দা সিক্রেট লাইফ অফ বিজ। লেখিকা সু মংক কিড। এক সময়কার নিউ ইওর্ক বেস্ট সেলার ছিল বইটি। বর্ণবাদী সময়ের এক মাতৃহীন মেয়ের শৈশবের আশ্চর্য মানবিক কাহিনী — ১৯৬০ এর দশকের একটি চতুর্দশী কিশোরীর ধ্বস্ত জীবনের কথা, বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে, তার আত্মপরিচয় আর আত্মবিশ্বাসের পুনরুদ্ধার। খুব সহজে লেখা গেল কথাগুলো। কিন্তু মেয়েটির জীবনের অন্ধকার ও জটিলতাকে তুলে ধরা সহজ নয়।...

দা সিক্রেট লাইফ অফ বিজ। লেখিকা সু মংক কিড। এক সময়কার নিউ ইওর্ক বেস্ট সেলার ছিল বইটি। বর্ণবাদী সময়ের এক মাতৃহীন মেয়ের শৈশবের আশ্চর্য মানবিক কাহিনী — ১৯৬০ এর দশকের একটি চতুর্দশী কিশোরীর ধ্বস্ত জীবনের কথা, বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে, তার আত্মপরিচয় আর আত্মবিশ্বাসের পুনরুদ্ধার। খুব সহজে লেখা গেল কথাগুলো। কিন্তু মেয়েটির জীবনের অন্ধকার ও জটিলতাকে তুলে ধরা সহজ নয়। প্রথমত বইটিতে যে গল্প বোনা হয়েছে তা যে কোনো দিক থেকে দারুণ নাটকীয় । কিন্তু কে বলে জীবনে নাটকীয়তা নেই ? মার্ক টোয়েনের যুগলবন্দী টম সয়ার আর হাকল বেরি ফিনেই তো আছে একের পর এক লোমহর্ষক নাটুকেপনা, তাই বলে কি সত্য নয় ! শৈশবের বুদ্ধিমত্তা, বিপন্নতাও কি কম আছে, গল্পে উপন্যাসে। হারপার লী-র পুলিত্জার পাওয়া উপন্যাস টু কিল আ মকিং বার্ডের কথা মনে পড়ে যায় । সেখানে দুইজন শিশুর ছোট চোখের চাহনিতে ধরা পড়ে যায় সব সত্য-মিথ্যা । আর এখানে নাটকীয়তার মধ্যে দিয়ে আছে জীবনের হারিয়ে যাওয়া ভুঁই উদঘাটন । একটু একটু করে রহস্য উন্মোচন। যা যেকোনো ভালো গল্প লিখিয়ের  বাঁধা-ধরা গুণ । সাদামাঠা ভাবে বললে গল্পের শুরুটা এরকম : লিলি মেয়েটি মাতৃহীন কিশোরী । তার বাবাকে সে নাম ধরেই ডাকে – কারণ তার কাছে সে বাবার কোনো পরিচয়ই পায়না, তাদের মধ্যে ব্যবধান গড়ে তলে তার বাবার জীবন-বিদ্বেষী মনোভাব, অবিশ্বাস, আর নিষ্ঠুর অবহেলা । মা-র একটি মাত্র দিনের স্মৃতি তার আছে, যেদিন মা মারা যান, আচম্বিত, সুটকেস গুছিয়ে নিতে নিতে, যেন কোথাও চলে যাচ্ছেন, বাবার হঠাত-আবির্ভাব, দুজনের বাকবিতন্ডা, মা-র মরিয়া হয়ে আত্মরক্ষার তাগিদে রিভলভার বের করা, হাত থেকে সেটা ছিটকে যাওয়া বাবার জোরাজোরিতে । লিলির বয়েস মাত্র ৪, সে কী যেন ভেবে মাকে সেটা তুলে দিতে যায়, এবং সেইসময় ঘটনাটি ঘটে । রিভলভার থেকে আচম্বিত গুলি বেরিয়ে আসে । এইটুকুই স্মৃতি । মেয়েটি জানে তার মা মৃত, এবং যেহেতু মেয়েটির বুদ্ধি খুব কম নয়, সে মনে করে তার অনিয়ন্ত্রিত অবুঝ হাতেই সেদিন মা মারা যায় ।  মা-কে ছাড়া সে কিছু চায় না । আর মা-কে সে হত্যা করেছে । কিন্তু এই কষ্ট তার জীবনকে শুধু আলোড়িত করে তাই না, এই কষ্টকে কেন্দ্র করে তার জীবন আবর্তিত হয় । এই…

যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত চৌধুরী মুঈন উদ্দীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত আশরাফুজ্জামানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচার প্রক্রিয়ার সম্মুখীন করার পদ্ধতি, সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনায় বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, জার্মানী, কানাডা, অষ্ট্রিয়াসহ বিশ্বের মোট দশটি দেশ থেকে আলোচক এবং মন্তব্যকারীরা অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই আলোচনায় অংশ নেন। [...]

২২ জুন ২০১৩ প্রেস বিজ্ঞপ্তি =========== ২২ জুন ২০১৩ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ) এর আয়োজনে একটি ভিডিও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। “এক্সট্রাটেরিটোরিয়াল জুরিসডিকশন অফ দ্য আইসিটি: ব্রিঙ্গিং অ্যালেজড ওয়ার ক্রিমিনালস ব্যাক হোম” শিরোনামের এই সেমিনারে বক্তব্য উপস্থাপন করেন ওয়ার ক্রাইমস ফাইলস প্রামাণ্যচিত্রের প্রযোজক এবং সেন্টার ফর সেক্যুলার স্পেস এর গীতা সেহগাল, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বাউল, এবং এডভোকেট সাইফুল ইসলাম তারেক, সন্ত্রাস এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক জনাব জামাল হাসান। আইসিএসএফ এর পক্ষ থেকে সদস্য ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের আইনে এক্সট্রাডিশন (extradition) বিষয়ে তার গবেষণা পেশ করেন । মূলতঃ যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত চৌধুরী মুঈন উদ্দীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত আশরাফুজ্জামানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচার প্রক্রিয়ার সম্মুখীন করার পদ্ধতি, সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনায় বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, জার্মানী, কানাডা, অষ্ট্রিয়াসহ বিশ্বের মোট দশটি দেশ থেকে আলোচক এবং মন্তব্যকারীরা অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই আলোচনায় অংশ নেন। সেমিনারটি পাশাপাশি অনলাইনেও সরাসরি সম্প্রচারিত হয় যাতে টুইটারসহ সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন এবং মতামত প্রদান করেন। প্রাণবন্ত এই আলোচনায় সম্ভাব্য কূটনৈতিক পদক্ষেপ ও প্রক্রিয়া সমূহ কী হতে পারে, সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের গণহত্যা, মৃত্যুদণ্ড, আইন এবং মানবাধিকার প্রশ্নে অবস্থান ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আয়োজিত সেমিনারগুলোর মধ্যে এটি আইসিএসএফ এর চতুর্থ আয়োজন। আইসিএসএফ মূল পোর্টাল: http://icsforum.org মিডিয়া আর্কাইভ: http://icsforum.org/mediarchive ই-লাইব্রেরি: http://icsforum.org/library ফেসবুক: http://facebook.com/icsforum টুইটার: http://twitter.com/icsforum ইউটিউব: http://youtube.com/icsforum যোগাযোগ: info@icsforum.org

...তলিয়ে দেখা হচ্ছে না, একজন হিন্দুর সাংস্কৃতিক জীবনের সাংস্কৃতিক উপাদানের কোনটা হিন্দুধর্মীয় আর কোনটা লোকায়ত। এরা বুঝতে নারাজ, লোকায়ত সংস্কৃতি সব ধর্মের মানুষের সর্বজনীন উত্তরাধিকার। আর ভারতবর্ষে হিন্দুর নামে প্রচলিত সংস্কৃতির বেশির ভাগই হিন্দুধর্মজাত নয়, যেমন আরববিশ্বে মুসলমানদের নামে প্রচলিত সংস্কৃতির অধিকাংশই ইসলামধর্মজাত নয়। হিন্দুর নামে প্রচলিত সংস্কৃতির অধিকাংশই আসলে এ অঞ্চলের প্রাচীন অধিবাসী ভাষাজাতি অস্ট্রিক-দ্রাবিড়দের পল্লীভিত্তিক লোকায়ত সংস্কৃতি। সে হিসেবে এসবই আমাদের সর্বজনীন উত্তরাধিকার।...

নববর্ষ বাংলাদেশের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীগুলোকে তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে বড় করে দেখতে শিখিয়েছে। দেখবার এই দৃষ্টিভঙ্গি এখানকার জনগোষ্ঠী শুধু নিয়ত বহমান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই অর্জন করেনি, এ ক্ষেত্রে এ জনপদের অধিবাসী বাঙালি ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক- এক কথায় মুক্তির সংগ্রামও রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে মানুষের মানবিক যে-জীবন, পহেলা বৈশাখ তার আদল নির্মাণ করেছে নববর্ষকে এ রাষ্ট্রের অধিবাসীদের সবচেয়ে বড় অথচ সম্প্রদায়ঊর্ধ্ব ঊৎসবে পরিণত করে। কিন্তু তারপরও এখনও কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন, ধর্মীয় পরিচয়কেই আমাদের সাংস্কৃতিক বা জনগোষ্ঠীগত পরিচয়ের চেয়ে বড় করে দেখা উচিত। ঊনচল্লিশে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তারচেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি। এটি কোনো আদর্শের কথা নয়। এটি একটি বাস্তব কথা। মা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায় ও ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে মালা-তিলক-টিকিতে কিংবা টুপি-লুঙ্গি-দাড়িতে ঢাকার জো টি নেই’ বলার মধ্যে দিয়ে যে বিতর্কের অবসান করতে চেয়েছিলেন, একাত্তর যে বিতর্কের রাজনৈতিক নিরসন ঘটিয়েছিল, রাজনৈতিক উত্থানপতনের ধারায় সে বিতর্ক স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও জিইয়ে রাখা হয়েছে। এরকম একটি বিতর্ক জিইয়ে থাকার একটি কার্যকারণ এই, ধর্ম ও সংস্কৃতিকে আমাদের অনেকে এখনও ইতিহাস আলাদা করে দেখতে চান না। সম্পর্কযুক্ত আরও একটি কার্যকারণ হলো, রাজনৈতিক কারণে সেরকম দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাও রচনা করা হয়েছে কি সামাজিকভাবে, কি রাষ্ট্রীয়ভাবে। ধর্ম ও সংস্কৃতি কোনও একটি পর্যায়ে সম্পর্কিত হলেও এ দুটি যে একেবারেই আলাদা, সেটি এমনকি আমাদের সমাজ বিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞানের অনেক শিক্ষার্থীও মানতে নারাজ। তারা স্বীকার করেন না, ধর্ম সংস্কৃতিরই অংশবিশেষ। ধর্ম তাদের কাছে সংস্কৃতির চেয়ে অনেক অনেক বড়, কেননা ধর্মকে তারা বিবেচনা করতে চান পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে। অথচ জীবনযাপনের মধ্যে দিয়ে এরাও প্রতিনিয়ত এ সত্য স্বীকার করে নেন যে, সংস্কৃতি ক্রমপরিবর্তনশীল, অন্যদিকে জাড্যতাই ধর্মের মূল শক্তি। অপরিবর্তনীয় হওয়ার পরও ধর্ম যে অনেক মানুষকে ছায়া দিচ্ছে, তার কারণ এটির অংশবিশেষ মানুষের জগৎ ও জীবনবোধের বা ইডিওলোজির অন্তর্গত আর অংশবিশেষ আবার তার আচারগত। অন্যদিকে সংস্কৃতি হলো সর্বব্যাপ্ত, যেমন গতিশীল ঠিক তেমনি আবার সৃষ্টিশীল। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সমাজে ধর্মভিত্তিক সংস্কৃতির গ্রহণযোগ্যতার সঙ্কট মানুষকে আক্রান্ত করেছে, কেননা জাড্যতা সৃজনশীলতা ও…

যারা মাদ্রাসায় যায়, তারা কি খায়, কি পরে, কি শেখে, তারা বড়হুজুরের হাতে ধর্ষিত হয় কি না, তাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য কি, তাদের শিক্ষাশেষে গন্তব্য কি এই নিয়ে কেন আমরা ভাবিনি? কেন সরকার ভাবেনাই? মহল্লার একেকটা বাড়ি থেকে একেকদিন খাওয়া পাঠানো হবে, এইরকম হিসাব করে আমরা একটা বিশাল হুজুরশ্রেণী তৈরি করেছি, এই পরান্নপুষ্ট-অশিক্ষিত-পরনির্ভরশীল জাতটা তৈরির আগে আমরা কেউ কেন ভেবে দেখলাম না? [...]

এই লেখার শুরুতেই জানিয়ে দিই, যীশুর এক গালে চড় খেলে আরেক গাল পেতে দেয়ার বিধান মানবার মন নিয়ে এটি লেখা নয়। যে আপনাকে লাঠি/সড়কি/রাম-দা হাতে মারতে আসে, তাকে লাঠি/সড়কি/রাম-দা হাতেই প্রতিহত করতে হয়, সেটা জেনেই এটা লেখা। যদি আপনি জানেন আপনাকে লাঠি/সড়কি/রাম-দা দিয়ে প্রতিহত করা হবে, তাহলে আপনার লাঠি/সড়কি/রাম-দা ধরবার পূর্বপ্রস্তুতি থাকতে হবে, অথবা আগেই ভেবে রাখতে হবে, লাঠি/সড়কি/রাম-দা দ্বারা আক্রান্ত হলে আপনার কাছে তার প্রতিবিধান কি। এইসব আগেই স্বীকার করে নিয়ে আমি কেবল এইটুকু নিয়ে আজকে লিখতে বসেছি, যে, প্রতিবিধান আপনি ভেবে রাখবেন বটে, সেইসাথে আপনাকে এও ভাবতে হবে আপনাকে এই লোকগুলি লাঠি/সড়কি/রাম-দা হাতে মারতে আসছে কেন? এই অসম্ভব ঘৃণার উৎস কি। এর চর্চ্চা কোথায় এবং কতদিনের? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে কোনো সভ্য দেশে দ্বিমত থাকার কথা নয়, উচিতও নয়। কিন্তু যে মানুষগুলি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ দেখেনাই, যারা এখনও ভাতকে ভাত আর মা’কে মা ডাকে, বাসায় গিয়ে বাংলাদেশের কাঁথামুড়ি দিয়ে ঘুমায়, সে কেন জামাত-শিবির করে, কেন সে সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচারের বিপক্ষে এমন নাছোড়? কেন সে অন্য আর সকল মানুষকে কাফের এবং দিকভ্রান্ত ভাবতে শিখেছে? নারীকে এমন বৈরী চোখে দেখা তাকে কে শিখিয়েছে? মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় আমাদের শিক্ষাখাতের বিপুল অর্থ ব্যয় হয় বলে আমি জানি। আন্তনগর মহাসড়কগুলিতে কয়েক হাত পর পর আপনি আজকে মাদ্রাসা খুঁজে পাবেন।এই শিক্ষাব্যবস্থায় দেশ-জাতি-জাতীয়তাবাদ-জাতীয় সংগীত ইত্যাদি সমন্বিত আছে কি না এটা না দেখে কেন এই শিক্ষাব্যবস্থাকে নিজের ইচ্ছামতন চলতে দেয়া হয়েছে? যারা মাদ্রাসায় যায়, তারা কি খায়, কি পরে, কি শেখে, তারা বড়হুজুরের হাতে ধর্ষিত হয় কি না, তাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য কি, তাদের শিক্ষাশেষে গন্তব্য কি এই নিয়ে কেন আমরা ভাবিনি? কেন সরকার ভাবেনাই? মহল্লার একেকটা বাড়ি থেকে একেকদিন খাওয়া পাঠানো হবে, এইরকম হিসাব করে আমরা একটা বিশাল হুজুরশ্রেণী তৈরি করেছি, এই পরান্নপুষ্ট-অশিক্ষিত-পরনির্ভরশীল জাতটা তৈরির আগে আমরা কেউ কেন ভেবে দেখলাম না? যে নিজের ভাষাতেই একটা ‘আউট-বুক’ পড়ে দেখেনাই, জ্ঞানলাভ করতে সুদূর চীনদেশ যাওয়া দূরে থাক, তালাবের ঐ পাড়ের মক্তব অব্দি যে কেবল যেয়ে দেখেছে, তার কাছে আমরা কেন ধর্মশিক্ষার জন্যে-বালামুসিবত কাটানোর জন্যে-দুঃস্বপ্নের অর্থ জানবার জন্যে যাই? আমরা স্কুল-কলেজে-ইউনিভার্সিটিতে পড়বার সময়, হরলাল রায়ের রচনাবলী পড়বার সময়, টেস্টপেপার সলভ করার…

শাহবাগ আন্দোলন শুরু হয়েছে পর্যন্ত ঘটনাক্রমের ধারাবাহিক বৃত্তান্ত। পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক আইনের বিধান নিয়ে আলোচনা। [..]

বাংলাদেশে কোন ব্যাক্তিকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করার সবচেয়ে সহজ উপায় তাকে নাস্তিক আখ্যা দেয়া। সহজ কোথায় নাস্তিক তারাই যারা কোন স্রষ্টার অস্তিত্ব এবং পরকালে বিশ্বাসী না। ইতিহাস বলে মুক্তচিন্তার বিকাশ রোধ করতেই মৌলবাদী তথা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বারবার ধর্মান্ধতার আশ্রয় নেয়। ভাষা আন্দোলনের সময় তারা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে বিধর্মীদের ভাষা বলেছে, একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের ইসলামের শত্রু বলেছে, বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার কারনে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে আমাদের বুদ্ধিজীবিদের। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা রোধে পাকিস্তান আমলের আইন বহাল রেখেছে সরকার, যুক্ত করা হয়েছে দমন-পীড়নের নতুন আইন। সামরিক স্বৈরশাসকের হাতে সংবিধানে এসেছে পাকিস্তানি আদলে রাষ্ট্রধর্মের বিধান। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর ধর্মীয় অপব্যাখ্যার বিরোধে শাসকগোষ্ঠী মৌলবাদের দিকেই ঝুঁকেছে বারবার। যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে অটল শহিদ জননী জাহানারা ইমামকেও  নাস্তিক বলা হয়েছে, সংবিধানের অনুচ্ছেদের পাশাপাশি কোরাণের বরাত দিয়ে ফতোয়া নিষিদ্ধকারী বিচারকদের বলা হয়েছে 'মুরতাদ', অনেকের মাথার দাম হাঁকা হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে। এই সবকিছুকেই কি বাংলাদেশের রাষ্ট্র  ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ দেয় নি? ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩ যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি আর জামাত শিবিরের নিষিদ্ধের দাবিতে যখন তরুন প্রজন্ম শাহবাগে আন্দোলন গড়ে তলে, লাখো মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত সেই উচ্চারণকে জামাত শিবির নাস্তিকদের আখড়া বলে প্রচার করবে সেটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও ঠিক তাই।  প্রতিবাদ মুখর মানুষ বিস্মিত হয়নি, খুঁজেছে নতুন পথ, আন্দোলনের নতুন কৌশল। শাহবাগের আন্দোলন দানা বেঁধেছিল মুলত বিভিন্ন বাংলা ব্লগ আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে, টুইটারে - ব্লগার, সেচ্ছাসেবক, কর্মী ও গবেষকদের অক্লান্ত লেখালেখি ও আলাপচারিতার সুত্র ধরে। জামাত শিবির আর তার পক্ষের শক্তিও তথ্যপ্রযুক্তির এই সহজলভ্যতার পূর্ণমাত্রায় অপব্যাবহার করেছে। যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রক্রিয়ার শুরু থেকে নানা মিথ্যা ও ভুল তথ্য উপস্থাপন, আইনের অপ-ব্যাখ্যার মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আসছিলো তারা। শাহবাগ আন্দোলন  শুরুর আগেই ১৩ জানুয়ারি হামলা হয়েছিল ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন এর ওপর। আন্দোলন চলাকালীন ১৫ ফেব্রুয়ারি হত্যা করা হয়া ব্লগার রাজীব হায়দারকে। তারপরই সামাজিক যোগাযোগ  মাধ্যমে  ছড়িয়ে দেয়া হয় বিভিন্ন উস্কানীমুলক লেখা, জামাত শিবির সমর্থকরা নামে বেনামে বিভিন্ন আইডি থেকে হুমকি দিতে থাকে ব্লগারদের। তাদের নাম তালিকা ছড়িয়ে দেয়া হয় নাস্তিক বলে। মূলতঃ  যুদ্ধাপরাধীদের  বিচারের  দাবিতে সোচ্চার ব্লগারদেরকেই লক্ষ্য নির্বাচন করে জামাত শিবির। অনেকের নাম ব্যাবহার করে নতুন নতুন ব্লগ আইডি তৈরি করে ধর্মকে কটুক্তি করে লেখা পোস্ট করা হয়। 'নাস্তিক' এবং 'ব্লগার' এ দুটি শব্দ সমার্থক হিসেবে উচ্চারিত হতে থাকে রাজনৈতিক…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.