ন্যাশনাল আর্ট মিউজিয়াম অব চায়না-য় ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত সাম্প্রতিক কালের বৃহত্তম শিল্প-প্রদর্শনী। গণচীনের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে চীনের জাতীয় ইতিহাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত মূর্ত হয়ে উঠেছে শিল্পীদের চিত্রকর্মে ও ভাস্কর্যে [...]

তুষারে ছাওয়া দুর্গম বিস্তীর্ণ প্রান্তর পেরিয়ে এগিয়ে চলছে লাল ফৌজ বিপ্লবের অভীষ্ট লক্ষ্যে। কিংবা বন্দুক হাতে বিপ্লবীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে শত্রু সেনার শিবিরে। দাউ দাউ করে জ্বলছে যেন বিপ্লবের আগুন। অথবা চেয়ারম্যান মাওয়ের নেতৃত্বে অগণিত মুক্তিকামী মানুষের মিছিল। এই ছিল দৃশ্যপট, অর্থাৎ ঊনপঞ্চাশের চীন বিপ্লবের পরে চীনা চিত্রকলার চেহারাটা এইরকমই ছিল। বিপ্লবের মন্ত্রে দীক্ষিত শিল্পীরা। মানুষের ছবি আঁকতে হবে, ক্যানভাসে উঠে আসবে সমাজবাস্তবতার চিত্র। বিপ্লবের রক্তিম সূর্যের আভা দিগন্ত জুড়ে, যুদ্ধে যুদ্ধে ক্যানভাস রঞ্জিত – প্রতিরোধের ছবি, শৌর্য বীর্য আর বীরত্বগাথার ছবি। তবে ১৯৪৯ থেকে ২০০৯ এই ষাট বছরে চীনের বিস্তর পরিবর্তন হয়েছে, হোয়াং নদীতে বিস্তর জল গড়িয়েছে, আর চীন তার দারিদ্র্য ঘুচিয়ে পৃথিবীর প্রধানতম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। একসময় কমিউনিস্ট চীনে শিল্প সংস্কৃতি ছিল শুধু প্রপাগান্ডার হাতিয়ার, শুধুই প্রতিফলিত হতো সমাজবাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় ক্যানভাস জুড়ে ছিল শুধু লাল ফৌজের বীরত্বগাথা। তবে ২০০৯ সালের প্রেক্ষাপট যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন – বেইজিং এখন পরিণত হয়েছে বিশ্বের প্রধানতম আধুনিক শিল্পের কলাকেন্দ্রে। কেউ কেউ বলছেন, চীন এখন সমকালীন শিল্পের এক অভূতপূর্ব কেন্দ্র। বেইজিং এখন নিউইয়র্ক, পারী আর তোকিওর কাতারে। শিল্পীরা বিস্তর আধুনিক ও উত্তর-আধুনিক ধারার নানামুখী শিল্পকর্মকাণ্ডে নিজেদের ব্যস্ত রাখছেন। বিশ্বব্যাপী বড় বড় শিল্প-আয়োজনগুলোতে চীনাদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। চীনা শিল্পীদের দিনও পালটে গেছে। বেশ উচ্চমূল্যে বিকোচ্ছে তাঁদের শিল্পকর্ম। তাঁদের কৃচ্ছ্রতাসাধনের দিন শেষ। দামি গাড়ি, বিশালাকৃতির স্টুডিও – এগুলিই যেন তাঁদের বিলাসী জীবনের অনুষঙ্গ। তবে সাম্প্রতিক এক ইতিহাস-প্রদর্শনীতে চীন যেন ফিরে গেছে সেই সময়ে, সেই বিপ্লবের যুগে। যেন অনেকটা পিছনের দিকে ফিরে তাকানো একবার। গণচীনের ষাট বছর পূর্তিতে নানা কর্মকাণ্ডে মুখরিত বেইজিং শহর; সর্বক্ষেত্রেই বিশেষ আয়োজন চোখে পড়ার মতো। এই উপলক্ষে সরকারি প্রযোজনায় মুক্তি পেয়েছে বড় বাজেটের চলচ্চিত্র ‘দি ফাউন্ডিং অব এ রিপাবলিক’। বিপ্লবের সব মহানায়কের উপর ভিত্তি করে এই ছবির কাহিনি; মাও সে তুং, চৌ এন লাই, চিয়াং কাই শেক – সবাই এই ছবির চরিত্র। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে হংকং-এর দুই মহাতারকা জ্যাকি চান এবং জেট লি প্রথমবারের মতো এই ধরনের ছবিতে অভিনয় করলেন। আর চারুকলার বিষয়ে যে-বড় আয়োজন করা হয়েছিল, তার খবর দিল আমার পিএইচ.ডি. ক্লাসের সহপাঠী ছাও ওয়ে। ছাও ওয়ে সেন্ট্রাল…

সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। [...]

১. সাংসদ হুইপদের খাদ্যবিলাস এবং জয়নুলের দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা অথবা ভ্যান গগের ‘দ্য পটেটো ইটার্স’। সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। সাম্প্রতিক বিশ্ব খাদ্য সংস্থার জরিপে দেখা গেছে : পৃথিবীতে একশো কোটি লোক অভুক্ত থাকে। কী পরিমাণ লোক ভালো-মন্দ খাবার খেয়ে থাকে তার একটা তালিকা তৈরি করা গেলে তাতে আমাদের মতো গরিব দেশের বড়লোকরাই চ্যাম্পিয়ন হবে। এত পোলাও-মাংস হজম করার পরিণতি কী, তা আপনারা সবাই জানেন – শেষ গন্তব্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল। যেটা হুইপ সাহেবের ক্ষেত্রে ঘটেছে। সরকারি টাকায় প্রচুর ঘি-পোলাও খেয়ে হার্টের ব্লক, আবার তা সারানোর জন্য সরকারি অর্থেই মাউন্ট এলিজাবেথে ভর্তি। সত্যিকার প্রহসনই বটে। আমাদের দেশের গরীব মানুষের খাদ্যতালিকা কী? তাদের কপালে কি জোটে পোলাও-মাংস? গ্রামে বসবাসরত বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর তো নুন আনতে পান্তা ফুরায়। শুধুমাত্র কাঁচামরিচ আর লবণ দিয়ে থালার পর থালা ভাত হজম করতে হয় তাদের। মাছ-মাংসের কোনো বালাই নেই, তাই প্রোটিনের ঘাটতি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। তবে গরীবের পোলাও-মাংস খাওয়ার বিষয়টি একবার নিজের চোখে দেখে অশ্রু সংবরণ করতে পারিনি। কাওরান বাজারের পেছন দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বস্তির সামনে দেখেছিলাম, বিভিন্ন বিয়েবাড়ি থেকে কুড়িয়ে পাওয়া উচ্ছিষ্ট পোলাও-মাংস রাস্তার পাশে ভাগ দিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। আর কেউ কেউ কিনে নিয়ে দিব্যি পরমানন্দে খাচ্ছে সেই খরখরে পচা খাবার! এত বৈষম্যপীড়িত দেশ পৃথিবীর কোথাও আছে কিনা কে জানে। মাঝে-মাঝে বিদেশীরা আমাদের দেশের দারিদ্র্য নিয়ে আমাকে নানা প্রশ্ন করে; আমি তাদের বলি, আমাদের বড়লোকদের তো দেখোনি, দেখলে নিশ্চয় অবাক হবে। গুলশান, বনানী, বারিধারাতে এক চক্কর ঘুরিয়ে আনলে তোমাদের বিশ্বাসই হতে চাইবে না বাংলাদেশের গরিবিয়ানা হাল। আমাদের মন্ত্রী মিনিস্টার সাংসদ আর আমলাদের যে ঠাট-বাট তা দেখে হয়তো মূর্ছা যাওয়ার দশা হবে তোমাদের। যে-ধরনের গাড়িতে তারা চড়ে, তা হয়তো জন্ম দেবে আরেকটি রেকর্ডের – পৃথিবীর…

আজ থেকে সতেরো-আঠারো বছর আগের কথা – মনোরম গ্রীষ্মের বেইজিং। শীতে যখন গৃহবন্দী, গ্রীষ্মে তখন সত্যি পাখা মেলে উড়তে ইচ্ছা করে। সেই রকমই একটি দিনে সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছি অজানার উদ্দেশে, যেন অনেকটা দু’চোখ যেদিকে যায় চলে যাওয়া। বৈকালিক ঝিরিঝিরি বাতাস আর গাছের ছায়ায় প্রশান্তিময় সেই সময়ে সাইকেল ভ্রমণটা যেন এক অপার্থিব আনন্দের বার্তা বয়ে আনে। বিকেল মানেই সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়া। প্রকৃতির এই আনন্দযজ্ঞের আহ্বান রোখে কার সাধ্য। সেই রকম একটি দিনে সাইকেলে যেতে যেতে হঠাৎ থমকে দাড়ালাম চি শুই থান নামের জায়গায় – একটি দোতলা বাড়ির সামনে। আর চোখ আটকে গেল বাড়ির সামনের একটি আবক্ষ ভাস্কর্য প্রতিকৃতির মাঝে। খুব চেনা চেনা লাগছে, পত্রপত্রিকায় যেন অনেকবার দেখেছি এই ছবিটি। পরে লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম এটি বিখ্যাত চীনা চিত্রকর সু পেইহোং-এর প্রতিকৃতি এবং এই বাড়িটি তাঁর শিল্পকর্মের সংগ্রহশালা। এই সেই ভুবনবিখ্যাত শিল্পী যিনি একদা রবীন্দ্রনাথের সংস্পর্শে এসেছিলেন। সেই সময় অকস্মাৎ শিল্পী সু পেইহোং-কে (ভারতবর্ষে অবশ্য ‘পিওন সু’ নামে পরিচিত) আবিষ্কার করে বেশ একটা আত্মপ্রসাদ অনুভব করেছিলাম; সেই সাথে সংগ্রহশালায় অপরাপর চিত্রকর্মের সাথে তাঁর আঁকা রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতিটি দেখে যেন নিজেকে একজন দিগ্বিজয়ী মনে হচ্ছিল, এই বিদেশ বিভুঁইয়ে রবীন্দ্রনাথকে আবিষ্কার! পরে অবশ্য এই শিল্পী সম্পর্কে আরো কিছু জানা হয়ে যায়; চীনদেশে তিনি এত বিখ্যাত যে কথাপ্রসঙ্গে তাঁর নাম বার বার চলে আসে। সু পেইহোং-কে (Xu Beihong) বলা হয় আধুনিক চীনা চিত্রকলার পথিকৃৎ। আমাদের জয়নুল আবেদিন, চীনাদের সু পেইহোং। দুজনই শিল্পচর্চার পাশাপাশি শিল্পকলাকে এগিয়ে নেয়ার আন্দোলনে ব্রতী হয়েছিলেন। সু পেইহোং চীনদেশে প্রথম পশ্চিমা ঘরানার চিত্রশৈলীর একজন সফল শিল্পী। চীনের চারুকলা শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ সেন্ট্রাল একাডেমি অব ফাইন আর্টস-এর প্রথমদিকের অধ্যক্ষ সু পেইহোং চীনের জনগণের কাছে অত্যন্ত সম্মানীয়। গত মার্চ মাসে বেইজিং-এর একটি নামী মিউজিয়ামে (ইয়ান হোয়াং আর্ট মিউজিয়াম) অনুষ্ঠিত হলো তাঁর সারা জীবনের কাজ নিয়ে একটি রেট্রোস্পেকটিভ। আমি এবং আমার স্ত্রী আমন্ত্রিত হয়েছিলাম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে। সু পেইহোং স্মৃতি সংগ্রহশালায় বেশ কয়েকবার গিয়েছি, কিন্তু এই মিউজিয়ামে প্রদর্শিত সেই ছবিগুলোই যেন একটু অন্যরকম লাগছিল, মিউজিয়ামের সুপরিসর আয়তনে ছবিগুলোকে আরো উপভোগ্য মনে হলো। সরকারি সংগ্রহের বাইরে ব্যক্তি-সংগ্রহের কিছু কাজও এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠান…

প্রকৃতির মধ্যে পরিভ্রমণের পথে শিল্পী রশীদ আমিনের রং-ক্যানভাস প্রথম আমাদের চোখে ধরা দেয় আলাদা হয়ে। সেটি ছিল ২০০০ সাল; আ জার্নি থ্রু নেচার প্রদর্শনীর মধ্যে দিয়ে রশীদ আমিন ঘোষণা করেন তাঁর পৃথক অস্তিত্ব ও অবয়ব। পৃথক,- কেননা এর আগেও প্রদর্শনী করেছেন রশীদ আমিন, প্রদর্শনী হয়েছে তাঁর বাংলাদেশেই, প্রদর্শনী হয়েছে দেশের বাইরেও চীন (বাংলাদেশ দূতাবাস গ্যালারি; ১৯৯২) আর হংকং (ক্লাব ৬৪; ১৯৯২)-এ। কিন্তু ওইসব প্রদর্শনীকে বলা ভালো তাঁর প্রস্তুতিপর্ব, ধ্যানপর্ব, অনুসন্ধানপর্ব [...]

প্রকৃতির মধ্যে পরিভ্রমণের পথে শিল্পী রশীদ আমিনের রং-ক্যানভাস প্রথম আমাদের চোখে ধরা দেয় আলাদা হয়ে। সেটি ছিল ২০০০ সাল; আ জার্নি থ্রু নেচার প্রদর্শনীর মধ্যে দিয়ে রশীদ আমিন ঘোষণা করেন তাঁর পৃথক অস্তিত্ব ও অবয়ব। পৃথক,- কেননা এর আগেও প্রদর্শনী করেছেন রশীদ আমিন, প্রদর্শনী হয়েছে তাঁর বাংলাদেশেই, প্রদর্শনী হয়েছে দেশের বাইরেও চীন (বাংলাদেশ দূতাবাস গ্যালারি; ১৯৯২) আর হংকং (ক্লাব ৬৪; ১৯৯২)-এ। কিন্তু ওইসব প্রদর্শনীকে বলা ভালো তাঁর প্রস্তুতিপর্ব, ধ্যানপর্ব, অনুসন্ধানপর্ব। তিনি তাঁর নিয়তিকে আঁকড়ে ধরেন আ জার্নি থ্রু নেচার-এর মাধ্যমে। এর আগে তিনি তাঁর নিয়তির খোঁজ করেছেন, চিন্তাকে সংবদ্ধ করার জন্যে বারবার নানা পথে হেঁটেছেন। কিন্তু তিনি তাঁর গন্তব্যে পৌঁছানোর নির্ধারিত পথে হাঁটতে থাকেন ২০০০ সালে এসে। http://www.flickr.com//photos/84513436@N05/sets/72157631038915334/show/ এই নিয়তির, এই গন্তব্যের চালচিত্র খুব সামান্য কথায় চিহ্নিত করেছিলেন আরেক শক্তিমান শিল্পী নিসার হোসেন, রশীদ আমিনের চতুর্থ প্রদর্শনী আ জার্নি থ্রু নেচার-এর দৃশ্যমানতা লিখতে গিয়ে। নিসার হোসেনের চোখ আটকে গেছে রশীদ আমিনের নিষ্ঠুর ও বিশৃঙ্খল পারিপার্শ্বিকতায়। তিনি দেখেছেন কী এক ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ আবহে ওঁ চেষ্টা করছেন প্রকৃতির অন্বিষ্ট অনুসন্ধান করতে। পারিপার্শ্বিকতা,- কী রাজনৈতিক অর্থে, কী সামাজিক-আর্থনীতিক অর্থে, কী সাংস্কৃতিক অর্থে,- রশীদ আমিনকে প্রলুব্ধ করেছে অভিজাত রুচির যোগান দিতে, জনপ্রিয় রুচির যোগান দিতে; কিন্তু রশীদ আমিন প্রত্যাখ্যান করেছেন এইসব প্রলোভন, প্রত্যাখ্যান করেছেন জনপ্রিয়তা অর্জনের সহজ সরল পথ। অভিজাত রুচির যোগান দিতে পারলে তাঁর শিল্পের পণ্যমান তৈরি হতো, কিন্তু তিনি হারাতেন তাঁর নিজস্ব রেখা-বর্ণ। জনপ্রিয় রুচির যোগান দিতে পারলে তাঁর শিল্পের সাধারণ গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হতো, কিন্তু তাঁর ক্যানভাস হয়ে পড়ত উৎকট ও গতানুগতিক। আর এসবের মধ্যে দিয়ে রশীদ আমিন সীমাবদ্ধ হতেন, শিল্প ও সময়ের মেলবন্ধন উপলব্ধির চোখ হারাতেন। সীমাবদ্ধতা তাঁকে শিল্পের নিরীক্ষা থেকে দূরে সরিয়ে নিতো। সমসময়ের কাছে মানুষ ও শিল্পের দায়বদ্ধতা থেকে তাঁকে দূরে সরিয়ে নিতো উপলব্ধির চক্ষুহীনতা। তিনি এই সহজ সুখের শিল্পময়তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। প্রত্যাখ্যানের এই পথে তিনি সবরকম উৎসাহ হারান আকৃতি বা রূপের বিন্যাসকে অনুসরণ করে ধীরে ধীরে মূল ভাবের কাছাকাছি পৌঁছানোর প্রচলিত সবরকম প্রক্রিয়ার ওপর থেকে। আকৃতি বা রূপের প্রচল বিন্যাস প্রত্যাখ্যানের মধ্যে দিয়ে রশীদ আমিন মূলত অভিজাত ও জনপ্রিয় রুচিকেই প্রত্যাখ্যান করেন, প্রত্যাখ্যান করেন সহজ সুখের শিল্পময়তা। কী অর্জন…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.