'আঘাতের তালিকা' যাদের কাছে 'উইশলিস্ট' তারা নরপিশাচ -- এদেরকে প্রতিহত করুন [...]

লেখক হিসেবে আমি খুব তালিকার ভক্ত : চিন্তাশীলতা ও নান্দনিকতার নানা সময়ের নানা প্রয়োজনের তালিকা আমি তৈরি করি অন্যদের তৈরি করা তালিকাও খুঁজে দেখি। কিন্তু এ কোন তালিকা যা প্রণয়ন করে এই পৃথিবী থেকে কাকে কাকে সরিয়ে দিতে হবে, এ কোন নৃশংসতা যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে 'আঘাতের তালিকা' নামে প্রণীত ও অনুসরিত এবং বাংলাদেশে যা চলছে আজো সব মুক্তিসংগ্রামীকে 'আঘাতের তালিকা'য় তুলে এনে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে হবে? এই 'আঘাতের তালিকা' যাদের কাছে 'উইশলিস্ট' তারা নরপিশাচ -- এদেরকে প্রতিহত করুন। যদি তা করতে না পারেন তাহলে এমন এক পৃথিবীতে বসবাস করবেন যেখানে আমার বা আমাদের মতো যারা 'চিন্তাশীলতা ও নান্দনিকতার তালিকা' বানাতে ভালবাসেন তাদেরকে ছাড়াই জীবনযাপন করবেন। আমাকে যারা ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন বা আমাদেরকে যারা ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন তাদের সবাই না হলেও অনেকে নিশ্চয় মানবেন আমাকে ছাড়া বা আমাদেরকে ছাড়া আপনাদের জীবন কত নিরানন্দময় হবে।

নাফিস অপরাধী নাকি নির্দোষ, তা এই প্রবন্ধের বিষয় নয়, আদালতেই তা নির্ধারিত হবে। আমি একটু ভিন্ন আঙ্গিকে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছি। একটা প্রশ্ন বরাবরই আমাকে উদ্বিগ্ন করে। কেন এই সব তরুণ যুবকরা কেন সন্ত্রাসবাদের পথ বেছে নিচ্ছে, কখনোবা হয়ে উঠছে আত্মঘাতী? ঘটনা তো একটা দুটো নয়, সারা বিশ্ব জুড়েই ঘটে চলেছে শত শত। আমেরিকায় ২০০১ সালে ৯/১১ এর তাণ্ডবলীলা শেষ হতে না হতেই ২০০৫ সালে লন্ডনের পাতাল রেলে ঘটেছিল ৭/৭ এর ঘটনা। নাফিসের তরুণ বয়স দেখে অনেকে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। [...]

[ডিসক্লেইমার – নাফিস নামটি প্রবন্ধে বেশ কয়েকবার ব্যবহৃত হলেও তিনি এ প্রবন্ধের মূল বিষয় নন। নাফিসকে অপরাধী ভেবে না নিয়ে পুরো বিষয়টিকে অর্থাৎ উগ্র বিশ্বাসের উৎসের ব্যবচ্ছেদ করাই হবে এই প্রবন্ধের মূল লক্ষ্য। নাফিস যদি আমেরিকার আদালতে নিজেকে নিরপরাধী প্রমাণ করে বেড়িয়ে আসতে পারেন, তবে তার চেয়ে সুখকর বিষয় আমার জন্য, আমাদের জন্য আর কিছুই হতে পারে না। এটি ঘটলে সবচেয়ে খুশি হব আমিই।  আমেরিকায় অবস্থিত প্রবাসী বাঙালিরাও শঙ্কামুক্ত হতে পারবেন। নাফিস নয়, বরং নাফিস, করিম, সাবেত, অনিরুদ্ধ যেই হোক না কেন, তরুণদের বিশ্বাস-নির্ভরতা কীভাবে এবং কেন উগ্রবাদী রূপ নিয়ে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা তৈরি করে, কিংবা করতে পারে, সেটা বিশ্লেষণ করাই এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য। নাফিসের ঘটনাটি ঘটার পর পরই এ বিষয়ে এ কটি ব্লগ লেখার চিন্তা করলেও পরে বিবিধ কারণে বিলম্ব ঘটে।  নির্মাণ ব্লগে অনেকদিন ধরেই কিছু লেখা হয় না, এ চিন্তা থেকেই লেখাটা এখানে দেয়া।  লেখাটির কিছু উদাহরণ ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ বইটি থেকে নেয়া।]   কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিস নামে এক একুশ বছরের এক যুবক যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গ্রেফতার হয়েছেন - এটি  গত সপ্তাহগুলোতে পত্র-পত্রিকার আলোচিত খবর ছিল। নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ভবন বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও এফবিআই। অনেক মিডিয়ায় আবার এও বলা হয়েছে যে ২০০১ সালে ৯/১১ এর ঘটনার পর এটাই নাকি আমেরিকায় সবচেয়ে বড় ‘টেরোরিস্ট প্লট’। আমাদের জন্য এটি উদ্বেগের, কারণ এই প্লটের মূল উদ্যোক্তা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে একজন বাংলাদেশীকে। সন্দেহভাজনের তালিকায় বাংলাদেশের নাম উঠে আসায় নতুন করে শঙ্কা তৈরি হয়েছে আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে। নাফিসের এই ঘটনা অবশ্য বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে সারা বিশ্ব জুড়েই নানা ধরনের সন্ত্রাসবাদ, আত্মঘাতী বোমা হামলা এবং ‘সুইসাইড টেরোরিজম’এর মাধ্যমে নির্বিচারে হত্যা এবং আতংক তৈরি ধর্মীয় উগ্রপন্থী দলগুলোর জন্য খুব জনপ্রিয় একটা পদ্ধতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর  আল-কায়দার ১৯ জন সন্ত্রাসী চারটি যাত্রীবাহী বিমান দখল করে নেয়। তারপর বিমানগুলো কব্জা করে আমেরিকার বৃহৎ দুটি স্থাপনার ওপর ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছিল। নিউইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার এবং ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর বা পেন্টাগনে ঐ হামলা চালানো…

৩ জুন ২০১২তে বাস থামিয়ে যে দশ জন মুসলিমকে ছুরির আঘাতে হত্যা করা হয়েছিল তার মধ্যে আট জনই ছিলেন রেঙ্গুনের মুসলমান যারা রাখাইন প্রদেশে তবলিগি চিল্লা শেষে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন। [...]

আগামী ১৬ জুন নোবেল ফাউন্ডেশন এক বিলম্বিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৯৯১ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার তুলে দেবেন সু কি'র হাতে। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ও তার পূর্বাপর ইউরোপ সফরের উদ্দেশ্যে আজ রেঙ্গুন ছাড়বেন সু কি। বর্তমানে বার্মার রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিম-রাখাইন বৌদ্ধ যেদাঙ্গা হচ্ছে তা পেছনে ফেলে ইউরোপ সফর এবং সফর শেষে দেশে ফিরে আসাই এখন তার মূল লক্ষ্য, তাই দায়সারা মন্তব্যের চেয়ে বেশি কিছু বলছেন না তিনি। অথচ ৩ জুন ২০১২তে বাস থামিয়ে যে দশ জন মুসলিমকে ছুরির আঘাতে হত্যা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে আট জনই ছিলেন রেঙ্গুনের মুসলমান যারা রাখাইন প্রদেশে তবলিগি চিল্লা শেষে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন। রাখাইন বৌদ্ধরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে ২৮ মে ২০১২তে রাখাইন এক মেয়েকে কয়েকজন রোহিঙ্গা মুসলিমের ধর্ষণ ও পরবর্তীতে খুনের রেশ ধরে। বার্মার রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলমানেরা ২০১০ সালে ভোটার লিস্টে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন এবং কথা ছিল সেনাবাহিনী সমর্থিত দলের প্রার্থীকে ভোট দিলে তাদেরকে বার্মার জাতীয়তাও দেয়া হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো তৎপরতা থাইন সাইন সরকারের মধ্যে দেখা যায়নি। রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে সন্ত্রাসবাদী আছে এটা ঠিক, কিন্তু সাধারণ রোহিঙ্গা মুসলমানরা তো সন্ত্রাসবাদী নয়। সন্ত্রাসবাদীদের চিহ্নিত করে সাধারণ রোহিঙ্গা মুসলমানদের জাতীয়তা দেয়ার প্রশ্নে সু কি'র কোনো স্পষ্ট অবস্থান এখনো আমাদের চোখে পড়েনি। জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইট ওয়াচ বাংলাদেশকে বলছে বাংলাদেশের সীমান্ত রোহিঙ্গা সাধারণ শরণার্থী মুসলমানদের জন্য শিথিল করে দিতে। কিন্তু জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইট ওয়াচ নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্ত সু কি'কে কেন বলছে না, রাখাইন প্রদেশেই এই শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ ক্যাম্প সৃষ্টিতে সহায়তা করতে? জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা যদি এরকম ক্যাম্প সৃষ্টি করতে পারে তাহলে সেই ক্যাম্পে যাবতীয় সাহায্য সহযোগিতা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত থাকবে। এবং বাংলাদেশে শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও পর্যায়ক্রমে সেই ক্যাম্পে স্থানান্তরিত করতে নীতিগত সহায়তা চাইবে। আর যদি এর জন্য জাতিসংঘের শান্তি মিশন প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রেও বাংলাদেশ সাড়া দেবে। আর এই সবকিছু সম্ভব সু কি যদি এবিষয়ে নিজেকে জড়াতে চান। কিন্তু সু কি'র যা অবস্থা তাতে তো শুধু এটাই মনে হচ্ছে তিনি নোবেলে ও সংসদে আটকা পড়ে গেছেন।

ভাই ভাই[...]

হিন্দু মুসলমান ভাই ভাই, বোনদের কারণে সম্প্রীতি নাই।

এটাই ছিল সোভিয়েতের হতাশা। এবং এই হুমকির মধ্যে বসবাস করতে গিয়ে সোভিয়েত তার সম্পূর্ণ যোগাযোগ হারিয়েছিল এই তিন কমিউনিস্ট পার্টির সাথে।[...]

টুইট করতে করতে অনেক সময় এমন কিছু গুচ্ছ টুইট হয়ে যায় যেগুলোকে পোস্টের রূপ সহজে দেয়া যায়। সেকাজটাই এখানে করা হল। আগে এরকম প্রচুর টুইট কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। এখন থেকে ভাবছি, এরকম টুইটগুলোকে 'টুইট থেকে পোস্টে' সিরিজে সংগ্রহ করে রাখব। এই পোস্টে সংকলিত টুইটগুলো ক্রমান্বয়ে : এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ, ছয়, সাত, আট, নয়, দশ, এগারো, বারো, তেরো, চৌদ্দ, পনেরো, ষোলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারত, না পাকিস্তানও স্বাধীন হয়েছিল -- সেদিন অবিভক্ত ভারতের কমুনিস্ট রাজনীতির ভাগটা কিভাবে হয়েছিল? আমেরিকা তখন ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের পর দৃষ্টি দিয়েছিল ভারতের দিকে, আর তখন ভারত = ভারত + পাকিস্তান, কিন্তু আমেরিকার দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত হয়েছিল অবিভক্ত ভারতে কমুনিজমের প্রসার ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের অবদানের উপর ভিত্তি করে, তাদের ভাষাভাই ও সাম্রাজ্যের পুরনো গুরু ব্রিটিশরা এঅঞ্চলের ধর্মে মধ্যযুগীয় উপাদানের মধ্যে বিভক্তির বিন্যাস দেখে এবং মোগল আমলের হিন্দুনিগ্রহের পাল্টা মুসলিমনিগ্রহ আসবে স্বাধীন এক ভারতের হিন্দুগরিষ্ঠতার হাত ধরে -- এমন আশঙ্কাকে উসকে দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলমানের হাতে রায়টের রাজনীতি তুলে দিয়েছিল। সেই রায়ট স্বাধীনতা সংগ্রামের রায়তের ঐক্যকে রাতারাতি ফাটল ধরিয়ে দিয়ে বিচ্ছিন্ন বিভক্ত দুটি রাষ্ট্রকে আটপৌরে বাস্তবতার মতো একবারে স্বাভাবিক একটা ঘটনায় রূপ দিয়েছিল। সেই দুটি রাষ্ট্রের একটি ছিল রাষ্ট্র আর আরেকটি ছিল জোড়া ঠেস, পশ্চিমেরটি ঠেস দিয়েছিল ভারত ও পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে এবং পূর্বেরটি ঠেস দিয়েছিল ভারত ও পূর্ব এশিয়ার মধ্যে। এই ব্রিটিশরা যেখানে শেষ করল সেখান থেকেই শুরু করতে আসল তারই ভাষাভাই আমেরিকা। তার মাথার পেছনে কমুনিজমের ভয়, সেই ভয় তাড়াতে সে সামনে নিয়ে এল ব্রিটিশ প্রশাসনের রেকর্ড থেকে ইসলামবাদী উগ্রতা, তাকে যুগোপযোগী করে দিল জঙ্গি রাজনৈতিক রূপ। ভারত পাকিস্তান চলে গেল সোভিয়েত আমেরিকার দ্বন্দ্বের বলয়ে। তখন সেই ১৯৫৪ সালে ভারত পাকিস্তানে কি দুটি কমিউনিস্ট পার্টি ছিল? নাকি ছিল তিনটি : ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি, পশ্চিম আর পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পর্টি। এই ত্রিশঙ্কু কমিউনিস্ট অস্তিত্বই ছিল আমেরিকার সুযোগ। আর এটাই ছিল সোভিয়েতের হতাশা। এবং এই হুমকির মধ্যে বসবাস করতে গিয়ে সোভিয়েত তার সম্পূর্ণ যোগাযোগ হারিয়েছিল এই তিন কমিউনিস্ট পার্টির সাথে। এই করতে করতে ১৯৭১ এলো, সোভিয়েতের হুমকি সুযোগ হতাশা একযোগে জ্বলে উঠল, বাংলাদেশ স্বাধীন হল।…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.