা তেল-গ্যাস আন্দোলন করছেন, তাদের মধ্যে একজন নেতার কথা বলুন, যে সত্যিকার জননেতা বা জননেতা হবার যোগ্যতা রাখেন? এরা বাম রাজনীতি নষ্টের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন। ভুল মানুষের পেছনে ভুল রাজনীতি করার চেয়ে অপেক্ষা করা ভাল, এ দুর্বল অলস নেতৃত্বকে ধ্বংস হতে দেয়া ভাল। দুর্বল নেতৃত্ব হঠাৎ হরতাল ডেকে সবল নেতৃত্বে পরিণত হতে পারে না।

  4. মাহতাব - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৩:৪৩ পূর্বাহ্ণ)

    মাসুদ ভাই, মুসলিম বাম ও বদরুদ্দীন উমর এর ব্যাপারে আপনার বিস্তারিত বক্তব্য চাই ।

    • মাসুদ করিম - ৬ অক্টোবর ২০০৯ (৩:০৭ অপরাহ্ণ)

      অক্সফোর্ড পিপিই (ফিলসফি, পলিটিক্স, ইকনোমিক্স স্নাতক) বদরুদ্দিন উমর নিয়ে বিস্তারিত বলার ক্ষমতা আমার নেই। এই মাল্টিডিসিপ্লিনারি লোক নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন তারাই যারা অন্তত এই তিনটির একটিতে একাডেমিকভাবে শিক্ষিত। আমি সাধারণ মানুষ, আমার চোখে তিনি নিতান্তই একজন বিভ্রান্ত মানুষ, এবং একইসাথে আমার চোখে বাংলাদেশের এখনকার বাম রাজনৈতিক দলগুলো সবাই কম বেশি বিভ্রান্ত — তাই আমার অতি সরলীকৃত ভাষ্য এরা ‘উমরতন্ত্রেই স্থিতধী’। চূড়ান্ত সরলীকরণ নিঃসন্দেহে, কিন্তু এই আমার অভিমত।

  5. মনজুরাউল - ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১:২৩ পূর্বাহ্ণ)

    রায়হান রশীদ উত্থাপিত প্রশ্নগুলো নিয়ে একটি সুস্থ আলোচনা হতে পারে, কিন্তু প্রশ্নের সংখ্যাধিক্যের কারণে উৎসাহে ভাটা পড়ে যাচ্ছে। তবুও দেখি কিছু বলা যায় কি-না আরো্একটু পরে…..

    • রায়হান রশিদ - ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৩:০৬ পূর্বাহ্ণ)

      দুঃখিত, প্রশ্নগুলো সংখ্যার দিক থেকে হয়তো একটু বেশীই হয়ে গেছে। বহুদিন জমে থাকলে যা হয় আর কি! আশা করছি এই আলোচনা যখন শেষ হবে তখন কিছুটা হলেও আলোকিত হতে পারবো।

  6. ত্রিশোনকু - ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১২:০৮ পূর্বাহ্ণ)

    আসলে ধান গাছে যেমন তক্তা হয়না,
    আমড়া কাঠের ঢেঁকিও হয়না,
    তেমনি মুসলিম বামও হয়না।

    আমার অনেক অনেক দিন আগে শোনা এম এ জলিলের বক্তৃতার কথা মনে পড়ে গেল। যদিও এ আসরে তিনি কতটুকু গ্রহনযোগ্য আমি তা বুঝতে পারছি না। তবে যখনকার কথা বলছি তখনো তিনি হাফেজজী হুজুরের কোলে চড়ে বসেননি।
    কথা উঠেছিল ধর্ম নিরপেক্ষতা নিয়ে। অন্য সব বক্তার সাথে্বিমতে গিয়ে তিনি প্রমান করে ছাড়লেন “ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা”। অন্তত সেদিন ঐ আসরে আমি কাউকে দেখিনি তার যুক্তিগুলো খন্ডন করতে পারতে।

    আসলে জনগন বিয়োগে রাজনীতি হ্য় না।
    আমাদের জনগন আবার ধর্মের অস্বীকৃতিতে ভরসা পায়না।
    তাই ধর্ম ও বামের অভূতপূর্ব সমন্বয় মুসলিম বাম।

    আমড়া কাঠের ঢেঁকি।

  7. ফিরোজ আহমেদ - ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৩:২৮ অপরাহ্ণ)

    ভাইজান
    আপনেরে চিনি না।

    কিন্তু কতাগুলা উদাহরণ সহকারে বললে বুঝতাম। বদরুদ্দীন উমর তো শুনছি দুইচাইরখান বই লেখছেন। ওনার ইসলাম ও সাম্প্রাদায়িকতা নিয়া তিন খান মোটামুটি পরিচিত বই আছে, কৃষক আন্দোলনের বিকাশ, তার সাম্প্রদায়িক মুসলিম লীগের রাজনীতিতে পতন বিষয়েও গ্রন্থ আর লেখালিখি আছে, সেইগুলা থেইকা যুদি কিচু রেফারেন্সটেন্স দিতেন!

    সেইসব থেইকা যদি দুই চাইরডা উদাহরণ সহকারে বুঝায়া কতেন, ক্যানে উনি মুসলিম বামদের গুরু, বোঝতাম।

    (আর মনি সিং না হয়া যুদি কোন মুসলিম কম্যুনিস্ট পার্টির নেতা হৈতেন…. আধা ঘন্টা হাসছি এই লাইন পইড়া। কিন্তুক আপনে ব্যাখ্যা ম্যাখ্যা দিয়া আরেকটা লেখা দিলে আমিও একটু লিখতাম চাই। তার আগ পর্যন্ত এই রকম উদাহরণহীন লেখ্যারে বেকুবি ছাড়া কিছু কওনের উপায় নাই।)

    ভাল থাইকেন।

    ফিরোজ আহমেদ

    • অলকেশ মিত্র - ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৯:৪১ পূর্বাহ্ণ)

      ফিরোজ আহমেদ
      মাসুদ করিমকে যতটূকূ চিনি তার সিকিভাগও তো আপনাকে চিনি না। বিশেষ করে এই ব্লগে। কিন্ত তাতে কি যায় আসে। যাই হোক অনেক অভিনন্দন। তবে আপনার বাংলা লিখার এই অদ্ভুত রীতি ভীষণ অপছন্দ। ভালো কথা লিখলেও পড়তে গিয়ে মনে হয় তামাশা করছেন। রীতিটা পালটানো যায় না ফিরোজ?

      • ফিরোজ আহমেদ - ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১:৪১ অপরাহ্ণ)

        অলকেশ,
        আমাকে চেনাটা জরুরি না, কিন্তু জরুরি হত যদি যথেষ্ট রেফারেন্স না দিয়ে মন্তব্য প্রধান এবং অবমাননাকর একটা লেখা লিখতাম।

        যেমন, বদরুদ্দীন উমর প্রায়ই আওয়ামী লীগ সম্পর্কে কটু কথা লেখেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে তা পছন্দ করি না। কিন্তু তারপরো, তাকে চেনার মানে এ স্থলে হল এই যে, অন্তত আওয়ামী লীগ সম্পর্কে তার বহু বিশ্লেষণ মূলক লেখালেখি আছে, যেটা পাঠ করে পাঠকরা তার হঠাৎ করা কমেন্টারো যৌক্তিকতা-অযৌক্তিকতা বোঝার চেষ্টা করতে পারে। (একই কথা তার বিএনপি বা আরও বহু বিষয়ে প্রযোজ্য।)

        মাসুদ করিমের এ লেখা নিয়া আমি কী করি!

        এর যুক্তি খণ্ডনের উপায় কী?

        তাই বলা, আপনাকে চিনি না। আপনার যদি পূর্বপ্রকাশিত লেখালেখিও পাইতাম, তাইলেও সেগুলা ধইরা এই লেখাটার যুক্তিকাঠামোতে দাঁত বসানোর ধান্ধা করতে পারতাম।

        সেই অর্থে বলতে পারেন, ওই বাক্যটা রীতিমত বিবেচনাপূর্ণ একটা কথা: ভাইজান কি বিপদে আমারে ফালাইলেন, কেমনে উমর ভাইরে ডিফেন্ড করি এমন কতগুলা বাক্য থেকে, যেখানে কার্যকারণ কিছু বলা নাই।

        আর বাংলা লেখার রীতি? আমি ব্লগে লেখি না, পড়ি। নির্মাণ ব্লগে ভাষারীতি নিয়া আক্রমণ দেখে মনে হৈল, ব্লগকূলে এটিই সর্বাধিক সুশীল ভাষার ব্লগ। অপর প্রায় সকল ব্লগেই এই ভাষা ব্যাপক চালু।

        আপনার অপছন্দকে সন্মান করি। ভাষা নিয়া জোরজবরদস্তি আমারও না পছন্দ। কিন্তু এই ব্লগপাঠব্যারামের পর আমার নিজেরো ভাষার ব্যাপক অধপতন হৈতেছে, এই একটা মুশকিল।

        আসলেই ভাষার সংক্রামক ব্যাধি এমন, নদীর সোত্রের চাইতেও সে বেশি শক্তিশালী।

        ভাবতেসি, ভাষা ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত নির্মাণ ব্লগ পড়ব। কিন্তু এত কম লেখা আসে এইখানে, পপুলার বাজারগুলার প্রভাব আর এড়াইতে পারি না।

  8. ফিরোজ আহমেদ - ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৩:৩৬ অপরাহ্ণ)

    স্যরি, বেকুবি বইলা একটু বাড়াবাড়ি হৈসে। আমি লজ্জিত।

    কিন্তু আপনের লেখাটা একটু বেশি হুড়মুড় কইরা লেখা আর কি, ফলে যুক্তিরাশি যথাপথে নির্গত না হয়া চতুর্দিকে নিক্ষিপ্ত হযেছে, বোধ করি।

    বিস্তারিত লেখার প্রত্যাশায় বসিয়া থাকলাম।

    • সৈকত আচার্য - ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৯:২০ পূর্বাহ্ণ)

      @ফিরোজ আহমেদঃ

      স্যরি, বেকুবি বইলা একটু বাড়াবাড়ি হৈসে। আমি লজ্জিত।

      অন্যদের কি মনে হয়েছে জানি না, আপনার এই কথাটা বিশ্বাস করতে মন চাইলো না। আপনি আসলেই লজ্জিত নন! বিশেষ করে, যেভাবে আপনি “বেকুবি” শব্দটিকে বোল্ড করলেন (মন্তব্য-৭) এটা স্রেফ বিদ্রুপ বা কটাক্ষ, মনে হলো!

      আর একটা কথা না বলে পারছি না। যে কোন বিষয়ে, আপনি নিজে কতটুকু সিরিয়াস, তা আপনার প্রকাশভংগী এবং ভাষার ব্যবহার থেকে কিছুটা বোঝা যায়। বিশেষ করে লিখার ক্ষেত্রে এ জাতীয় আঞ্চলিক সস্তা টোন ব্যবহার করা হয়তো অন্য কোন ব্লগে একসেপটেবল, কিন্ত এই ব্লগে এজাতীয় ভাষা ব্যবহার রীতিমত উদ্বেগজনক। আমি জানি না, ব্লগ মডারেটরগণ আমার সাথে এক মত হবেন কিনা।

      আপনি হয়তো জাতীয় সম্পদ রক্ষা আন্দোলনের একজন একনিষ্ঠ কর্মী। আমি নিজেও এর সমর্থক। মাসুদ করিম তার মতো করে লিখেছেন। আপনি কি আপনার মতো করে লিখেছেন? নাকি কেবল বিদ্রুপ-কটাক্ষ করে কিছুটা অহংকার করে গেলেন?

      • ফিরোজ আহমেদ - ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১:৫০ অপরাহ্ণ)

        কবি,

        আঞ্চলিক সস্তা টোন! উদ্বেগজনক!!

        সিরিয়াস কথা কেবল সিরিয়াস বলে কথিত শব্দ, বাক্য ও ভাষারীতিতে-ই প্রকাশযোগ্য কীনা, সেটা নিয়ে নিশ্চিত নই।

        আমি তো বরং ভাবি, সুশীলতার পর্দা ঝোলানো নিয়মে ভাষার যে শক্তি লোপ পায়, নিদেন পক্ষে অবচিতি ঘটে, সেক্ষেত্রে ব্লগ হুতোমি ভাষাকে আবারও প্রয়োগের যে বিপুল সম্ভাবনা হাজির করেছে, সেটাই আশার দিক ছিল।

        যাই হোক, প্রামাণিক ভাষার শুদ্ধতা রক্ষায় নির্মাণ ব্লগ যে ভূমিকা রাখছে, সেটাও অভিভাদনযোগ্য। যে কোন স্রোতবিরুদ্ধ প্রয়াসই তাই।

        জয় হোক নির্মাণের মডারেটর আর তার প্রামাণিক ভাষার।

        • মাসুদ করিম - ৪ অক্টোবর ২০০৯ (৪:৪৪ অপরাহ্ণ)

          সমস্যাটা হুতোমি ভাষার নয়, বা আঞ্চলিক ভাষারও নয়। সমস্যাটা হচ্ছে, মুখের কথা লেখার সমস্যা, যে মুখের কথায় আমরা প্রায়ই বাক্যই শেষ করিনা, সে মুখের ভাষাই যখন লিখতে হয় — তখন বাক্যগুলো শেষ করতে হয়, বাক্য শেষ করতে গেলেই, বাক্যের উপাদানগুলোকে চিনতে হয়, আমি বাক্যটিতে গম্ভীর চিন্তাশীল কথা বলব — না হাস্যরস না শ্লেষ না বাগাড়ম্বর পরিবেশন করব তা ভাবতে হয়। তাই লেখা হোক প্রামাণিক বা আঞ্চলিক বা হুতোমি বা কোনো বড় শহরের নানা অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা মিলেমিশে একটা খিচুড়ি ভাষা, তাতে কোনো অসুবিধা নেই, কিন্তু যা লেখতে চাই তার ‘রস’টা পরিবেশন করতে তো জানতে হবে। এটা আমিও বিশ্বাস করি না যে শুধু এক উপায়েই আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে হবে, কিন্তু এটা আমি বিশ্বাস করি আমি যদি শ্লেষ করতে চাই তাহলে আমাকে শ্লেষের ভাষাটা প্রয়োগ করতে হবে, আমি যদি গভীর আলোচনা করতে চাই তাহলে গভীর আলোচনার ভাষাটা প্রয়োগ করতে হবে : এবার আমি হুতোমি করি, আঞ্চলিক করি, খিচুড়ি করি, প্রামাণিক করি — তাতে কিছু আসে যায় না। কিন্তু যাতে আসে যায় তা হল আপনি একটা গম্ভীর কথা বললেন কিন্তু আশেপাশের মানুষ ভাবলেন আপনি বিদ্রুপ করছেন : এবার আপনি হুতোমি করেন, আঞ্চলিক করেন, খিচুড়ি করেন, প্রমাণিক করেন — বুঝতে হবে আপনার প্রকাশভঙ্গি ঠিক নয়। আর প্রকাশভঙ্গি ঠিক না হওয়াটা শুধু আমাদের ব্লগের জন্য উদ্বেগজনক তা নয়, আপনার জন্যও সমান উদ্বেগজনক।

  9. রায়হান রশিদ - ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৫:৫৭ অপরাহ্ণ)

    @ ফিরোজ আহমেদ,
    সরস মন্তব্য। একটু হয়তো বেশীই সরস! এতো দিনে তব পড়িল পদধূলি!

    প্রথমত: #৭ মন্তব্যটি কাকে উদ্দেশ্য করে ঠিক স্পষ্ট হল না।

    দ্বিতীয়ত: “আপনেরে চিনিনা” মন্তব্য! বাংলা ব্লগে অতি ব্যবহারে জীর্ণ একটি প্রকাশভঙ্গী। ব্যক্তিগতভাবে “চেনাটা” মনে হয় না তেমন জরুরী। চেনা-চিনি দিয়ে চাকুরীর রেফারেন্স হয়, বিয়ের বাজারে শিঁকেলাভ হয়। এখানে কিছুই হয় না। তাছাড়া, হাজার চেষ্টা করেও কতটুকু চেনা সম্ভব কাউকে? আমি তো কাউকেই তেমন চিনি না রে ভাই, আমাকেও কেউ চেনে না; তাতে কি জীবন থেমে আছে?

    তৃতীয়ত: অনেক ধন্যবাদ বদরুদ্দিন উমর এর চিন্তাভাবনার কিছু সূত্র দেয়ার জন্য। এতক্ষণে আলোচনাটা উৎপাদনশীল হয়ে ওঠার একটা সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আপনিই আলোচনাটা আরেকটু এগিয়ে নিন, সে অনুরোধ থাকলো।

    এসব বিষয়ে জানার আগ্রহ অনেক দিনের। বিষয়গুলো সম্বন্ধে অনেকেই জানেন, হয়তো খুব ভালভাবেই জানেন। কিন্তু তাদের কাছ থেকে খুব সুনির্দিষ্টভাবে জানার সুযোগ হয়নি কখনো। বরং দেখেছি, এই বিষয়গুলো নিয়ে হাওয়ার ওপর আবেগতাড়িত কথাবার্তাই বেশী হয়। প্রত্যেকে গলার রগ ফুলিয়ে চোখ পাকিয়ে তার তার অবস্থান থেকে বলে যান। আমাদের আর শেখা হয় না কিছুই। পূর্ববঙ্গের কেন আজ এই হাল তার অনেক উত্তরই হয়তো এর বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার ইতিহাসে লুকিয়ে আছে। রাজ্জাক-ছফা-শরীফ-উমরদের বাদ দিয়ে সে অনুসন্ধান মনে হয় না আদৌ সম্ভব।

  10. ফিরোজ আহমেদ - ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১১:১৭ অপরাহ্ণ)

    @রায়হান রশীদ, এই মন্তব্যটা আপনাকে করা (আর ৭ নম্বর মন্তব্য লেখককে করা)।

    ব্লগ পাড়ায় লিখিয়া অভ্যাস নাই, তাই কারো পোস্ট প্রসঙ্গে কমেন্ট হৈলেও যে আলাদা করে উল্লেখ করতে হয়, তা জানতাম না ভাইজান। এত ধারা উপধারা মুখস্ত করতে পারলে তো উকিলই হৈতে পারতাম।
    চেনাচিনির বিষয়েও বলি, ব্লগের লোক আমি না। ব্লগের ভাষা মেনে কথা বলতেও আগ্রহ খুব একটা নাই। চেনা-অচেনা-কে কারে চেনে- আদৌ চেনা সম্ভব কিনা, ইত্যাদি বিষয়ে হাফ দার্শনিক (এ জগতে কেবা কার!) আলোজচনাও উদ্দেশ্য ছিল না অধমের। চেনা বলতে বাজারি অর্থেই বললাম, ইনি যদি এ বিষয়ে নিজের কিছু লেখার রেফারেন্সটেন্স দিতেন (নাই তো চিনতে পারি, সকলের লেখা তো পড়া হয় নাই! আর ব্লগবাসীরা যদি চেনার মত দারুণ একটা শব্দরে নিয়া যথেষ্ট ধস্তাধস্তি কইরা এইটারে নিজেদের মাঝে ক্লিসে বানায়া ফেলেন, আমারা, যারা বাংলা ব্লগোস্ফিয়ারের বাসিন্দা নই, তারা এর মাশুল দেব কেন? এই শব্দ এখনও আমাদের সমান প্রিয়, কাজেরও বটে। বদরুদ্দীন উমররে ব্যক্তিগতভাবে না চিনলেও তার বইগুলা অন্তত চেনা সম্ভব, আর সেগুলা চিনলে বদরুদ্দীন উমররে নিয়া এমন একখানা পোস্ট লেখা কঠিন। খুবই কঠিন। এই ব্লগার এই কর্মটিই করেছেন, আর আমার আগের ৬ ৬ জন (পাঠক কতজন জানি না) এই লেখককে কিছু বিষয় পরিস্কার করারও অনুরোধ জানিয়েছেন! হায় ঈশ্বর। বাংলা ব্লগের এই যদি কিছুটা চিত্র হয়, তবে তা এখনও দুর্দশার অমানিশায় আছে। কিংবা ব্লগের পণ্ডিতদের নিয়া আপাতত সিরিয়াসলি না ভাবলেও চলবে।

    বাকি কথা গুলা সবার উদ্দেশ্যৈ। ফজলুল হকের চেষ্টায় (কিংবা প্রচেষ্টায় মুসলিম মধ্যবিত্তের জন্ম? নাকি মুসলিম মধ্যবিত্তের জন্মের একটা প্রতিফলন ফজলুল হক! বাদ দেন, নিছক ডাক্তার-উকিল-সাহিত্যকর্মীদের কাছে এইটা ডিম আগে না মুরগী আগে মার্কা তর্ক হৈতে পারে। কিন্তু বদরুদ্দীন উমরের তো বাঙালি মুসলমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নামের একটা বিখ্যাত রচনা আছে, যেইখানে তিনি দেখাইয়াছেন যে পাকিস্তান রাষ্ট্রের পত্তনের পর বাঙালি মুসলিম মানস প্রথমবারের মত সবাংশে অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ হবার প্রেক্ষিত তৈরি হৈল। পাকিস্তান রাষ্ট্রের বঞ্চনা তারে দেখাইল আরব ইরান না, পশ্চিমে কোথাও না, তার আবাস এই বঙ্গভূমি, আর এইখানকার সংস্কৃতিই তার সংস্কৃতি। বদরুদ্দীন উমরের এই থিসিস নিয়া বিতর্ক হৈতে পারে, আমার চেনা বহু উমরপন্থী এই থিসিসের দ্বিবিধ সমালোচনা করেন। কিন্তু এই থিসিসওয়ালা মানুষটারে আর যাই হোক,মুসলিম বামগো নাটের গুরু কওন যায় না।

    তার্পর ধরেন কমরেড ফরহাদের মত মুসলমান যদি মস্কোপন্থী কম্যুনিস্ট পার্টির প্রধান নেতা হৈতেন, মনি সিং না হয়া!! এ তো এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। উনি কি জানেন কম্যুনিস্ট পার্টির পাকিস্তান প্রশ্নে অবস্থান অনেকটাই আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত হতো, মানে মস্কো থেকে? একই ভাবে চিনপন্থীদের একটা বড় অংশ হা করে চেয়ে থাকত রেডিও পিকিং কি কয় তা জানতে? (এখন ভয় হচ্ছে আধাখেচড়া সমালোচনার হাতে নতুন সূত্র ধরিয়ে দিলাম কি না!)

    এমনকি যে লোকটা তেভাগা আন্দোলনের পরিনতি কেন পাকিস্তান আন্দোলনের মত সাম্প্রদায়িক পরিনতিতে সমাপ্ত হল, সেই লোকরে …. রায়হান কিছু মনে করবেন না, এত বাজে লেখা নিয়ে আগে কখনও লিখি নাই। এখানে তর্ক করার জন্য আপনাকে আগে প্রতিপক্ষকে হাত ধরে শিখিয়ে পড়িয়ে নিতে হবে… বাদ দেন।

    তার্পর চিরনেতি‍! শব্দটা শুনতে তো মনে কয় ভালই মিঠা লাগে। চিরনেতি। আহা। মানে কি? এটারনালনেগেশন?

    মহান কোন বাম নেতা এসে জনগণরে মুক্ত করবেন না, (যেমন ফজলুল হক বা আর কারো চেষ্টায় বাঙালি মুসলমানের জন্ম হয় নাই।)

    কিন্তু এই সব শেষ-অনুচ্ছেদে-উপদেশমূলক রচনা যে আজিকালি জন্ম নিচ্ছে, তার হয়তো একটা ইতি (চিরইতি!)বাচক দিক আছে। এইটা যদি এলোপাথাড়ি একটা ঘটনা না হয়া থাকে, হয়তো যে ঘটনাপ্রবাহে জনগণের আন্দোলন সংগ্রাম নতুন ভাবে দানা বাধার সম্ভাবনা, চিন্তার অঙ্কুরোদ্গমের সূত্রপাতের দূরবর্তী ইঙ্গিত। আপাতত এই পর্যন্ত।

    এই পর্যন্ত এই অর্থে, এই লেখক তার মন্তব্যগুলোকে ব্যাখ্যা না করা পর্যন্ত, বা অন্তত বদরুদ্দীন উমররে নেতিকরণ করার আগে অন্তত তার একটা প্রপার পাঠ নিছেন, এইটা প্রমাণ করার আগ পর্যন্ত আমি কোন উস্কানিতেই এর পেছনে এরচে বেশি সময় নষ্ট করব না।

    • মাসুদ করিম - ৫ অক্টোবর ২০০৯ (১২:১৭ পূর্বাহ্ণ)

      যেইখানে তিনি দেখাইয়াছেন যে পাকিস্তান রাষ্ট্রের পত্তনের পর বাঙালি মুসলিম মানস প্রথমবারের মত সবাংশে অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ হবার প্রেক্ষিত তৈরি হৈল। পাকিস্তান রাষ্ট্রের বঞ্চনা তারে দেখাইল আরব ইরান না, পশ্চিমে কোথাও না, তার আবাস এই বঙ্গভূমি, আর এইখানকার সংস্কৃতিই তার সংস্কৃতি। বদরুদ্দীন উমরের এই থিসিস নিয়া বিতর্ক হৈতে পারে

      এনিয়ে আর বিতর্ক হতে পারে না, যিনি বলেন পাকিস্তান রাষ্ট্রের পত্তনের পর বাঙালি মুসলিম মানস প্রথমবারের মত সর্বাংশে অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ হবার প্রেক্ষিত তৈরি হল — এই যদি হয় উমরভাষ্য, তবে তিনি নিঃসন্দেহে ‘মুসলিম বাম’-এর নাটের গুরু। পাকিস্তানের মত একটি ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের অন্তর্গত হওয়াতেই বাংলাদেশের মুসলমান সমাজ আজো এত সাম্প্রদায়িক এবং এর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখন জঙ্গি ইসলামেও বিশ্বাস করে।

      • ফিরোজ আহমেদ - ৫ অক্টোবর ২০০৯ (২:৫৮ অপরাহ্ণ)

        কেমনে কী!

        পাকিস্তান রাষ্ট্রের অভিজ্ঞতার আগে মুসলিম মধ্যবিত্তের ছোট্ট একটা অসাম্প্রদায়িক ছিল, এবং ঐতিহাসিক উৎস খুজতে গিয়া ইরান তুরানের আশ্রয় নিত, পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক দমন এবং অর্থনৈতিক পীড়ন তাদের স্বভূমিতে প্রত্যাবর্তন করাল, এই থিসিসের সাথে মুসলিম বামের নাটের গুরু হৈবার কি সম্পর্ক! বরং এই বিশ্লেষণের মূল প্রতিপাদ্য হৈল কিভাবে এই বঙ্গের মুসলিম মধ্যবিত্তের মধ্যে অসাম্প্রদায়িকতার অপসারণ ঘটলো! নাকি আমি আবারও বুঝাইতে ভুল করলাম!!

        আর বাংলাদেশের মুসলিম সমাজ এত সাম্প্রদায়িক? কার তুলনায়? ভারতের বিজেপির তুলনায়?

        উল্লেখযোগ্য অংশ জঙ্গি ইসলামে বিশ্বাস করে? কোন শুমারিতে পাওয়া গেল? ভোটের হিসাবে?

        আনন্দবাজারী ক্যাম্পেইন। আর কিছু মনে করবেন না, পাঠের অভাবকে আমি দোষনীয় মনে করি না, কিন্তু যে বিষয়ে কাঁটাছেড়া করতে বসছেন, সেই বিষয়ে সাধারণ জ্ঞানটা দরকার। উনারে নিয়া লেখার আগে অন্তত সাম্প্রদায়িকতা, সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা, সংস্কৃতির সংকট, ভাষা আন্দোলনে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশের সমস্যা বিষয়ক লেখাগুলা, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত পরর্বর্তী কৃষক আন্দোলন ও পাকিস্তান আন্দোলন বিষয়ক লেখা (চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাঙলার কৃষক), এই কয়টা লেখা পইড়া ফালান।

        ধারণা করি ভীষণ শরম পাইবেন। আপনার দুঃস্বপ্নে আর উমর হানা দিবেন না।

        আর ভাষা নিয়া কি কই! আ মরি বাংলা ভাষা।

        • মাসুদ করিম - ৬ অক্টোবর ২০০৯ (১২:২৪ পূর্বাহ্ণ)

          উপদেশ দেয়া আর উদ্বেগজনক প্রকাশভঙ্গি ছাড়া মুসলিম বামের ঘরে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।

          আর বাংলাদেশের মুসলিম সমাজ এত সাম্প্রদায়িক? কার তুলনায়? ভারতের বিজেপির তুলনায়?

          কী আত্মতুষ্টি! কী উমরপ্রবণ! বেঁচে থাকুন।

          • ফিরোজ আহমেদ - ১২ অক্টোবর ২০০৯ (৬:৫৮ পূর্বাহ্ণ)

            উপদেশাত্মক!

            জনাব, যে বিষয়ে লেখতে বসছেন, সেই বিষয়ে কয়েকখানা মোটে কিতাবই আপনারে পড়তে বলছি, আর কিছু উপদেশ দেই নাই, কারণ বুঝবেন না।

            আর বামের ঘরে কিছু জমা নাই, তাতে দুঃখের কি আছে? কিছু না। জাতির ঘরে মাসুদ করিমের মত সমাজবিজ্ঞানীর জন্ম হয়াছে, এতেই আমরার সকল দুঃখের অবসান ঘটেছে।

            ইতিহাস আর সমাজ বিশ্লেষণের যে তরিকা আপনে উদঘাটন করেছেন, তার জন্য আপনাকে অভিনন্দন। মুসলিম মধ্যবিত্তের জন্ম একটা ঐতিহাসিক বিকাশ না হয়া শেরে বাংলার কীর্তি হিসাবে উদঘাটন, রেফারেন্স ছাড়া উমরের ঘাড়ে মুসলিম উম্মার জিম্মাদারি প্রদান, কোন মুসলমানের হাতে কম্যুনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব না থাকার সাথে স্বাধীনতা যুদ্ধে বামদের অংশগ্রহন বিষয়ে আপনার আবিষ্কারের জন্য জাতি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকিতে বাধ্য থাকিবে।

            দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন।

        • মোহাম্মদ মুনিম - ৬ অক্টোবর ২০০৯ (৫:১৯ পূর্বাহ্ণ)

          ‘পাকিস্তান রাষ্ট্রের অভিজ্ঞতার আগে মুসলিম মধ্যবিত্তের ছোট্ট একটা অসাম্প্রদায়িক ছিল’ – এই কথাটির মানে ঠিক বুঝলাম না, ছোট্ট একটা অংশ অসাম্প্রদায়িক ছিল? তাঁরা অসাম্প্রদায়িক হলে ইরান তুরানে নিজেদের উৎস খুঁজবেন কেন? তাঁরা আবার পাকিস্তানের দমন পীড়নের কারণে বাংলায় উৎস খুঁজে পেলেন। দমন পীড়নের সাথে ইতিহাসবোধের সম্পর্ক কি? স্বাধীনতার পরে আওয়ামী লিগের দমন পীড়নে লোকে কি আবার ইরান তুরানের ‘উৎসে’ ফিরে গেছে?

  11. ফারুক ওয়াসিফ - ৬ অক্টোবর ২০০৯ (২:৩৭ অপরাহ্ণ)

    “মাঝে মাঝে আমি ভাবি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের কালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষপদটি মণি সিংহের হাতে ন্যাস্ত না থেকে একজন মুসলিম বামের হতে থাকলে হয়তো কোনো অপকাণ্ড ঘটে যেতে পারত।”

    এই প্রত্যয়কে কেন সাম্প্রদায়িক বলা যাবে না?

  12. মাসুদ করিম - ৫ অক্টোবর ২০১১ (২:৫১ অপরাহ্ণ)

    এলেখা শুধু পাকিস্তানের বামদের জন্য নয় এলেখা আমাদের বামদের জন্যও সমান প্রযোজ্য।

    I do not expect a balanced outlook from a common man in Pakistan who lives behind a smoke screen created by Urdu press and brain washed through 60 years of antagonistic indoctrination against the non-Muslim world, except China. However, the views of old friends from left Wing (now liberals mostly associated with NGOs or civil society) and laissez-faire intelligentsia astonish me. The old cult is still deep seated in their minds, in which America takes the position of the devil. They go so far in their prejudice against America that they lose their ability to pick the lesser of the two evils.

    I fully agree to the universal rule that my enemy’s enemy is my friend, yet the issue is to identify who the current enemy is. It is a well established fact that a smaller but irrational enemy is much more dangerous than a bigger yet rational enemy. Hence the later becomes a friend when an irrational enemy is the immediate threat.

    International relations revolve around two fundamental rules viz;

    a. There are no common friends but common interests.
    b. There are no permanent friends and no permanent enemies.

    Keeping these in mind, the leftists of Pakistan may learn from the following two examples from not so distant history:

    During World War II Communist Party of India felt that Fascist forces were the real menace for the entire mankind.

    Consequently against its normal policy, it supported imperialist and colonialist Britain. Volunteers from Communist Party joined British army to fight Nazi Germany. Faiz Ahmad Faiz had the rank of an honorary Captain in Royal Indian Army and time proved that it was the right decision on part of Communist Party of India.

    In the 70’s Tudeh (communist) Party of Iran decided to join hands with Islamic fundamentalist in their common struggle against a pro-American ruler. Such was its contribution that the Iranian revolution of 1979 was simply not possible without Tuden Party. That was the fatal blunder for which Tudeh Party signed its own death warrants after the revolution.

    The atrocities, with which the Islamist Government crushed the communists, surpassed those committed by the Shah against his people.

    The Tudeh Party did have a presence in Iran during the era of the pro-American Shah. However I do not think it has even a trace of it left anymore in the holy land. It is because Tudeh Party made a deadly blunder in choosing the smaller evil. It was like jumping into a pond full of piranha to escape scorching heat.

    By the way, as far as extremism and barbarianism is concerned, even the Islamic revolutionaries of Iran were angles in comparison with today’s Taliban. The Taliban cannot even tolerate a moderate molvi, what to talk of liberals and progressives.

    By opposing US and the West, our leftist comrades are indirectly supporting Talibanization. Do they expect any better treatment from Taliban, in a Talibanized Pakistan, than what was extended to the communists of Iran by the Islamic Revolutionaries? Do they think that the regional powers can defeat Talibanization without the help of international coalition forces? There are clearly two sides and no middles. Which side are we on?

    It is I presume high time, my leftist and liberal friends should rethink their present stance before it is too late for everybody.

  13. মাসুদ করিম - ৮ সেপ্টেম্বর ২০১২ (২:৪৭ অপরাহ্ণ)

    বদরুদ্দীন উমর তার এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বামরা সবাই বাম নন — এখন কারা কারা বাম এটা আমরা কিভাবে বুঝব জানি না।

    কালের কণ্ঠ : বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশে বাম ধারার রাজনৈতিক দলগুলো ক্রমেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। আপনি কী মনে করেন?
    বদরুদ্দীন উমর : বামরা সবাই বাম নন। তাঁরা শাসক শ্রেণীর বাম অংশ। প্রান্তিক অংশ। তাঁরা কি নিজেদের দলকে বিলুপ্ত করে ১৯৭৪ সালে বাকশালে যোগদান করেননি? যখন শেখ মুজিবকে হত্যা করা হলো জিয়াউর রহমান পার্টি গঠন করলেন। সিপিবি নামে আবার রাজনীতি শুরু করলেন। তাঁরা শাসক শ্রেণীরই অংশ। বাম রাজনীতিবিদরা নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁদের জামানত হারাতে হয়। এটাই প্রমাণ। পাকিস্তান আমলে যা ছিল, এখন তাও নেই। জনগণের কাছে যাওয়ার ক্ষমতা তাঁদের নেই। জনগণের কাছে যাওয়ার সঠিক নীতি নির্ধারণ করতে পারেননি তাঁরা।

    বিস্তারিত সাক্ষাৎকার : বিশেষ সাক্ষাৎকার : বদরুদ্দীন উমর | কালের কণ্ঠ ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১২

    বামরা কখনো পারবেন সেই নীতি নির্ধারণ করতে? — সেকথা অবশ্য বলেননি বদরুদ্দীন উমর — ১৯৪৭ থেকে ২০১২ পর্যন্ত পারলেন না আর কখন পারবেন, কে জানে?

    তিনি আরো বলেছেন

    কালের কণ্ঠ : রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তির প্রয়োজনীয়তার কথা দীর্ঘদিন ধরে বলা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে সেই দুই দলই!
    বদরুদ্দীন উমর : তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির কথা বামপন্থীরা বলছেন। তাঁদের অনেকের সঙ্গেই আমার কথা হয়েছে। তৃতীয় শক্তি বলতে কিছুই নেই। তাঁরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো জোট করতে চান। আওয়ামী লীগ আর বিএনপি হচ্ছে শাসকশ্রেণীর প্রতিভূ। যাঁরা তৃতীয় শক্তির কথা বলছেন, তাঁরা অবশ্যম্ভাবী বর্তমান শাসকশ্রেণীর অংশ। বামদের ঐক্য প্রচেষ্টা নতুন নয়। তাঁরা আগেও চেষ্টা করেছেন। এটা আসলে নির্বাচন সামনে রেখেই হয়। তবে তাঁদের কিছু করতে হলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ঘাড়ে দাঁড়িয়ে করতে হবে। তাদের জোট কী হবে। শূন্য প্লাস শূন্য প্লাস শূন্য তো শূন্যই হয়। এই জোট তো এরশাদকেও ডিঙাতে পারবে না।

    এসাক্ষাৎকারে তিনি অনেকের একটা ধারণার কথা বলেছেন, ২০০৭ সালের সরকারের মতো ইউনূসকে ফ্রন্টলাইনে রেখে আরেকটি সরকার আসতে পারে। এজন্য শেখ হাসিনা ইউনূসের পেছনে লেগেছেন। এটা যেহেতু অন্য অনেকের ধারণা উমরের নয় তাই এবিষয়ে কথা না বলাই ভাল। অবশ্য তিনি মনে করেন, মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দীনের সরকারের চেয়ে ওরা [ইউনূসকে ফ্রন্টলাইনে রাখা সরকার] বেশিদিন স্থায়ী হবে। এটা আবার বদরুদ্দীনের কেন মনে হল সেটা অবশ্য সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট নয়।

    কালের কণ্ঠ : তৃতীয় কোনো অরাজনৈতিক শক্তির উদ্ভব হওয়ার আশঙ্কা আছে কি?
    বদরুদ্দীন উমর : ভাশুরের নাম নিতে চায় না। এখানে সামরিক শক্তির কথা আসে। আগেই বলেছি, সামরিক শক্তি সরাসরি ক্ষমতায় আসার আশঙ্কা নেই। ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের মতো হয়তো আসতেও পারে। অনেকের ধারণা, ইউনূসকে আনা হবে। এ জন্যই হাসিনা তাঁর পেছনে লেগেছেন। তাঁরা মনে করছেন, ইউনূস ফ্রন্টলাইনে থাকবেন। এমন হলে কিন্তু মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দীনের সরকারের চেয়ে ওরা বেশিদিন স্থায়ী হবে।

  14. মাসুদ করিম - ১২ আগস্ট ২০১৩ (১:৫৮ পূর্বাহ্ণ)

    ভয়ঙ্কর সাম্যমৈত্রীর তমুদ্দন, বড়ই ভয়ঙ্কর ,মুসলিম বামের তমুদ্দন! মওলানা ইজ দা বস!

  15. মাসুদ করিম - ২ জানুয়ারি ২০১৪ (১১:০৬ পূর্বাহ্ণ)

    মুসলিম বামের রগড় তুলে এনেছেন হিমু

    পড়ুন হিমুর খুবরগুড়ে

  16. মাসুদ করিম - ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ (৭:২০ অপরাহ্ণ)

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.