আদালতের রায়ে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হচ্ছে হচ্ছে ভাব, এটা হলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি আবার নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। প্রত্যাশিতভাবেই জামাত হৈ-হুংকার শুরু করেছে, ছোটবড় কিছু দলকে সাথে নিয়ে এখানে ওখানে ও লন্ডনে বিদ্রোহী সমাবেশ করছে, উত্তেজক শ্লোগান দিচ্ছে। বানানো হয়েছে ‘‘ইসলাম ও ধর্মীয় রাজনীতি রক্ষা জাতীয় কমিটি’’, বক্তারা ‘‘কাফনের কাপড়’’ পরে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। এটা আরো বাড়বে, একটা মরণকামড় জামাত দেবেই।
মুক্তিযুদ্ধে জাতি ইসলামে রাজনীতি মেশানোর আগুনে পুড়েছে। কিন্তু তারপরেও ইসলাম-ব্যবসায়ীদের হিংস্র চেহারা জাতির চোখে যতটা স্পষ্ট তাদের ধর্মতত্ত্বের ভয়াবহ দিকটা ততটা স্পষ্ট নয়। সেজন্যই জাতিকে জানানো বিশেষ জরুরী, নিজামুদ্দীন আওলিয়া-মঈনুদ্দীন চিশতি-হজরত শাহ জালাল-শাহ পরানের ইসলামের সাথে মওদুদী-নিজামী-সাঈদী-গোলাম আজমের ইসলামের সংঘর্ষ কেন ও কোথায়। জাতিকে জানানো দরকার মুক্তিযুদ্ধে জামাত যে হিংস্রতা করেছে তার শিকড় সেই মওদুদী-ব্যাখ্যার বিকৃত ও বিক্রীত অধর্মতত্ত্বের মধ্যেই নিহিত। যে-কোন প্রতিপক্ষকে যে-কোন উপায়ে নির্মূল করাই তাঁদের কাছে তাঁদের ধর্মবিশ্বাসের দাবী। সেখানে হিংস্রতা বৈধ ও মিথ্যা বলা ‘‘বাধ্যতামূলক’’। মুখে, কাজে ও সংবাদপত্রে জামাতের সদাসর্বদা হিংস্রতা ও মিথ্যার যে বেসাতি আমরা দেখি ওটা তার ‘‘ধর্মীয় কর্তব্য’’। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে তাদের খপ্পরে পড়া থেকে বাঁচানোর জন্য ইসলামের যে ভয়াবহ ব্যাখ্যা তারা জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চান সে দলিলগুলো দেখানো দরকার, এবং দেখানো দরকার তাদের কেতাব ও কর্মকাণ্ড থেকেই। সেটা সম্ভব, দরকার হলে আদালতে এসব দলিল দেখানো যাবে।
ইতিহাসের শিক্ষা এই যে, গণসমর্থন ছাড়া শুধুমাত্র আইনের জোরে ধর্মীয় হিংস্রতা উচ্ছেদ করা যায়না। নিজেদের উদ্দেশ্য অর্জনে কখন সংবিধানকে ‘‘পবিত্র’’ বলে মাথায় তুলতে হয় ও কখন ‘‘ধর্ম-বিরোধী’’ বলে পায়ে দলতে হয় তা জামাত জানে। তাদের হুমকি-ধামকি ও হিংস্রতার কৌশল বেশ সফল, সেটা আইনের বিরুদ্ধে হলেও। মাত্র গত সপ্তাহে মালয়েশিয়াতে ক্যাথলিক পত্রিকা ‘‘হেরাল্ড’’-এর মালয় সংস্করণে স্রষ্টাকে বোঝাতে ‘‘আল্লাহ’’ শব্দটা ব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। শব্দের ওপরে কারো মালিকানার আইন নেই বলে আদালত হেরাল্ড-এর পক্ষে রায় দেয়। কিন্তু আইনে হারলেও ওখানকার ইসলাম-ব্যবসায়ীরা জনগণকে ক্ষেপিয়ে তুলে খ্রিষ্টানদের ওপরে তুমুল হুমকি-ধামকি ছাড়াও এগারোটা গীর্জায় ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এই হিংস্রতার চাপে আদালত তার রায় স্থগিত রেখেছে, তাতে ইসলামি রাজনীতিকদের সাহস ও মনোবল দুটোই বেড়ে গেছে। বিভিন্ন দেশে ইসলাম-ব্যবসায়ীরা দেশ ও জাতির কত ক্ষতি করেছে ও করছে সে দলিলগুলোও জাতিকে জানানো দরকার। সতর্ক থাকতে হবে যেন ওটা বাংলাদেশে না ঘটতে পারে।
যে পশ্চিমা বিশ্বকে জামাত ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী বলে নিরন্তর গালাগালি করে সেখানে কোথায় কোথায় রাষ্ট্রধর্ম আর ধর্মীয় রাজনৈতিক দল আছে তা দেখিয়ে তারা নিজেদের রাজনীতি বৈধ করার চেষ্টা করছে। অথচ এই সত্যটা তারা লুকোচ্ছে যে, ওসব ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের সাথে তাদের পার্থক্য লাউ-লতা ও সাপের। ওসব ধর্মীয় দলের উদ্দেশ্য ধর্মরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নয়, ধর্মীয় আইন প্রয়োগ করা নয়। তারা রাষ্ট্রশক্তির জোরে অন্যের ওপর নিজেদের ব্যাখ্যা চাপিয়ে দেয় না, ভিন্নমতকে হুমকি দেয় না অত্যাচার করে না ও নারী-অত্যাচারকে ধর্মের নামে বৈধ করে না। তাদের ধর্মবিশ্বাসে প্রতিপক্ষকে খুন-ধর্ষণ বৈধ করা নেই, নেই মিথ্যাকে জায়েজ করা। তারা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ আইনেই তাদের ধর্মবিশ্বাসের মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় এসে মনুর বিধান চালু করেনি, ধর্মনিরপেক্ষ আইনই চালু রেখেছিল।
জামাতের আরেকটা প্রিয় অস্ত্র হল রাজার নাম মুসলমান হলেই ‘‘ইসলামি শাসন’’ দাবী করা। তার দাবী ইংরেজের আগে ভারতবর্ষে ইসলামি আইন চালু ছিল। কেউ কেউ উইলিয়াম হানটার-এর ‘‘দি ইন্ডিয়ান মুসলমানস্’’ বই থেকে এর সমর্থন জোগাড় করেন। রাজনৈতিক লোক হানটার সাহেবের বইটা কেন নির্ভরযোগ্য নয় তার প্রমাণ দিচ্ছি : ‘‘আনুষ্ঠানিক ধর্মতত্ত্ব অনুসারে ওয়াহাবীরা হচ্ছে যথার্থ একেশ্বরবাদী মুসলমান। তারা মুহাম্মদ (সঃ)-কেও আল্লাহ’র প্রেরিত পুরুষ বলে স্বীকার করে না’’ – পৃষ্ঠা ৪৭, ঢাকার খোশরোজ পাবলিকেসন্স লিমিটেড। কথাটা উদ্ভট। আমাদের বরং যেতে হবে ডঃ রিচার্ড ইটন ও ডঃ তেসলিম আহমেদের মতো গবেষক, শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞদের কাছে, এবং বিশ্বকোষের কাছে। সেখানে আমরা সুষ্পষ্ট প্রমাণ দেখি মোগল বাদশারা কিভাবে রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে আলাদা রেখেছিলেন। মোগল আমলের কয়েকশ’ বছরে সুবিশাল সাম্রাজ্যে কখনো মদ নিষিদ্ধ ছিলনা, মুরতাদকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়নি, পরকীয়ার মৃত্যুদণ্ড একটাও পাওয়া যায়নি, জিজিয়া করের একমাত্র উদাহরণ বাদশাহ আওরঙ্গজেবের প্রায় অর্ধশতাব্দী রাজত্বের মধ্যে মাত্র ১০ বছর ছাড়া, রাজপ্রাসাদে অমুসলিম সেনাপতি ও আমাত্যদের ভীড়, এমনকি অমুসলিম রাণীদের ভীড়, বাদশাদের অমুসলিম উত্সব পালন যেমন নওরোজ ইত্যাদি অনেক তথ্য প্রমাণ করে জামাতের ও দাবী ডাঁহা মিথ্যা। বাংলার সুলতানী আমলের চিত্রও মোটামুটি একই। ভারতে শুধু কয়েকটা পারিবারিক আইন প্রচলিত ছিল মাত্র। সেটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজ স্বেচ্ছায় পালন করত সম্ভবতঃ ইচ্ছেমত বিয়ে তালাক দিতে ও বৌ-পেটাতে।
সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সবদিকে জাতি জামাতকে প্রতিহত করছে কিন্তু ইসলামের দণ্ডটা এখনো তাদের পঙ্কিল হাতেই রয়ে গেছে। তারা দুর্বল নয়। তারা প্রচণ্ড হুংকার করে। ইসলামের নানান মায়াময় শব্দাবলীতে তারা সমর্থকদের মোহাচ্ছন্ন আবেগাপ্লুত করে হিংস্র করে তোলার ক্ষমতা রাখে। গোপন-প্রকাশ্য বৈদেশিক সমর্থন তাদের আছে, আছে প্র্রচণ্ড আর্থিক শক্তিও। তাদের স্ট্রীট-পাওয়ারও কম নয়, এক হাঁকে তারা লক্ষ মাদ্রাসা ছাত্রদের রাস্তায় নামিয়ে দিতে পারে। তাদের একমাত্র দুর্বল জায়গা হল কোরান-রসুল ও মানবতার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। আঘাতটা আমাদের ওখানেও করতে হবে। ওদের জন্যই নজরুল বলে গেছেন – ‘‘ও হাত হইতে কোরাণ-হাদিস নাও জোর করে কেড়ে’’।
এটা শুধুমাত্র আইনের শক্তিতে হবে না। ইসলামের প্রতি তাঁদের বিশ্বাসঘাতকতার দলিল ও প্রমাণগুলো জাতিকে জানিয়ে সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক ও আইনের যুথবদ্ধ সামগ্রিক আক্রমণেই ইসলামের ছদ্মবেশী এই ইসলাম-বিরোধী অপশক্তি চিরতরে উচ্ছেদ হবে দেশ থেকে।
আর তখনই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সফল হবে।
১৬ জানুয়ারী ৪০ মুক্তিসন (২০১০)
হাসান মাহমুদ
শারিয়া আইন বিষয়ক তথ্যচিত্র, নাটক ও গ্রন্থের রচয়িতা। উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কংগ্রেস; রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট, দ্বীন রিসার্চ সেন্টার, হল্যান্ড; সদস্য, আমেরিকান ইসলামিক লিডারশিপ কোয়ালিশন; ক্যানাডা প্রতিনিধি, ফ্রি মুসলিম্স্ কোয়ালিশন; প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও ডিরেক্টর অফ শারিয়া ল’, মুসলিম ক্যানাডিয়ান কংগ্রেস।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১১ comments
সৈকত আচার্য্য - ২৩ জানুয়ারি ২০১০ (৭:৪৭ অপরাহ্ণ)
Constitution (Fifth Amendment) Act, 1979 [Act No. 1 of 1979] এর মাধ্যমে আমাদের সংবিধানের মূল সেক্যুলার চরিত্র হনন করা হয়েছিল। একটি সামরিকতন্ত্রকে পাকিস্তানী আদলে বৈধতা দেয়া হয়েছিল। আমাদের স্বাধীনতার মহান স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের খুনীদের রক্ষার জন্য সাংবিধানিক রক্ষাকবচ তৈরী করা হয়েছিল। ধর্ম ব্যবসায়ী এবং ‘৭১ এর যুদ্ধাপরাধী রাজাকার-আলবদরদের পুনর্বাসন এবং দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা-স্মৃতি মুছে দেয়ার একটি মহাপরিকল্পনা তৈরী করেছিল, খন্দকার মোশতাক ও সামরিক একনায়ক জিয়াউর রহমান, তাদের গোটা শাসনামল জুড়ে। সংবিধানের এই পঞ্চম সংশোধনী ছিল, এসব কারনে, তাদের বিষাক্ত রাজনীতির সাংবিধানিক প্রোটেকশন। এই সংশোধনী বাতিল হলে, বিএনপি’র রাজনীতির ভিত্তি কেঁপে উঠবে, একারনে তাদের এই আস্ফালন। এদের মুখোশ খুলে দেয়ার সুযোগ এসেছে এবার।
সময়াভাবে আলোচনা আর এগিয়ে নিতে পারলাম না। পরে অংশগ্রহন করার ইচ্ছে রাখি।
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ২৩ জানুয়ারি ২০১০ (৯:০৮ অপরাহ্ণ)
এরশাদের নাম মুখে নিতে মনে হয় লজ্জা পাচ্ছেন আপনি? আপনাদের লজ্জা চিরজীবী হোক!
আরেকটা কথা হচ্ছে, যারা বিশ্বাস করে যে পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের ফলে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলসমূহও নিষিদ্ধ হবে, তারা আসলে বুজোর্য়া রাজনীতি সম্পর্কে খুবই অপিরপক্ব ধারণা নিয়ে কালাতিপাত করছেন।
শামীম ইফতেখার - ২৩ জানুয়ারি ২০১০ (১০:৩৮ অপরাহ্ণ)
@ আচার্য।
ধন্যবাদ।
@ কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর।
আজব এক ব্যাপার দেখি আজকাল। যুদ্ধাপরাধীদের কথা, তাদের পূনর্বাসনের কথা, পূনর্বাসনকারিদের কথা উঠলেই আজকাল একটা শ্রেনীকে দেখি যেন লুঙ্গি তুলে লাফিয়ে ওঠেন। শিরিষ ঘষা মোটা মাথার অতি বুদ্ধির তোড়ে একশো একটা বিষয় টেনে নিয়ে আসে পরিস্থিতি জটিল করতে। এদের মধ্যে চিহ্নিত ছাগুরা তো আছেই, তার সাথে এসে হালে জুড়েছে যত সব নব্য ছাগুর দল, “হতে চাই বুদ্ধিজীবি” অপদার্থেরও দল! সারা দেশের তরুণ প্রজন্ম জেগে উঠছে এই একটিমাত্র ইস্যুতে, আর এগুলার এখনো কোন হুঁশ নাই। আবার আসে বাকিদের “এরশাদের লজ্জা” দিতে। কি বলে, কখন বলে, আর কাকে বলে এই লোকেদের সেই কান্ডজ্ঞানটুকুও নাই। বিরক্তিকর। এদের গাত্রদাহের কারণ যে বুঝি না, তা না। ১৯৭১ এ যখন বাংলার দামাল ছেলেরা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করছে পশ্চিম পাকিস্তানের আগ্রাসী বাহিনী আর তাদের এদেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে, তখন পশ্চিম বঙ্গে এদেরই জাতভাইরা শ্লোগান দিয়েছে “কমরেড ইয়াহিয়া, লও লও লাল সালাম” বলে। যুদ্ধের পরের বছরগুলোতে এদেরই বড়ো নেতাদের কেউ কেউ প্রতি বছর নিয়ম করে ১৬ই ডিসেম্বর প্রতিবাদী বিবৃতি পাঠিয়েছে, পুরো স্বাধীনতা যুদ্ধের অর্জনকে কাঁচকলা দেখাতে। আর ৭৫ এর কথা কি বলবো? পাকিস্তানের আইএসআই, যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ আর পরাজিত যুদ্ধাপরাধী শক্তির সাথে এই সব বিশ্বাসঘাতক সুযোগ সন্ধানীদের দীর্ঘশ্বাস তখন এক হয়ে গিয়েছিল। চোরে চোরে মাসতুতো ভাই আর কি! যার মূল্য দিয়েছে সারা জাতি সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা, চার নেতা হত্যা, শত শত মুক্তিযোদ্ধা হত্যা, যুদ্ধাপরাধীদের পূনর্বাসনের মধ্য দিয়ে, এবং আজও সে মূল্য দিয়ে যেতে হচ্ছে পুরো দেশকে। আজ যখন হাইকোর্টের মতো একটা প্রতিষ্ঠান তার মতো করে সংবিধানের সেকুলারিজমকে ফিরিয়ে আনার কথা তুলেছে (যদিও এটা সর্বোত্তম সমাধান না), এতো বছর নিষ্ক্রিয় থাকা হঠাত এই সব নির্বোধদের মনে হয়েছে, কিছু একটা না বললেই তো চলছে না আর! ভাবটা যেন এই , আর কিছু না পারি, একটু খুঁতই না হয় ধরি। মাঝে মাঝে বুঝি না, এগুলা কি নির্বোধ নাকি সুযোগ সন্ধানী ধান্দাবাজ। আবার এখানে এসেছেন সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী নিয়ে নির্দিষ্ট একটি আলোচনায় “এরশাদকে কেন টেনে আনা হল না” (!), সে কথা বলতে আর জনগণকে লজ্জাজ্ঞান দিতে! আর কাকে কাকে টেনে আনা উচিত ছিল, এই বেলা দিন না দাদা একটা তালিকা তৈরী করে! এভাবে তালিকাই তৈরী করতে থাকুন। করতে করতে হিটলার সুভাষ, স্টালিন, মার্কস লেনিন, হাম্মুরাবি চার্লস এবং আদম হাওয়া পর্যন্তই না হয় গেলাম আমরা আপনার “পরিপক্ক” চিন্তার হাত ধরে। দাঁতালো ডাইনোসর এবং মিষ্টি এ্যামিবাকেই বা বাদ দিই কেন? এই হল অত্যন্ত “পরিপক্ক” (এবং যারপরনাই “সলাজ”) চিন্তার নমুনা! দিন না দাদা, তাক লাগিয়ে দিন, একটা অসাধারণ পরিপক্ক নিবন্ধ লিখে এই বিষয়ে। লজ্জা করবেন না। জাতি শিখলো, লিখতে গিয়ে আপনিও কিছু শিখলেন!
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ২৪ জানুয়ারি ২০১০ (৮:২২ অপরাহ্ণ)
শামীম ইফতেখার
আপনি এত ক্ষেপে গেলেন কেন বুঝতে পারছি না। আমি কি আমার অনুভূতিও জানাতে পারব না? বহুস্বরের এই দেশে একস্বরের হুঙ্কার কি আপনি লালন করতে চান? একটা অতি সহজ বিষয় আমি বলতে চাইছি, ৭১-এ ধর্মের নামে নিপীড়নকারী রাজনৈতিক সংগঠনই শুধু নয়, তাদের প্রকৃত দোসরদেরও বিচার হওয়া দরকার। আপনি কি মনে করছেন না, এরশাদও এসবের সহযোগী ছিলেন? কথা হচ্ছে, আপনি যে ভাষায় আপনার কথাবার্তা কয়ে গেলেন, তা কি শালীনতার দাবিদার?
আমি তো ভোটকাতর দলসমূহের মানবিক-সীমাবদ্ধতার কথা বলতেই পারি। নাকি?
মুক্তাঙ্গন কর্তৃপক্ষ
উপরোক্ত মন্তব্য (১.২) আপনাদের ব্লগের জন্য কতটুকু উপযুক্ত, কার্যকর, স্বস্তিদায়ক তার বিবেচনার ভার আপনাদের উপরই রইলো।
অস্মিতা - ২৪ জানুয়ারি ২০১০ (৭:৪৮ পূর্বাহ্ণ)
হাসান মাহমুদ,
বিষয়টি নিয়ে লিখবার জন্য ধন্যবাদ। জামাত শিবিরের মুখোশ উম্মোচনের আপনার প্রস্তাবিত পন্থাটি “কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার” মতো মনে হয়েছে। এতে কাজ হলেও হতে পারে। তবে বেশ খানিকটা সংশয়ও আছে। ধর্মীয় বিশ্বাস যার অস্থি মজ্জায়, তার সামনে কোনো যুক্তি কোনো মুখোশ উম্মোচনই কি শেষ পর্যন্ত সফলতা আনে?
শামীম ইফতেখার (#১.২),
আপনি খেপে গেছেন, মন্তব্য পড়ে বোঝা যাচ্ছে। অনুরোধ করবো (আমাদের সবার স্বার্থেই) উষ্মা প্রকাশে ভাষার ব্যাপারে আরেকটু সতর্কতা অবলম্বন করবেন। আপনার প্রথম লাইনেই বঙ্গজ পুরুষের নিত্য ব্যবহৃত প্রিয় পরিধেয় বস্ত্রখন্ডটির “বৈপ্লবিক ব্যবহারের” উপমা টেনে মন্তব্যের লক্ষ্যবস্তু ব্যক্তিটিকে নিয়ে যে চিত্রকল্প তৈরী করলেন তা নারীপুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্যই disturbing। আলোচনার “সুশীল” পরিবেশের জন্য যা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয় বলে মনে করি। তেমনিভাবে আপনার মন্তব্যে “ছাগু” শব্দটির উল্লেখ আম জনতার জন্য বিভ্রান্তিকর। যদিও উক্ত শব্দের ব্যবহার ব্লগাঙ্গনে মোটামুটি জামাত-শিবির বা তাদের ছানাপোনা বা ঐ ঘরানার চিন্তাপদ্ধতির (এমনকি সময় বুঝে রাজনৈতিক অবস্থানে একাত্মতার) সাথে সাদৃশ্যসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের প্রতি হামেশা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু অনেকে ভুল করে এর তৃণভোজী প্রাণীবাচক অর্থটিই ধরে নিয়ে বসতে পারেন, যা অনভিপ্রেত। একারণে এ ধরণের “বহুমাত্রিক” শব্দের প্রয়োগে আপনার কাছ থেকে আরও স্বচ্ছতা আশা করি। ঝামেলা এড়াতে এ জাতীয় বিভ্রান্তিকর এবং বিবাদজনক শব্দ পরিহার করাই শ্রেয়। আমরা নিশ্চয়ই চাইনা সজ্জন ব্লগারেরা এমন শব্দার্থের বিড়ম্বনায় পড়ে বিড়ম্বিত হবেন।
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ২৪ জানুয়ারি ২০১০ (৮:২৪ অপরাহ্ণ)
থ্যাংকস।
অবিশ্রুত - ২৪ জানুয়ারি ২০১০ (৭:৫০ পূর্বাহ্ণ)
পঞ্চম সংশোধনী বাংলাদেশের সংবিধানের একটি কলঙ্কজনক ক্ষত, এতে কোনও সন্দেহ নেই। এটি বাতিল হলে আমি এবং আমার মতো আরও অনেকেই আনন্দিত হবে। কিন্তু সত্যিই কি এর মধ্যে দিয়ে ধর্মীয় রাজনীতি বাতিল হবে?
সরকারের কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, বাতিল হবে।
কিন্তু যে-সংবিধানে পঞ্চম সংশোধনী চলে গেলেও বিসমিল্লাহ থেকে যাবে, রাষ্ট্রধর্মও থাকবে, সে সংবিধান সত্যিই ধর্মীয় রাজনৈতিক দল গঠনের অধিকারকে খর্ব করতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়া খুবই স্বাভাবিক।
২.
হাসান মাহমুদ-এর প্রসঙ্গ পঞ্চম সংশোধনী বাতিল, জামায়াতের প্রতিক্রিয়া ও তার প্রতিকার নিয়ে। এই প্রসঙ্গের পরিসর যে একেবারে সংকীর্ণ নয়, সেটি বোঝা যায়, যখন তিনি নিজেই আমাদের প্রসঙ্গক্রমে মুঘল আমলের পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত করান। কাজেই পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের আলোচনাক্রমে যদি আমরা আমাদের সংবিধানে ধর্মতন্ত্রের আছড় নিয়েও আলোচনা করি, তা বোধহয় একেবারে অপ্রাসঙ্গিক হয় না। আর সেটি করতে গেলে নিশ্চয়ই এরশাদ ও তার রাষ্ট্রধর্ম প্রবর্তনের প্রসঙ্গও আসবে। সংবিধানে ধর্মীয় রাজনীতির এসব আছড় জামায়াতের মতো দলগুলিকে নানাভাবে শক্তি যোগাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও যোগাবে। আমার মনে আছে, সামরিক জান্তা এরশাদের আমলে যখন রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয় তখন আট দল, সাত দল ও পাঁচ দল এর বিরোধিতা করে হরতাল করলেও জামায়াতে ইসলামী একদম নিশ্চুপ ছিল; কেননা তারা ঠিকই বুঝতে পেরেছিল, এটি তাদের আরও একটু শক্তি বাড়াবে।
এখন, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বলে বেড়ানো হচ্ছে, ‘পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করবে, অথচ বিসমিল্লাহ আর রাষ্ট্রধর্ম রেখে দেবে – এ থেকে বোঝা যায়, ওরাই আসলে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে।’
এই প্রচারণার উত্তর সরকার দিচ্ছেন না, আইনমন্ত্রীও না! গড্ডালিকায় গা ভাসিয়ে রেখেছেন তারা!
৩.
পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হলে শুধু জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলই বৈধতা হারায় না, এরশাদের শাসনামলও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই সামরিক ভদ্রলোকটির অবদানও কম নয়। কাজেই কোনও পাঠক যদি প্রসঙ্গক্রমে এরশাদের কথা টেনে এনেই থাকেন, তার সেই উপস্থাপনার ধরণ যথাযথ না হতে পারে, কিন্তু এরশাদকে টেনে আনাটা অপ্রাসঙ্গিক মনে হয় না (বলা ভালো, আমার দৃষ্টিতে)। যিনি এরশাদকে টেনে এনেছেন, সেই কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীরের হয়তো জানা নেই – এবং আমারও হয়তো জানা হতো না যদি এ-ব্লগের বিভিন্ন লেখা ও মত-প্রতিক্রিয়া অনুসরণ না করতাম – সৈকত আচার্যও এরশাদের সামরিক শাসনামলের, প্রতিক্রিয়াশীল বিভিন্ন পদক্ষেপের, অগণতান্ত্রিক শাসনের এবং ধর্মকে চুলকানি দেয়ার মতো যাবতীয় উদ্যোগের ঘোরতর সমালোচক। তবে আলোচনাক্রমে একটি বিষয়ের অনেক শাখা-প্রশাখাই গজাতে পারে এবং আমরা বিভিন্নজনের অবস্থান সম্পর্কেও পরিচিত হতে পারি। প্রাণবন্ত আলোচনামাত্রই নানা শাখা-প্রশাখা তৈরি করে।
অবশ্য আমরা যদি সেটি প্রত্যাশাই না করি, তা হলে অবশ্য অন্য কথা।
প্রসঙ্গত সবার কাছেই একটি প্রশ্ন : হাসান মাহমুদ ভাইয়ের এ লেখার প্রতিক্রিয়ায় মন্তব্য এসেছে :
এটি কি শামীম ইফতেখার সাধারণ অর্থেই লিখেছেন, না কি এর চেয়ে উত্তম আরও এক বা একাধিক সমাধানের পন্থা আপনাদের জানা আছে? যদি জানা থাকে, সেগুলি কি কি? আমার এ ব্যাপারে ধারণা নেই বলেই আপনাদের কাছে জানতে চাইছি।
শামীম ইফতেখার - ২৫ জানুয়ারি ২০১০ (১১:১০ পূর্বাহ্ণ)
আপনার মন্তব্যগুলো সবসময়ই খুব মন দিয়ে পড়ি আর বিশ্লেষণের সুক্ষতায় মুগ্ধ হই। ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে স্বীকার করে নিচ্ছি আইনগত বিষয়গুলো তেমনভাবে জানি না। আইনজ্ঞরা বিষয়গুলো আরও ভাল ব্যাখ্যা করতে পারবেন। আমি আসলে সাধারণ অর্থেই বোঝাতে চেয়েছি যে সেকুলারিজম কিংবা যে কোন ইজমের ব্যাপারেই রাষ্ট্রনীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া আদালতের কাজ না। বিচারকের কলমের খোঁচায় এ ধরণের পরিবর্তন অভিপ্রেতও না, কারণ, সেটা টেকসই হওয়ার সম্ভাবনা তেমন দেখি না। সিদ্ধান্তগুলো রাজনৈতিক, আর তার জন্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার উপরই নির্ভর করতে চাই। বলার অপেক্ষা রাখে না, সেই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য প্রেক্ষিত যেমন লাগে, তেমনি একটি সমাজের সাংস্কৃতিক উত্তরণের পটভূমিও লাগে। এগুলোর কোনোটাই না থাকলে সেটাই আগে তৈরী করে নেয়াই আমাদের করণীয় কাজ। সেখানে ব্যর্থ হলে রায়ের পর দিনই দেশ জুড়ে লাঠিটুপির “ইসলাম গেল ইসলাম গেল” আন্দোলন দেখতে হবে। এখন তো এত সাধনার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়াও এই প্রতিক্রিয়ার বলি হতে পারে বলে আশংকা হচ্ছে। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং ১৯৭২ এর সংবিধানের পর ধর্মীয় রাজনীতিকে তো আমরা বিদায় জানিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম চিরতরে। কেউ কিন্তু তখন “ধর্ম গেল ধর্ম গেল” বলে দেশ জুড়ে এর বিরোধীতা করেছে এমনটা জানা নেই। অথচ টিকলো না তো! ১৯৭৫ থেকে ধর্মীয় রাজনীতিকে ফিরিয়ে আনার আয়োজন এবং ১৯৭৮ এসে পুরোদমে এর জয়যাত্রা শুরু। এর পরের সরকারগুলোর সবাই সেই রাজনীতির ছত্রছায়ায় কখনো নিজেদের আখের গুছিয়েছে, কখনো বিভাজন নীতি প্রয়োগ করে নিজেদের মসনদকে পোক্ত করেছে, গোটা জাতিকে আফিম খাওয়ানোর আয়োজন করেছে স্কুলের পাঠ্য বই থেকে শুরু করে সর্বত্র। ফলাফল হয়েছে যা হওয়ার তাই। ইতিহাসের উল্টো দিকেই আমাদের হাঁটা হয়েছে। এসব কারণেই এই ধর্মীয় রাজনীতির শুরুটাকে (পূনর্বাসন অর্থে) আরও ভালভাবে বুঝতে চাই, কারণ, উত্তরগুলো সেখানেই হয়তো পাওয়া যাবে। মোটামুটি একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ হলেও জিয়া এবং এরশাদের মধ্যে তাই আমি কিছু পার্থক্যও দেখি। এদের একজন প্রবক্তা আরেকজন অনুসারী, একজন “কারণ” আরেকজন “উপসর্গ”, একজন চিত্রটি এঁকেছেন আরেকজন দিয়েছেন ফিনিশিং টাচ। দুজনেই অপরাধী, পার্থক্য কেবল মাত্রায় এবং অপরাধের প্রকৃতিতে। এই পার্থক্যটি মনে না রাখলে আমরা অতি সরল আলোচনার বৃত্তেই ঘুরপাক খেতে থাকবো। তাতে লাভ ধর্মীয় রাজনীতির, ক্ষতি সেকুলার জনতার।
হাসান মাহমুদ - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (৯:০৯ অপরাহ্ণ)
সবাইকে ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্য ও মন্তব্য করার জন্য। আমাদের সমস্যা অনেক, এবং সবকিছুর সাথে সবকিছু জড়িত। পঞ্চম সংশোধনী’র সাথে নিশ্চয়ই রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ জড়িত। তাত্ত্বিক দিক দিয়ে ওদুটো এবং ধর্মীয় রাজনীতি একসাথে বাতিল হওয়া উচিত। কিন্তু বাস্তবে সেটা একসাথে করতে গেলে প্রতিপক্ষের সুবিধে হয়ে যাবে। তাই সমাজকে প্রস্তুতি নেবার সময় দিতে হবে, – আপাততঃ ধর্মকে রাজনীতি থেকে পৃথক করওতে পারলে বাকী দুটোর কোন প্রভাব থাকবে না।
একাত্তরে আমরা খেয়াল করিনি আমাদের সামরিক যুদ্ধ সামগ্রিক সাংস্কৃতিক যুদ্ধের অংশমাত্র। তাই সামরিক যুদ্ধে জিতেই আমরা নিশ্চিন্ত ছিলাম। দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন ধর্ম যে বিপজ্জনকভাবে প্রতিপক্ষের নিয়ন্ত্রনে চলে যাচ্ছে বা গেছে সেটা খেয়াল না করাতে পরাজিত শত্রু ওই দিক দিয়ে ঢুকে পড়েছে। নষ্ট রাজনীতির জন্য ওদের বিলক্ষ্মণ সুবিধে হয়েছে কিন্তু এটা না হলেও ওরা ধীরে হলেও এগোত। কারণ এখন ওরা আগের চেয়ে অনেক বেশী অভিজ্ঞ, ওদের সুষ্পষ্ট রোডম্যাপ আছে। ওরা অত্যন্ত ধূর্ত, মিথ্যাবাদী, নিষ্ঠুর, কৌশলী, নির্লজ্জ, সম্পদশালী ও দক্ষ।
আমার দৃষ্টি দিগন্েত, নুতন প্রজন্মের দিকে। জাতির সামনে, নুতন প্রজন্মের চোখের সামনে ক্রমাগত ধরা আছে শুধু ওদেরই ইসলামি ব্যাখ্যা। এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। বর্তমানে রাজনৈতিক টানাপোড়ন যাই হোক না কেন ওদের বিষাক্ত হাত থেকে ইসলামের অঘোষিত মালিকানা ছিনিয়ে না নিলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ওদের খপ্পরে পড়ে যাবে। তাতে জাতির কপালে খুব দুর্ভোগ হবে যা হচ্ছে পাকিস্তানে, ইরাণে, মিসরে। আমি তারই বিকল্প দিচ্ছি অতিত-ভবিষ্যতের ইসলামি বিশেষজ্ঞদের অজস্র দলিল-বিশ্লেষণের ইসলামিক মেকানিজ্ম দিয়েই। ওরা পারফেক্ট ক্রাইম করতে পারে নি। ওরা কোথায় কোথায় কোরাণ-রসুলের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, মানবতা লংঘন করেছে, নিজেদেরই কথা ও কর্মকা¨ থেকে উলটো মেরেছে, এবং তার ফলে মানুষের বিশেষতঃ মেয়েদের কি সর্বনাশ হয়েছে তা দলিল ধরে ধরে অপ্রতিহতভাবে দেখানো সম্ভব। আমার বই ‘‘ইসলাম ও শারিয়া’’, আমার তথ্যসিনেমা ও তথ্যনাটকে এগুলো আছে।
আ-লীগের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার শক্তিতে সংসদেই পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হতে পারত। কিন্তু আ-লীগ সেপথে না গিয়ে আদালতের মেকানিজ্ম প্রয়োগ করেছে। এটা একদিক দিয়ে ভালো কারণ আদালতের বিপক্ষে দাঁড়ানো ওদের পক্ষে অস্বস্তিকর। মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে সরকারের নুতন মুখদের দৃ•তা স্পষ্ট কিন্তু তার পরেও আমাদের গরীব দেশ, ভেতরে ভয়াবহ দুর্নীতি, বাইরের প্রচ¨ চাপ ও গভীর ষড়যন্ত্র। এ দুের্যাগের ভেতর দিয়েই এই ভাঙ্গা নৌকো বাইতে হচ্ছে তাঁদের, কাজেই কিছুটা ছাড় আমাদের দিতেই হবে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার হবে বলে আমার বিশ্বাস। কিন্তু সে বিচারের রায় কি হবে তা নিয়ে আমার যথেষ্ট উদ্বেগ আছে।
সবাইকে আবারো ধন্যবাদ।
হাসান মাহমুদ - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (৯:১২ অপরাহ্ণ)
Correction:- আমি তারই বিকল্প দিচ্ছি অতিত-Bortomaner ইসলামি বিশেষজ্ঞদের অজস্র দলিল-বিশ্লেষণের ইসলামিক মেকানিজ্ম দিয়েই।
রায়হান রশিদ - ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৪:৪৩ অপরাহ্ণ)
বাংলাদেশ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে আলোচিত মামলাতে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক এবং বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবির এর প্রদত্ত রায়টি নিচে এমবেড করে দেয়া হল (এখান থেকে পিডিএফ কপিও ডাউনলোড করে নেয়া যাবে):