আমরা এশিয়ার উন্নয়নের অংশীদার হতে চাইলে, আমরা এশিয়ার পূর্ব পশ্চিমের সিংহদুয়ার হতে চাইলে, আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি গভীর সম্পর্কে জড়াতে হবে জাপানের সাথে।[...]

ভারত ও চীন সুপ্রাচীন সভ্যতা ও বর্তমানের দুই রাজনৈতিক অর্থনৈতিক শক্তি হলেও জাপান মানবাধিকার মানবিক অর্জন এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তির সূক্ষ্ম দক্ষতায় ওই দুই দেশের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে। আমরা ভারত সভ্যতার মোগল ভারতের ও ভারত রাজের অংশ এবং বর্তমান ভারতের মধ্যবর্তী প্রতিবেশী আর চীন উত্তরে ও পূর্বে আমাদের এতই কাছে বাংলাদেশের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক রাষ্ট্রীয় অংশ পাকিস্তানের চেয়েও আজ নিকটবর্তী প্রতিবেশী। বাংলাদেশ শুধু ভারত চীনের মধ্যে এই বিশেষ ভূরাজনৈতিক অবস্থানেই আবদ্ধ নয়, সৌভাগ্যের কথা সামুদ্রিক পথে জাপানের সাথে বাংলাদেশের দূরত্ব প্রায় উত্তর চীনের সমান। এখন এই ‘পুবে তাকাও’ নীতির সবচেয়ে কৌশলগত প্রাসঙ্গিক ভৌগোলিক অবস্থান আমাদেরই – আরো ভাল করে বিচার করলে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের। এটা সুনিশ্চিত ‘পুবে তাকাও’ নীতির ভৌগোলিক সিংহদুয়ার হবে এই বাংলাভাষী অঞ্চল ( অনেকে ‘সেতু’ বলতে চান, না, – সেতু নয়, আমাদের ওপর দিয়ে নয়, আমদের ভেতর দিয়ে সবাইকে পূর্বে যেতে হবে)। ফলে এই অঞ্চলের জন্য প্রয়োজন হবে এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। বর্তমান পৃথিবীতে অবকাঠামোর উন্নয়নে সবচেয়ে প্রাগ্রসর দেশ জাপান। আমরা এশিয়ার উন্নয়নের অংশীদার হতে চাইলে, আমরা এশিয়ার পূর্ব পশ্চিমের সিংহদুয়ার হতে চাইলে, আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি গভীর সম্পর্কে জড়াতে হবে জাপানের সাথে। আর জাপানের দিক থেকে এটা হবে এক সুবর্ণ সুযোগ, এই বিরাট অঞ্চলের অবকাঠামোয় বিনিয়োগ ও উঁচুমানের দক্ষতা ফেরি করে, তারা কাটিয়ে উঠতে পারবে তাদের দেশের ভয়ংকর মন্দার প্রভাব। তাই বাংলাদেশের বিদেশ নীতিতে জাপানের গুরুত্বকে শুধু রিকন্ডিশন গাড়ি বাণিজ্য ও অনুদানের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে একে আরো উন্নত ও বহুমুখী করে তোলাই হবে এ সরকারের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক বিনিয়োগ, অবশ্য সরকার যদি সে-লক্ষ্যে কাজ করতে চায় – না চাইলে বা না পারলে বর্তমানের এই ‘পুবে তাকাও’ নীতির সুযোগের কোনো সুফল না তুলেই শূন্য হাতে বসে থাকা ছাড়া বাংলাদেশ সরকারের আর কিছুই করার থাকবে না – এবং বাংলাদেশ সরকারের এই ধরনের ব্যর্থতার ভাণ্ডার যথেষ্ট সমৃদ্ধ বলেই, আজ আরো বেশি বাংলাদেশ সরকারের সাথে দক্ষ জাপানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতার সওয়াল করছি। ভারতের জন্য সংযোগ, চীনের জন্য গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ বরাদ্দ হলে জাপানের জন্য রয়ে গেল অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিক্ষায় জাপানের বিনিয়োগ ও দক্ষতার সবল অংশগ্রহণ। বাংলাদেশকে ‘পুবে…

উত্তরপশ্চিমে বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে ভারতীয় মাওবাদীরা পৌঁছে গেছে। তারা এখন মুর্শিদাবাদ নদীয়া ও মালদায় ঘাঁটি গড়েছে।[...]

উত্তরপশ্চিমে বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে ভারতীয় মাওবাদীরা পৌঁছে গেছে। তারা এখন মুর্শিদাবাদ নদীয়া ও মালদায় ঘাঁটি গড়েছে। এটা মাওবাদীদের কৌশলগত সম্প্রসারণ। সম্প্রতি মাওবাদীদের অপারেশনগুলো ভারত সরকার ও মিডিয়াকে ভাবাচ্ছে। এতদিন বলা হত তাদের অস্ত্রের উৎস ভারতের অস্ত্র বাজারেই সীমাবদ্ধ। এখন কিন্তু সরকার ও মিডিয়া উভয়েরই আঙ্গুল উঠেছে বাংলাদেশের অস্ত্রের কারবারিদের দিকে। ভারতীয় মিডিয়া এখন বলছে বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিম সীমান্তে মাওবাদীরা এসে কিছু অস্ত্র এর মধ্যে কিনে নিয়ে গেছে এবং আরো অস্ত্রের বায়নানামা সম্পাদনের প্রয়োজনীয় বোঝাপড়া সেরে গেছেন এবং এখানকার অস্ত্রের কারবারিদের সাথে তাদের একটি গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আর এই অঞ্চলের চরমপন্থিদের সাথেও মাওবাদীদের দুয়েকটি বৈঠকের কথাও মিডিয়া বলছে এবং কিছু সংবাদমাধ্যম এতটুকু পর্যন্ত বলছে যে ভারতীয় মাওবাদীরা বাংলাদেশে মাওবাদের সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখতে চায়। ভারত সরকার শুধু বলেছে, মুর্শিদাবাদ নদীয়া ও মালদা তিন জেলায় যে বিস্তীর্ণ এলাকা আছে সীমান্তে, সেই সীমান্ত পথকেই অস্ত্রের চালানের কাজে ব্যবহার করতে চায় মাওবাদীরা। মাওবাদীদের কয়েকজন নেতা নাম বদল করে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো ঘুরে গেছেন।আমরা তো বাংলাদেশে আমাদের অস্ত্র কারবারিদের সম্বন্ধে কিছুই জানি না। কিন্তু সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অস্ত্র কারবারিদের নাম আছে। আগে বাংলাদেশের ইসলামি জঙ্গি, উলফা এবং ভারতের ইসলামি জঙ্গিদের সাথে এখানকার অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ভয়ঙ্কর সম্পর্কের কথা আমরা অনেক শুনেছি। কিন্তু ঠিক কারা কারা এই অস্ত্র ব্যবসায়ের গডফাদার, তাদের সংখ্যাই বা কত, তার কোনো ধারণা আমরা আজো আমাদের সরকার বা মিডিয়ার কাছ থেকে পাইনি। এই ধরনের নাশকতার শক্তিধর চক্রের সমীক্ষা জানতে সরকার ও মিডিয়া ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের সব সরকার ও সব মিডিয়া এই বিষয়টিতে সবসময়ে অত্যন্ত রক্ষণশীল ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু সময় হয়ে গেছে, এখনই সরকার ও মিডিয়াকে রক্ষণশীল ভূমিকা পরিত্যাগ করতে হবে না হয় বাংলাদেশের অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সব গোপন আঁতাতগুলো ভয়ঙ্কর সব পদক্ষেপের দিকে এগিয়ে যাবে। যেদিকটি সরকার ও মিডিয়ার সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখা উচিত, তা হল, সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা যেন মাওবাদী ও বাংলাদেশের অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোনোভাবেই গোপন আঁতাতটি শক্তিশালী না হয়ে ওঠে। কারণ এই আঁতাত যদি একবার দৃঢ় হয় তবে বাংলাদেশে মাওবাদী উগ্রপন্থা বিস্তারের হাজারটা সম্ভাবনাহীনতার কারণ থাকলেও এই উগ্রপন্থার সম্প্রসারণ ঘটবেই – এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। কারণ…

ন্যাশনাল আর্ট মিউজিয়াম অব চায়না-য় ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত সাম্প্রতিক কালের বৃহত্তম শিল্প-প্রদর্শনী। গণচীনের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে চীনের জাতীয় ইতিহাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত মূর্ত হয়ে উঠেছে শিল্পীদের চিত্রকর্মে ও ভাস্কর্যে [...]

তুষারে ছাওয়া দুর্গম বিস্তীর্ণ প্রান্তর পেরিয়ে এগিয়ে চলছে লাল ফৌজ বিপ্লবের অভীষ্ট লক্ষ্যে। কিংবা বন্দুক হাতে বিপ্লবীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে শত্রু সেনার শিবিরে। দাউ দাউ করে জ্বলছে যেন বিপ্লবের আগুন। অথবা চেয়ারম্যান মাওয়ের নেতৃত্বে অগণিত মুক্তিকামী মানুষের মিছিল। এই ছিল দৃশ্যপট, অর্থাৎ ঊনপঞ্চাশের চীন বিপ্লবের পরে চীনা চিত্রকলার চেহারাটা এইরকমই ছিল। বিপ্লবের মন্ত্রে দীক্ষিত শিল্পীরা। মানুষের ছবি আঁকতে হবে, ক্যানভাসে উঠে আসবে সমাজবাস্তবতার চিত্র। বিপ্লবের রক্তিম সূর্যের আভা দিগন্ত জুড়ে, যুদ্ধে যুদ্ধে ক্যানভাস রঞ্জিত – প্রতিরোধের ছবি, শৌর্য বীর্য আর বীরত্বগাথার ছবি। তবে ১৯৪৯ থেকে ২০০৯ এই ষাট বছরে চীনের বিস্তর পরিবর্তন হয়েছে, হোয়াং নদীতে বিস্তর জল গড়িয়েছে, আর চীন তার দারিদ্র্য ঘুচিয়ে পৃথিবীর প্রধানতম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। একসময় কমিউনিস্ট চীনে শিল্প সংস্কৃতি ছিল শুধু প্রপাগান্ডার হাতিয়ার, শুধুই প্রতিফলিত হতো সমাজবাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় ক্যানভাস জুড়ে ছিল শুধু লাল ফৌজের বীরত্বগাথা। তবে ২০০৯ সালের প্রেক্ষাপট যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন – বেইজিং এখন পরিণত হয়েছে বিশ্বের প্রধানতম আধুনিক শিল্পের কলাকেন্দ্রে। কেউ কেউ বলছেন, চীন এখন সমকালীন শিল্পের এক অভূতপূর্ব কেন্দ্র। বেইজিং এখন নিউইয়র্ক, পারী আর তোকিওর কাতারে। শিল্পীরা বিস্তর আধুনিক ও উত্তর-আধুনিক ধারার নানামুখী শিল্পকর্মকাণ্ডে নিজেদের ব্যস্ত রাখছেন। বিশ্বব্যাপী বড় বড় শিল্প-আয়োজনগুলোতে চীনাদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। চীনা শিল্পীদের দিনও পালটে গেছে। বেশ উচ্চমূল্যে বিকোচ্ছে তাঁদের শিল্পকর্ম। তাঁদের কৃচ্ছ্রতাসাধনের দিন শেষ। দামি গাড়ি, বিশালাকৃতির স্টুডিও – এগুলিই যেন তাঁদের বিলাসী জীবনের অনুষঙ্গ। তবে সাম্প্রতিক এক ইতিহাস-প্রদর্শনীতে চীন যেন ফিরে গেছে সেই সময়ে, সেই বিপ্লবের যুগে। যেন অনেকটা পিছনের দিকে ফিরে তাকানো একবার। গণচীনের ষাট বছর পূর্তিতে নানা কর্মকাণ্ডে মুখরিত বেইজিং শহর; সর্বক্ষেত্রেই বিশেষ আয়োজন চোখে পড়ার মতো। এই উপলক্ষে সরকারি প্রযোজনায় মুক্তি পেয়েছে বড় বাজেটের চলচ্চিত্র ‘দি ফাউন্ডিং অব এ রিপাবলিক’। বিপ্লবের সব মহানায়কের উপর ভিত্তি করে এই ছবির কাহিনি; মাও সে তুং, চৌ এন লাই, চিয়াং কাই শেক – সবাই এই ছবির চরিত্র। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে হংকং-এর দুই মহাতারকা জ্যাকি চান এবং জেট লি প্রথমবারের মতো এই ধরনের ছবিতে অভিনয় করলেন। আর চারুকলার বিষয়ে যে-বড় আয়োজন করা হয়েছিল, তার খবর দিল আমার পিএইচ.ডি. ক্লাসের সহপাঠী ছাও ওয়ে। ছাও ওয়ে সেন্ট্রাল…

লেফটেনেন্ট জেনারেল গোলাম জিলানি খান, এক বিখ্যাত পাকিস্তানি সেনা ব্যক্তিত্ব, যিনি ১৯৭১-১৯৭৮ পর্যন্ত পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, ১৯৭৭-এ তাঁর বাংলাদেশ সফরের কিছু দিন পরই সেবছরের নভেম্বরে জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করলেন ডিএফআই [..]

লেফটেনেন্ট জেনারেল গোলাম জিলানি খান, এক বিখ্যাত পাকিস্তানি সেনা ব্যক্তিত্ব, যিনি ১৯৭১-১৯৭৮ পর্যন্ত পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, ১৯৭৭-এ তার বাংলাদেশ সফরের কিছু দিন পরই সেবছরের নভেম্বরে জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করলেন ডিএফআই ( ডিরেক্টরেট অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), যার নাম পরে কিছুটা পরিবর্তন করে রাখা হয় ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স)। প্রাথমিকভাবে এই সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সব অফিসারের প্রশিক্ষণ হতো আইএসআই-এর নিবিড় তত্ত্বাবধানে, এবং এখনো পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানের ট্রেনিং হয় পাকিস্তান, আমেরিকা ও ইংল্যান্ডে। এর পুরো মডেলটাই পাকিস্তানি আইএসআই দ্বারা প্রবর্তিত এবং আইএসআই-এর মতোই ডিজিএফআই-ও জন্মের পর থেকেই দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক সংগঠন। জন্মের পরপরই তাদের প্রধান কাজ ছিল জিয়ার জন্য একটি রাজনৈতিক দল গড়ে তোলা এবং উনিশশ আটাত্তরেই তারা সফলভাবে কাজটি সম্পন্ন করে, এবং শুরু হয় বিএনপির পদযাত্রা। এরপর জিয়ার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এরশাদের আগমনে তার জন্যও যখন দরকার হয় একটি রাজনৈতিক দল তখনই তাদের হাতে তৈরি হয় দ্বিতীয় রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি। কিন্তু ডিজিএফআই সবচেয়ে বেশি আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে ২০০৭-২০০৮ আর্মি শাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। এসময়ে ওদের মাইনাস টু থিওরি, আসলে ছিল কৌশলে হাসিনাকে ধ্বংস করা, যেপথে ২১ আগস্টে বোমা হামলা, সেপথেই সামরিক গোয়েন্দা চাপে হাসিনাকে অর্ধমৃত করা, বোমায় যে কান গেছে, সেকানের চিকিৎসা তাকে পেতে হয়েছে অর্ধেক প্রাণ বন্ধক রেখে। তাই হাসিনা এখন অর্ধেক লোকচক্ষুর অন্তরালে, আর রাজনৈতিক দাবিহীন এই গণতন্ত্র, বলতে পারি আমাদের রাজনীতি মৃত, তবুও বাস্তবকে কিছুটা ভুলে বলছি অর্ধমৃত। আমাদের রাজনীতির পথ চলা কঠিন করতেই যাদের জন্ম, তারা এই বত্রিশ বছরে অনেক শক্তিশালী হয়েছে, তাদের হাতে গড়া দুটি দল বিএনপি ও জাতীয় পার্টি আছে তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে, সিন্ডিকেটের সুতোও তারেক জিয়ার হাত থেকে তারা কেড়ে নিতে পেরেছে, আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে আবদ্ধ করতে পেরেছে, আর পাকিস্তান আছে এদের অন্তরে বাইরে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত ও মায়ানমার এখন চাইছে ডিজিএফআই-য়ের ওপর নিজের নিজের কিছু কর্তৃত্ব। অন্তরের পাকিস্তানকে কিছু করতে পারুক না পারুক বাইরের পাকিস্তানকে যদি কিছুটা মুছে ফেলা যায়—এই হলো ভারতের লক্ষ্য। পূর্ব দিগন্তের সূর্য চাইলে সব ভারতের হলে তো হবে না, চীনেরও তো অনেক কিছু হতে হবে, তাই…

আবারও টঙ্গীতে নিহত হয়েছেন গার্মেন্টস-শ্রমিকরা। কেন এই হত্যাকাণ্ড? কেন এই রক্ত নিয়ে খেলা? কিছুদিন আগে দেয়া একটি ঘোষণা আমাকে বেশ ভাবিয়েছে। গার্মেন্টস-শিল্প রক্ষায় ব্যবসায়ীরা তাদের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। [...]

আবারও টঙ্গীতে নিহত হয়েছেন গার্মেন্টস-শ্রমিকরা। কেন এই হত্যাকাণ্ড? কেন এই রক্ত নিয়ে খেলা? কিছুদিন আগে দেয়া একটি ঘোষণা আমাকে বেশ ভাবিয়েছে। গার্মেন্টস-শিল্প রক্ষায় ব্যবসায়ীরা তাঁদের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা বলেছেন, তাঁদের এই গোয়েন্দারা সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্পূরক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। উদ্যোগটি খুবই ভালো, তাতে সন্দেহ নেই। বাংলাদেশে গার্মেন্টস-শিল্পে অস্থিরতা তৈরির একটি প্রবণতা প্রায়ই লক্ষ করা যায়। এটা কারা করছে, কেন করছে, তা ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ হয়তো জানেন। হয়তো জানে রাষ্ট্রের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। তা জানারই কথা। কারণ রাষ্ট্রে এমন কোনো অশুভ তৎপরতা চলতে পারে না, যা রাষ্ট্রের ব্যবসা-বাণিজ্য ও রফতানিকে ব্যাহত করে। অধুনা বিশ্বে গার্মেন্টস-শিল্প একটি লাভজনক ব্যবসা। বিশেষ করে শ্রমের মূল্য যেসব দেশে তুলনামূলকভাবে কম, সেসব দেশে পাশ্চাত্যের দেশগুলো তাদের প্রস্তুতকারক এজেন্ট নিয়োগ দিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুরোবাজার দখল করে নিয়েছে চীন। ‘মেড ইন চায়না’ এখন একটি কমন দ্রষ্টব্য বিষয়। তা ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও মেক্সিকো প্রভৃতি দেশেও ম্যানুফ্যাক্সারিং ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক বিক্রেতারা। এর প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে মূল্যের সাশ্রয়। বিশেষ করে কম শ্রমমূল্যে ভালো কোয়ালিটির তৈরি পোশাক বাজারজাত করা। যুক্তরাষ্ট্রে সিয়ার্স, জেসি পেনি কিংবা মেসিজের মতো বৃহৎ স্টোরগুলোতে বাংলাদেশী তৈরি পোশাক যে পাওয়া যায় না তা নয়। পাওয়া যায়। তবে তা তুলনামূলক হারে কম। চীনই এখন দখল রেখেছে প্রথম স্থান। এই প্রথম স্থানটির রেকর্ড ভাঙার একটি প্রচেষ্টা চলছে বেশ জোরালোভাবে। সে-চেষ্টা করছেন খোদ তৈরি পোশাক বিক্রেতারাই। এই দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবলে বাংলাদেশ একটি ভালো ম্যানুফ্যাক্সারিং জোন হতে পারে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তা গড়ে তুলতে স্বাগতিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সঠিক ভূমিকা রাখতে পারছে তো? এই প্রশ্নটি আসছে বিভিন্ন কারণে। এ-কথাটি আমরা সবাই জানি, বাংলাদেশে শ্রমের মূল্য বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের তুলনায় অত্যন্ত কম। যারা গার্মেন্টসে কাজ করে তারা গেল দেড় দশক আগে অন্য পেশায় ছিল। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোর বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই এই পেশায় যোগ দেন। কিন্তু কথা হচ্ছে, এই শিল্পের বিকাশের তুলনায় গার্মেন্টস-কর্মীদের ভাগ্য ফিরেছে কি? না, ফেরেনি। বরং তুলনামূলক চাকরির বাজারে বিভিন্নভাবে নিগৃহীত হচ্ছেন গার্মেন্টস-শ্রমিকরা। তাদের জীবন ধারণের চাহিদার তুলনায় প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিতান্তই অপ্রতুল। এটা খুবই দুঃখের কথা, বাংলাদেশে শ্রমক্ষেত্রে ‘ওভারটাইম’…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.