ট্র্যাডিশনাল বিয়ের কান্না

বিয়ের সময় কান্নাকাটি করা আমাদের দেশের মেয়েদের এবং মেয়ের মায়েদের যেনো একটি অবশ্যই করনীয় প্রথা। যেকোন পরিস্থিতিতে, যেভাবেই বিয়ে হোক না কেন, কান্নাকাটি যেনো বিয়ের একটি আবশ্যিক আচার [....]

বিয়ের সময় কান্নাকাটি করা আমাদের দেশের মেয়েদের এবং মেয়ের মায়েদের যেনো একটি অবশ্যই করনীয় প্রথা। যেকোন পরিস্থিতিতে, যেভাবেই বিয়ে হোক না কেন, কান্নাকাটি যেনো বিয়ের একটি আবশ্যিক আচার। সমাজে শত শত বছর ধরে এ আচারটি বহমান, কিন্তু কেনো? সামাজিকভাবে মেয়েরা দুর্বল আছে এবং থাকবে সেটাকে টিকিয়ে রাখার জন্যই কি? একটি ছেলে হাসি মুখে গর্বিত ভঙ্গীতে বিয়ে করে একটি ক্রন্দনরতা মেয়েকে নিয়ে নিজের বাড়ি যায়। এই ব্যাপারটা সমাজে ক্ষমতাবান ছেলে আর দুর্বল মেয়েদের অবস্থানের একটা বাস্তব প্রতিফলন। মেয়েদেরকে হাস্যকরভাবে দুবর্ল প্রমান করার একটি চিরাচরিত ও সযত্নে লালিত কায়দা। নতুন জীবন শুরু করার আগেই কাঁদিয়ে মানসিক শক্তি ভেঙ্গে দেয়া হয় যাতে স্বামীর ঘরে আর নিজের দাবী প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে। এমনকি অনেক সময় কোন মেয়ে কতোটুকু কাঁদল, কিভাবে কাঁদল সেটাও মার্ক করে তার ওপরে রেটিং করা হয়। মেয়েটার কলিজা কতোটুকু পাত্থর কিংবা কতোটুকু মায়াধরা তার একটা প্রাথমিক এসেস হয় এটা থেকে। সুতরাং কনে বেচারীর কান্নাকাটির বেষ্ট পার্ফমেন্স দেয়া ছাড়াতো উপায় নেই, মনে যাইই থাক না কেনো। আজকাল কনে সাজানোর বিউটি পার্লার গুলোও এ ব্যাপারে সর্তকতা অবলম্বন করে, ওয়াটার প্রুফ মাশকারা, আইলাইনার ইত্যাদি মেকআপ ইউজ করেন, কতোটুকু মেকাপ দেয়া হয়েছে, কতোটুকু কান্নাকাটি এ্যালাউড বলে দেন, যাতে পরবর্তীতে ভিডিওটা ঠিক ঠিক আসে, ভূতনী না দেখায়।

কোন মেয়ের হয়তো বহু দিন বিয়ে হচ্ছে না, বিয়ের জন্য অনেক চেষ্টা করছেন মা – বাবা, শাপ শাপান্ত করে অলক্ষী বলে গালি দিচ্ছেন, তারপর হয়তো অনেক সৃষ্ঠে বিয়ে ঠিক হলো, তারপর যেই না কাজী সাহেব খাতা খুলে বসলেন সাথে সাথেই বাবা – মায়ের যৌথ বিলাপের ধ্বনিতে পাড়া মুখরিত হবে। কেউ বা প্রেম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার উপক্রম করছে, ধরে বেঁধে শেষ কালে মতান্তরে বিয়ে দিচ্ছে, এরমধ্যে কয়েক পশলা ঘরে আটকে রাখা, মারধোর হয়ে গেছে, কিন্তু আবার সেই একই নাটকের পুনরাবৃত্তি, কাজী সাহেব যখনি বলবেন বলো মা কবুল, আরম্ভ হবে মায়ে – ঝিয়ের যুগল বন্দী। এধরনের বহু ঘটনা হরহামেশাই ঘটে থাকে। কষ্টের জন্য কান্নার চেয়েও লৌকিকতার জন্য কাঁদা হয় বেশি। পাছে লোকে কি ভাবে সেই চিন্তায় ভারতীয় উপমহাদেশের লোকেরা ভীষন দুর্বল। আর সেই সুযোগই কাজে লাগান অন্যেরা। কেউ কেউ আবার বিয়ে ঠিক হলে আয়নার সামনে দাড়িয়ে প্র্যাক্টিস করে নেন কিভাবে কাঁদলে ভালো দেখাবে, সুইট লাগবে। অনেকে গর্বও করেন বিয়ে ঠিক হয়েছে পর থেকে বিয়ে হওয়া পর্যন্ত কেঁদেছি।

আগের দিনে কিশোরী বয়সে বিয়ে হতো, তারও আগে শিশু বয়সে। সে বয়সের বাচ্চা মেয়েরা অচেনা পরিবেশে অচেনা লোকের সাথে থাকতে হবে, কি ধরনের জীবন হবে তা নিয়ে ভয় পেতেন। বহুদিন বাবার বাড়ি আসতে পারবেন না, প্রিয় অনেক কিছুকে হারিয়ে ফেলবেন ভেবে হয়তো কাঁদতেন। কিন্তু আজকের পরিস্থিতিতো তার চেয়ে অনেক আলাদা। অনেক কিছুই বদলেছে দেশে। মেয়েরা পড়াশোনার জন্য প্রশান্ত-আটলান্টিক পাড়ি দিচ্ছেন একা। নিজের পছন্দমতো জীবনসঙ্গী বেছে নিচ্ছেন। অকারন অনেক কুসংস্কার, লৌকিকতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছেন। পোষাক বদলেছেন, জীবন যাপনের পদ্ধতিও বদলেছেন, দেশের অর্থনীতিতে স্বাবলম্বী ভূমিকা রাখছেন। দেশে সিনেমা হচ্ছে বাস্তবমুখী, গান হচ্ছে। তাই আজ আশা রাখা যায় মেয়েরাও লোক দেখানো ভড়ং থেকে বের হয়ে আসবেন, শুধু মাত্র অপ্রয়োজনে, সামাজিকতার জন্য নিজেকে বলি দেয়া বন্ধ করে, যা বাস্তব, শোভন তাই করবেন। যুগ যুগ ধরে চলে এসেছে বলে বিনা প্রয়োজনে অনেক কিছু আরো যুগ যুগ না টানাই ভালো।

বলছি আজ শোন মেয়েরা, নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিজেদেরকে লড়তে হবে। কেঁদে কেটে কিছু আদায় হয়নি এই পৃথিবীতে, হবেও না। সংগ্রামের মাধ্যমেই আগেও হয়েছে, ভবিষ্যতেও তাই হবে। তাই আর কেঁদে নিজেকে দুর্বল করো না বা কাউকে দুর্বল ভাবার সুযোগ দিও না। এগিয়ে যাও দৃঢ় পায়ে। নতুন জীবনের শুরু হোক শক্ত পায়ে, হাসি মুখে, হাতে হাত রেখে। অশ্রুসজল, ভীরু, কুন্ঠিত ভাবে আর নয়। পরিবর্তনের জন্য আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে, সুন্দর আগামীর সূচনা হোক আমাদেরই দ্বারা। অধিকার বুঝে নিতে হয়, এটা এক ধরনের অনুশীলন, অধিকার কেউ কাউকে এগিয়ে এসে দিয়ে যায় না।

তানবীরা
মূল ভাবটি লেখা ছিল ০৬.১২.০৮
পরিশোধিত ১০.০২. ২০১০

তানবীরা

আমি নিজেকে কোনদিন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভাবিনি, মনের ভুলেও না। কখনো কখনো মনে হয়েছিলো যে আমার প্রয়োজন রয়েছে, এইমাত্র।

১০ comments

  1. মোহাম্মদ মুনিম - ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ)

    আমি যদ্দুর জানি মেয়েরা এতদিনের বাপের বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে সেই দুঃখে কাঁদে। মেয়ের মা, বাবাও মেয়ে চলে যাবে এই দুঃখে কাঁদেন। এই দুই ধরনের কান্নার মধ্যেই আমি কোন সমস্যা দেখি না। বিশেষ করে মায়েরা তো নানা কারণেই কাঁদেন, ছেলে বা মেয়ে শহরে পড়াশোনা করতে গেলে কাঁদেন, বিদেশে গেলে কাঁদেন। শুধু বাংলাদেশের মায়েরাই নন, মার্কিন মায়েরাও ছেলে বা মেয়ে কলেজে গেলে বা যুদ্ধে গেলে কাঁদেন। লোকে তো শুধু ভয় পেয়ে কাঁদে না, ভালবেসেও কাঁদে, আপনি বিয়ের এই কান্নার মধ্যে এত সমস্যা দেখছেন কেন ঠিক বুঝতে পারছি না। ট্রাডিশন বলে তো একটা ব্যাপার আছে, সেটাকে খানিকটা সম্মান দেখিয়ে মেয়েরা যদি খানিকটা ঢং করেই কাঁদে, তাতে সমস্যা কি?

    • তানবীরা - ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৬:০৬ পূর্বাহ্ণ)

      ট্রাডিশন বলে তো একটা ব্যাপার আছে, সেটাকে খানিকটা সম্মান দেখিয়ে মেয়েরা যদি খানিকটা ঢং করেই কাঁদে, তাতে সমস্যা কি?

      এটাই আমার সমস্যা।

      মার্কিন মুল্লুকের কথা যখন তুললেন সেটাই বলেন, বিয়ের দিনে মেয়েটি সবচেয়ে আহ্লাদী আর ঢংগী থাকে বটে কিন্তু তার ফরম্যাট থাকে সম্পূর্ন ভিন্ন, নাকি আমি ভুল বললাম?

  2. বিনয়ভূষণ ধর - ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ)

    @তানবীরা!
    আপনার পোষ্টখানার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি কিন্তু আলোচনা বা মন্তব্য করার জন্যে বিষয়বস্তুটি আমার কাছে অতি দুর্বল মনে হয়েছে। সে কারণে আমি এখানে কোনধরনের মন্তব্য করা থেকে নিজেকে বিরত রাখলাম। আপনার প্রতি আমার অনেক শুভেচ্ছা রইলো…

    • তানবীরা - ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৪:১৮ পূর্বাহ্ণ)

      আপনার “জেনারেস” মন্তব্যের জন্য আপনিও আমার ধন্যবাদ জানবেন। মুক্তাগংনে ব্লগ পোষ্ট করার সময় পরবর্তীতে বিষয়টি মাথায় রাখার চেষ্টা করবো।

  3. রেজওয়ান - ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৫:২৮ অপরাহ্ণ)

    “অধিকার বুঝে নিতে হয়, এটা এক ধরনের অনুশীলন, অধিকার কেউ কাউকে এগিয়ে এসে দিয়ে যায় না।”
    —এইটা একটা জটিল লাইন। ভালো লাগছে।

    • তানবীরা - ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৬:১৬ পূর্বাহ্ণ)

      ধন্যবাদ রেজওয়ানকে ভালোলাগাটুকু প্রকাশ করার জন্য।

  4. রেজাউল করিম সুমন - ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (১০:১৫ পূর্বাহ্ণ)

    মাসখানেক আগের কথা। এক বিয়ের নিমন্ত্রণে গেছি। বর-কনে দুজনই আমাদের পরিচিত, দুজনেরই অনুরোধ আনুষ্ঠানিকতার শেষ মুহূর্ত পযর্ন্ত তাদের সঙ্গে থাকতে হবে। রাত বারোটা বেজে যাওয়ায় ও ভাড়া-করে-আনা বাস্-এর ড্রাইভার দেরি দেখে বাস্‌ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় উপসংহারের সামান্য আগেই আমরা নিষ্কৃতি পেয়ে গেলাম! অন্য একটা বাস্ খুঁজে নেওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়া গেল। তা নাহলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে-রাতে দেখতেই হতো পরম্পরাবাহিত বিয়ের কান্না।

    কথায় কথায় এক অগ্রজ সেদিন জানিয়েছিলেন, বিয়ের সময়ে তাঁর ছোটবোন কাঁদেনি, আর সে-কারণে তাঁর মাকে ও বোনকে না কি আত্মীয়াদের গঞ্জনা শুনতে হয় এখনো!

    • তানবীরা - ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৬:৩০ পূর্বাহ্ণ)

      আমার নিজেও এধরনের অভিজ্ঞতার কথা শুনেছি পরিচিতদের মুখে। কান্নার পরিমান দিয়ে মেয়ের প্রতি পিতা মাতার আন্তরিকতা মাপা হয়, অনেক ক্ষেত্রে সমাজে স্ট্যাটাসের কাজও করে বলে শুনেছি।

      ধন্যবাদ সুমনকে ঘটনাটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্যে।

  5. জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ আরিফ - ২ মার্চ ২০১০ (১১:০৭ পূর্বাহ্ণ)

    নিজের পছন্দে হোক আর অভিভাবকদের পছন্দেই হোক আজো অন্ততঃ বাংলাদেশে একটা মেয়ের যখন বিয়ে হয় তখন সে অনিশ্চয়তার পথেই পা বাড়ায়। এতদিনের জানা প্রেমিকপ্রবরটিও স্বামী হিসেবে কেমন হবে তা কিন্তু একেবারেই অজানা। প্রাক্তন প্রেমিক কাম বর্তমান স্বামীর হাতে বধূ খুন হওয়া বা যৌতুকের জন্য নির্যাতিত হওয়া এ’দেশে একেবারে ডাল-ভাত ব্যাপার। খবরের কাগজ খুললেই এর স্বাক্ষ্য মেলে। সুতরাং মেয়েটার দিক থেকে কান্নাকাটি করার যথেষ্ঠ যৌক্তিক কারণ আছে। এমনকি পালিয়ে যাওয়ার পথে ধরা খাওয়া জুটিকে বিয়ের পিঁড়িতে বসানোর সময়ও মেয়েটার এই অনুধাবন হতে পারে।

    বাড়ী ছাড়তে হয় মেয়েটাকেই। নিজের চেনা গণ্ডি, নিজের করে গড়ে তোলা এতদিনের সবকিছুই ছেড়ে যেতে হয়। পুরনো ভাড়া বাসা ছেড়ে যেতেই মন খারাপ হয় আর এতো নিজের সবকিছু ছেড়ে যাওয়া। আর তাতে মন খারাপ হবে না?

    যে প্রেক্ষিতেই বিয়ে হোক না কেন বাবা-মায়ের কাঁদাটাই স্বাভাবিক। বাবা-মা দূরস্থান, আমার নিজের ছোটবোনের বিয়ে যখন ঠিক হল তখন সেকথা ভাবতে আমারই কাঁদতে ইচ্ছে করত। বিয়ের যোগাড়-যন্ত্র কীভাবে করব, খুব ছোটবেলায় বাবা-হারা বোনকে তার সাধ মত আয়োজন করে বিয়ে দিতে পারব কিনা এসব চিন্তা মাথায় কম আসত। মাথায় বার বার শুধু আসত “আহা, আমার বোনটা ভাল থাকবে তো? আদরে-সম্মানে থাকবে তো”? অথচ পাত্র তার নিজের পছন্দের, পাত্রকে বা তার পরিবারকেও আমরা ভালোভাবে জানি। বোনের বিয়ের দিন আমার অন্য ভাই-বোনের চেয়েও আমি বেশি কেঁদেছি। পরে আমার মনে হয়েছে, আমার নিজের মেয়ে থাকলে তার বিয়েতে আমার কী অবস্থা হত!

    শিক্ষিত হোক, অর্থনৈতিক স্বাবলম্বন অর্জন করুক আর ক্ষমতার ভাগই পাক সার্বিক বিচারে নারীর ক্ষমতায়ণ নিশ্চিত হয়নি আজো। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বন তাকে অনেক ঝামেলা আর অপমান থেকে মুক্তি দিয়েছে ঠিকই কিন্তু তার ক্ষমতায়ণকে নিশ্চিত করেনি। পিতা-মাতার পরিবার কন্যাকে যতটুকু স্বাধীনতা দেয়, স্বামীর সংসার তার কমই নিশ্চিত করে। আপাতঃদৃষ্টিতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে গতিশীলতা বাড়লেও আখেরে স্বাধীনতা সেখানে সীমাবদ্ধই থাকে।

    এইসব বিবেচনায় মেয়ে বিয়ের সময় যদি কাঁদে তাহলে তা ঠিকই আছে। এমনকি না বুঝে কাঁদলেও ঠিক আছে। আসলেই তার একা কান্নার দিনতো সবে শুরু হল।

    কে কত কম কাঁদলো, বা একেবারেই কাঁদলোনা সেই আলোচনাই অরূচিকর। দুর্ভাগ্যবশতঃ অমন অরূচিকর আলোচনাই আমাদের কাছে বেশি উপাদেয় লাগে।

    তাহলে বিয়েটা কি মেয়েদের জন্য আনন্দ বা গর্বের বিষয় নয়? অবশ্যই তা মেয়েদের জন্যও আনন্দ বা গর্বের বিষয়। সেটার প্রকাশও কিন্তু দেখা যায়। খালি বিদায় কালের কান্নাটা না দেখে তার আগে-পরের দৃশ্যগুলোও দেখুন। তাহলে সেটাও দেখতে পাবেন।

    পোষ্টের বিষয়, ভাষা, প্রকাশভঙ্গী সর্বোপরি বিশ্লেষণ ভালো লেগেছে।

    • তানবীরা - ৬ মার্চ ২০১০ (৫:৩১ পূর্বাহ্ণ)

      আমার লেখায় আপনার মন্তব্য পাওয়াকে আমি সব সময় সম্মান হিসেবে দেখি। অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার মন্তব্যের সাথে আজ আমি দ্বিমত প্রকাশ করলাম।

      আপনি যৌতুকের কারন, বাড়ি ছাড়ার কারন, খুন হওয়ার কারন যেগুলো উল্লেখ করেছেন তাতে কি কান্নাকাটি করে কেউ রেহাই পেয়েছেন? আমার বিশ্বাস কান্নাকাটি এসব কারনকে সামনে এগোতে আরো প্ররোচিত করে। দুর্বলতা দেখিয়ে কি পার পাওয়া যাবে? নাকি দুর্বল মূহুর্তে কেঁদে কোন লাভ হয়? তাই আমার কাছে কাঁদলে ঠিক নেই।

      আর স্বাধীনতা দেয়ার জিনিস নয়, আদায় করে নেয়ার জিনিস। সে স্বামীর ঘরই হোক আর নিজের ঘরই হোক।

      আর আবেগের ব্যপারটা ভিন্ন। আমি নিজে মা বাবাকে ছেড়ে এসেছি, আবার মেয়ের মা হয়েছি। কিন্তু কেঁদে এই সমস্যার সমাধান আনতে পারবো না, সেটার জন্য এখন থেকেই মনকে প্রস্তূত করছি। নিজেও যদি আবেগী তবুও জানি আবেগকে নিয়ন্ত্রনে রাখাই সফল হওয়ার উপায়।

      আমি কিন্তু কখনোই বলিনি বিয়ে ব্যাপারটা মেয়েরা উপভোগ করে না। নতুন শাড়ি, গয়না, হলুদ – মেহেদীর গন্ধে উতলা হয় না এমন মেয়ে বিরল। তাইতো কান্নাকাটিটা আজকাল লোক দেখানো মনে হয়।

      ধন্যবাদ আবারো।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.