বেসরকারী টিভি চ্যানেল এনটিভির "আপনার জিজ্ঞাসা" অনুষ্ঠানের আলোচক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মানুষের ইসলাম সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দিয়ে ধার্মিক মহলে বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। ১৯৭১ এর সময় "বাচ্চু রাজাকার" নামে পরিচিত এই যুদ্ধাপরাধীর ইতিবৃত্ত [...]

শুরুর কথা বেসরকারী টিভি চ্যানেল এনটিভির "আপনার জিজ্ঞাসা" অনুষ্ঠানের আলোচক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মানুষের ইসলাম সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দিয়ে ধার্মিক মহলে বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। মাওলানাকে আমিও চিনেছি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই। গত কয়েকদিন আগে বিভিন্ন মানুষের কাছে এই মাওলানা সম্পর্কিত স্তুতি বাক্য শুনে আমার ইচ্ছে হলো, তার সম্পর্কে একটু খোঁজ খবর নেবার। যেহেতু তার দাঁড়ি আছে এবং বয়স দেখলে বোঝা যায় মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যুবক ছিলেন তাই খোঁজখবর নেওয়া মানে হলো, তিনি রাজাকার বা এই জাতীয় কোন কিছুর সাথে জড়িত ছিলেন কিনা, স্বাধীনতা যুদ্ধের তার ভূমিকা কী ছিল সে সম্পর্কে জানা। জানার উদ্দেশ্যে আমি বিভিন্ন মানুষকে মেইল দেওয়া শুরু করি। মেইলা মেইলি শেষ হঠাৎ মনে হয়, কী নির্বোধ আমি গুগলকেই জিজ্ঞেস করা হয়নি। তারপর গুগলে মাওনালা আবুল কালাম আজাদ রাজাকার লিখে সার্চ দিতেই বের হয়ে এলো অসংখ্য তথ্য। লেখা শুরুর আগে একটা ঘটনা বলি। এবারের রোজায় আইইউটির ইসলামী স্ট্যাডিজ সোসাইটির উদ্যোগে এক ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। ইফতার পার্টির আগের দিন দুপুরে স্পন্সর হিসেবে ওয়ামি (WAMY) এর নাম জানতে পেরে আমি, আমার কয়েকজন সহপাঠী ও জুনিয়র মিলে নেট থেকে এবং পরিচিত কয়েকজনকে ফোন দিয়ে এদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করি। সব তথ্যগুলো এক করে রাতে এই মর্মে পোস্টার লেখা লেখা হয়, ওয়ামি একটি মুসলিম টেররিস্ট ফান্ডিং গ্রুপ। মধ্যপ্রাচ্যের এই ইয়ুথ অর্গানাইজেশন বিশ্বের বিভিন্ন টেররিস্ট ফ্যানাটিক গ্রুপকে সরাসরি অর্থ সাহায্য প্রদান করে থাকে। এছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামী শিবিরের সাথে তাদের চমৎকার সুসম্পর্ক বিদ্যমান [[সূত্রঃ শেষ প্যারা]]। ওয়ামির উত্তরার অফিসে শিবিরের বিভিন্ন মিটিং হয়ে থাকে, এছাড়াও যেসব জায়গায় শিবির নিজ নামে প্রবেশ করতে পারেনা সেসব জায়গায় মূলত তারা ওয়ামির ব্যানার ব্যবহার করে থাকে। আমাদের এই পোস্টারিং এ বিব্রত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা (পড়ুন শিবিরপ্রাণ) প্রচার চালায়, আমরা মূলত ইসলাম ধ্বংসের জন্য এই পোস্টারিং করেছি। আমাদের সকল তথ্যই ভুয়া। তথ্যগুলো ইন্টারনেটে ইহুদি- খ্রিস্টানদের সাইট থেকে কপি করা, যাদের একমাত্র কাজ হলো এইসব ভুয়া তথ্য প্রচার করে শান্তির ধর্ম ইসলামের সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের মুখে কালিমা লেপন করা। এই ঘটনা এখানে বলার মূল উদ্দেশ্য হলো, মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে নিয়ে লেখা এই প্রবন্ধ অনেকেরই ভালো…

মুক্তাঙ্গন এর সাম্প্রতিক স্বেচ্ছাসেবক সংগ্রহ-আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন বহু মানুষ। 'যুদ্ধাপরাধ ওয়ার্কগ্রুপ' এবং 'যুদ্ধাপরাধ স্ট্র্যাটেজি ফোরাম'‌‌-এ সংশ্লিষ্ট হবার আগ্রহও ব্যক্ত করেছেন অনেকে। তাঁদের এ আগ্রহ এবং প্রতিজ্ঞা এক দিকে যেমন এ বিষয়ে যাঁরা কাজ করছেন তাদের সবার জন্য উৎসাহব্যঞ্জক, তেমনি (আমাদের বিশ্বাস) তা সবাইকে মনে করিয়ে দেবে যে এখনো হতাশ হবার মতো কিছু ঘটেনি। আশার বাতিটুকু হাতে নিয়ে এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দেয়া বাকি, পাড়ি দেয়া দরকার। ওয়ার্কগ্রুপ এবং ফোরামের কাজের ধরণ বিবেচনায় ইচ্ছে থাকলেও সবাইকে এ মুহুর্তে অন্তর্ভুক্ত করে নিতে পারছি না আমরা, সঙ্গত কারণেই। কাজের ধরণ, কাজের পরিমান এবং বিভিন্ন নিরাপত্তাজনিত বিষয় বিবেচনায় এই দু'টো গ্রুপকেই আপাতত কঠোরভাবে 'সংরক্ষিত' রাখতে হচ্ছে কেবল তাঁদেরই মধ্যে, যাঁরা: (ক) পূর্ণ কমিটমেন্ট সহকারে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ বিষয়ে কাজ করতে প্রস্তুত; (খ) দায়িত্বপালনে এখানকার কাজকে (অগ্রাধিকার ভিত্তিতে) যথেষ্ট সময় দিতে প্রস্তুত; (গ) গবেষণা দক্ষতা, বিশেষজ্ঞ জ্ঞান, যোগাযোগ এবং সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা দিয়ে এখানকার করণীয় কাজগুলোতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে একে এগিয়ে নিতে পারবেন বা গতি আরও ত্বরাণ্বিত করতে পারবেন। তবে, অংশগ্রহণে আগ্রহীদের জন্য এখনো রয়েছে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজের সময় এবং সুবিধেমতো বিশেষ অবদান রাখার সুযোগ। যেমন: যুদ্ধাপরাধ স্ট্র্যাটেজি ফোরামের এই অংশটাতে প্রাসঙ্গিক সমস্ত খবর, নিবন্ধ, ব্লগ, বিবৃতি, বক্তব্য, রিপোর্টগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর একটি পূর্ণ আর্কাইভ গড়ে তোলার লক্ষ্যে। এই লিন্কে দেয়া পাতাটির বিন্যাস দেখলেই স্পষ্ট হবে ঠিক কি ধরণের তথ্য খোঁজা হচ্ছে। যে কেউ নিবন্ধন ছাড়াই যে কোন লিন্ক (পারলে এর কনটেন্টটুকুও কপিপেস্ট করে) সেখানে “NEW TOPIC” বোতামটি ক্লিক করে তথ্য হিসেবে সংযোজন/পেশ করতে পারবেন। কোন তথ্যের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কি না সে বিষয়ে তথ্যদাতার চিন্তিত হবার কিছু নেই। ফোরাম মডারেটরগণ সে সব সাজিয়ে নিতে পারবেন প্রয়োজনমতো। তবে উল্লেখ্য, প্রতিটি সাবমিশনই চূড়ান্তভাবে ফোরাম ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবার আগে অবশ্যই মডারেশন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে, বোধগম্য কারণেই। এই কাজটি সবাই মিলে করতে পারলে ধীরে ধীরে একটা বিশাল তথ্যভান্ডার গড়ে উঠতে পারে, যেটা সবারই কাজে লাগবে। কারণ, এভাবে যে আর্কাইভ গড়ে উঠবে, তা থেকে যুদ্ধাপরাধের-বিচার বিষয়ে ঘটনার গতি-প্রকৃতি-অগ্রগতি খুব সহজেই একটি পোর্টালের ভেতরেই মনিটর করা সম্ভব হবে, এবং সে অনুযায়ী কর্মপন্থা নির্ধারণ করা যাবে। এছাড়াও, আর…

বাংলাদেশ যখন প্রত্যাশা করছে, ২০০৮-এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নতুন সরকার তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে, বিদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী যুদ্ধাপরাধীদেরও দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবে, ঠিক তখনই একটি ঘটনার মধ্যে দিয়ে যুদ্ধাপরাধী চক্র আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে, এ-ধরণের বিচারপ্রক্রিয়াকে ঠেকানোর জন্যে এবং বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত তথ্যায়ন প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করার জন্যে তারা যথেষ্ট সংঘবদ্ধ। উল্লেখ্য, গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাকের ব্রিটেন সফর নিয়ে এই ব্লগেই এ মাসের পাঁচ তারিখে একটি পোস্ট লিখেছিলেন অবিশ্রুত এহুদ বারাকের ব্রাইটন মিশন : ব্রিটেন কি যুদ্ধাপরাধীদের ভূস্বর্গ? শিরোনামে। প্রসঙ্গত তিনি লিখেছিলেন, ব্রিটেন যে যুদ্ধাপরাধীদের ভূস্বর্গে পরিণত হয়েছে, এই ক্ষোভ এর আগেও প্রকাশ পেয়েছে অন্যান্য দেশের বিভিন্ন নাগরিকদের মন্তব্য থেকে। বাংলাদেশের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে, তাদের কারও কারও নিরাপদ বাসস্থান এখন এই ব্রিটেন। এই ব্রিটেনে বসেই গোলাম আযম পরিচালনা করেছিলেন পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার আন্দোলন। মুক্তাঙ্গনে এই পোস্ট প্রকাশের দু-দিন পর ৭ অক্টোবর তারিখে গার্ডিয়ান পত্রিকায় যুক্তরাজ্য-নিবাসী কথিত যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মুঈনউদ্দিনকে নিয়ে লেখেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী ছাত্র দেলোয়ার হুসেন। তাঁর লেখাটির শিরোনাম ছিল ‘প্রসিকিউট বাংলাদেশ’স ওয়ার ক্রিমিনালস’, যাতে প্রসঙ্গক্রমে উঠে আসে, ব্রিটেনে আশ্রয়গ্রহণকারী বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মুঈনউদ্দিনসহ বিভিন্ন জনের কথাও। চৌধুরী মুঈনউদ্দিনের যুদ্ধকালীন ভূমিকা সম্পর্কে কমবেশি আমরা সবাই জানি। গণহত্যা-সম্পর্কিত একটি ওয়েবসাইটেও তার সম্পর্কে তথ্যপত্র রয়েছে, যাতে সুস্পষ্ট যে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি হন্তারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এমনকি ব্রিটেনে আশ্রয় নেয়ার পরও তিনি যে-ভূমিকা রেখে চলেছেন, তা অতীতের রাজনৈতিক আদর্শেরই জের। গার্ডিয়ানে লেখাটি প্রকাশ পাওয়ার পর চৌধুরী মুঈনউদ্দিন তা ধামাচাপা দেয়ার জন্যে মরিয়া হয়ে ওঠেন এবং শেষ পর্যন্ত খানিকটা সফলও হয়েছেন বলা চলে। কেননা আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার হুমকির মুখে গার্ডিয়ান কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েবসাইটের মূল লেখাটিতে পরিবর্তন ঘটিয়েছে।এ প্রসঙ্গে গার্ডিয়ান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন On 13 October this article was changed following a legal complaint. এ ঘটনার মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার, যুদ্ধাপরাধী চক্র খুবই সংঘবদ্ধ এবং তারা ব্রিটেনের একটি প্রধান সারির পত্রিকার ওপর সাময়িক কিংবা সুদূরপ্রসারীভাবে চাপ তৈরি করতে সক্ষম। গণতান্ত্রিকতা ও বাকস্বাধীনতা চর্চার সুযোগ গ্রহণ করে যুদ্ধাপরাধীরা এখন এখানে গণতান্ত্রিক আইনী পদ্ধতিতে ঐতিহাসিক ও প্রতিষ্ঠিত সত্যকেও পাল্টে ফেলার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কয়েকদিন আগে আমরা দেখেছি, ব্রিটেন…

ব্রাইটনে লেবার পার্টির কনফারেন্স কাঁপিয়ে গেলেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক। গাজায় যুদ্ধাপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করার আবেদন করেছিলেন ব্রিটেনের কয়েক আইনজীবী। ১৬ জন প্যালেস্টাইনির পক্ষ থেকে এই আইনজীবীরা গত ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার মামলা করে আবেদন জানিয়েছিলেন, এহুদ বারাকের বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করবার জন্যে। হা হতোষ্মী, ওই আবেদন নামঞ্জুর করেছে ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত [...]

ব্রাইটনে লেবার পার্টির কনফারেন্স কাঁপিয়ে গেলেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক। গাজায় যুদ্ধাপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করার আবেদন করেছিলেন ব্রিটেনের কয়েক আইনজীবী। ১৬ জন প্যালেস্টাইনির পক্ষ থেকে এই আইনজীবীরা গত ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার মামলা করে আবেদন জানিয়েছিলেন, এহুদ বারাকের বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করবার জন্যে। হা হতোষ্মী, ওই আবেদন নামঞ্জুর করেছে ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আমরা জানতে পারছি, বিচারক নাকি তার রায়ে বলেছেন, একটি দেশের ক্ষমতাসীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে এহুদ বারাক যোগ্যতা রাখেন যে-কোনও মামলা থেকে কূটনৈতিক অব্যাহতি পাওয়ার। আসলে বিচারকের হাতে রায়ের এ তূণ তুলে দিয়েছেন ব্রিটেনে বসবাসরত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত রন প্রোসর, ২৯ সেপ্টেম্বর যিনি খুবই তৎপর ছিলেন ব্রিটিশ ফরেন অফিসে এবং বার বার দাবি করছিলেন, মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং পৃথিবীর কোথাও কোনও ক্ষমতাসীন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি কিংবা গ্রেফতার করার একটিও দৃষ্টান্ত নেই। রন প্রোসরের ব্যাখায় অথবা চাপে শেষ পর্যন্ত তুষ্ট হয়েছে ব্রিটেনের ফরেন অফিস। মামলার আবেদন নাকচ হয়ে গেছে। সদম্ভে ব্রাইটনে দু’দিন ব্যাপী লেবার পার্টির সম্মেলনে যোগদান শেষে ইসরাইলে ফিরে গেছেন তিনি। ‘লেবার ফ্রেইন্ডস অব ইসরাইলের’ একজন এই এহুদ বারাক, যার পদধূলিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং আবারও ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরাইলের প্রতি তার এবং তার দল আগের মতোই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; ইহদি লবির প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ পেয়েছে এই স্তুতিতে, এলএফআই (লেবার ফ্রেইন্ডস অব ইসরাইল) ব্রিটেনের সবচেয়ে সফল ক্যাম্পেইনিং সংগঠনগুলির অন্যতম। এখানেই শেষ নয়, ‘চোরে চোরে মাসতুতো ভাই, চ্যালায় ধরে গামছা’, ওই ‘গামছা’ ধরেছেন ফরেইন অফিস মিনিস্টার ইভান লুইস, এই সজ্জন ব্যক্তিটি বলেছেন, ওই সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী একেবারে হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে কথা বলেছেন! অথচ দিনের শুরুতেও ২৯ সেপ্টেম্বর আমাদের জানা ছিল, এহুদ বারাকের এই সফর কূটনৈতিক নয়, ডিপ্লোম্যাটিক ইম্যুনিটি নেই তার এবং তাই তিনি ব্রিটিশ আইনের আওতায় পড়বেন এই সফরকালে। কিন্তু মামলার রায় ঝুলিয়ে রাখা হয় এবং সন্ধ্যা ছয়টার দিকে জানানো হয়, তার এ সফরের কূটনৈতিক পরিসর রয়েছে! ব্রিটেনে একটি আইন আছে, যে-আইনের বলে এখানে অন্য কোনও দেশের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগেও যে কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করার অধিকার রয়েছে। গাজায় নির্বিচার গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের সাক্ষী ওই ১৬জন প্যালেস্টাইনি নাগরিকের প্রত্যাশা ছিল, এই আইনটির যথাযথ প্রয়োগ ঘটবে এবং…

ব্রায়ান মুর একটি উপন্যাস লিখেছিলেন ‘দ্য স্টেটমেন্ট’ নামে; যুদ্ধাপরাধী পল ট্রভিয়েরের জীবন ছিল তাঁর সে কাহিনীর ভিত্তি। পরে মুরের ওই পাণ্ডুলিপিকেই নতুন এক রূপ দেন রোমান পোলানস্কির হলোকাস্টভিত্তিক চলচ্চিত্র দ্য পিয়ানিস্ট-এর চিত্রনাট্য লেখক রোনাল্ড হারউড। আর রোনালেন্ডর ওই চিত্রনাট্য নিয়ে পরিচালক নরমান জুইসন নির্মাণ করেন ২০০৩ সালে চলচ্চিত্র ‘দ্য স্টেটমেন্ট’। পল ট্রভিয়ের এখানে যুদ্ধাপরাধী পিয়ের ব্রোসার্ড। ১৯৪০ সালে জার্মান বাহিনী ফ্রান্সের ভিসি শহর দখল করে নেয়ার পর ১৯৪৩ সালে তাদের সহায়তা করার জন্যে ভিসি সরকার মিলিচ নামে একটি আধা-সামরিক বাহিনী গড়ে তোলে; যাদের কাজ ছিল নাজী দখলদারদের বিভিন্ন হুকুম তালিম করা, নানাভাবে সহায়তা করা। পিয়ের ব্রোসার্ড ছিলেন সেই মিলিচ নামের আধা-সামরিক বাহিনীর একজন। তরুণকালের ব্রোসার্ডকে দিয়েই শুরু হয়েছে এ চলচ্চিত্র; দেখি আমরা ১৯৪৪ সালের ফ্রান্সের ডোমবে,- মানুষজনকে রাতের অন্ধকারে ঘর থেকে তুলে আনার কাজে সেখানে নেতাগিরি করছে ব্রোসার্ড, গণহত্যার জন্যে তাদের দাঁড় করাচ্ছে সারিবদ্ধভাবে এবং আদেশ দিচ্ছে ‘ফায়ার’। এরপরই আমরা দেখি ১৯৯২ সালের ব্রোসার্ডকে। তাঁর বয়স এখন প্রায় ৭০। তাঁর জীবনের একমাত্র সাধনা এখন নিজের অতীতকে লুকিয়ে রাখা। স্যালন ডি প্রোভিন্স-এর একটি মঠে বসবাস করে সে। সংগোপনে বসবাসকারী ব্রোসার্ডের খোরাকী জোগায় ক্যাথলিক চার্চের বন্ধুচক্র, অপরিসীম সহানুভূতি যাদের ব্রোসার্ডের মতো যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি। এইভাবে বেশ ভালোভাবেই বেঁচে থাকে ব্রোসার্ড। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শেষ হতেই মার্শাল পিটেইনের নেতৃত্বে গঠিত আধা-সামরিক বাহিনীতে কর্মরত এরকম সব যুদ্ধাপরাধী ফ্রান্স থেকে ভাগতে থাকেন, কেউ কেউ আবার আদালত থেকেও ব্রোসার্ডের মতো পার পেয়ে যান। কেননা রাষ্ট্রকাঠামো ও চার্চের মধ্যে স্থান করে নেয়া সমমনা রাজনৈতিক ও নীতিনির্ধারক ব্যক্তিরা সহায়তা করেন তাদের। ব্রোসার্ডের ক্ষেত্রেও দেখি, অপরাধ করার পরও তাঁর কোনও সাজা হয় না, চার্চের সহায়তায় রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমা পেয়েই আত্মগোপনে চলে যায়, এক মঠ থেকে অন্য মঠে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে ধর্মচর্চায় মন দেয় সে। ধর্মকর্ম করে, অতীত লুকিয়ে রাখে, আর বৃদ্ধ হতে থাকে। অবশ্য যত বৃদ্ধই হোক না কেন, কর্মক্ষমই থাকে ব্রোসার্ড। নিজের গাড়ি নিজে চালায়, দৈনিক গাল কামায় এবং প্রার্থনাও করতে পারে কোনও কষ্ট ছাড়াই। কিন্তু তারপরও বৃদ্ধ সে। মৃত্যুর জন্যে অপেক্ষা করা ছাড়া এখন আর কিছুই করার নেই পিয়ের ব্রোসার্ডের। কিন্তু এরকম এক সময়ে হঠাৎ করেই পাল্টে যায় পিয়ের…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.