আমাদের দেশে জাতীয় উদ্যোগে চলচ্চিত্র শিক্ষার কোন প্রাতিষ্ঠানিক কেন্দ্র নেই। কিন্তু চলচ্চিত্র শিক্ষা একেবারেই নেই বলা যাবে না। কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি সাবজেক্ট হিসেবে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গনযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের কোর্স হিসেবে চলচ্চিত্র পড়ানো হয়। আবার চলচ্চিত্র ও চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সাথে যুক্ত সংগঠনগুলোও নিয়মিত/অনিয়মিতভাবে চলচ্চিত্র নির্মানের কোর্স,ওয়ার্কশপ এবং সেমিনার-এর আয়োজন করে থাকে। তা সত্ত্বেও চলচ্চিত্রের শিক্ষার বিষয়টি আমাদের দেশে বরাবরই অনানুষ্ঠানিক এবং আবহেলিত। কোর্স বা অধ্যয়নের বিষয় হিসেবে চলচ্চিত্র কোন না কোনোভাবে অন্যান্য মাধ্যমগুলোর উপর নির্ভরশীল। যেমন টেলিভিশন মিডিয়া, গনমাধ্যাম ও সাংবাদিকতা কিংবা ভিস্যূয়াল আর্ট। চলচ্চিত্র শিক্ষা এদের উপর ভর করে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এগুতে থাকে। অথচ, চলচ্চিত্র বিষয়টি নিজেই অনেক বিশাল এবং বিস্তৃত। পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র শিক্ষার কেন্দ্রের সিলেবাসগুলো দেখলেই তা বোঝা যায়। ফলে, ভর করে বা নির্ভরশীল হয়ে ফিল্ম শেখা ছাত্রছাত্রীরা শেষপর্যন্ত আর ফিল্ম নিয়ে পড়ে থাকতে পারেন না। প্রচুর লোকজন টিভি-মিডিয়াতে চাকরী করছে , কাজ করছে। কেউ বা নিজের চেষ্টায় আর নিয়ন্ত্রিত সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে কিছু সার্থকতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু খুব কম মানুষই চলচ্চিত্র পরিমণ্ডলে নিজেকে সন্নিবিষ্ট রাখতে পারেন জীবিকা নির্বাহ করার নিমিত্তে । ফলে, সত্যিকার একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা তৈরী হতে পারা খুব কঠিন। আমাদের দেশে বলার মতো যে কয়েকজন চলচ্চিত্রকার আছেন এবং যারা নতুন ডিজিটাল চলচ্চিত্রের হাতে খড়ি নিয়ে পূর্নাঙ্গ চলচ্চিত্র নির্মান করে দেশে-বিদেশে প্রদর্শন করছে, তাদের আসলেই ধন্যাবাদ। কারন, এই দেশের মতো চলচ্চিত্রের অবক্ষয় সম্ভবত আর কোথাও হয়নি, যেখানে গত বিশবছর (২০০৭ সালের ১/১১ প্রেক্ষাপট বাদ দিয়ে) ধরে গনতান্ত্রিক দলগুলোই সরকার পরিচালনা করে আসছেন । কোন সামরিক জুন্তা বা দুর্ভিক্ষপীড়িত প্রেক্ষাপট ছিল না, অথচ স্বাভাবিক চলচ্চিত্রের পরিবেশের সাথে সাথে চলচ্চিত্র শিক্ষার প্রতি মানুষের উৎসাহ নষ্ট হয়ে গেল । ফলে, চলচ্চিত্র একাডেমিক লোকজন ও শিক্ষকও তৈরী হলো না। বিকল্প ধারা বা মুক্ত পর্যায়ের ওয়ার্কশপগুলিতে চলচ্চিত্রের যে তত্ত্বগত ও কারিগরী শিক্ষা দেয়া হয় তাও অনেকাংশে অপরিকল্পিত। বিভিন্ন চলচ্চিত্র সংসদ, ফিল্ম সেন্টার, বা ফিল্ম স্কুলগুলোতে বিভিন্ন কোর্সের মাধ্যমে যে চলচ্চিত্র শেখানো ও পড়ানো হয় তা পর্যাপ্ত নয়। এ ক্ষেত্রে তাদের সীমাবদ্ধতা অপরিসীম। যেসব নির্মাতা, কলা - কুশলী ক্লাস যেন তাতে নিজেদের অভিজ্ঞতার আলোকপাত থাকে বেশি , মূল শিক্ষার…
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্তত একজন গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তি অবস্থান করছেন। তিনি যে আসবেন, এ সংবাদ তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্রে ছাপা হয়নি। অবশ্য তাতে কোনও অসুবিধা হয় নি তাঁর, যাঁদের কাছে তিনি এসেছিলেন এবং যাঁদের জন্যে এসেছিলেন, তাঁরা ঠিকই জানতেন তাঁর আসার খবর। [...]
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্তত একজন গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তি অবস্থান করছেন। তিনি যে আসবেন, এ সংবাদ তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্রে ছাপা হয়নি। অবশ্য তাতে কোনও অসুবিধা হয়নি তাঁর, যাঁদের কাছে তিনি এসেছিলেন এবং যাঁদের জন্যে এসেছিলেন, তাঁরা ঠিকই জানতেন তাঁর আসার খবর। ঢাকায় তিনি এসেছিলেন গত ১২ অগ্রহায়ণ (২৬ নভেম্বর) শনিবার। ১৩ অগ্রহায়ণ (২৭ নভেম্বর) রবিবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ করার পর তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি মন্তব্যও করেছেন, বিচারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্যে বাংলাদেশ সরকারের কাছে দফাওয়ারি যেসব প্রস্তাব তাঁদের পক্ষ থেকে করা হয়েছিল, তার অনেক কিছু গ্রহণ করা হয়নি। তবে যাওয়ার আগে তিনি যা বলে গেছেন তার সোজা মানে হলো, আমরা না কি আন্তর্জাতিক অপরাধের সংজ্ঞা কী তা ঠিকমতো বুঝি না এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে এর সংজ্ঞা ঠিক করতে হবে। তা ছাড়া বিদেশি আইনজীবীদের কেন আসতে দেয়া হচ্ছে না, তারও ব্যাখ্যা চেয়েছেন তিনি। এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিটি হলেন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফেন র্যাপ। কোনো কোনো আইনজীবী মনে করেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারকে যদি আন্তর্জাতিক মানসম্মত হতে হয়, তা হলে অবশ্যই স্টিফেন র্যাপের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। র্যাপকে এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন কে? মনে করছেন লন্ডনের আইনজীবী টোবি ক্যাডম্যান। মনে করছেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল, টোবি ক্যাডম্যানকে অভিযুক্ত পাঁচ যুদ্ধাপরাধীর আইনজীবী হিসাবে নিয়ে আসার। শুধু টোবিই নন, জামায়াতে ইসলামীর এই তালিকায় ছিলেন আরও দুজন বিদেশি আইনজীবী স্টিভেন কে কিউসি ও জন ক্যামেহ। কিন্তু বাংলাদেশে আইনজীবীদের পেশাগত অনুমতি নিয়ন্ত্রণ আইনের কারণে তাঁরা কেউই আসতে পারেননি। এ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির আইনজীবীরা হইচই করছেন, মিডিয়ায় অনেক কথাই বলে বেড়াচ্ছেন; কিন্তু এঁদের কেউই বলছেন না, শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের প্রতিটি দেশেই আইনজীবীদের পেশাগত অনুমতি নিয়ন্ত্রণের জন্যে বার কাউন্সিল জাতীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমনকি টোবি ক্যাডম্যানদের দেশেও একই ধরণের বিধিনিষেধ রয়েছে। চাইলেই কোনো আইনজীবী বাংলাদেশ বা অন্য কোনও দেশ থেকে গিয়ে ইংল্যান্ডের আদালতে আইনজীবী হিসেবে দাঁড়াতে পারেন না। টোবি ক্যাডম্যানরা কি বাংলাদেশের আইন ও আইনগত সংস্কৃতি জানেন? জানেন না, জানলে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের কাছে সরাসরি চিঠি পাঠিয়ে, একইসঙ্গে সেই চিঠি প্রচারমাধ্যমে প্রকাশ করে আদালত অবমাননা…
ইদানীংকালে বিভিন্ন মহলে ভারতীয় বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের আমদানি নিয়ে বেশ তর্কবিতর্ক শোনা যায়। পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে অনেকদিন ধরেই তেমন ধারণা ছিল না; যেমন, কী ধরনের ছবি আসছে, কারা আনছে, এক্ষেত্রে সরকারের সুস্পষ্ট নীতি মালা কী, ইত্যাদি ইত্যাদি। [...]
ইদানীংকালে বিভিন্ন মহলে ভারতীয় বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের আমদানি নিয়ে বেশ তর্কবিতর্ক শোনা যায়। পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে অনেকদিন ধরেই তেমন ধারণা ছিল না; যেমন, কী ধরনের ছবি আসছে, কারা আনছে, এক্ষেত্রে সরকারের সুস্পষ্ট নীতি মালা কী, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু বর্তমানে বিষয়টি অনেক স্পষ্ট এবং সর্বসাধারণ পর্যায়ে সাড়া জাগিয়েছে। বিষয়টি অনুধাবন মাত্রই আমার ঈশপ-এর একটি গল্প মনে পড়ে গেল। স্যামোসের লোকসভায় এক অত্যাচরী শোষকের বিচারে শাস্তি প্রসঙ্গে ঈশপ ((ঈশপ -- প্রাচীন গ্রীসের কথাশিল্পী ও মেষপালক )) এই গল্পটি বলেছিলেন: এক শেয়াল নদী পার হতে গিয়ে স্রোতের টানে এক খাদে গিয়ে পড়ল। তা থেকে উঠতে অনেক চেষ্টা করেও সে পেরে উঠল না। সুযোগ পেয়ে এক ঝাঁক রক্তচোষা পোকা এসে তার গায়ে লেগে রইল এবং তার রক্ত পান করতে লাগল। এই সময় এক শজারুকে সে পথ দিয়ে যেতে দেখে শেয়াল তার সাহায্য প্রার্থনা করল। শজারু করুণার স্বরে বললে, ‘আমি তোমায় এই খাদ থেকে তুলতে পারবো না সত্যি, কিন্তু তোমার গা থেকে ঐ পোকাগুলি তুলে নিতে পারি আমি, কেমন?’ শেয়াল বললে, ‘না, না, ভাই, তা করতে যেয়ো না।' ‘কেন, না বলছ কেন?’ ‘না বলছি এই জন্যে যে এগুলি আমার রক্ত এতক্ষণ অনেক খেয়েছে, আর বেশি এরা টানতে পারবে না। এদের সরিয়ে দিলে আর এক নতুন ঝাঁক এসে আমার গায়ে লাগবে, তখন যে রক্তটুকু আমার শরীরে অবশিষ্ট আছে, তাও আর থাকবে না। চলচ্চিত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে এই বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক আলোচনায় অংশ নেয়ার সুযোগ ঘটেছে এর মধ্যে। বিভিন্ন আলাপচারিতায় এই বিষয়ে যেটুকু জানা গেল তা হলো: মধ্যবিত্ত তথা আপামর জনসাধারণকে সিনেমাহলমুখী করার জন্য বাংলাদেশের মৃতপ্রায় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে প্রতিযোগিতায় এনে সুস্থ বিনোদনমূলক চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ করাই হলো ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানির উদ্দেশ্য। ব্যাপারটা উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। কারণ, চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার এবং বিভিন্ন চলচ্চিত্র সংসদ কর্মী, রাজনৈতিক কর্মী ও আরো অনেকের এই বিষয়ে বিরোধিতা। প্রথম প্রথম আলোচনায় গিয়ে বক্তাদের বিভিন্ন মতামত শুনতে শুনতে ভাবছিলাম আমি এই বিষয়ক আলোচনায় অংশগ্রহণে যোগ্য ব্যক্তি কিনা। বা আরো যারা বুদ্ধিজীবী, বিদগ্ধ শুদ্ধ চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি-কর্মী কিংবা নতুন প্রজন্মের টেলিভিশন ডিজিটাল চলচ্চিত্রের নির্মাতা বা কুশলী -- আমাদের কারোরই কি এই বিষয়ে সুস্পষ্ট…
ডমেস্টিক ভায়োলেন্স বা পারিবারিক সহিংসতা নিয়ে একটি পোস্ট। [...]
চোখ দিয়ে আমি প্রথম কী দেখেছি? তা মনে থাকবার কোনো কারণ নাই। আম্মার সাথে ছোট্টবেলায় ফকিরাপুলের একটা দোকানের ভোজ্যতেল কিনবার সময় তেলচিটচিটে হটপেটিস-এর উপর হলুদ আলো থেকে শুরু করে প্রিয়মানুষের মুখে ফুটিফুটি লজ্জা… সদ্যজন্মানো সন্তানের হাতগুলিতে অযথাই অপূর্ব সব ভাঁজ… আষাঢ়মাসের লটকানরঙ মেঘ… রাতের আকাশে অসীম পর্যন্ত তারার নীহার… এইসবকিছু দেখতে দেবার জন্যে আমি আমার চোখের কাছে ঋণী (পদার্থবিদ্যার বই আমাদের জানিয়েছিল, সুস্থ মানুষের দৃষ্টিসীমা নাকি অসীম)। অপাংক্তেয় জিনিস থেকে শুরু করে জীবন-ধন্য-করা জিনিস অব্দি সবই এই চোখ দিয়ে দেখা। মনের দিকে যাওয়া। বুদ্ধির ভিতরে তার বিশ্লেষণ। ধারণক্ষমতার ভিতর তার পরিস্রবণ। আমার চোখ আমার সম্পদ। আমার বাকি শরীরটাও তাই, আমার ঈশ্বরদত্ত উপহার। আমার পৃথিবীর সকল দান গ্রহণের যন্ত্র। এই মানবশরীর আমার সার্বভৌম নিজ ভূখণ্ড। কত না যত্নে অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের অন্ধকার সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে এই শরীর পলে পলে তৈরি হয়েছে। এর উপর আমার অধিকার সর্বোচ্চ। সৌদি টিভি প্রেজেন্টার রানিয়া আল বা’জ-এর শরীরের উপর যেমন তাঁর অধিকার সর্বোচ্চ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রুমানা মঞ্জুরের শরীরের উপর যেমন তাঁর অধিকার সর্বোচ্চ। যে বা যারা এই অধিকার নষ্ট করেছে বা করে চলেছে বা করতে উদ্যত, তাদের জন্যে ব্যাবিলনের সম্রাট হাম্মুরাবি খ্রীস্টের জন্মেরও সতেরশ বছর আগে নিয়ম করে গেছেন, তুমি নিজের শস্যক্ষেতে সেচ দিতে গিয়ে অপরের শস্য নষ্ট করলে তার জন্যে দণ্ডিত হবে, তোমার নষ্টচোখের বিনিময় আরেকটি চোখ (বিনষ্টকারীর), তোমার উৎপাটিত দাঁতের বিনিময় আরেকখানা দাঁত (পীড়নকারীর)… আমি ভাল কি মন্দ, আমি সৎ কি অসৎ, আমি সহিষ্ণু কি অসহনশীল — আমার অঙ্গহানির অধিকার কারো নেই। যে আমার রাজ্যে অনধিকারবলে প্রবেশ করবে, আমার ঈশ্বরের দানকে ভাঙবে, মচকাবে, মটকাবে, দলবে, সে যেন আমার দেশে আমার পরিবারের সামনে আমার প্রতিবেশীর সামনে কোনো ওজর দেবার সাহস না পায়। শুনতে একরকম অমীমাংসিত নিরুচ্চারিত এবং উপেক্ষিত প্রার্থনার মতন শোনায় এই আশা। কেননা ছোটবেলা থেকে মেয়েশিশুরা সব দেশেই ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের কমবেশি প্রকাশ দেখে দেখে অভিজ্ঞ — নাওয়াল আল সাদায়ী-র দেশে তারা আপনজনের হাতে (মামা-চাচা-নানা-দাদা-খালু কে নয়) ধর্ষিত হয় আর বাকিজীবন ভয়ে থাকে এই পুষ্পদলনের ইতিহাস স্বামী আবিষ্কার করলে কী হবে, রানিয়া আল বা’জ-এর দেশে তারা বোনেরা মিলে রাতের আঁধারে রেডিও মন্টিকার্লোতে গান শুনে নাচে…
লেখক দুই ধরনের। একদল লেখেন নিজের জন্য। আরেকদল লেখেন পাঠকের জন্য। [..]
[ব্লগ নিয়ে কোন একটা উন্নত নাসিকার মঞ্চ থেকে শিরোনামের তীরটা নিক্ষিপ্ত হতে দেখেই এই আপাতঃ জ্ঞানী লেখাটির সূত্রপাত।] লেখক দুই ধরনের। একদল লেখেন নিজের জন্য। আরেকদল লেখেন পাঠকের জন্য। আরো শুদ্ধ করে বলতে গেলে, যখন নিজের জন্য লেখেন তখন লেখকের উন্মেষকাল। এই সময়ের লেখাগুলি একজন লেখকের শ্রেষ্ঠ লেখা। এই সময়ে লেখকের ভেতর পাঠকের চিন্তা থাকে না, বাজারের চাহিদা থাকে না, কাটতির টেনশান থাকে না, প্রকাশকের চাপ থাকে না। লেখালেখি থাকে উন্মুক্ত। ভেতর থেকে উঠে আসা দীর্ঘশ্বাস কিংবা উচ্ছ্বাসগুলোকে শব্দের গাঁথুনিতে প্রকাশ করার চমৎকার একটা প্রয়াস থাকে এই সময়টাতে। যখন অন্যের জন্য, বাজারের জন্য, পাঠকের জন্য, পত্রিকার জন্য লেখেন, তখন লেখকের পরিণতকাল হলেও তাঁর আদি আন্তরিকতা আর বোধের প্রকাশ প্রায়ই অনুপস্থিত থাকে। তাই যে কোন লেখকের পরিণত বয়সের লেখার চেয়ে কাঁচা বয়সের লেখার মধ্যে রসের যোগান বেশী। কাঁচা হাতের লেখাও পাঠসুন্দর থাকে। হুমায়ুন আহমেদের 'নন্দিত নরকে' কিংবা 'শঙ্খনীল কারাগার' একটা উদাহরণ হতে পারে। আজকাল অনেকেই লেখে। প্রযুক্তির সুলভতার কারণে লেখালেখির পরিমাণ অনেক বেশী যার মধ্যে ব্লগ অন্যতম একটি মাধ্যম। ব্লগ লেখে কারা? বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে ব্লগ জিনিসটাই অপরিচিত। কেবল ইন্টারনেট ও পত্রিকার সাথে যুক্ত মানুষেরর একাংশই ব্লগ সম্পর্কে জ্ঞাত। যাদের প্রায় সবাই অতি তরুণ। গত দুবছরে অন্ততঃ ২০টা নতুন কমিউনিটি ব্লগ এসেছে। মতাদর্শের ভিত্তিতে ব্লগগুলি একেকটা পাড়ায় বিভক্ত। আবার প্রত্যেক ব্লগেরই কিছু না কিছু আবাসিক লেখক থাকেন যাঁরা ওই ব্লগেই লেখেন। এটা একটা নেশাও বটে। লেখালেখি ছাড়াও আড্ডা দেবার জনপ্রিয় একটা আয়না একেকটি ব্লগ কমিউনিটি। বাংলা ব্লগের বয়স তিন বছরের সামান্য উপরে। প্রতিষ্ঠিত লেখকদের কাছে ব্লগ এখনো তেমন গুরত্ব না পেলেও এই ব্লগ থেকেই এমন কিছু লেখক উঠে এসেছেন যাঁদের রচনাশৈলী রীতিমত ঈর্ষণীয়। নাম বলে বিব্রত করবো না, কিন্তু কয়েকটা প্রধান ব্লগ মিলে অন্ততঃ বিশজন ব্লগারের লেখার মানকে আমি জীবিত যে কোন প্রতিষ্ঠিত লেখকের সাথে তুল্য বলে মনে করি। কিন্তু বয়সে তরুণ বলেই এখনো তাঁদের কাজের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই। তাঁদের অনেকের কোন বইই বের হয়নি। তাঁদের প্রত্যেকের লেখার তাড়না স্বতঃপ্রণোদিত। এই তারুণ্যটাই তাঁদের মূল শক্তি। তাঁদের হাতে আলোর মশাল তুলে দিয়েছে বলে কমিউনিটি ব্লগগুলোর কাছে জাতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।…