উল্টোরথ-এর 'মেলব্যাগ'-এ মেশানো থাকত কৌতুকের মিছরি আর মিসেস প্রসাদ সিংহ ছিলেন মিছরির বয়াম। [...]

[প্রথম পর্ব]

উল্টোরথ-এর ‘মেলব্যাগ’-এ মেশানো থাকত কৌতুকের মিছরি আর মিসেস প্রসাদ সিংহ ছিলেন মিছরির বয়াম। মাঝেমধ্যে প্রসাদ সিংহ উত্তর পরিবেশন করলেও মিসেস প্রসাদ সিংহেরই জনপ্রিয়তা ছিল সর্বাধিক, নীচের দুটি চিঠি তার প্রমাণ :

কল্যাণী ভট্টাচার্য (আটীয়াবাড়ী বাগান) : আপনার উত্তর খুব ভাল লাগে। একমাত্র আপনার উত্তর পড়বার জন্যই আমি প্রতি মাসে উল্টোরথ রাখি। আশা করি, আপনি মেলব্যাগ ছেড়ে যাবেন না।
— তিনকাল গিয়ে এক কালে ঠেকেছে। এখন কোন চুলোয় যাব বল।

(বর্ষ ২০, সংখ্যা ১০, পৌষ ১৮৯৩ শকাব্দ, পৃ. ২৩)

তাপস মুখার্জী (নদীয়া) : উল্টোরথে আপনার সুন্দর উত্তর পড়ে খুব অবাক হয়ে যাই। সেই জন্য আপনাকে জানাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা। ছোটভাইয়ের অভিনন্দন গ্রহণ করবেন কি?
— নিশ্চয়।

(বর্ষ ২১, সংখ্যা ১, চৈত্র ১৮৯৪ শকাব্দ, পৃ. ২৭)

কিছু-কিছু বিষয়ে (যেমন : ধর্ম-বর্ণ) পাঠকদের কৌতূহল মেটানো হয়েছে অত্যন্ত সরল উত্তরে, আবার কখনও-কখনও দেখছি শ্লেষ-বক্রোক্তির টান। মিসেস প্রসাদ সিংহের একটি উত্তর :

শিপ্রা দাশ (গৌহাটি) : রাকেশ রোশন হিন্দু, না মুসলমান?
— হিন্দু।

(বর্ষ ২০, সংখ্যা ১১, মাঘ ১৮৯৩ শকাব্দ, পৃ. ২২৫)

এর আগে প্রায় একই প্রসঙ্গে প্রসাদ সিংহ উত্তর দিয়েছেন :

মনোমোহন সরকার (গৌরীপুর) : বাংলায় কি সিডিউল্ড কাস্ট শিল্পী আছেন?
— এসব প্রশ্ন থাক। জাত নিয়ে আজ আর কেউ মাথা ঘামায় না। — বিশেষ করে কলকাতায়।

(বর্ষ ১৩, সংখ্যা ৪, মাঘ ১৮৮৬ শকাব্দ, পৃ. ২৩১)

ষাট-সত্তরের দশকে বাংলা ছবির সঙ্গে সাহিত্যের যোগ যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিল, উল্টোরথ-এর নিয়মিত বিভাগ ‘বরণীয় সাহিত্যের স্মরণীয় চিত্ররূপ’ বা ‘সাহিত্যের চিত্ররূপ’ দেখলেই তা বোঝা যায়। এ-ব্যাপারে পাঠকদের সাগ্রহ পরামর্শও লক্ষণীয়, যেমন প্রসাদ সিংহের প্রতি এক পাঠকের চিঠি :

এস. টি. ডি (রঘুনাথপুর) : প্রসাদদা, গত বৎসর পূজা সংখ্যা ‘বেতারজগৎ’-এ প্রকাশিত আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের ‘মহাবিহার’ গল্পটি চিত্রায়িত হলে খুব ভালো হবে এবং চলবেও। আমার হয়ে আপনি পরিচালক অজয় করকে অনুরোধ জানাবেন ছবিটি চিত্রায়িত করবার জন্য?
— আপনার অনুরোধ জানালুম।

(বর্ষ ১৩, সংখ্যা ৪, মাঘ ১৮৮৬ শকাব্দ, পৃ. ২২৫)

‘মেলব্যাগ’ থেকে একগুচ্ছ চিঠি বেছে নিয়ে তুলে দেওয়া হলো (উত্তরদাতা : মিসেস প্রসাদ সিংহ) :


স্বপন ব্যানার্জী (লামডিং) : বহুরূপ যাঁর তাঁকে বলা হয় বহুরূপী। পাঁচটি মুখ যাঁর তাঁকে বলা হয় পঞ্চমুখ। কিন্তু স্ত্রীর প্রশংসায় যিনি পঞ্চমুখ তাঁকে কি বলা যেতে পারে?
— মুখপোড়া।


ইন্দ্রনীল (জলপাইগুড়ি) : রাশিয়াতে ক্রিকেট খেলা হয় না কেন?
— কারণ রাশিয়ার লোকেরা রাশি-রাশি কাজ করে, অফিস পালাতে জানে না।


শ্যামল ভদ্র (আনাড়া) : আমি সিনেমায় নামতে চাই। নামবার জন্যে কাকে চিঠি লিখতে হয়, দয়া করে জানাবেন কি?
— আমি কোন ‘ভদ্র’-কে Sin-e-ma-য় নামাতে চাই না।


সীমা মুন্সী (কলকাত) : হিন্দী ছবিতে যে ধরনের নাচ হয়, ঐ ধরনের নাচ আমি শিখতে চাই। যেমন হেলেনের নাচ। ঐ ধরনের নাচ কোথায় শেখানো হয় জানাবেন কি?
— ও! হেলেনের নাচ শিখতে চান? অর্থাৎ Hell-এ ‘in’ করতে চান, তাই না? Hell-এর ঠিকানা আমার জানা নেই।


রত্না, স্বপ্না, তৃষ্ণা, গঙ্গা ও গায়ত্রী (কলকাতা) : বিবাহের চেয়ে বড় বন্ধন আর কি হতে পারে তা আমরা আজও জানি না। দয়া করে জানাবেন কি?
— সে এক অপূর্ব বন্ধনহীন বন্ধন। জোর নেই, অথচ জোড় আছে। দুজন দুজনকে স্বীকার করে নেবে, অথচ কেউ কারুর শিকার নয়। যেমন হয়েছিল নেলসন আর লেডি হ্যামিলটনের মধ্যে।


অশোককুমার দাস (রায়গঞ্জ) : সকলেই ভাবছে মেরে দিগ্বিজয় করবে। যে যাকে পারছে মারছে। এখন তর্ক নয়, আলোচনা নয়। কেবল মার আর মার। দলের নামে মার। রাজনীতির নামে মার। সমাজতন্ত্রের নামে মার। গণতন্ত্রের নামে মার। কল্যাণের নামে মার। কিন্তু প্রেমের নামে কি?
— প্রেমের নামে শুধু ‘মার’ নয়, একেবারে ‘মার মার কাট কাট’ ব্যাপার।

(বর্ষ ১৮, সংখ্যা ৯, অগ্রহায়ণ ১৮৯১ শকাব্দ, পৃ. ২৮-৩৩)


বিমল মিত্র (নৈহাটি) : বর্বরতার জন্য ইয়াহিয়া খাঁকে নোবেল পুরস্কার দিলে কেমন হয়?
— মন্দ হয় না। কিন্তু ভুতো সাহেব রেগে যেতে পারে। নোবেল পুরস্কার আমার মতে তারই প্রাপ্য! কারণ তিনিই হলেন পাকিস্তান নিবেদিত ছায়াছবির প্রকৃত ‘প্রাণ’।

[প্রাণ : হিন্দি ছবির খলনায়ক।]


স্বপন মিশ্র (বহুলা) : ওয়াহিদা রেহমান কি বিবাহিতা?
— ওদিকে আর চেয়ো না স্বপন
শ্রীমতির মন সঞ্জীবে মগন!


মীনারাণী দাশ (দিল্লী) : ‘প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা ও প্রবঞ্চিতকে দেয় দাহ।’ এই উক্তিটির তাৎপর্য বর্তমান যুব-সমাজকে বুঝিয়ে দেওয়া উচিত নয় কি?
— এর আর বোঝাবার কি আছে ভাই? প্রেম যে ঐশ্বর্য দেয়, তা প্রেমে-পড়া ছেলেমেয়েদের দামী দামী জামা-কাপড় দেখলেই বোঝা যায়। প্রেম যে মৃত্যুকে দেয় মহিমা, এও তো জানা কথা। দেবদাস প্রেমের জন্যে কিংবদন্তী হয়ে গেছে, চন্দ্রমুখী দেবদাসের প্রেমে পড়ে এক লাফে বারাঙ্গনা থেকে বরাঙ্গনা হয়ে গেল। আর দাহ! যে কোন মেয়ে-স্কুল বা মেয়ে-কলেজের সামনে হাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকা বোকা-বোকা ছেলেদের মুখের দিকে তাকালেই বুঝতে দেরি হয় না যে ওদের ভেতরটা একেবারে দাউ দাউ করে জ্বলছে।

[উক্তিটি পাওয়া যাবে যাযাবরের বহুলপঠিত বই দৃষ্টিপাত-এ।]

১০
অজিত পাল ও শ্যামল নাথ (ডিব্রুগড়) : শুনছি ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট নিক্সন চীনে যাচ্ছেন। বলতে পারেন কেন?
— সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি আর কি।

(বর্ষ ২০, সংখ্যা ১০, পৌষ ১৮৯৩ শকাব্দ, পৃ. ১৯-২৩)

১১
হরিশ হাঁশদা (বাঁকুড়া) : আমাদের পাশের বাড়িতে একটি মাদ্রাজী মেয়ে থাকে। ও বেশ ভাল বাংলা জানে। প্রতি মাসে উল্টোরথ নিতে এসে বলে — ‘ছবিগুলো দেখেই ফেরত দিয়ে যাব। কিন্তু চাইতে গেলে বলে, ‘গল্প, উপন্যাস এইসব না পড়ে ফেরত দিতে পারব না।’ বড্ড জ্বালাচ্ছে মেয়েটা। কি করে ওকে ভাগাই বলুন তো?
— ভাগাতে তো তুমি চাও না, তুমি চাও ভাগ দিয়ে ওকে ভাগিয়ে আনতে।

১২
তপন, অর্চনা, ইরা, কণিকা, বুবাই (রামনগর) : হেমন্ত মুখার্জীর পুত্রের নাম জয়ন্ত না রীতেশ?
— হেমন্ত-পুত্র জয়ন্তই রীতেশ। মা-র দেওয়া নাম জয়ন্ত, আর সিনে-মা-র দেওয়া নাম রীতেশ।

১৩
অনুরাধা চক্রবর্তী (আসাম) : অনুপ ঘোষাল কি বিবাহিত?
— অতদূরে অনুপ বিয়ে করতে যেতে পারবে না।

১৪
হাফিজুদ্দিন আহমেদ (মালদা) : ‘হিটলার’ ও ‘লেনিন’ খ্যাত শান্তিগোপাল যাত্রামঞ্চ ছেড়ে পর্দায় জন্ম নিচ্ছে না কেন?
— পর্দা ছিঁড়ে যাবার অশঙ্কায় হয়তো।

১৫
নরেন মাহাতো (নদীয়া) : অপর্ণা সেন কি সুপর্ণা সেনের বোন?
— নরেন মাহাতো কি সাগিনা মাহাতোর ভাই?

[সাগিনা মাহাতো : হিন্দি ছবির অভিনেতা।]

(বর্ষ ২০, সংখ্যা ১১, মাঘ ১৮৯৩ শকাব্দ, পৃ. ২২৩-২২৫)

১৬
প্রণবকুমার চ্যাটার্জী (গুসকরা) : শুনেছি একটি মেয়েকে একাধিক ব্যক্তি ভালবাসতে পারে না। কিন্তু একটি মে-একে চারটি বর ভালবাসে এবং ঐ মে-এর পিছন পিছন ঘোরে। এদের নাম বলতে পারেন কি?
— সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নবেম্বর ও ডিসেম্বর।

১৭
উত্তমকুমার রায় (হাওড়া) : আমার নাম উত্তম। আমি যদি সিনেমায় নামি তাহলে আমি উত্তমকুমারের দ্বিতীয় স্থান পাব কি?
— পেতে পারেন। তবে একটা মুশকিল হচ্ছে এই যে আমাদের প্রেসের ঝাড়ুদারনীর নাম আবার সুচিত্রা। সে কোন স্থান পাবে এটাই আমার সমস্যা। যাক গে, আপনার সঙ্গে তাকে হিরোইন করা যেতে পারে।

১৮
শ্রীমতি (পাটনা) : রাজেশ খান্না সব চেয়ে কি ভালবাসেন?
— শ্রীমতিদের মিত্রতা।

১৯
আবদুল করিম (কলকাতা) : দিদি, বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান সম্বন্ধে আপনার মতামত কি?
— রবীন্দ্রনাথের কাব্য-সাধনা ও মানব-ধর্ম-সাধনার সঙ্গে সুভাষচন্দ্রের দেশপ্রেম যুক্ত হলে ফলশ্রুতি যা হয় — তার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

(বর্ষ ২১, সংখ্যা ৩, জ্যৈষ্ঠ ১৮৯৪ শকাব্দ, পৃ. ১৫-১৬)

২০
রীটা রহমান (চট্টগ্রাম) : বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান সাহেবের এই বিরাট জনপ্রিয়তার কারণ কি?
— বাঙালীর হিয়া অমিয় মথিয়া মুজিব ধরেছে কায়া।

২১
পান্না রায়চৌধুরী (মেহেরপুর) : যুগান্তর পত্রিকায় দেখলাম আমেরিকার একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ বলেছেন প্রেম করলে নাকি হৃদরোগ সেরে যায়। তা কি সত্য?
— হ্যাঁ, যারা প্রেম করে বেড়ায় তাদের হৃদয় বলে কোন বস্তু থাকে না কিনা।

(বর্ষ ২১, সংখ্যা ৪, আষাঢ় ১৮৯৪ শকাব্দ, পৃ. ২৯-৩২)

২২
পূর্ণেন্দু পালচৌধুরী (শিলিগুড়ি) : বাংলাদেশের জন্য বিশ্বজিৎ করল ছবি! অনেক শিল্পী টাকা তুলে দিয়েছেন, কিন্তু উত্তমকুমার ও সুচিত্রা সেন কি করলেন?
— জানি কিন্তু বলব না।

২৩
তপন রায় (৫৬ এ. পি. ও) : যুদ্ধ শেষ হবার পর ভারতের নানা প্রদেশের চলচ্চিত্র শিল্পীগণ বিজয়ী ভারতীয় জওয়ানদের আনন্দ দান করবার জন্যে forward area-তে এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কোন বাঙালী চলচ্চিত্র শিল্পীকে দেখলাম না কেন?
— সম্ভবত forward area-তে যাবার মত forward এঁরা নন।

২৪
শ্রীমতি মিত্র (পাটনা) : ‘সদর’, ‘আন্দাজ’ ও ‘আনন্দ’ ছবিতে রাজেশ খান্নার শেষ পরিণতি মৃত্যু। আপনি আমার তরফ থেকে প্রোডিউসারদের একটু অনুরোধ করবেন, তারা যেন এ ধরনের কাহিনীতে রাজেশ খান্নাকে না নামান।
— শোন শোন প্রযোজক ভাই
ছবি করো তাহে ক্ষতি নাই
কিন্তু ভাই মেরো নাকো রাজেশ রতনে
বহু নারী মোছে সীঁথি তাহার মরণে।

২৫
সুকুমার ও প্রণব (ঝাড়গ্রাম) : বৃহৎ দুই রাষ্ট্র চীন ও আমেরিকা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না কেন?
— দেবে দেবে, লোক হাসিয়ে তবে তো দেবে। গাঁয়ে একটা প্রবাদ আছে না — সেই তো… খসালি, তবে কেন লোক হাসালি?

২৬
প্রদীপকুমার দাশ (কোচবিহার) : মানুষ বেকার থাকে কেন?
— জান না বুঝি? তবে আর জেনে তোমার কাজ নেই।

(বর্ষ ২১, সংখ্যা ১, চৈত্র ১৮৯৪ শকাব্দ, পৃ. ২৬-২৭)

২৭
দুলু সেনগুপ্ত (জোড় হাট) : বিয়ের পর মেয়েরা আরও সুন্দর হয় কেন?
— বিয়ের পর আপনারা মেয়েদের শ্রদ্ধার চোখে দেখেন বলে।

২৮
অধীর সেন (বোম্বাই) : মমতাজ কাকে বিয়ে করছে?
— কোন অধীর, সুধীর বা বধিরকে নয় নিশ্চয়।

২৯
অনুরাধা নাগ (কলিকাতা-২৩) : ফিল্মস্টারদের স্বামীদের অবস্থা কি রকম?
— যার ধন তার নয় নেপোয় মারে দই।

৩০
শ্যামসুন্দর নাটক (বারানসী) : ইংরিজীতে স্ত্রীকে বলে better half, স্বামীকে কি বলে?
— Bitter half বোধহয়।

৩১
শীলা মল্লিক (কলিকাতা-৪) : জন্ম মানে আবির্ভাব, মৃত্যু মানে তিরোভাব। তাহলে বিবাহ মানে কি?
— ‘অভাব’।

৩২
সজল ব্যানার্জী (মেদিনীপুর) : বাংলায় নির্মীয়মাণ সব চেয়ে বড় casting-এর ছবি কোনটি?
— ‘যদি জানতেম’, তোমায় জানাতেম।

(বর্ষ ২২, সংখ্যা ৫, শ্রাবণ ১৮৯৫ শকাব্দ, পৃ. ২৪৭-২৪৮)

৩৩
হনুমান সিংহ (হায়দ্রাবাদ) : অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে মেয়েরা জানোয়ার ছাড়া কিছু নয়, তাই নয় কি?
— আপনি তাহলে সেই জানোয়ারেরই বাচ্চা।

৩৪
অমৃতা নিয়োগী (চণ্ডীগড়) : সায়রা বানু নাকি তাঁর বাড়ির দেওয়ালে স্বামী দিলীপকুমারের অসংখ্য ছবি টাঙিয়ে রাখেন?
— ব্যাপারটা সত্যি কিনা জানি না। তবে সত্যি হলে বলতে হবে শ্রীমতির আসলির চেয়ে নকলিতেই অনুরাগ বেশি।

৩৫
অনাথনাথ বসু (কলকাতা) : বিবাহ-প্রথা উঠে গেলে মেয়েদের কি হাল হবে বলতে পারেন?
— মেয়েদের কি হাল হবে তা জানি না, তবে পুরুষগুলো যে নাজেহাল হবে, সে সম্বন্ধে আমি নিঃসন্দেহ। প্রায়-বিনা খরচায় ঝি cum রাঁধুনি cum ধোপানী cum নার্স তখন কোথায় পাওয়া যাবে?

৩৬
চিত্রা সেনগুপ্তা (কলকাতা-২) আমি সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে ভালবাসি। এখন কি করি বলুন তো?
— জানলার ধারে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে সন্ধ্যা মুখার্জীর সেই বিখ্যাত গানটা গাইবে — হয়ত কিছুই নাহি পাব, তবুও তোমায় আমি দূর হতে ভালবেসে যাব।

৩৭
রমা মিত্র (পাটনা) : এস. ডি বর্মন ও আর. ডি বর্মনের সঙ্গীতের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
— এস. ডি বর্মন কুলবধূ ও আর. ডি বর্মন বারবধূ।

(বর্ষ ২২, সংখ্যা ৭, আশ্বিন ১৮৯৫ শকাব্দ, পৃ. ৬২৫-৬২৭)

মুয়িন পারভেজ

জন্ম চট্টগ্রামে। লিখে সময় কাটি, পড়ে জোড়া লাগিয়ে দিই আবার। ভালোবাসি মেঘবৃষ্টিজ্যোৎস্না আর ঝরনাকলম। প্রকাশিত কাব্য : ‘মর্গে ও নিসর্গে’ (ঐতিহ্য, ২০১১)।

১৯ comments

  1. তানবীরা - ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ)

    খুবই মজাদার একটি লেখা। ধন্যবাদ আপনার কারনে ভালো করে ওনার সম্পর্কে জানা হলো। ত্রিশ আর পয়ত্রিশ নাম্বারটা জোশ ঃ)

    • মুয়িন পার্ভেজ - ৩ মার্চ ২০১০ (৫:৫৫ অপরাহ্ণ)

      ধন্যবাদ, তানবীরা। প্রসাদ সিংহ ও মিসেস প্রসাদ সিংহ সম্পর্কে তেমন কিছু আমার জানা নেই। গুগলে ‘গবেষণা’ ক’রে কোনো তথ্য পাওয়া গেল না। প্রসাদ সিংহের মৃত্যুর পর ‘প্রসাদ সিংহ স্মরণে’ প্রেমেন্দ্র মিত্র সহ কয়েকজন লেখকের স্মৃতিতর্পণমূলক লেখা মুদ্রিত হয়েছিল উল্টোরথ-এর পাতায় — এসব লেখায় ঠিক জীবনবৃত্তান্ত জানা যায় না।

  2. জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ আরিফ - ৩ মার্চ ২০১০ (৩:০১ অপরাহ্ণ)

    এক কালে বাসায় “উলটোরথ” দেখতে পেতাম বড় মামার হাতে। তবে সেই বয়সে তা ছিল আমাদের জন্য নিষিদ্ধ বস্তু। যখন বড় হলাম তখন “পূর্বাণী”, “চিত্রালী”, “উলটোরথ” সবই কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। অমন হারিয়ে যাওয়া একটা পত্রিকাকে লেখার জন্য ধন্যবাদ।

    • মুয়িন পার্ভেজ - ৩ মার্চ ২০১০ (৬:৩২ অপরাহ্ণ)

      পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই। চিত্রালী-র কয়েকটি সংখ্যা হাতে এসেছিল ছেলেবেলায়, তবে এর বেঢপ অবয়ব আমাকে আকৃষ্ট করেনি খুব। পুরস্কার হাতে নিয়ে তোলা জহির রায়হানের সুপরিচিত ছবিটি এ-পত্রিকাতেই প্রথম দেখেছি।

      চলচ্চিত্রবিষয়ক পত্রিকা ‘নিষিদ্ধ বস্তু’ হয়ে থাকে সম্ভবত অশ্লীল ছবির কারণে। উল্টোরথ-এর (ষাট-সত্তরের দশকের) পাতায় পাতায় থাকত বাংলা ছবির বিজ্ঞাপন ও নায়ক-নায়িকার ছবি, কিন্তু আপত্তিকর বা অশোভন মনে হয়নি কখনও — ছবি-নির্বাচনে সম্পাদক সুরুচির পরিচয় দিয়েছিলেন। এখনকার আনন্দমেলা-র সঙ্গে তখনকার উল্টোরথ-এর এটুকু পার্থক্য নিশ্চয় আছে। অবশ্য আগের আদলে উল্টোরথ একালে চলত কি না, তাও ভাবার বিষয়।

  3. ব্লাডি সিভিলিয়ান - ৪ মার্চ ২০১০ (৩:০০ অপরাহ্ণ)

    এখনকার আনন্দমেলা-র সঙ্গে তখনকার উল্টোরথ-এর এটুকু পার্থক্য নিশ্চয় আছে।

    বোধহয়, ‘আনন্দলোক’ বলতে চাইছিলেন। কারণ, ‘আনন্দমেলা’ শিশুকিশোর পত্রিকা।

    • মুয়িন পার্ভেজ - ৪ মার্চ ২০১০ (৪:০০ অপরাহ্ণ)

      আপনি ঠিকই বলেছেন — আনন্দলোক। অনেক ধন্যবাদ।

    • মুয়িন পার্ভেজ - ১২ মার্চ ২০১০ (১২:২৯ অপরাহ্ণ)

      উইকিপিডিয়া-য় ‘Anandabazar Patrika’ শীর্ষক প্রবন্ধে লেখা আছে :

      In 1940, a children’s section under the name “Anandalok”, was introduced. In 1960, an entertainment section mainly composed of movie news, called “Anandamela”was introduced.

      আনন্দলোকআনন্দমেলা সম্পর্কে আলাদা-আলাদা ভুক্তি আছে অবশ্য (আনন্দলোক সম্পর্কে মাত্র কয়েকটি বাক্য), তবে উপর্যুক্ত তথ্যটি বেশ কৌতূহলোদ্দীপক — পাক্ষিক পত্রিকা হিশেবে আত্মপ্রকাশের আগে আনন্দলোকআনন্দমেলা-র চারিত্র্যবীজ কি উল্টো ছিল মাতৃজঠরে!

  4. ব্লাডি সিভিলিয়ান - ৪ মার্চ ২০১০ (৩:০২ অপরাহ্ণ)

    অবশ্য আগের আদলে উল্টোরথ একালে চলত কি না, তাও ভাবার বিষয়।

    ভাবার বিষয়!!!

    চিত্রালীর উত্তরদাকে খেয়াল আছে??

    আর শচীন ভৌমিকের প্রশ্নোত্তর??

    • মুয়িন পার্ভেজ - ৫ মার্চ ২০১০ (৫:৫৬ অপরাহ্ণ)

      চিত্রালী পড়েছিলাম ছেলেবেলায়; উত্তরদা সম্পর্কে আমার কিছুই জানা নেই। শচীন ভৌমিকের লেখা পড়েছি উল্টোরথ-এ নয় (যদিও তাঁর পরিচালিত চলচ্চিত্র রাজারানি-র সচিত্র সংবাদ পেয়েছি), অন্য এক চলচ্চিত্র-পত্রিকা জলসা-য়; মুগ্ধ হয়েছি তাঁর রচনার সরসতায়। নায়িকাদের ‘পৃষ্ঠপ্রদর্শন’ নিয়ে তিনি লিখেছেন :

      আজকাল মেয়েদের পিঠখোলা পোষাক দেখে আমি প্রতিবাদ না করে থাকতে পারছি না। পিঠের কোন সেক্স নেই। আমার মনে হয় পিঠই একমাত্র নারী-পুরুষের মধ্যে কমন বিড়ম্বনা। বিশেষ করে ঘামাচি হলে তো বিড়ম্বনার একশেষ। পিঠ দেখে নারী বা পুরুষ বোঝা আমার কর্ম নয়। সুতরাং মেয়েরা পৃষ্ঠপোষাকতা (পৃষ্ঠপোষকতা) না করে খামোখা ঠাণ্ডা লাগিয়ে বেড়াচ্ছে। একমাত্র ব্লাউজপীসের কাপড় কম লাগানোটা যা বাঁচোয়া। রাজকাপুর ‘‘যিশ দেশমে” ছবিতে পদ্মিনীর খালি পিঠ দেখিয়েছেন। পদ্মিনীর সে পিঠ দেখে কোন ছেলে প্রেমে পড়েছে বলে আমি শুনিনি। পিঠ যেন সরল রেখা। সরল যে কোন জিনিস মূল্যহীন। সরলরেখা ট্রেণলাইনের জন্য চলতে পারে, নারীদেহের জন্য অচল। পৃথিবী, এমন কি শূন্যে গ্রহতারাও সরলরেখায় বিশ্বাসী নয়। সব বক্ররেখা, সব বৃত্তভক্ত। ঈশ্বরের এই বৃত্তপ্রেম দেখে আমিও বৃত্তপ্রেমিক হয়ে উঠেছি। বৃত্ত বা অর্ধবৃত্তও সহ্য হয়, কিন্তু সরলরেখা অসহ্য। নারীদেহের তাই সরল সোজা পিঠ আমার কাছে নিরামিষ। এক সুরে যে গলা ধরে রাখে সে বড়জোর বক্তা হবে, কিন্তু নানা সুরে যে গলা খেলাতে পারে সেই তো গায়ক। নারীদেহের ঢেউগুলোই চক্ষুরোচক, হাড়গুলোর জ্যামিতি নয়। সেজন্য বলা প্রয়োজন নারীদেহের কংকাল আমার কাছে নিয়ে এলে আমি অজ্ঞান হয়ে যাব বা সন্ন্যেসী হয়ে যাব। বিশ্বামিত্রের ধ্যানভঙ্গ করতে মেনকা যদি বিশ্বামিত্রকে খালি খালি পিঠ দেখাতেন, তবে, হলপ করে বলতে পারি, বিশ্বামিত্রের ধ্যান ভাঙ্গানো, মেনকা কেন, তার চৌদ্দপুরুষে কেউ পারত না!

      সুতরাং back দেখিয়ে বুড়বক বানাবার চেষ্টা করা মেয়েদের উচিত নয়। ছেলে ধরতে চান, সিফন শাড়ি পরুন বা সালোয়ার-কামিজের মোজা (মোজার মতো অঙ্গলীন বলে বলছি) পরুন। তাতে ছেলেরা ট্যাঁরা হবে। ট্যাঁরা হওয়া মানেই ভেড়া হওয়া। কিন্তু পিঠ দেখালে ছেলেরাও পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবেন। নারীদেহ হল ঈশ্বরের ড্রইং। পিঠটা হল সাদা ড্রইং পেপার যেখানে উনি কিছু আঁকেননি। ড্রইং পেপার দেখে যেমন ড্রইং বিচার করা যায় না তেমনি পিঠ দেখে মেয়ে বোঝা যায় না। পিঠ দেখে যদি মেয়ে বোঝা যেত তাহলে মাটি দেখেও প্রতিমা বোঝা যেত।

      সুতরাং পিঠ ঢাকুন। back out রেখে কাউকে bold out করা অসম্ভব। মনে রাখবেন, সুকুমার রায় লিখেছেন, ‘‘গোঁফের আমি গোঁফের তুমি গোঁফ দিয়ে যায় চেনা।” উনি ‘‘পিঠের আমি, পিঠের তুমি, পিঠ দিয়ে যায় চেনা” লেখেননি। কস্মিনকালে কেউ লিখবেনও না।

      সুতরাং হে যুবতীগণ, পিঠ দেখানো অচিরাৎ পরিত্যাগ করুন। মনে রাখবেন পিঠ যৌবনের পীঠস্থান নয়।

      (জলসা, পূজা সংখ্যা, বর্ষ ৫, সংখ্যা ২, ১৩৬৯ বঙ্গাব্দ, কলকাতা, পৃ. ৪৭৮-৪৭৯)

      একটি সংখ্যায় (জলসা কি না ঠিক মনে নেই) শচীন ভৌমিককে দেখা গেছে উত্তরদাতার ভূমিকায়। তাঁর বেডসাইড বইটির বিজ্ঞাপন বেশ চোখে পড়ত; বইয়ের দোকানে অনেকবার খোঁজ নিয়েও সেটি পাইনি।

  5. কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ৫ মার্চ ২০১০ (১০:৩৭ অপরাহ্ণ)

    চমৎকার পোস্ট — বিশেষ করে ২০, ২১, ৩০ তো মজা লাগলই, ৫ নম্বর এমন মজার বিষয় যে, মনে হয় তা এক সাধনার বিষয় হয়ে যাবে।

  6. ইমতিয়ার - ৬ মার্চ ২০১০ (৩:৩৪ পূর্বাহ্ণ)

    দ্রষ্টব্য ৯ :

    ‘প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা ও প্রবঞ্চিতকে দেয় দাহ।’

    আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু এই বাক্যটিকে সামান্য সম্প্রসারণ করে বলতে ভালোবাসে, ‘প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা, প্রবঞ্চিতকে দেয় দাহ আর মানুষকে করে সংকীর্ণ!’

    উল্টোরথ-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর-পর বেশ কয়েক মাস সাংবাদিক পার্থ সরকার সশরীরে উপস্থিত থেকে ঢাকার ডায়েরি লিখেছিলেন। নিশ্চয়ই সেগুলি ঢাকার সে-সময়ের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক দলিল। পরবর্তী কোনও পর্বে কি আমরা মুয়িন পার্ভেজ-এর কাছ থেকে সেগুলির চকিত বিবরণ পাওয়ার আশা রাখতে পারি?
    ধন্যবাদ, উল্টোরথ নিয়ে এই চমৎকার আরেকটি পর্বের জন্যে।

    • মুয়িন পার্ভেজ - ৬ মার্চ ২০১০ (১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ)

      উল্টোরথ-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর-পর বেশ কয়েক মাস সাংবাদিক পার্থ সরকার সশরীরে উপস্থিত থেকে ঢাকার ডায়েরি লিখেছিলেন।

      ‘ঢাকার ডায়েরি’ লিখতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় — পার্থ সরকার নামেও কেউ লিখতেন? প্রথম পর্বে মুক্তিযুদ্ধ-প্রাসঙ্গিক লেখাগুলোর যে-হ্রস্ব তালিকা দিয়েছি, সেটিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম আছে। ‘ঢাকার ডায়েরি’ ছাড়াও অন্যান্য লেখা পরবর্তী পর্বগুলোতে ক্রমশ দেওয়া যেতে পারে, তবে পাঠকদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে কি না ভাবছি! মতামতের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

  7. ব্লাডি সিভিলিয়ান - ৭ মার্চ ২০১০ (১:৫৬ অপরাহ্ণ)

    [সাগিনা মাহাতো : হিন্দি ছবির অভিনেতা।]

    The info is erroneous. Sagina Mahato is a bi-lingual film (Bangla & Hindi) by Tapan Sinha. Originally, this was a novel by Gourokishor Ghosh. Tapan babu reeled it and Dilipkumar was the actor behind. Sagina Mahato was the name of the Leader of the Kuli’s (Kulir Sharadar) in that film. It was one of the three bangla films where Dilipkumar took part.
    Thanks.
    (Sorry for English)

    • মুয়িন পার্ভেজ - ৮ মার্চ ২০১০ (১:৩৫ পূর্বাহ্ণ)

      তথ্যভ্রান্তির জন্য আমি দুঃখিত। লেখার আগে অন্তত উইকিপিডিয়া-র পাতায় সাগিনা মাহাতো সম্পর্কে খোঁজ নিলে এ-স্খলন ঘটত না — হাতের কাছে উল্টোরথ থাকলে আবার মিলিয়ে নিতে পারতাম। আমার এ-তুচ্ছ রচনা যে আপনি খুঁটিয়ে পড়েছেন — এজন্য অনেক ধন্যবাদ। শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানবেন।

      • রেজাউল করিম সুমন - ৩০ মার্চ ২০১০ (৯:৫৯ অপরাহ্ণ)

        @ ব্লাডি সিভিলিয়ান

        গৌরকিশোর ঘোষের বিখ্যাত ছোটগল্প ‘সাগিনা মাহাতো’ অবলম্বনেই দিলীপকুমার অভিনীত একই নামের ছবিটি নির্মিত — এরকমই জানতাম। ওই নামে গৌরকিশোর যে একটি উপন্যাসও লিখেছিলেন সে-খবর জানা ছিল না। উইকিপিডিয়ার কল্যাণে আরো জানা গেল, পরে ছবিটি ‘সাগিনা’ নামে হিন্দিতে পুনর্নির্মিত হয়েছিল।

        দেশ পত্রিকায় ‘সাগিনা মাহাতো’ গল্পটি ছাপা হয়েছিল ১৯৫৮ সালের ১৮ জানুয়ারি তারিখে (৪ মাঘ ১৩৬৪, বর্ষ ২৫ সংখ্যা ১২)। কয়েক বছরের ব্যবধানে আজ আবার পড়লাম অসামান্য সেই গল্প। উপন্যাসটিও পড়তে চাই; কোন্ প্রকাশালয় থেকে ছাপা আছে জানা গেলে ভালো হতো।

        • ব্লাডি সিভিলিয়ান - ৩১ মার্চ ২০১০ (২:৩৪ অপরাহ্ণ)

          @ রে. ক. সুমন: দুঃখিত, ওটা আসলে ছোটগল্পই, উপন্যাস নয়। তথ্যভ্রান্তির দায় মাথা পেতে নিয়ে ‘ব্লাডি সিভিলিয়ান’-কে আগামী এক সপ্তাহ ধরে কোন পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত রাখা হল।

          • রেজাউল করিম সুমন - ৩১ মার্চ ২০১০ (৭:১৭ অপরাহ্ণ)

            @ ব্লাডি সিভিলিয়ান

            ধন্যবাদ। এখন বুঝতে পারছি যে ওটা ছিল আপনার কলম-পিছল ভুল। আমাদের সংশয় দূর হলো — এটাই এক্ষেত্রে বড়ো প্রাপ্তি। আপনার এই আত্মবিরতিকরণের সিদ্ধান্তে সায় দিতে পারছি না। আশা করি নতুন কিছু লিখবেন শিগগিরই।

  8. রায়হান রশিদ - ৯ মার্চ ২০১০ (৭:৫১ পূর্বাহ্ণ)

    কয়েকটি মন্তব্যের উইট তো রীতিমতো অসামান্য। কয়েকবার করে পড়লাম। মিসেস সিংহ সত্যিই ‘মিছরির বয়াম’। অনেক ধন্যবাদ মুয়িন। আপনি না লিখলে কোনদিন জানা হোতো না।
    [প্রসঙ্গত, উইট (wit) এর ভাল বাংলা কি? আপনার জানা আছে?]

    • মুয়িন পার্ভেজ - ৯ মার্চ ২০১০ (১১:২৩ পূর্বাহ্ণ)

      শৈলেন্দ্র বিশ্বাস-সঙ্কলিত সংসদ্ বাঙ্গালা অভিধান-এ ‘পরিশিষ্ট খ’-তে সংযোজিত ‘পারিভাষিক শব্দাবলী’র তালিকায় ‘wit’-এর বাংলা মানে দেওয়া হয়েছে : ‘রসিকতা’ (চতুর্থ সংস্করণ, ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪, সাহিত্য সংসদ্, কলকাতা, পৃ. ৮১০)। একটি অনলাইন অভিধানে লেখা আছে :

      wit 1 [উইট্] n ১ (sing বা pl) বুদ্ধি; বোধশক্তি; মানসিক ক্ষিপ্রতা: He never loses his wits in an emergency. at one’s wit’s end হতবুদ্ধি, হতভম্ব। out of one’s wits অত্যন্ত বিচলিত বা বিপর্যস্ত; বিভ্রান্ত; উন্মাদ, পাগল: You’ll drive me out of my wits if you go on behaving in this way. have a ready wit চট করে চাতুর্যপূর্ণ ও রসালো মন্তব্য করতে পারা। have/ keep one’s wits about one কী ঘটছে তা চট করে বুঝতে পারা এবং সজাগ ও কর্মতৎপর থাকা। live by one’s wits চতুর এবং সর্বদা সৎ নয় এমন সব পন্থা অবলম্বন করে জীবিকা অর্জন করা; বুদ্ধি ভাঙিয়ে খাওয়া। ২ [U] রসময় ও চাতুর্যপূর্ণ অভিব্যক্তি; রসিকতা; প্রাণময়তা, উচ্ছলতা: His conversation is full of wit. ৩ রসিক ব্যক্তি। witty adj রসিক, রসালো: a ~ tyremark; a ~ ty person.

      ‘wit’-এর বিচিত্র অর্থন্যাস ঘটেছে বাংলায়, আমি সাধারণভাবে ‘রসিকতা’ বেছে নিচ্ছি। দ্বিতীয় অভিধানটি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু লেখা নেই, তবে রায়হান রশিদকে ধন্যবাদ এজন্যও যে তাঁর প্রণোদনায় কয়েকটি অনলাইন অভিধান খুঁজে দেখা হল। আমার মতো বইকুণ্ঠ মানুষের অনেক কাজে আসবে এ-অভিধানগুচ্ছ।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.