ইতিমধ্যে একটি বেসরকারী প্রস্তাব পাশ হয়েছে, জাতীয় সংসদে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের গণদাবিকে আইনি প্রক্রিয়ায় নিয়ে এসে, বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তাব ছিল এটি। এই প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়। জনাব দেলোয়ার সাহেব বিএনপি'র একজন বর্ষীয়ান নেতা। তিনি একজন আইনজীবীও বটে। তবে নন প্র্যাকটিসিং। সাংবাদিকরা যখন তাঁর আরমানিটোলার বাসায় যান, তাঁদের সাথে আলাপকালে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে বলেন, নীতিগতভাবে তিনি নাকি একমত। বিচারের বিষয়ে। তবে তিনি বলে দিয়েছেন, তাঁকে আরও দেখতে হবে, রাজনৈতিকভাবে বিচার হচ্ছে নাকি সত্যিকার বিচার হচ্ছে। তাহলেই কেবল তিনি সাংবাদিকদের কাছে খুলে বলতে পারবেন, তাঁদের দলের প্রতিক্রিয়া কী হবে। জন্মাবধি দেলোয়ার সাহেবেদের কোলে-পিঠে, ডানে-বাঁয়ে সর্বত্র রাজাকার। ফলে প্র...তি...ক্রি...য়া দিতে সময় তো লাগবেই! ৩৭ বছর পার হয়ে গেল এদেশ স্বাধীন হয়েছে। ৩০ বছরের উপরে হয়ে গেল বিএনপি'র জন্ম হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে একটা অফিসিয়াল প্রতিক্রিয়া দেলোয়ার সাহেবরা এখনো তৈরি করে উঠতে পারলেন না। তাঁর বাসভবনের ঐ আলাপে আরো বলছেন তিনি, আওয়ামী লীগ যুদ্ধের পরে ক্ষমতায় ছিলো এবং '৯৬ সালে ক্ষমতায় ছিলো। তারা তখন যে কেন বিচার করতে পারেনি, তা তাঁর বোধগম্য নয়। এই কথা বলার নৈতিক অধিকার দেলোয়ার সাহেবদের আছে কি না, তা কিন্তু তাঁরা একবারও ভাবেন না। "স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া বলে" -- মুখে ফেনা তুলে, যখন শহীদ মিনারে-স্মৃতিসৌধে ফুল দেয়ার মিছিলে শামিল হন, তখন কি কোনোদিনও মনে হয়নি যে, যাঁদের কাছে এই ফুল নিয়ে যান বা গিয়েছিলেন, তাঁদের স্বপ্নের বাংলাদেশে বসে আপনারা রাজাকার তোষণ করে চলেছেন, যুগের পর যুগ? কোনো অপরাধবোধ কি আপনাদের তাড়া করে ফেরে না? এদেশের ঘাতক-দালালদের বিচারটা তো আওয়ামী লীগের একার কোনো বিষয় ছিল না। আওয়ামী লীগ বিচার করেনি, এই কথা সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা বলতে পারি, অভিযোগ তুলতে পারি। আপনি কি পারেন? বিচার আপনারা করেছেন? আপনারা বিচার চান? নীতিগতভাবে একমত!! আপনাদের নীতিটা কী আসলে? খুব জানতে ইচ্ছে করে! আপনার সরকারের রাজাকার-শিরোমণি নিজামী প্রায়ই বলতেন, 'বাংলা ভাই ইংরেজি ভাই বলে কেউ নেই। পত্রিকাওয়ালারা এগুলো সৃষ্টি করেছে।' গোটা জঙ্গিবাদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা আপনারা দিয়েছেন। না হলে, উদীচী থেকে শুরু করে রমনায় নববর্ষের উৎসব, পল্টনের জনসভা হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ'র জনসভা, এই সব জায়গায় বোমা গ্রেনেড হামলা হলো, অথচ, বিএনপি-জামাতের কোনো মিটিংয়ে…
সম্প্রতি টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক আর্টিকেলের বরাতে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধকালীন ব্রিটেন আসলে 'ইউনাইটেড পাকিস্তান' ভাঙ্গার বিরূদ্ধে সক্রিয় ছিলো! যেই যুক্তরাজ্য আজ ভদ্র দেশ সাজতে চায়, সেই বেনিয়া সাম্রাজ্যবাদী দেশ বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীকে ঘুষ পর্যন্ত সেধেছিলো। তিনি উল্টো ইন্দিরা গান্ধীকে ইঙ্গ-মার্কিন অভিসন্ধি জানিয়ে দেন, এমনকি ইন্দিরাকে বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য চাপও দেন। শঙ্কর এস. ব্যানার্জীর রচিত "A Long Journey Together: India, Pakistan and Bangladesh" বইটিতে তৎকালীন নিক্সন প্রশাসনের ঘৃন্য কর্মকান্ডের হাঁড়ি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যে প্রেরিত মার্কিন রাষ্ট্রদুত চৌধূরীকে 'ইউনাইটেড পাকিস্তানে'র রাষ্ট্রপতি করার প্রস্তাবও দিয়েছিলে্ন। মার্কিনীরা যে কতটা নোংরা কুটনীতি করতে পারে এটা তার জ্বলন্ত নমুনা। সাম্প্রাদায়িকতার বিষ আসলে আসে এই ইঙ্গ-মার্কিন থলে থেকে। তখনও সেই রাষ্ট্রদুত বিচারপতি সাঈদকে ভুমভাম দেয়ার চেষ্টা করেন এই বলে, 'হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত দ্বারা প্রবেষ্টিত নতুন বাঙলাদেশ কোনভাবেই টিকবে না'। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলেক ডগলাস ও একই বুলি কপচিয়ে গেছে। দুরদর্শী বিচারপতি সাঈদ ইন্দিরা গান্ধীকে চাপ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য, যার সুফল আমরা পেয়েছি। তাঁর আরেকটি দুরদর্শীতার স্বাক্ষর আমরা দেখতে পাই বঙ্গবন্ধু যখন লন্ডনে, দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরবেন, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে বোমা পেতে রাখা হতে পারে সন্দেহে তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকেই এয়ারফোর্সের একটি বিমানে করে সদ্য মুক্ত শেখ মুজিবকে প্রথমে দিল্লি, পরে ঢাকায় লিফট দেবার অনুরোধ করেন। It was a move with a motive! টাইমস অব ইন্ডিয়া ও বিডি নিউজ অবলম্বনে
প্রায় নিঃশব্দেই আমাদের দেশের লোকজ চিন্তাতত্ত্ব অষ্টাদশ শতাব্দীতে বিকাশের সোপানশীর্ষে ওঠে। তখন একদিকে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসন চলছে এবং ওই শাসনপ্রক্রিয়ার সঙ্গে কোনও মুখোমুখি বিরোধিতায় না গিয়ে বাঙালির মনন আধুনিক করে তোলার কাজ করে চলেছেন রামমোহন (১৭৭২-১৮৩৩), রাধাকান্ত দেব (১৭৮৩-১৮৬৭), ডিরোজিও (১৮০৯-১৮৩১), বিদ্যাসাগর (১৮২০-১৮৯১), মধুসূদন (১৮২৪-১৮৭৩), বঙ্কিমচন্দ্র (১৮৩৮-১৮৯৪) প্রমুখ চিন্তার জগতে আলোড়ন তোলা নিবেদিতপ্রাণ মানুষেরা। এর অন্যদিকে সাধারণ জনতার বিক্ষুব্ধ মনোজগত আপাতচোখে হঠাৎ হলেও মূলত দীর্ঘ বঞ্চণার পথ বেয়ে প্রকাশ পেয়েছিল সিপাহী মঙ্গল পাণ্ডের প্রতিবাদ থেকে সৃষ্ট সর্বস্তর ছুঁয়ে যাওয়া ১৮৫৭-এর মহাবিদ্রোহের মাধ্যমে। (more…)
জামাতে ইসলামী ভূত দেখছে,- সত্তরের নির্বাচনের ভূত! তাদের কাছে মনে হচ্ছে এবারের নির্বাচন হবে সত্তরের নির্বাচনের মতো, তাদের ভাষায় যা ‘একতরফা’; তাদের ভাষায়, যে-নির্বাচনে ‘আওয়ামী লীগ জোর করে ভোট আদায় করেছিল।’ এবারের নির্বাচন কেমন হবে? সত্তরের নির্বাচনটি যদি বুঝতে পারি, তা হলে সেটি বোঝা বোধকরি আরও সহজ হবে। আর তা বুঝতে হলে খানিকক্ষণের জন্যে ইতিহাসের পাশে দাঁড়াতে হবে, বিশেষ করে তাদের যারা সত্তরের নির্বাচন চোখে দেখেননি। (more…)
সাধারনতঃ আমরা নিচের বক্তব্যগুলি শুনে থাকি দেশপ্রেমিকদের কাছ থেকে... ১. আমি বাংলাদেশ ভালবাসি ২. আমি স্বাধীনতার পক্ষের নাগরিক ৩. আমি মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথায় আবেগাপ্লুত হই (more…)