...[একুশের সেই ভোরের কথা চিন্তা করুন। শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে চলে আসছে সেই মেয়েটি, যার অন্তর্গত কণ্ঠে তখন ধ্বনিত হচ্ছে ভাইকে ভুলে না যাওয়ার নিভৃত প্রতিজ্ঞা। সঙ্গে তার ভাই ছিল অথবা ছিল বাবাও। কিংবা তারা কেউ না থাকলেই বা কি? একুশ তো নির্ভয়ে পথচলারই দিন।]...

একুশের সেই ভোরের কথা চিন্তা করুন। শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে চলে আসছে সেই মেয়েটি, যার অন্তর্গত কণ্ঠে তখন ধ্বনিত হচ্ছে ভাইকে ভুলে না যাওয়ার নিভৃত প্রতিজ্ঞা। সঙ্গে তার ভাই ছিল অথবা ছিল বাবাও। কিংবা তারা কেউ না থাকলেই বা কি? একুশ তো নির্ভয়ে পথচলারই দিন। আর চিরদিন যেন এভাবে পথচলা যায়, সে আকাঙ্ক্ষাই তো খেলা করে এদিনের আগেপরে। বাবা নয়, ভাই নয়, কেউই নয় মেয়েটি তো ফিরছিলো সেই আকাঙ্ক্ষাকে সঙ্গী করে। কিন্তু তাকে উত্যক্ত করতে শুরু করল কয়েক ছেলে। প্রতিবাদ করায় ক্ষতবিক্ষত হতে হলো ভাইকে। একুশ মানে তো মাথা নত না করা- যে একুশের প্রতি পরম মমত্বে সে একটু আগে মিনারের পাদদেশে শুইয়ে রেখে এসেছে কয়েকটি ফুল- মেয়েটিও তাই প্রতিবাদে জ্বলে উঠল। এবার তাকেও পিটাতে পিটাতে ফুটপাতে ফেলে দিলো বখাটেরা। শহীদ মিনার থেকে অনেকেই ফিরছিল, শহীদ মিনারে অনেকেই যাচ্ছিল। তাদের সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে এই দৃশ্য। কেউই এগিয়ে যায়নি এই বখাটেদের পাল্টা উত্তর দিতে। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো যত সহজ, চেতনা নিয়ে রুখে দাঁড়ানো তত সহজ নয়। মেয়েটিকে তাই একুশের দিন এইভাবে রক্তাক্ত হতে হয়েছে, যে-রক্তের দাগ হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই মুছে যাবে- কিন্তু কিছুতেই সে ভুলতে পারবে না এদিনটিকে। আরও ভুলতে পারবে না একটি সংগঠনকে। সে সংগঠনটির নাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ - যে সংগঠনটি দাবি করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ লালন করার। জগন্নাথগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করেছে এক ছাত্র। ছাত্রীটির অপরাধ, ওই ছাত্রের অনৈতিক প্রস্তাবে সে রাজি হয়নি। প্রতিদিনই ছাত্রীটিকে ওই ছাত্র উত্যক্ত করত। কিন্তু একদিন সে মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, বাসার দিকে রওনা হওয়া ছাত্রীটির পিছু নেয় সে। ছাত্রীটি তার স্বামীর কাছে টেলিফোন করে। তার স্বামী এসে ছাত্রটিকে অনুরোধ করে তাকে উত্যক্ত না করতে। পরদিন ওই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে মেয়েটিকে তার বিভাগের সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। মেয়েটি টিকতে না পেরে বাসার দিকে রওনা হলে বিশ্ববিদ্যালয় গেটে শ শ মানুষের সামনে তার ওড়না কেড়ে নেয় ছেলেটি, চুলের মুঠি ধরে চড়থাপ্পর মারে। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। গত বছরের শেষ দিকে বাংলা বিভাগের এক ছাত্রীকে কলাভবনে সবার সামনে মারধর করে এক ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে হুশিয়ার করলেও গ্রাহ্য করেনি সে।…

অনেকেরই মনে আছে হয়তো- 'বাংলাদেশ, ১৯৭১, রক্তে জন্ম, পানিতে মরণ' শিরোনামের এক প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল ২০০৮ সালের মাঝামাঝি বাংলাদেশের প্রচারবহুল এক দৈনিক পত্রিকাতে। লিখেছিলেন ব্রিটেনের দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার প্রতিবেদক জোহান হ্যারি।...

অনেকেরই মনে আছে হয়তো- 'বাংলাদেশ, ১৯৭১, রক্তে জন্ম, পানিতে মরণ' শিরোনামের এক প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল ২০০৮ সালের মাঝামাঝি বাংলাদেশের প্রচারবহুল এক দৈনিক পত্রিকাতে। লিখেছিলেন ব্রিটেনের দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার প্রতিবেদক জোহান হ্যারি। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক এক প্রতিবেদনের সূত্র ধরে বাংলাদেশের কয়েকটি অঞ্চল ঘুরে আসন্ন পরিবেশগত বিপর্যয়ের দিকে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলেন তিনি। অবশ্য ওই প্রতিবেদনের পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এইচ খানের একটি ভিন্নমতও তুলে ধরা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, জোহান হ্যারির প্রতিবেদনে ছিল আইপিসিসির সঙ্গেই যুক্ত বাংলাদেশের ডাকসাইটে পরিবেশবিদ ড. আতিক রহমানের ভাষ্য, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় যিনি পুরস্কৃত হয়েছেন জাতিসংঘ থেকে। জোহান হ্যারির কাছে তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, 'বাংলাদেশে বসে আরো তথ্য নিয়ে আমার এখন মনে হচ্ছে, আইপিসিসির প্রতিবেদন বিপদের মাত্রাকে কমিয়েই দেখিয়েছে।' বাংলাদেশকে তিনি চিহ্নিত করেছিলেন বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান আঘাতস্থল বা জিরো গ্রাউন্ড হিসেবে। জোহান হ্যারির প্রতিবেদনটিতে আমরা আরো পেয়েছিলাম বাংলাদেশি এক তরুণীর ভাষ্য- ইংরেজিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি উপন্যাস লিখে যিনি আলোচিত হয়েছিলেন এবং পরে গার্ডিয়ানের এক কলামে ডিম্বাণু বরফায়িত করে রাখার সংবাদ জানিয়ে অনেককে বিষয়টি সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলেছিলেন। বলেছিলেন তিনি জোহান হ্যারিকে, 'যা ঘটার তা শুরু হয়ে গেছে। দেশটা যে ডুবে যাবে, তা এখন সবাই বুঝতে শুরু করেছে।' এই প্রতিবেদন প্রকাশের মাত্র দুই মাসের মধ্যে সেপ্টেম্বর, ২০০৮-এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তত্ত্বাবধানে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ কনফারেন্স। যুক্তরাজ্য রাজি হয় পরের পাঁচ বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামাল দেওয়ার জন্য ২৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড দিতে। ২০০৯-এর শেষ দিকে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলন। আইপিসিসির প্রতিবেদনের জোরে ওই সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সম্ভব হয় সগৌরবে চড়া গলায় প্রচুর অনুদান দাবি করা। ২০১০ সালে আমাদের জন্য মেক্সিকোতে অপেক্ষা করছে আরো একটি জলবায়ু সম্মেলন, যেখানে কথা রয়েছে পৃথিবীর ১৯৩টি দেশের প্রতিনিধির একত্র হওয়ার। আবারও বলি, যেসব সম্মেলন হয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতে হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে, সবখানেই বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশকে চিহ্নিত করা হয়েছে বা হবে করুণার পাত্র হিসেবে। অথচ কোপেনহেগেনের সম্মেলনের আগেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে আইপিসিসির বহুল আলোচিত প্রতিবেদন, প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে তাপমাত্রা বৃদ্ধিসংক্রান্ত পরিসংখ্যান এবং ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির ছাঁচে এই কেলেঙ্কারিকে অনেকেই…

২৪ জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর হওয়ার তিনদিন আগের কথা। দুপুরবেলা লন্ডনের বেশ কয়েকজন বাঙালি সাংবাদিক টেলিফোন পেলেন, বিকেলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ ফারুক রহমানের এক সন্তান তাদের সঙ্গে বসতে চান। [...]

২৪ জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর হওয়ার তিনদিন আগের কথা। দুপুরবেলা লন্ডনের বেশ কয়েকজন বাঙালি সাংবাদিক টেলিফোন পেলেন, বিকেলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ ফারুক রহমানের এক সন্তান তাদের সঙ্গে বসতে চান। তার আগের দিন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশ প্রতিনিধি প্রধান স্টিফেন ফ্রোয়ান বাংলাদেশ সরকারকে জানান, সংস্থাটির পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি সম্পর্কিত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ক্যাথরিন এস্টোনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে সব ধরণের মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপন করা হয়েছে। সরকারের কাছে ইইউ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার শাসি-প্রাপ্তদের শাস্তি পরিবর্তনের দাবি জানানোর পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধ ও বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচারের ক্ষেত্রেও যাতে এ ধরণের শাস্তি প্রয়োগ করা না হয় তার আগাম আবদার রাখে এ বিবৃতিতে। পরিপ্রেক্ষিতই বুঝিয়ে দিচ্ছিল, সৈয়দ ফারুক রহমানের সন্তান ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই উদ্যোগটির জন্যেই অপেক্ষা করছিলেন। যদিও তিনি তা স্বীকার করেননি। তার কাছে বিষয়টি ছিল নেহাৎই কাকতালীয়। যদিও এটি জানাতে তিনি দ্বিধা করেননি, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার কাছেই তারা লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন, যাতে ফাঁসির রায় বাংলাদেশ সরকার পরিবর্তন করে, অন্য কথায় পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। এটি মনে করা মোটেও অসঙ্গত হবে না যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওই সিদ্ধান্ত ছিল নেহাৎই লবিং-এর ফল। কেননা, পরদিন ২৫ জানুয়ারিতেই ইরাকে কার্যকর হয় কেমিক্যাল আলীর ফাঁসি। সব ধরণের মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতার ধ্বজাধারী বকধার্মিক ইউরোপীয় ইউনিয়নের সে ফাঁসির ব্যাপারে কোনও বিবৃতিই ছিল না, যেমন ছিল না এর আগে সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসির বিরুদ্ধে। বিকেল পাঁচটার দিকে ব্রিকলেনের অপেক্ষাকৃত নির্জন একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয় কর্নেল ফারুকের সন্তান ড. জুবায়ের ফারুকের সেই সংবাদ সম্মেলন। দেখা গেল, সংবাদ সম্মেলনটির ব্যাপারে রক্ষা করা হয়েছে কঠোর গোপনীয়তা। সম্মেলনে জন্যে বেছে নেয়া হয়েছে এমন একটি রেস্টুরেন্ট, যেটির অবস্থান ব্রিকলেনের অপেক্ষাকৃত নির্জন জায়গায় আর তার মালিকেরও ১৯৭২ সালের সংবিধানবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতি রয়েছে। রেস্টুরেন্টটির দোতলায় স্বল্পালোকিত কক্ষটিতে টেবিলের ওপর মাইক্রোফোন, সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যপত্র এবং দুটি পানিভর্তি গ্লাস আর তার পেছনে দু’জন মানুষ। একজন, লেখার অপেক্ষা রাখে না, সৈয়দ ফারুক রহমানের ছেলে ড. জুবায়ের ফারুক; আরেকজন, নিজেই নাম জানালেন তিনি- ব্যারিস্টার আলী মোহাম্মদ আজহার। লন্ডনের বাংলা মিডিয়ার একজন গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক আমাকে অনুচ্চ গলায় পরে জানালেন, ঘোরতর পাকিস্তানবাদী এই আলী মোহাম্মদ আজহার। সংবাদ সম্মেলনের…

ব্রাইটনে লেবার পার্টির কনফারেন্স কাঁপিয়ে গেলেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক। গাজায় যুদ্ধাপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করার আবেদন করেছিলেন ব্রিটেনের কয়েক আইনজীবী। ১৬ জন প্যালেস্টাইনির পক্ষ থেকে এই আইনজীবীরা গত ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার মামলা করে আবেদন জানিয়েছিলেন, এহুদ বারাকের বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করবার জন্যে। হা হতোষ্মী, ওই আবেদন নামঞ্জুর করেছে ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত [...]

ব্রাইটনে লেবার পার্টির কনফারেন্স কাঁপিয়ে গেলেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক। গাজায় যুদ্ধাপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করার আবেদন করেছিলেন ব্রিটেনের কয়েক আইনজীবী। ১৬ জন প্যালেস্টাইনির পক্ষ থেকে এই আইনজীবীরা গত ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার মামলা করে আবেদন জানিয়েছিলেন, এহুদ বারাকের বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করবার জন্যে। হা হতোষ্মী, ওই আবেদন নামঞ্জুর করেছে ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আমরা জানতে পারছি, বিচারক নাকি তার রায়ে বলেছেন, একটি দেশের ক্ষমতাসীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে এহুদ বারাক যোগ্যতা রাখেন যে-কোনও মামলা থেকে কূটনৈতিক অব্যাহতি পাওয়ার। আসলে বিচারকের হাতে রায়ের এ তূণ তুলে দিয়েছেন ব্রিটেনে বসবাসরত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত রন প্রোসর, ২৯ সেপ্টেম্বর যিনি খুবই তৎপর ছিলেন ব্রিটিশ ফরেন অফিসে এবং বার বার দাবি করছিলেন, মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং পৃথিবীর কোথাও কোনও ক্ষমতাসীন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি কিংবা গ্রেফতার করার একটিও দৃষ্টান্ত নেই। রন প্রোসরের ব্যাখায় অথবা চাপে শেষ পর্যন্ত তুষ্ট হয়েছে ব্রিটেনের ফরেন অফিস। মামলার আবেদন নাকচ হয়ে গেছে। সদম্ভে ব্রাইটনে দু’দিন ব্যাপী লেবার পার্টির সম্মেলনে যোগদান শেষে ইসরাইলে ফিরে গেছেন তিনি। ‘লেবার ফ্রেইন্ডস অব ইসরাইলের’ একজন এই এহুদ বারাক, যার পদধূলিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং আবারও ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরাইলের প্রতি তার এবং তার দল আগের মতোই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; ইহদি লবির প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ পেয়েছে এই স্তুতিতে, এলএফআই (লেবার ফ্রেইন্ডস অব ইসরাইল) ব্রিটেনের সবচেয়ে সফল ক্যাম্পেইনিং সংগঠনগুলির অন্যতম। এখানেই শেষ নয়, ‘চোরে চোরে মাসতুতো ভাই, চ্যালায় ধরে গামছা’, ওই ‘গামছা’ ধরেছেন ফরেইন অফিস মিনিস্টার ইভান লুইস, এই সজ্জন ব্যক্তিটি বলেছেন, ওই সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী একেবারে হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে কথা বলেছেন! অথচ দিনের শুরুতেও ২৯ সেপ্টেম্বর আমাদের জানা ছিল, এহুদ বারাকের এই সফর কূটনৈতিক নয়, ডিপ্লোম্যাটিক ইম্যুনিটি নেই তার এবং তাই তিনি ব্রিটিশ আইনের আওতায় পড়বেন এই সফরকালে। কিন্তু মামলার রায় ঝুলিয়ে রাখা হয় এবং সন্ধ্যা ছয়টার দিকে জানানো হয়, তার এ সফরের কূটনৈতিক পরিসর রয়েছে! ব্রিটেনে একটি আইন আছে, যে-আইনের বলে এখানে অন্য কোনও দেশের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগেও যে কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করার অধিকার রয়েছে। গাজায় নির্বিচার গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের সাক্ষী ওই ১৬জন প্যালেস্টাইনি নাগরিকের প্রত্যাশা ছিল, এই আইনটির যথাযথ প্রয়োগ ঘটবে এবং…

আগামীকাল সোমবার ঢাকা শহরে যে হরতাল হতে চলেছে, তাকে আমি, লেখাই বাহুল্য, ন্যায়সঙ্গত মনে করি। তবে আমি এ-ও বলতে চাই, তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় আন্দোলন কমিটি আরও খানিকটা সময় নিতে পারত, সারা দেশে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সফর ও সভা অনুষ্ঠানের পর এ-ধরণের একটি হরতাল আরও কার্যকর হতো। তবে এই চিন্তা থাকার পরও আমি বলতে চাই, যে-প্লাটফর্ম থেকে এই ঘোষণা এসেছে, সেটি দেশের একমাত্র প্লাটফর্ম যা দেশের জাতীয় সম্পদ সমূহ রক্ষার জন্যে বেশ কয়েক বছর ধরে সংগ্রাম করছে এবং তাদের আন্তরিকতা পরিক্ষিত। এখন এই প্লাটফর্মকে আরও শক্তিশালী করার ওপরেও নির্ভর করছে আমাদের জাতীয় সম্পদ সমূহের ভবিষ্যত, আমাদের দেশের ভবিষ্যত। অবশ্য এটা ভাবা ঠিক হবে না, এ-হরতাল সমর্থনকারীদের সবাই জাতীয় সম্পদ রক্ষার জন্যেই এর পক্ষাবলম্বন করছেন। আমরা দেখেছি, সৌদি আরবগামী খালেদা জিয়াকে বিদায় জানিয়ে বিমানবন্দরেই বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার এ-হরতালের প্রতি তাদের নৈতিক সমর্থন ঘোষণা করেছেন। আমার মনে হয়, জাতীয় কমিটির উচিত তাদের এ-সমর্থনকে প্রত্যাখ্যান করা। বিএনপি-জামাত সরকারের পাঁচ বছরের শাসনামলে তেল-গ্যাস নিয়ে যে-তামাশা চলেছে, তার সবই আমাদের জানা আছে। এখন তাদের ওই নৈতিক সমর্থনের জন্যে লালায়িত হওয়ার মানে এতদিন ধরে আন্দোলনের যে-ভিত্তি গড়ে তোলা হয়েছে, তাকেই দুর্বল করে ফেলা, আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। বিএনপি-জামাত আবারও চাইছে, যে-কোনও একটি জনপ্রিয় আন্দোলনকে খড়কূটোর মতো চেপে ধরে নিজেরা রাজপথে নামার মতো অবস্থানে পৌঁছতে। জাতীয় আন্দোলন কমিটি যদি তাদের ওই নৈতিক সমর্থনের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার না করেন, তা হলে তাদের সাংগঠনিক শক্তিমত্তার জন্যে আগামী দিনগুলিতে চারদলের উপাঙ্গে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। আরও একটি মজার ব্যাপার। দেখতে পাচ্ছি, বিশিষ্ট সুশীল অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ একটি দৈনিক পত্রিকায় এ-হরতালের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন‍! বলাই বাহুল্য, এ-জাতীয় মানুষের সমর্থনও এ-হরতালের নৈতিক ভিত্তিকে দুর্বল করবে। কথিত সুশাসন ও নির্বাচনভিত্তিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মুলো ঝুলিয়ে এ-ধরণের মানুষরাই দেশের স্বার্থবিরোধী একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গণভিত্তি গড়ে তোলার জন্যে গত কয়েক বছর তাদের যাবতীয় মেধাজ্ঞান ব্যয় করেছেন। তারা হরতালের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টির চেষ্টাও চালিয়েছেন। এখন যখন এরা হরতাল সম্পর্কে বলেন, হরতাল আছে এবং থাকবে, তখন বুঝতে হবে মতলব একদম ভালো নয়। ইতিমধ্যে, সংবাদের গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে, দৈনিক আমাদের সময় খোলাখুলি তেল-গ্যাস সম্পর্কিত সাম্প্রতিক চুক্তির…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.