তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন মহান নেতা, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে ছাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ইতিহাসের সত্যের সাথে প্রতারণা। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিসরে ইতিহাস বিকৃতির এক উদ্বেগজনক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদ বিভিন্ন বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বকে খাটো করার চেষ্টা করছেন। কখনও তিনি সরাসরি দাবি করছেন, কখনও সন্দেহজনক উৎস থেকে উদ্ধৃতি টেনে প্রমাণ করতে চাইছেন—মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নাকি অতিরঞ্জিত।

Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman and Tajuddin Ahmed

কেন এই সম্পাদকীয় লেখা জরুরি হয়ে উঠলো? তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন মহান নেতা, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে ছাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ইতিহাসের সত্যের সাথে প্রতারণা। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিসরে ইতিহাস বিকৃতির এক উদ্বেগজনক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদ বিভিন্ন বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বকে খাটো করার চেষ্টা করছেন। কখনও তিনি সরাসরি দাবি করছেন, কখনও সন্দেহজনক উৎস থেকে উদ্ধৃতি টেনে প্রমাণ করতে চাইছেন—মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নাকি অতিরঞ্জিত। এই প্রচেষ্টা শুধু বঙ্গবন্ধুকে নয়, তাজউদ্দীন আহমদকেও একটি ভুল প্রেক্ষাপটে দাঁড় করায়, যা ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অবমাননাকর। এসব দাবি তথ্যবিহীন, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর স্থান অপরিহার্য ও সুপ্রতিষ্ঠিত, এবং তা অস্বীকার করা মানে স্বাধীনতার দীর্ঘ লড়াইয়ের মূল চেতনাকেই অস্বীকার করা। তাই এ লেখা একপ্রকার দায়বদ্ধতা—জাতির গৌরবময় ইতিহাস রক্ষা ও সত্যকে প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস। এই সম্পাদকীয় কোনোভাবেই তাজউদ্দীন আহমদের অবদান অস্বীকার করে না; বরং তাঁকেও তাঁর যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করেই ইতিহাসের বিকৃতি রোধ করতে চায়। তাজউদ্দীন আহমদ আজ বেঁচে থাকলে, ইতিহাস বিকৃতির এই প্রবণতার বিরুদ্ধেই তিনিও সোচ্চার

হতেন। মুক্তাঙ্গন ………… বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুধু একটি ভূখণ্ডের স্বাধীনতার লড়াই ছিল না — ছিল নেতৃত্ব, ত্যাগ ও আস্থার এক অভূতপূর্ব সমবায়। সেই ইতিহাসে তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী, কামরুজ্জামান অবিসংবাদিত নাম। কিন্তু তাঁদের নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ, দুঃখজনকভাবে, এই সত্যটিই বিকৃত করার চেষ্টা চলছে।  কোনো সন্দেহই নেই যে তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন একজন মহান নেতা, যেমন ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামান। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই চার নেতার মধ্যকার দৃঢ় বন্ধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাঁদের প্রতি বাংলাদেশের নাগরিক মাত্রেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার প্রশ্ন রয়েছে। তবে এই নির্ভেজাল কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সময় বিস্মৃত হলে চলবে না যে এই চার মহান নেতার নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শুধু এই চার নেতার গুরু ছিলেন না, তিনি ছিলেন বঙ্গোপসাগর বিধৌত বদ্বীপে বসবাসকারী সকল মুক্তিকামী মানুষের কান্ডারী। তাই আমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে সকলের অবদান ছাপিয়ে বঙ্গবন্ধু ঋজু ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন যা কখনোই ম্রিয়মান হবার নয়। বর্তমানে বাংলাদেশে বল্গাহীনভাবে ‘অস্বীকৃতির সংস্কৃতি’ চলছে, যা শুধুমাত্র একজন…

যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে সেটি 'পড়ে' না—নেমে আসে। সেই নামার পথ ও পদ্ধতিতেই লুকিয়ে থাকে পাইলটের দক্ষতা ও প্রস্তুতির সত্যিকারের পরীক্ষা। অনেক প্রশ্ন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই দূর্ঘটনার ক্ষেত্রে যন্ত্রের সীমাবদ্ধতা সামলাতে না পারার দায় শুধুই কি এক নবীন পাইলটের অনভিজ্ঞতা ও দক্ষতার অভাবের ওপর দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা যাবে? 

Air Force Jet Crashes in a Bangladesh School, Credit: The Hindu

গত দু’দিন ধরে মাইলস্টোন স্কুলের ট্র্যাজেডি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেক বিশ্লেষণ ঘুরছে, যার অধিকাংশই জল্পনা-কল্পনা ও প্রযুক্তিগত অজ্ঞতার ফসল। সেই কারণেই এই লেখা—একটি তথ্যভিত্তিক ও পেশাগত বিশ্লেষণ। শুরুতেই আসুন এ সংক্রান্ত প্রচারিত মিথগুলো ভাঙা যাক। মিথ ১. পাইলট মাইলস্টোনের মাঠে অবতরণ করতে চেয়েছিলেন। এটি একেবারেই ভুল ও হাস্যকর ধারণা। যুদ্ধবিমান অবতরণের জন্য ১ কিমি লম্বা মাঠও যথেষ্ট নয়। তদুপরি, মাইলস্টোনের মাত্র ১ কিমি পশ্চিমে তুরাগ নদীর ওপারে অনেক খোলা জায়গা ছিল। মিথ ২. ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ট্রেনিং কেন? যুদ্ধবিমানের প্রশিক্ষণ সাধারণত শহরের বাইরে হয়। কিন্তু উড্ডয়ন ও অবতরণ তো রানওয়ে থেকেই করতে হয়, যা প্রায়শঃই শহরের কাছেই থাকে। মিথ ৩. বিমানটি ছিল খুব পুরোনো ও ‘জংধরা’। এটিও বিভ্রান্তিকর। ঘাতক F-7 BGI হলো F-7 সিরিজের একটি কাস্টম ভেরিয়েন্ট যুদ্ধবিমান যা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্য  প্রস্তুত করা হয় । এটি সম্পূর্ণ ট্রেনিং ক্ষমতায়নের ও তারপর কম্ব্যাট মিশনের জন্য যথার্থ। ২০০৬-২০০৮ এ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এটি ক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করে।  F-7 B।I এর বৈশিষ্ট্য হলো, এটি একটি পূর্ণ একক আসনের যুদ্ধবিমান। শুধুমাত্র  পাইলটদের লাস্ট ফেজ

ট্রেনিং এর চূড়ান্ত কালে এটি ব্যবহার করা যায়।  নিয়ম অনুযায়ী যেকোন বিমানের প্রতিটি যন্ত্রাংশ নির্ধারিত সময়/ঘণ্টা শেষে বদলানো হয়। না বদলালে বিমান ‘এয়ারওয়ার্দি’ থাকে না। তাই ফিটনেস পাস থাকলে  বিমানের বয়স কতো হলো তা গুরুত্বহীন। উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকান এয়ারফোর্স এখনো ১৯৬০-এর দশকে নির্মিত T-35 Talon প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার করে। তা এখনও ওড়ার উপযোগী। মিথ ৪. রানওয়ের পাশে উঁচু বিল্ডিং কেন? নগর পরিকল্পনার ব্যর্থতা এ প্রশ্নের জন্ম দেয় বটে, তবে স্মরণ রাখা জরুরি যে বিমানটি একটি দোতলা ভবনে বিধ্বস্ত হয়। উঁচু ভবন এ ঘটনায় সরাসরি দায়ী নয়। এবার প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা যাক।   ISPR জানায়, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির দুপুর ১:০৬-এ তেজগাঁও বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করেন। এটি ছিল তাঁর প্রথম সলো ফ্লাইট—অর্থাৎ প্রশিক্ষক ছাড়া এককভাবে বিমান চালানো। উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই তিনি যান্ত্রিক ত্রুটির কথা জানান এবং ঘাঁটিতে ফিরতে গিয়ে বিমানটি ভূপাতিত হয়। একজন নতুন পাইলটকে সলো ফ্লাইট বা একা বিমান চালনার অনুমতি দেয়া হয় তখনই যখন তিনি মোটামুটিভাবে একটা বিমান উড্ডয়ন করতে পারেন‚ পথ খুঁজে নেয়া বা নেভিগেশনের ন্যূনতম  পারদর্শীতা দেখাতে পারেন…

বঙ্গবন্ধুর 'অসমাপ্ত আত্ম-চরিত-এ বৃটিশ আমলে বা পাকিস্থান আমলের শুরুতেও যে মধুমতীর কথা পড়া যায়, সেখানে একসময় স্টীমারও চলতো। আজ সেই মধুমতী বড় শান্ত, শীর্ণ ও মৃদু। তবু এই শান্ত মধুমতী পাড়ের মানুষগুলোই দেখালো কিভাবে রুখে দাঁড়াতে হয়। 'জ্বলি ন উধিম কিত্তেই (রুখে দাঁড়াবো না কেন)’?

The article has compared the recent situation of Bangladesh with Ragnarok.

Ragnarok in Bangladesh

 গত বছরের জুলাই থেকেই বাংলাদেশ যেন এক অবর্ণনীয় ’রাগনারোক’-এর ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। নর্স পুরাণে বা উত্তর মেরুর স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশগুলো খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণের আগে তাদের বহু  দেব-দেবীর ধর্মীয় পুরাণে ব্যবহৃত এই শব্দটির অর্থ হলো ‘চূড়ান্ত ধ্বংস’ বা ‘প্রলয়কাল।’ এ এমন এক ভয়ানক বিধ্বংসী সময় যখন নর্স পুরাণের সব বড় দেব-দেবী (ওদিন, থর, তির, ফ্রেইর, হিমদাল এবং লোকি) পরষ্পর সংঘাতে জড়িয়ে পড়বেন এবং ক্রমাগত প্রাকৃতিক দূর্যোগের মুখোমুখি হবে পৃথিবী। প্রথমে পুরো পৃথিবী পুড়ে যাবে এবং তারপর মাতা ধরিত্রী তলিয়ে যাবে জলের অতলে। তেরো শতকের নর্স সাহিত্যে বর্ণিত এই 'প্রলয়কাল’ বা ‘রাগনারোক’ সম্পর্কে বলা হচ্ছে:   ‘ভাইয়েরা যুদ্ধ করবে পরষ্পর,  হত্যা করবে একে অন্যকে আহা-  বোনের সন্তানেরা টুটাবে জ্ঞাতি-বন্ধন,  কুঠারযুগ, তরবারী যুগ-  ঢাল ভেঙে টুকরো টুকরো   বাতাসের যুগ, একটি নেকড়ে যুগ-   গোটা পৃথিবী হঠকারী হবার আগে   কোন মানুষেরই দয়া মায়া থাকবে না অন্য কারো প্রতি।‘    সম্ভবত: ৫৩৫-৫৩৬ অব্দে গোটা উত্তর ইউরোপে তাপমাত্রা ভয়াবহ কমে আসার সময়টি এই পুরাণকথায় বর্ণিত। ৬৫০ অব্দে নর্ডিক দেশগুলোয় সূচীত এক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সেখানে নর্ডিক তাম্র যুগের শেষ

হয়। এই জলবায়ু পরিবর্তনের আগে নর্ডিক দেশগুলোয় জলবায়ু তুলনামূলক উত্তপ্ত এবং আরামদায়ক ছিল। প্রাচীন নর্স ভাষায় ‘ফিম্বুল উইন্টার' অর্থ তাই ভয়াবহ শীত। এই নিষ্করুণ শীতে নেমে আসবে অনি:শেষ রক্তক্ষয়ী আর ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ। নর্স পুরাণে এই সময়কে 'টোয়াইলাইট অফ দ্য গডস’ বা 'দেবতাদের গোধূলি ক্ষণ’-ও বলা হয়। উনিশ শতকে বিখ্যাত জার্মান সুরকার রিচার্ড ওয়াগনারের 'গটডের ডামেরাঙ’ সিম্ফনী এই 'রাগনারোক’-এর ধ্বংসলীলাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত, দূর্ভাগ্যজনক ভাবে হিটলার যাকে রণসঙ্গীত বানিয়েছিলেন।   বাংলায় প্রবল শীত নেই। কিন্ত  আছে মুষলধারে বর্ষণ। নেপোলিয়ন রাশিয়ার 'জেনারেল উইন্টারে’-র সাথে যুদ্ধে পারেননি আর পাকবাহিনী হেরে গেছিলো আমাদের 'জেনারেল মনসুন'-এর কাছে। অথচ, বাঙ্গালীর অনাদিকালের ভালবাসার এই শ্রাবণ মাসেই গত বছর মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র বিরোধী এক চক্র আপাত: মেষ চর্ম পরিধান করে তাদের নেকড়ের দাঁত-নখ লুকিয়ে এক ভয়ানক প্রলয়যজ্ঞে মাতে। আমরা পারিনি। ট্রয়ের ঘোড়ার ভেতর ঢুকে পড়া গ্রীক সৈন্যদের চাতুরীর কাছে যেমন পতন হয়েছিল এক সুপ্রাচীন সভ্যতার, আমরা তেমন ভাবেই হেরে গেছি। সেই দানবীয়, পাশব শক্তি ক্ষমতায় এসেই জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা বদল, শত শত হত্যা, রাষ্ট্রীয় নানা অবকাঠামো ধ্বংস,…

[নিম্নলিখিত দশটি সংগঠনের পক্ষে এই ঘোষনাটি প্রকাশ করা হল] আমরা, বাংলাদেশের নাগরিক ও এক্টিভিস্টগণ, গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে বাংলাদেশ বর্তমানে এক অভূতপূর্ব ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে কথিত কোটা বিরোধী আন্দোলনের আড়ালে একটি পরিকল্পিত “Color Revolution” সংঘটিত হয় - যার ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার চেতনায় গঠিত বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন।  আমরা চরম বিস্ময় ও দুঃখের সাথে দেখছি, ২০২৪ এর আগস্ট মাস থেকে দেশ এক আত্মবিধ্বংসী পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হয়েছে। তরুণদের ইতিহাসবিমুখ একটি অংশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মতো যুদ্ধাপরাধী ও দেশবিরোধী শক্তি এবং উগ্র মতাদর্শের অনুসারীরা একত্র হয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও চেতনাকে আঘাত করেছে। তারা শুধু বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বাসভবন, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্সসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ও ভাস্কর্যের ওপর হামলা চালিয়ে থেমে থাকেনি, বরং নিরবচ্ছিন্নভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমেদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতাদের অবদান অস্বীকার ও অবমাননা করে চলেছে। এই গোষ্ঠী মুক্তিযোদ্ধা, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী এবং আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন, বাসভবনে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, এমনকি ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। পাশাপাশি

মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্য, সংখ্যালঘু ও মুক্তিযুদ্ধের রাজনীতির সাথে জড়িত অনেকের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে হয়রানিমূলক হত্যা মামলা ও গ্রেপ্তার।   আমরা গভীর হতাশায় লক্ষ করছি, শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনাশী এসব কর্মকাণ্ডের লাগাম টেনে ধরেননি, বরং তার নেতৃত্বে মৌলবাদী ও উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো সমাজের সকল ক্ষেত্রে ক্ষমতায়িত হচ্ছে।  একই ধারাবাহিকতায়, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ব্যক্তিবর্গের বিচারের লক্ষ্যে গঠিত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চলমান বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে এবং এর কর্তৃত্ব জামায়াতে ইসলামী ও এর সমর্থক গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। সম্প্রতি, ১৯৭১ এ রংপুরের আলবদর কমান্ডার, ১৪০০ মানুষ হত্যা ও অসংখ্য নারী ধর্ষণের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামী নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের রায় রিভিউ করে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা শুধু বাংলাদেশের রক্তক্ষয়ী ইতিহাসের প্রতি চরম অবমাননাই নয়, বরং এটি বিশ্ব ইতিহাসেও এক নজিরবিহীন কলঙ্কময় দৃষ্টান্ত।  এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন থেকে শুরু করে যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবীদের প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ, ট্রাইব্যুনালের পূর্ববর্তী বিচারপতি ও প্রসিকিউশন…

তখন সব প্রতিরোধ, তখন সব প্রত্যয়, তখন সব আত্মগোপনের উদ্ভাস, তখন সব প্রেরণার তন্ত্র ভাষা পেতে থাকে। আর ওই ভাষা তখন প্রতিরোধকে, প্রত্যয়কে, উদ্ভাসকে, তন্ত্রকে মুক্তির পথে সংহত করতে থাকে।

যখন কোথাও স্থান হয় না, যখন ধরে ধরে অপদস্থ করা হয়, যখন জানতে হয় দঙ্গল আক্রান্ত হতে হবে যেকোনো সময়, আবার যখন আত্মহত্যার প্রচারে দেখা যায় পরিকল্পিত মৃত্যুর ছক, যখন সবাই জানে পরাজয়টা এমনই পরাজয় যেখান থেকে আর প্রত্যাবর্তন সম্ভব নয়, যখন অন্যায্য উপহাসের উত্তর দেয়ার জন্য সদাপ্রস্তুত জিভেও চড়া পড়ে যায়, যখন সবচেয়ে ভালবাসার সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞানকে হাত থেকে খুলে ফেলতে হয়, যখন ঐতিহাসিক জাতীয়তাবাদ চরম সংকটে পড়ে যায়, যখন প্রতিটি ভালবাসার জায়গা বিভাজনের বিষে বিষাক্ত, যখন প্রতি মুহূর্তে দমবন্ধ তিক্ত থুথু গিলতে হয়, যখন মৃত্যুর অপেক্ষা ছাড়া আর সব অপেক্ষার মৃত্যু সম্পন্ন, যখন তারপরও জীবন তার দাবি জানিয়ে যায়। তখন সব বঞ্চনার, তখন সব দারিদ্রের, তখন সব নির্যাতনের ইতিহাস ফিরে আসে। আর ওই ইতিহাস তখন আবার বঞ্চনার বিরুদ্ধে, দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিজয়ের অনাগত ডাক দিতে থাকে। কখন স্থান ঘোষিত হতে শুরু হয় কেউ বলতে পারে না, কখন কার্যক্রমের পদসমূহের উদ্ভব হয় কেউ ঠিক ধরতে পারে না, কখন দঙ্গল ক্ষয়িষ্ণু হতে শুরু করে এটা ধরা পড়তে থাকে, কখন সব

মৃত্যুপরিকল্পনা জীবনের গান গাইতে শুরু করে তা ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়, কখন পরাজয় শব্দটা ছোট্ট ছোট্ট পায়ে পরাভূত হতে থাকে, কখন ন্যায়ের অঙ্কুরোদগমে সব উপহাসের গলাবাজি মলিন হতে থাকে, কখন ভালবাসার উদারতা সাংস্কৃতিক জীবনগুলোকে অমোঘ অভিজ্ঞানের মতো কীর্তনময় করে তোলে, কখন ঐতিহাসিক জাতীয়তাবাদ গণচেতনায় পরম প্রত্যয় ঘোষণা করে, কখন ভালবাসার সামনে বিভাজনের সব বিষাক্ত বিষ অকার্যকর হয়ে পড়ে, কখন বৃষ্টির জলে বুকের দমবন্ধ তিক্ততা অবসিত হতে থাকে, কখন মহৎ মৃত্যুর ভাষ্য জীবনের সব অপেক্ষার অবসান ঘটায়, কখন অতঃপর জীবনের দাবি জনপদে জনপদে গভীর আগমনের মতো স্বতঃসঞ্চারিত হতে থাকে। তখন সব প্রতিরোধ, তখন সব প্রত্যয়, তখন সব আত্মগোপনের উদ্ভাস, তখন সব প্রেরণার তন্ত্র ভাষা পেতে থাকে। আর ওই ভাষা তখন প্রতিরোধকে, প্রত্যয়কে, উদ্ভাসকে, তন্ত্রকে মুক্তির পথে সংহত করতে থাকে। তাই ধ্বংসস্তূপ শুধু ধ্বংস নয়, ধ্বংসস্তূপ স্তূপও। আর স্তূপ থেকে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ একত্র হয়। আমাদের বাস্তবতার নবজন্ম হয়। নির্বাচন, নির্বাচন, নির্বাচন করে আমাদের অনির্বাচনের বোধকেই কেন আমরা ভুলে যাচ্ছি। স্তূপ দাঁড়িয়ে আছে। স্তূপ জানিয়ে দিচ্ছে আমাদের হারানোর কিছু নেই। স্তূপ…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.