যা লংমার্চ দিয়ে শুরু হয়েছে তা মুক্তাঞ্চলে রূপ নিতে পারে। এবং বাংলাদেশে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ সন্ত্রাসের জন্ম দিতে পারে। এবং কোন অঞ্চল থেকে? বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল কোনটি? – চট্টগ্রাম বিভাগ, নিঃসন্দেহে এবং বিচ্ছিনতাবাদী সন্ত্রাসের শুরু এখান থেকেই শুরু করা হবে, লংমার্চ করে ফেলা গেছে, এখন দরকার একটা মুক্তাঞ্চল সৃষ্টি – সেমহড়া রামুতে পটিয়াতে সাতকানিয়াতে বাঁশখালীতে ফটিকছড়িতে হয়েছে, সেমহড়া সফলতার লক্ষ্যে চলতে থাকবে।
এই যে সম্ভাব্য বিচ্ছিন্নতার কৌশল নিয়ে ভাবছি এরই মাটি তৈরি করবে ইসলামি মাওবাদ। এদের সবচেয়ে বড় পৃষ্টপোষক হয়ে উঠতে পারে বার্মার মাদকসম্রাটেরা এবং বার্মার সামরিক গোয়েন্দারা। আমাদের সাবধান হতে হবে। চট্টগ্রাম বিভাগের যেকোনো বিষয়ে প্রতিটি পদক্ষেপের সামরিক রাজনৈতিক বিশ্লেষণ এখন করতে হবে সর্বোচ্চ দক্ষতায়। নজদারি বাড়াতে হবে পার্বত্য চট্টগ্রামের নাজুক এলাকায়, বৃহত্তর কক্সবাজারে, চট্টগ্রাম বন্দরে ও ‘সমুদ্রবিজয়’ খ্যাত সামুদ্রিক সীমান্তে।
বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে বড় স্ট্র্যাটেজিক আদান-প্রদান করতে হবে ভারত ও থাইল্যান্ডের সাথে আঞ্চলিক ক্ষেত্রে এবং আমেরিকা ও রাশিয়ার সাথে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। চীনের সাথে এখন ব্যবসায়িক গুরুত্বপূর্ণতম অংশীদারি ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে, এখনই চীনের সাথে স্ট্র্যাটেজিক আলোচনা নয়, তার চেয়ে জাপানের সাথে সেটা করা যেতে পারে দেশটির সাথে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো অংশীদারীত্বের কারণে।
বাংলাদেশকে কোনোভাবেই ‘ইসলামি’ তকমায় দ্বীন = রাষ্ট্র করে তোলা যাবে না। ইসলামি মাওবাদের সেটাই লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একাধিক মুক্তাঞ্চল সৃষ্টি করতে পারলেই এই শক্তি চট্টগ্রাম বিভাগকে বিচ্ছিন্ন করতে মূল বিচ্ছিন্নতাবাদী সংকল্পে ঝাঁপিয়ে পড়বে। এতে সবচেয়ে লাভবান হবে বার্মার মাদকসম্রাটেরা এবং অবশ্যই বার্মার ‘চীনমুখী’ সংখ্যাগরিষ্ঠ সামরিকপ্রশাসন এবং বার্মার ভিক্ষুসাম্রাজ্য।
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর কাজ এখানেই সবচেয়ে বেশি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে হাসিনাকে নিতে হবে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও বেশি ভূমিকা। চট্টগ্রাম বিভাগে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থানটা খুবই নড়বড়ে। চট্টগ্রামের কোনো আওয়ামী নেতাই কেন্দ্রে প্রভাবশালী নন, হাছান মাহমুদ বড় মন্ত্রীত্ব ও বড় দলীয় পদ পেলেও চট্টগ্রামের রাজনীতিতে ‘মহিউদ্দীন বৈরিতা’য় খুবই নাজুক। ওবায়দুল কাদেরকে ঘিরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় রাজনীতির একটা বলিষ্ঠ রূপরেখা তৈরি করার কাজ খুব দ্রুতই সম্পন্ন করা প্রয়োজন, যাতে জোট শরিক মহিউদ্দিন খান বাদল ও চট্টগ্রামের চব্বিশ ঘন্টার রাজনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম বিশেষজ্ঞ মহিউদ্দিন চৌধুরী যতদিন সক্রিয় রাজনীতিতে আছেন তার নেতিবাচক রাজনৈতিক কর্মকান্ডগুলোকে বলয়ায়িত করে শক্তির দিকগুলোকে ব্যবহার করা যায় সেই লক্ষ্যে চট্টগ্রামের নতুন রাজনীতিবিদদের একটা ‘প্রেসার গ্রুপ’ গড়ে দেয়া খুবই প্রয়োজন। এভাবেই চট্টগ্রাম বিভাগে আধিপত্য ধরে রাখা বিএনপির শক্তিবলয়কে ঠেলে কোনঠাসা করা যাবে, এবং সেটা করতে পারলেই ইসলামি মাওবাদকে একবারে শুরুতেই ঠেসে ধরা যাবে।
প্রতিরক্ষা নিয়ে গভীর মনোযোগ ও অবলোকন এবং রাজনীতির শক্তিবলয় গড়তে আগামী কয়েক মাসের পরিশ্রমই এখন সরকারের প্রধানততম কাজ হওয়া উচিত চট্টগ্রাম বিভাগে। এখানেই ইসলামি মাওবাদকে পর্যবসিত করে দিতে পারলে সারা দেশের জন্য একটা বড় অর্জন হয়ে উঠবে এই শিক্ষা এবং তখন যেকোনো বিচ্ছিন্নতাবাদের মোকাবেলা রাষ্ট্র আরো ভাল ভাবে করতে পারবে আরো দক্ষতার উপকরণ তার অভিজ্ঞতায় যুক্ত হবে।
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১২ comments
রায়হান রশিদ - ১৩ এপ্রিল ২০১৩ (৮:০৩ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ ভাইয়ের এই লেখাটা সরকারকে পড়ানো গেলে হতো।
আঃ হাকিম চাকলাদার - ২০ এপ্রিল ২০১৩ (৫:১৯ পূর্বাহ্ণ)
“যা লংমার্চ দিয়ে শুরু হয়েছে তা মুক্তাঞ্চলে রূপ নিতে পারে। এবং বাংলাদেশে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ সন্ত্রাসের জন্ম দিতে পারে। এবং কোন অঞ্চল থেকে? বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল কোনটি? – চট্টগ্রাম বিভাগ, নিঃসন্দেহে এবং বিচ্ছিনতাবাদী সন্ত্রাসের শুরু এখান থেকেই শুরু করা হবে, লংমার্চ করে ফেলা গেছে, এখন দরকার একটা মুক্তাঞ্চল সৃষ্টি – সেমহড়া রামুতে পটিয়াতে সাতকানিয়াতে বাঁশখালীতে ফটিকছড়িতে হয়েছে, সেমহড়া সফলতার লক্ষ্যে চলতে থাকবে।”
সহমত।
মাসুদ করিম - ৫ আগস্ট ২০১৩ (২:৫৬ অপরাহ্ণ)
এই ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের সাথেই খুব স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে হেফাজতের, নিঃসন্দেহে।
মাসুদ করিম - ১৬ আগস্ট ২০১৩ (৯:১০ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২৮ আগস্ট ২০১৩ (১:৪৫ পূর্বাহ্ণ)
Pingback: আমার মেমো ৪ : হিলারি আসিবার পূর্বে সন্ত্রাসবাদ মারিয়া ফেলুন | মাসুদ করিম
মাসুদ করিম - ৪ মার্চ ২০১৪ (১১:৩২ পূর্বাহ্ণ)
বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে বড় স্ট্র্যাটেজিক আদান-প্রদান করতে হবে ভারত ও থাইল্যান্ডের সাথে আঞ্চলিক ক্ষেত্রে
মাসুদ করিম - ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ (১২:৪৫ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২৪ মার্চ ২০১৫ (৮:৫৯ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২৯ আগস্ট ২০১৫ (৩:৩৪ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ (১০:১৮ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ (১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ)