প্রথিতযশাঃ সাংবাদিক,রাজনীতিবিদ, কলামিস্ট এবং মুক্তিযোদ্ধা নির্মল সেন অসুস্থ অবস্থায় ল্যাব এইড হাসপাতালে দিন কাটাচ্ছেন তা বোধ হয় সবাই সম্যকভাবে অবগত। ২০০৩ সালে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে নির্মল সেন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিঙ্গাপুরে। সে সময় ঘটনাক্রমে আমি নিজেই সিঙ্গাপুরে অবস্থান করেছিলাম। নিজের সাধ্যমত যতটুকু পারি নির্মল সেনের জন্য করার চেষ্টা করেছিলাম। প্রায় প্রতিদিনই দেখা করতে যেতাম মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। খুব একটা যে কিছু করতে পেরেছিলাম তা নয়। ভেবেছিলাম দেশে ফেরার পর বোধ হয় তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। কিন্তু তা হয়নি। বাংলাদেশে আসার পর নির্মল সেনের অবস্থার ক্রম অবনতিই হয়েছে বলা যায়। বিপ্লব রহমান তার একটি পোস্টে আপডেট দিয়েছেন যে, নির্মল সেন তার দৃষ্টিশক্তি প্রায় হারাতে বসেছেন। তার হাত-পা অসাড় হয়ে আসছে। কথা অস্পষ্ট ও জড়ানো। ঘনিষ্টজন ছাড়া তার কথার মর্মার্থ উদ্ধার করা কঠিন। অর্থিক সঙ্গতি না থাকায় নির্মল সেন গত দুই মাস আগে ঢাকার নয়াপল্টনের বাসা ছেড়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া তার গ্রামের বাড়ীতে অবস্থান করছিলেন । পরে তাঁর দুর্দশার খবর মিডিয়ায় প্রচারিত হলে চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে আসে ল্যাব এইড কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার সার্বিক চিকিৎসা সুসম্পন্ন করার জন্য এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ের অর্থায়নের ব্যাপারটা রয়েই যাচ্ছে। এ ব্যাপারে মুক্তাঙ্গন ব্লগের লেখক এবং পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে। যারা নির্মল সেনের জন্য অর্থ সাহায্য করতে ইচ্ছুক, তারা নীচের দু্টো লিঙ্কের যে কোন একটির সাহায্য নিতে পারেন - Please Help Nirmal Sen আমার বন্ধু নির্মল সেন : স্বস্তিতে নেই বিনীত, অভিজিৎ
বছরের প্রথম দিনটিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া যায় এবং বিদ্যালয়ে পড়ালেখা শুরু করা যায়- এমন কথা কদিন আগেও বিশ্বাস করা কঠিন ছিল। বরং নানা কারণে বই ছাপা হচ্ছে না, ছাপা হলেও বিদ্যালয়ে বই পাঠাতে বিলম্ব হচ্ছে বা পাঠানো হলেও সব বিষয়ের না পাঠিয়ে মাত্র কয়েকটি বিষয়ের বই পাঠানো হয়েছে- সংবাদপত্রের পাতায় ছাপানো ইত্যাদি খবরগুলো ছিল আমাদের জন্য স্বাভাবিক। শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ অবশ্য বেশ আগে থেকে ‘বছরের প্রথমদিনেই বই দেয়া হবে’ ধরনের কথাবার্তা বলছিলেন, কিন্তু মন্ত্রীরা তো কতো কথাই বলেন! কথার সঙ্গে কাজের মিল পাওয়া খুব কঠিন, তবে শিক্ষামন্ত্রী এক্ষেত্রে যে উদাহরণ সৃষ্টি করলেন, সেজন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাতেই হয়। এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে মন্ত্রীর সঙ্গে যারা আরও যারা ছিলেন, তাঁরাও ধন্যবাদার্হ হবেন। তাছাড়া বিভিন্ন জাতীয় দিবসে বিদ্যালয় খোলা রেখে দিবস-সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দিবসটি পালন করার কিছুদিন আগে গৃহীত সিদ্ধান্তটিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। আজকে বিভিন্নজনের মুখে শিক্ষার যে নিম্নমানের কথা উচ্চারিত হতে শোনা যায়, তার মূলে রয়েছে এসব নানাবিধ সমস্যা- যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ হচ্ছে বিদ্যালয়ে কম কর্মঘণ্টা। শিশুদের সারাবছরে বিদ্যালয়ে যতোক্ষণ থাকার কথা, তার চেয়ে তারা অনেক কম সময় পায় বিদ্যালয়ে থাকার। নানা ধরনের লম্বা-ছোট ছুটিছাটা তো রয়েছেই, পাশাপাশি পড়ালেখাটা যে মুখ্যত বিদ্যালয়কেন্দ্রিক হওয়া উচিত- সেই সংস্কৃতিটাও এখানে তৈরি হয় নি এখনও। এ অবস্থায় বছরের প্রথমদিনই শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করা এবং বিভিন্ন জাতীয় দিবসে বিদ্যালয় খোলা রাখার বিষয়টি অন্তত দুটি সমস্যার সমাধানের ইঙ্গিত দেয়। অথচ পূর্ববর্তী বছরগুলোতেও এরকম ভাবা যায় নি। শিশুদের পাঠ্যবইপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানা ধরনের টালবাহানা ও সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা, প্রকাশকদের মুনাফা করার প্রবণতা, বিদ্যালয় বন্ধ রাখার সংস্কৃতি ইত্যাদি নানা কিছু মিলে বছরের প্রথম বেশ কয়েকটি দিন কেটে যেত কোনো কাজ ছাড়াই। এবার যখন আগে থেকেই বছরের প্রথম দিনে বিনামূল্যে বই বিতরণে ঘোষণা দেয়া হয়, তখন থেকেই সংশয় ছিল- আদৌ কি এটা করা সম্ভব হবে? বিশেষ করে গত বছরের শেষদিকে এনসিটিবির গুদামে আগুনে প্রচুর কাগজ পুড়ে যাওয়ার এই সংশয় আরও বেড়ে যায়। এই আগুন লাগার পেছনে কী কারণ ছিল, তা অবশ্য এখনও জানা যায় নি; কিন্তু কেউ যদি এটাকে দুর্ঘটনা…
সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। [...]
১. সাংসদ হুইপদের খাদ্যবিলাস এবং জয়নুলের দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা অথবা ভ্যান গগের ‘দ্য পটেটো ইটার্স’। সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। সাম্প্রতিক বিশ্ব খাদ্য সংস্থার জরিপে দেখা গেছে : পৃথিবীতে একশো কোটি লোক অভুক্ত থাকে। কী পরিমাণ লোক ভালো-মন্দ খাবার খেয়ে থাকে তার একটা তালিকা তৈরি করা গেলে তাতে আমাদের মতো গরিব দেশের বড়লোকরাই চ্যাম্পিয়ন হবে। এত পোলাও-মাংস হজম করার পরিণতি কী, তা আপনারা সবাই জানেন – শেষ গন্তব্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল। যেটা হুইপ সাহেবের ক্ষেত্রে ঘটেছে। সরকারি টাকায় প্রচুর ঘি-পোলাও খেয়ে হার্টের ব্লক, আবার তা সারানোর জন্য সরকারি অর্থেই মাউন্ট এলিজাবেথে ভর্তি। সত্যিকার প্রহসনই বটে। আমাদের দেশের গরীব মানুষের খাদ্যতালিকা কী? তাদের কপালে কি জোটে পোলাও-মাংস? গ্রামে বসবাসরত বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর তো নুন আনতে পান্তা ফুরায়। শুধুমাত্র কাঁচামরিচ আর লবণ দিয়ে থালার পর থালা ভাত হজম করতে হয় তাদের। মাছ-মাংসের কোনো বালাই নেই, তাই প্রোটিনের ঘাটতি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। তবে গরীবের পোলাও-মাংস খাওয়ার বিষয়টি একবার নিজের চোখে দেখে অশ্রু সংবরণ করতে পারিনি। কাওরান বাজারের পেছন দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বস্তির সামনে দেখেছিলাম, বিভিন্ন বিয়েবাড়ি থেকে কুড়িয়ে পাওয়া উচ্ছিষ্ট পোলাও-মাংস রাস্তার পাশে ভাগ দিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। আর কেউ কেউ কিনে নিয়ে দিব্যি পরমানন্দে খাচ্ছে সেই খরখরে পচা খাবার! এত বৈষম্যপীড়িত দেশ পৃথিবীর কোথাও আছে কিনা কে জানে। মাঝে-মাঝে বিদেশীরা আমাদের দেশের দারিদ্র্য নিয়ে আমাকে নানা প্রশ্ন করে; আমি তাদের বলি, আমাদের বড়লোকদের তো দেখোনি, দেখলে নিশ্চয় অবাক হবে। গুলশান, বনানী, বারিধারাতে এক চক্কর ঘুরিয়ে আনলে তোমাদের বিশ্বাসই হতে চাইবে না বাংলাদেশের গরিবিয়ানা হাল। আমাদের মন্ত্রী মিনিস্টার সাংসদ আর আমলাদের যে ঠাট-বাট তা দেখে হয়তো মূর্ছা যাওয়ার দশা হবে তোমাদের। যে-ধরনের গাড়িতে তারা চড়ে, তা হয়তো জন্ম দেবে আরেকটি রেকর্ডের – পৃথিবীর…
গত বছর অরুণ সোমের কাছ থেকে দূরভাষে জেনেছিলাম, তিনি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত, কেননা তাঁর ছোটভাই বেশ কিছুদিন ধরে তখন রোগশয্যায়। ততদিনে শরীরে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে দুরারোগ্য কর্কটরোগ। পরে একবার খবর নিয়ে জেনেছি, চিকিৎসা চলছে, কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, দিন দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে। এরপর গড়িয়ে গেছে অনেকটা সময়। ক’দিন আগে দূরভাষে কুশল জানতে চাইলে অরুণ সোম মাসুদ করিমকে জানান, তল্স্তোয়ের ‘যুদ্ধ ও শান্তি’-র অনুবাদের পাণ্ডুলিপি অনেকদিন ধরেই পড়ে আছে সাহিত্য অকাদেমিতে, দস্তইয়েভ্স্কি-র ‘কারামাজোভ্ ভাইয়েরা’-র অনুবাদও অনেকটা এগিয়েছে, আর তাঁর ছোটভাই মারা গেছেন জুলাইয়ের ১১ তারিখে। [...]
গত বছর অরুণ সোমের কাছ থেকে দূরভাষে জেনেছিলাম, তিনি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত, কেননা তাঁর ছোটভাই বেশ কিছুদিন ধরে তখন রোগশয্যায়। ততদিনে শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে দুরারোগ্য কর্কটরোগ। পরে একবার খবর নিয়ে জেনেছি, চিকিৎসা চলছে, কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, দিন দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে। এরপর গড়িয়ে গেছে অনেকটা সময়। ক’দিন আগে দূরভাষে কুশল জানতে চাইলে অরুণ সোম মাসুদ করিমকে জানান, তল্স্তোয়ের ‘যুদ্ধ ও শান্তি’-র অনুবাদের পাণ্ডুলিপি অনেকদিন ধরেই পড়ে আছে সাহিত্য অকাদেমিতে, দস্তইয়েভ্স্কি-র ‘কারামাজোভ্ ভাইয়েরা’-র অনুবাদও অনেকটা এগিয়েছে, আর তাঁর ছোটভাই মারা গেছেন জুলাইয়ের ১১ তারিখে। ২ ভদ্রলোককে প্রথম দেখি ২০০৬-এর ১০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে। অরুণ সোম পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, ‘আমার ছোট ভাই’। শ্মশ্রুময় মুখ; সৌম্যদর্শন মাঝারি গড়নের একজন মানুষ। অল্পদিন আগে কলেজের অধ্যাপনা থেকে অবসর নিয়েছেন। অগ্রজের গড়িয়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি ফিরে যাবেন পার্ক সার্কাসে; আমি যাব আশুতোষ চৌধুরী এভিনিউর সিমা আর্ট গ্যালারিতে। সন্ধ্যা গড়িয়ে গেছে, যোগেন চৌধুরীর প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়ে গেছে ততক্ষণে। আমাকে তাড়াতাড়ি পৌঁছে দেয়ার জন্য ট্যাক্সি (ক্যাব) নিতে চাইলেন প্রথমে। অনেকটা পথ হেঁটেও পাওয়া গেল না। অগত্যা চেপে বসতে হলো বাসে। পুরো পথ জুড়েই কথা চলল। নিজের কথা কিছুই বললেন না, কিন্তু প্রশ্ন করে করে জেনে নিতে লাগলেন আমাদের খবর, বাংলাদেশের খবর। তাঁর শৈশবের প্রথম কয়েক বছর কি ঢাকায় কেটেছে? কেমন ছিল সেইসব দিন? এসব প্রশ্ন করা হয়নি সেদিন। যদিও দ্বিজেন শর্মার কাছ থেকে আগেই জেনেছিলাম, অরুণ সোমের আদিবাড়ি পূর্ববঙ্গে, তাঁর ছেলেবেলা কেটেছে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীতে। পঞ্চাশের দাঙ্গার পর তাঁর বাবা সপরিবারে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। বাস থেকে নেমে খানিকটা পথ হাঁটতে হয়। যতদূর মনে পড়ে রাস্তার পাশেই ছিল বড়ো একটা শাদা মন্দির, আর তার অল্প পরেই সিমা আর্ট গ্যালারি। আমার বর্ষীয়ান সঙ্গীকে জানাই, কয়েক দিন আগেই একবার এসেছি, চিনতে অসুবিধে হবে না। আমার আপত্তি সত্ত্বেও সিমা যে-দালানে সেই সানি টাওয়ারের নীচতলা অবধি আমাকে পৌঁছে দিয়ে তবেই বিদায় নিলেন ভদ্রলোক। ৩ ‘তোত্তোচান’-এর সূত্রে বিদেশি সাহিত্যের অনুবাদ নিয়ে কথা হচ্ছিল বইটির অনুবাদক মৌসুমী ভৌমিকের সঙ্গে, শেষ প্রচ্ছদে যাঁর পরিচয় দেয়া হয়েছে একালের ‘বিশিষ্ট পপশিল্পী’ হিসেবে। কথায় কথায় উঠে পড়ল মস্কোর প্রগতি ও ‘রাদুগা’ প্রকাশনের মনকাড়া অনুবাদ বইগুলোর কথা, সেই সূত্রে…
বিএনপি-জামাতের পাতা ফাঁদে পা দিলো আওয়ামীলীগ!!! বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামকরণে বিএনপি-জামাত অত্যন্ত কূটকৌশলে ইসলাম ধর্ম ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহার করে ফায়দা লুটছে রাজনীতির ...
বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকার ২০০১ সালের শেষদিকে ক্ষমতায় আসার পর অত্যন্ত কূটকৌশলের মাধ্যমে সারা দেশেই তারা বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে দেয়। এক্ষেত্রে তারা ইসলাম ধর্ম আর মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বীর সেনানীদের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতেও দ্বিধাবোধ করেনি। চট্টগ্রামেই বিএনপি-জামাতের এই হীন চক্রান্তের অন্তত দুটি জলজ্যান্ত নমুনা চট্টগ্রামসহ দেশবাসীর চোখের সামনেই আছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামের কালুরঘাটস্থ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নামে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠকারী আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নানের নামে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নামও তারা পরিবর্তন করে ‘শাহ আমানত বিমান বন্দর’ নামকরণ করে। হযরত শাহ আমানতের নাম পরিবর্তন করতে গেলে একে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে, এবং এর ফলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়বে যে কেউ। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের একজন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিনকে ব্যবহার করেছে বিএনপি-জামাত জোট সরকার, যাতে করে এ নিয়েও অযথা বিতর্ক সৃষ্টি করা যায়। আর বিএনপি-জামাতের পাতা ফাঁদেই পা দিলো বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার -- এমনই মনে করছেন অনেকে। প্রসঙ্গত গত ১ জুলাই ২০০৯ বুধবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়ামের নাম মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম শ্রম, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী জহুর আহমদ চৌধুরীর নামেই পুনর্বহাল করা হয়। এই নতুন নামফলক উন্মোচন করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান। এর আগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানাধীন সাগরিকায় প্রায় ৩০ একর জায়গার উপর নির্মিত এই বিভাগীয় স্টেডিয়ামের নাম জহুর আহমদ চৌধুরীর নামেই করা হয়েছিল। সে সময়, ২০০০ সালের ১৭ নভেম্বর স্টেডিয়ামের আনুষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্তর এবং নির্মাণকাজ শেষে ২০০১ সালের ১৭ জুন নামকরণ করা হয়েছিল ‘চট্টগ্রাম বিভাগীয় জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম’। কিন্তু ২০০১ সালের শেষদিকে বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে এই নাম পরিবর্তন করে 'বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম' নামকরণ করে। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের ৫ বছর এবং গত ২ বছর (মোট ৭ বছর) স্টেডিয়ামটি 'বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম' নামেই পরিচিতি পায়। সম্প্রতি বর্তমান সরকার দেশের ১২টি ক্রীড়া স্থাপনাকে পূর্বের নামে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে গত ২৫ জুন এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্দেশ দেয়। সে অনুযায়ীই আজ চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়ামের…