আমাদের বক্তব্য আসলে কি?

সাধারনতঃ আমরা নিচের বক্তব্যগুলি শুনে থাকি দেশপ্রেমিকদের কাছ থেকে…

১. আমি বাংলাদেশ ভালবাসি
২. আমি স্বাধীনতার পক্ষের নাগরিক
৩. আমি মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথায় আবেগাপ্লুত হই
৪. আমি তাই পাকিস্তানীদের ঘৃণা করি
৫. পাকিস্তানীদের দোসর রাজাকার/আলবদরদের এখনো ঘৃণা করি।
৬. নতুন প্রজন্মের রাজাকারদের ও আমি সমান ঘৃণা করি।

প্রাসঙ্গিক কয়েকটা প্রশ্ন মাথায় এলো…

১. আমরা কি তাহলে জামায়াত/অন্যান্য ধর্মভিত্তিক দলের রাজনীতি ‘সমর্থন’ করি?
২. শরিয়া আইন চালু করার যে কর্মসূচী এই দলগুলির আছে তাতে কি আমরা সহমত?
৩. বাঙালী সংস্কৃতি/কৃষ্টি/কালচার ধ্বংস করার যে অপচেষ্টায় এরা লিপ্ত তাতে কি আমরা আনন্দিত?
৪. দেশের সংবিধন সন্মত যে সকল বিচারিক আইন আছে, সেগুলি কি ‘তাগুত’ (?) বলে মনে করি?
৫. আমরা কি মাদ্রাসা শিক্ষাকে মূলধারা শিক্ষার সমতুল্য মনে করি?

যদি উপরোক্ত প্রশ্নগুলির উত্তর ‘না’ বাচক হয়, তবে উপরোক্ত রাজাকার > ধর্ম-রাজনীতিকদের শক্তিশালী কর্মকান্ড প্রতিহত করার ব্যাপারে কি করেছি?

১. আমরা মুক্তিযোদ্ধার লাঞ্ছিত হওয়ার বিচার করি নাই
২. আমরা বাউল ভাষ্কর্য পুনঃস্থাপিত করতে পারি নাই (আন্দোলন মাঝপথেই চুপসে গেছে, বরাবরের মতোই)
৩. আমরা রসবোধ/ব্যঙ্গ করার অধিকার সংরক্ষণ করতে পারি নাই। (আলপিন বন্ধ হয়েছে, সরকারী আদেশে)
৪. আমরা নারীনীতি সংশোধনের দায়িত্ব দিয়েছি ধর্ম-রাজনীতি/ব্যাবসায়ীদের হাতে
৫. জামায়াতে ইসলামী ঠিকই নিবন্ধিত হচ্ছে,

আরো কতো শত ব্যর্থতা . . .

এরই ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে কি কি হারাতে পারি আমরা…

১. অপরাজেয় বাংলা সহ দেশের আর সব ভাষ্কর্য
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে ছাত্র/ছাত্রীদের আলাদা ক্লাস/ আলাদা বাস
৩.
৪.
৫.

উপরের তালিকা অনেক লম্বা হতে পারে…।

আমরা কেন এই তালিকা লম্বা হতে দেবো?

৩ comments

  1. আরিফুর রহমান - ৩০ অক্টোবর ২০০৮ (১:১৮ অপরাহ্ণ)

    সত্য মিথ্যা জানি না, রমনা বটমূলের নিকটে মসজিদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে?

  2. সৈকত আচার্য - ৩০ অক্টোবর ২০০৮ (৬:৪৮ অপরাহ্ণ)

    এই সমস্যাটা প্রধানতঃ একটি রাজনৈতিক সমস্যা। প্রগতিবাদী রাজনৈতিক দলসমূহের ভূমিকা এখানে সবচেয়ে বেশী। যারা প্রগতিশীল দল করেন এবং একটি ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন তারা নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছেন, বড় দলগুলো যারা প্রগতির পক্ষে, তারা যেন উলটা পথে চলছে দীর্ঘদিন ধরে। সমমনা ছোট ছোট সেক্যুলার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তাদের উঠা বসা তেমন নাই কারন, শোনা যায়, তারা ঘরোয়া বৈঠকগুলোতে এই সব দলের সাথে ভাল ব্যবহার করেন না। নির্বাচন এলে আসন বরাদ্ধ নিয়ে রাজনৈতিক সংকীর্নতার উর্দ্ধে উঠতে পারেননা। কোন একটা আসন ছেড়ে দেয়ার কথা আসলে এমন চেঁচামেচি-চিৎকার শুরু করে দেন এরা তাতে করে শত্রু মিত্র কে তার কোন হিতাহিত জ্ঞান থাকে না এদের। ছোট দলগুলো রীতিমত অসহায় বোধ করেন, এদের সাথে কোন রাজনৈতিক আলোচনায় বসলে।

    আমার এক রাজনীতি করা বন্ধু কথা বলেন এভাবেঃ
    “নির্বাচনে জিততে চাই। যে কোন কিছুর বিনিময়ে। তারপর দেখা যাবে। ক্ষমতা হাতে না থাকলে মৌলবাদ বলেন আর সামরিক স্বৈরাচার বলেন এগুলোর বিরূদ্ধে লড়াইয়ে জিতবেন কেমনে মিয়া? রাষ্ট্র ক্ষমতা হইল আসল। যখনই বিরুদ্ধ কোন মত অসহ্য হইয়া যাইব, ইশারা দিলেই সাইজ হইয়া যাইব। বুঝলা মিয়া? এই বন্ধু মনে করেন, এরশাদ নামক বিষধর সাপের সাথে জোট না করতে পারলে বি এন পি কে সাইজ করা যাবে না এবং ধর্মবাদী দগুলোকে আপাততঃ নিউট্রাল করা না গেলে বি এন পি-জামাত কে ফাইট করা যাবে না।”

    আমার কিন্ত এই কথাগুলো শুনে মনে কোন আশাবাদ জাগে না। মনে হয় এই সব আদর্শিক জায়গা গুলো ছেড়ে দিয়ে তারা আজকে যা অর্জন করার স্বপ্ন দেখছে, তার সবই ঝুটা হ্যায়! এগুলি তাদের নেতাদের কাছ থেকে শোনা এবং শেখা বুলি। নিজের বুদ্ধি ও বিবেক ভাঙ্গিয়ে এই বন্ধু সেগুলি পরখ করে দেখেনি। বাস্তবতার কষ্টিপাথরে এবং সময়ের নিরিখে এগুলি বিচার করে দেখেনি।

  3. ইমতিয়ার - ১ নভেম্বর ২০০৮ (৯:৫৭ অপরাহ্ণ)

    এই তালিকা লম্বা হতে থাকে, কেননা আমরা নাচতে নেমে ঘোমটা দিতে জানি।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.