২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাংবাদিক নির্যাতনের পদ্ধতিগত পরিবর্তন ঘটেছে। শুধু পদ্ধতিগত পরিবর্তনই নয়, সংখ্যার বিচারেও ইউনূসের শাসনামলে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বিগত ১০ বছরের তুলনায় অনেক বেশি। আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদের মোট ১৫ বছরের শাসনামলের মধ্যে শেষ ১০ বছরে ঘটে যাওয়া সাংবাদিক নির্যাতনের প্রাপ্ত ডাটা সাথে ইউনূসের অবৈধ সরকারের মাত্র নয় মাসের ডাটার তুলনা করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠবে। ২০১৩-২০২৪ এর জুলাই পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২০২৪ সালের প্রথম সাত মাসে (জানুয়ারি-জুলাই)। এই সময়ে ৩১৮টি সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর যখন অবৈধ ইউনূস সরকার ক্ষমতা দখল করলো, তখন ২০২৪ সালের পরবর্তী পাঁচমাসে (আগস্ট-ডিসেম্বর) সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৬৭১টি—অর্থাৎ পূর্ববর্তী সাত মাসের দ্বিগুণেরও বেশি।

মিডিয়া শিক্ষা আয় তোর প্রশ্নটা শুনি, আয় দেখি গলা টিপে ধরে, দেখি কত বাকস্বাধীনতা আছে তোর মিডিয়ার ঘরে। কত দিকে ন্যারেটিভ পাল্টে, কত কথা দিয়েছি যে চাপা, মিডিয়ার যা তা করা প্রশ্নে, সবকিছু বের হচ্ছে ফাঁপা। মন তোর কোন দেশে থাকে রে, কেন তুই ভুলে যাস কথা— দেখিস না আর সব মিডিয়া, লিটনের ফ্ল্যাটে যায় একা। টোল খাওয়া ছাতাপড়া মাথাটা, টুপি দিয়ে ঢেকে রাখি বিলকুল, সংবাদ প্রকাশের দায়েতে, জেলখানা সব আজ হাউসফুল। কাৎ হয়ে কান ধরে দাঁড়া, দীপ্ত কী এটিএন চ্যানেল আই জুলাইয়ের ঝোল খেয়ে ঝুলে যা, আমি আর ফ্যাসিজম ভাই ভাই। মিডিয়াকে বাঁশ দেওয়া সেরে, নোবেলের গোলাখানি চুষিয়ে, মানবিক করিডোরে গান গাই, প্রেসক্লাব দেখে দাঁত কেলিয়ে। (সুকুমার রায়ের বিজ্ঞান শিক্ষা ছড়া অবলম্বনে) https://www.youtube.com/watch?v=T620MV7VM0g “জান ও জবানের স্বাধীনতা” এনে “দায় ও দরদের রাজনীতি” প্রতিষ্ঠার ছবক দেওয়া ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন মিডিয়ার সামান্য দুয়েকটি সহজ-সরল প্রশ্নও সহ্য করতে পারছে না। গত নয় মাসে গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কর্তৃত্ববাদের চূড়ান্ত নজির আমরা দেখেছি। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে জেল-জুলুম আর মিথ্যা মামলা তো আছেই, সেই

সাথে চলেছে একের পর এক গণমাধ্যমগুলোর মালিকানা দখলের মহড়া। সরকারের সৃষ্ট মব দিয়ে গণমাধ্যমগুলোতে নিয়ম-বহির্ভূতভাবে নিজেদের লোক নিয়োগ, ইচ্ছেমতো সাংবাদিক ছাটাই, দেশের সার্বিক দুঃসহ পরিস্থিতি চাপা দিতে নির্লজ্জ মিডিয়া-সেন্সর এবং সবশেষে গত ২৮ এপ্রিল সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে শুধুমাত্র প্রশ্ন করার অপরাধে দীপ্ত টেলিভিশন, এটিএন বাংলা ও চ্যানেল আই—তিনটি বেসরকারি চ্যানেলের সাংবাদিককে ২৯ এপ্রিল জোরপূর্বক চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে1। শুধু তাই নয়, ইউনূস সরকারের চাপে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভি তাদের সংবাদ কার্যক্রমও স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ2। গত ৫ আগস্টের পর থেকে সারাদেশে সাংবাদিকদের ওপর এমন নির্যাতনের ঘটনা বাংলাদেশের একটি প্রাত্যহিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। একে তো ড. ইউনূস ক্ষমতা দখলের পরই দেশের গণমাধ্যমগুলোতে নেমে এসেছে শকুনের নীরবতা। সারাদেশে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামাত-শিবির ও তাদের দোসরদের এবং সমন্বয়ক সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের নির্বিচার সন্ত্রাসের কোনো সংবাদই আমরা দেশের গণমাধ্যমে দেখতে পাই না। এমনকি দেশজুড়ে ৫ আগস্টের পর থেকে নারীর বিরুদ্ধে যে ভয়ানক সন্ত্রাস শুরু হয়েছে, সে সম্পর্কেও গণমাধ্যমগুলোতে কোনো সংবাদ বা ফলো-আপ নিউজ নেই। ‘অনুসন্ধানী প্রতিবেদন’ নিজেই এখন অনুসন্ধানের বিষয়বস্তু হয়ে গেছে। সমন্বয়ক…

নামাজ পড়লেও লিখি না পড়লেও লিখি। শুয়োর খেলেও লিখি না খেলেও লিখি। কিন্তু এর মধ্যে পুলিশটা কে?[...]

আমি স্বাধীন তাই লিখি। লিখে কিছু পাই বা না পাই লিখি, শুধু পাই পয়সার জন্য লিখি না। পাতা পেলে লিখি ব্লগ পেলেও লিখি। নামাজ পড়লেও লিখি না পড়লেও লিখি। শুয়োর খেলেও লিখি না খেলেও লিখি। কিন্তু এর মধ্যে পুলিশটা কে? পুলিশ মানে কি পরাধীনতার শৃঙ্খল? যদি পুলিশ তাই হয় তাহলে আমাকেও ঘোষণা করতে হবে আমি স্বাধীন তাই পরাধীনতার শৃঙ্খল হাতে বসে থাকা সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লিখি। বাংলাদেশের কাছে সে-স্মৃতি মোটেই তেমন পুরনো নয়, এই তো ৪০ বছর আগেই তো আমরা ঝাড়ে-বংশে পরাধীন ছিলাম। কেউ বলতে পারবে না বাংলাদেশের লেখকরা সেই পরাধীন দিনে লেখেননি, লিখেছেন এবং তালিকাভুক্ত হয়েছেন এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন। রাষ্ট্র এখন বাংলাদেশ, এই চল্লিশ পেরনো বাংলাদেশ যদি আজ চালশের ছানিতে 'স্বাধীনতা বিরোধী'দের বিরুদ্ধে তসবিহ জপতে জপতে নিজেরাই আরো বৃহত্তর অর্থে পুলিশের মাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধিতার চর্চা করতে চায় তাহলে ওই কুলাঙ্গার গুণধর এএসপি রফিকুলের কথার সূত্রে আমরা যারা স্বাধীনতার জন্য লিখি তাদের বলতেই হবে : রাষ্ট্র, আমরা তোমার বিপক্ষে, এসো আমাদের নির্যাতন কর। যেজন্য চীনকে উপহাস করি -- পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের শাসকদের সাধারণ মানুষের যম বলি -- যেজন্য প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সত্তার সাধনা করি : সেই মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করলে সেই হাত সন্ত্রাসীর হাত বলেই বিবেচিত হবে। ২০০১--২০০৮-এর অস্বাভাবিক সময়ের বিরুদ্ধে যদি দাঁড়াতে চান যদি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সত্যিই লড়তে চান মত প্রকাশের স্বাধীনতায় শস্য পরিমাণ হস্তক্ষেপ করবেন না। আমার মতের সমালোচনা করুন, যদি আমার মত বিধ্বংসী ও বিস্ফোরক বা মানহানিকর হয় মামলা করুন। কিন্তু আমার চোখ বাঁধবেন না, মুচলেকার অসভ্যতা দেখাবেন না, আমাকে শারীরিক মানসিকভাবে নির্যাতন করবেন না। জাতির অভূতপূর্ব উন্নয়নের স্বপ্ন দেখাতে গিয়ে 'গুলাগ' সৃষ্টি করবেন না। উচ্চশিক্ষায় সরকার বিনিয়োগ করবে, না অভিভাবক বিনিয়োগ করবে, না দেশি-বিদেশি আর্থিক সংস্থা বিনিয়োগ করবে এটা পুরোপুরি 'পলিসি'র ব্যাপার -- 'পলিসি'র ব্যাপার নিয়ে বাকতিণ্ডা খুবই স্বাভাবিক, সেই স্বাভাবিকতার একটা অপরিহার্য কর্মপদ্ধতি হল সৃষ্ট অসন্তোষের ভেতরে পৌঁছে অসন্তোষের প্রকৃতিটাকে আগে বুঝতে পারা। তা না করে অসন্তোষ ছত্রভঙ্গের পুলিশি তৎপরতা 'দানা বাঁধতে দেব না' নামক দেউলিয়াত্বের প্রকাশ ঘটায়। যা যেকোনো সরকারের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বকেই সবার আগে সামনে নিয়ে আসে। এখন সরকার…

আগের লেখার বিপরীতে বেশ কিছু মন্তব্য এসেছে। গত কয়েকদিনে গুগল-চীন দ্বন্দ্বেও আরো কিছু নতুন অগ্রগতি, কথা চালাচালি হয়েছে। সে সবে যাওয়ার আগে গুগল ঠিক কি কারনে চীন বর্জনের সিদ্ধান্তে উপনীত হলো (অন্তত তাদের হিসাবে) - সেটা একটু দেখা যাক। ভদ্রলোকের নাম আই ওয়েইওয়েই। তিনি অধুনা চীনের সবচেয়ে নামকরা শিল্পীদের একজন, এবং এর পাশাপাশি প্রথম কাতারের রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী (dissident)। মাস দুয়েক আগে তার জিমেইল একাউন্ট হ্যাক করা হয়। তিনি ছাড়াও হ্যাকার-রা আরো কয়েকজনকে টার্গেট করেছিল। গুগল যখন ঘটনাটি টের পায়, সাথে সাথে তারা অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধানে জানা যায় যে আই ওয়েইওয়েই-এর একাউন্টের সমস্ত ইমেইল তাঁর অজান্তে ঘাঁটাঘাঁটি হয়েছে, এবং কপিও করা হয়েছে। এর পাশাপাশি তাঁর ব্যাংকেও কিছু লোক পাঠানো হয়। তারা বলেন যে আই-এর বিরুদ্ধে সরকারী তদন্ত চলছে, এবং তাই তাঁর ব্যাংক একাউন্ট বিষয়ক সমস্ত তথ্য হস্তান্তর করতে হবে। এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে চীন সরকার আই-কে বলে দিয়েছে যে, হয় সে তার মানবাধিকার নিয়ে চিল্লাপাল্লা বন্ধ করবে, নয়তো তাঁকে দেশত্যাগ করতে হবে। বলা বাহুল্য যে আই ওয়েইওয়েই এই দুটোর একটাও করতে চান না। কঠিন থেকে কঠিনতর আই-এর কেসই শেষ নয়। পুরো একটা পরিপ্র্রেক্ষিত আছে এখানে। চীনের গত তিন দশকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পিঠে বেশ কিছু মহলের আশা ছিল যে তাড়াতাড়ি না হোক, ধীরে ধীরে হলেও চীন সরকার কোন না কোন সময় রাজনৈতিক ভাবে আরেকটু উদারপন্থী হবে। ভিন্নমত বা ভিন্নপথের লোকদের আরেকটু কথা বলার জায়গা করে দেবে। ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিক-কে ঘিরে অনেকের এই আশা আরো বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইদানীংকালে দেখা যাচ্ছে যে উদার তো নয়ই, বরং চীনা সরকার দিনকে দিন আরো কঠোর হচ্ছে, আরো শক্ত হাতে সকল রকম প্রতিবাদের গলা টিপে ধরছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা - - ডিসেম্বর মাসে লেখক এবং রাজনৈতিক কর্মী লিউ শিয়াওবো-কে ১১ বছরের জেলদন্ড দেয়া হয়। তার দোষ কি ছিল? তিনি চার্টার ৮ নামে একটি মানবাধিকার ম্যানিফেস্টোর জন্য স্বাক্ষর সংগ্রহ করছিলেন। চার্টার ৮-এর সার কথা খুব যুগান্তকারী কিছু ছিল না। বাকস্বাধীনতা দিতে হবে। ভোটাধিকার দিতে হবে। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার দিতে হবে। ধর্মীয় স্বাধীনতা দিতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষার গ্যারান্টি দিতে হবে। সাংবিধানিক…

বিশ্ব অর্থনীতির দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তির সাথে টক্কর লেগেছে ইন্টারনেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের। গত পরশু গুগল তাদের ওয়েবসাইটে ঘোষনা দিয়ে জানিয়েছে যে চীনে তাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরিবেশ ক্রমাগত বিরূপ হয়ে পড়েছে এবং এই অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই তারা চীন থেকে তল্পি-তল্পা গুটিয়ে চলে যেতে বাধ্য হবে। গুগল ও চীনের এই সংঘর্ষের কি কোন শুভ পরিণতি আছে? একটু পেছনে তাকানো যাক। ইন্টারনেট ব্যবহার করে অথচ গুগল চেনে না, এমন লোক বোধ হয় লাখে একটাও পাওয়া যাবে না। এক কথায় ইন্টারনেটের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বহুলব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিনের নাম হলো গুগল। ১৯৯৬ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই পিএইচডি অধ্যয়নরত ছাত্র ল্যারি পেজ এবং সের্গেই ব্রিন তাদের গবেষণার মাধ্যমে নতুন এক সার্চ এলগোরিদম প্রণয়ন করেন। এর আগে আরো অনেক সার্চ ইঞ্জিনই ছিল। ৯০-এর দশকে যারা নেট ব্যবহার করতেন তাদের অনেকের মনে থাকবে Lycos, Altavista বা Infoseek-এর কথা। কিন্তু কার্যকারিতার দিক থেকে এইসব ইঞ্জিনের চেয়ে গুগল অনেক বেশী সফল প্রমাণিত হয়। ইন্টারনেটে রয়েছে শত কোটি ওয়েবসাইট। এর মধ্যে থেকে ঠিক আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটুকুই এক নিমেষের মধ্যে খুঁজে বের করে সেটাকে আপনার সামনে হাজির করা - একেবারে সহজ কাজ নয়। কিন্তু পেজ ও ব্রিন এই দুঃসাধ্য কাজটিই সাধন করেন। কি লাগবে আপনার? মিটার থেকে ফুট হিসাব করতে চাই? বলে দেবে গুগল। সম্রাট অশোকের রাজধানীর নাম যেন কি ছিল? জানে গুগল। আচ্ছা, কেক বানাতে চাই, কিছু রেসিপি দরকার। গুগলে গিয়ে খোঁজ লাগাও। ১৯৯৯ সালে এক প্রযুক্তি পত্রিকায় আমি প্রথম গুগলের নাম শুনি। লাস ভেগাসে বাৎসরিক প্রযুক্তি সম্মেলনে সদ্য পুরস্কার জিতেছে নতুন এই কম্পানী - ক্রিকেটের গুগলির সাথে নামের বেশ মিল! খবরটা পড়েই আমি গুগলে গিয়ে আমার স্কুল জীবনের এক হারিয়ে যাওয়া সহপাঠীর নাম সার্চ দেই। শুধু এতটুকুই জানতাম যে সে বিদেশে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। ঠিকই গুগল এনে দিয়েছিল তার নাম-ধাম, বর্তমানে কোথায় আছে কি করছে, এবং যোগাযোগের ইমেইল। বলা বাহুল্য, সেদিনের পর থেকে আজ অব্দি গুগল বিনা আর কোন সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করার প্রয়োজন বোধ করিনি। গেল দশ বছরে গুগল আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাইক্রোসফট-কে ছাপিয়ে গুগল বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রযুক্তি কম্পানী। কোকাকোলা-কে টপকিয়ে গুগল এখন পৃথিবীর এক…

আমাদের মনে হয় এই আলোচনাটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু করা দরকার। আলোচনাটা মডারেটর গ্রুপে প্রথম শুরু হয়েছিল। কিন্তু এর সামষ্টিক গুরুত্ব বিবেচনায় এখন তা পোস্ট আকারেও তুলে দেয়া হল সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ সহজ করার লক্ষ্যে [...]

আমাদের মনে হয় এই আলোচনাটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু করা দরকার। আলোচনাটা মডারেটর গ্রুপে প্রথম শুরু হয়েছিল। কিন্তু এর সামষ্টিক গুরুত্ব বিবেচনায় এখন তা পোস্ট আকারেও তুলে দেয়া হল সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ সহজ করার লক্ষ্যে। 'ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিডিয়া' বলে বলে আমরা সবসময় গলা শুকিয়ে ফেলি। কিন্তু ব্লগ বা ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিডিয়া ঠিক কি অর্থে এবং কিভাবে 'ইন্ডিপেন্ডেন্ট' সে বিষয়টা মনে হয় আমাদের নিজেদের একটু ঝালিয়ে নেয়ার সময় এসেছে এখন। সে অনুযায়ী লেখালিখির ধরণ এবং কনটেন্টের বিতর্কিত বিষয়গুলোতেও আলোকপাতের এখনি সময়। যে লেখা মূল ধারার পত্রপত্রিকায় বিনা প্রশ্নে ছাপানোযোগ্য তা যদি বিনা প্রশ্নে ব্লগেও ছাপানোর যোগ্য হয়, তাহলে বুঝতে হবে ব্লগ প্লাটফর্ম হিসেবে আমাদের নিজেদের ভূমিকা আরেকটু গভীরভাবে পুনঃর্বিবেচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। ১) 'ইন্ডিপেন্ডেন্ট' মানে কি সম্পাদক অমুক কিংবা সম্পাদক তমুক এর কাটাছেঁড়া থেকে মুক্তিলাভ? ২) নাকি কর্পোরেট পূঁজির বিপরীতে বিনা (কিংবা সামান্য) খরচে ওভারহেড কমিয়ে ব্লগ চালানো? ৩) ব্লগ কি just another online magazine/platform গোছের কিছু? ৪) নাকি আঞ্চলিক ভাষায় লিখলেই তা "ইন্ডিপেন্ডেন্ট" হয়ে যায়? ৫) ব্লগ কি যেমন খুশি তেমন লেখার খাতা? এখানে ব্যক্তিগত খেয়াল এবং 'খুশি'ই কি মূল বলে বিবেচ্য নাকি বৃহত্তর কোন লক্ষ্য এবং সে অনুযায়ী কমিটমেন্ট থাকা দরকার তাতে? ৬) ব্লগে লেখা কি কেবল সময় কাটানো? বিনোদন? ব্লগ কি কেবলই 'কথা'? নাকি ব্লগে লেখাও একটা সিরিয়াস 'কাজ'? যদি কাজ বলে ধরে নিই একে, তবে কি হওয়া উচিত এর ধরণ এবং প্রকাশ ভঙ্গী? এই বিষয়গুলো আমাদের ভাবা দরকার। পৃথিবীর আর সব প্রান্তের প্রধান প্রধান ব্লগ প্লাটফর্মগুলো যখন মূল ধারার মিডিয়ার সাথে সমান্তরালে পাল্লা দিয়ে চলেছে, তখন আমাদের বাংলা ব্লগগুলো এখনো উপরিতলের কিছু বিতর্ক (যেমন: ভাষার ব্যবহার ইত্যাদি নিয়ে) নিয়েই বেশী ব্যস্ত। এখনো mediocrity থেকেই উত্তীর্ণ হতে পারছি না আমরা ব্লগ হিসেবে; সমাজ বা পরিপার্শ্ব পাল্টানো তো অনেক দূরবর্তী বিষয়। পরিপার্শ্বকে সফলভাবে বদলে দেয়ার মতো কিংবা নিদেন পক্ষে নাড়া দেবার মতো জোরই আমাদের তৈরী হয়নি এখনো। এভাবে এগোতে থাকলে তা হয়তো কোন দিনই হবে না বলে আমাদের আশংকা। সবার মতামত পেলে ভাল হয়। ধন্যবাদ।

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.