নববর্ষ বাংলাদেশের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীগুলোকে তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে বড় করে দেখতে শিখিয়েছে। দেখবার এই দৃষ্টিভঙ্গি এখানকার জনগোষ্ঠী শুধু নিয়ত বহমান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই অর্জন করেনি, এ ক্ষেত্রে এ জনপদের অধিবাসী বাঙালি ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক- এক কথায় মুক্তির সংগ্রামও রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে মানুষের মানবিক যে-জীবন, পহেলা বৈশাখ তার আদল নির্মাণ করেছে নববর্ষকে এ রাষ্ট্রের অধিবাসীদের সবচেয়ে বড় অথচ সম্প্রদায়ঊর্ধ্ব ঊৎসবে পরিণত করে। কিন্তু তারপরও এখনও কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন, ধর্মীয় পরিচয়কেই আমাদের সাংস্কৃতিক বা জনগোষ্ঠীগত পরিচয়ের চেয়ে বড় করে দেখা উচিত। ঊনচল্লিশে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তারচেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি। এটি কোনো আদর্শের কথা নয়। এটি একটি বাস্তব কথা। মা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায় ও ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে মালা-তিলক-টিকিতে কিংবা টুপি-লুঙ্গি-দাড়িতে ঢাকার জো টি নেই’ বলার মধ্যে দিয়ে যে বিতর্কের অবসান করতে চেয়েছিলেন, একাত্তর যে বিতর্কের রাজনৈতিক নিরসন ঘটিয়েছিল, রাজনৈতিক উত্থানপতনের ধারায় সে বিতর্ক স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও জিইয়ে রাখা হয়েছে।
এরকম একটি বিতর্ক জিইয়ে থাকার একটি কার্যকারণ এই, ধর্ম ও সংস্কৃতিকে আমাদের অনেকে এখনও ইতিহাস আলাদা করে দেখতে চান না। সম্পর্কযুক্ত আরও একটি কার্যকারণ হলো, রাজনৈতিক কারণে সেরকম দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাও রচনা করা হয়েছে কি সামাজিকভাবে, কি রাষ্ট্রীয়ভাবে। ধর্ম ও সংস্কৃতি কোনও একটি পর্যায়ে সম্পর্কিত হলেও এ দুটি যে একেবারেই আলাদা, সেটি এমনকি আমাদের সমাজ বিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞানের অনেক শিক্ষার্থীও মানতে নারাজ। তারা স্বীকার করেন না, ধর্ম সংস্কৃতিরই অংশবিশেষ। ধর্ম তাদের কাছে সংস্কৃতির চেয়ে অনেক অনেক বড়, কেননা ধর্মকে তারা বিবেচনা করতে চান পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে। অথচ জীবনযাপনের মধ্যে দিয়ে এরাও প্রতিনিয়ত এ সত্য স্বীকার করে নেন যে, সংস্কৃতি ক্রমপরিবর্তনশীল, অন্যদিকে জাড্যতাই ধর্মের মূল শক্তি। অপরিবর্তনীয় হওয়ার পরও ধর্ম যে অনেক মানুষকে ছায়া দিচ্ছে, তার কারণ এটির অংশবিশেষ মানুষের জগৎ ও জীবনবোধের বা ইডিওলোজির অন্তর্গত আর অংশবিশেষ আবার তার আচারগত। অন্যদিকে সংস্কৃতি হলো সর্বব্যাপ্ত, যেমন গতিশীল ঠিক তেমনি আবার সৃষ্টিশীল। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সমাজে ধর্মভিত্তিক সংস্কৃতির গ্রহণযোগ্যতার সঙ্কট মানুষকে আক্রান্ত করেছে, কেননা জাড্যতা সৃজনশীলতা ও গতিশীলতাকে ধারণ করতে অক্ষম, সর্বব্যাপক হতে অক্ষম, জাড্যতা কেবল পারে অক্ষমতার দম্ভ দেখাতে। এইভাবে রাষ্ট্র ও সমাজে অধিবাসরত মানুষ তার ধারাবাহিক জীবনযাত্রা ও জীবনসংগ্রামের মধ্যে দিয়ে এ সত্য অর্জন করেছে, ধর্ম দিয়ে কোনও সংস্কৃতির নাম নির্ধারণ করা অস্বাভাবিক ব্যাপার। যদিও আমাদের এই ভূ-খণ্ডে রাজনৈতিক দোলাচলের একটি পর্ব থেকে ঠিক এ ভাবেই সংস্কৃতির চর্চা করে আসা হচ্ছে এবং অপচেষ্টা করা হচ্ছে ধর্মীয় পরিচয়ের ঘেরটোপে মানুষকে বৃত্তাবদ্ধ করে ফেলার।
প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ আমাদের সেই বৃত্ত থেকে টেনে বের করে নিয়ে আসে। এই দিনকে কেন্দ্র করে সরবে আমাদের কাছে সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়টিই বড় হয়ে ওঠে। বৈশাখ আমাদের ধর্মীয় পরিচয়ের আচ্ছন্নতা থেকে মুক্ত করে। আবার অন্যদিকে, বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর স্বতন্ত্র জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতিচর্চাকে সংগঠিত করার আবাহনের মধ্যে দিয়ে এক অভিনব ঐক্যের বুনিয়াদ তৈরি করে চলে। রমনার বটমূলে নববর্ষের আবাহন কিংবা চারুকলার শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে বাংলা নববর্ষ যেমন বাঙালির প্রাণতা সৃষ্টি করে, ঠিক তেমনি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যেও সাংস্কৃতিক উদ্বোধন ঘটতে দেখা যায় বৈসাবি ও নববর্ষসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে। এইভাবে বৈশাখ নতুন এক পরিসর তৈরি করে সাংস্কৃতিক দৃঢ় বন্ধনের।
ঔপবিনেশিক রাজনীতির বিষবাষ্প আমাদের বিশেষত বাঙালি জনগোষ্ঠীর মুসলমানকে বার বার ইসলামি সংস্কৃতির অভিনব এক পরিচ্ছেদ পরানোর চেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু ধর্ম ও সংস্কৃতি অভিন্ন নয় বলেই সে চেষ্টা বার বার থমকে পড়েছে। সাধারণভাবে এই ইসলামি বা মুসলিম সংস্কৃতি বলতে বোঝানো হয়ে থাকে, ইসলামিদের ধর্মমত, জীবনযাত্রা বা আচারঅনুষ্ঠান এবং মুসলমানদের নানা সৃষ্টি (যার মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস থেকে শুরু করে চারুশিল্প, কারুকলা ইত্যাদি)। এভাবে রাষ্ট্রনির্বিশেষে এক বৃহত্তর সংহতির বোধ সৃষ্টির উপাদান ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে; যদিও চিন, জাভা, মালয় থেকে শুরু করে বোখারা, মরক্কো, ইস্তাম্বুল ও আলবেনিয়া অবধি বিস্তৃত এই জনপদে একই জীবনযাত্রা ও সৃষ্টিকর্ম অব্যাহত হয় নি। বিভিন্ন সময় এ জনপদের মানুষ সাংস্কৃতিকভাবে মিথস্ক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে একটি মিশ্র সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে, যাকে আমরা সাধারণভাবে বলে থাকি বাঙালি সংস্কৃতি। এই মিথস্ক্রিয়া ঘটেছে আরব বা মধ্যপ্রাচ্যের সংস্কৃতির সঙ্গেও। লেখাই বাহুল্য, আরবের এই সংস্কৃতিও ইসলামপূর্ব যুগের সাংস্কৃতিক চর্চার ধারাবাহিকতায় পাওয়া। কিন্তু এ সংস্কৃতিকেই এখানে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়েছে ধর্মীয় সংস্কৃতি হিসেবে।
ধর্ম ও সংস্কৃতিকে অভিন্ন করে দেখার অপপ্রয়াস বার বার তুঙ্গে উঠেছে এ দেশের বিভিন্ন অগণতান্ত্রিক শাসনামলে। সামরিক শাসন ও সামরিক জান্তারা এই অপপ্রয়াসের জনক। তারা শাসনতান্ত্রিক গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে একদিকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকদের অঙ্গীভূত করে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের ধর্মানুভূতির অপব্যবহার করে। এর পাশাপাশি, এক শ্রেণির বাঙালি মুসলমান শিক্ষাদীক্ষার সংস্পর্শে আসার পর থেকে এক ধরণের কষ্টকল্পিত আত্মপরিচয়ের সঙ্কটে নিমজ্জিত হয়েছেন এবং নিজের পৃথক আইডেনটিটি সৃষ্টির প্রয়াস চালিয়েছেন বা কষ্টকল্পিত সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন নিজের ধর্মীয় পরিচয় ও ধর্মীয় আচারঅনুষ্ঠানকে বড় করে তোলার মধ্য দিয়ে। এভাবে ধর্ম আর সংস্কৃতি অভিন্ন হিসেবে প্রচারিত হয়ে আসছে, জনমনে অভিন্নতার ধারণা শেকড় গেঁড়ে বসেছে। মোতাহার হোসেন চৌধুরী একসময় লিখেছিলেন, ‘অশিক্ষিতের সংস্কৃতি হচ্ছে ধর্ম আর শিক্ষিতের ধর্ম সংস্কৃতি।’ কিন্তু এ জনপদ ও জনগোষ্ঠীর ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতার প্রক্রিয়াটি অনুসন্ধান না করে শুধুমাত্র নিজেদের ধর্মীয় পরিচয়কে অবলম্বন করে আত্মপরিচয় অনুসন্ধানের কৃত্রিম প্রচেষ্টার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য শিক্ষিত মানুষের কাছেই এখন ধর্ম সংস্কৃতির মর্যাদা পাচ্ছে। এই মর্যাদা যেমন কাল্পনিক, তেমনি আত্মঘাতি। তারা তাদের এই কথিত সংস্কৃতির চর্চা করুন বা না করুন, সেটিকে সংস্কৃতির মর্যাদা দিয়ে তাকে রক্ষার জন্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ও উত্তেজক পরিস্থিতি তৈরি করে চলেছেন, সৃজনশীলতার অপচয়ও ঘটাচ্ছেন। মৌলবাদ এখানে একটি দানবীয় সঙ্কট হিসেবে উত্থিত হওয়ার পেছনে সংস্কৃতিসংক্রান্ত এরকম ভ্রান্ত ধারণাটিও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। অথচ ‘অশিক্ষিতের ধর্ম সংস্কৃতি’ বলে মনে করা হলেও লোকজ সংস্কৃতির প্রভাবে বরং যাকে আমরা অশিক্ষিত বলে মনে করছি সেই নিম্নবর্গের বা নিম্নমধ্যবিত্তের মধ্যে একটি পর্যায় পর্যন্ত ধর্ম ও সংস্কৃতি সম্পর্কযুক্ত হিসেবে চর্চিত হলেও শেষ পর্যন্ত তারা জীবনের সর্বক্ষেত্র ব্যপ্ত করে একে সংস্কৃতি হিসেবে চর্চা করা থেকে বিরত থাকছে। কেননা জীবনধারণ ও জীবনযাপনের সংগ্রাম তাকে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন যে-পরিস্থিতির মুখোমুখি করছে, তা তার মধ্যে সংস্কৃতিকে পরিবর্তনশীল বিষয় হিসেবে ধরে নেয়ার ও সেটিকে চর্চা করার শিক্ষা ও প্রেরণা দিচ্ছে।
পাকিস্তানি প্রায়-ঔপনিবেশিক, অগণতান্ত্রিক ও সামরিক শাসনের জের হিসেবে, সাংস্কৃতিক অবশেষ হিসেবে যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমরা পেয়েছি এবং নতুন রাষ্টটিকে শাসনশোসনের প্রয়োজনে আমাদের শাসকগোষ্ঠী যে সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত রেখেছে, তা আমাদের এখনও ধর্ম ও সংস্কৃতিকে অভিন্ন ভাবার জন্যে জোরজবরদস্তি করছে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসনামল থেকেই নববর্ষ উদযাপনের যে ধারা রমনাকে ঘিরে বিকশিত হতে থাকে, কালক্রমে তা কেবল ব্যাপক মধ্যবিত্তের উৎসবই নয়, সকল জনগোষ্ঠীর উৎসবে পরিণত হয়েছে। এবং মধ্যবিত্তরা প্রতিনিয়ত নিম্নবর্গের মানুষের লোকজ সংস্কৃতিকে গ্রহণ করে শ্রেণি হিসেবে যেমন ঋদ্ধ হয়েছে, তেমনি অপরাপর শ্রেণিসমূহের সঙ্গে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনও নির্মাণ করেছে। রাজনৈতিক অপশক্তি, বিশেষত ইসলামি মৌলবাদীরা এই মেলবন্ধনকে বিভিন্ন সময় বিচ্ছিন্ন ও ক্ষতবিক্ষত করতে চেয়েছে এবং এখনও চাইছে। বাঙালি সংস্কৃতিকে হিন্দু ধর্মিতার সমার্থক করে তোলার অপব্যাখ্যা দিয়ে চলেছে তারা। বাংলা নববর্ষের দিন মানুষের অসাম্প্রদায়িক অংশগ্রহণকে তারা চিহ্নিত করার অপপ্রয়াস চালিয়ে আসছে হিন্দুয়ানির চর্চা হিসেবে। মঙ্গল শোভাযাত্রা তো বটেই, শহীদ মিনারে ফুল দেয়া, মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালানো ইত্যাদি সাংস্কৃতিক অভিপ্রকাশকে বিকৃতভাবে ব্যাখ্যা করা অব্যাহত রয়েছে। ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যেকার প্রভেদরেখা উপলব্ধির সীমাবদ্ধতা থেকে তারা এসবকে মনে করছেন হিন্দুয়ানি। তলিয়ে দেখা হচ্ছে না, একজন হিন্দুর সাংস্কৃতিক জীবনের সাংস্কৃতিক উপাদানের কোনটা হিন্দুধর্মীয় আর কোনটা লোকায়ত। এরা বুঝতে নারাজ, লোকায়ত সংস্কৃতি সব ধর্মের মানুষের সর্বজনীন উত্তরাধিকার। আর ভারতবর্ষে হিন্দুর নামে প্রচলিত সংস্কৃতির বেশির ভাগই হিন্দুধর্মজাত নয়, যেমন আরববিশ্বে মুসলমানদের নামে প্রচলিত সংস্কৃতির অধিকাংশই ইসলামধর্মজাত নয়। হিন্দুর নামে প্রচলিত সংস্কৃতির অধিকাংশই আসলে এ অঞ্চলের প্রাচীন অধিবাসী ভাষাজাতি অস্ট্রিক-দ্রাবিড়দের পল্লীভিত্তিক লোকায়ত সংস্কৃতি। সে হিসেবে এসবই আমাদের সর্বজনীন উত্তরাধিকার।
সংস্কৃতি পরিবর্তনশীল বলেই গ্রহণবর্জনের মধ্যে দিয়ে তা নিজেকে সমৃদ্ধ করে, টিকে থাকার শক্তি অর্জন করে। যেমন, খাদ্য হিসেবে বিরিয়ানি এখন হিন্দু সমাজেও ব্যাপকভাবে সমাদৃত ও গ্রহণীয়। কিন্তু এটি ঐতিহাসিকভাবে মধ্যএশীয় ও ইরানি-তুরানিদের খাদ্য- ভারতবর্ষে যার প্রচলন ঘটে এখানে আগত মুসলমানদের মাধ্যমে। তা হলে এটিকে কি এখানকার জনগোষ্ঠী বর্জন করবে? বাংলা নববর্ষের মধ্যে দিয়ে উদ্বোধিত সংস্কৃতি আমাদের এরকম বহু বিভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গী থেকে মুক্ত করে। অতীতের কৃষিভিত্তিক সমাজ থেকে বাংলার যে-সাংস্কৃতিক যাত্রা শুরু হয়েছিল, বিভিন্ন সামাজিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে তা এক নতুন পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে এখন। নগর সমাজের বিকাশ ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন সংস্কৃতিতেও নতুন নতুন পরিবর্তন আনছে। যারা নববর্ষের মধ্যে পুরানো অতীতের আমেজ খুঁজে পান না, হালখাতার আনন্দ খুঁজে পান না, তাদের আহাজারির সঙ্গে আসলে সংস্কৃতিকে অপরিবর্তনীয় ভাবার ধারণাটিও জড়িয়ে থাকে। ঢাকা মহানগর থেকে শুরু করে সারা দেশের গ্রামেগঞ্জে মধ্যবিত্ত শ্রেণিবাহিত হয়ে বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে নতুন করে নববর্ষের যে-বিস্তার ঘটেছে, অপরিবর্তনীয়তার নিরিখে তার আস্বাদ পাওয়া যাবে না। ধর্মের মতো অপরিবর্তনীয় কিছুর পরিধিতেও তার আনন্দ ও শক্তি অনুভব করা যাবে না। সমাজ ও সংস্কৃতির নতুন উদ্বোধনের মধ্যেই তাকে খুঁজতে হবে।
বৈশাখের নববর্ষ সেই উদ্বোধনের একটি প্রতীকী সম্মিলন।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১ comment
আঃ হাকিম চাকলাদার - ২০ এপ্রিল ২০১৩ (৫:১৬ পূর্বাহ্ণ)
ভালই লাগল।