বাংলাদেশকে যদি রাজনৈতিক মুসলমানের মন শাসন করে তবে সেই হারের মধ্যে বেঁচে থাকার ঔদ্ধত্য দেখিয়ে যেতেই হবে যতদিন বেঁচে থাকবে বাংলাদেশের মুক্তবুদ্ধি, মুক্তিযুদ্ধ ও প্রগতির পথের সংস্কৃতি।[...]

তার পা পেছনে। দেশ সারা পৃথিবী। অর্থনীতি, প্রতিদিনের প্রয়োজনে মুক্তবাজারের বিনিয়োগ ব্যবসা লভ্যাংশ তার খুবই পছন্দের । প্রযুক্তি, আল্লাহ ও সৎমানুষের শাসনে তার বিশ্বাস। তাকে ঘিরেই জেহাদি জঙ্গির কাছ থেকে ফিরতে চায় – ভারত, চীন, ইউরোপ, রাশিয়া ও আমেরিকা। এই চাওয়ার সাথে বাংলাদেশকে মেলানো যায় না। তুরস্ক, মালেশিয়া, সৌদি আরব, মধ্যপ্রাচ্যের তেলওয়ালা দেশগুলো, মিশর, মরক্কো, আলজিরিয়া, মধ্য এশিয়ার দরিদ্র দেশগুলো, সুদান, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরান, ইরাক, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া… এরকম আরো আরো মুসলিম দেশের কোনো একটির সাথে বাংলাদেশের কোনো মিল নেই। কিন্তু কোনো মিল না থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশকে যদি রাজনৈতিক মুসলমানের মন শাসন করে তবে সেই হারের মধ্যে বেঁচে থাকার ঔদ্ধত্য দেখিয়ে যেতেই হবে যতদিন বেঁচে থাকবে বাংলাদেশের মুক্তবুদ্ধি, মুক্তিযুদ্ধ ও প্রগতির পথের সংস্কৃতি। জামাতের মধ্যে এবং আরো বড় করে দেখলে বিএনপির মধ্যে ও আরো দুঃখজনক রূপটি দেখতে হলে আওয়ামী লীগের মধ্যে রাজনৈতিক মুসলমানের মনের অস্তিত্ব কড়িকোমলে প্রোথিত। আমাদের কোনো সম্ভাবনা নেই – এই রাজনৈতিক ইসলামের ‘মেইনস্ট্রিম’ আমাদের মধ্যে আছেই – সেই পথের সবকিছু আমাদের দেশে তৈরি হয়েই আছে। চারপাশের এই ‘মেইনস্ট্রিম’কে যখন দেখি, তখন সবচেয়ে করুণ যেছবি দেখি তা হল মানচিত্র ভূগোল বলে যে কিছু আছে – ইতিহাস তো বাদই দিলাম, কারণ কারো কারো মতে তাতো মৃত – তা মনেই হয় না। একেক জন আল্লাহ প্রেরিত বঙ্গসন্তান, আর এতোই বেশি তিনি এঅঞ্চলে পাঠিয়েছেন, যাদের আবার তার ইচ্ছায় কৈশোরযৌবনকালে নারীপুরুষনির্বিশেষে পাচারবাস ঘটে। কিন্তু এরাই সব ভুলে কথিত অকথিত কোরান ও সুন্নার আলোকে সর্বঘটে আল্লার শাসন কায়েম করতে চাইছে। এদের মধ্যে জেহাদি যারা তাদের এখন সরিয়ে নেয়া হয়েছে ‘মেইনস্ট্রিম’এর রাজনীতির নামে ও অর্থনৈতিক শক্তিতে এবং ইসলামিক ন্যায়ের ইউটোপিয়ায় এখন এরা ‘আশরাফুল মাকলুকাত’ বা ইসলামি ‘হোমো সেপিয়েন্স’ হয়ে উঠেছে। কিন্তু বাংলাদেশে যদি একটি কাজ করা যায়, যদি যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা যায়, যদি সত্যিই তা সম্ভব হয়, তাহলে এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক মুসলমানের মনে একটা বড় ধরনের আঘাত আমরা হানতে পারব। সেআঘাত শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বরাজনীতিতেও তার প্রভাব ফেলবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের সাথে পৃথিবীর আর কোনো মুসলমান দেশকে কেউ মেলাতে পারবে না, সেই দেশ বেতাল হয়েও যদি রাজনৈতিক মুসলমানের মনে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের…

উল্টোরথ-এর 'মেলব্যাগ'-এ মেশানো থাকত কৌতুকের মিছরি আর মিসেস প্রসাদ সিংহ ছিলেন মিছরির বয়াম। [...]

[প্রথম পর্ব] উল্টোরথ-এর 'মেলব্যাগ'-এ মেশানো থাকত কৌতুকের মিছরি আর মিসেস প্রসাদ সিংহ ছিলেন মিছরির বয়াম। মাঝেমধ্যে প্রসাদ সিংহ উত্তর পরিবেশন করলেও মিসেস প্রসাদ সিংহেরই জনপ্রিয়তা ছিল সর্বাধিক, নীচের দুটি চিঠি তার প্রমাণ : কল্যাণী ভট্টাচার্য (আটীয়াবাড়ী বাগান) : আপনার উত্তর খুব ভাল লাগে। একমাত্র আপনার উত্তর পড়বার জন্যই আমি প্রতি মাসে উল্টোরথ রাখি। আশা করি, আপনি মেলব্যাগ ছেড়ে যাবেন না। -- তিনকাল গিয়ে এক কালে ঠেকেছে। এখন কোন চুলোয় যাব বল। (বর্ষ ২০, সংখ্যা ১০, পৌষ ১৮৯৩ শকাব্দ, পৃ. ২৩) তাপস মুখার্জী (নদীয়া) : উল্টোরথে আপনার সুন্দর উত্তর পড়ে খুব অবাক হয়ে যাই। সেই জন্য আপনাকে জানাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা। ছোটভাইয়ের অভিনন্দন গ্রহণ করবেন কি? -- নিশ্চয়। (বর্ষ ২১, সংখ্যা ১, চৈত্র ১৮৯৪ শকাব্দ, পৃ. ২৭) কিছু-কিছু বিষয়ে (যেমন : ধর্ম-বর্ণ) পাঠকদের কৌতূহল মেটানো হয়েছে অত্যন্ত সরল উত্তরে, আবার কখনও-কখনও দেখছি শ্লেষ-বক্রোক্তির টান। মিসেস প্রসাদ সিংহের একটি উত্তর : শিপ্রা দাশ (গৌহাটি) : রাকেশ রোশন হিন্দু, না মুসলমান? -- হিন্দু। (বর্ষ ২০, সংখ্যা ১১, মাঘ ১৮৯৩ শকাব্দ, পৃ. ২২৫) এর আগে প্রায় একই প্রসঙ্গে প্রসাদ সিংহ উত্তর দিয়েছেন : মনোমোহন সরকার (গৌরীপুর) : বাংলায় কি সিডিউল্ড কাস্ট শিল্পী আছেন? -- এসব প্রশ্ন থাক। জাত নিয়ে আজ আর কেউ মাথা ঘামায় না। -- বিশেষ করে কলকাতায়। (বর্ষ ১৩, সংখ্যা ৪, মাঘ ১৮৮৬ শকাব্দ, পৃ. ২৩১) ষাট-সত্তরের দশকে বাংলা ছবির সঙ্গে সাহিত্যের যোগ যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিল, উল্টোরথ-এর নিয়মিত বিভাগ 'বরণীয় সাহিত্যের স্মরণীয় চিত্ররূপ' বা 'সাহিত্যের চিত্ররূপ' দেখলেই তা বোঝা যায়। এ-ব্যাপারে পাঠকদের সাগ্রহ পরামর্শও লক্ষণীয়, যেমন প্রসাদ সিংহের প্রতি এক পাঠকের চিঠি : এস. টি. ডি (রঘুনাথপুর) : প্রসাদদা, গত বৎসর পূজা সংখ্যা 'বেতারজগৎ'-এ প্রকাশিত আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের 'মহাবিহার' গল্পটি চিত্রায়িত হলে খুব ভালো হবে এবং চলবেও। আমার হয়ে আপনি পরিচালক অজয় করকে অনুরোধ জানাবেন ছবিটি চিত্রায়িত করবার জন্য? -- আপনার অনুরোধ জানালুম। (বর্ষ ১৩, সংখ্যা ৪, মাঘ ১৮৮৬ শকাব্দ, পৃ. ২২৫) 'মেলব্যাগ' থেকে একগুচ্ছ চিঠি বেছে নিয়ে তুলে দেওয়া হলো (উত্তরদাতা : মিসেস প্রসাদ সিংহ) : ১ স্বপন ব্যানার্জী (লামডিং) : বহুরূপ যাঁর তাঁকে বলা হয় বহুরূপী। পাঁচটি মুখ যাঁর তাঁকে…

দেশভাগ আমাদের কাছে বাংলাভাগ। অনেক দিন হল বাংলা ভাগ হয়ে গেছে। ভাগ দিনে দিনে গভীর হয়েছে।[...]

দেশভাগ আমাদের কাছে বাংলাভাগ। অনেক দিন হল বাংলা ভাগ হয়ে গেছে। ভাগ দিনে দিনে গভীর হয়েছে। আজ এবং ভবিষ্যতে আর কখনো বাংলা এক হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। ইতিহাস ও সংস্কৃতি-ও দিনে দিনে এতই আলাদা হয়ে গেছে, আজ আর এক সময়ের ‘বাংলাদেশ’-এর কোনো স্মৃতি আমাদের প্রজন্মের অন্তরে উদ্ভাসিত নয়। একই দেশ দুই পৃথক রাষ্ট্রের (আসলে তিনটি : ভারত পাকিস্তান বাংলাদেশ) শাসনে অন্তরে বাহিরে দুই সম্পূর্ণ পৃথক দেশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু দুই বাংলার এক প্রতিষ্ঠানে একীভূত হওয়ার একটি সুযোগ আছে। বাংলা ভাষা নিয়ে দুই বাংলা মিলে একটি ভাষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব। যেপ্রতিষ্ঠান ভাষার চর্চা, পরিচর্যা, প্রচার ও প্রসারে নিবেদিত হতে পারে। এপ্রতিষ্ঠান অভিবাসী বাংলাভাষীদের জন্যও ভাষাচর্চার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে পারে। এবং একই সাথে এই প্রতিষ্ঠানে বিদেশে বিভাষীদের বাংলা শেখানোর উদ্যোগ নিতে পারে। আর এপ্রতিষ্ঠানটির নাম কী হতে পারে?— হ্যাঁ, নাম হতে পারে ‘জয় বাংলা’। এভাবে জয় বাংলা তার দ্বিতীয় বিজয়ের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। প্রথম ‘জয় বাংলা’ আমাদের দিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ। এই ‘জয় বাংলা’ আমাদের দিতে পারে সারা পৃথিবীর বাংলাভাষীদের নিজস্ব ভাষাপ্রতিষ্ঠান। এই ভাষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়া যায় বাংলা ভাষার পাঠাগার। এবং এই পাঠাগারই পারে ভাষাকে সবচেয়ে বেশি প্রাণবান রাখতে। এরপর এপ্রতিষ্ঠানই বাংলাভাষীদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য নিয়ে মাতিয়ে তুলতে পারে অনুষ্ঠানের পর অনুষ্ঠান। এপ্রতিষ্ঠান হতে পারে আমাদের বহুআকাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্রের কাছ থেকে ভাষা ও সংস্কৃতিকে আলাদা করে ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যম। এ মুক্তিকেও আমরা ধরব ‘জয় বাংলা’ নামে।

বিয়ের সময় কান্নাকাটি করা আমাদের দেশের মেয়েদের এবং মেয়ের মায়েদের যেনো একটি অবশ্যই করনীয় প্রথা। যেকোন পরিস্থিতিতে, যেভাবেই বিয়ে হোক না কেন, কান্নাকাটি যেনো বিয়ের একটি আবশ্যিক আচার [....]

বিয়ের সময় কান্নাকাটি করা আমাদের দেশের মেয়েদের এবং মেয়ের মায়েদের যেনো একটি অবশ্যই করনীয় প্রথা। যেকোন পরিস্থিতিতে, যেভাবেই বিয়ে হোক না কেন, কান্নাকাটি যেনো বিয়ের একটি আবশ্যিক আচার। সমাজে শত শত বছর ধরে এ আচারটি বহমান, কিন্তু কেনো? সামাজিকভাবে মেয়েরা দুর্বল আছে এবং থাকবে সেটাকে টিকিয়ে রাখার জন্যই কি? একটি ছেলে হাসি মুখে গর্বিত ভঙ্গীতে বিয়ে করে একটি ক্রন্দনরতা মেয়েকে নিয়ে নিজের বাড়ি যায়। এই ব্যাপারটা সমাজে ক্ষমতাবান ছেলে আর দুর্বল মেয়েদের অবস্থানের একটা বাস্তব প্রতিফলন। মেয়েদেরকে হাস্যকরভাবে দুবর্ল প্রমান করার একটি চিরাচরিত ও সযত্নে লালিত কায়দা। নতুন জীবন শুরু করার আগেই কাঁদিয়ে মানসিক শক্তি ভেঙ্গে দেয়া হয় যাতে স্বামীর ঘরে আর নিজের দাবী প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে। এমনকি অনেক সময় কোন মেয়ে কতোটুকু কাঁদল, কিভাবে কাঁদল সেটাও মার্ক করে তার ওপরে রেটিং করা হয়। মেয়েটার কলিজা কতোটুকু পাত্থর কিংবা কতোটুকু মায়াধরা তার একটা প্রাথমিক এসেস হয় এটা থেকে। সুতরাং কনে বেচারীর কান্নাকাটির বেষ্ট পার্ফমেন্স দেয়া ছাড়াতো উপায় নেই, মনে যাইই থাক না কেনো। আজকাল কনে সাজানোর বিউটি পার্লার গুলোও এ ব্যাপারে সর্তকতা অবলম্বন করে, ওয়াটার প্রুফ মাশকারা, আইলাইনার ইত্যাদি মেকআপ ইউজ করেন, কতোটুকু মেকাপ দেয়া হয়েছে, কতোটুকু কান্নাকাটি এ্যালাউড বলে দেন, যাতে পরবর্তীতে ভিডিওটা ঠিক ঠিক আসে, ভূতনী না দেখায়। কোন মেয়ের হয়তো বহু দিন বিয়ে হচ্ছে না, বিয়ের জন্য অনেক চেষ্টা করছেন মা – বাবা, শাপ শাপান্ত করে অলক্ষী বলে গালি দিচ্ছেন, তারপর হয়তো অনেক সৃষ্ঠে বিয়ে ঠিক হলো, তারপর যেই না কাজী সাহেব খাতা খুলে বসলেন সাথে সাথেই বাবা - মায়ের যৌথ বিলাপের ধ্বনিতে পাড়া মুখরিত হবে। কেউ বা প্রেম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার উপক্রম করছে, ধরে বেঁধে শেষ কালে মতান্তরে বিয়ে দিচ্ছে, এরমধ্যে কয়েক পশলা ঘরে আটকে রাখা, মারধোর হয়ে গেছে, কিন্তু আবার সেই একই নাটকের পুনরাবৃত্তি, কাজী সাহেব যখনি বলবেন বলো মা কবুল, আরম্ভ হবে মায়ে - ঝিয়ের যুগল বন্দী। এধরনের বহু ঘটনা হরহামেশাই ঘটে থাকে। কষ্টের জন্য কান্নার চেয়েও লৌকিকতার জন্য কাঁদা হয় বেশি। পাছে লোকে কি ভাবে সেই চিন্তায় ভারতীয় উপমহাদেশের লোকেরা ভীষন দুর্বল। আর সেই সুযোগই কাজে লাগান অন্যেরা। কেউ কেউ…

আমার জানতে ইচ্ছে করে, সরকারের বিজ্ঞাপন নীতিমালা এই বিজ্ঞাপনগুলোকে সমর্থন করে কি না। আর যদি আমাদের চরম দুর্ভাগ্যবশত সমর্থন করেও থাকে, তাহলে আমরা এই অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হব কি না। [...]

আমাদের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো খুললেই চটকদার নানান বিজ্ঞাপনচিত্র দেখতে পাওয়া যায়। দেশে এখন বিজ্ঞাপনশিল্প গড়ে উঠেছে। হাজার-হাজার মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। অবাক করা বিষয় হল: এফডিসি-তে চলচ্চিত্রের যত না কাজ হয়, তার চেয়ে বেশি কাজ হয় বিজ্ঞাপনের। অনেককেই বলতে শোনা যায়, টিভি-অনুষ্ঠান মানুষ দেখে বিজ্ঞাপন দেখার আশায়। আমাদের অনেক বিজ্ঞাপনচিত্র আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত হয়েছে, তাও আমরা জানি। এমনও নজির আছে: আমাদের দেশে বিজ্ঞাপন সামাজিক দায়বদ্ধতার জন্য বিটিভিতে জনসচেতনতা ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের আওতায় বিশেষ হ্রাসকৃত মূল্যে প্রচারিত হয়েছে। বিজ্ঞাপনটি সুনির্মাতা আফজাল হোসেন দ্বারা নির্মিত ছিল। ছোট শিশুদের মায়েদের অনুরোধ ছিল, বিজ্ঞাপনটি না শুনলে তাদের শিশুরা খাবার খেতে চাচ্ছিল না। অন্য কথায় আসি। বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত দু'-চারটি বিজ্ঞাপন আমার মনে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। প্রথমে বলি, ভারতীয় কিছু বিজ্ঞাপন, বিশেষত বহুজাতিক কোম্পানি লিভার ব্রাদার্স-এর দু'-একটি পণ্যের বিজ্ঞাপন, যেগুলো ভারতের শিল্পী ও কলাকুশলীদের দ্বারা নির্মিত, সেই বিজ্ঞাপনগুলোর কথা বাংলায় তর্জমা করে আমাদের এখানে প্রচার করা হচ্ছে। এখন আমার প্রশ্ন: আমাদের এখানে যেহেতু বিজ্ঞাপনশিল্প, মডেল, শিল্পী, কলাকুশলী আছে, সেহেতু ভারতীয় বিজ্ঞাপনগুলো প্রচারের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না। ভারতীয় বিজ্ঞাপনগুলোর মডেলদের পোশাক-আশাকও আমাদের এখানকার পরিবেশের সঙ্গে যায় কি না ভেবে দেখা প্রয়োজন। সম্প্রতি হরলিক্স-এর একটি বিজ্ঞাপনও আমাদের এখানে দেখানো হচ্ছে, যার মোদ্দা কথা হল: এই হরলিক্স পান করলে বাচ্চারা Taller, Sharper and Stronger হবে। এই বিজ্ঞাপন যখন ইউকে-তে দেখানো হয়, তখন এর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলায় বলা হয়, এটা কীভাবে প্রমাণিত হল যে স্বাভাবিক খাবার খাওয়া শিশুর চেয়ে হরলিক্স পান-করা শিশু Taller, Sharper and Stronger হয়? তখন হরলিক্স কর্তৃপক্ষ বলেছে, আসলে বিজ্ঞাপনটি ভারত-শ্রীলঙ্কা তথা তৃতীয় দুনিয়ার জন্য বানানো হয়েছে এবং ইউকে থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই ভুল তথ্য দেওয়া বিজ্ঞাপনটি আমাদের এখানে চালানো হচ্ছে। এবার আসি আমাদের এখানে বানানো দু'টি বিজ্ঞাপনের প্রসঙ্গে। প্রথমটি প্রাণ কোম্পানির ফ্রুটো ড্রিঙ্ক নিয়ে। শিক্ষক বাচ্চাদের আম বিষয়ক রচনা লিখতে দিয়েছেন। বাচ্চারা লিখেছে: ‌'এমন একদিন আসবে, যখন আমের ছালবাকল থাকবে না, আঁটি থাকবে না; বোতলবন্দি থাকবে আম। বৈশাখমাসে নয় শুধু, সারা বছরই আম খাওয়া যাবে। সেই আমকে আদর করে ফ্রুটো ডাকবে সবাই।' হায় রে আমার শিক্ষক, হায় রে আমার পাকা আমের মধুর রস!…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.