আমাকে এখন একটু মরতে দিন। [...]

আমি যে বেঁচে আছি এটা আমার সমস্যা নয় অমরত্বের সমস্যা। আমি মরতেই চেয়েছিলাম কিন্তু আমাকে টেনে টেনে আত্মার সূত্র ধরে ক্লান্তিহীন ভাবে চারিদিকে একাকার করে রাখা হল। এতে কার লাভ হল কার ক্ষতি হল এপ্রশ্ন তোলার কোনো অধিকার আজ আমার নেই, আর আমার নিজের কী লাভ হল কী ক্ষতি হল এপ্রশ্ন তোলার মতো বোধবুদ্ধি তো আজ আমার অবশিষ্ট থাকার কথা নয়। এটি একটি চরম বিপর্যয় কথা নেই বার্তা নেই সময় নেই অসময় নেই যখন যার যেখানে ইচ্ছে আমাকে স্রেফ নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমি কে? এপ্রশ্নটাই আজ পৃথিবীর সবচেয়ে অবান্তর প্রশ্নে পরিণত হয়েছে। ইংরেজের স্কুল ছেড়েছিলাম খুব সহজ কারণে, কারণ এটা আমার কাছে জলের মতো পরিস্কার ছিল ঠাকুরবাড়ির স্কুলটাই আমাকে গড়ে তুলবে, ঠাকুরবাড়ির স্কুলটাতেই আমার স্ফূর্তি আর আমি যা যা পড়তে চেয়েছি শিখতে চেয়েছি ঠাকুরবাড়ির স্কুলটাতেই তার অপূরণীয় সনিদর্শন ব্যবস্থা ছিল। অনেকে শান্তিনিকেতন নিয়ে মহাতোড়জোড়ে আমাকে গুরুদেব পর্যায়ে পর্যবসিত করে – সেই আমাকে ভুল বিবেচনার শুরু, শান্তিনিকেতন, কোনো কারণ ছাড়াই ঠাকুরবাড়ির স্কুলটারই অধিকতর সম্প্রসারণ, নিজের পড়াশুনার ধরনটাকেই অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার

চেষ্টা, তাকে একটা জনহিতকর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা – সেই হিতকরতা আরো দূরে ছড়াল না, কেউ একে মডেল ধরে এগিয়ে গেল না – ওই শান্তিনিকেতন শান্তিনেকেতন হয়েই পড়ে রইল – আমিও ওই গুরুদেব পর্যন্ত উঠে নির্বাসিত হলাম। স্বাধীনতার কথা বলব না। ওই পথে বাংলার পরিবার থেকেই মানা। আমরা সেই মানাকে আজো রদ করতেই পারলাম না। জীবনের কাছে যতদিন ছিলাম জীবনটাকে নিংড়ে নিঃশেষ করে সৃষ্টির কাজে নিজেকে রাখতে পেরেছি সেটাই সার্থকতা – যদিও ওই সার্থকতা সম্পূর্ণ বিফলও হতে পারত। কারণ জীবনের ধরনটাই এমন, কখনো হাজার চেয়েও হাজার তাকিয়ে থেকেও নির্বিকল্প পথে হেঁটেও প্রাচীন বৈরিতার দেয়ালের অমোঘতার কাছে জীবনকে লাঞ্চিত হতে হয়। আমাকে এখন একটু মরতে দিন। ও, অমরত্ব। ও, পাঠক। ও, শিল্পী। ও, গায়ক। ও, কর্মবীর। ও, নায়ক। ও, রাজা। আমাকে একটু মরতে দেবেন? আরো গোপন ডায়েরি : আসব আগের দিন আজ যাই : মনমোহন সিংয়ের গোপন ডায়েরি পুতুল প্রতিভা : মওদুদ আহমেদের গোপন ডায়েরি চাণক্য নই : প্রণব মুখার্জির গোপন ডায়েরি কই মাছের প্রাণ : এরশাদের গোপন ডায়েরি এক বিয়োগ…

আমাদের সাবধান হতে হবে। চট্টগ্রাম বিভাগের যেকোনো বিষয়ে প্রতিটি পদক্ষেপের সামরিক রাজনৈতিক বিশ্লেষণ এখন করতে হবে সর্বোচ্চ দক্ষতায়। নজদারি বাড়াতে হবে পার্বত্য চট্টগ্রামের নাজুক এলাকায়, বৃহত্তর কক্সবাজারে, চট্টগ্রাম বন্দরে ও ‘সমুদ্রবিজয়’ খ্যাত সামুদ্রিক সীমান্তে। [...]

যা লংমার্চ দিয়ে শুরু হয়েছে তা মুক্তাঞ্চলে রূপ নিতে পারে। এবং বাংলাদেশে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ সন্ত্রাসের জন্ম দিতে পারে। এবং কোন অঞ্চল থেকে? বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল কোনটি? – চট্টগ্রাম বিভাগ, নিঃসন্দেহে এবং বিচ্ছিনতাবাদী সন্ত্রাসের শুরু এখান থেকেই শুরু করা হবে, লংমার্চ করে ফেলা গেছে, এখন দরকার একটা মুক্তাঞ্চল সৃষ্টি – সেমহড়া রামুতে পটিয়াতে সাতকানিয়াতে বাঁশখালীতে ফটিকছড়িতে হয়েছে, সেমহড়া সফলতার লক্ষ্যে চলতে থাকবে। এই যে সম্ভাব্য বিচ্ছিন্নতার কৌশল নিয়ে ভাবছি এরই মাটি তৈরি করবে ইসলামি মাওবাদ। এদের সবচেয়ে বড় পৃষ্টপোষক হয়ে উঠতে পারে বার্মার মাদকসম্রাটেরা এবং বার্মার সামরিক গোয়েন্দারা। আমাদের সাবধান হতে হবে। চট্টগ্রাম বিভাগের যেকোনো বিষয়ে প্রতিটি পদক্ষেপের সামরিক রাজনৈতিক বিশ্লেষণ এখন করতে হবে সর্বোচ্চ দক্ষতায়। নজদারি বাড়াতে হবে পার্বত্য চট্টগ্রামের নাজুক এলাকায়, বৃহত্তর কক্সবাজারে, চট্টগ্রাম বন্দরে ও ‘সমুদ্রবিজয়’ খ্যাত সামুদ্রিক সীমান্তে। বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে বড় স্ট্র্যাটেজিক আদান-প্রদান করতে হবে ভারত ও থাইল্যান্ডের সাথে আঞ্চলিক ক্ষেত্রে এবং আমেরিকা ও রাশিয়ার সাথে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। চীনের সাথে এখন ব্যবসায়িক গুরুত্বপূর্ণতম অংশীদারি ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে, এখনই চীনের সাথে স্ট্র্যাটেজিক আলোচনা নয়, তার চেয়ে জাপানের সাথে সেটা করা যেতে পারে দেশটির সাথে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো অংশীদারীত্বের কারণে। বাংলাদেশকে কোনোভাবেই ‘ইসলামি’ তকমায় দ্বীন = রাষ্ট্র করে তোলা যাবে না। ইসলামি মাওবাদের সেটাই লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একাধিক মুক্তাঞ্চল সৃষ্টি করতে পারলেই এই শক্তি চট্টগ্রাম বিভাগকে বিচ্ছিন্ন করতে মূল বিচ্ছিন্নতাবাদী সংকল্পে ঝাঁপিয়ে পড়বে। এতে সবচেয়ে লাভবান হবে বার্মার মাদকসম্রাটেরা এবং অবশ্যই বার্মার ‘চীনমুখী’ সংখ্যাগরিষ্ঠ সামরিকপ্রশাসন এবং বার্মার ভিক্ষুসাম্রাজ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর কাজ এখানেই সবচেয়ে বেশি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে হাসিনাকে নিতে হবে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও বেশি ভূমিকা। চট্টগ্রাম বিভাগে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থানটা খুবই নড়বড়ে। চট্টগ্রামের কোনো আওয়ামী নেতাই কেন্দ্রে প্রভাবশালী নন, হাছান মাহমুদ বড় মন্ত্রীত্ব ও বড় দলীয় পদ পেলেও চট্টগ্রামের রাজনীতিতে ‘মহিউদ্দীন বৈরিতা’য় খুবই নাজুক। ওবায়দুল কাদেরকে ঘিরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় রাজনীতির একটা বলিষ্ঠ রূপরেখা তৈরি করার কাজ খুব দ্রুতই সম্পন্ন করা প্রয়োজন, যাতে জোট শরিক মহিউদ্দিন খান বাদল ও চট্টগ্রামের চব্বিশ ঘন্টার রাজনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম বিশেষজ্ঞ মহিউদ্দিন চৌধুরী যতদিন সক্রিয় রাজনীতিতে আছেন তার নেতিবাচক রাজনৈতিক কর্মকান্ডগুলোকে বলয়ায়িত করে শক্তির দিকগুলোকে…

উদার জাতীয়তাবাদী, উদার ধর্মবিশ্বাসী, উদার উন্নয়নকর্মী, উদার গণমাধ্যমকর্মী, উদার বাম, উদার সাংস্কৃতিককর্মী – রক্ষণশীল ও গড্ডল মধ্যপন্থীদের মধ্যের উদারতান্ত্রিকদের পেলে তো আরো ভাল, না পেলে তাদের ছাড়াই একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ এখন খুবই জরুরি। [...]

এবং খুব দ্রুত, এমাসে দলের নাম গঠনতন্ত্র নিয়ে কাজ গুছিয়ে মে মাসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হোক। বাংলাদেশের উদারতান্ত্রিকতার একটা রাজনৈতিক পরিচয়ের শক্তিসঞ্চয় খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। উদার জাতীয়তাবাদী, উদার ধর্মবিশ্বাসী, উদার উন্নয়নকর্মী, উদার গণমাধ্যমকর্মী, উদার বাম, উদার সাংস্কৃতিককর্মী – রক্ষণশীল ও গড্ডল মধ্যপন্থীদের মধ্যের উদারতান্ত্রিকদের পেলে তো আরো ভাল, না পেলে তাদের ছাড়াই একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ এখন খুবই জরুরি। গণজাগরণ শুধু ‘মটিভেশন’ ‘প্রেসার গ্রুপ’ এসব কাজ করে বেশি দূর যেতে পারবে না এটা ঠিক নয় – যেতে ঠিকই পারবে। কিন্তু এটা কি আরো ভাল নয় নিজেদের কাজের মূল্যায়ন নিজেরা করার রাজনৈতিক শক্তি অর্জনের চেষ্টা করা? কারণ রাজনৈতিক শক্তি অর্জনের সত্যিকারের চেষ্টা একটা এমন প্রক্রিয়া যা বহুবর্ষব্যাপী মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে স্বতঃজাগ্রত রাখতে সবচেয়ে সাবলীল সংগ্রামী সংঘবদ্ধতা। এবং এর কোনো বিকল্প নেই। অনেক দূর হাঁটার মানসিক শক্তির সম্মিলন হলে গণজাগরণকে প্রজন্মের দাবিকে নিজেদের রক্ষাকবচ ধরে নিয়ে রাজনৈতিক শক্তির পথে বেরিয়ে পড়াটাই হবে আজকের স্বরাজ। আশু লক্ষ্য হবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৫ থেকে ১০ ভাগ ভোট নিজেদের করায়ত্ত করার কঠিন রাজনৈতিক সংকল্পে নিজেদের শ্রেষ্ঠ সময়ের সাধ্যের সমস্ত পরিশ্রম নিংড়ে দেয়া। এবং সেটা সংকল্পবদ্ধ হলে করা সম্ভব। প্রাণ দেয়ার প্রয়োজন নেই সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে দিলে সংঘবদ্ধতায় কঠিন থাকলে এরকম একটি রাজনৈতিক দল আমরা পেতেই পারি, যার হাতের শক্তি সঞ্চয়ে উদারতান্ত্রিকতার মুক্তিসংগ্রামের বাঙালির আন্তঃধর্মের সকল-জনজাতির বাংলাদেশ নির্ভয়ে মুক্তপথের পথিক হতে পারবে।

দলটি দু'টুকরা হলো গতকাল। অন্যরকম একটা ভালোবাসা ও স্বপ্ন নিয়ে আমরা সবাই এই দলটা শুরু করেছিলাম। "সর্বহারার একক দল"// "জীবনের সর্বক্ষেত্রকে ব্যাপ্ত করে মার্ক্সবাদের চর্চ্চা"// "কেন আমরা সঠিক এবং একমাত্র বাম দল" // এই শ্লোগানগুলো মনে পড়ে। সত্যিই কিন্ত আমাদের চিন্তাজগতে এই বক্তব্যগুলো ঝড় তুলেছিলো। এগুলোর দারুন একটা দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও পড়েছিলো। এখনো তার অনেক প্রভাব প্রবল ভাবেই আছে। একসময় বিপ্লবী জীবন বেছে নেয়ার চেষ্টাও করেছিলাম। যদিও পারিনি, কিন্ত যারা ধরে রেখেছিলো তাদেরকে মন থেকে উৎসাহ দিয়েছিলাম। যারা দল করতো সর্বক্ষন, তাদের সততা-নিষ্টার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা-ভালোবাসা-আশা ছিল প্রশ্নাতীত। দল করার সময় শেষের দিকে এসে (৯৬-৯৭ সালে) মাঝে মাঝেই ক্ষোভ প্রকাশ করতাম। সে সময় হায়দার ভাইকে বলেছিলাম, দেখেন হায়দার ভাই, গত ৯ বছর ধরে পত্রিকা বিক্রি করছি। কিন্ত এখন ভ্যানগার্ড বিক্রি করতে ভাল্লাগে না। তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেন কেন? বলেছিলাম, অনেক শিক্ষিত-রাজনীতি সচেতন মানুষও পত্রিকা নিয়ে প্রশ্ন করেন। তারা বলেন যে, তোমরা কি বলতে চাও তা সহজ করে বল। বক্তব্যটা আরেকটু সাবলীল কর। তোমরা দেশের পরিস্থিতি বিশ্লেষন করতে গিয়ে, রাশিয়া-চীন কিংবা এস ইউ সি আই এর রেফারেন্স দিয়ে যে কথাগুলো বলো, তা জটিল মনে হয়। মানুষকে তোমরা কানেক্ট করতে পারছো না। এটা খুব জরুরী। হায়দার ভাই শুনেছেন মনযোগ দিয়ে। তবে একটু চিন্তা করে বলেছিলেন, তুমি তাদেরকে বলবে, সমাজ বিপ্লবের পথ সহজ নয়। আমাদের বক্তব্যগুলোতে আমরা একটা সমাজের বিশ্লেষন করছি একটা এগিয়ে থাকা রাজনৈতিক তত্ত্বের আলোকে আমাদের এই পত্রিকা। এই পত্রিকা পড়তে গেলে কিছুটা কষ্টতো সবার হবেই। উনার কথাটা একেবারে উড়িয়ে দেই নি। কিন্ত মন খারাপ করেছিলাম এই কারনে যে, উনি আমার মত মাঠ পর্যায়ের একজন কর্মীর এই ফিডব্যাকটা সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে সেদিন ভাবেন নাই। '৯৭ সালে আমরা ইউনিভার্সিটির অনার্স ফাইনাল ইয়ারে। পরের বছর সক্রিয় কর্মি থেকে সমর্থকে পরিনত হলাম। ২০০০ সালের শুরুর দিকে হাইকোর্টে আইন পেশা শুরু করলাম। মনে আছে, আমাদের পত্রিকার টিম হাইকোর্টেও যেত। একদিন একটা চেম্বারে দেখলাম, আমাদের কর্মিদের শুনছেন, আমাদেরই একজন সিনিয়র আইনজীবী। বিষয়বস্ত ছিল কাকতালীয়ভাবে সেটাই। পত্রিকার বক্তব্য। ভাষা। সহজবোধ্যতা ইত্যাদি। একযুগ পরেও ভাষার/বিষয়বস্ত উপস্থাপনের ক্ষেত্রে এতটুকু পরিবর্তন কি হয়নি? হয়েছে হয়তো, কিন্ত সিনিয়র আইনজীবি বোধ…

তা হলে বাংলাদেশে এখন ‘দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধ’ শুরু হতে যাচ্ছে? চলছে ‘গণহত্যা’? আর দেখা দিয়েছে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ইসলামের’ দ্বন্দ্ব, যার পরিণতিতে একটি বড় ধরণের সংঘাত আসন্ন?...

তা হলে বাংলাদেশে এখন ‘দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধ’ শুরু হতে যাচ্ছে? চলছে ‘গণহত্যা’? আর দেখা দিয়েছে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ইসলামের’ দ্বন্দ্ব, যার পরিণতিতে একটি বড় ধরণের সংঘাত আসন্ন? এরকমই বলছেন ফরহাদ মজহার। যিনি, তার শিষ্যদের মতানুসারে, একটি ভাবান্দোলনের জন্ম দিয়েছেন। তার এই শিষ্যরা কয়েক বছর হলো বেশ পুলকিত এই ভাবান্দোলন নিয়ে। তবে খোঁজখবর যারা রাখেন, তারা জানেন, ফরহাদের এই শিষ্যরা পুরানো শিষ্য নয়। বার বার ঘরানা বদল করেছেন ফরহাদ মজহার, সে অনুযায়ী তার শিষ্যকুলও পাল্টে গেছে। একদা সক্রিয়ভাবে সিরাজ শিকদারের সর্বহারা পার্টি করতেন কবি হুমায়ন কবির-ফরহাদ মজহার ছিলেন তার বন্ধু ও সহযোদ্ধা। তখনও ফরহাদ বোধকরি শিষ্য সংগ্রহের কাজে পর্যাপ্ত পারদর্শী হয়ে ওঠেননি। সর্বহারা পার্টি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল এবং দলটির হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন শুধু হুমায়ুন কবির নন, তার ভাই সেলিম কবির এবং বোন আলতামাস বেগমও। তবে ফরহাদ মজহার তখন কোথায় ছিলেন, যুদ্ধ করেছেন কি না, সেটি আমি বলতে পারব না। ১৯৭৩ সালে সর্বহারা পার্টি ‘অভ্যন্তরীন বিতর্কের’ জের ধরে হুমায়ুন কবিরকে হত্যা করে। শোনা যায়, হত্যা করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছিল; কিন্তু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে পরিবর্তিত সিদ্ধান্তের খবর পৌঁছার আগেই তারা তাদের দায়িত্ব সম্পন্ন করে ফেলেছিলেন। আহমদ ছফার ডায়েরিতে এরকম ইঙ্গিত রয়েছে, কবিরের হত্যার পেছনে ফরহাদ মজহারের ভূমিকা ছিল। হুমায়ুন কবির হত্যার পরপরই ফরহাদ মজহার উচ্চশিক্ষার্থে যুক্তরাষ্ট্র চলে যান। তবে কারও কারও বক্তব্য, ফরহাদের যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পরিকল্পনা পূর্ব নির্ধারিত এবং এর সঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের কোনও যোগ নেই। ওই সময় যারা সর্বহারা পার্টি করতেন, তারা হয়তো ফরহাদ মজহারের জীবনের ওই পর্ব সম্পর্কে আমাদের বাড়তি কিছু জানাতে পারবেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার পর এরশাদের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন চলার সময় ফরহাদ মজহারের নতুন সব শিষ্য জুটতে থাকে। আমার স্মৃতিশক্তি বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে, তবে যতদূর মনে পড়ে, মজদুর পার্টির সঙ্গে ফরহাদ জড়িত ছিলেন, ১৫ দলের ২/১টা সভায়ও তাকে দেখা গেছে মজদুর পার্টির হয়ে কাজ করতে। পরে সেখান থেকে বিদায় নিয়ে তিনি আরও কয়েক জনের সঙ্গে মিলে ‘ফোরাম’ নামের একটি কাঠামো গড়ে তোলেন। পরে এখান থেকে ফোরাম নামের একটি মুখপত্রও বের হয়। ফরহাদ মজহার তখন ফোরামের সভায় ও প্রকাশনায় নিয়মিত বিপ্লব, সংগঠন, মার্কসবাদ ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞানগর্ভ বাণী…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.