...তলিয়ে দেখা হচ্ছে না, একজন হিন্দুর সাংস্কৃতিক জীবনের সাংস্কৃতিক উপাদানের কোনটা হিন্দুধর্মীয় আর কোনটা লোকায়ত। এরা বুঝতে নারাজ, লোকায়ত সংস্কৃতি সব ধর্মের মানুষের সর্বজনীন উত্তরাধিকার। আর ভারতবর্ষে হিন্দুর নামে প্রচলিত সংস্কৃতির বেশির ভাগই হিন্দুধর্মজাত নয়, যেমন আরববিশ্বে মুসলমানদের নামে প্রচলিত সংস্কৃতির অধিকাংশই ইসলামধর্মজাত নয়। হিন্দুর নামে প্রচলিত সংস্কৃতির অধিকাংশই আসলে এ অঞ্চলের প্রাচীন অধিবাসী ভাষাজাতি অস্ট্রিক-দ্রাবিড়দের পল্লীভিত্তিক লোকায়ত সংস্কৃতি। সে হিসেবে এসবই আমাদের সর্বজনীন উত্তরাধিকার।...

নববর্ষ বাংলাদেশের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীগুলোকে তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে বড় করে দেখতে শিখিয়েছে। দেখবার এই দৃষ্টিভঙ্গি এখানকার জনগোষ্ঠী শুধু নিয়ত বহমান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই অর্জন করেনি, এ ক্ষেত্রে এ জনপদের অধিবাসী বাঙালি ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক- এক কথায় মুক্তির সংগ্রামও রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে মানুষের মানবিক যে-জীবন, পহেলা বৈশাখ তার আদল নির্মাণ করেছে নববর্ষকে এ রাষ্ট্রের অধিবাসীদের সবচেয়ে বড় অথচ সম্প্রদায়ঊর্ধ্ব ঊৎসবে পরিণত করে। কিন্তু তারপরও এখনও কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন, ধর্মীয় পরিচয়কেই আমাদের সাংস্কৃতিক বা জনগোষ্ঠীগত পরিচয়ের চেয়ে বড় করে দেখা উচিত। ঊনচল্লিশে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তারচেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি। এটি কোনো আদর্শের কথা নয়। এটি একটি বাস্তব কথা। মা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায় ও ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে মালা-তিলক-টিকিতে কিংবা টুপি-লুঙ্গি-দাড়িতে ঢাকার জো টি নেই’ বলার মধ্যে দিয়ে যে বিতর্কের অবসান করতে চেয়েছিলেন, একাত্তর যে বিতর্কের রাজনৈতিক নিরসন ঘটিয়েছিল, রাজনৈতিক উত্থানপতনের ধারায় সে বিতর্ক স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও জিইয়ে রাখা হয়েছে। এরকম একটি বিতর্ক জিইয়ে থাকার একটি কার্যকারণ এই, ধর্ম ও সংস্কৃতিকে আমাদের অনেকে এখনও ইতিহাস আলাদা করে দেখতে চান না। সম্পর্কযুক্ত আরও একটি কার্যকারণ হলো, রাজনৈতিক কারণে সেরকম দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাও রচনা করা হয়েছে কি সামাজিকভাবে, কি রাষ্ট্রীয়ভাবে। ধর্ম ও সংস্কৃতি কোনও একটি পর্যায়ে সম্পর্কিত হলেও এ দুটি যে একেবারেই আলাদা, সেটি এমনকি আমাদের সমাজ বিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞানের অনেক শিক্ষার্থীও মানতে নারাজ। তারা স্বীকার করেন না, ধর্ম সংস্কৃতিরই অংশবিশেষ। ধর্ম তাদের কাছে সংস্কৃতির চেয়ে অনেক অনেক বড়, কেননা ধর্মকে তারা বিবেচনা করতে চান পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে। অথচ জীবনযাপনের মধ্যে দিয়ে এরাও প্রতিনিয়ত এ সত্য স্বীকার করে নেন যে, সংস্কৃতি ক্রমপরিবর্তনশীল, অন্যদিকে জাড্যতাই ধর্মের মূল শক্তি। অপরিবর্তনীয় হওয়ার পরও ধর্ম যে অনেক মানুষকে ছায়া দিচ্ছে, তার কারণ এটির অংশবিশেষ মানুষের জগৎ ও জীবনবোধের বা ইডিওলোজির অন্তর্গত আর অংশবিশেষ আবার তার আচারগত। অন্যদিকে সংস্কৃতি হলো সর্বব্যাপ্ত, যেমন গতিশীল ঠিক তেমনি আবার সৃষ্টিশীল। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সমাজে ধর্মভিত্তিক সংস্কৃতির গ্রহণযোগ্যতার সঙ্কট মানুষকে আক্রান্ত করেছে, কেননা জাড্যতা সৃজনশীলতা ও…

যারা মাদ্রাসায় যায়, তারা কি খায়, কি পরে, কি শেখে, তারা বড়হুজুরের হাতে ধর্ষিত হয় কি না, তাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য কি, তাদের শিক্ষাশেষে গন্তব্য কি এই নিয়ে কেন আমরা ভাবিনি? কেন সরকার ভাবেনাই? মহল্লার একেকটা বাড়ি থেকে একেকদিন খাওয়া পাঠানো হবে, এইরকম হিসাব করে আমরা একটা বিশাল হুজুরশ্রেণী তৈরি করেছি, এই পরান্নপুষ্ট-অশিক্ষিত-পরনির্ভরশীল জাতটা তৈরির আগে আমরা কেউ কেন ভেবে দেখলাম না? [...]

এই লেখার শুরুতেই জানিয়ে দিই, যীশুর এক গালে চড় খেলে আরেক গাল পেতে দেয়ার বিধান মানবার মন নিয়ে এটি লেখা নয়। যে আপনাকে লাঠি/সড়কি/রাম-দা হাতে মারতে আসে, তাকে লাঠি/সড়কি/রাম-দা হাতেই প্রতিহত করতে হয়, সেটা জেনেই এটা লেখা। যদি আপনি জানেন আপনাকে লাঠি/সড়কি/রাম-দা দিয়ে প্রতিহত করা হবে, তাহলে আপনার লাঠি/সড়কি/রাম-দা ধরবার পূর্বপ্রস্তুতি থাকতে হবে, অথবা আগেই ভেবে রাখতে হবে, লাঠি/সড়কি/রাম-দা দ্বারা আক্রান্ত হলে আপনার কাছে তার প্রতিবিধান কি। এইসব আগেই স্বীকার করে নিয়ে আমি কেবল এইটুকু নিয়ে আজকে লিখতে বসেছি, যে, প্রতিবিধান আপনি ভেবে রাখবেন বটে, সেইসাথে আপনাকে এও ভাবতে হবে আপনাকে এই লোকগুলি লাঠি/সড়কি/রাম-দা হাতে মারতে আসছে কেন? এই অসম্ভব ঘৃণার উৎস কি। এর চর্চ্চা কোথায় এবং কতদিনের? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে কোনো সভ্য দেশে দ্বিমত থাকার কথা নয়, উচিতও নয়। কিন্তু যে মানুষগুলি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ দেখেনাই, যারা এখনও ভাতকে ভাত আর মা’কে মা ডাকে, বাসায় গিয়ে বাংলাদেশের কাঁথামুড়ি দিয়ে ঘুমায়, সে কেন জামাত-শিবির করে, কেন সে সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচারের বিপক্ষে এমন নাছোড়? কেন সে অন্য আর সকল মানুষকে কাফের এবং দিকভ্রান্ত ভাবতে শিখেছে? নারীকে এমন বৈরী চোখে দেখা তাকে কে শিখিয়েছে? মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় আমাদের শিক্ষাখাতের বিপুল অর্থ ব্যয় হয় বলে আমি জানি। আন্তনগর মহাসড়কগুলিতে কয়েক হাত পর পর আপনি আজকে মাদ্রাসা খুঁজে পাবেন।এই শিক্ষাব্যবস্থায় দেশ-জাতি-জাতীয়তাবাদ-জাতীয় সংগীত ইত্যাদি সমন্বিত আছে কি না এটা না দেখে কেন এই শিক্ষাব্যবস্থাকে নিজের ইচ্ছামতন চলতে দেয়া হয়েছে? যারা মাদ্রাসায় যায়, তারা কি খায়, কি পরে, কি শেখে, তারা বড়হুজুরের হাতে ধর্ষিত হয় কি না, তাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য কি, তাদের শিক্ষাশেষে গন্তব্য কি এই নিয়ে কেন আমরা ভাবিনি? কেন সরকার ভাবেনাই? মহল্লার একেকটা বাড়ি থেকে একেকদিন খাওয়া পাঠানো হবে, এইরকম হিসাব করে আমরা একটা বিশাল হুজুরশ্রেণী তৈরি করেছি, এই পরান্নপুষ্ট-অশিক্ষিত-পরনির্ভরশীল জাতটা তৈরির আগে আমরা কেউ কেন ভেবে দেখলাম না? যে নিজের ভাষাতেই একটা ‘আউট-বুক’ পড়ে দেখেনাই, জ্ঞানলাভ করতে সুদূর চীনদেশ যাওয়া দূরে থাক, তালাবের ঐ পাড়ের মক্তব অব্দি যে কেবল যেয়ে দেখেছে, তার কাছে আমরা কেন ধর্মশিক্ষার জন্যে-বালামুসিবত কাটানোর জন্যে-দুঃস্বপ্নের অর্থ জানবার জন্যে যাই? আমরা স্কুল-কলেজে-ইউনিভার্সিটিতে পড়বার সময়, হরলাল রায়ের রচনাবলী পড়বার সময়, টেস্টপেপার সলভ করার…

শাহবাগ আন্দোলন শুরু হয়েছে পর্যন্ত ঘটনাক্রমের ধারাবাহিক বৃত্তান্ত। পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক আইনের বিধান নিয়ে আলোচনা। [..]

বাংলাদেশে কোন ব্যাক্তিকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করার সবচেয়ে সহজ উপায় তাকে নাস্তিক আখ্যা দেয়া। সহজ কোথায় নাস্তিক তারাই যারা কোন স্রষ্টার অস্তিত্ব এবং পরকালে বিশ্বাসী না। ইতিহাস বলে মুক্তচিন্তার বিকাশ রোধ করতেই মৌলবাদী তথা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বারবার ধর্মান্ধতার আশ্রয় নেয়। ভাষা আন্দোলনের সময় তারা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে বিধর্মীদের ভাষা বলেছে, একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের ইসলামের শত্রু বলেছে, বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার কারনে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে আমাদের বুদ্ধিজীবিদের। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা রোধে পাকিস্তান আমলের আইন বহাল রেখেছে সরকার, যুক্ত করা হয়েছে দমন-পীড়নের নতুন আইন। সামরিক স্বৈরশাসকের হাতে সংবিধানে এসেছে পাকিস্তানি আদলে রাষ্ট্রধর্মের বিধান। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর ধর্মীয় অপব্যাখ্যার বিরোধে শাসকগোষ্ঠী মৌলবাদের দিকেই ঝুঁকেছে বারবার। যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে অটল শহিদ জননী জাহানারা ইমামকেও  নাস্তিক বলা হয়েছে, সংবিধানের অনুচ্ছেদের পাশাপাশি কোরাণের বরাত দিয়ে ফতোয়া নিষিদ্ধকারী বিচারকদের বলা হয়েছে 'মুরতাদ', অনেকের মাথার দাম হাঁকা হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে। এই সবকিছুকেই কি বাংলাদেশের রাষ্ট্র  ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ দেয় নি? ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩ যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি আর জামাত শিবিরের নিষিদ্ধের দাবিতে যখন তরুন প্রজন্ম শাহবাগে আন্দোলন গড়ে তলে, লাখো মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত সেই উচ্চারণকে জামাত শিবির নাস্তিকদের আখড়া বলে প্রচার করবে সেটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও ঠিক তাই।  প্রতিবাদ মুখর মানুষ বিস্মিত হয়নি, খুঁজেছে নতুন পথ, আন্দোলনের নতুন কৌশল। শাহবাগের আন্দোলন দানা বেঁধেছিল মুলত বিভিন্ন বাংলা ব্লগ আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে, টুইটারে - ব্লগার, সেচ্ছাসেবক, কর্মী ও গবেষকদের অক্লান্ত লেখালেখি ও আলাপচারিতার সুত্র ধরে। জামাত শিবির আর তার পক্ষের শক্তিও তথ্যপ্রযুক্তির এই সহজলভ্যতার পূর্ণমাত্রায় অপব্যাবহার করেছে। যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রক্রিয়ার শুরু থেকে নানা মিথ্যা ও ভুল তথ্য উপস্থাপন, আইনের অপ-ব্যাখ্যার মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আসছিলো তারা। শাহবাগ আন্দোলন  শুরুর আগেই ১৩ জানুয়ারি হামলা হয়েছিল ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন এর ওপর। আন্দোলন চলাকালীন ১৫ ফেব্রুয়ারি হত্যা করা হয়া ব্লগার রাজীব হায়দারকে। তারপরই সামাজিক যোগাযোগ  মাধ্যমে  ছড়িয়ে দেয়া হয় বিভিন্ন উস্কানীমুলক লেখা, জামাত শিবির সমর্থকরা নামে বেনামে বিভিন্ন আইডি থেকে হুমকি দিতে থাকে ব্লগারদের। তাদের নাম তালিকা ছড়িয়ে দেয়া হয় নাস্তিক বলে। মূলতঃ  যুদ্ধাপরাধীদের  বিচারের  দাবিতে সোচ্চার ব্লগারদেরকেই লক্ষ্য নির্বাচন করে জামাত শিবির। অনেকের নাম ব্যাবহার করে নতুন নতুন ব্লগ আইডি তৈরি করে ধর্মকে কটুক্তি করে লেখা পোস্ট করা হয়। 'নাস্তিক' এবং 'ব্লগার' এ দুটি শব্দ সমার্থক হিসেবে উচ্চারিত হতে থাকে রাজনৈতিক…

সীমিত আসনের কারণে অংশগ্রহণের জন্য আগেই রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। [...]

প্রথম সপ্তাহের টপিক সেশন ১ : সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও স্ট্র্যাটেজিক বিশ্লেষণ সেশন ২ : 'আন্তর্জাতিক মান' নিয়ে আলোচনা সেশন ৩ : অ্যাকটিভিস্ট টুল হিসেবে 'টুইটার'-এর ব্যবহার তারিখ : ২৩/০৩/২০১৩, বিকেল (৪ - ৭) ইউকে সময় স্থান : লন্ডন ( সুনির্দিষ্টভাবে 'টিবিসি') আরো সুযোগ আছে : স্কাইপ ও ভিডিও লিন্কের মাধ্যমে অংশগ্রহণের সীমিত আসনের কারণে অংশগ্রহণের জন্য আগেই রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। ইমেইল : info@icsforum.org আরো দেখুন এখানে। আয়োজনে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ) আইসিএসএফ মূল পোর্টাল: http://icsforum.org মিডিয়া আর্কাইভ: http://icsforum.org/mediarchive ই-লাইব্রেরি: http://icsforum.org/library ফেসবুক: http://facebook.com/icsforum টুইটার: http://twitter.com/icsforum ইউটিউব: http://youtube.com/icsforum যোগাযোগ: info@icsforum.org

সামাজিক বিষয়ে কখনো লিখতে হবে ভাবিনি। তবে বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আমরা একটা দারুণ সংকট কালে এসে পৌঁছেছি। পৃথিবীর অনেক দেশই এরকম একটা সময় পাড়ি দেয়। তারপর আবার নতুন করে সব শুরু করে।[...]

সামাজিক বিষয়ে কখনো লিখতে হবে ভাবিনি। তবে বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আমরা একটা দারুণ সংকট কালে এসে পৌঁছেছি। পৃথিবীর অনেক দেশই এরকম একটা সময় পাড়ি দেয়। তারপর আবার নতুন করে সব শুরু করে। আমরা একে ‘বৈপ্লবিক পরিবর্তন’ বলি বা ‘সামাজিক উত্তরন’ যাই বলি না কেন, সময় পার হলে দেখা যাবে আমরা একটা নতুন পরিবেশে চলে এসেছি। সেটা খারাপও হতে পারে, আবার ভালোও হতে পারে। কিন্তু সেটা নির্ভর করছে, আমাদের চলমান প্রস্তুতির উপর। গত সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে ঘটে যাওয়া ‘আরব বসন্ত’ আমরা বিশ্লেষণ করলে দেখি, পরিবর্তনের পর সেখানে দেখা গেলো, প্রগতিশীলদের হটিয়ে ইসলামীপন্থীরা নির্বাচনে জয়লাভ করে। ফলে লাভ কি হল তা আরব বসন্তের পতাকাবাহীরা বলতে পারবেন। আমাদের দেশের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ তেমনি একটি সময়কাল। আমরা একটি পরিবর্তন চাইছিলাম ; ধর্ম-বর্ণ– জাতি নির্বিশেষে সাম্য, সামাজিক মর্যাদা এবং স্বাধীন সার্বভৌম ভাবে বেচে থাকার নিশ্চয়তয়ার জন্য লড়াই। আমরা ছোটবেলার পাঠ্যবইয়ে পড়লাম ‘ স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন’ । একদল মানুষ নয়মাস সংগ্রাম করেছিল ‘স্বাধীনতা’ অর্জনের, স্বাধীনতা এলো। এরপর আমাদের ৪২ বছর কাটল। কিন্তু আমরা কি স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামে নিয়োজিত ছিলাম বা আছি ? ঠিক মনে হয় না । কারণ তাহলে সাধারণ, একেবারে নিত্য নৈমত্তিক কিছু সভ্য, সুস্থ ও নিরাপদ মানসকিতা আমদের মধ্যে তৈরি হতো। যা একজন আধুনিক মানুষের সমাজে বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। আমরা সেই সংগ্রাম করেছি বলে মনে হয় না। আমি বলছিনা এর জন্য প্রতিদিন রাজনীতি করতে হয়। রাজনীতি করাটা যে বিশাল বিপদজনক কাজ, আমার মনে হয় ১৯৭২ থেকে এখন পর্যন্ত যত রাজনীতিবিদ আছেন, ভালো বলতে পারবেন। রাজনীতি আমরা অনেকেই করিনা, কিন্তু ‘রাজনৈতিক সচেতনতা’ হারিয়ে যাওয়াটা শুভ কিছু নয়। আমরা ভাবছি - আমি সবকিছু উপেক্ষা করে, অর্থ, সম্পদ আর ক্ষমতা’র চর্চা করলাম, সন্তান-পরিবারের দিকে তাকিয়ে, কিন্তু সেই সন্তান উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে, উগ্র কোন আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত। আমি নিজে আদর্শগত ভাবে দারুণ অসাম্প্রদায়িক, কিন্তু আমার সামাজিক, অর্থনৈতিক চর্চার দুর্বল ফাঁক-ফোকর গলে আমার সন্তানদের মধ্যে হয়তো সাম্প্রদায়িক বীজ বুনে যাচ্ছে। আবার দেখা গেলো, আমি খুবই ধার্মিক, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। এদিকে ঘুষের টাকায় বিশাল সম্পদ গড়ে তোলার পর,…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.