কিন্তু সাংস্কৃতিক মুসলমান তার বাটখারা নিয়েই দাঁড়িয়ে থাকবেন [...]

নাচ গান কবিতা নাটক তার কাছ থেকে তুলে নেয়া হয়েছে। তাকে এমন এক অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়েছে তার বিশ্বাসের জোর তাকে এসব ছাড়া বাঁচতে বাধ্য করেছে, জীবন চলেছে, তাকে জীবনের সাথে চলতে হয়েছে, কিন্তু পা মেলেনি, কোথাও সুর লাগেনি, ছন্দ তাকে ভুলে গেছে, আলিঙ্গন হৃদয় হারিয়েছে। কখনো কখনো তাই সে সব ছেড়েছুঁড়ে কোনো রঙ্গালয়ে গিয়ে দিনের পর দিন লুকিয়ে থেকেছে, নিজের উদ্দামতায় নিজে লজ্জা পেয়েছে। জীবনের চাপে শেষ পর্যন্ত একটা বাটখারা তৈরি করা হয়েছে, সেই বাটখারায় মেপে মেপে নাচ গান কবিতা নাটক আবার ওর হাতে তুলে দেয়া শুরু হয়েছে। সে প্রথমে বুঝতে পারেনি ওই বাটখারার মাপে কী কী হারিয়েছে, সে যা হাতে পেয়েছে তাতেই অভ্যস্ত হয়েছে, তাকেই অনন্ত সংস্কৃতি ভেবেছে, এদিকে তার সমাজ ভেতর থেকে ঠেলছে, যা দিতে বলেছিলে তা তো দিয়েছিই কিন্তু তোমার সংস্কৃতির প্রচার নেই কেন, তাকে তখন তার বাটখারার মাপের সেই সংস্কৃতি নিয়ে তোড়জোড় শুরু করতে হয়েছে, তার বাটখারার মাপে যাদের মন গড়া তারা তার বাটখারার মাপের সংস্কৃতি গ্রহণ করে তাকে বাহবা দিয়েছে, কিন্তু কেউ কেউ একেবারে চুপ হয়ে গেছে, কেউ সংস্কৃতি শুনলেই তেড়ে এসেছে, কেউ এসবের উপর বিরক্ত হয়ে এত দূরে চলে গেছে – এত দূরে চলে গেছে – আর ফেরেনি। নাচ গান কবিতা নাটক তো নাচ গান কবিতা নাটক, তার পরিচয় তার, তার ভাবনা তার, সে আবার ভারহীন, সে আবার বহমান, তার তার পথ আছে, তার অমেয় দুরভিসন্ধি আছে। কিন্তু সাংস্কৃতিক মুসলমান তার বাটখারা নিয়েই দাঁড়িয়ে থাকবেন, সেই বাটখারার তুল্য হতে তো সংস্কৃতির জন্ম হয়নি, সেই বাটখারার তুল্য হতে তো সৃষ্টিশীলতা বেড়ে ওঠেনি, সেই বাটখারার মাপে তো মানুষের সাংস্কৃতিক পথের সীমানা টেনে দেয়া যায় না। মানুষের সবচেয়ে সংবেদনশীল সৃষ্টির দিকে উন্মুখ কৈশোরকে এই বাটখারা যেভাবে নিবর্তন করে তার প্রভাব সারাজীবন মানসিক অতলে প্রতিবন্ধকতার ত্রাসে অন্তরাত্মাকে ছিন্নভিন্ন করে। আমাদের সময় নেই, বহুবার একথা উচ্চারিত হয়েছে, আমাদের সময় নেই সেই বাটখারায় মেপে মেপে সংস্কৃতির পথ চলার, আমাদের ইচ্ছেও নেই, কিন্তু এখনো, আজো, সেই বাটখারার মাপে, সেই বাটখারার প্রতাপে আমাদের সাংস্কৃতিক অগ্রযাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করাটা চলছেই। নাচ গান কবিতা নাটক তাকে হারাচ্ছে, ওই সাংস্কৃতিক মুসলমানের বাটখারার মাপের…

বহুদিন এমন সহজ আত্মজীবনী পড়িনি।[...]

পুরনো বইপ্রস্থ বইপ্রস্থ ২৫ আগস্ট ২০০৯ বইপ্রস্থ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বইপ্রস্থ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০ রাজনৈতিক কর্মীর নোটবই অসমাপ্ত আত্মজীবনী ।। শেখ মুজিবুর রহমান ।। ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, ঢাকা।। প্রথম প্রকাশ জুন ২০১২ ।। মূল্য ৫২৫ টাকা ।। বহুদিন এমন সহজ আত্মজীবনী পড়িনি। বহুদিন কোনো আত্মজীবনী এভাবে আমার ভেতরে হানা দেয়নি। একেবারে শুরুতেই ভাল লেগেছে, যখন শেখ মুজিব লিখছেন একদিন সন্ধ্যায় বাইরে থেকে তালা বন্ধ করে দিয়ে জমাদার সাহেব চলে গেলেন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ছোট্ট কোঠায় বসে বসে জানালা দিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে ভাবছি, সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা। কেমন করে তাঁর সাথে আমার পরিচয় হল। কেমন করে তাঁর সান্নিধ্য আমি পেয়েছিলাম। কিভাবে তিনি আমাকে কাজ করতে শিখিয়েছিলেন এবং কেমন করে তাঁর স্নেহ আমি পেয়েছিলাম। শুরুর এই সলতে পাকানো সারা বইয়ে সার্থকতার সাথে আলো জ্বালিয়ে গেছে নির্বিঘ্নে। আমরা ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত শেখ মুজিবের ‘অসমাপ্ত’ রাজনৈতিক কর্মময়তায় ডুবে থাকি। অনেক শুনেছি এই ‘ফুলটাইমার’ শব্দ, আজ পড়ছি – এর আগে এর চেয়ে বেশি আর কোনো ‘ফুলটাইমার’কে পড়েছি বলে মনে হয় না। বড় প্রয়োজন ছিল এই আত্মজীবনীর। বড় প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের আপাদমস্তক এই রাজনৈতিক কর্মীর জীবন সম্বন্ধে জানবার। রেণুকে [বেগম মুজিব] ছোটোখাটো আঁচড়ে যা জেনেছি, বলতেই হবে এক মহৎ জীবনসঙ্গীকে জেনেছি। হাচিনাকে [শেখ হাসিনা] ও কামালকে যৎসামান্য যা পাওয়া গেছে তাতে বোঝা গেছে জেল খাটা সেইসব দেশ আলো করা রাজনৈতিক কর্মীদের ছেলেমেয়েদের শৈশব কীকরে কেটেছে। খুবই সরল চলনের এই বই। রাজনীতির কূটকচালের, ঘটনার ঘনঘটার আশায় যারা এই বইয়ে হামলে পড়বেন তারা ভুল করবেন। কিন্তু যারা রাজনৈতিক কর্মীর নোটবই হিসাবে পড়বেন, তাদের জীবনে দ্যুতি ছড়াবে এই বই। অনেকদিন, বহুদিন।

আলমাসে নিয়মিত [...]

আলমাসে ইউনূস নিয়মিত লুকিয়ে লুকিয়ে সামাজিক ছবি দেখতেন।

৩ জুন ২০১২তে বাস থামিয়ে যে দশ জন মুসলিমকে ছুরির আঘাতে হত্যা করা হয়েছিল তার মধ্যে আট জনই ছিলেন রেঙ্গুনের মুসলমান যারা রাখাইন প্রদেশে তবলিগি চিল্লা শেষে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন। [...]

আগামী ১৬ জুন নোবেল ফাউন্ডেশন এক বিলম্বিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৯৯১ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার তুলে দেবেন সু কি'র হাতে। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ও তার পূর্বাপর ইউরোপ সফরের উদ্দেশ্যে আজ রেঙ্গুন ছাড়বেন সু কি। বর্তমানে বার্মার রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিম-রাখাইন বৌদ্ধ যেদাঙ্গা হচ্ছে তা পেছনে ফেলে ইউরোপ সফর এবং সফর শেষে দেশে ফিরে আসাই এখন তার মূল লক্ষ্য, তাই দায়সারা মন্তব্যের চেয়ে বেশি কিছু বলছেন না তিনি। অথচ ৩ জুন ২০১২তে বাস থামিয়ে যে দশ জন মুসলিমকে ছুরির আঘাতে হত্যা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে আট জনই ছিলেন রেঙ্গুনের মুসলমান যারা রাখাইন প্রদেশে তবলিগি চিল্লা শেষে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন। রাখাইন বৌদ্ধরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে ২৮ মে ২০১২তে রাখাইন এক মেয়েকে কয়েকজন রোহিঙ্গা মুসলিমের ধর্ষণ ও পরবর্তীতে খুনের রেশ ধরে। বার্মার রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলমানেরা ২০১০ সালে ভোটার লিস্টে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন এবং কথা ছিল সেনাবাহিনী সমর্থিত দলের প্রার্থীকে ভোট দিলে তাদেরকে বার্মার জাতীয়তাও দেয়া হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো তৎপরতা থাইন সাইন সরকারের মধ্যে দেখা যায়নি। রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে সন্ত্রাসবাদী আছে এটা ঠিক, কিন্তু সাধারণ রোহিঙ্গা মুসলমানরা তো সন্ত্রাসবাদী নয়। সন্ত্রাসবাদীদের চিহ্নিত করে সাধারণ রোহিঙ্গা মুসলমানদের জাতীয়তা দেয়ার প্রশ্নে সু কি'র কোনো স্পষ্ট অবস্থান এখনো আমাদের চোখে পড়েনি। জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইট ওয়াচ বাংলাদেশকে বলছে বাংলাদেশের সীমান্ত রোহিঙ্গা সাধারণ শরণার্থী মুসলমানদের জন্য শিথিল করে দিতে। কিন্তু জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইট ওয়াচ নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্ত সু কি'কে কেন বলছে না, রাখাইন প্রদেশেই এই শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ ক্যাম্প সৃষ্টিতে সহায়তা করতে? জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা যদি এরকম ক্যাম্প সৃষ্টি করতে পারে তাহলে সেই ক্যাম্পে যাবতীয় সাহায্য সহযোগিতা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত থাকবে। এবং বাংলাদেশে শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও পর্যায়ক্রমে সেই ক্যাম্পে স্থানান্তরিত করতে নীতিগত সহায়তা চাইবে। আর যদি এর জন্য জাতিসংঘের শান্তি মিশন প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রেও বাংলাদেশ সাড়া দেবে। আর এই সবকিছু সম্ভব সু কি যদি এবিষয়ে নিজেকে জড়াতে চান। কিন্তু সু কি'র যা অবস্থা তাতে তো শুধু এটাই মনে হচ্ছে তিনি নোবেলে ও সংসদে আটকা পড়ে গেছেন।

ব্যাপারগুলো এভাবেই হয় [...]

বাংলাদেশ এর মধ্যেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে ভাবছে। বাংলাদেশ সুপেয় পানির জন্য এবং তার দক্ষিণ উপকূলীয় লবণাক্ততার কথা বিবেচনা করে নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের মাধ্যমে পানির লবণাক্ততা বিনাশের নিউক্লিয়ার ডিস্যালিনেশন নিয়েও খুব স্বাভাবিকভাবেই ভাবতে পারে। এদুটি ভাবনাকে কাজে রূপান্তরিত করতে পারলে বাংলাদেশ দেখা যাবে এরপরেই নিজেকে পারমাণবিক শক্তি হিসাবে ভাবনার দিকে এগুবে। ব্যাপারগুলো এভাবেই হয়, এবং বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক অবস্থান খুব দ্রুতই সেভাবনায় ঘি ঢালবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই – বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত পাকিস্তান এরমধ্যেই পারমাণবিক শক্তি হিসাবে পরিচিত, বার্মার পারমাণবিক সক্ষমতার কথাও এখন মাঝে মাঝে শোনা যায়, নেপাল ও শ্রীলন্কার দুধর্ষ সামরিক শক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষা এদুটি দেশকেও পারমাণবিক শক্তি অর্জনের দিকে ধাবিত করতে পারে। এই হাতছানি আমাদেরকে সত্যিই কি সেখানে নিয়ে যাবে, যেখানে দাঁড়িয়ে বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে পারমাণবিক শক্তির বিরুদ্ধে একদিন দাঁড়াতে হবে আমাদের নিজের রাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের বিরুদ্ধে?

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.