ঘটনার প্রথম প্রহরেই আমরা দ্রুত কিছু বিষয়ে অগ্রিম ইঙ্গিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলাম (এখানে)। এবার এ বিষয়গুলো নিয়ে আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা করা দরকার। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য এবং কিছু আনুমানিক বিশ্লেষণকে ভিত্তি করে দ্রুত লিখছি [...]

[পোস্টের শিরোনাম ঈষৎ বদলে নেয়া হল] ঘটনার প্রথম প্রহরেই আমরা দ্রুত কিছু বিষয়ে অগ্রিম ইঙ্গিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলাম (এখানে)। এবার এ বিষয়গুলো নিয়ে আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা করা দরকার। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য এবং কিছু আনুমানিক বিশ্লেষণকে ভিত্তি করে দ্রুত লিখছি: ১. সাম্প্রতিক সময়ে এমন কী ঘটেছে যা এ ধরণের সশস্ত্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে? সাম্প্রতিক সময়ের দুটো ঘটনায় এর কিছু উত্তর মিলতে পারে। (ক) উপমহাদেশে আন্তঃদেশীয় জঙ্গিবাদের উত্থান ইস্যুকে সামনে রেখে সার্ক টাস্ক ফোর্সের উদ্যোগ এবং তাতে বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার এবং সক্রিয় উদ্যোগ। এ নিয়ে সার্কভুক্ত দেশগুলোর নেতৃবৃন্দের মধ্যে কিছু আলাপ-আলোচনার খবর ইতোমধ্যেই পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বদল করার মাধ্যমে উদ্যোগটিকে অচল করা এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের কারণ হতে পারে। (খ) আওয়ামী লীগ সরকার জাতির বহুদিনকার দাবি ১৯৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে এসেছে। এটি ছিল তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। কেবল প্রতিশ্রুতিতেই তা থেমে থাকেনি। ইতোমধ্যে সংসদে এ সংক্রান্ত পদক্ষেপকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তাব পাশ হয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের যুদ্ধাপরাধ বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও তা

নিয়ে জোরালো আলোচনা শুরু হয়েছে সরকারের উদ্যোগে। সুতরাং এটা এখন স্পষ্ট যে, সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই সব উদ্যোগে দেশের ভেতরের একটি শ্রেণীর শঙ্কিত বোধ করার কথা। তাদের পক্ষে পুরো উদ্যোগকে বিপথগামী বা (চরম জাতীয় সংকট তৈরির মাধ্যমে) নস্যাৎ করার পরিকল্পনা করা অসম্ভব নয়। যুদ্ধাপরাধী শুধু দেশের ভেতরেই নেই, দেশের বাইরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৯৫ জন কর্মকর্তার মধ্যেও রয়েছে। সুতরাং এ ঘটনায় বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার সরাসরি মদদ থাকাও বিচিত্র নয়। ২. কী অর্জন করতে চেয়েছিল সশস্ত্র আক্রমণকারীরা? এতে এখন আর কোন সন্দেহ নেই যে, এমন মাপের হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য সরকারকে পুরোপুরি অস্থিতিশীল করে দেয়া এবং দেশের মধ্যে চরম রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করা। এর ব্যাপ্তির সাথে কেবল ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১-এর বুদ্ধিজীবী হত্যা কিংবা ১৯৭৫-এর ঘটনাবলিরই তুলনা করা যায়। কিন্তু কেন? প্রথম দৃষ্টিতে মনে হয়েছে দাবি আদায়, কিন্তু এখন আমরা নিঃসন্দেহ যে সেটি ছিল cover বা front, যা নীড়সন্ধানীর মন্তব্যেও উঠে এসেছে। এর উত্তর খুঁজতে হবে হত্যাকাণ্ড এবং অরাজকতার সংখ্যার মধ্যে নয়। খুঁজতে হবে হত্যাকাণ্ডের ও অরাজকতার ধরণ এবং ঘটনাপ্রবাহের…

এই বিশ্লেষণমূলক তথ্যবহুল পোস্টটিতে আন্তর্জাতিক অপরাধের সংজ্ঞা, নুরেমবার্গ ট্রায়াল, টোকিও ট্রায়াল, আইকম্যানের বিচার, সাবেক যুগোশ্লাভিয়ার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, মিলোসেভিচের যুদ্ধাপরাধের বিচার, রুয়ান্ডা ও কম্বোডিয়ার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সে সবের আলোকে বর্তমানের আন্তর্জাতিক আইন, বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, আনুষঙ্গিক পূর্ব ইতিহাস এবং বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটের মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়েছে এই লেখাটিতে।

ভূমিকা একাত্তর সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসকেরা একটি অন্যায় যুদ্ধ এ ভূখন্ডের বাঙ্গালীদের ওপর চাপিয়ে দেন। অপারেশন সার্চ লাইটের নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ আরম্ভ করে তা ক্রমশ বিস্তৃত হয়ে সমগ্র ভূখন্ডে ছড়িয়ে পড়ে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী বাঙ্গাঁলী জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করার জন্য হানাদার বাহিনী হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগসহ সমগ্র বাংলাদেশে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে। সেনাবাহিনীর সকল কর্মকান্ডে, যা কিনা ছিল মানবতা ও শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ, জামাতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা পূর্ণ সমর্থন প্রদান করেন। হত্যা, ধর্ষণ ও লুটতরাজের মত কর্মকান্ডে সমর্থন দিয়েই তারা বসে থাকেনি, মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে জামাতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা শান্তি কমিটি, রাজাকার, আল বদর, আলশামস ইত্যাদি বাহিনী গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করে। এসব সহযোগী বাহিনীর সদস্যরা হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগসহ কোন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে পাকিস্তানের সেনা সদস্যদের চেয়ে পিছিয়ে ছিল না। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাঙ্গাঁলী জনগোষ্ঠীর ওপর যে হিংস্রতা ও বর্বরতা করেছে সেটি ছিল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লংঘন। যুদ্ধাপরাধ, মানবতা ও শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ করার দায়ে পাক সেনাদের বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত ছিল। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বঙ্গঁবন্ধু সরকার এব্যাপারে নানা উদ্যোগ নিলেও আন্তর্জাতিক বাস্তবতা, কুটনৈতিক চাপ ও সর্বোপরি পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙ্গাঁলীদের কথা চিন্তা করে পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের বিচার সম্ভব হয়নি। তবুও যে ১৯৫ জন সেনা সদস্যকে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তাদের বিচার করে শাস্তি দেয়া গেলে সেটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য একটি প্রতীকী আবেদন তৈরি করত এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গঁনে যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির ব্যাপারে আরও একটি উত্তম দৃষ্টান্ত হত। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সরকার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এদেশীয় সহযোগীদের বিচারের জন্য ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ দালাল (বিশেষ ট্রাইব্যুনালস) আদেশ, ১৯৭২ এবং ১৯৭৩ সালের ২০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ জারি করে। ১৯৭২ সালের ২৯ আগষ্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ দালাল (বিশেষ ট্রাইব্যুনালস) আদেশ-এ তিনটি সংশোধনী আনা হয়। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত সারা বাংলাদেশ থেকে এ আদেশের অধীনে ৩৭ হাজার ৪ শ ৯১ জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে বঙ্গঁবন্ধু সরকার ৭৩টি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। যেসকল মামলা দায়ের করা হয়েছিল তার…

মৌলবাদ দমনে বিশ্বের নীতিনির্ধারকরা প্রকৃতপক্ষে আন্তরিক কি না তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ, মৌলবাদ সব সময়ই সামন্তবাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। বিশেষ করে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বকে ভেঙে খান খান করে দিতে পুঁজিবাদীরা এটাকে ব্যবহার করেছে। এমন কি গোত্রগত সংঘাত চাঙ্গা করে রাখতেও ব্যবহৃত হয়েছে মৌলবাদী দানতন্ত্র। তবে কি পরোক্ষভাবে গণতন্ত্রই মৌলবাদের সহচর? আসতে পারে সে প্রশ্নটিও। দেখা গেছে, গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার নামে কোন কোন দেশে মৌলবাদকে উসকে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে- এটাও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। পুঁজিবাদীরা একে ব্যবহার করেছে তাদের প্রয়োজনে। পরে দেখা গেছে এভাবেই ছড়িয়ে পড়েছে বিষবাষ্প। দূষিত হয়ে গিয়েছে ক্রমশ! গোটা বিশ্বের মুক্তিকামী গণতান্ত্রিক মানুষের নিঃশ্বাসের আবাসস্থল। সাম্প্রতিক উদাহরণ হিসেবে ইরাকের কথাই ধরা যাক। ইরাকের শাসক সাদ্দাম হোসেন স্বৈরাচারী ছিলেন। ইরাক শিয়া অধ্যুষিত দেশ। তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ভোট হলে শিয়ারা ক্ষমতায় থাকবে সারাজীবন। সুন্নী পন্থী সাদ্দাম হোসেন টুঁটি চেপে ধরে ছিলেন। ক্ষমতায় ছিলেন বলপূর্বক। এই সাদ্দাম একসময় ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের। সে সম্পর্কে ফাটল ধরার পরই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শাসকদের কাছে চোখের বালিতে পরিণত হন। সাদ্দামের দেশ ইরাকে গণবিধ্বংসী পরমাণু অস্ত্র আছে, এমন ধুয়া তুলে যুক্তরাষ্ট্র। তারপর যুদ্ধ বাধায়। সে যুদ্ধ এখনো চলছে। ইরাক এখন ধ্বংসস্তূপ। তারপরও পুঁজিবাদীর দৃষ্টি সেখানে প্রসারিত। নেপথ্য নিয়ন্ত্রণ রাখার মরিয়া প্রচেষ্টা চলছে। অন্যদিকে বিদ্রোহীরা মৌলবাদী লেবাসে হোক আর জঙ্গিবাদী লেবাসে হোক প্রতিদিন চোরাগোপ্তা হামলা করছে। শেষ সময়ে এসে আক্রান্ত হয়েছেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। একজন সাংবাদিক বুশকে জুতো নিক্ষেপ করেছেন। তার নাম মুন্তাজার আল যাইদী। জাইদীর ক্ষোভ ছিল ভীষণ, তিনি স্বজন হারিয়েছেন এই যুদ্ধে। নিজে বন্দি থেকেছেন। ইরাক যুদ্ধে নিহত মানুষের লাশ জাইদীকে ব্যথিত করেছে। তিনি তার ঘৃণার চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। এমন ঘৃণা পুঁজিবাদী দুঃশাসন এবং মৌলবাদী হায়েনা দুটোকেই উসকে দেয়। বুশের মাথার ওপর দিয়ে একজোড়া জুতো উড়ে যাওয়ার পর বুশ সাংবাদিকদের হেসে কি বলেছেন- সেটা দেখুন। বুশ মসকারা করে বলেছেন- ‘ইট ওয়াজ এ সাইজ টেন’! অর্থাৎ জুতা জোড়া দশনম্বর ছিল। ভাবটা যেন এমন, চৌদ্দ নম্বর জুতা তার মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেলেও তার কিছু যায় আসে না! এর কারণ কি? কারণটি হচ্ছে সামন্তবাদ ধরে রাখতে হলে এমন ঘটনাবলী সহজে গ্রহণ করার…

আরমান রশিদ, আপনার সুলিখিত পোস্টটি পড়লাম। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আপনি খানিকটা আশংকিত এবং কিঞ্চিত হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন জেনে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সেই সঙ্গে এও লিখেছেন যে - মহাজোটের বিজয়ে আপনি "হাঁফ" ছেড়ে বেঁচেছেন। যদি আপনার বক্তব্য অনুযায়ী দু'টি "evil" এর মধ্যে একটিকে আপনি বেছে নিতে বাধ্য হয়ে থাকেন (যদিও আপনি কাকে ভোট দিয়েছেন সেটি স্পষ্ট নয়), তাহলে সংগত কারণেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচার কোন কারণ ঘটেনা। সেক্ষেত্রে, দু'টি evil এর মধ্যে আপনি আদৌ কোন পার্থক্য করেন কিনা, করলে কেন করেন, এবং আপনার বর্ণিত "শুষ্ক মুখ তরুণেরা" সেই পার্থক্যটি করে ঠিক করেছেন কিনা, সেটি যদি একটু পরিষ্কার করে বলতেন তবে আমাদের জন্য আলোচনার আরেকটু সুযোগ তৈরী হোতো [...]

[নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আরমান রশিদের পোস্টটি পড়লাম। একটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাতের জন্য লেখককে ধন্যবাদ। বিষয়টি প্রাসঙ্গিক এবং জরুরী বলেই প্রত্যুত্তরটি আলাদা পোস্ট হিসেবে ছাপতে ব্লগ প্রশাসককে বিনীত অনুরোধ করছি -- লেখক] ‌ আরমান রশিদ, আপনার সুলিখিত পোস্টটি পড়লাম। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আপনি খানিকটা আশংকিত এবং কিঞ্চিত হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন জেনে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সেই সঙ্গে এও লিখেছেন যে - মহাজোটের বিজয়ে আপনি "হাঁফ" ছেড়ে বেঁচেছেন। যদি আপনার বক্তব্য অনুযায়ী দু'টি "evil" এর মধ্যে একটিকে আপনি বেছে নিতে বাধ্য হয়ে থাকেন (যদিও আপনি কাকে ভোট দিয়েছেন সেটি স্পষ্ট নয়), তাহলে সংগত কারণেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচার কোন কারণ ঘটেনা। সেক্ষেত্রে, দু'টি evil এর মধ্যে আপনি আদৌ কোন পার্থক্য করেন কিনা, করলে কেন করেন, এবং আপনার বর্ণিত "শুষ্ক মুখ তরুণেরা" সেই পার্থক্যটি করে ঠিক করেছেন কিনা, সেটি যদি একটু পরিষ্কার করে বলতেন তবে আমাদের জন্য আলোচনার আরেকটু সুযোগ তৈরী হোতো। দেখতে পাচ্ছি "lesser of two evils" তত্ত্বটিতে আপনার প্রবল আপত্তি। আমারও। তবে সেটি তত্ত্বটি ইংরেজীতে বলে নয়। একটি বাংলা তত্ত্ব দিই - "মন্দের ভাল" - একেবারে খাঁটি বাঙ্গালী তত্ত্ব। তবে তাতে আপনার বা আমার কারোই আপত্তি (যদিও আশংকা করছি সম্পূর্ণ দু'টি ভিন্ন কারণে) কিছু কমবে বলে মনে হয়না। এটি কেউ বলতেই পারেন যে বাংলাদেশের জনগণ এবার ভোটের মাধ্যমে "মন্দের ভালোটিকে" বেছে নিয়েছেন। এই তত্ত্বটির অসুবিধে একটিই। সেটি হল "মন্দের ভালো" বেছে নিতে কেউ ৮৫% আসনে কাউকে বিজয়ী করেনা, ১০% এরও কম আসনে কাউকে পরাজিত করেনা। আমার মনে হয়েছে এবারের ভোটের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ আসলে পরাজিত করেছে কিছু চিহ্নিত শক্তিকে। এরা হল - মৌলবাদী শক্তি, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি, দূর্নীতিবাজ শক্তি, দাড়ি-টুপি-শিফন-সাফারীধারী নানান পদের ধর্ম ব্যবসায়ী শক্তি। আর রায় দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের পক্ষে, মানবতার পক্ষে। এই নিয়ামকগুলোর প্রতিফলক হিসেবে আওয়ামী লীগই কেন আবির্ভূত হল (হ্যাঁ, আওয়ামী লীগের এককভাবে ২২০টিরও বেশী আসন সেই ইঙ্গিতই দেয়) তা নিয়ে আপনার মনকষ্ট থাকতেই পারে, কিন্তু সেটিই বাস্তবতা। আওয়ামী লীগ এবং তার নির্বাচনী কৌশলকে আপনি "দেহপসারিণীর দেহ ব্যবসার" সাথে তুলনা করেছেন। নিজেদের উপায়হীন ভিকটিম ভাবা, নিজেদের যাবতীয় দুর্বলতা, ক্ষোভ ঘৃণা, লাম্পট্য আর নপুংসকতা দেহপসারিণীর ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া আমাদের…

নির্বাচনী আমেজ বইছে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে; মহাসড়ক, গলি উপগলি, এমনকী ঘরের প্রতিটি রুমে পর্যন্ত। এ বিষয়টি নিঃসন্দেহে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাওয়ার একটি ধাপ বটে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান তথা প্রতিটি ভোটার যাতে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে নির্ভয়ে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন, বর্তমান সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার সব ধরনের চেষ্টাই করছেন। দৃশ্যত তা-ই মনে হচ্ছে। ক'দিন আগেই আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম সামশুল হুদা বলেছেন, এবারের নির্বাচনে নারী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন সেজন্য প্রশাসনকে সজাগ দৃষ্টি ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সাধুবাদ জানাই তাঁর এই অভিমতকে। কিন্তু সেই সঙ্গে নির্বাচনের মাত্র সপ্তাহ খানেক আগেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর নানা ধরনের হুমকি আর ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার অপচেষ্টার সংবাদ পেয়ে আশঙ্কা আর অনিশ্চয়তাও জেঁকে বসে আমাদের মনে। [...]

নির্বাচনী আমেজ বইছে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে; মহাসড়ক, গলি উপগলি, এমনকী ঘরের প্রতিটি রুমে পর্যন্ত। এ বিষয়টি নিঃসন্দেহে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাওয়ার একটি ধাপ বটে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান তথা প্রতিটি ভোটার যাতে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে নির্ভয়ে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন, বর্তমান সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার সব ধরনের চেষ্টাই করছেন। দৃশ্যত তা-ই মনে হচ্ছে। ক'দিন আগেই আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম সামশুল হুদা বলেছেন, এবারের নির্বাচনে নারী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন সেজন্য প্রশাসনকে সজাগ দৃষ্টি ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সাধুবাদ জানাই তাঁর এই অভিমতকে। কিন্তু সেই সঙ্গে নির্বাচনের মাত্র সপ্তাহ খানেক আগেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর নানা ধরনের হুমকি আর ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার অপচেষ্টার সংবাদ পেয়ে আশঙ্কা আর অনিশ্চয়তাও জেঁকে বসে আমাদের মনে। প্রবাদে আছে -- 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ডরায়।' গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে ঘুম থেকে উঠে চা খেতে খেতে দৈনিক সমকাল-এর ১৫ নম্বর পৃষ্ঠায় এসে চোখ আটকে গেলো। সকালবেলায় যে-সংবাদটিতে মন খারাপ হয়ে গেলো, তার শিরোনাম : 'চন্দনাইশে ১১ হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা'। পুরো সংবাদটি পাঠকদের জন্য এখানে তুলে দিচ্ছি। সমকাল-এর চন্দনাইশ প্রতিনিধি শহীদউদ্দিন চৌধুরীর বরাত দিয়ে চট্টগ্রাম ব্যুরো জানিয়েছে : "চট্টগ্রামের চন্দনাইশে গত রোববার (অর্থাৎ ২১ ডিসেম্বর) গভীর রাতে এক হিন্দু পরিবারকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। ঐ পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে, সংখ্যালঘু ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের জন্য এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটানো হয়। চন্দনাইশ উপজেলার বরমা ইউনিয়নের মাইগাতা গ্রামের হিন্দুপাড়ায় গত রোববার রাতে ১১ সদস্যের একটি সংখ্যালঘু দিনমজুর পরিবারকে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়। দুর্বৃত্তরা হিন্দু পাড়ার মৃত মণীন্দ্র লাল দে'র ছেলে ননী গোপাল দে'র বাড়িতে ইনজেকশনের বড় সিরিঞ্জের মাধ্যমে পেট্রোল ছিটিয়ে ঘরের চালের এক কোনায় এবং ভেন্টিলেটর দিয়ে ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন দেয়ার আগে দুর্বৃত্তরা ঘরের প্রতিটি দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে আগুনের উত্তাপ পেয়ে পরিবারের ঘুমন্ত সদস্যরা জেগে উঠে চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.